Powered By Blogger

Thursday, May 30, 2024

প্রবন্ধঃ মানুষ, মানুষ, তুমি মানুষ। মানুষ মানুষের জন্য।

ফ্ল্যাটবাড়ির খোলা বারান্দায় ব'সে তাকিয়ে ছিলাম বাইরে প্রকৃতির দিকে। আকাশে মেঘ। আলো আছে কিন্তু আকাশে সূর্য নেই। মিষ্টি আভা ছড়িয়ে সূর্য লুকিয়ে আছে মেঘের আড়ালে। সকাল সকাল প্রখর সূর্যের তেজকে কে যেন হাল্কা মেঘের চাদর দিয়ে পুরোটা ঢেকে দিয়েছে। কাল রাতে বৃষ্টি হয়েছে জোরে। তাই আজ বৃষ্টিস্নাত সকালে ঠান্ডা বাতাস বইছে বাইরে। মনেই হচ্ছে না গ্রীষ্মকাল। রাতে ঘুমের সময় শীত করছিল। এসি বন্ধ ক'রে, ফ্যানের স্পীড কমিয়ে শুয়েছিলাম শুধু। ঘুম আসছিল না। এখন জানালা দিয়ে সেই ঠান্ডা মিষ্টি বাতাস এসে চোখেমুখে হাত বুলিয়ে দিয়ে গেল; যেন রাতে নিদ্রাহীনতার ফলে যে ক্লান্তি তা' মুছে দিচ্ছে। বড় ভালো লাগছে চারপাশের প্রকৃতি। গ্রীষ্মের দাবদাহে মানুষের প্রাণ হাঁসফাঁস করছিল। আর, আজ ঠান্ডা আবহাওয়ায় নিজেকে চনমনে লাগছে, ফুর্তি জাগছে মনে। সামনে সারি সারি ফ্ল্যাট। ছুটির দিন, রবিবার। নীচে রাস্তায় নারীপুরুষ বেড়িয়েছে ছুটির দিনে দোকানে কেনাকাটা করতে। সামনেই মার্কেট, পাশে ফুড কোর্ট। নানারকম খাবার। সেখানে ক্রেতার ভিড়। সকালের জলখাবার কিনতে ভিড় জমিয়েছে মানুষ দোকানে। এই ঠান্ডা মৌসমে মাতাল করা হাওয়ায় গরম গরম কচুড়ি, সিঙ্গাড়া, নিমকি, লাচ্ছা পরোটা বিক্রি হচ্ছে দেদার দোকানে। লোকে হামলে পড়ে কিনে নিচ্ছে বাড়িতে নিয়ে যাবে ব'লে। জমে যাবে সকালের জলখাবার। কেউ কেউ সামনে চেয়ার টেবিলে বসে ব্রেকফাস্ট সেরে নিচ্ছে। নিমেষে শেষ হ'য়ে যাচ্ছে সব, আবার ভাজছে। ফুড কোর্টের মুখোমুখি রাস্তার এপাশের ফ্ল্যাটের বারান্দা থেকে সব ছবির মত পরিস্কার দেখা যাচ্ছে। কিছুটা দূরে গাছের তলায় দাঁড়িয়ে নিষ্পলক চেইয়ে আছে একটি অল্প বয়সী মেয়ে। সম্ভবত মায়ের সঙ্গে এসেছে। গাছের তলায় নিরিবিলি জায়গায় বসিয়ে দিয়ে মা গেছে কারও বাড়িতে কাজ করতে। কাজ সেরে নিয়ে যাবে সঙ্গে ক'রে বাড়ি। সিঁড়ি দিয়ে নেমে ধীর পায়ে এগিয়ে গেলাম তার কাছে। মেয়েটি বসে আছে চুপ ক'রে। পরণে নোংরা ছেঁড়া ফ্রক। চেয়ে আছে দোকানের কচুরি সিঙারার দিকে। দোকানদার গরম গরম কড়াই থেকে ভেজে ভেজে ঝুড়িতে রাখছে কচুড়ি, সিঙ্গারা, নিমকি। এগিয়ে গেলাম দোকানের দিকে। কচুড়ি, সিঙারার দু'টো প্যাকেট নিয়ে ফিরে এলাম মেয়েটির কাছে। তার মাথায় হাত বুলিয়ে একটা প্যাকেট তার হাতে দিয়ে বললাম, খাও। মেয়েটি অবাক চোখে মুখ তুলে তাকালো আমার দিকে। কি নিষ্পাপ উজ্জ্বল চোখ দুটি! মেয়েটি নিতে লজ্জা পাচ্ছিল। মুখে কিছু বললো না, কিন্তু বোঝা গেল আত্মসম্মানে লাগছে। যাই হ'ক, ওর হাতে দিয়ে বললাম, মা এলে খেও। তারপর ফিরে চললাম সেখান থেকে বাড়ির জন্য নেওয়া গরম গরম কচুড়ি, সিঙ্গারার অন্য প্যাকেটটি হাতে নিয়ে। আবার এসে বসলাম বারান্দায়। ছুটির দিনে সকালবেলা জমিয়ে খাওয়া যাবে চায়ের সঙ্গে গরম গরম জলখাবার।
সামনের ফ্ল্যাটের ব্যালকনির পাশে ফাঁকা শেড, সেখানে গোলা পায়রা, শালিক কি যেন খুঁটে খুঁটে খাচ্ছে। ওখানে ঐ ফাঁকা শুকনো জায়গায় কি খাবার আছে যে খাচ্ছে!? ভেবে অবাক হ'য়ে তাকিয়ে রইলাম সেদিকে! ভাবলাম এখানে এই বিশাল ইটের জঙ্গলে এরা বেঁচে আছে কি ক'রে? এইভেবে প্রতিদিনের মত ঘর থেকে হাতের কাছে যা পেলাম, নিয়ে এলাম। হাতে বিস্কুটের প্যাকেট। কয়েকটা বিস্কুট নিয়ে নিখুঁত লক্ষ্যে ছুঁড়ে দিলাম সেই ফাঁকা শেডের ওপরে। লক্ষ্য পূরণে শিশুর মত নেচে উঠল মন প্রাণ, চেয়ার ছেড়ে আনন্দে দাঁড়িয়ে পড়লাম। মনে হ'লো বিশ্বজয় ক'রে ফেলেছি। মনে পড়ে গেল যৌবনে ক্রিকেট মাঠে দৌড়ে বল ধ'রে দূর থেকে ছুঁড়ে উইকেট ভেঙ্গে দেওয়ার কথা।
প্রথমে পাখিরা উড়ে গেলেও কিছুক্ষণ পর আবার উড়ে এসে বসলো সেখানে পায়রা, শালিক। তারপর ঠুকরে ঠুকরে খেতে লাগলো বিস্কুটগুলো। দেখে বেশ ভালো লাগলো, আনন্দ পেলাম মনে। কি আনন্দে খাচ্ছে সবাই মিলে। মাঝে মাঝেই আশেপাশে যেখানেই ওরা উড়ে এসে বসে সেখানে রেখে দিই কিছু না কিছু। পরে দেখি সেখানে কিছু নেই। রান্নাঘরের জানালার ওপাশে যে শেডটা আছে সেখানে এসে বসে মাঝে মাঝে পায়রা, শালিক। জানালা খুলে দু'একটা বিস্কুট রেখে দিই তাদের জন্যে। বেডরুমের জানালায় রেখে দিই মাটির ছোটো বাটিতে ক'রে জল আর মুড়ি, বিস্কুটের টুকরো ছোটো ছোটো ক'রে। কাঁচের জানালা বন্ধ ক'রে দেখতে থাকি। মনে মনে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করি, এই কাজ করার বিনিময়ে তুমি কি পাও? কিছুই পাই না। কিছুই পাও না? কে যেন আবার ব'লে ওঠে উদাস সুরে, কি জানি।
ঐ যে ছোট্ট শিশুটা টলোমলো পায়ে হেঁটে চলে যাচ্ছে নীচে রাস্তা দিয়ে আরও কয়েকজন তার থেকে বড় ছেলেমেয়ের ভিড়ে, মুহুর্তে আমি চলে গেলাম সেখানে আর পকেট থেকে লজেন্স বের ক'রে গালে আদর ক'রে তুলে দিলাম তার ও সবার হাতে। তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দয়ালকে স্মরণ ক'রে বললাম, দয়াল তুমি ওর প্রকৃত পিতামাতা, কিন্তু জানি না এদের পিতামাতা এদের খেয়াল রাখে কিনা, তুমি ওদের খেয়াল রেখো, তুমি ওদের রক্ষা ক'রো। মন এবার বলে, আরে পাগল, এই কাজের ফলে তুমি কি বড়লোক হবে? তোমাকে কি টিভিতে দেখা যাবে? তুমি কি বিখ্যাত হ'য়ে যাবে?
প্রাণহীন শরীরের মত নির্বাক নিশ্চল দাঁড়িয়ে থাকি আর চেয়ে চেয়ে দেখি হাঁটি হাঁটি পায়ে অস্ফুট মধুর শব্দ ক'রে হেঁটে চলে যাচ্ছে দূরে, ক্রমশঃ দূরে। মনে পড়ে যায় কবি সুকান্তের কান্না ভেজা গলায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞাঃ
"চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
অবশেষে সব কাজ সেরে
আমার দেহের রক্তে নতুন শিশুকে
করে যাব আশীর্বাদ,
তারপর হব ইতিহাস।"

আমারও ভেতর থেকে কে যেন ব'লে উঠলো,আমিও ব'লে যাই,
যাবার সময় হয়েছে তাই;
চলে যাবো যে কোনও একদিন
আমার ফুলের মতো ছোট্ট ছোট্ট
দেবদূতদের ছেড়ে।
যাবো চলে অন্ধকার আগুন পৃথিবী আর
বিষাক্ত নিশ্বাসে ভরা আকাশের তলে
আমার ছোট্ট শিশুদের ফেলে।
তাই, যাবার আগে ব'লে যাই, বারবার ব'লে যাই
শিশুর ভবিষ্যৎ সুদিন রাখা আছে জেনো নিশ্চিত
শিশুদের মা-বাবাদের কোলে।

কিছুদূরে ওই যে গরীব বুড়িমা আগের দিনে জংগলে, পুকুরের ধারে ঘুরে কয়েক আঁটি থানকুনি পাতা, কচু পাতা, কলমি শাক, হেলেঞ্চা শাক ইত্যাদি নিয়ে বসে আছে বাজারে রাস্তার ধারে, ওর পাশ দিয়ে যাবার সময় ওই সব শাকগুলি বুড়িমা যা চাইলো তাই দিয়ে কিনে নিলাম দরদাম না করেই। অদ্ভুত এক মায়াময় হাসি ছড়িয়ে গেল বুড়িমার মুখে! ফোকলা দাঁতের হাসি ছড়িয়ে শিশুর মত হেসে উঠলো বুড়িমা! কি যেন বলতে চাইলো, কিন্তু বলতে পারলো না। কি এক নির্মল সরলতা চোখেমুখে ছড়িয়ে বুড়িমার, যা পৃথিবী ঘুরে কোথাও পাবো না! এইখানেতেই ঐ বুড়িমার ছলছল চোখের থোবড়ানো গালের ফোকলা দাঁতের হাসিতে, হ্যাঁ ঐ ছোট্ট শিশুর মত হাসিতেই আমি খুঁজে পাই আমার স্বর্গ, আমার প্রভুর রামরাজ্য! এই স্বর্গ, এই আমার প্রভুর রামরাজ্য পাবার জন্য আমি হাসিমুখে সব আফাল-তাফাল সহ্য করতে পারি আমৃত্যু।জানি বাড়িতে এই এত শাক পাতার জংগল নিয়ে দু'এক কথা হবে। তবুও ঐ স্বর্গ, ঐ রামরাজ্যের লোভ সামলাতে পারিনে; কিনে নিই বিস্ময়ে এই ভেবে, সারাদিনে এই বিক্রি ক'রে কিই বা রোজগার হবে, আর কিই বা সেই পয়সা দিয়ে কিনে খাবে বুড়িমা!? মনটা খারাপ হ'য়ে যায়, তবুও, সূর্যকে যেমন মেঘ তার কালো চাদর দিয়ে আড়াল ক'রে রাখে ঠিক তেমনি আমার অশান্ত মন-প্রাণ-হৃদয়কে একটা নির্মল আনন্দ ঢেকে রাখে, শান্ত ক'রে দেয়।

এই করার মধ্যে দিয়ে কি পাও তুমি? ব'লে ওঠে মন অবাধ্য ছেলের মত বারবার। কে যেন সাড়া দেয় ভিতর থেকে, ম্লান হেসে বলে, কিছুই না।
এই কিছু না পাওয়ার মধ্যে এ হ'লো আবেগ। এই আবেগ কোনও মূল্যেই আমি হারাতে চাই না, তা' সে যতই আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাক না কেন রসাতলে। এই আবেগ আমাকে নিয়ে যায় অনুভবের জগতে, গভীর এক ভালোবাসা অনুভব করি। উপলব্ধি হয় আমি কেন জন্মেছি, ঈশ্বর কেন আমায় সৃষ্টি করেছেন, কেন সৃষ্টি করেছেন আমার চারপাশ, উপলব্ধি হয় আমি ঈশ্বরের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ, আর তাই, মানুষ মানুষের জন্যে।
শুনতে পেলাম, তমসার ওপার থেকে অচ্ছেদ্য বর্ণ মহান পুরুষ ইষ্টপ্রতিকে আবির্ভূত হ'য়ে গভীর মমতায় শান্ত স্নিগ্ধ মধুর গম্ভীর স্বরে আমার দয়াল বলছে, 

" তুমি কেন জন্মেছ
মোটাভাবেও কি দেখেছ ?
থাকাটাকে কি উপভোগ ক'রতে নয় ----
চাহিদা ও কর্ম্মের ভিতর - দিয়ে
পারস্পরিক সহবাসে -----
প্রত্যেক রকমে ?
তেমনি বুঝছ না
ভগবান কেন সৃষ্টি ক'রেছেন ?
উত্তর কি এখন ?-----
নিজেকে অনুভব ক'রতে ,
উপভোগ ক'রতে ---- বিশ্বে ,
প্রত্যেক অনুপাতে --- দেওয়ায় , নেওয়ায় --
আলিঙ্গনে , গ্রহণে ,
কর্ম্মবৈচিত্রে , ----- নয় কি ? "



তারপর শুনলাম দয়াল বলছে,
তুমি আমার সুন্দর সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ সুন্দর সৃষ্টি মানুষ, মানুষ, মানুষ!
আর, তখন সুন্দর এক আলোময়, রুপময়, মধুময়, রসময় পৃথিবী আমার সামনে ভেসে ওঠে! আমি সেই পৃথিবীতে পাখির মত ভাসমান!



ফল্গুধারার মত সুন্দর আমার ভেতরে ব'য়ে চলা এই ভাবনাও বুঝে ফেলে মন। তখন মন বিস্ময়ে বলে, এইটাই কি সেই চাওয়া যা তুমি সবচেয়ে বেশী চাও ও যা তুমি খুঁজে চলেছো আমৃত্যু!? কোথায় গেলে পাবো এমন চাওয়া? কোনও উত্তর ভেসে এলো না। একটা গভীর নীরবতা গ্রাস ক'রে নিচ্ছে এই সকাল। আকাশে দ্রুতবেগে ভেসে যাচ্ছে কালো সাদা মেঘ। মিষ্টি ঠান্ডা বাতাসে অবশ হ'য়ে আসছে শরীর। ঠান্ডা বাতাসে ঠোঁট দুটো কেঁপে উঠে বলতে লাগলো,
If there is righteousness in the heart,
there will be beauty in the character.
If there is beauty in the character,
there will be harmony in the home.
If there is harmony in the home,
there will be order in the nations.
When there is order in the nations,
there will be peace in the world.
হৃদয়ের পবিত্রতা আনে সুন্দর চরিত্র
সুন্দর চরিত্র আনে সংগতি গৃহে
এ জেনো বড় সত্য।
গৃহের সংগতি আনে জাতিতে শৃঙ্খলা
জাতির শৃঙ্খলা আনে পৃথিবীতে শান্তি
পূর্ণ হয় পনেরো কলা।
বিস্ময়ে আমি নিজেকে নিজেই ব'লে উঠলাম পনেরো কলা কেন? ষোলো কলা পূর্ণ হ'লো না কেন? কোথায় এই প্রবাদে (সম্ভবত এটা চাইনিজ প্রবাদ) কমতি আছে যার ফলে ষোলো কলা পূর্ণ হ'লো না? এক কলা অপূর্ণ থাকার জন্য পৃথিবীতে তো শান্তি পুরোপুরি আসতে পারবে না! অসম্পূর্ণতা কোথায়? আর তখনি, আরও আঁধার হ'য়ে এলো আকাশ। বুঝিবা বৃষ্টি নামবে। অথচ বৃষ্টি নামছে না। একটা স্বর্গীয় পরিবেশে আমি ডুবে যাচ্ছি। আর তখনি মহাসিন্ধুর ওপার থেকে ভেসে এলো,
If there is living God in the life

There will be righteousness in the heart. I
f there is no living God in the life,
the heart is not pure.
জীবনে জীবন্ত ঈশ্বর যদি না থাকে
তাহ'লে হৃদয় পবিত্র হয় না।
তাই, If there is living God in the life

There will be righteousness in the heart.
If there is righteousness in the heart,
there will be beauty in the character.
If there is beauty in the character,
there will be harmony in the home.
If there is harmony in the home,
there will be order in the nations.
When there is order in the nations,
there will be peace in the world.

জীবনে থাকে যদি জীবন্ত ঈশ্বর

হৃদয় পবিত্র হয় জেনো অতি সত্বর।
জীবনে যদি না থাকে জীবন্ত ঈশ্বর
হৃদয় হয় না পবিত্র হয় না শুদ্ধ অন্তর।
পবিত্র হৃদয় বিনা হয় না সুন্দর চরিত্র
গৃহে আসে না সংগতি হয় সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ।
গৃহে গৃহে যদি না থাকে সংগতি
জাতি হয় না শৃঙ্খলিত দিনে দিনে হয় অবনতি।
জাতির বিশৃঙ্খলা আর অবনতি জেনো অশান্তির কারণ
বিশ্বের যত সমস্যা আর অশান্তির হবে না সমাধান কোনওদিন
গোড়া কেটে আগায় জল দেওয়ার বুদ্ধির
যদি না হয় অপসারণ।


এর জন্যে চায় শুদ্ধ আত্মা। নতুবা জীবন্ত ঈশ্বর আমাদের জীবনে থাকতে পারে না। ফলে হৃদয় পবিত্র হয় না। আর, অপবিত্র হৃদয় তখন তার ঘোলাটে বিষাক্ত চোখ দিয়ে সব বিকৃত দেখে। তাই শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন,


"জগতের কল্যাণের জন্য আরও বহু শুদ্ধ আত্মার প্রয়োজন। আমার মনে হয়, তারা সব নিরালম্ব বায়ু ভূত নিরাশ্রয় হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। জন্ম নেবার মত ঠাঁই পাচ্ছে না। দ্বারে দ্বারে করাঘাত করে বেড়াচ্ছে। যেখানে নিষ্ঠা নেই, সদাচার নেই, পবিত্রতা নেই, সংযম নেই, বিহিত সু সংস্কার নেই, সেখানে তো আর তারা আসতে পারে না। তাইতো আপনাদের কাছে অত করে কই দীক্ষার কথা। বিবাহ সংস্কারের কথা। সুশিক্ষার কথা। পরিবারগুলিকে ইষ্টাচারে অভ্যস্ত করে তোলার কথা। সাত্ত্বিক আচার, নিয়ম বিধি, বিধান গুলিকে যদি পুনরুজ্জীবিত না করেন , তাহলে কিন্তু শুধু দর্শনের বক্তৃতা ঝেড়ে কাজ হবে না।"

---------- শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র।।
যা আমরা কুৎসা, নিন্দা, গালাগালি, সমালোচনা, অশ্রদ্ধা, অপমান, অপবাদ সাথে দর্শনের বক্তৃতা দিয়ে চলেছি সৎসঙ্গে, উৎসব মঞ্চে, সোশ্যাল মিডিয়ায়। জয়গুরু।

No comments:

Post a Comment