আজ তাঁর শ্রীচরণে শতকোটি প্রণাম জানাই। পরমপিতার শ্রীচরণে প্রার্থনা করি শ্রীশ্রীঅবিনদাদা যেন সুস্থ, সবল থেকে দীর্ঘ জীবন আজকের মত লক্ষ লক্ষ তরুণ যুবকদের প্রাণে শ্রীশ্রীঠাকুরের আলোয় ঝড় তোলেন ও তাদের বিপথগামী হওয়া থেকে ও হওয়ার পথ থেকে রক্ষা করেন ও শ্রীশ্রীঠাকুরের বাঁচা-বাড়ার পথে চালিত করেন। আজ হাজার হাজার তরুণ তরুণী, যুবক যুবতী তাঁর ২৫তম জন্মদিন পালনে দেওঘরে উপস্থিত, লক্ষ নরনারী তাঁর সঙ্গ লাভে উদগ্রীব।
আসুন আজকের এই পূণ্যদিনে বিশ্বের সমস্ত সৎসঙ্গী যে যেখানে আছি তাঁকে স্মরণ করি ও শ্রদ্ধা, প্রণাম জানাই। আজকে আমি শ্রীশ্রীঅবিনদাদা সম্পর্কে শ্রীশ্রীদাদার কথা স্মরণ ক'রে আমার ভিডিও শুরু করছি। শ্রীশ্রীদাদা একদিন বলেছিলেন, "অবিন আজ তোকে একটা কথা ব'লে যাই। একদিন গোটা ভারতবর্ষের মানুষ ঠাকুর ঠাকুর করবে। সেদিন হয়তো আমি থাকবো না। আমি দেখে যেতে পারবো না। তোর বাবাও হয়তো দেখে যেতে পারবে না। কিন্তু তুই যখন আমার বয়সে আসবি তখন তুই দেখে যেতে পারবি, সমস্ত ভারতের মানুষ ঠাকুর, ঠাকুর করছে।"
আজ আমরা তার নমুনা বা ঝলক দেখতে পাচ্ছি। আজ শ্রীশ্রীঅবিনদাদার ২৫তম জন্মদিন। এই অল্প বয়সেই তিনি কত লোকের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। সমস্ত রাজ্যের সমস্ত সম্প্রদায়ের ছোটোবড়, কিশোর কিশোরী, তরুণতরুণী, যুবক যুবতী, প্রৌঢ় প্রৌঢ়া, বৃদ্ধ বৃদ্ধা কত আর্ত, অর্থার্থী, কত জিজ্ঞাসু, কত জ্ঞানী, পন্ডিত, বিদগ্ধ মানুষ তাঁর কাছে ছুটে আসেন, তাঁর একটু দর্শন লাভের জন্য, তাঁর মুখের একটু কথা শোনার জন্য। আজ দেওঘরের বুকে তাই হ'য়ে চলেছে। কেন ছুটে আসেন তাঁরা? কিসের টানে? কিসের তাগিদে? কেউ তো তাঁদের ডাকেন না। বরং ঠাকুর বাড়ি থেকে বারবার নিষেধ করা হয় স্থান সংকুলানের অভাবে্র কারণে। তবুও তাঁরা ছুটে আসেন, মাঠে ঘাটে, রাস্তায় থাকেন এই শীতে কত কষ্ট সহ্য ক'রে। আর্ত অর্থাৎ পীড়িত, দুঃখিত, কাতর, বিপন্ন ভর্য়াত মানুষ ছুটে আসেন 'মাভৈঃ' ভয় করো না, নির্ভয় হও। ঠাকুর আছেন, তাঁর নাম পেয়েছেন, ভয় কি? ডরো মাত, ডর কিস বাত কি? ঠাকুরজী হ্যাঁয় না! দয়াল প্রভুজী হ্যাঁয় না! ছুটে ছুটে আসে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ শুধু ঐ অপূর্ব আলোময়, রূপময়, রসময়, মধুময়, লাবণ্যেভরা সদা হাস্যময় মিষ্টি মুখের ঐ বরাভয় কথা শোনার জন্য। 'মাভৈঃ' ভয় করো না, নির্ভয় হও। ঠাকুর আছেন, তাঁর নাম পেয়েছেন, ভয় কি? ডরো মাত, ডর কিস বাত কি? ঠাকুরজী হ্যাঁয় না! দয়াল প্রভুজী হ্যাঁয় না!
যে দেখেছে, সেই জানে ; যে বুঝেছে সেই বোঝে, বোঝে যার প্রাণ। আজ দয়াল ধাম দেওঘর লক্ষ লক্ষ লোকে পরিপূর্ণ।
শ্রীশ্রীদাদার কথা এর আগে আমি বলেছি আপনারা শুনেছেন। এবার বলি শ্রীশ্রীঅবিনদাদার কথা। শ্রীশ্রীঅবিনদাদা একদিন বললেন, .কি করবো ,কতটুকু করতে পারবো জানি না | তবে আমি বেঁচে থাকতে থাকতে অর্ধেক পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিয়ে যেতে চাই |
শ্রীশ্রীদাদা আর শ্রীশ্রীঅবিনদাদার কথাকে আসুন একটু বিশ্লেষণ ক'রে দেখি এই দুইজনের কথার রসায়ন কি হ'তে পারে। আবার বলি, শ্রীশ্রীঅবিনদাদার পিতামহ শ্রীশ্রীদাদা (শ্রীঅশোক চক্রবর্তী) বললেন, "অবিন আজ তোকে একটা কথা ব'লে যাই। একদিন গোটা ভারতবর্ষের মানুষ ঠাকুর ঠাকুর করবে। সেদিন হয়তো আমি থাকবো না। আমি দেখে যেতে পারবো না। তোর বাবাও হয়তো দেখে যেতে পারবে না। কিন্তু তুই যখন আমার বয়সে আসবি তখন তুই দেখে যেতে পারবি, সমস্ত ভারতের মানুষ ঠাকুর, ঠাকুর করছে।" আর শ্রীশ্রীঅবিনদাদা বললেন, "কি করবো ,কতটুকু করতে পারবো জানি না | তবে আমি বেঁচে থাকতে থাকতে অর্ধেক পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিয়ে যেতে চাই |" শ্রীশ্রীদাদার কথা অনুযায়ী আমরা আজ দেখতে পাচ্ছি ভারতবর্ষের প্রতিটি রাজ্যে আজ সৎসঙ্গের ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে, সমস্ত রাজ্যের সমস্ত সম্প্রদায়ের হিন্দু, মুসলমান, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ইত্যাদি সমস্ত ধর্মের নয়, শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, সমস্ত ধর্ম কথাটা ভুল, ধর্ম কখনও বহু হয় না, ধর্ম এক, বরং মত, সমস্ত মত, তাই সমস্ত মতের মানুষ আজ শ্রীশ্রীঠাকুরের দীক্ষিত। এর থেকে আমরা ভারতের একটা আংশিক ছবি দেখতে পাই শ্রীশ্রীদাদার কথার সমর্থনে। আর আজ থেকে ৬০ বছর পর যখন অবিনদাদার ৮৫ বছর বয়স হবে সেদিন আমরা পুরো ছবিটা দেখতে পাবো।
আর, শ্রীশ্রীঅবিনদাদা বলেছিলেন, "কি করবো ,কতটুকু করতে পারবো জানি না | তবে আমি বেঁচে থাকতে থাকতে অর্ধেক পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিয়ে যেতে চাই |" এর সমর্থনে বর্তমানে আমরা ভারত ছাড়া, বাংলাদেশ, নেপাল, বার্মা বর্তমানে মায়ানমার, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও আমেরিকাতেও সৎসঙ্গের পাঁচ হাজারেরও বেশি শাখা রয়েছে। আজ থেকে ৬০বছর পরে আমরা শ্রীশ্রীঅবিনদাদার কথার পুরো ছবিটা দেখতে পাবো। সেদিন আমি ও আমার মত বহু সৎসঙ্গীরা থাকবো না সেই দৃশ্য দেখার জন্য। হয়তো বা আবার নোতুন দেহ নিয়ে আসবো সেই দৃশ্য দেখবার জন্য। সৎসঙ্গ যে মূলত একটা আন্দোলন সেই সৎসঙ্গ আন্দোলনে হয়তো বা সক্রিয় ভূমিকা পালন করবো। পালন করবো স্মৃতিবাহী চেতনা নিয়ে।
তাই আসুন এই জন্মে যতদিন বেঁচে আছি স্মৃতিবাহী চেতনাকে স্ট্রং ক'রে তুলি তাঁর নামধ্যানের মধ্যে দিয়ে।
এখন আরও একটা প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই মনে ভেসে আসে। এই যে শ্রীশ্রীঅবিনদাদা বললেন, "আমি বেঁচে থাকতে থাকতে অর্ধেক পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিয়ে যেতে চাই।" এটা কিভাবে সম্ভব হবে? কিভাবে তিনি অর্ধেক পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিয়ে যাবেন? শ্রীশ্রীঠাকুর যেমন তাঁর সময়ের অনেক অনেক আগে এসেছিলেন। তাই তাঁর কথা বুঝতে মানুষের দেরী হচ্ছে। ঠিক তেমনি শ্রীশ্রীঅবিনদাদার পরিকল্পনাও তাই। যা তাঁর অনুগামী এবং অদীক্ষিত যুব সমাজের পক্ষেও বোঝা মুশকিল।
(লেখা ৫ই জানুয়ারী' ২৫)
No comments:
Post a Comment