Powered By Blogger

Friday, October 8, 2021

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজি কে খোলা চিঠি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,

প্রথমে আপনাকে আমার 'রা' নন্দিত শুভেচ্ছা অভিনন্দন জানাই। আপনাকে আমার খোলা চিঠি লেখার জন্য অনেকদিন থেকেই ইচ্ছে ছিল কিন্তু সময় নানা কারণে তা আর 'য়ে উঠছিল না। আজ ট্রেন সফর কালে যখন ট্রেনে সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে তখন আপনাকে এই চিঠি লিখছি। চোখে ঘুম আসছিল না। প্রতিদিনই অনেক রাত 'য়ে যায় প্রায় মধ্য রাত পার 'য়ে যায় ঘুমাতে ঘুমাতে। এখন রাত দেড়টা। ট্রেন ছুটে চলেছে দ্রুতবেগে। সঙ্গে মনও! সামনে বাংলার শ্রেষ্ঠ পুজো দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে পুরী সৎসঙ্গ ঠাকুরবাড়ি যাচ্ছি একটু অক্সিজেন নিতে। আর তাই এই রাতের ট্রেনে মনে 'লো আপনাকে চিঠি লিখে মনের কথা জানাই। তাই সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়েছে তখন হাতের ট্যাব খুলে বসলাম আপনাকে মনের কথা জানাতে। আপনি যেহেতু নিজেও মনের কথা খুলে বলেন দেশবাসীর সঙ্গে 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে তাই মনে 'লো আপনি নিশ্চয় অন্যের মনের কথাও শুনবেন।

সম্মানীয় প্রধানমন্ত্রীজী, আপনি দ্বিতীয়বারের জন্য দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। দেশবাসী আপনাকে সমস্ত বিরোধীতাকে পরাস্ত 'রে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব বা ভার তুলে দিয়েছে। আপনি আপনার আজ পর্যন্ত শাসনকালে সমস্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিকে মোকাবিলা 'রে অনেক সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন যা বিগত ৭০বছরে নিতে সাহস করেনি কোনও দেশ নেতৃত্ব! দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ৭০বছরে ভারত লালবাহাদুর শাস্ত্রী, ইন্দিরা গান্ধী, অটল বিহারী বাজপেয়ীজীর মত অনেক সাহসী প্রধানমন্ত্রীকে পেয়েছে। এবং তাঁরা তাঁদের শাসনকালে তাঁদের সাহসিকতার প্রমাণও রেখে গেছেন, যা আজ বিশ্বের দরবারে ইতিহাস 'য়ে আছে। আপনিও আপনার ৫বছরের শাসনকালে যে সাহস বিশ্বের দরবারে তুলে 'রে বিশ্বকে বুঝিয়ে দিয়েছেন সত্যের লড়াই- ভারতের অনমনীয় আপোষহীন কঠোর কঠিন মনোভাব কখনও শিথিল হবে না, ঘরে- বাইরে কোনও অন্যায় শক্তির কাছে সে যত বড়ই শক্তি ' না কেন ভারত কোনোদিন মাথা নত করবে না!

প্রধানমন্ত্রীজী! ভারতবর্ষে ধর্ম নিয়ে সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে যে নোংরা, ঘৃনার লড়াই বিশ্বের সভ্যজাত 'লে পরিচিত ব্রিটিশ শুরু 'রে দিয়ে গিয়েছিল সেই ট্র্যাডিশন আজও চলেছে! চলেছে বহাল তবিয়তে! সেই সম্প্রদায়ের পরস্পরের মধ্যে মারামারি কাটাকাটি আজ চলেছে ভয়ঙ্করভাবে! ধর্ম আজ ব্যবসার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। ধর্ম আজ তার গরিমা হারিয়ে রাজনীতির পাশা খেলার বোড়েতে পরিণত হয়েছে! ধর্ম আজ তার আসল অর্থ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে! অর্থ হারিয়ে ধর্ম আজ অনর্থ বাধিয়ে বসেছে দেশজুড়ে!

প্রধানমন্ত্রী মোদীজী, আপনি অনেক কড়া সিদ্ধান্ত, কঠিন পদক্ষেপ নিয়ে চলেছেন বিরোধীদের বিরোধীতাকে তোয়াক্কা না 'রে। গোটা বিশ্ব আজ অবাক চোখে তাকিয়ে আছে আপনার দিকে! ভুল কি ঠিক জানি না, "ভারত আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে" কথার সত্যতার হয়তো বা ঝলক দেখা দিল! সেখানে আরো লেখা ছিল, "কর্মে মহান …, ধর্মে মহান হবে"! জানি না কবে, কোন পথে ধর্ম মহান ধর্মে পরিণতি লাভ করবে! তবে একটা ধারণা, বিশ্বাস বুকের কোণায় জমাট বেঁধে আছে!

এবার মূল কথায় আসি। প্রধানমন্ত্রীজী, ভারত ধর্মে মহান হবে এই বিশ্বাস আমার আছে, হ্যাঁ আছে। শুধু একটা কথা বলি, The greatest phenomenon of the world শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন। ভারতবর্ষের তথা বিশ্বের সমস্ত দিকের বহু বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব তাঁর কাছে এসেছিযেন। এসেছিলেন সম্প্রতি আর এস এস প্রধান শ্রদ্ধেয় শ্রীমোহন ভাগবতজী, এসেছিলেন আপনার সরকারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রদ্ধেয় শ্রীরাজনাথ সিং, এসেছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী শ্রীবিপ্লব দেব মহাশয়! আপনি সদ্য লোকসভা ভোটের নির্বাচনী প্রচারে কুচবিহারের জনসভায় শ্রীশ্রীঠাকুর কে স্মরণ প্রণাম 'রে নির্বাচনী প্রচারে সামিল হয়েছিলেন!!!!! তাই আমি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরই ঘোষণা করা হয় ভারত ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ!

আমার অনুরোধ, শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র শব্দের মূল অর্থ থেকে কোনদিন সরে যাননি। তিনি শব্দের ধাতুগত অর্থের উপর দাঁড়িয়ে সমস্তটা দেখতেন, বিচার-বিশ্লেষণ করতেন তারপর তাঁর মতামত দিতেন। এইভাবে তিনি বহুকিছু ভুল, বিকৃত, বিস্মৃত বিষয়কে মৃত অবস্থা থেকে ফিরিয়ে এনে নবজীবন দান করেছেন! ঠিক তেমনি এই 'ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র' শব্দ! তিনি এর বিস্তৃত ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে দীর্ঘ বাণী দিয়েছেন! আমি বিশদে যাচ্ছি না, শুধু অনুরোধ করবো বিশ্ব জুড়ে কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের পক্ষ থেকে আপনি একবার আসুন ঠাকুরবাড়ি দেওঘর। এসে এই বিষয়ে শ্রীশ্রী ঠাকুরের কি বক্তব্য ছিল তা ঠাকুরবাড়ির বর্তমান আচার্যদেব শ্রীশ্রীঅশোকদাদার সঙ্গে একটু বিশদ আলোচনা 'রে ভারতকে সহি দিশায় নিয়ে যান! শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছিলেন, "ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র কি 'রে 'তে পারে তা আমি বুঝতে পারি না, বরং সম্প্রদায় নিরপেক্ষ রাষ্ট্র 'তে পারে। আমি বুঝি সম্প্রদায় নিরপেক্ষ রাষ্ট্র।"

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীজী, দীর্ঘ একটা সময় ৭০ বছর একটা ভুলের উপর দাঁড়িয়ে রইলো ভারত! ভুল, অর্থহীন ক্যাপশনের উপর কেন দেশ দাঁড়িয়ে থাকবে? যে দেশের মাথার উপর ভুল, অর্থহীন, ভিত্তিহীন নামের মুকুট থাকে সেই দেশ, সেই দেশের মানুষ আর যাই করুক দেশকে বিশ্বের চূড়ায় নিয়ে যেতে পারে না, পারবে না! ১৩০কোটি জনগণের দেশের মাথায় কেন ভুল, অর্থহীন শিরোনাম থাকবে!? আপনি অনেক নুতন পথের পথিক 'য়ে দেশের সামনে আবির্ভুত হয়েছেন, হয়তো অনেকে আপনাকে মেনে নিতে পারে না তার অনেক কারণ থাকে সে আলোচনা আমার লক্ষ্য নয় কিন্তু আপনি আপনার লক্ষ্যে অবিচল এটাই আলোচ্য বিষয় তা ভুল বা ঠিক 'তে পারে কিন্ত নূতনের পথে হাঁটার আপনি পথিক এতে সন্দেহ নেই! তাই আপনি দেশের প্রধান 'য়ে একবার ভেবে দেখুন ভারত ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ কথাটা কতটা ঠিক, কতটা যুক্তিযুক্ত!!!! ভারত ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ হবে নাকি ভারত সম্প্রদায় নিরপেক্ষ দেশ! কোন কথাটা ঠিক!?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীজী, এই স্পর্শকাতর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ' আপনার নেতৃত্বে নুতন শক্তিশালী সর্বোত্তম জ্ঞানে সমৃদ্ধ ভারত গড়ার লক্ষ্যে চর্চার যাত্রা। আমরা সারা বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি সৎসঙ্গী আপনার বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দেওঘর ঠাকুরবাড়ি আসার অপেক্ষায় রইলাম!

এছাড়া শ্রীশ্রীঠাকুরের অনেক যুগান্তকারী স্বপ্ন ছিল যা রূপায়িত 'লে অতি সহজেই ভারত আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লাভ করবে। আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি, ঠাকুরের স্বপ্ন: ভাইব্রোমিটার প্রকল্প (মৃত মানুষের দেহে প্রাণ সঞ্চার), গঙ্গা- দারোয়া প্রকল্প (যার মিলনে নদীর দু'পাশে হরিয়ালী, হরিয়ালী), শান্ডিল্য বিশ্ববিদ্যালয় (বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিশ্ব বিদ্যালয়) ইত্যাদি।

যাই ', প্রধানমন্ত্রীজী, আপনি একবার আসুন, দেখুন, ভাবুন তারপর না হয় করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। গ্রহণ বর্জন আপনার একান্তই ব্যক্তিগত।

 

শুভেচ্ছান্তে,

প্রবি।

(২৭শে সেপ্টেম্বর' ২০১৯)

No comments:

Post a Comment