এখন রাত দুটো। ২৯শে ডিসেম্বর'২০, আজ বুধবার। বিষময় দু'হাজার বিশ শেষ হ'তে আজ নিয়ে আর তিনদিন বাকী। চোখে ঘুম আসছে না। চারপাশ নিস্তব্ধ, নিঝুম! বাড়ির সবাই স্বাভাবিক নিয়মেই গভীর ঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছে। আমি আছি বসে নিরালায় নিভৃতে জমাট বাঁধা আঁধার রাতে ঘরে একাকি। নিস্তব্ধ নিথর অন্ধকার মধ্য রাত আমায় জানান দেয় বিষময় দু'হাজার বিশের ভয়াবহ দিনগুলি ফিরে দেখার। বিশ্বজুড়ে করোনার ভয়াবহতা গোটা বছরটাকে দুমড়ে মুচড়ে দ বানিয়ে দিলেও নিজের ব্যক্তিগত জীবনে এই ভয়াবহতার কোনও টের পাইনি! মাঝে একবার জ্বর হয়েছিল আর স্বাভাবিক নিয়মেই তা কয়েকদিন থাকার পর জ্বর কমার ওষুধ সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিক আর ভিটামিন খেয়ে চলে গিয়েছিল। কিন্তু আজ রাতদুপুরে একাকি নামমাত্র নাইট ল্যাম্প জ্বলা নিরালা নিঝুম অন্ধকার ঘরে ঠাকুরের ফটোর সামনে বসে চলে যাওয়া বিষময় দিনগুলি ভেসে উঠলো একে একে; মন চলে গেল ফিরে দেখার দেশে। ভেসে উঠলো চোখের সামনে তিন মূর্তি! বেঈমান, নেমকহারাম আর অকৃতজ্ঞ!!! মনে হ'লো,
অকৃতজ্ঞ, বেঈমান আর নেমকহারাম কি হওয়া যায়? নাকি অকৃতজ্ঞতা, বেঈমানি আর নেমকহারামি রক্ত বাহিত মারণ রোগের জীবাণু!? অকৃতজ্ঞ-বেইমান-নেমকহারাম কি জন্মভ্রস্ট? প্রশ্নগুলি মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিল অনবরতঃ কয়েকদিন ধ'রে। কিন্তু লেখার জন্যে পরিবেশ, পরিস্থিতি অনুকূল ছিল না। লিখবো লিখবো ক'রে লেখা হ'য়ে উঠছিল না আবোল তাবোল কথার ভিড়ে। কোন প্ল্যাটফর্মের ওপর দাঁড়িয়ে ব্যাপারটাকে দেখবো, বুঝবো, বিশ্লেষণ করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। কার ওপর দাঁড়াবো? রাজনীতি? শিক্ষানীতি? ধর্মনীতি? ছোটবেলা থেকে আজ এই বয়স পর্যন্ত শিক্ষা, ক্রীড়া, শরীরচর্চা, অভিনয়, রাজনীতি ও ধর্ম একের পর এক প্ল্যাটফর্মের ওপর দিয়ে হেঁটে আসতে আসতে আসার পথের দু'পাশে লেখার শুরুতে উল্লেখিত প্রশ্নগুলি সম্বন্ধে যা যা দেখেছি, বুঝেছি সব বুকের ও মাথার মাঝে রেখে দিয়েছি। এখন জাবর কাটার মত দেখা ও বোঝাগুলিকে উগলে নিয়ে দেখতে গিয়ে মনে হ'লো, যে প্ল্যাটফর্মের ওপর বর্তমানে দাঁড়িয়ে আছি নিজের সেই প্ল্যাটফর্মের অকৃতজ্ঞতা, বেঈমানি আর নেমকহারামী নিয়ে জাবর কাটা যেতে পারে।
আমার বর্তমান প্ল্যাটফর্ম কি?
ক্রমশঃ
( লেখা ৩০শে ডিসেম্বর ২০২০ )
No comments:
Post a Comment