Powered By Blogger

Thursday, August 15, 2024

প্রবন্ধঃ শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রচার ও সৎসঙ্গীরা।

এইগুলি কি ধরণের প্রচার। 'পরম পিতার সাথে যুক্ত হ'ন'  নামে যে পেজে এটা পোষ্ট করা হয়েছে তার এডমিনরা এবং যিনি পোষ্ট করেছেন তিনি কি মনে করেন যে সৎসঙ্গীরা সবাই বোকা? সৎসঙ্গীরা তাদের এই বদ উদ্দেশ্যকে সফল হ'তে দেবেন? জানি না এই পোষ্টের উদ্দেশ্য কি। দেখুন কিরকম সুপার ইম্পোজ করা ছবি। এডিট করা ছবি বানিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে ব্যর্থ সে চেষ্টা।



কিন্তু কমল হাসানের ছবি সহ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিশেষ বক্তব্য পেশের মাধ্যমে পোষ্ট করা এই ছবি দিয়ে কি এই পেজ মনে করে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে ধন্য করা যায় বা বদনাম করা যায়? সমাজের নাম করা লোক, প্রতিষ্ঠিত লোক, নামের পিছনে তকমা লাগানো লোক হ'লেই আর শেষ জীবনে সে ঠাকুরকে গ্রহণ করলেই ঠাকুর খুশী হন, ধন্য হন? নাকি দীক্ষা গ্রহণ করার পর সে ঠাকুরের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য জীবন উৎসর্গ করলে ঠাকুর খুশী হন? কোনটা? কোনটা মনে করেন এই পেজের প্রচারকেরা?


শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছিলেন, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, পুলিশ, নেতা, মন্ত্রী ইত্যাদি ইত্যাদি সমাজের বিশিষ্ট বিশিষ্ট লোকেদের কাছে মানুষ যেচে আসে আর আমাদের সাধারণ মানুষের কাছে যেচে যেতে হয়, সেধে সেধে কথা বলতে হয়। তাই সমাজের এলিটদের পক্ষে মানুষকে যাজন করা, মানুষকে বাঁচা-বাড়ার নিখুঁত পথ দেখিয়ে দেওয়া যতটা সহজ, তাঁদের কথা যতটা সহজে গ্রহণ করে মানুষ ততটাই কঠিন আমাদের মতন সাধারণ মানুষের পক্ষে মানুষকে যাজন করা ও মানুষকে জীবন বৃদ্ধির পথে, বাঁচা-বাড়ার পথে চালিত করা। তার ওপর আপনাদের মতো সত্যের পোশাক পড়া মিথ্যের দল আর নামগোত্রহীন অদ্ভুত জীবেদের উপস্থিতি যদি প্রকট হয়।


তাই সমাজের এলিটরা যদি এই সুযোগ সুবিধা পেয়েও শ্রীশ্রীঠাকুরকে নিজ স্বার্থে, নিজ বৃদ্ধি ও প্রতিষ্ঠার স্বার্থে কাজে লাগায় তাহ'লে সমাজের সাথে সাথে তারও ধ্বংস অনিবার্য। এখন সুপার ইম্পোজ করা এই ছবি সহ পোষ্ট কি উদ্দেশ্যে, ঠাকুরের বদনাম করার জন্য নাকি ঠাকুরের মহিমা কীর্তনের জন্য সেটা প্রচারকারীরা জানে আর জানে ঠাকুর স্বয়ং। তাই পেজ, পেজের এডমিন ও নামগোত্রহীন পোষ্টদাতা আপনারাও সাবধান হ'য়ে যান। বোকা হয়তো কিছু সৎসঙ্গী হবেন কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারবেন না। শেষের সেদিন কিন্তু আপনাদের ভয়ংকর।


কমল হাসানের ছবি 'VICRAM' তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ছবি হিসেবে হিট করা ও BOX OFFICE-এ সবচেয়ে বেশি টাকা রোজগার করার সঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুরকে জড়িয়ে ফেলার, শ্রীশ্রীঠাকুরের দীক্ষা নেওয়ার সম্পর্ক ও সত্যতা কোথায়? হ'তেই পারে অনেক কিছু যা কল্পনার অতীত। কার সাধনা কতটা পাওয়ারফুল তা সে নিজেই জানে না; কিন্তু জানে দয়ালের জন্য কার কতটা করা আছে। আর ছবি সফল হওয়া আর টাকা রোজগার করার সঙ্গে দীক্ষার সম্পর্ক ও সত্যতা থাকলেও তা এইভাবে সুপার ইম্পোজ করা ছবি বানিয়ে ক্যাশ করার মাধ্যমে ঠাকুরের বদনাম করা কি যায়? কেন প্রচারকারীরা ঠাকুরকে এইরকম সস্তা ব্যভিচারী পথে প্রচারের মাধ্যমে বদনাম করতে চাইছে? কেন সুযোগসন্ধানীরা শ্রীশ্রীঠাকুরকে নীচা দেখাবার জন্য সুকৌশলী বিরুদ্ধ প্রচার করছে?


সে যাই হ'ক, প্রচারকারীদের উদ্দেশ্যে জানাই, ধ'রেই নিলাম আপনার এই সুপার ইম্পোজ করা ছবি ইম্পোজ করা নয়। তথাপি কমল হাসান কি দীক্ষা নিয়ে ঠাকুরকে ধন্য করেছেন নাকি নিজে ধন্য হয়েছেন? কমল হাসান নিজে কি এই বিষয়ে কিছু বলেছেন? বললেও কি বলেছেন সেটা আগে তুলে ধরা উচিৎ ছিল নাকি? দেখাতে পারবেন প্রমাণ? এ সম্পর্কে তাঁর মুখ থেকে শোনা কথা পোষ্ট করা উচিৎ ছিল নাকি? কি মনে করেন কমল হাসান দীক্ষা নিলেই সৎসঙ্গ জগত আনন্দে লম্ফ দিয়ে ঝম্প মারবে? আর আপনারা আনন্দে নেত্য করবেন? দেখবেন নেত্য করতে করতে একসময় না পা হড়কে সলিল সমাধি হয়! কারণ সমাধির নিশ্চিত রাস্তা আপনারা নিজেরাই তৈরী ক'রে রেখেছেন। এই সুপার ইম্পোজ ক'রে ছবি বানিয়ে কাউকে হেনস্থা করা, অপমান করা ক্রাইমের মধ্যেই পড়ে এটা মাথায় রাখবেন।


এখন প্রশ্ন জাগে মনে, শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র এখন এত সস্তা হ'য়ে গেছেন প্রচারকারীরা মনে করে? টাকা রোজগারের সঙ্গে ঠাকুরের মহিমাকে জড়িয়ে এত মিথ্যে সস্তা প্রচার কি এটা প্রমাণ করে যে ঠাকুর অর্থ মান যশ রোজগারের মেশিন????????
শ্রীশ্রীঠাকুরের সত্যানুসরণের প্রথম বাণীটা কি ছিল? সেখানে কি বাণীটা এরকম নিম্নরূপ ছিল কি?
"অর্থ মান যশ ইত্যাদি পাওয়ার আশায় আমাকে ঠাকুর সাজিয়ে ভক্ত হও। সাবধান হ'তে যেও না, তোমার ঠাকুরত্ব জাগুক না জাগুক আমি তোমার ঠাকুর, তোমার কেন্দ্র।"


শ্রীশ্রীঠাকুরের জীব জগত জীবন কারণ সম্পর্কিত ২৫হাজার বাণী এবং কথোপকথন সমৃদ্ধ সব বই-এর কথাগুলি আজ মূল্যহীন হ'য়ে গেছে ব'লে মনে করছে বালখিল্য প্রচারকারীরা তাদের সস্তা প্রচারের ধাক্কায়!? বিশ্বের বিস্ময়ের বিস্ময় সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র কি আজ মানুষের কাছে আয়ের উপকরণ হ'য়ে দাঁড়িয়েছে মাত্র মনে করে পেজ ও পেজের এডমিন ও পোষ্টদাতা!?


তাঁর বাণী
"চলনহারা চরণপূজা
বন্ধ্যা পূজা সে জানিস" উল্টে গিয়ে
'চরণহারা চলনপূজা
বন্ধ্যা পূজা সে জানিস' হ'য়ে গেল?
আবার,
"মানুষ আপন টাকা পর
যত পারিস মানুষ ধর" পরিবর্তিত হ'য়ে
"টাকা আপন মানুষ পর
যত পারিস টাকা ধর" হ'য়ে গেছে!?
আর,
"নিজের ধান্ধায় থাকল যা'রা
জ্যান্ত মরা রইল তা'রা,
ইষ্টধান্ধায় ঘুরল যে
বাজিমাৎ করল সে।" এই বাণী এখন কি পরিবর্তিত হ'য়ে
'নিজের ধান্ধায় থাকল যা'রা
বাজিমাৎ করল তা'রা,
ইষ্টধান্ধায় ঘুরল যে
জ্যান্ত মরা রইল সে।' ---এই রূপ হ'লো?
তাহ'লে কি বর্তমান অর্থ-মান-যশ লাভে মত্ত পৃথিবীতে এখন আমাদের শ্রীশ্রীঠাকুরের সাধনায় সিদ্ধিলাভের পথে বাধা ও সাহায্য সম্পর্কিত বাণী উল্টে গিয়ে এমনতর হবে? যেমন,
"বৃত্তিস্বার্থী বহুরতি
বিচ্ছিন্নতায় টানে,
ইষ্টানুগ বহুরতি
তোলে ঊর্দ্ধপানে।" এই বাণী উল্টে গিয়ে নিম্নরূপে ধরা দিয়েছে?
'বৃত্তিস্বার্থী বহুরতি
তোলে ঊর্দ্ধপানে
ইষ্টানুগ বহুরতি
বিচ্ছিন্নতায় টানে।'-


কি বলেন 'পরম পিতার সাথে যুক্ত হ'ন' পেজ ও পেজের এডমিন এবং নামগোত্রহীন পোষ্টদাতা? এই উল্টো বাণীগুলো আপনাদের জন্য, সৎসঙ্গীদের জন্য নয়। আপনারা কি মনে করেন সৎসঙ্গীরা সবাই আপনাদের পেজে যা পোষ্ট হবে তাই গোগ্রাসে গিলবে? চেষ্টা ক'রে দেখতে পারেন। তবে আবার বলি, কৃত কর্মের নির্ম্মম ফলের জন্য তৈরী থাকুন।
( লেখা ১৫ই আগষ্ট, ২৩)






No comments:

Post a Comment