আজ আমি কলম ধরলাম কিছু কথা বলার জন্য। আপনারা আমার লেখা ও বিভিন্ন পোষ্ট ফেসবুকে যারা দেখেছেন এবং পড়েছেন ও নিয়মিত পড়েন তারা কেউ কেউ আমাকে ফেসবুকের মধ্যে দিয়ে চেনেন এবং ব্যক্তিগত ভাবেও চেনেন অনেকেই। আমি আজকে আপনাদের জন্য কলম ধরেছি এই কারণে যে আপনারা অনেকেই দেখেছেন সম্প্রতি আমার একটা পোষ্ট 'ফটো বিতর্ক' নামে প্রকাশ হয়েছে আমার প্রোফাইলে ফেসবুক পেজে। সেই পোষ্ট আপনারা যারা দেখেছেন, পড়েছেন এবং কমেন্ট করেছেন তারা সবাই জানেন যে সেই পেজে কিছু শ্রীশ্রীঅবিনদাদা অনুগামী সৎসঙ্গী যারা শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে মনে করেন তাদের গুরু, ইষ্ট তারা কিভাবে ঐ 'ফটো বিতর্ক' পোষ্টের কমেন্ট বক্সে শ্রীশ্রীঠাকুর আত্মজ ও শ্রীশ্রীঅবিনদাদার প্রপিতামহ শ্রীশ্রীবিবেকদাদা ও শ্রীশ্রীকাজলদাদাকে ও একজন সৎসঙ্গীকে এবং আমাকে অশ্লীল আক্রমণ করেছেন। এখনও তার প্রমাণ আমার পেজের ঐ পোষ্টে আছে। আমি প্রথমেই বলে রাখি আমি কারও নাম এখানে বলবো না, বলতে চাইও না। শ্রীশ্রীঅবিনদাদার অনুগামী বললাম এইজন্যে যে তারা নিজেদের শ্রীশ্রীঅবিনদাদার সৈনিক মনে করেন এবং প্রচারও করেন, কেউ কেউ মনে করেন শ্রীশ্রীঅবিনদাদা তাদের গুরু, কেউ কেউ বা মনে করেন শ্রীশ্রীঅবিনদাদা তাদের ইষ্ট। তা' সেটা তারা করতেই পারেন, সেখানে আমার কিছু বলার নেই। সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। এরা সবাই নিজেদের সৎসঙ্গী ইয়ং জেনারেশনের মুখ বলে মনে করেন ও জাহির করেন। এরা সবাই নিজেদের শ্রীশ্রীঅবিনদাদার D. P. Works কাজের যোদ্ধা, সৈনিক ব'লে নিজেদের সম্বোধন করেন পরস্পরের মধ্যে নিজের ঢাক নিজে পেটাবার মতো। কে কাকে কি মনে করলো, কিভাবে গ্রহণ করলো সেটা আমার বক্তব্য বিষয় নয়। সেটা যার যার বোধের ব্যাপার ও ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেখানে আমি হস্তক্ষেপ করি না। কিন্তু যখন দেখি বৃহৎ সৎসঙ্গী সমাজে এর একটা ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে, ভুল বার্তা যাচ্ছে তখন আমি সেখানে চেষ্টা করি যুক্তির ওপর দাঁড়িয়ে তথ্য ও তত্ত্ব সহযোগে ভুল ব্যাখ্যাটার ওপরে পোষ্টের মাধ্যমে সামগ্রিকভাবে নিজস্ব মতামত দেবার। এবং তা করি একজন সৎসঙ্গী হিসেবেই শ্রীশ্রীঠাকুর ও সৎসঙ্গের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এবং দায়বদ্ধতা ও কর্তব্যের খাতিরেই। এটা আমার অধিকারের মধ্যেই পড়ে। সেখানে সবসময় মতামত বিনিময় চলতেই পারে, পরস্পর মনোভাবের আদান প্রদান চলতেই পারে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি কিছু সৎসঙ্গী গুরুভাইবোন আমার প্রোফাইলে এসে কিছুক্ষণ মত বিনিময়ের পর মতের অমিল হলেই উগ্র বিরোধীতায় চলে যায় এবং ব্যক্তিগত আক্রমণের পর্যায়ে চলে আসে। এটা করে ইন্টেনশনালি। এতদিন দেখেছি এই ধরনের ব্যবহার এসেছে মূল কেন্দ্র বিরোধী এবং অদীক্ষিত শ্রীশ্রীঠাকুর বিরোধীদের কাছ থেকে। কিন্তু এখন দেখছি সৎসঙ্গের মূল ধারার সঙ্গে যুক্ত সৎসঙ্গীদের কাছ থেকেও এই একই ধরণের ব্যবহার পাওয়া যাচ্ছে। যে যা ইচ্ছা করে যাচ্ছে, বলে যাচ্ছে আমরা সবাই রাজা আমাদেরই রাজার রাজত্বে এই মানসিকতায়। সেখানে যদি আমার পোষ্ট করা কোনও বিষয়ে আলোচনা শুরু হয় তখন মতের অমিল হলেই অধৈর্য্য হ'য়ে পড়ে এবং তৎক্ষণাৎ ইংগিতপূর্ণ কখনো বা সরাসরি ব্যক্তিগত আক্রমণে চলে যায়, দল বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। একজন আরেক জনের পাশে ঢাল হ'য়ে দাঁড়িয়ে পড়ে কমেন্ট বক্সে মতামত দিয়ে সাহায্য করতে, কখনো বা সেই আক্রমণ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শুরু হ'য়ে যায়। তখন যুক্তি, তথ্য ও তত্ত্বের ধার ধারে না, পোষ্টের বিষয় ছাড়িয়ে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে চলে যায় আক্রমণ। এরকম বহুদিন ধরেই দেখা গেছে। আমি একা নই, এরকম অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা গেছে। এখানে এবারেও তাই হয়েছে। কিন্তু সেগুলির দিকে তাকাবার বা মনোযোগ দেবার বিশেষ তাগিদ অনুভব করিনি এতদিন। এড়িয়ে গেছি কিংবা সাধারণ কমেন্টের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছি। বেশীরভাগ সময় এড়িয়েই গেছি। কিন্তু মাথার ওপর দিয়ে যখন জল যেতে শুরু করে তখন জলের ওপর নাকটা তুলে রাখতেই হয় নিজেকে সেভ করার তাগিদেই।
ইদানীং প্রায়ই সময়ই ইয়ং জেনারেশনের মধ্যে একটা ঔদ্ধত্ব্য লক্ষ্য করা যায়। আর বিশেষ ক'রে সেটা শুরু হয়েছে শ্রীশ্রীঅবিনদাদার D. P. Works শুরু হওয়ার পর থেকেই। শ্রীশ্রীঠাকুর ও সৎসঙ্গ-এর যে কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনায় মত বিনিময় চলাকালীন হঠাৎ আলোচনার বিষয় থেকে ১৮০ডিগ্রি সরে গিয়ে চলে আসে D. P. Works সংক্রান্ত বিষয়ে। এবং তাও আমার প্রোফাইলে এসে আমার পোষ্ট করা বিষয়ের বিরোধীতায়। আর তারপরই শুরু হয়ে যায় তাদের চেইন ওয়াইজ ইংগিতপূর্ণ আক্রমণ। যখনই জোর ক'রে অযৌক্তিক তর্ক ক'রে আলোচনা চালিয়ে যাবার রসদ আর থাকে না, স্টক ফুরিয়ে যায় তখনি মূল বিষয়কে চাপা দেওয়ার জন্য, দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেবার জন্য, নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য যাতে ধরা না পড়ে তার জন্য চলে আসে অন্য প্রসঙ্গে, ব্যক্তিগত নোংরা আক্রমণে। এমনই হ'লো বর্তমান D. P. Works । এরা যখন D. P. Works-এর নামে শ্রীশ্রীঅবিনদাদার নাম ভাঙ্গিয়ে স্বৈরাচারীদের মত উচ্ছৃঙ্খল বিশৃঙ্খল আচরণ করে তখন মনে মনে ভাবি এটা কোন সৎসঙ্গ!? এরা কারা? কেমন সৎসঙ্গী? এদের মুখে যখন অশালীন অশ্রাব্য অশ্লীল খিস্তি খেউর শুনি, যৌন বলাৎকারের কথা শুনি তখন ভাবি এরা শ্রীশ্রীঅবিনদাদার D. P. Works-এর সৈনিক? এরা ফিরিয়ে আনবে হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলিকে? এরা ফিরিয়ে আনবে ঘরে বৃত্তি প্রবৃত্তিতে জর্জরিত সমস্যার কষাঘাতে ক্ষতবিক্ষত অশান্ত ক্লান্ত বিধ্বস্ত মানুষগুলিকে? তা এদের অস্ত্র কি? কি অস্ত্র দিয়ে ফিরিয়ে আনবে তাদের? গালাগালি, অশ্লীল যৌন খিস্তি, খোঁচা মারা কথা, অপমান, অশ্রদ্ধার ক্ষুরধার অস্ত্র দিয়ে? এদের অহংকারী ঊদ্ধত অমার্জিত স্বৈরাচারীদের মত মেজাজ দিয়ে? শ্রীশ্রী অবিনদাদা কি সৎসঙ্গ থেকে হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলিকে ফিরিয়ে আনার জন্য এদের হাতে এই অস্ত্রগুলি তুলে দিয়েছেন? নাকি এই আচরণের পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য আছে? এরাই জুডাসের ভুমিকায়, মীরজাফরের ভূমিকায় শ্রীশ্রীঅবিনদাদার সৈন্যদলের মধ্যে আত্মগোপন ক'রে নেই তো পিছন থেকে ছুরি মারবে বলে?
এদের আচরণ, এদের কথাবার্তা, এদের মুখের ভাষা, এদের ঠাকুর সম্পর্কে ধারণা স্পষ্টতই প্রমাণ করে দেয় এরা শ্রীশ্রীঠাকুরের 'সৎসঙ্গ' যে একটা আন্দোলন সেটাই জানে না। জানে না এই আন্দোলনের আদর্শ, আন্দোলনের মূলনীতি, এই আন্দোলন কিসের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য, এই আন্দোলনের নীতিবাক্য। কিছুই জানে না। কোনও কিছুই, একটাও এরা পালন করে না। শুধুই এদের ইষ্ট, এদের গুরু, এদের আদর্শ শ্রীশ্রীঅবিনদাদার কথা অনুযায়ী এরা কথার স্রোতে ভাসা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ডাস্টবিন 'মন' সেই ডাস্টবিন মনের অধিকারী সৎসঙ্গী এরা। আপনারা পাঠক বন্ধুরা, আপনারা প্রমাণ দেখে নিতে পারেন আমার প্রোফাইলের পোষ্টে গিয়ে। এদের কমেন্ট পড়ে নিজেরাই ঠিক ক'রে নিন আমি যা বলছি তা' আদৌ সত্যি কিনা ।
ফেসবুকে প্রমাণস্বরূপ এইধরণের মানসিকতা সম্পন্ন ডি, পি, ওয়ার্কস কর্মীদের আচরণের অনেকের অনেকগুলি উদাহরণ দিতে পারি। কিন্তু পুরোনো কাসুন্দি ঘাটার আমার ইচ্ছা নেই। শুধু সম্প্রতি আমার পেজে আমার 'ফটো বিতর্ক' নামে একটা পোষ্টে এদের আচরণ আপনারা দেখতে পাবেন যদি আপনারা প্রমাণ চান। বহুদিন ধ'রে যেদিন থেকে এই ডি, পিঁ, ওয়ার্কস শুরু হয়েছে সেদিন থেকে দেখে আসছি একশ্রেণীর 'গাঁয়ে মানে আপনি মোড়ল'-এর মানসিকতার মতো ইয়ং সৎসঙ্গী যারা নিজেদের শ্রীশ্রীঅবিনদাদার অনুগামী ব'লে প্রচার করেন তারা ফেসবুকে সৎসঙ্গীদের ওপর খবরদারী করে ডি, পি, ওয়ার্কস নিয়ে। ডি, পি, ওয়ার্কস করছে কিনা তা নিয়ে ধমক দিয়ে জানতে চায়, কোড নাম্বার, পিন কোড, ডিস্ট্রিক্ট জানতে চায় তদন্ত ক'রে দেখবে ব'লে। যখনি কোন পোষ্টের বিষয় বুঝুক না বুঝক গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল হ'য়ে বকনা বাছুরের মতো শ্রীশ্রীঅবিনদাদার কট্টর প্রেমী হ'য়ে লম্ফ দিয়ে ঝম্প মেরে ফেসবুক পেজে এসে হম্বিতম্বি শুরু ক'রে দেয় ডি, পি, ওয়ার্কসের বিষয় নিয়ে। সঙ্গে সঙ্গে চেইন ওয়াইজ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এদের ফেসবুকের দলবল এদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নানারকম কটু খোঁচা মারা মন্তব্য করতে থাকে, শুরু ক'রে দেয় কটু কথার আক্রমণ। বেচারি সৎসঙ্গী অসহায় হ'য়ে পড়ে, এদের ভয় পায় রাজনীতির দাদাদের মত। তখন অবাক হয়ে ভাবি এরা সৎসঙ্গী? এরা শ্রীশ্রীঅবিনদাদার ডি, পি ওয়ার্কস কাজের স্কোয়াড!?
ক্রমশঃ
পরবর্তী অংশঃ
D. P. Works নাকি H. I. Works (a hypocrite ingenuity Work) পর্ব ২-এ।
No comments:
Post a Comment