Powered By Blogger

Thursday, December 22, 2022

জিনিসের দাম ও আম আদমি।

হ্যাঁ! ভাবুন, একটু ভাবুন।
যখন যেমন তখন তেমন চলুন।
এখন আলুর দাম বেশী যত পারবেন কষ্ট ক'রে আলুর চেয়ে কম দামী সব্জি (?) খান। সর্ষের তেল বাদ দিয়ে কষ্ট ক'রে সময়ানুযায়ী কম দামী (?) তেল খান, কম খান। জিনিসের দাম জিনিসের দাম ব'লে চেঁচায় আমরা কিন্তু বাজারে কোনও জিনিস পড়ে থাকে না। একশ্রেণী আছে যারা দরদাম করে না আমাপা বাঁ হাতি পয়সা আছে বাজারে গিয়ে শুধু ব্যাগ দিয়ে বলে 'ঐটা দে'। আর এক শ্রেণী আছে যারা ফুটানি দেখাতে তা পকেটে ডান হাতি বা বাঁ হাতি যে হাতেরই রোজগার থাকুক দরদাম করতে লজ্জা পায়। বুক শালা ২০ ইঞ্চি কিন্তু শ্বাস নিয়ে দম বন্ধ ক'রে কষ্ট ক'রে বুক ফুলিয়ে ৫৬ ইঞ্চি ক'রে বুক টান টান ক'রে চলতে চায় হাটে বাটে বাজারে। আবার এর সংগে কিছু গরীবও হাত মিলিয়ে ধারদেনা ক'রেই হ'ক আর পরিশ্রমের পয়সা গাবিয়ে দিয়েই হ'ক মাল কিনে নেয় বাজারে ব্যাগ ছুঁড়ে দিয়ে। মরে কারা? মরে আমার আপনার মত গলা চোষা আম আদমী। যারা প্রতিদিন জিনিসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে গলা ফাটাবে আবার মাথা নীচু ক'রে সেই দামী সব্জি কিনে খাবে। বললে বলবে, তাহ'লে কি করবো? কি খাবো? তবুও যে সব্জীর দাম বেশী সেই সব্জীই কিনে খাবে। অনেক আছে কম দাম হ'লে নাক সিটকায়। ব্র্যান্ডের চকমা দেখায়। যদিও ব্যান্ডের মূল্য আছে তথাপি বর্তমানে এই হতভাগা চোরা দেশে কোনও মূল্য নেই।
তাই বলি, আসুন দামী তা সে সব্জী, তেল, নিরামিষ আমিষ খাবার, ফল ইত্যাদি যাই-ই হ'ক খাওয়া সময়িক বয়কট করুন আম জনতা দেখুন দাম কোথায় এসে নাবে।
এছাড়া গরীবের পোড়া দেশে গরীব আম আদমীর অন্য উপায় নেই। আসুন একেই বিপ্লব প্রতিবাদ প্রতিরোধের হাতিয়ার করুন।
এই যে রেশনে বিনে পয়সায় চাল গম দিচ্ছে সেই চাল গম নিয়ে বাজারে ১০টাকায় বিক্রি ক'রে দিচ্ছে একশ্রেণী (সংখ্যায় তারা যদিও কম, তবে খুব কম নয়) আর সেই চাল বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০টাকায়!!!!!! কারা কিনছে রেশনের বিনে পয়সার চাল তিরিশ টাকায়? ক্রেতা আছে তাই বিক্রি হচ্ছে না? ক্রেতা না থাকলে রেশনের বিনে পয়সার চাল ১০ টাকায় কিনতোই বা কোন দোকানদার বিক্রেতা? আবার সেই ১০ টাকা দিয়ে কম দামে কেনা রেশনের চাল যে বেশী দামের চালের সংগে মিশিয়ে দিয়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে না তাই-ই বা কে দেখতে যাচ্ছে? আর খোলা বাজারের চাল রেশনে চাল গম ফ্রি দেওয়া সত্ত্বেও সবচেয়ে কম দামের ভালো চাল ৪৯ টাকা আর তাই কিনে খাচ্ছে মানুষ আর অম্ল ঢেঁকুর তুলে বলছে শালা সেদিনের ৩০ টাকার চাল ৪৯ টাকা হ'য়ে গেল!? কেন হ'লো? লোকে তো রেশনে বিনি পয়সার চাল পাচ্ছে তাহ'লে বাজারে দাম কমছে না কেন? ৩০ টাকার চাল বেড়ে ৪৯ টাকা হয় কি ক'রে? উত্তর আছে?
উপায় কি এখন? গরীবের পোড়া দেশে গরীব আম আদমীর অন্য উপায় নেই। আসুন কেনা বয়কট কিম্বা কম কেনা একেই বিপ্লব প্রতিবাদ প্রতিরোধের হাতিয়ার করুন।
আবার রেশন ব্যবস্থাও অদ্ভুত। যারা এ পি এলের যোগ্য তারা বি পি এল তালিকাভুক্ত হ'য়ে বসে আছে আর যারা সত্যি সত্যিই বি পি এল তালিকাভুক্ত হওয়ার যোগ্য তারা এ পি এল হ'য়ে বসে আছে। আবার কতজন যাদের কার্ডও নেই। তাদের নিয়ে কারও হেলদোল নেই। আর কত রকমের যে কার্ড আছে তার ইয়ত্তা নেই। এক একটা কার্ডে এত চাল গম পাচ্ছে এক একজন যে মাসে তা ফুরোচ্ছে না বাজারে বিক্রি ক'রে দিচ্ছে। সবার জন্য কেন যে এক রকমের কার্ড হয় না তা বোঝা দায়। ৬-৮ রকমের কার্ড আছে। যখন বিনা পয়সায় দিচ্ছো তখন এত রকমের কার্ড কেন? গরীব বড়লোক যাচাই ক'রে নেবার ব্যবস্থা করো। আর প্রকৃত সত্যি সত্যিই যাদের দরকার নেই তারা নিও না। আর একটু চালের কোয়ালিটি ভালো দিলে আমার মনে হয় খোলা বাজারে দাম ঊর্ধ্বগতি হ'তে পারবে না। আবার বিনে পয়সায় চাল গম দিলে বলবে, এই চাল খাওয়া যায় নাকি? শালা গ্যাস ফুরিয়ে যাবে সেদ্ধ হ'তে হ'তে। আবার গমের বেলায় বলবে শালা গম তো নয় যম। আটা মাখলে ফেটে ফেটে যায় রুটি! কোনদিকে যাব? তবে সরকারকে এটাও ভেবে দেখতে হবে, যে চাল দিচ্ছে আম জনতার জন্য তা দেশের শাসক শ্রেণী নেতানেত্রী খাচ্ছে কিনা। 'আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শেখায়' ব'লে একটা কথা আছে। আসল কথাটা হ'লো, একটু বেশী না সামান্য একটু ভাবলেই হয়। আর যদি চাল ফোটাতে গ্যাস ফুরিয়ে যায় তাহ'লে গ্যাসের দামটা তো কমিয়ে দাও প্রভু। একদিকে দেবে যেমন অন্যদিকে ঘুরিয়ে মারছো কেন মালিক? যাই হ'ক এটা আমার আলোচ্য বিষয় নয়। আলোচ্য বিষয় জিনিসের দাম।
অতএব আসুন, যে জিনিসের দাম বেশী সেই জিনিস খাওয়া বয়কট করুন তা সে কর্তা বা গিন্নি কিম্বা ছেলেমেয়ে যেই প্রতিবাদী হ'ক তাঁর বিরুদ্ধে সংসারের একজন রুখে দাঁড়ান, বোঝান তাকে সমগ্র অবস্থা।
এছাড়া গরীবের পোড়া দেশে গরীব আম আদমীর অন্য উপায় নেই। আসুন একেই বিপ্লব প্রতিবাদ প্রতিরোধের হাতিয়ার করুন।
আর কে কাকে বোঝাবে? আর বোঝাবেন বা কি? যদিও এখন সারা বছরই সমস্ত তা সে যে সব্জি হ'ক আর যাই হ'ক বাজারে পাওয়া যায়। আর তাই জিভের স্বাদ পাল্টাতে শীতকালে ভাগাড়ে চাষ হওয়া অ্যায়সা বড়া ফুলকপি যেমন কিনে খাই আমরা ৪০টাকা দামে যে ফুলকপি গরুতে পর্যন্ত খায় না ছিবড়ে ব'লে ঠিক তেমনি অফ সিজনে গরমের সময় চিমসে মারা শুঁটকী ফুলকপি বাঁধাকপি চড়া দামে কিনে দ্বিধাকরি না; উলটে ওই শুঁটকি ফুল বা বাঁধাকপি হাতে ঝুলিয়ে হেলতে দুলতে আনতে গর্বে বুক ফেটে যায়; এমনই আমাদের জিভের লালসা আর স্ট্যাটাস! আবার শীত পড়তে না পড়তেই অর্থাৎ শীতের শুরুতেই খেতে হবে শীতকালীন সব্জী, ফলমূল ইত্যাদি তা সে যত হাই দাম হ'ক! ঠিক তেমন অন্য সিজনের বেলায়ও।
যাই হ'ক যদি সবাই যে জিনিসের দাম অগ্নিমূল্য সেই জিনিস কিছুদিন খাওয়া একেবারে ত্যাগ করে কিম্বা কম কেনে পরিমানে, তুলনামূলক কম দামের অন্য জিনিস তা সে সব্জি হ'ক, ফল হ'ক, ভোজ্যতেল হ'ক, আমিষ নিরামিষ খাবার হ'ক কেনে, খায়, অভ্যাস ক'রে তাহ'লে হয়তো এই পোড়ার দেশে সবাই মিলে যদি একটু নিরুপায় হ'য়ে পেটে সাময়িক তালা লাগায়, বিলাসিতা ও আমাপা বিলাসিতা ত্যাগ করে তাহ'লে হয়তো পরিবর্তন হ'লেও হ'তে পারে। তবে একেবারে কেনা বন্ধ রাখলে ভালো কেননা যেমন ধরুন এক আঁটি লাল শাকের দাম দশ টাকা কিম্বা একটা লেবুর দাম দশ টাকা সেই শাকের আঁটি বা লেবুর বিক্রয় মূল্য এতটাই বাড়িয়ে রাখা হবে ক্রয় মূল্য থেকে যে তাদের সব শাকের আঁটি বা লেবু বিক্রি না হ'লেও ক্রয়মূল্য ও লাভ কম হ'লেও উঠে যাবে। পরের দিন দেখা যায় সেই না বিক্রি হওয়া শাকের আঁটি ফেলে দেওয়া হয়েছে গরু খাচ্ছে, দামী পচা লেবু গড়াগড়ি খাচ্ছে রাস্তায় নর্দমায়।
তাই আসুন, কেনা বন্ধ করুন। অকারণ বেশী কেনার অভ্যাস ত্যাগ করুন। কম কিনুন। তুলনামূলক কমদামী জিনিস ক্রয় করুন। সিজনের শুরুতে কেনা বন্ধ করুন। এছাড়া গরীবের পোড়া দেশে গরীব আম আদমীর অন্য কোনও উপায় নেই।
আসুন একেই বিপ্লব প্রতিবাদ প্রতিরোধের হাতিয়ার করুন।
বললাম এই জন্যে যদিও জানি কোনও আশা নেই তবুও আশায় মরে চাষা। আমি একজন মরা চাষা।----প্রবি। (১৩ই মে শুক্রবার' ২০২২)

No comments:

Post a Comment