Powered By Blogger

Wednesday, August 28, 2024

প্রবন্ধঃ বাংলাদেশের ও কলকাতার বর্তমান আন্দোলন।

বাংলাদেশের বৈষম্যহীন ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে বেশ কিছু পেজ কলকাতার আন্দোলনে উৎসাহিত ও আন্দোলিত। তারা তাদের পেজে এই আন্দোলনের ছবি দিয়ে ক্যাপশান দিচ্ছেঃ

"ইন্ডিয়ার কলকাতাতেই উত্তাল। বাংলাদেশকে দেখে সবাই অনুসরণ করছে! ইন্ডিয়াতেও বাংলা ঝড়। 'বৈষম্যহীন ছাত্র আন্দোলন' পাকিস্তান শাখার পর ইন্ডিয়া শাখা তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। যেখানে অধিকারের লড়াই আছে, সেখানে আমরা আছি।"

বাংলাদেশের 'বৈষম্যহীন ছাত্র আন্দোলন' সমর্থিত কিছু পেজ কলকাতার আন্দোলনের পাশে থাকার, 'অধিকারের লড়াই যেখানে আছে, সেখানে তারা আছে' এই ঘোষণা ক'রে তারা আন্দোলনকে উৎসাহিত করছে। এই ধরণের মানসিকতা খুবই প্রশংসনীয় ও আনন্দের বিষয়।

কিন্তু তাদের আন্দোলনের ধরণ বিশ্ববাসী দেখলো, বিশ্বের ছাত্র সমাজ দেখলো। এখন বিশ্বের ছাত্র সমাজের দৃষ্টিভঙ্গীর কথা এখন সরিয়ে রাখলাম এবং পাকিস্তান ছাত্র সমাজ কোন দৃষ্টিভঙ্গিতে আন্দোলনকে সংগঠিত করেছে তাও এখানে বর্তমানে আলোচনা করতে চাই না। আলোচনা করতে চাই,

১) বৈষম্য কি ও বৈষম্যহীন আন্দোলন কি?
২) এই মুহুর্তে বর্তমানে কলকাতার বুকে আর জি কর কান্ডে যে আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে সেই আন্দোলন কি বর্তমান বাংলাদেশের আন্দোলন থেকে অনুপ্রাণিত? এবং সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ধরণকে, আন্দোলনের সংস্কৃতিকে কলকাতা আন্দোলন স্বীকার করে? মেনে নেয়? ও অনুসরণ করে?
এখন আলোচনা ক'রে দেখা যাক কি পাওয়া যায়।

১নং প্রশ্ন ছিল বৈষম্য কি?
উত্তরঃ বৈষম্য হ'লো শ্রেণী, জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ ইত্যাদির ভিত্তিতে অন্যদের সাথে দুর্ব্যবহার করা।

আর, বৈষম্যহীন আন্দোলন কি?
বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ বৈষম্যহীন আন্দোলনের কথা বলছে। এই বৈষম্যহীন আন্দোলন মানে এই আন্দোলনে শ্রেণী, জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষের সমান অধিকার। তা' এই বৈষম্যহীন আন্দোলন কি মুসলমান ছাত্র বা নাগরিকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ? নাকি বৈষম্যহীন আন্দোলন সমগ্র সম্প্রদায়ের আন্দোলন? সাম্প্রতিক বাংলাদেশে পট পরিবর্তনের ঘটনাবলী কি প্রমাণ করে? বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন বৈষম্যহীন আন্দোলন ছিল?
এক্ষেত্রে আমরা কি দেখলাম? বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধিত্বকারী ছাত্র ও নাগরিক সমাজ তাদের চোখে বৈষম্য সৃষ্টিকারী স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর পরই হিন্দুদের ওপর আক্রমণ ক'রে বৈষম্যহীন সমাজ উপহার দেওয়ার দৃষ্টান্ত বিশ্বজুড়ে স্থাপন করলেন।

২) আর, কলকাতার বুকে আর, জি, কর হাসপাতালের ঘটনাকে কেন্দ্র ক'রে যে আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে সেই আন্দোলন বর্তমান বাংলাদেশের আন্দোলন থেকে অনুপ্রাণিত কিনা, আন্দোলনের ধরণকে, আন্দোলনের সংস্কৃতিকে স্বীকার করে কিনা, মেনে নেয় কিনা, অনুসরণ ক'রে কিনা এই ২নং বিষয় নিয়ে বলতে পারি, অনুসরণ করার বিষয়টা কলকাতার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত, আন্দোলন সংগঠিত নেতাদের বিষয়। তারা আন্দোলন বিষয়টাকে কোন দিক থেকে দেখছে, কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে, গতিপ্রকৃতি কি হবে, কি ধরণের আন্দোলন হবে, আন্দোলনের সংস্কৃতি কি হবে, বাংলাদেশের আন্দোলনের মত হবে কিনা, সেই সংস্কৃতিকে ফলো করবে কিনা এই সমস্ত কলকাতার আন্দোলনের আয়োজকদের বিষয়।


আমরা সাধারণ মানুষ এই আন্দোলনের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান জানিয়ে, আন্দোলনের সফলতা কামনা করি।

আর, আসুন একবার পিছন ফিরে দেখে নিই সম্প্রতি বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ছবিটা, যেটাকে বলা হচ্ছে পাকিস্তান শাখার পর এখন ইন্ডিয়া শাখা নাকি তাদের কার্যক্রম অনুসরণ শুরু করেছে।

আমার জানতে ইচ্ছে করে যারা ফেসবুকে কলকাতার এই আন্দোলন নিয়ে সরব তাদের কাছে এবং বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে যারা কলকাতার এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে "যেখানে অধিকারের লড়াই আছে, সেখানে আমরা আছি"--এই কথা ব'লে ফেসবুকে সমর্থন জানিয়ে পোষ্ট করছে তাদের কাছেও জানতে চাইঃ
১) ইন্ডিয়া শাখা বলতে তারা কি মিন করছে?

২) এই শাখা কথার আড়ালে কি আছে? বাংলাদেশের গোপন ষড়যন্ত্র মূলক আন্দোলনের সঙ্গে কলকাতার আন্দোলনের সঙ্গে কি সম্পর্ক? দু'টো সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। একটা কোটা সংস্কারের আড়ালে সরকার পতনের ছক আর কলকাতার আন্দোলন নারীর ওপর পৈশাচিক অত্যাচার ক'রে ধর্ষণ ও নির্ম্মম হত্যার বিরুদ্ধে দোষীদের বিচারের দাবীতে গণরোষ। দু'টো কি এক হ'লো? এখানে শাখা শব্দ ব্যবহারের পিছনে কোন অভিসন্ধি, কোন ষড়যন্ত্র লুকিয়ে রয়েছে? এটা যেন ষড়যন্ত্রকারীরা ভুলে না যায় ভারতের মত বিশাল দেশের পেট থেকে জন্ম নেওয়া দেশ যে, হাতি শুকাতে শুকাতে গাধা হয় না, কিন্তু গাধা শুকাতে শুকাতে তার আর ট্রেস পাওয়া যায় না।


আসুন এবার দেখে নিই বাংলাদেশের আন্দোলনে অনুসরণ করার মত ছিলটা কি যা ইন্ডিয়া শাখা অনুসরণ করবে?
বাংলাদেশের আন্দোলন কি ছিল?
১) বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন ছিল মিথ্যে কোটা সংস্কারের আন্দোলন।


২) পরবর্তীতে ছাত্র আন্দোলন ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে গিয়ে হ'য়ে গেল সরকার পতনের আন্দোলন।


৩) আন্দোলনের নানা ইস্যু মুহুর্তে মুহুর্তে টুইষ্ট করলেও একটা মেইন ইস্যু ছিল সেটা হ'লো ভারত বিরোধীতা।

এবার দেখে নিই আন্দোলনের ধরণ কি রকম ছিল।

১) কোটা আন্দোলনের আড়ালে গিরগিটির রঙ বদলের চেয়েও মারাত্মক ভয়ংকর রঙ বদলের মাধ্যমে সরকার পতনের ছিল গোপন এজেন্ডা।
২) ১৯৭১-এর স্বাধীনতা আন্দোলনের লড়াইয়ের মধ্যমণি শেখ মুজিবরের মূর্তির মাথায় চড়ে পেচ্ছাপ করা, বাচ্চা বাচ্চা ছেলেদের দিয়ে শেখ মুজিবরের ছবিতে পেচ্ছাপ করানো, গলায় জুতোর মালা পড়ানো, মূর্তিকে লাথি মারা, জুতো দিয়ে মারা, মূর্তি ভেঙে পৈশাচিক উল্লাস করা, ভাঙ্গা মূর্তির মাথা নিয়ে জলকেলি করা।

৩) রবীন্দ্রনাথের মূর্তি ভেঙে অপমান ক'রে বৈষম্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করা, ছিল বই পোড়ানো।

৪) দেশজুড়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা ছিল ছাত্র আন্দোলনের ধরণ।

৫) মায়ের বয়সী প্রৌঢ়া মহিলার অন্তর্বাস, শায়া, ব্লাউজ নিয়ে প্রকাশ্যে পৈশাচিক সংস্কৃতির আমদানি করা ছিল আন্দোলনের ধরণ।

৬) আধুনিকা নারীদের মুখে, ছাত্রীসমাজের মুখে নারী হ'য়ে প্রৌঢ়া নারীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে পৈশাচিক উল্লাসে কানে গরম সীসা ঢেলে দেওয়ার মত অশ্লীল যৌন নোংরা শ্লোগান ছিল ছাত্র আন্দোলনের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি।

৭) ভারতের বিরুদ্ধে লাগাতার গালাগালির বন্যায় ভাসিয়ে দেওয়া অশ্লীল ও মিথ্যে শ্লোগান ইত্যাদি ধংসাত্মক বিষাক্ত অপসংস্কৃতি ছিল ছাত্র আন্দোলনের মূলধন।

এখন কতিপয় প্রশ্নঃ
১) এইরকম কৃষ্টি-সংস্কৃতির অনুসরণ করবে কলকাতার আন্দোলন?
কেননা আমরা এর আগে কলকাতার বুকে ব্রা আর জাঙ্গিয়া পড়া, প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন দেখেছি। এবারও কি তাই দেখবো? নিশ্চয়ই না।

২) বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনকারীদের এত উৎসাহ কেন পাকিস্তানের পরে ভারতের কলকাতার এই আন্দোলনে? কি উদ্দেশ্য? কি গোপন এজেন্ডা?

৩) কলকাতার আন্দোলন কি তাদের কাছে পরামর্শ চেয়েছে? 'গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল'-এর মানসিকতা বাংলাদেশের বাঙালীদের বৈশিষ্ট্য?
একথা কখনোই ভাবার অবকাশ নেই বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলন দুনিয়ার বুকে দৃষ্টান্ত স্থাপনের মত উচ্চমার্গের উন্নত কৃষ্টি-সংস্কৃতিতে ভরপুর আন্দোলন ছিল যা কলকাতার ছাত্র ও নাগরিক সমাজ গ্রহণ করবে।

যাই হ'ক বাংলাদেশের বর্তমান গণ অভ্যুত্থানের সৈনিকদের, বাংলাদেশের বর্তমান উপদেষ্টামন্ডলী্দের ও প্রধানের নানারকম স্টেট্মেন্ট দেখে একটা কথায় মনে পড়ে সেই ব্যাঙ মায়ের গল্প।
( লেখা ২৬শে আগষ্ট'২৪)

বিচিত্রা ২৮

ফাঁকিবাজি ভক্তিঃ

আমার প্রাণের ঠাকুর তুমি আমায় তোমার মনের মতো ক'রে গড়ে নাও।
দয়াল, ঠাকুর তুমি আমার হাতটি ধরো, তোমার চরণে আমায় দাও ঠাঁই।
দয়াল, তুমি ছাড়া আমি কিছু জানি না, দয়াল তুমি ছাড়া আমি কিছু বুঝি না।
দয়াল, তুমি ছাড়া আর কিছু নেই, নেই কেউ।
দয়াল তুমি সত্য, বাকী সব মিথ্যা, ফেউ।

দয়াল, আজ যা কিছু আছে আমার সব তোমার দয়ায়,
বাঁধা পড়ে আছি আমি তাদের মায়ায়।

দয়াল, সংসার ভুলে যত তোমার কাছে ছুটে যেতে চাই
সংসার যেন অক্টোপাশ আমায় আষ্টেপৃষ্টে জড়ায়।

দয়াল ঠাকুর, তুমি আমায় রক্ষা করো, রক্ষা করো আমায়, তুমি ছাড়া আমার আর কেউ নাই।

অজুহাতকে আশ্রয় ক'রে কথার স্রোতে ভেসে ফাঁকিবাজি ভক্তিকে আড়াল করা যেতে পারে কিন্তু সত্যকে নয়।

ঠাকুরের কথার ভুল ব্যাখ্যা ক'রে নিজের ফাঁকিবাজি ভক্তিকে আড়াল করা যেতে পারে কিন্তু সত্যকে নয়।

ঠাকুর আমি কিছুই চাই না, শুধুই তোমাকে চাই, কারণ তুমি আমার আয়ের উপকরণ তাই।

দয়াল, অর্থ-মান-যশ-আত্মপ্রতিষ্ঠা কিছুই চাই না, শুধু তোমার প্রচারের জন্য চাই সমাজসেবার প্রচার।

নিজের অন্যায়, নিজের দোষ, ত্রুটিকে লালনপালন করি, যত্ন করি, অক্সিজেন যোগাই আর বলি, দয়াল! মুক্ত করো।

মনেতে কপটতা, চাতুরী লুকিয়ে রাখি আর সযত্নে চাষ করি আর মুখে রাতদিন বলি, দয়াল! দয়াল!! আমাকে দয়া করো।

আমি অন্ধকারের যাত্রী, আমায় আলোর দৃষ্টি দাও। আমি তোমার মন্দিরে বসি, আমায় একটু জায়গা দাও।

কবিতা/ গানঃ আমি আলোর পথের যাত্রী।

আমি আলোর পথের যাত্রী
প্রভু আলোর বৃষ্টি দাও.
আমার দু'চোখে আলো
তুমি আলোর ঝর্ণা ঝরাও।
প্রভু আলোর বৃষ্টি দাও।
আমি আলোর পথের যাত্রী
প্রভু আলোর বৃষ্টি দাও।

তোমার অভয় বাণী
জাগালো হৃদয়খানি
জানি যে পথের দিশা
তুমি দেখা দাও
প্রভু আলোর বৃষ্টি দাও।
আমি আলোর পথের যাত্রী
প্রভু আলোর বৃষ্টি দাও।

আমি যে ধন্য অনন্য
তোমারই প্রেমে আমি বন্য।
প্রেমময় তুমি
প্রেম ভালোবাসা ঝরাও
প্রভু আলোর বৃষ্টি দাও।
আমি আলোর পথের যাত্রী
প্রভু আলোর বৃষ্টি দাও।

Sunday, August 25, 2024

কবিতা / সাতরঙা রঙ ঝড়ে!

ভাগ্যিস কেউ কখনো বলেনি 'এসো'
ভাগ্যিস তাই যাওয়া হয়নি কোথাও
আর তাই নিশ্চিত 'ভুল' নিয়ে যায়নি
আমায় ভুলিয়ে ভুলভুলাইয়ার আঙিনায়!!
জানালায় চোখ রেখে বসে থাকা যায়
আদি অনন্তকাল সৃষ্টির পানে চেয়ে,
অমল' হ'য়ে যদি না বসো?
'বিশের' যৌবন ভরা থাকে বিষে।
অমৃত হ'য়ে যায় বিষ তাঁর পরশে!
কার সে ডাক বন্ধু? যে ডাকে সুদীর্ঘ
পথ হ'য়ে যায় নাতিদীর্ঘ!?
কয়েকটা পদক্ষেপ পৌঁছে দেয়
দূর-প্রসারিত দুর্গম পথ শেষে??
কার সে ডাক? যে ডাকে এত আকর্ষণ!!!
পলক গতিতে চলে যাও আসমুদ্র হিমাচল
মাড়িয়ে নির্দ্বিধায়! পার হ'য়ে যাও
ঝোড়ো হাওয়াকে সাথী ক'রে
অবহেলায় অবলীলায়! জল ও স্থল!!!!
ভাগ্যিস কেউ কখনো বলেনি 'চলো'
এমন ক'রে আমায়!
অস্থির চঞ্চল আমি ঐ নিশিডাকে
ভাগ্যিস তাই যায়নি ভেসে
নিশ্চিত নরকের আঙ্গিনায়।
আর যদি আসে তাঁর ডাক !?
প্রশ্নহীন, যুক্তিহীন ঝাঁপ
দেবো মরণ স্তব্দ ক'রে!!!!!!!!!!
জীবন খুঁজে পাবো সেথায়
যেথায় রামধনুর সাতরঙা রঙ ঝড়ে!!
( লেখা ২৫শে আগষ্ট'২০১৪)




উপলব্ধিঃ বাঙালী ও তার বাঙালীত্ব।

প্রশ্নঃ বাঙালি চিনবে কি দিয়ে?
উত্তরঃ তার খিল্লি চরিত্র দিয়ে।
প্রশ্নঃ বাঙ্গালী কাকে বলে?
উত্তরঃ যে আংলিতে এক্সপার্ট।
প্রশ্নঃ বাঙ্গালীর রকম কি?
উত্তরঃ বেশরম।
প্রশ্নঃ বাঙ্গালীর স্বভাব কেমন?
উত্তরঃ চুলকুনি স্বভাব।
প্রশ্নঃ বাঙালীর কিসে সুখ?
উত্তরঃ বিকৃত করিয়া মুখ মানুষের পিছনে চুলকাইতে বড় সুখ।
প্রশ্নঃ বাঙ্গালীর কিসে আরাম?
উত্তরঃ হারাম বিষয়ে আরাম।
প্রশ্নঃ বাঙালীর মান কিসে রক্ষা হয়?
উত্তরঃ অন্যকে নীচা দেখিয়ে আর অপমান করে।
প্রশ্নঃ বাঙালি বাঁচে কিসে?
উত্তরঃ পরনিন্দা ও পরচর্চায়।
প্রশ্নঃ বাঙালীর বেড়ে ওঠার ভিত্তি কি?
উত্তরঃ অকৃতজ্ঞতা আর বেইমানী।
প্রশ্নঃ বাঙালিকে কেন কাঙালি বলে?
উত্তরঃ তার হ্যাংলামির কারণে।
প্রশ্নঃ বাঙালীর বাঙালীত্ব কিসে?
উত্তরঃ উপরিউক্ত বিষয়ে।
কাউকে নিয়ে মজা করার, কাউকে নীচা দেখাবার, পিছন দিয়ে লাল, নীল, সাদা সুতো বের করার একটা সীমা আছে। খিল্লিকে হাতিয়ার ক'রে কি ক'রে খিল্লির বিরোধিতার নামে চরম উদোম খিল্লি করতে হয় আর সেগুলিকে দক্ষতার সঙ্গে বাজারি ক'রে তুলতে হয় সে সম্পর্কে বাঙালীরাই পৃথিবীর মধ্যে যে এক্সপার্ট এবং এ বিষয়ে সেরা জাত সেটা বাঙ্গালী চিরকাল প্রমাণ দিয়ে এসেছে। এটাই বাঙ্গালিদের প্রধান চরিত্র। শ্রীশ্রীঠাকুরকে নিয়ে নানারকম অশ্লীল পোষ্টও তার প্রমাণ দিয়ে বাঙালীর মান রক্ষা করেছে। আবার ব্যতিক্রমী বাঙালীও আছে বলে আজও সূর্য পূর্ব দিকে ওঠে আর পশ্চিমদিকে অস্ত যায়। তবে সেদিন সমাগত যেদিন বাঙালীর সুর্য চিরতরে অস্ত যাবে আর তার রুপরেখাও তৈরী ক'রে চলেছে নীরবে নিভৃতে বিধাতা। তবে কোনওকিছু শেষ না হ'লে নতুন ক'রে শুরু হয় না, হয় না নতুনের উত্থান। তবে হ'ক শালা শেষ। বাঁদরের দাঁত খিঁচানি খেয়ে মরার চেয়ে পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীরামের বাণে মরাই ভালো।------প্রবি। ( লেখা ২৫শে আগষ্ট'২০১৮)

Saturday, August 24, 2024

বিচিত্রা ২৭

শাবাশ! প্রাক্তন আইনমন্ত্রী কাপিল শিবাল, শাবাশ!! তিন তালাকের পক্ষের আইনজীবী কি পেশার গোলাম? মানবতার চেয়েও পেশার স্থান ঊর্ধ্বে?


মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সময় থেকে তিন তালাক বিধান ইসলাম ধর্মের অংশ হয়ে আছে। মহানবী কি পুরুষদের পক্ষে একতরফা বিধান দিয়েছিলেন?

"মহানবী হজরত মহম্মদ (সা)-এর সময় থেকে এই বিধান ইসলাম ধর্মের অঙ্গ হ'য়ে আছে।"---আদালতে ল' বোর্ড। মহানবী কি পুরুষদের পক্ষেই এই বিধান দিয়েছিলেন?

তিন তালাক কি হজরত মহম্মদের বিধান? পুরুষদের পক্ষে তিনি এই বিধান দিয়েছিলেন? কোরাণে কি এই কথা লেখা আছে?

"বিবাহ কর কিন্তু তালাক দিও না, কারণ উহাতে আরশ কম্পিত হয়।" ছগির।
"বৈধ হওয়া সত্ত্বেও যাহা আল্লার নিকট অত্যন্ত অপ্রিয়, তাহা তালাক।"
আঃ দায়ুদ।
"In a saying of the Holy Prophet, divorce is called the most hateful to Allah of all things allowed." Moulvi Mahammad.
"তালাকের চেয়ে বড় পাপ আর কিছু নেই।" হজরত মহম্মদ।

'তিন তালাক ভারতে নিষিদ্ধ' সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে সুপ্রিম ফাদারের আনন্দাশ্রুতে সিক্ত আশীর্বাদ বর্ষিত হচ্ছে বিচারকদের মাথায়।
রাত গভীর ঘুম আসে না চোখে। মন বলে, এসো প্রভু থাকো মোর বুকে আর সবাইকে রাখো তুমি সুখে। প্রার্থনা এই যেন কেউ না রয় দুঃখে।
আফগানিস্তানের অমানবিক ঘটনা প্রমাণ করবে ভারত বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম মানবিক দেশ! আর্য ভারত আবার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং গোটা বিশ্বকে একদিন পথ দেখাবে যে বন্দুকের নল নয় প্রেম ভালোবাসায় ভরা হৃদয়-ই বেঁচে থাকার ও বেড়ে ওঠার উৎস। শুধু সময়ের অপেক্ষা বন্ধু।
আফগানিস্তানের ঘটনার জেরে ভারত আজ একা? কেউ পাশে নেই?

বিশ্বের বিগ ব্রাদাররা আজ 'আমার গায়ে আচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' দর্শনে চুপ!?
আফগানিস্তানে কে মরলো, কে বাঁচলো ভার মে যায় তত্ত্বে বিশ্বাসী!?

একবিংশ শতাব্দীর সভ্যতা সংস্কৃতি এত নিষ্ঠুর, এত অমানবিক!?

মধ্যযুগীয় বর্বরতা অসভ্যতা অপসংস্কৃতি কি এর থেকেও ভয়াবহ অমানবিক ছিল!?
গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় স্বাধীন মত প্রকাশের মাধ্যমে ক্ষমতা লাভ কি অসভ্যতা অপসংস্কৃতির নিদর্শন!

কোন পৃথিবীতে বাস করছি!? সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ সৃষ্টিকর্তার কাছেই আফগানিস্তানের অন্যায় অমানবিক কাজের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করছে!!!

ঈশ্বর, আল্লা, গড ব'লে কি সত্যিই কিছু আছে!? যদি থেকে থাকে তবে সত্যের জয় হবেই। ভারত দাঁড়িয়ে আছে সেই সত্যের ওপর! আজ নয়তো কাল গোটা বিশ্বকে গ্রাস ক'রে নেবে এই সত্য! হে ভারত! ওয়েট এন্ড সি!!

সময় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত নিজেকে যেন মানিয়ে নিয়ে চলতে পারি সেই চলার শক্তি দাও দয়াল। পরিবর্তিত সময়ের সময় তুমি আমার সঙ্গে থেকো দয়াল।

মহাসিন্ধুর ওপার থেকে কি সঙ্গীত ভেসে আসে? তা কি শুনতে পাও?
মিলনের সঙ্গীত। এসো সৎসঙ্গী কান পেতে শোনো ঐ সঙ্গীত আর মিলিত হও। প্রবি।
( লেখা ২৪শে আগষ্ট'২০২৪)





কবিতা / গানঃ নবরূপে তুমি।

 


( লেখা ২৪শে আগষ্ট' ২০১৩ ) ( কোরা কাগজ থা  ইয়ে মন মেরা---- গানের সুরে।)


কবিতা/গানঃ চাঁদ কেন ঐ মুখের পরে

 

পাগল বুঝি হ'লাম আমি
পাগল আমি ঐ কায়াতে
তোমার দয়ায় সব পেয়েছি
প্রাণ সঁপেছি ঐ হাসিতে!--প্রবি।
( লেখা ২৪শে আগষ্ট'২০২০)


প্রবন্ধঃ চন্দ্রযান ৩-এর অবতরণ ও সমালোচনা।

 


অনেক উৎকণ্ঠার অবসান হ'লো। প্রায় ৪০দিন পর ভারতের চন্দ্রযান ৩ সফলভাবে চাঁদের রহস্যে ঘেরা দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করলো। সন্ধ্যে ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের মাটি স্পর্শ করে ইতিহাস গড়ে চন্দ্রযান-৩। চন্দ্রপৃষ্ঠের সেই অনাবিষ্কৃত দক্ষিণ মেরুর বুকে প্রথম পা রাখলো বিশ্বের প্রথম দেশ ভারত।

ঠিক এরকম একটা আনন্দের সময়ও সেই রাজনীতি আর কুৎসাকে টেনে আনতে হ'লো! ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা ক'রে এক বাঙ্গালীর প্রতিবেদন চোখে পড়লো। একজন বাঙ্গালী সমালোচককে প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরুর ইসরো গঠনের দূরদর্শিতার প্রমাণ দিতে গিয়ে ও প্রশংসা করতে গিয়ে আর একজন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুৎসা করতে হ'লো! দু'জনেই তো দেশের প্রধানমন্ত্রী আর সমালোচকও এই দেশেরই নাগরিক! সমালোচক যার প্রশংসা করলেন তার অনুগামীরা সমালোচককে বাহবা দেবে আর যার নিন্দা, কুৎসা, অপমান, অশ্রদ্ধা করলেন তার অনুগামীরা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই অসম্মান ও অপমানজনক কুৎসা প্রচারের জন্য কি সমালোচককে বাহবা দেবে? আজকের এই সফলতা আর আনন্দের দিনেও এই ব্যবহার থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারলেন না সমালোচকরা? আজকের দিনেই দেশের প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করতে হ'লো? এই যে ইসরো আজ এতবড় সাফল্য অর্জন করলো এই সাফল্য অর্জন করার পিছনে দেশের বর্তমান সরকারের কোনও অবদান নেই!? সবটাই ইসরোর? সবটাই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরুর? বিজ্ঞান সাধনাকে যদি বর্তমান সরকার মদদ না দিতো, উৎসাহ না দিতো তাহ'লে ইসরো এগোতে পারতো? কাজ করতে পারতো? গত চন্দ্রযান ২ মিশন ব্যর্থতার সময় যখন ইসরোর চেয়ারম্যান কে সিভান কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তখন সান্ত্বনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইসরোর কন্ট্রোলরুমে নরেন্দ্র মোদী্র বুকে কান্নায় ভেঙে পড়া ইসরোর চেয়ারম্যান কে সিভানকে তিনি আশ্বাস দিয়ে সেদিন বলেছিলেন, "এটা জীবনের উত্থান, পতন। কম কৃতিত্ব নয় এটা। আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি । আপনারা সবাই দেশ, বিজ্ঞান ও মানুষের জন্য দারুণ কাজ করেছেন। আমি সবরকমভাবে আপনাদের সঙ্গে রয়েছি। এগিয়ে চলুন সাহসের সঙ্গে।"

সেদিনের কথা রেখেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীজী। তিনি যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিতেন তাহ'লে এৎ অল্প সময় ৪ বছরের মধ্যেই এই আশ্চর্য সফলতা কি সম্ভব হ'তো? হে সমালোচক! আপনার চোখ সমালোচনার বিষ বাস্পে ঝাপসা হ'য়ে আছে আপনি বুঝতে পারবেন না বা দেখতে পারবেন না আপনার ঘোলা ঘিলু আর সমালোচনার ঘোলা চোখে এই উত্থান।

আর, এই ঈশ্বর আরাধনা আর বিজ্ঞানের মহামিলনও ভালো লাগেনি ঈশ্বর ও ধর্ম্ম অবিশ্বাসীদের। তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গে ইসরোর বিজ্ঞানীদেরও এক হাত নিয়েছেন। ইসরোর বিজ্ঞানীদের উচিত দেশের ভালোমন্দের ভার তো এদের হাতে আছেই সঙ্গে এই সবজান্তা সমালোচকদের হাতে ইসরোর দায়িত্বও ছেড়ে দেওয়া।
২০১৯-এর পর ৪ বছর যেতে না যেতেই ২০২৩-এ এই সাফল্য! সেদিন ব্যর্থতার সময় দেশের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন? আর আজ ৪বছর পরে কে প্রধানমন্ত্রী?
সমালোচকের মহামূল্যবান কথাঃ "বেচারী মোদীজি সাব্। অশিক্ষিত, অকর্মণ্য, ফ্যাসিস্ট, হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটি ছাড়া কিছু প্রতিষ্ঠা করতে না পারা, দেশের সম্পত্তি বেচে খাওয়া প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।"
আজকের আনন্দের দিনেও সমালোচক দেশের প্রধানমন্ত্রীকে চরম অপমান ক'রে ব্যঙ্গ ক'রে আরও বললেন "তাঁকে অসম্মান করাটা অনুচিত, কারণ, সেই সংবিধানই অপদার্থকেও প্রধানমন্ত্রী কোথাও বা মূখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ দেয়। আপনি এও লিখলেন "এই জন্যই দেশের অভিভাবক'কে শিক্ষিত হওয়া দরকার যারা দেশবাসীকে সাথে নিয়ে পথ দেখাতে পারবে।"
আপনাকে আমাদের এই আনন্দের দিনে একজন নাগরিক হিসেবে জিজ্ঞাস্য।
১) আপনি দেশে শিক্ষিত অভিভাবকের প্রয়োজনের কথা বলেছেন সেই শিক্ষিত অভিভাবক কে?
২) কে সেই শিক্ষিত অভিভাবক যার আপনার মত অশ্লীল ভাষায় সমালোচনা করার কোনও সমালোচক দেশবাসী নেই?
৩) সব দলের সবাই তো একে অপরকে এই আনন্দের দিনেও আপনার কাঁকড়া মানসিকতার মতো নির্লজ্জভাবে পিছনে টেনে চলেছে, আক্রমণ ক'রে চলেছে।
৪) তা কোন দেশবাসীকে সাথে নিয়ে পথ দেখাবে সেই শিক্ষিত অভিভাবক? আপনাদের মতো দেশবাসীদের নিয়ে?
৫) কে সেই শিক্ষিত অভিভাবক? আপনি ও আপনারা?
৬) বুক ভরা হিংসা দিয়ে কি ভারতের বিজ্ঞান চর্চা, শিক্ষার উৎকর্ষতাকে উদযাপন করা যায়?
৭) প্রধানমন্ত্রীকে অসম্মান করাটা অনুচিত ব'লে ব্যঙ্গ ক'রে তাঁকে অপদার্থ আখ্যা দিয়ে নিজেকে কি পদার্থ ব'লে প্রমাণ করলেন? প্রধানমন্ত্রী না হয় অপদার্থ আপনি? আপনার এই ভাষা সভ্য জগতের মূল্যবান রত্ন পদার্থের ভাষা? নিজেকে নিজের ছোট করা কি নয় এই মানসিকতা?
যাই হ'ক, আনন্দই হ'ক আর নিরানন্দের দিনই হ'ক আমাদের সমালোচনা, কুৎসা, নিন্দা, গালাগালি, অশ্রদ্ধা, অপমান করার ঘৃণ্য স্বভাব যাবে না ম'লে। আজকের দিনেও মুখ দিয়ে গু বের করতে হ'লো! আর বাঙ্গালী এতে সিদ্ধহস্ত।-
( রচনাঃ ২৪শে আগষ্ট' ২০২৩)

Friday, August 23, 2024

বিচিত্রা ২৬

তিন তালাক প্রশ্নে ৭০ বছর পর ভারতের ঘুম ভাঙ্গলো!?
যাক "কোনোদিন বা কখনও না হওয়ার চেয়ে দেরীতে হওয়াও ভালো।"
মুসলিম নাগরিকরা কি ভারতের সংবিধান বহির্ভূত ক্ষমতার অধিকারী? মুসলিম পার্সোনাল ল' বোর্ড কি মুসলিমদের অভিভাবক?
মুসলিমরা কি বলে?
ভারতের সংবিধানকে সমস্ত সম্প্রদায়কে সম্মান করতে হবে।

তিন তালাকের পক্ষে মুসলিম পার্সোনাল ল' বোর্ডের পেশ করা প্রস্তাব সুপ্রিম কোর্টে খারিজ। সুপ্রিম কোর্ট আক্ষরিক অর্থেই সুপ্রিম।
" তিন তালাক প্রশ্নে কোরান নির্দেশিত বিধানকে নিষিদ্ধ করার অধিকার দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নেই।" মুসলিম নেতা। সীমাহীন ঔদ্ধত্বের পরিচয়?
"তালাক ঈশ্বরের বুক কাঁপিয়ে দেয়, তাঁর সিংহাসন টলে ওঠে।" কোরান।
"তিন তালাক প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের কোনও অধিকার নেই।"
সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। একে কি বলবো? সাহস না দুঃসাহস?
বাংলাদেশে বাংলাদেশ জন্মের সময় থেকে তিন তালাক নিষিদ্ধ। আর ভারতে ৭০ বছর পর নিষিদ্ধ হ'লো তিন তালাক!!!!!!
কথায় আছে,
হাতি চলে বাজার মে কুত্তা ভোঁকে হাজার!
সাধুও কো দুর্ভাবন নেহি, যব ঘিরে সংসার!!
ঠিক তেমনি,
সৎসঙ্গ তেজ দওরে দুনিয়ামে দেখতে রহে লোগ লাখো ক্ররোর ইয়ার!
সৎসঙ্গীও কো চিন্তন নেহি যব বিরোধ মে খাড়া হো যায় বাজারী হাজার!---
বন্দুকের নলই ক্ষমতা দখলের উৎস?
নাকি
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ভোটের মাধ্যমই ক্ষমতা দখলের উৎস?
সরকার পরিবর্তনের জন্য কি প্রয়োজন?
গুলি, বোমা, হত্যা, ধর্ষণ, নারকীয় অত্যাচার!?
নাকি গনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ?
যখন শান্তিপূর্ণ জনজীবন আতংকগ্রস্ত হ'য়ে পড়ে, বিপর্যস্ত ও নৃশংস অত্যাচার নেবে আসে জনজীবনে, নারী, শিশু, বৃদ্ধ যখন অসহায় হ'য়ে পড়ে অকাল মৃত্যুর ভয়ে তখন বিশ্বের অভিভাবকবৃন্দ
অর্থাৎ তাবড়-তাবড় শক্তিশালী রাষ্টের নেতৃবৃন্দ বিন্দাস তাত্ত্বিক আমেজে আলোচনায় মগ্ন!!!!!!
জীবন জুড়ে দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, টেনশন মানে পরমপিতার প্রতি বিশ্বাস, নির্ভরতা নেই আর থাকলেও তা কম। আসুন প্রার্থনা করি, হে দয়াল! দয়া করো তোমার প্রতি যেন সমর্পিত প্রাণ হ'তে পারি।
দয়ালকে ভালোবাসি তাই শত্রুমিত্র সবাইকে ভালোবাসি। মিত্রকে ভালোবাসি শত্রুকে ভালোবাসি না মানে দয়ালকে ভালোবাসি না।
( লেখা ২৩শে আগষ্ট ২০১৭/২০২১/২২)

অভিজ্ঞতাঃ করোনার আবহে আমরা সবাই......... (২)

করোনার আবহে আমরা সবাই অদ্ভুত মানসিকতার শিকার! শিকার মানুষ (?) পশু (?) সবাই! কে মানুষ!? কে পশু!?

আবার আর এক ব্যাংকের অভিজ্ঞতা নিয়ে হাজির হলাম।

হাজির হ'লাম ব্যাংকে ১৫এইচ/১৫জি জমা দেওয়ার বিষয়ে। দীর্ঘ সময় লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ১৫এইচ/১৫জি ফর্ম জমা দেওয়ার জন্য যখন নির্দিষ্ট টেবিলে পৌঁছে গেলাম তখন সেই টেবিল ক্লার্ক বললেন, আর জমা নেওয়া হবে না। অনেক অনুনয় বিনয় করার পর সেই ক্লার্ক বললেন, হবে না! ৩১শে জুলাই লাস্ট ডেট চলে গেছে। আমি অবাক হ'য়ে বললাম, আপনি বলছেন ডেট চলে গেছে তাহলে আমাকে ১৫এইচ দেওয়া হ'লো কেন!? আমাকে ঐ ব্যাংক কর্মী বললেন, আপনাকে কবে দিয়েছে? আমি বললাম ঐ দিনই! সে কথা শুনে ব্যাংক কর্মী অবাক বিস্ময়ে ব'লে উঠলেন, তাহলে বলতে পারবো না। এখানে আমি জমা নিতে পারবো না। আপনি শুধু শুধু দাঁড়িয়ে আছেন! আমরা নিলেও কম্পিউটার সিস্টেম নেবে না! আমাদের হাতে কিছু নেই। তাকে যখন বোঝাবার চেষ্টা করছিলাম আমার পরিস্থিতি, সময়মত আসতে না পারার কারণ কিংবা ১৫এইচ ফর্ম ব্যাংক থেকেই বা ডেট চলে যাবার পর কেন দিল, কেনই বা আপনাদের মধ্যে কমিউনিকেশনের গ্যাপ ইত্যাদি তখন লাইনে দাঁড়ানো গ্রাহকের মধ্যে একজন আমার সঙ্গে কথা শেষ হওয়ার আগেই তার কাজের ব্যাপারে কথা শুরু ক'রে দিল! আমার সমস্যার সমাধান হ'লো কি না হ'লো তার প্রয়োজন বোধই করলো না। আমাকে সরতে ব'লে আমাকে ডিঙিয়ে সামনে এগিয়ে গেল। আর সরে দাঁড়াতে ব'লে এগিয়ে গেল এমনভাবে যেন সংক্রামক রোগীকে সযত্নে এড়িয়ে এগিয়ে গেল! আর পাশের আর একজন বিরক্ত হ'য়ে বললো, টাইম পার হ'য়ে গেছে উনি কি করবেন? উনার তো কিছু করার নেই। আমি বললাম, কিছু করার নেই তো ফর্ম দিলো কি ক'রে? অর্ডার না থাকলে কি ফর্ম ডিস্ট্রিবিউশন করা যায়? তা উনি জানেন কি না জানেন সেটা তো আমার দেখার কথা নয়! উত্তরে লাইনে দাঁড়ানো গ্রাহক ভদ্রলোক ঐ ব্যাংক কর্মীর সমর্থনে বললেন, সিস্টেম যদি না নেয় তাহলে উনি কি করবেন? একটা গ্রাহক আর একটা গ্রাহকের অসুবিধা বোঝার প্রয়োজনই মনে করলো না, ব্যাংক কর্মীকে খুশি করতে ব্যস্ত হ'য়ে পড়েছে! আমি বললাম, আপনার যেদিন এই সমস্যা হবে, যেদিন আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন সেদিন বুঝবেন আপনি কোথায় কষ্ট! সেদিন বুঝবেন অসহযোগিতার যন্ত্রণা! মুখখানা এমন করলো যেন একরাশ বিরক্তি ঝরে পড়লো! তারপর বললো, আরে দাদা উনি কি করবেন? ট্যাক্স সোজা চলে যায় সরকারের ঘরে। আমি বললাম, আপনি কি জানেন আগে এই টাকা ব্যাংকের কাছেই থাকতো অনেক মাস তারপর যাদের কোনো কারণে ১৫জি, ১৫এইচ জমা পড়তে দেরী হতো তারা জমা দেওয়ার পর টাকা ফেরত পেয়ে যেত। কিন্তু এখন এই সুযোগ থেকে গ্রাহকরা বঞ্চিত! গ্রাহকদের এই সুবিধা ছিল তা আপনি জানেন? আগে গ্রাহক হ'য়ে জানুন তারপর ব্যাংক কর্মীর হ'য়ে কথা ব'লে তাকে খুশি করুন। কেন বঞ্চিত করা হ'লো? কেন, কি উদ্দেশ্যে টাকা কাটার সঙ্গে সঙ্গে এই টাকা ব্যাংকের অধিকারে থাকে না!? কেন টাকা কাটার সঙ্গে সঙ্গে টাকা সরাসরি সরকারী কোষাগারে চলে যায়? তারপরে ইনকাম ট্যাক্স ফাইল ক'রে সেই টাকা ফেরত নিতে কেন বয়স্ক সাধারণ মানুষকে ঝামেলা পোয়াতে হয়? আর যদি ইনকাম ট্যাক্স ফাইল জমা না দেয় সেই টাকা আর ফেরত পাওয়া যায় না! বেশিরভাগ একেবারে সাধারণ গ্রাহকদের ক্ষেত্রে এইটাই হ'য়ে থাকে। কেন গ্রাহকদের সঙ্গে এই প্রতারণা!? আর এখন যখন ভয়ঙ্কর কোভিট ১৯ পরিস্থিতি তো এইসময়েই তো কিছু বিশেষ একটা ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কতজন দূর দুরান্তে কাজের জন্য, চিকিৎসার জন্য, ব্যবসার জন্য, চাকরির জন্য ইত্যাদি বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা মানুষ ট্রেন বন্ধ থাকার জন্য আসতে পারছে না তাদের ক্ষেত্রে কি হবে? সবাই তো আর নেটওয়ার্ক ব্যাংকিং পরিষেবা ব্যাপারটা জানে না, জানলে বোঝেও না, তাদের ক্ষেত্রে কি হবে? আপনার হ'লে কি করতেন?
এইভাবে কথা বলার সময় দেখলাম তাদের কাছে উত্তর দেবার কিছু নেই, আছে শুধু একরাশ বিরক্তি! বুঝলাম চিরাচরিত চাটুকারী স্বভাবের সঙ্গে সঙ্গে বিরক্তির কারণও এই করোনা নামক রোগের প্রাদুর্ভাব। আপাত সামান্য ইনফ্লুয়েঞ্জার মত উপসর্গ নিয়ে হাজির করোনা মানুষের কাছে হ'য়ে উঠেছে বিভীষিকাময়! এইসময় চেনা যাচ্ছে মানুষের চরিত্র!

তারপর অসহায়ের মত ফিরে যাবার সময় কি মনে হ'লো ম্যানেজারের ঘরে ঢুকে পড়লাম। তাঁকে সবিনয়ে বিষয়টা জানিয়ে সাহায্য চাইলে তিনি সব শুনে বললেন, আপনি আসতে না পারলেও নেটওয়ার্ক পরিষেবার মাধ্যমে মেল ক'রে দিলে আমরা পেয়ে যেতাম। আপনি তাই করলেন না কেন? আমি বললাম, দেখুন সবাই তো আর নেট ব্যবহার করতে জানে না আর সবসময় কি এফ ডি নাম্বার মনে থাকে নাকি এফ ডি কাগজ সাথে থাকে? তাই সম্ভব হ'য়ে ওঠেনি। যদি আপনি একটু বিবেচনা করেন। সব শুনে ম্যানেজার পাশের একটা টেবিল দেখিয়ে বলল, ওখানে জমা দিয়ে যান। দেখুন সিস্টেম যদি নিয়ে নেয় তাহ'লে হ'য়ে যাবে। দেখুন আপনি, কি হয়। ওখানে জমা দিয়ে যান। এই ব'লে ম্যানেজারবাবু বিশেষ কাজে বাইরে বেরিয়ে গেলেন। আমি নির্দেশিত টেবিলে গিয়ে বিষয়টা বলার সাথে সাথে সেই ব্যাংক কর্মী ১৫এইচ ফর্ম জমা নিয়ে আমায় রিসিভড কপি স্ট্যাম্প মেরে দিয়ে দিল। আমি দীর্ঘ সময় মানসিক অস্থিরতায় কাটিয়ে ব্যাংকের বাইরে বেরিয়ে এলাম। বেরোবার সময়ও দেখলাম বাইরে দাঁড়ানো জিটি রোডের ধারে মানুষের লম্বা লাইন চলে গেছে অনেকদূর! আমায় বেরোতে দেখে সঙ্গে সঙ্গে গেটের সামনে দাঁড়ানো মানুষ সরে গেল!

মনে হ'লো আমি মানসিক করোনায় আক্রান্ত মানুষের ভিড় ঠেলে ঠেলে এগিয়ে চলেছি ক্রমশঃ সকাল থেকে রাত!!!!!!
ক্রমশঃ। ( লেখা ২৩শে আগষ্ট'২০২০)

Thursday, August 22, 2024

বিচিত্রা ২৫

যেমন সঙ্গ তেমন ভাব, 
যেমন ভাব তেমন লাভ!

দাদা, উঁকি দিয়ে শালা ব'লে পালাবে কোথায়!? 
শালাবাবুকে ধরবো ওই চার রাস্তার মোড়ের মাথায়,
প্রেমময়ের প্রেমের মায়ায়!!!!!!

কি রাজনীতির জগৎ, শিক্ষা জগৎ, কি ধর্ম ইত্যাদি সব জগতেই মাঠেঘাটে, পথেপ্রান্তরে, টিভিতে মঞ্চে বক্তার রমরমা; ভক্তের আকাল! তুমি সৎসঙ্গী বক্তা হ'ইও না, ভক্ত হও। ভক্ত হ'তে পারলে সব হ'তে পারবে। দৃষ্টান্ত স্বরূপ তোমার সামনে অনুসরণ যোগ্য আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদা আছেন।

অভিজ্ঞতাঃ করোনার আবহে আমরা সবাই......... ( ১ )

করোনার আবহে আমরা সবাই অদ্ভুত মানসিকতার শিকার! শিকার মানুষ (?) পশু (?) সবাই! কে মানুষ!? কে পশু!?


সেদিনটা ছিল পরপর দুদিন লকডাউনের পরের দিন। স্বাভাবিকভাবেই ভিড় উপচে পড়েছিল ব্যাংকে। আমার লোন সংক্রান্ত একাউন্ট টু একাউন্ট টাকা ট্রান্সফারের বিষয়ে যেতে হয়েছিল ব্যাংকে। করোনার প্রভাবে ব্যাংকের কাজকর্ম তার স্বাভাবিক গতি হারিয়ে একটা জটিলতার মধ্যে জড়িয়ে গেছে, জড়িয়ে গেছে ব্যাংকের কর্মচারী ও গ্রাহক। সেই অবস্থায় ব্যাংকে ফোন থাকা সত্ত্বেও কেউ ফোন ধরার অবস্থায় নেই। তার উপর ব্যাংকে লোক কম আর সঙ্গে ফোনও ইচ্ছাকৃত লকডাউন!


যাই হ'ক ব্যাংকের এক এমপ্লয়ীর ফোনে ফোন ক'রে অনেক অনুনয় বিনয় ক'রে আমার টাকা ট্রান্সফারের বিষয়টি জানিয়ে তাকে একটু ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলাবার জন্য অনুরোধ করি, অন্যসময় ম্যানেজার লোনের টাকা জমা দিতে দেরি হ'লে মেসেজ পাঠান, ব্যাংক এমপ্লয়ীকে দিয়ে ফোন করান কিন্তু এই জটিল পরিস্থিতিতে গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলার তার সময় বা ইচ্ছা কোনোটাই নেই! ঐ ব্যাংক এমপ্লয়ী আমার লোনের টাকা আমার সেভিংস একাউন্ট থেকে লোন একাউন্টে ট্রান্সফারের কথা ম্যানেজারকে জানালে ম্যানেজার তাকে বলেন, টাকাটা আমার (লেখক) সেভিংস একাউন্টে পাঠিয়ে দিলে তিনি সেই টাকা লোন একাউন্টে ট্রান্সফার ক'রে নেবেন। সেই অনুযায়ী টাকা আমার সেভিংস একাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়ার পরেও ট্রান্সফারের কাজে কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় আবার আমি সেই ব্যাংক এমপ্লয়িকে ফোন করি, কারণ ব্যাংকে ফোন ক'রে কোনও লাভ ছিল না, হয় অল টাইম এনগেজড টোন আর নাহয় কেউ তুলছেই না, তাই সেই এমপ্লয়িকে ফোন করা। এইভাবে কেটে যায় কয়েক দিন। তারপরে একদিন তিনি ফোন ধরেন এবং ধরেন বিরক্তির সঙ্গে এবং বলেন যে উনি ব্যস্ত আছেন অন্য কাজে তাই টাকা ট্রান্সফার সংক্রান্ত বিষয় দেখা হ'য়ে ওঠেনি। ম্যানেজার বলেছেন আপনি একটা চিঠি দিয়ে যান। আমি তাকে বলি, এর আগে ব্যাঙ্ক থেকে ফোন এসেছিল লোনের টাকা পরিশোধের ব্যাপারে এই করোনার আবহে জটিল আর্থিক পরিস্থিতির কারণে দেরী হওয়ায় তখন মৌখিক ভাবেই লোনের টাকা ট্রান্সফার ক'রে নিয়েছিল সেভিংস একাউন্ট থেকে লোন একাউন্টে ব্যাংক! অথচ এখন করোনার কারণে আরো জটিল পরিস্থিতিতে যখন মাঝে মাঝেই সপ্তাহে দু'দিন লক ডাউন, তার ওপরে অফিস টাইম কমিয়ে ১০টা থেকে চারটের পরিবর্তে কমে গিয়ে ২টো হ'য়ে গেছে, বাইরে বি-রা-ট লম্বা লাইন, চারজন ক'রে ভিতরে ঢোকার অনুমতি সেখানে মৌখিকভাবে টাকা ট্রান্সফারের জন্য ব্যাংকে কথা বলার কোন সুযোগ নেই, পরিবর্তে সেখানে একটা চিঠি জমা দিতে সপ্তাহে ৫দিন কাজে ১০টা থেকে ২টার মধ্যে লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হবে, লাইনে দাঁড়িয়ে চিঠি জমা দিতে হবে!!!!! অথচ লোনের টাকা সময়মত জমা না পড়ার কারণে কম্পিউটার সিস্টেম লেট ইন্টারেস্ট কেটে নেবে। আমি ব্যাংকে গেলাম। ব্যাংকের দরজা বন্ধ! বাইরে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছে সকাল থেকে মানুষ! মাঝে মাঝেই নাবছে বৃষ্টি! কখনো জোরে, কখনো আস্তে, কখনো বা ফোটা ফোটা! রাস্তায় জমে আছে জল! যখন জোরে নাবছে তখন আশেপাশের দোকানে, বন্ধ দোকানের শেডের নীচে, এখানে ওখানে আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ! সেখানেও দোকানদার বা কারও কারও কাছাকাছি দাঁড়ানোতে মুখে একটা বিরক্তি! ছাতা মাথায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে কেউ কেউ! আবার বৃষ্টি থামলে সবাই এসে দাঁড়াচ্ছে লাইনে! সেখানে আবার আগেপিছের জায়গা নিয়ে শুরু হ'য়ে যাচ্ছে কথা কাটাকাটি! মাথার ওপর বৃষ্টি নিয়ে আমিও গিয়ে লাইনে দাঁড়ালাম। তারপরে ব্যাংক খুলে দরজা দিয়ে চারজন ক'রে ঢোকার জন্য এলাও করলো। ব্যাংকের দরজা খুললে বাইরে দাঁড়িয়ে গেটের ভিতরে কর্মীচারীকে ম্যানেজারের কথামত চিঠি জমা দেওয়ার কথা বললে তখন শুনলাম, ম্যানেজার নেই, ম্যানেজার ট্রান্সফার হ'য়ে গেছে! আমি অবাক হ'য়ে গেলাম! বললাম, তিনি আমাকে ডেকেছেন চিঠি জমা দিতে আর তিনিই চলে গেছেন একদিনের মধ্যে!? আমি দীর্ঘ লাইনে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে ডেপুটির টেবিলে চিঠি জমা দিলাম! ততদিনে সিস্টেম লেট খেসারত এড ক'রে নিয়েছে। করোনার ভয়ে মানুষ দিশেহারা! ভয়! মৃত্যুভয়!!


আর এর মধ্যে যখন সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম তখন দেখলাম কিছু মানুষ পিছন থেকে অদ্ভুত আচরণ করছে! এই বুঝি মারে! অসহিষ্ণুতার চরম পর্যায় কাকে বলে তা এই করোনার ভয়ঙ্কর আবহে দেখার মত! আর ব্যাংকের ম্যানেজমেন্টও যেন মানসিক করোনায় আক্রান্ত যা এক অদ্ভুত অসহায়ত্বের চরম নিদর্শন! যেন তাদের কিছুই করার নেই!


মনে মনে মন নিজেকে বললো, সত্যি সেলুকাস! কি অদ্ভুত! বর্তমান উন্নত ভারতের দিকে দিকে কি অদ্ভুত উন্নত ব্যবস্থা! একটা সামান্য পোকা উই পোকার মত ঝাঁঝরা ক'রে দিচ্ছে ভিতরে ভিতরে গোটা পৃথিবীকে! বিশ্বজুড়ে সর্বশক্তিমান অহংকারী উন্নত সভ্য মানুষ আজ অসহায়!!!!
ক্রমশঃ। ( লেখা ২২শে আগষ্ট'২০২০)

Wednesday, August 21, 2024

বিচিত্রা ২৪

হে দয়াল! তব চরণে দাও গো ঠাঁই!
যারা এই সুন্দর পৃথিবীর বিষাইছে বায়ু,
কমাইছে ক্ষণস্থায়ী জীবনের আয়ু!
তাদের জানি ক্ষমা নাই,
তাদের প্রতি দয়াল হও তুমি ভয়াল!

শয়তান ঠাকুরের রূপ ধ'রে যদি সামনে এসে দাঁড়ায় তার রূপ ও হাসি ঠাকুরের চেয়েও সুন্দর ও মিষ্টি হয়ে ধরা দেয় আমার কাছে। কেন?

বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটির নেতারা ঘোষণা করলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হ'লো। ফ্যাসিস্ট কি? একটু বলবেন কেউ?

ফ্যাসিস্ট বা ফ্যাসিবাদ কি একটু বুঝিয়ে দেবেন আমার ফেসবুক বন্ধুরা, যারা রাজনীতি নিয়ে চর্চা করেন? একটু আলোচনা হ'তে পারে কি?
মাছি মানুষের বেশীক্ষণ মধু খেতে ভালো লাগে না, তাই তারা একটু গু খেতে চায়। তারপর সেই গু পায়ে লাগিয়ে আবার মধুতে এসে বসে, ফলে-
সত্য দেখতে, শুনতে, পড়তে ও মানতে চাই না, চাই না মুখোমুখি হ'তে, সহ্য করতে পারি না কিন্তু সত্য বলি, মানে সংহার আনি, আমি ভন্ড।
গালাগালি খিস্তি বাঙালীদের পরম সম্পদ সেটা আবার প্রমাণ হ'লো বাংলাদেশের আন্দোলনে।
এ বাংলা আর ও বাংলায় একটা কমন জিনিস চোখে পড়লো শিক্ষিত ছাত্র সমাজের আন্দোলনে, তা হ'লো নারীদের অন্তর্বাস নিয়ে আন্দোলন।
যাদবপুরে দেখেছি, ওপার বাংলায়ও দেখলাম, তা হ'লো শিক্ষিত ছাত্র সমাজের ব্রা নিয়ে আন্দোলন। কিন্তু এ নিয়ে নারী পুরুষ সবাই চুপ।

দুই বাংলার ছাত্র আন্দোলনের নদীর ঢেউয়ে নারীদের অন্তর্বাস ছাত্রদের হাতিয়ার। বুদ্ধিজীবী, ছাত্র ও মায়েরা কিছু বলবেন কি?

যাদবপুরের ছাত্র আন্দোলনে ছিল ব্রা আর জাঙ্গিয়া পড়া ছাত্রের অংশগ্রহণ আজও দেখলাম বাংলাদেশে ছাত্রদের হাতে ব্রা। ছাত্রীরা নীরব!
দুই বাংলার সংস্কৃতি এক। এপারেও ছাত্র আন্দোলনে ব্রা, ওপারেও ছাত্রের হাতে ব্রা। দু'পারের একই শ্লোগান খেলা হবে, খেলা হবে।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী "যার ধন তার ধন নয়, নেপোয় মারে দই" প্রবাদের জ্বলন্ত সাক্ষী।
বাংলাদেশে মুসলমানরাই কি শুধু বাঙালী? হিন্দু, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ ইত্যাদি অন্য ধর্মের জনগণ কি বাঙালী না!? নোতুন সরকার কি বলে?

দেশকে গড়ে তোলার আগে নিজেকে গড়ে তুলি, দেশ আপনে আপ গড়ে উঠবে।
দেশেকে রক্ষা করার আগে নিজেকে, নিজের ঘরকে রক্ষা করার তুক শিখি আসুন।
তথাকথিত ভালো লোক দিয়ে আার উচ্চ লেখাপড়া জানাওয়ালা লোক দিয়ে দেশ গড়া ও রক্ষা করা যায় না।
বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন প্রমান ক'রে দিল, যে কোন আন্দোলনে শিক্ষিত লোকের প্রয়োজন। লেখাপড়া জানাওয়ালা লোক নয়।

বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন প্রমান ক'রে দিল লেখাপড়া ডানাওয়ালা লোক দিয়ে ধ্বংস হয়, সৃষ্টি করতে শিক্ষিত লোকের প্রয়োজন।

আমার দেশের মেধা সাপ্লাইকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী, উচচ মেধাবী ছাত্র ছাত্রীরা বাংলাদেশের ধ্বংস যজ্ঞ নিয়ে কিছু বলবেন?

নিজের দেশের ছাত্র সমাজের হাতে যখন দেশ ধ্বংস হয়, লুন্ঠিত হয় তখন বাইরের শত্রুর দরকার পড়ে না দেশ আক্রমণের।

ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়ে দেশ নেতৃত্ব চোখের জলে অনুতপ্ত হৃদয়ে যদি দেশ শাসনের শপথ না নেয় সেই ধ্বংসের Tradition সমানে চলবে।
বাংলা তথা ভারতের ছাত্র সমাজ বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন ও তার পরিণতি থেকে কিছু শিক্ষা পেল?
সৎসঙ্গী ছাত্র সমাজ বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন সম্পর্কে জানো তো? নাকি 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতায় মগ্ন?
আজ বাংলাদেশে হিন্দু ঐক্যের ডাক মনে পড়িয়ে দেয় সেই 'সোনার কাঠি, রুপোর কাঠি'-র গল্প। মনে পড়ে এই গল্প হিন্দু ভাইবোনেরা আমার?
আগে জানতাম নিকম্মা অলস ব্যক্তিও অন্তত 'পি পু ফি শু' হ'লেও বলতো। এখন লেখাপড়া জানাওয়ালাদের 'পিপুফিশু' বলতেও ভয়ংকর আলস্য।
সৎসঙ্গীদের প্রোফাইলে কেন বাংলাদেশের হিন্দুদের অবস্থা নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অকারণ সমালোচনার পোষ্ট স্থান পায়?

আমরা সৎসঙ্গীরা যেন মনে রাখি সৎসঙ্গ অস্তিত্বের পক্ষে, অস্তিত্ব রক্ষার পক্ষে কথা বলে, সৎসঙ্গ কারো বিরোধী না।

সৎসঙ্গী গুরুভাইবোনেরা আমার, সৎসঙ্গ কোনও বাদের পক্ষে কথা বলে না। সৎসঙ্গ জীবনবাদ, অস্তিত্ববাদের পক্ষে কথা বলে।

লজিক্যাল আর্গুমেন্ট সবসময় গ্রহণীয়। যে কথায় লজিক নেই সে কথা বর্জনীয়।
সনাতনীরা আগে পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে গালাগালি করা বন্ধ করুন। তারপর মানববন্ধন করুন।

সনাতনীরা ভুলে যাবেন না যুগ পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে অপমান অশ্রদ্ধা ক'রে ঐক্যের ডাক দেওয়া বৃথা। সবটাই মিথ্যা।
সনাতনী কারা আগে এটা ঠিক হ'ক তারপর মানব বন্ধন ও ঐক্য গড়ে তোলার ডাক দেওয়া হ'ক।

Tuesday, August 20, 2024

উপলব্ধিঃ ইশ্বরের উপস্থিতি!

রাত কেটে সকাল হলেই টিভি, রেডিও, কাগজ ও আমার চারপাশের ঘরে-বাইরের নানা অমানবিক বিকৃত ঘটনায় ভোরেই বিকেলের ফুলের মত অবস্থা হয় মনের! তখন ভাষা হারিয়ে যায়, হ'য়ে পড়ি বড় অসহায়। আবার সেই একই রাত্রি শেষে যখন ভোরের প্রথম আলো ফোটে, সেই আবছা আলো আঁধারের মাঝে যখন আকাশে নীল সাদা পেঁজা তুলোর মেঘ দূরে অনেক দূরে ভেসে ভেসে চলে যায় আর সেই নিভৃত নীরব আলো আঁধারের মহাশুন্যতার নীচে চারপাশের শশ্মান নিস্তব্ধতার মাঝে যখন আমি দাঁড়িয়ে থাকি একাকি, চোখে মুখে এসে ঠান্ডা নির্মল দখিনা বাতাস যখন তার কোমল হাত বুলিয়ে দেয় তখন এক গভীর প্রশান্তি অনুভব করি, আবেশে বুঝে আসে চোখ! চারপাশের গভীর রহস্যময় নিস্তব্ধতার মাঝে অপরুপ প্রকৃতি আমার সত্তাকে জানান দেয় ঈশ্বরের উপস্থিতি!!!!!!!!!! তখন ভাষা হারিয়ে সেইমূহুর্তে আমি হ'য়ে যায় মূক ও বধির!

মাঝে মাঝে যখন হারিয়ে যায় ভাষা তখন বড় কষ্ট হয়। তবে প্রকৃতির কাছে মুগ্ধ হ'য়ে ভাষা হারিয়ে গিয়ে কষ্ট হ'লেও একটা অবর্ণনীয় নির্মল সাতরঙা আনন্দ আছে। আছে তৃপ্তি, হয় তৃষ্ণার নিবৃত্তি!
কিন্তু মানুষের অমানবিক ঘটনায় যখন ভাষা হারিয়ে যায় তখন বুকের মধ্যে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ হয়, অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। কষ্ট, জ্বালা, যন্ত্রণা, রাগ, ক্ষোভ-এর লাভা গলে গলে পড়ে, বয়ে যায় বুকের ভিতরে অন্তসলিলার মত। তখন বড় কষ্ট হয়, মনে হয় জীবন থেকে মুক্তি পেলে বড় ভালো হয়!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

মন বলে, কোথায় পাবে খুঁজে জীবন? দৈববাণীর মত কে যেন বলে ওঠে, ফিরে চল মন নিজ নিকেতন! কোথায় সেই নিকেতন??????------প্রবি।
( লেখা ২০শে আগষ্ট'২০১৪ )


Monday, August 19, 2024

কবিতাঃ সৎসঙ্গীদের গুরুভাইবোনেদের প্রতি,

ভয় কি তোর? আমি আছি তো তোর সাথে।
যত দুর্যোগ, যত আপদ বিপদ আসুক তোর মাথে।
ডর কিস বাত কি? ম্যাঁয় হুঁ না।
তেরে সাথ সাথ, তেরে দিল মে
হাম হ্যাঁয় না। ডরো মত।


ভয় কি তোর? আসবে নোতুন ভোর।
আজ কিংবা কাল, কাল কিংবা পরশু
একদিন না একদিন আসবেই আসবে
নোতুন সকাল, যদি আমি থাকি মাথায় তোর।
ডর কিস বাত কি? ডরো মত! ম্যাঁয় হুঁ না।
ম্যাঁয় তেরে সিনে মে হুঁ, প্রাণ স্বরূপ হুঁ।
হাম হ্যাঁয় না! ডরো মত।

ভয় কি তোর? তুই নাম পেয়েছিস।
তুই থাক নামময় হ'য়ে শয়নে স্বপনে
জাগরণে ভোজনে। আর, দিনের শুরুতেই
যেখানেই থাক, যেমনই থাক
ইষ্টভৃতি করবি তুই সযতনে।
কেটে যাবে সব তাফাল,
তাফালিং যাবে সব ভেগে, আমারে যে ডাকে
শয়তান পারবে না তাকে ছুঁতে,
আসবে তার জীবনে সুন্দর মনোময় এক সকাল।
ডর কিস বাত? ম্যাঁয় হুঁ না।
ডরো মত, মেরে তরফ দেখ
আউর জোরসে বোল, হাঁ দয়াল! তুম হ্যাঁয় না।


ভয় কি তোর? এই পৃথিবী কার?
তুই কার? কার ঘরে আছিস তুই?
এই পৃথিবী আমার! যে ঘরে আছিস তুই
সে ঘর আমার! তুই আমার, আমার!
ডরো মৎ! ম্যাঁয় হুঁ না!
একবার বিশোয়াসকে সাথ জোরসে বোল,
রাধাস্বামী দয়াল! তুমি আমার, তুমি আমার।


ভয় কি তোর? কিসের ভয়?
কেটে যাবে সব দুর্যোগ, হবে জয় দুর্জয়।
একবার শুধু বল চোখের জলে সব ভাসিয়ে
থাকবো নাগো আর কোনোদিন তোমায় ভুলে
ঘোর আঁধারে।
ডরো মাত্! ম্যাঁয় হুঁ না।
( লেখা ৮ই আগষ্ট'২৪)

উপলব্ধিঃ লড়াই, আন্দোলন হ'ক কিন্তু------

হে ছাত্র সমাজ,
লড়াই, আন্দোলন হ'ক,
লড়াইটা হ'ক আগে নিজের সঙ্গে নিজের আমার।
লড়াই হ'ক, আন্দোলন হ'ক,
লড়াইটা হ'ক আগে
নিজের নীচ, নোংরা চরিত্রের বিরুদ্ধে নিজের আমার।
লড়াইটা হ'ক নিজের ঘৃণ্য চরিত্রকে ঘৃণা করার।
লড়াইটা হ'ক হিংসাকে হিংসা করার।
লড়াইটা জাত নিয়ে নয়, ভাত নিয়েও নয়,
লড়াইটা বজ্জাতদের বজ্জাতি নিয়ে হ'ক।
লড়াইটা ক্ষমতা দখল নিয়ে, বদল নিয়ে নয়,
লড়াইটা হ'ক নীতিকথার মুখোশের আড়ালে
ক্ষমতা লোভীদের মুখোস খুলে দিতে।
লড়াইটা হ'ক নাগিনীদের বিষাক্ত নিশ্বাসের বিরুদ্ধে
অসহায় প্রজন্মের পর প্রজন্মকে বাঁচাতে।
লড়াইটা বাবরি নিয়ে নয়, চাকরী নিয়েও নয়,
লড়াইটা ধর্ম ও রাজনীতি বেওসায়ীদের
নোংরা বেওসা নিয়ে হ'ক।
লড়াইটা দীক্ষা নিয়ে নয়, শিক্ষা নিয়েও নয়,
লড়াইটা দীক্ষা নিয়ে শিক্ষা গ্রহণের জন্য হ'ক,
হ'ক এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে।
লড়াইটা অস্ত্র নিয়ে নয়, বস্ত্র নিয়েও নয়,
লড়াইটা হ'ক ভুল ও ত্রস্ত শাস্ত্র নিয়ে।
লড়াইটা শশ্মান কবরস্থান নিয়ে নয়,
বাসস্থান নিয়েও নয়।
লড়াইটা হ'ক শ্রদ্ধার মাথায় শিরস্ত্রাণ পরানো নিয়ে।
লড়াই গোস্ত নিয়ে নয়, স্বাস্থ্য নিয়েও নয়,
লড়াইটা ফেরেস্তার অপমান নিয়ে হ'ক।
লড়াইটা মন্দির নিয়ে নয়, মসজিদ নিয়ে নয়,
নয় জাতপাত সম্প্রদায় নিয়েও!
লড়াইটা শ্রেষ্ঠজনের সম্মান, মর্যাদা রক্ষার্থে
মন মন্দির গড়া নিয়ে হ'ক।
লড়াইটা হিন্দু, মুসলিম, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ ইত্যাদি নিয়ে নয়,
লড়াইটা হ'ক জীবন্ত ঈশ্বর পুরুষোত্তমের প্রতিষ্ঠা নিয়ে।
লড়াইটা রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু কিংবা
মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ, অনুকূল নিয়ে নয়।
লড়াইটা হ'ক তিনি জীবন্ত ঈশ্বর পুরুষোত্তম আর
তিনি যে একজনই আসেন বারবার
ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য অধর্মকে খতম করতে
আর, দুষ্কৃতীদের হাত থেকে সাধুদের রক্ষা করতে
এই জ্ঞানকে ছড়িয়ে দিয়ে বিশ্বময় করতে দূর অন্ধকার।
লড়াইটা হ'ক অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর করার।
লড়াইটা হ'ক উচ্ছৃঙ্খল বৃত্তি-প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে,
রিপু তাড়িত অস্থির উত্তপ্ত বিশৃঙ্খল জীবনের বিরুদ্ধে;
লড়াইটা হ'ক নিজের সঙ্গে নিজের আমার;
হে ছাত্র সমাজ।
( রচনা ৭ই আগষ্ট'২৪)

কবিতাঃ আঠারো বছর বয়স।

এরকম আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
যে বয়স শোনে না কারও নিষেধ, আবেগে দুর্নিবার!
এরকম আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
যে বয়স অন্যের কথায় ওঠে, অন্যের কথায় বসে
বোধ, বুদ্ধি, জ্ঞান, শিক্ষা, চেতনা, যুক্তিহীন জীবনে
আর বিপদে পড়ে বারবার। আবেগ ভালো, কিন্তু
আবেগে ভেসে যাওয়া নয় ভালো, সরলতা ভালো,
নয় ভালো বেকুবি, এসব কথা লাগে না ভালো যার,
এরকম আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
কচি মাথা খায় চিবিয়ে আর পরিবর্তনের নামে
পাকা মাথার দাবার বোড়ে হয় আঠারো অনিবার।
এরকম আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
তেজ ভালো একথা বোঝে না যারা, ক্রোধ বন্ধু যার
এমন আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
তেজ জ্বালে আলো, দূর করে অন্ধকার, এ কথা
বোঝে না যারা করে ক্রোধকে সাথী, আনে সংহার,
এরকম আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
বৃত্তি-প্রবৃত্তির বৃত্তে ঘুরে মরা, আদর্শহীন জীবন যার,
এরকম আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
আামার ইচ্ছেটা একান্তই আমারই, শুনবো না কারও মানা,
স্বাধীন ইচ্ছের ডানা মেলে আমি অনন্ত নীল আকাশের
বুকে উড়বোই, অনিশ্চিতের বুকে দেবো হানা
এমনই উদ্ধত জীবন যার!
এরকম আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
আদর্শ লাগে না ভালো, লাগে ভালো কথা চমকদার
চটকান কথার চাটনি লাগে ভালো, লাগে ভালো যার
বেড়ালের পোঁদে ফুঁ দিয়ে বানানো বাঘের হুঙ্কার!
এরকম আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
সবজান্তা মনোভাব আর উচ্চে অবজ্ঞা, অশ্রদ্ধা যার
এরকম আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
সাহস ভালো, নয় ভালো দুঃসাহস একথা বোঝালেও
বোঝে না যে, চায় না বুঝতে যে, সাহস আর স্পর্ধাকে
মনে করে বাহাদুরি, আদর্শের প্রতি মাথা নত নয় যার
এরকম আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
পাথর ভাঙতে লাগে ছেনি হাতুরী, বাহুতে লাগে জোর
অহংকারি আমি বোঝে না পদাঘাতে ভাঙে না সে পাথর
আহাম্মকি মস্তিষ্ক রাখে না এ খবর যার
এরকম আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
লজ্জা ঘৃণা ভয় তিন থাকতে নয় পরমপুরুষের এ বাণীর
মূল অর্থ বোঝে না যে বয়স নিজেকে মনে ক'রে মহাজ্ঞানী
মৃত্যুর মুখে দেয় ঝাঁপ, ভয়, কাঁদাকে মনে করে মহাপাপ
মহামূর্খ নেতার পায়ে মাথা নোয়াতে হয় না লজ্জা যার
এরকম আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
রক্তের মূল্য, প্রাণের মূল্য বোঝে না যে বয়স,
যত্রতত্র করে অকাতরে দান, সে দান কি হয় পূণ্য?
থাকে তার মান? অর্থহীন যন্ত্রণা আর মন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত
উদ্দাম ভয়ংকর বয়স বছর আঠারো যার
এরকম আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
ভুলের ফাঁদে জড়ায় লাগামছাড়া আঠারো দুর্জয় দুর্বার
কাঁদে যন্ত্রনায়, ফাঁকতালে নেপোয় মারে দই বারবার
এরকম আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
যার ধন তার নয়, নেপোয় মারে দই,
এ চেতনা আঠারোর কই? বোঝে কি আঠেরোরা?
একাশিরা গাছে তুলে দিয়ে কেড়ে নেয় মই?
এটাই যদি হয় আঠারোর ভুল, আর হয় অঙ্গীকার
একবার নয়, দু'বার নয়, বারবার
এরকম আঠারো বছর বয়স আমার কি দরকার?
তবুও আঠেরোর করি জয়ধ্বনি
এ বয়স ভুল করে, করে মহাভুল রাতদিন
উপেক্ষা ক'রে শয়তানের হাতছানি
ভাবি আসবে ফিরে একদিন, বুঝবে যেদিন
আদর্শ ছাড়া জীবন ভুলে ভরা সবখানি।
শবরীর মত অপেক্ষায় আমি থাকি সারা দিনরাত্রি
একদিন আঠেরোর বুকে আসবে নেবে ভোর
কেটে যাবে কালরাত্রি, মিথ্যে অলীক মায়ায়
ফাঁসবে না জীবন, ভুয়ো আন্দোলনের ফাঁদে
পড়বে না পা আর, নেপোয় মারে দই-রা আর
পারবে না চাটতে মাথা, আঠারো নয় বিব্রত আর

আছে সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ মাথার ওপর, উন্নতি অবাধ তার

এরকম আঠারো বছর বয়স দেশের দরকার।

ফিরে আসুক নতুন রূপে আঠারোরা আমার।

( লেখা ৬ই আগষ্ট'২৪)

শ্রদ্ধাঞ্জলি।

শ্রদ্ধাঞ্জলি তোমায়, তোমার কবিতায়। তুমি আমার প্রণাম নিও।

শেখো, যে মানুষ লড়াই-এ নেতৃত্ব দিচ্ছো।
শেখো, যে মানুষ লড়াই-এর ময়দানে আছো।
শেখো, বাচ্চা থেকে বুড়ো যে যেখানে আছো।
শেখো, যদি শিখতেই হয়, সবার কথা শুনতে হয়,
বই পড়াতে করতে নেই বাছ বিচার,
করতে নেই অবজ্ঞা, উপহাস ক'রে সময় অপচয়।
শেখো, শিক্ষক হ'য়ে নয়, ছাত্রের মতন
বইয়ের মধ্যে আছে যত গুপ্তধন।
শেখো, যেখানেই দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখো তাই
পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন।---প্রবি।
May be an image of 1 person and text that says 'htps/ww.facbobo.ocococoda ১লা মার্চ ১৯৪৪ ራ আগস্ট ২০২৪ শেখো, যে মানুষ আশ্রমে আছো শেখো, যে মানুষ জেলখানায় আছো শেখো ঘরের বৌ, যে রান্নাঘরে আছো শেখো বয়স যার যাট বিদ্যালয়ে খোঁজো, যারা ঘর ছাড়া তীক্ু কর উপহাস, যারা ভয়ে ভীত স্ষুধার্ত মানুষ হাতে নাও বই, এটাই হাতিয়ার তোমার নেতৃত্ব নিতে হবে তোমাকেই। I বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (বেরটেন্টি র্রেপ্ট কবিতার এক অংশ) ጠጣረጋይ 1'

Friday, August 16, 2024

প্রবন্ধঃ হিন্দু ধর্মের স্বঘোষিত ধারক ও বাহক!

হে স্বঘোষিত হিন্দু ধর্মের কিছু ধারক ও বাহক দাদারা আমার!

আপনারা হিন্দু ধর্মকে রক্ষা ও বাঁচাবার জন্য, হিন্দু ধর্মের সতীত্ব রক্ষার জন্য শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের বিরুদ্ধে ও তাঁর সৃষ্ট 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এবং ঠাকুর আত্মজদের বিরুদ্ধে খোলাখুলি আক্রমণে নেবেছেন! এর জন্যে আপনারা বেছে নিয়েছেন ফেসবুকের মত স্ট্রং মাধ্যমকে! আপনাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে যেমন সীমাহীন কুৎসা ক'রে চলেছে কিছু অদিক্ষিত অসভ্য জংলী মানুষ ঠিক তেমনি হাত মিলিয়েছে শ্রীশ্রীঠাকুরের দীক্ষিত ও সৎসঙ্গী ব'লে প্রচারকারী কিছু মনুষ্যকৃতি অদ্ভুত বিকেন্দ্রিক মানুষ! আর সবচেয়ে দুঃখের বিষয়, পরিতাপের বিষয় ফেসবুকের এই সমস্ত কুৎসাকারী ও নোংরা মনের অধিকারী নিম্নরুচির মানুষেরা সবাই বাঙালী!!!!!!! আর এদের মত মানুষদের জন্য ফেসবুকের ফেস এখন তার মর্যাদা হারিয়ে, ঐতিহ্য হারিয়ে ফ্যাকাশে হলুদ জীর্ণ হ'য়ে যাচ্ছে দিনদিন!
তাই ফেসবুককে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে,

হে ফেসবুক! যাহারা তোমার বিষাইতেছে বায়ু, নিভাইতেছে তব আলো তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছো, তুমি কি তাদের বেসেছো ভালো!?
হে স্বঘোষিত হিন্দু ধর্মের ধারক-বাহক! আপনারা বলছেন, শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র একজন স্বঘোষিত ভগবান, একজন ভন্ড! হিন্দু ধর্মকে শেষ ক'রে দেবার কারিগর!

সত্যি হিন্দু ধর্মের স্বঘোষিত ধারক-বাহক দাদারা আমার! আপনারা ঠিকই বলেছেন! ভয় হয় দাদা এই অনুকূল হিন্দু ধর্মকে শেষ ক'রে দিচ্ছে নয় একেবারে শেষ ক'রে দেবে; হাজার হাজার বছর ধ'রে চলে আসা হিন্দু ধর্মের মধ্যে গেঁড়ে বসে থাকা জীবনে বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার সমস্ত প্রতিকূল অপবিত্র রীতিনীতির খোলনলচে পাল্টে দেবে দাদা! দাদা আপনারা এগিয়ে আসুন, দল গড়ুন, ছড়িয়ে দিন দিকে দিকে এই অনুকূলের জীবনের বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার সমস্ত প্রতিকূলের বিরুদ্ধে যে লড়াই সেই লড়াইয়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক! রুখে দাঁড়ান দাদারা আমার! ধর্ম, সমাজ, সংস্কৃতি, জীবন, জীবিকা ইত্যাদি ইত্যাদির প্রতিকূল যা তার বিরুদ্ধে অনুকূলের যে লড়াই সেই লড়াইকে প্রাণ দিয়ে, জান দিয়ে আটকান দাদারা আমার! আমি না থাকলেও আপনাদের পাশে অনেকে আছে। আছে উচ্শৃঙ্খল, বিশৃঙ্খল জন্মবিকৃত অদিক্ষিতদের বিরাট অংশ! আছে অবৈধ দীক্ষিত সৎসঙ্গী নামধারী কিছু মানুষ!

হে হিন্দুধর্ম প্রেমী দাদারা আমার!
সাধারণ মানুষ, মূর্খ মানুষ, অজ্ঞান মানুষ, দূর্বল মানুষ, কুসংস্কারে সংস্কৃত মানুষ, চিন্তা-ভাবনা, শিক্ষা, চেতনায় অন্ধ, অজ্ঞ সীমাহীন ভাঙাচোরা উচ্শৃঙ্খল, বিশৃঙ্খল, অসভ্য মানুষের ওপর হাজার হাজার বছর ধ'রে ধর্মের নামে মৌরসি পাট্টা জমিয়ে বসা কায়েমী স্বার্থরক্ষাকারী ধর্ম বেওসায়ীদের হাত থেকে এইসমস্ত অসহায় মানুষকে এই ঘোর কলি যুগ থেকে বের ক'রে আনার যে ঘোর চক্রান্ত শুরু করেছিল যুগ পুরুষোত্তম বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সেই চক্রান্তের বিরুদ্ধে কোমর কষে রুখে দাঁড়ান! অনুকূল নামধারী ভন্ড পরমপিতার ভয়ঙ্কর এই লড়াইকে আটকান দাদা, আটকান! সংঘবদ্ধ হ'ন, আওয়াজ তুলুন, প্রতিবাদ, প্রতিরোধের দুর্জয়, দুর্গম দূর্গ গড়ে তুলুন দাদারা আমার! অনুকূলের আপনাদের হিন্দু ধর্মকে শেষ ক'রে দেবার বিরুদ্ধে, ভন্ডামির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, বিপ্লব ঘোষণা করুন হিন্দু ধর্মের ধারক-বাহক দাদারা আমার! ধর্ম নিয়ে, মূর্তি পূজা নিয়ে, গুরুগিরি নিয়ে, বাবাজি-মাতাজি-দাদাজীদের ঈশ্বর আরাধনার উপকরণ ফুল-বেলপাতা-ধূপ- ধুনো-কারণসুধা-পশুবলি-রক্তমাংসে লেপটে থাকা পূজোভূমি, আংটি-পাথর-তাবিজ-মাদুলি, শেকড়, বাকর, লাল-নীল-কালোসুতো, তুকতাক, ঝাড়ফুঁক, রাহু-কেতু-শনি, সিঁদুর-চন্দন তিলক ও অলৌকিকতার হাজারও ঝিকিমিকি নির্ভর কর্মহীন জীবনের বিরুদ্ধে, না ক'রে পাওয়ার বিরুদ্ধে অনুকূলের যে লড়াই সেই লড়াইয়ে নিশ্চিত হিন্দু ধর্ম শেষ হ'তে চলেছে দাদা! বন্ধ হ'তে চলেছে ধর্ম বেওসার দোকান! এই অধর্মের বিরুদ্ধে আপনারা হিন্দু ধর্মকে বাঁচাতে, রক্ষা করতে মসিহা রূপে আবির্ভুত হ'য়ে হিন্দু ধর্ম ও হিন্দু ধর্মের মানুষকে বাঁচান দাদারা! নইলে ভয়ঙ্কর ভাবে গ্রাস ক'রে চলেছে এই অনুকূল গোটা পৃথিবীকে!!!! কোটি কোটি শিষ্য আজ সারা পৃথিবীতে অনুকূলের দাদা!!!!! শুধু আপনার হিন্দু ধর্ম নয় দাদা! মুসলমান ধর্ম, খ্রিষ্টান ধর্ম, শিখ ধর্ম, জৈন ধর্ম ইত্যাদি ইত্যাদি বহু ধর্মের কোটি কোটি মানুষ আজ এই অনুকূলের পতাকার তলায় আসীন!!!!!! দাদা, আমরা তো হিন্দু ধর্মের কেউ নই, আপনারা যারা হিন্দু ধর্মের ধারক ও বাহক, হিন্দু ধর্ম আপনাদের যাদের পৈতৃক সম্পত্তি তারা দয়া ক'রে এই ভয়ঙ্কর অনুকূল প্রলয় থেকে হিন্দু ধর্মের মানবজাতিকে বাঁচান!!!!! নইলে আপনারাও একদিন এই ঘোর কলি যুগের ঘোর অনুকূল প্রলয়ে ভেসে যাবেন পরিবার পরিজনসহ। শুভস্য শীঘ্রম দাদারা, শুভস্য শীঘ্রম!!!!!! জাগুন, উঠুন, হাঁক দিয়ে ডাক পেরে লাফ দিয়ে ঝাঁপ মারুন! 'কে কোথায় আছো'--ব'লে হুঙ্কার দিয়ে বেরিয়ে পড়ুন হিন্দু ধর্মকে বাঁচাতে দাদারা! আপনারা তো সনাতন হিন্দু ধর্মের ভক্ত! রাম ভক্ত! কৃষ্ণ ভক্ত! রামের মত, কৃষ্ণের মত এই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিন না দাদারা! আপনারা তো সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা, পালনকর্তা বিষ্ণু, লয়কর্তা দেবাদিদেব মহাদেবের ভক্ত, পরম ভক্ত তা' আপনারা দাদা হাজার হাজার বছর ধ'রে চলে আসা ঘোর কলিযুগের শেষে প্রতিকূল জীবনের বিরুদ্ধে এই অনুকূলের স্বপারিপার্শ্বিক বাঁচাবাড়ার যে জেহাদ সেই জেহাদের বিরুদ্ধে, সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে যে লড়াই সেই লড়াইয়ের বিরুদ্ধে যে লড়াই, ধর্ম নিয়ে যে মারামারি সেই মারামারির বিরুদ্ধে যে সচেতনতার সংগ্রাম, যুগবতারে যুগবতারে যে বিভেদ সৃষ্টি সেই বিভেদের বিরুদ্ধে ব্রহ্মার মত সৃষ্টিকর্তা হ'য়ে দ্রুত কিছু নতুন দিকের, নতুন পথ ও মতের সৃষ্টি করুন, বিষ্ণুর মত পালনকর্তা রূপে হিন্দু ধর্মকে পালন করুন দাদা, আর দেবাদিদেব মহাদেবের দক্ষরাজার যজ্ঞ পন্ড বা ধ্বংস করার মত বিশ্বব্যাপী অনুকূল মহারাজার যজ্ঞকে ধ্বংস করার জন্য নটরাজ ভঙ্গিতে নৃত্যে মেতে উঠুন দাদারা, মেতে উঠুন! আমরা রক্ষা পায়। আপনারা কৃষ্ণ ভক্ত দাদা, আপনারা কৃষ্ণের ব'লে যাওয়া "যদা যদাহি ধর্মস্যঃ গ্লানির্ভবতি ভারত----------------যুগে যুগে" -------বাণীর মুখ, শ্রীমুখ হ'য়ে উঠুন দাদা!!!!!!!

হিন্দু ধর্মের সমস্ত মানুষ আপনাদের মত মসিহার পথ চেয়ে বসে আছে বহুকাল শোকে পাথর অহল্যার শ্রীরামের পথ চেয়ে বসে থাকার মত!!!!! 
বাংলার বুকে, বাংলার আকাশে বাতাসে তারা শুনতে পাচ্ছে অহল্যার শ্রীরামের পদধ্বনি-র মত আপনাদের ঐ হিন্দু ধর্মের মসিহাদের শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের বিরুদ্ধে, সৎসঙ্গের বিরুদ্ধে বীর্যহীন, শৌর্যহীন গালাগালির মধুর ঝংকার! আপনারা আসুন! বীর বিক্রমে আসুন! রক্ষা করুন সনাতন হিন্দু ধর্মকে, হিন্দু ধর্মের ধর্মীয় পুরানী রীতিনীতিকে!
শুধু এটুকু বলতে পারি যা হচ্ছে বা যা হ'য়েছে ও হ'য়ে চলেছে সব অন্তিমে মানবের মঙ্গলই হবে।


প্রার্থনা করি আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সবাইকে ভালো রাখুন!
( ১৭ই আগষ্ট'২০১৯ )

Thursday, August 15, 2024

বিচিত্রা ২৩

ধর্ম্ম কোন পথে? 
চলন হারা চরণ পূজা
আর
প্রণাম, প্রণামী, প্রসাদ সাথে!
ফুল, বেলপাতা, ধুপ, চন্দনে ভরা 
ঠাকুরঘরে ভাবের ঘুঘু হ'য়ে ব'সে
না ক'রে পাওয়ার পথে।
মন্দির, মসজিদ আর গির্জার 
চার দেওয়ালের মাঝে 
আর সাজা সাধুর সাজে!
মুখে মারিতং জগৎ আর
কর্মে মারিতং ফাঁকিঃ
এই দুইয়ের মাঝে রেখে জীবন 
ফাঁকিতে বাগাতে মাল ধর্ম্ম পথে হাঁটি!
সরলসিধা মূর্খ বেকুব ধর্ম্মভীরুর মাথে 
ঈশ্বরপ্রেমের কাঁঠাল ভাঙে 
চতুর ধান্ধাবাজি ধর্ম্ম বেওয়াসির হাতে!
( লেখা ১৫ই আগষ্ট' ২০১৮)





প্রবন্ধঃ আইন সবজান্তা!?

"নারী হ'তে জন্মে জাতি থাকলে জাত তবেই জাতি---।"
"নারী হ'তে জন্মে জাতি বৃদ্ধি লভে সমষ্টিতে---।"-------শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র।

আইন সবজান্তা!? সব জেনে বসে আছে!? আইনকেও মাথায় রাখতে হবে আইনেরও আইন আছে যে? আইনেরও মনে রাখতে সে যদি সব বুঝে যেত তাহলে দেশের প্রাচীন শাস্ত্রগ্রন্থ, বেদ, পুরান, উপনিষদ, গীতা, রামায়ণ, মহাভারত ইত্যাদি ইত্যাদির কোনও প্রয়োজন হ'ত না! বিচারকদের মাথায় রাখতে হবে তাদের মাথার ওপরে বসে রয়েছে সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর! তাঁদের কোনও রকম সিদ্ধান্তে সমাজ-সভ্যতা-দেশ যেন ঘায়েল না হয়, সৃষ্টিকর্তার সৃষ্ট বস্তুর গাণিতিক নিয়ম যেন উল্লঙ্ঘন না হয়! বিচারকদেরও মাথায় রাখতে হবে তাদেরও বিচারে ভুল হ'তে পারে! তারা তা সে যত বড় আর যতই সুপ্রিমকোর্টের বিচারক হ'ক না কেন তিনি বা তিনারা সুপ্রীম ফাদার নন! তাঁরও অপূর্ণতা আছে! তিনিও একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত বাঁধা! তাঁর দৃষ্টি বাঁধা! সবটা দেখতে তিনি পান না! তাই কোনও প্রাচীন প্রথা, সংস্কার, নিয়ম ভাঙার আগে যেন হাজারবার ভাবেন! ভাঙা তাঁর কাজ নয়, তাঁর কাজ গড়া! প্রাচীন আর নবীনের মধ্যে অর্থপূর্ণ বিজ্ঞানগতভাবে সমন্বয় সাধন করা। প্রাচীন প্রথার অন্তরালে যে জীবনীয় সম্পদ লুকিয়ে আছে, কালের কালিমায় যা কালিমালিপ্ত হয়েছে তাকে আবার ধুয়ে মুছে দিনের আলোয় উদ্ভাসিত ক'রে তুলে আবার বাঁচা-বাড়ার পথে চালিত করার মধ্যে দিয়ে সভ্যতার বিজয় রথকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় বিচারকের প্রকৃত বিচার!


তাই বলি, ইতিহাস যেন একবার স্মরণ করেন আইনজ্ঞ ও বিচারকেরা! শম্বুক বর্ণাশ্রম প্রথা ভেঙে সব একাকার ক'রে দিচ্ছিল তাই নররূপী জীবন্ত ঈশ্বর প্রভু রামকে তাকে হত্যা করতে হ'য়েছিল।


এ প্রসঙ্গে The greatest phenomenon of the world SriSriThakur Anukul Chandra বলেছিলেন, "যারা বিজ্ঞানসম্মত বর্ণাশ্রমধর্ম্মকে বিপর্য্যস্ত করবার উদ্দেশ্যে generous pose (উদারতার ভঙ্গী) নিয়ে inferior (অসমর্থ)-দের ক্ষেপিয়ে তোলে, তারা সমাজের মহাশত্রু। শ্রীরামচন্দ্র শম্বুকের প্রতি অতো কঠোর হয়েছিলেন---কারণ, শম্বুকের movement (আন্দোলন)-টা ছিল বর্ণাশ্রম ধর্মের বিরুদ্ধে একটা passionate raid (প্রবৃত্তি প্ররোচিত অভিযান) ছাড়া আর কিছুই নয়।"


তাই জাত আর জাতি নিয়ে প্রশ্নের সিদ্ধান্তে এত সহজেই বিচারক যেন নিজেকে সর্বশক্তিমান, সবজান্তা, সর্বজ্ঞ ও শেষ ব্যক্তি ভেবে না বসেন!?


সামনে হাজারো লাখো মানুষের ভিড়ে স্বয়ং পরমাত্মা উপস্থিত আছেন আমাদেরই জন্য!
খুঁজে নাও তাঁকে! করো আলিঙ্গন!!
( লেখা ১৫ই আগষ্ট/২০)



প্রবন্ধঃ শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রচার ও সৎসঙ্গীরা।

এইগুলি কি ধরণের প্রচার। 'পরম পিতার সাথে যুক্ত হ'ন'  নামে যে পেজে এটা পোষ্ট করা হয়েছে তার এডমিনরা এবং যিনি পোষ্ট করেছেন তিনি কি মনে করেন যে সৎসঙ্গীরা সবাই বোকা? সৎসঙ্গীরা তাদের এই বদ উদ্দেশ্যকে সফল হ'তে দেবেন? জানি না এই পোষ্টের উদ্দেশ্য কি। দেখুন কিরকম সুপার ইম্পোজ করা ছবি। এডিট করা ছবি বানিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে ব্যর্থ সে চেষ্টা।



কিন্তু কমল হাসানের ছবি সহ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিশেষ বক্তব্য পেশের মাধ্যমে পোষ্ট করা এই ছবি দিয়ে কি এই পেজ মনে করে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে ধন্য করা যায় বা বদনাম করা যায়? সমাজের নাম করা লোক, প্রতিষ্ঠিত লোক, নামের পিছনে তকমা লাগানো লোক হ'লেই আর শেষ জীবনে সে ঠাকুরকে গ্রহণ করলেই ঠাকুর খুশী হন, ধন্য হন? নাকি দীক্ষা গ্রহণ করার পর সে ঠাকুরের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য জীবন উৎসর্গ করলে ঠাকুর খুশী হন? কোনটা? কোনটা মনে করেন এই পেজের প্রচারকেরা?


শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছিলেন, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, পুলিশ, নেতা, মন্ত্রী ইত্যাদি ইত্যাদি সমাজের বিশিষ্ট বিশিষ্ট লোকেদের কাছে মানুষ যেচে আসে আর আমাদের সাধারণ মানুষের কাছে যেচে যেতে হয়, সেধে সেধে কথা বলতে হয়। তাই সমাজের এলিটদের পক্ষে মানুষকে যাজন করা, মানুষকে বাঁচা-বাড়ার নিখুঁত পথ দেখিয়ে দেওয়া যতটা সহজ, তাঁদের কথা যতটা সহজে গ্রহণ করে মানুষ ততটাই কঠিন আমাদের মতন সাধারণ মানুষের পক্ষে মানুষকে যাজন করা ও মানুষকে জীবন বৃদ্ধির পথে, বাঁচা-বাড়ার পথে চালিত করা। তার ওপর আপনাদের মতো সত্যের পোশাক পড়া মিথ্যের দল আর নামগোত্রহীন অদ্ভুত জীবেদের উপস্থিতি যদি প্রকট হয়।


তাই সমাজের এলিটরা যদি এই সুযোগ সুবিধা পেয়েও শ্রীশ্রীঠাকুরকে নিজ স্বার্থে, নিজ বৃদ্ধি ও প্রতিষ্ঠার স্বার্থে কাজে লাগায় তাহ'লে সমাজের সাথে সাথে তারও ধ্বংস অনিবার্য। এখন সুপার ইম্পোজ করা এই ছবি সহ পোষ্ট কি উদ্দেশ্যে, ঠাকুরের বদনাম করার জন্য নাকি ঠাকুরের মহিমা কীর্তনের জন্য সেটা প্রচারকারীরা জানে আর জানে ঠাকুর স্বয়ং। তাই পেজ, পেজের এডমিন ও নামগোত্রহীন পোষ্টদাতা আপনারাও সাবধান হ'য়ে যান। বোকা হয়তো কিছু সৎসঙ্গী হবেন কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারবেন না। শেষের সেদিন কিন্তু আপনাদের ভয়ংকর।


কমল হাসানের ছবি 'VICRAM' তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ছবি হিসেবে হিট করা ও BOX OFFICE-এ সবচেয়ে বেশি টাকা রোজগার করার সঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুরকে জড়িয়ে ফেলার, শ্রীশ্রীঠাকুরের দীক্ষা নেওয়ার সম্পর্ক ও সত্যতা কোথায়? হ'তেই পারে অনেক কিছু যা কল্পনার অতীত। কার সাধনা কতটা পাওয়ারফুল তা সে নিজেই জানে না; কিন্তু জানে দয়ালের জন্য কার কতটা করা আছে। আর ছবি সফল হওয়া আর টাকা রোজগার করার সঙ্গে দীক্ষার সম্পর্ক ও সত্যতা থাকলেও তা এইভাবে সুপার ইম্পোজ করা ছবি বানিয়ে ক্যাশ করার মাধ্যমে ঠাকুরের বদনাম করা কি যায়? কেন প্রচারকারীরা ঠাকুরকে এইরকম সস্তা ব্যভিচারী পথে প্রচারের মাধ্যমে বদনাম করতে চাইছে? কেন সুযোগসন্ধানীরা শ্রীশ্রীঠাকুরকে নীচা দেখাবার জন্য সুকৌশলী বিরুদ্ধ প্রচার করছে?


সে যাই হ'ক, প্রচারকারীদের উদ্দেশ্যে জানাই, ধ'রেই নিলাম আপনার এই সুপার ইম্পোজ করা ছবি ইম্পোজ করা নয়। তথাপি কমল হাসান কি দীক্ষা নিয়ে ঠাকুরকে ধন্য করেছেন নাকি নিজে ধন্য হয়েছেন? কমল হাসান নিজে কি এই বিষয়ে কিছু বলেছেন? বললেও কি বলেছেন সেটা আগে তুলে ধরা উচিৎ ছিল নাকি? দেখাতে পারবেন প্রমাণ? এ সম্পর্কে তাঁর মুখ থেকে শোনা কথা পোষ্ট করা উচিৎ ছিল নাকি? কি মনে করেন কমল হাসান দীক্ষা নিলেই সৎসঙ্গ জগত আনন্দে লম্ফ দিয়ে ঝম্প মারবে? আর আপনারা আনন্দে নেত্য করবেন? দেখবেন নেত্য করতে করতে একসময় না পা হড়কে সলিল সমাধি হয়! কারণ সমাধির নিশ্চিত রাস্তা আপনারা নিজেরাই তৈরী ক'রে রেখেছেন। এই সুপার ইম্পোজ ক'রে ছবি বানিয়ে কাউকে হেনস্থা করা, অপমান করা ক্রাইমের মধ্যেই পড়ে এটা মাথায় রাখবেন।


এখন প্রশ্ন জাগে মনে, শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র এখন এত সস্তা হ'য়ে গেছেন প্রচারকারীরা মনে করে? টাকা রোজগারের সঙ্গে ঠাকুরের মহিমাকে জড়িয়ে এত মিথ্যে সস্তা প্রচার কি এটা প্রমাণ করে যে ঠাকুর অর্থ মান যশ রোজগারের মেশিন????????
শ্রীশ্রীঠাকুরের সত্যানুসরণের প্রথম বাণীটা কি ছিল? সেখানে কি বাণীটা এরকম নিম্নরূপ ছিল কি?
"অর্থ মান যশ ইত্যাদি পাওয়ার আশায় আমাকে ঠাকুর সাজিয়ে ভক্ত হও। সাবধান হ'তে যেও না, তোমার ঠাকুরত্ব জাগুক না জাগুক আমি তোমার ঠাকুর, তোমার কেন্দ্র।"


শ্রীশ্রীঠাকুরের জীব জগত জীবন কারণ সম্পর্কিত ২৫হাজার বাণী এবং কথোপকথন সমৃদ্ধ সব বই-এর কথাগুলি আজ মূল্যহীন হ'য়ে গেছে ব'লে মনে করছে বালখিল্য প্রচারকারীরা তাদের সস্তা প্রচারের ধাক্কায়!? বিশ্বের বিস্ময়ের বিস্ময় সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র কি আজ মানুষের কাছে আয়ের উপকরণ হ'য়ে দাঁড়িয়েছে মাত্র মনে করে পেজ ও পেজের এডমিন ও পোষ্টদাতা!?


তাঁর বাণী
"চলনহারা চরণপূজা
বন্ধ্যা পূজা সে জানিস" উল্টে গিয়ে
'চরণহারা চলনপূজা
বন্ধ্যা পূজা সে জানিস' হ'য়ে গেল?
আবার,
"মানুষ আপন টাকা পর
যত পারিস মানুষ ধর" পরিবর্তিত হ'য়ে
"টাকা আপন মানুষ পর
যত পারিস টাকা ধর" হ'য়ে গেছে!?
আর,
"নিজের ধান্ধায় থাকল যা'রা
জ্যান্ত মরা রইল তা'রা,
ইষ্টধান্ধায় ঘুরল যে
বাজিমাৎ করল সে।" এই বাণী এখন কি পরিবর্তিত হ'য়ে
'নিজের ধান্ধায় থাকল যা'রা
বাজিমাৎ করল তা'রা,
ইষ্টধান্ধায় ঘুরল যে
জ্যান্ত মরা রইল সে।' ---এই রূপ হ'লো?
তাহ'লে কি বর্তমান অর্থ-মান-যশ লাভে মত্ত পৃথিবীতে এখন আমাদের শ্রীশ্রীঠাকুরের সাধনায় সিদ্ধিলাভের পথে বাধা ও সাহায্য সম্পর্কিত বাণী উল্টে গিয়ে এমনতর হবে? যেমন,
"বৃত্তিস্বার্থী বহুরতি
বিচ্ছিন্নতায় টানে,
ইষ্টানুগ বহুরতি
তোলে ঊর্দ্ধপানে।" এই বাণী উল্টে গিয়ে নিম্নরূপে ধরা দিয়েছে?
'বৃত্তিস্বার্থী বহুরতি
তোলে ঊর্দ্ধপানে
ইষ্টানুগ বহুরতি
বিচ্ছিন্নতায় টানে।'-


কি বলেন 'পরম পিতার সাথে যুক্ত হ'ন' পেজ ও পেজের এডমিন এবং নামগোত্রহীন পোষ্টদাতা? এই উল্টো বাণীগুলো আপনাদের জন্য, সৎসঙ্গীদের জন্য নয়। আপনারা কি মনে করেন সৎসঙ্গীরা সবাই আপনাদের পেজে যা পোষ্ট হবে তাই গোগ্রাসে গিলবে? চেষ্টা ক'রে দেখতে পারেন। তবে আবার বলি, কৃত কর্মের নির্ম্মম ফলের জন্য তৈরী থাকুন।
( লেখা ১৫ই আগষ্ট, ২৩)






চিঠিঃ সাত্বত কথাকে খোলা চিঠি।

শ্রদ্ধেয় শ্রীপ্রফুল্লদার লেখা ''স্মৃতি তীর্থ' গ্রন্থ থেকে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ এক বিষয় আপনি পোষ্ট করেছেন, তা চোখে পড়লো। পড়লাম। মনে স্বাভাবিকভাবেই কিছু প্রশ্ন জাগলো তাই আপনাকে খোলা চিঠির মধ্যে দিয়ে জানাচ্ছি। যদি উত্তর থাকে উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন।
শ্রী প্রফুল্ল কুমার দাসদা এই কথাগুলি 'আলোচনা প্রসঙ্গ'-র মধ্যে লিখেছেন? তিনি ঠাকুরের নারায়ণী কেরানী ছিলেন। তিনি ঠাকুরের সমস্ত কথা আলোচনা প্রসঙ্গে ধ'রে রাখার জন্য স্বয়ং ঠাকুরের দ্বারা নিযুক্ত হ'য়েছিলেন। তাহ'লে এই কথাগুলি তিনি নিশ্চয়ই আলোচনা প্রসঙ্গের ২৩ খন্ডের কোনও না কোনও খন্ডে তুলে ধরেছেন? সমস্ত কিছুই তাঁর ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ থাকতো। আর সেই ডায়েরি থেকেই ধীরে ধীরে ঠাকুর থাকতেই ছাপিয়ে বের হয়েছে ঠাকুরের প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণের মধ্যে দিয়ে শ্রীশ্রীবড়দার তত্ত্বাবধানে 'আলোচনা প্রসঙ্গে' খন্ডের পর খন্ড 'সৎসঙ্গ প্রকাশনার' দ্বারা। আপনারা তো গবেষণা করেন, আর গবেষণা করেন কোনও একটা বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েই। খুব সুকৌশলে একটা বার্তা ছড়িয়ে দিতে চান আপনাদের পেজের মাধ্যমে পরম বন্ধু সেজে আফজল খাঁর মত আস্তিনের তলায় খঞ্জর লুকিয়ে রেখে। স্লো পয়েজন করতে চান স্টাডি না করা সৎসঙ্গীদের। এর আগেও আপনাদের লেখা চোখে পড়েছে। শ্রীশ্রীবড়দাকে নিয়েও লেখা চোখে পড়েছে। যখন যা চোখে পড়েছে আর মনে প্রশ্ন জেগেছে তখনই জানতে চেয়ে আপনাদের কমেন্ট করেছি। কিনতি কোনোবারই উত্তর পাইনি। এবারও এই বিষয়ের উপর জানতে চেয়েছি। কিন্তু কোনও উত্তর পাইনি। তাই এই খোলা চিঠি।
আলোচনা প্রসঙ্গের ২৩ খন্ডে প্রফুল্লদা যদি এই বিষয়ে লিখে গিয়ে থাকেন দয়া ক'রে তার রেফারেন্স সহ তুলে ধরলে সত্যি সত্যিই উপকৃত হ'ই। কথাগুলি তো ঠাকুরেরই। তাড়াতাড়ি আলোচনা প্রসঙ্গের কোন হন্ডে আছে রেফারেন্স পেলে তাড়াতাড়ি খুঁজে পাবো। সংশয়, দ্বিধাদ্বন্ধ কেটে যাবে। আর যদি 'আলোচনা প্রসঙ্গে'-র কোনও খন্ডে থেকে থাকে তাহ'লে এই গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলি তিনি কেন আলাদা ক'রে 'স্মৃতি তীর্থে' গ্রন্থে লিখে রেখে গেলেন? কি দরকার ছিল তার আলাদা ক'রে কথাগুলি লিখে যাওয়ার? নাকি আলোচনা প্রসেঙ্গের খন্ডে খন্ডেও আছে আবার 'স্মৃতি তীর্থে'ও আছে? আর কখন লিখেছেন স্মৃতি থেকে বের ক'রে 'স্মৃতি তীর্থে'? ১৯৯১ সালে প্রথম প্রকাশ হয় এই গ্রন্থের। তখনও তো শ্রীশ্রীবড়দা বেঁচে ছিলেন। তিনি কি এই গ্রন্থ শ্রীশ্রীবড়দাকে দেখিয়েছিলেন? ঠাকুরের এই গুরুত্বপূর্ণ কথাটা শ্রীশ্রীবড়দা জানতেন? তাঁর এই গ্রন্থ তপোবন প্রকাশন থেকে কেন প্রকাশ হ'লো? এত অমূল্য গ্রন্থ কেন সৎসঙ্গ প্রকাশন থেকে প্রকাশ হ'লো না? এই গ্রন্থের সমস্ত কথাগুলি কখন শ্রীশ্রীঠাকুর বলতেন? আলোচনা প্রসঙ্গের ২৩ খন্ডে কি স্মৃতি তীর্থে'-বলা কথাগুলি স্থান পেয়েছে? না পেলে কেন পায়নি? কে দেবে উত্তর? শ্রদ্ধেয় শ্রীপ্রফুল্লদা তো এখন বেঁচে নেই। তাহ'লে কেন, কি উদ্দেশ্যে তিনি শেষ বয়সে এই কথাগুলি লিখলেন? এই কথাগুলি লিখে তিনি কি বোঝাতে চেয়েছেন?
সমঝদার কে লিয়ে ইশারা কাফি হোতা হ্যাঁয়, তাই না বন্ধু (সাত্বত কথা)?
( লেখা ১৫ই আগষ্ট'২৩_

Monday, August 12, 2024

প্রবন্ধঃ সৎসঙ্গী সৎসঙ্গীর মত কথা বলুন, আচরণ করুন।

বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জুড়ে যে খুন, অগ্নিসংযোগ, মারামারি, লুটপাট, ভাঙচুর ইত্যাদি হিংসাত্মক, লজ্জাজনক, দুঃখজনক, হতাশাজনক ঘটনা ঘটে চলেছে তা'তে স্বাভাবিকভাবেই সংখ্যালঘুরা আতঙ্কিত। আতঙ্কিত হিন্দুরা। আর এই আতংক স্বাভাবিক। তা সে যে সম্প্রদায়, যে ধর্মমতের মানুষ হ'ক না কেন। আর, বাংলাদেশের হিন্দু সৎসঙ্গীদেরও এই মুহুর্তে ভেবে দেখতে হবে তারা কি? তারা কি প্রথমে হিন্দু নাকি প্রথমে সৎসঙ্গী?

তাই সৎসঙ্গীদের উদ্দেশ্যে একজন সৎসঙ্গী হ'য়ে বলি,

হিন্দু মুসলমানের পারস্পরিক এই সমস্যা চিরকাল ছিল, আছে ও ভবিষ্যতেও থাকবে। বাংলাদেশেও বর্তমানে এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। আর, এর জন্যে হিন্দু, মুসলমান, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ ইত্যাদি সবাই দায়ী। আর, যে যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ সে সেখানে তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। নিজেরা মারামারি ক'রে সবাই একদিন মরবে। প্রথমে এক সম্প্রদায় অন্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে লড়াই ক'রে মরবে, পরে যে সম্প্রদায় যেখানে থেকে যাবে এককভাবে সেখানে সেই সম্প্রদায়ের লোক নিজেদের মধ্যে মারামারি ক'রে অবশেষে মরবে। এর জন্যে কেউ কাউকে দায়ী করার আগে নিজের কোথায় কোথায় ত্রুটি ছিল, কোথায় কোথায় ভুল, কোথায় কোথায় অসম্পূর্ণতা ছিল তা' খুঁজে দেখে তা দূর করার দরকার, নিজেকে শুধরে নেবার দরকার।

পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র এ সম্পর্কে পরিষ্কার সাবধান ক'রে দিয়ে বলেছেন, "তুমি ঠিক ঠিক জেনো যে তুমি তোমার নিজের, নিজ পরিবারের, দশের ও দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য দায়ী।"
তাই সৎসঙ্গীরা আগে নিজেদের শুধরে নিক সে হিন্দু হ'ক আর মুসলমান হ'ক আর যে যেই সম্প্রদায়ের হ'ক। ভুলে যাবেন না বাংলাদেশে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেমন চরম অপমানিত হয়েছেন ঠিক তেমনি শেখ মুজিবর রহমানও হয়েছেন। এদের একজন হিন্দু ছিলেন আর একজন ছিলেন মুসলমান। এছাড়াও বহু হিন্দুও যেমন অত্যাচারিত হয়েছে তেমনি বহু মুসলমানও অত্যাচারিত হয়েছে। আর, বর্তমান বাংলাদেশের ঘটনায় উভয়ের উপর অত্যাচারের মুখ মুসলমান। এরকম একই মুখ হিন্দুদেরও দেখা যায় আবার অন্যান্য সমস্ত দেশে দেশে অন্য সম্প্রদায়ের মধ্যেও এরকম মুখ দেখা যায়। 

তাই ভুলে যাবেন না আপনি একজন সৎসঙ্গী।
একজন সৎসঙ্গী হ'য়ে সৎসঙ্গীর মতন কথা বলুন।
ভুলে যাবেন না আপনি একজন সৎসঙ্গী, আপনি শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের শিষ্য। আপনি যদি সৎসঙ্গী পরিচয়ে নিজেকে পরিচিত করাতে চান তাহ'লে সৎসঙ্গীর মতন কথা বলুন। সৎসঙ্গীর মত আচরন করুন। আর যদি নিজেকে হিন্দু মনে করেন তাহ'লে হিন্দুর মত কথা বলুন। হিন্দুর মত আচরণ করুন। এটা মনে করবেন না হিন্দু অধ্যুষিত হলেই আপনি ভালো থাকবেন, শান্তিতে থাকবেন, সন্ত্রাসমুক্ত ও অপরাধমুক্ত এলাকায় মুক্ত খোলা আকাশের তলায় অক্সিজেন ভরপুর সবুজায়নে থাকবেন। এর থেকে অজ্ঞানতা, মুর্খামি আর কিছুই নেই। আর এই অজ্ঞানতা, মুর্খামির ফল পেতেই হবে।
আমরা সৎসঙ্গীরা যেন ভুলে না যাই বা জানার যেন চেষ্টা করি যে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র আমাদের কিরকম দেখতে চেয়েছিলেন। শ্রীশ্রীঠাকুর তাঁর সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানের নাম 'সৎসঙ্গ' দেওয়ার পর বলেছিলেন, এটা আমার 'সৎসঙ্গ'। আর, তাঁর দীক্ষিত মানুষদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, এরা আমার সোনার সৎসঙ্গী। প্রায় ১০ কোটি লক্ষ্যে ছুটে চলা সৎসঙ্গীরা একথা হয় জানেই না, জানলেও ভুলে গেছে কিংবা বোঝেই না। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে আর তা' ব্যতিক্রম।

সৎসঙ্গী অর্থাৎ সৎ-এর সঙ্গী। সৎ অর্থাৎ অস্তিত্ব। অস্তিত্বের সঙ্গী সৎসঙ্গী। অস্তিত্বের অস্তিত্ব পরম অস্তিত্বের সঙ্গী। যারই অস্তিত্ব আছে সেই সৎ। হিন্দু, মুসলমান, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ ইত্যাদি ইত্যাদি পৃথিবীতে যত ধর্মমত আছে, আছে সম্প্রদায় সমস্ত ধর্মমতের, সমস্ত সম্প্রদায়ের প্রায় মোট ৮০০ কোটি মানুষ সবারই অস্তিত্ব আছে, অস্তিত্ব রক্ষার ও বৃদ্ধি পাওয়ার ইচ্ছা আছে। তাই সে যে যে ধর্মমতের হ'ক না কেন যে অস্তিত্বকে ভালোবাসে, যে অস্তিত্বের পূজারী, যে অস্তিত্বের পৃষ্ঠপোষক সে বা তারাই সৎসঙ্গী। আর যে সৎসঙ্গী অর্থাৎ অস্তিত্বের সঙ্গী সে অস্তিত্বের অস্তিত্ব পরম যে অস্তিত্ব, অস্তিত্বের যে কারণ, কারণের কারণ, পরম যে কারণ অর্থাৎ সেই পরম অস্তিত্ব, পরম কারণের পূজারী।

আর, সৎসঙ্গ হ'লো সমস্ত অস্তিত্বের মিলন স্থল। সৎ মানে অস্তিত্ব আর সঙ্গ মানে মিলন, মিলনের স্থল। তাই যে স্থানে সমস্ত অস্তিত্বের পূজারীরা মিলিত হয় সেই স্থানই সৎসঙ্গ। সেই স্থানে হিন্দু, মুসলমান, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ ইত্যাদি পৃথিবীতে প্রায় ৫০০০ হাজার ধর্মমতের মানুষ আছে আর প্রত্যেকের অস্তিত্ব অর্থাৎ Existence আছে, তারা সবাই যে স্থানে, যে পতাকার তলায় সমবেত হয়, মিলিত হয় সেই স্থানই সৎসঙ্গ আর সবাই মিলিত হয় এক ও অদ্বিতীয়ের আহ্বানে।

তাই প্রথমে আমি অস্তিত্বের পূজারী তাই প্রথমে আমি সৎসঙ্গী তারপরে আমি হিন্দু, বা মুসলমান বা খ্রীষ্টান ইত্যাদি ৫০০০ ধর্মমতের বা সম্প্রদায়ের। তাই আমি, আমরা হিন্দু, মুসলমান, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ, জৈন ইত্যাদি প্রতিটি মানুষ ৮০০ কোটি মানুষ নিজের নিজের ধর্মমত বা সম্প্রদায়ের মানুষ হওয়া সত্ত্বেও অস্তিত্বকে ধ'রে রাখার কারণে, অস্তিত্বকে রক্ষা করা ও বৃদ্ধি পাওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাবার কারণেই আমরা প্রত্যেকেই সৎসঙ্গী।

আর, সূর্যকে কেন্দ্র ক'রে যেমন গ্রহরা নিজের নিজের অরবিটে সুশৃংখল ও স্বাধীনভাবে স্বাধীন সত্ত্বা নিয়ে ঘোরে ঠিক তেমনি আমরাও পুরুষোত্তমকে কেন্দ্র ক'রে স্বাধীনভাবে সুশৃংখল ভাবে সমস্ত জাতের, সমস্ত বর্ণের, সমস্ত ধর্মমতের ৮০০ কোটি মানুষ নিজের নিজের ধর্মমতকে বজায় রেখেই, পালন করেই, কনভারশানের মত ঘৃণ্য পথ অবলম্বন না করেই আমরা সবাই বাঁচা ও বাড়ার পথে এগিয়ে যেতে পারি প্রত্যেকে প্রত্যেকের হাত ধ'রে ঈশ্বর, আল্লা বা গড-এর সাকার রূপ সদ্গুরু, পরমপুরুষ, পুরুষোত্তম, পরমপিতা, সৃষ্টিকর্তা জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীশ্রীরামচন্দ্র, শ্রীশ্রীকৃষ্ণ, শ্রীশ্রীবুদ্ধ, শ্রীশ্রীযীশু, শ্রীশ্রীহজরত মহম্মদ, শ্রীশ্রীমহাপ্রভু, শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণকএর সর্বশেষ রূপ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে জীবনের কেন্দ্রে রেখে রচনা করতে পারি স্বর্গ। এইজন্যে কোনও ধর্মমত বা কোনও পুরুষোত্তমকে ত্যাগ করতে হয় না। যে প্রকৃতই অস্তিত্বের পূজারী সে অস্তিত্বের অস্তিত্ব পরমঅস্তিত্বের পূজারী, যে প্রকৃতই অস্তিত্বকে ভালোবাসে সে পরম অস্তিত্বের যুগানুযায়ী প্রতিটি পরম অতিত্বের রূপকে ভালোবাসবেই বাসবে। কারণ আমি হিন্দু আমার মধ্যে যিনি আছেন সেই 'তিনি' মুসলমান, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ইত্যাদি পৃথিবীর ৮০০কোটি মানুষের বুকের মধ্যে আছেন। আমরা সবাই সেই এক ও অদ্বিতীয় পরমপিতার সন্তান। আমরা প্রত্যেকেই সেই আত্মার আত্মা পরমাত্মার থেকে এসেছি। সেই তিনি পরময়াত্মা প্রাণ স্বরূপ আমার তোমার সবার মধ্যে বিরাজমান। আবার তিনিই মানুষ রূপে যুগে যুগে আসেন বারবার আমাদের মাঝে যখনই তাঁর ভাব ম্লান হ'য়ে যায়, উবে যাবার মতন হয় তখনি তিনি ঈশী স্পর্শে আবার সবাইকে সঞ্জীবিত ক'রে তুলবার জন্য।

এবার তাই তিনি সেই একজনই শ্রীশ্রীঠাকুর অন্নুকূলচন্দ্র রূপে এসে আমাদের সবাইকে সৎসঙ্গী আখ্যা দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন আমরা যে যে ধর্মমতের হ'ই না কেন, যাঁরই অনুগামী হ'ই না কেন আমরা সেই একজন পরম অস্তিত্ব রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ-এর অস্তিত্বের সঙ্গী।

তাই, আমরা সবাই, সব ধর্মমতের সবাই সৎসঙ্গী, পরম অস্তিত্ব পরমপিতার সন্তান সৎসঙ্গী ভাইবোন।


Sunday, August 11, 2024

প্রবন্ধঃ বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা ও কিছু প্রশ্ন

বাংলাদেশের গণ অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর যমুনা টিভির সম্প্রচারিত খবরে জানা গেল, বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটির পক্ষ থেকে ছাত্র নেতারা ঘোষণা করলেন,
প্রথমে ছাত্র নাগরিকদের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন করার জন্য এই জয় ছাত্র আন্দোলনের শহীদ ও হতাহত এবং মুক্তিকামী ছাত্র জনতাকে উৎসর্গ করছি। ছাত্র নাগরিক আন্দোলনকারীদের এক দফা দাবি ছিল হাসিনার পতন এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ। একজন ব্যক্তিকে সরালেই সমস্যার সমাধান হবে না। বরং যে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে দিয়ে এই ফ্যাসিজমের জন্ম হয় সেই কাঠামোর বিলোপ ক'রে এক নোতুন বাংলাদেশ, এক নোতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত আমাদের করতে হবে। সেই জায়গা থেকে শেখ হাসিনার পতন আমাদের আন্দোলনের প্রথম ধাপ যেটা আন্দোলনকারীরা অর্জন করেছে। এখন দ্বিতীয় ধাপের দিকে যেতে হবে। আন্দোলনকারী ছাত্র নাগরিকদের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন একটা জাতীয় সরকারের প্রস্তাব করা হবে।


সমন্বয়কদের ঘোষণা অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকারের প্রস্তাব করা হবে ব'লে জানা গেছে। সেই জাতীয় সরকারে অভ্যুত্থানকারী ছাত্র নাগরিকদের অংশ থাকবে। সমাজের নানা নাগরিক সমাজের নানা পেশার সঙ্গে যুক্ত সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা ক'রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে কারা থাকবে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তার নাম ঘোষণা করা হবে। যারা শহীদ হয়েছে তাদেরকে জাতীয় বীর হিসেবে ঘোষণা করেছে। বিগত কয়েক বছরে যারা এই ফ্যাসিষ্ট সরকারের দ্বারা নিহত হয়েছেন তাদেরকেও আজকের দিনে স্মরণ করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগ শুধু নয় গণ হত্যার সঙ্গে জড়িত, মানবাধিকার লঙ্ঘন, ভোটাধিকার লঙ্ঘন ইত্যাদি সহ হাসিনার বিচার করা হবে এবং ফ্যাসিজমের সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হবে। অভ্যুত্থানকারী ছাত্র নাগরিকের সমর্থিত বা প্রস্তাবিত সরকার ছাড়া আর কোনও সরকারকে সমর্থন করা হবে না। সেনা সমর্থিত সরকার বা রাষ্ট্রপতি সমর্থিত কোনও সরকারকে বিপ্লবী ছাত্র জনতা গ্রহণ করবে না। বিভিন্ন সমন্বয় আন্দোলনকারী ও নিরপরাধ কারাবন্দীদের, রাজবন্দীদের ২৪ঘন্টার মধ্যে মুক্তি দিতে হবে। সকলকে সতর্ক থাকার কথা ঘোষণা করা হয়, যে কোনও রকম অঘটন, নাশকতা, সহিংসতা থেকে যাতে এই আন্দোলনের ন্যায্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে। ছাত্র সমন্বয়কারী নেতারা ঘোষণা করে, এ দেশ আমার, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি আমাদের, মুক্তিকামী ছাত্র জনতাকে তা রক্ষা করতে হবে। কোনও প্রাণ্নাশ, সহিংসতা আমরা চাই না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে রাজপথে অবস্থান করবো। এবং যাদের বিচার করা হবে তাদের একটা প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ন্যায় বিচারই আমরা সমাজে প্রতিষ্ঠা করবো। আমরা বৈষম্য দূর করার জন্য, সমাজের ন্যায় বিচার ও জীবনের নিরাপত্তার জন্যই আমরা আন্দোলন ঘোষণা করেছিলাম, সেই ঘোষণার প্রতি সবাই যেন শ্রদ্ধাশীল থাকে এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে এই অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে এবং আমরা আহ্বান করছি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সকলের জীবন, জান মালের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সবচেয়ে বেশী সতর্ক থাকবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ থেকে সকল পরিকল্পনাকে নস্যাত ক'রে দিতে হবে। ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে দল, মত, সম্প্রদায় নির্বিশেষে আমরা জড় হয়েছি। কোনও ধরণের সাম্প্রদায়িক উস্কানি, নাশকতা বা বিভাজনের চেষ্টা করা হ'লে মুক্তিকামী ছাত্র জনতাকে তা রুখে দিতে হবে। গণ অভ্যুত্থানের জন্য সকল দেশবাসীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আগামী ২৪ঘন্টার মধ্যেই লিয়াজোঁ কমিটি ঘোষণা করা হবে যারা সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবে।

এ প্রসঙ্গে কিছু প্রশ্ন মনে জাগলো।
১) সব আন্দোলনেই তা' সঠিক বা বেঠিক যাই-ই হ'ক না কেন যে সম্পদ ও জীবন ক্ষয়ক্ষতি হয় আর তা আন্ডারস্টুড। কিন্তু যে মানব সম্পদ ও বিশাল অঙ্কের জাতীয় সম্পদ ক্ষতি হ'লো তা'তে কার লাভ আর কার ক্ষতি হ'লো? এই বিশাল ক্ষয়ক্ষতির গুনাগার কারা দেবে? এই বিশাল ক্ষতির কোনোদিন পূরণ হবে? এই বিশাল ক্ষতির ক্ষত ধীরে ধীরে বাড়তে বাড়তে আরও বড় ক্ষতিকে ডেকে আনবে না তো ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকের ওপর?


২) যার বা যাদের বুক খালি হ'ল সেই বুক আর কোনোদিন পূরণ হবে? তাকে বা তাদেরকে তো খালি বুক নিয়ে যতদিন বাঁচবে ততদিন 'শূন্য এ বুকে পাখি মোর ফিরে আয়, ফিরে আয়' এই হাহাকার নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে বাঁচতে হবে?' তাহ'লে কি একটু সতর্কতার অভাব ছিল? আবেগে ভেসে যাওয়া কি কাল হ'লো?


৩) ছাত্র আন্দোলন তো ছিল কোটা সংস্কারের আন্দোলন। তা' এই ছাত্র আন্দোলন রাতারাতি 'হাসিনার পতন এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ' আন্দোলনে ঘুরে গেল কি ক'রে? ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থায় কি এর একমাত্র কারণ?

৪) কোন ধরণের রাষ্ট্রীয় কাঠামো ফ্যাসিজম থেকে রাষ্ট্রকে মুক্তি দিতে পারে? এ সম্পর্কে একটু বিস্তারিত ব্যাখ্যা করলে ভালো হ'তো। যাই হ'ক, সময় এর উত্তর দেবে।


৫) আর আবু সাঈদের মত শহীদ বীর ছাত্রছাত্রী বা সাধারণ মানুষ যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের পরিবার কি মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের মত কোনও বিশেষ সুযোগ বা সুবিধা পাবে আগামী নোতুন সরকারের কাছ থেকে?


৬) দেশের সম্পদ রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে খুব ভালো লাগলো। ইতিমধ্যে দেশের সম্পদের ক্ষয় ও ক্ষতির পরিমাণ কত? আর তা' জানালে সবার একটা ধারণা হ'তো, ধারণা হ'তো আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি কি হওয়া উচিত।


৭) "গণ হত্যার সঙ্গে জড়িত, মানবাধিকার লঙ্ঘন, ভোটাধিকার লঙ্ঘন ইত্যাদি সহ ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচার হবে এবং ফ্যাসিজমের সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হবে।"
আর যারা আন্দোলন চলাকালীন জাতীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি করলো এবং আগামী সরকারকে ও দেশের সাধারণ জনগণকে এই ক্ষয়ক্ষতির জন্য যে ভয়ংকর সমস্যার সম্মুখীন হ'তে হবে সে সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গী কি থাকবে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয় কমিটির ও সরকারের?


৮) "এ দেশ আমার, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি আমাদের, মুক্তিকামী ছাত্র জনতাকে তা রক্ষা করতে হবে।"
বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটির পক্ষ থেকে ছাত্র নেতাদের এই ঘোষণা মনে আশা সঞ্চার করে। কিন্তু এই ঘোষণা কি সময়োচিত হ'লো? আন্দোলন শুরু হওয়ার আগে এবং চলাকালীন এই ব্যাপারে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের ছাত্র নেতাদের পক্ষ থেকে ক্রমাগত সতর্ক করা কি সময়োচিত হ'তো না? এটা কি সেই প্রবাদের মত "চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে"? দেশের যা ক্ষতি হয়েছে, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির যা ক্ষতি হয়েছে তা কি আর কোনোদিন পূরণ হবে? এই ক্ষতি থেকে কি কোনও শিক্ষা নেওয়ার আছে?


৯) "কোনও প্রাণনাশ, সহিংসতা আমরা চাই না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে রাজপথে অবস্থান করবো।" এই ধরনের ঘোষণা জনসাধারণের মনে সুখ ফিরিয়ে না দিতে পারলেও স্বস্তি এনে দিতে পারে। প্রাণে নিরানন্দ ও নিরাশার মাঝেও আনন্দ ও আশা এনে দিতে পারে। কিন্তু কোটা আন্দোলন ও পরবর্তী গণ অভ্যুত্থান এবং শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী পদ ত্যাগ ক'রে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরবর্তী ঘটনাবলী কি প্রাণহীন, অহিংস আন্দোলন ছিল? শান্তিপূর্ণভাবে রাজপথে অবস্থান ছিল? শান্তি দিয়ে কি অহিংসাকে থামানো যায় নাকি অহিংসা দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায়? নাকি দু'টোরই প্রয়োজন? মানদন্ড টাই বা কি? এসব ক্ষেত্রে কী করণীয়? দেশের ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে আগামী দিনে সরকার, রাজনৈতিক দল, ছাত্র আন্দোলনকারী ও জনগণের এই প্রশ্নে নোতুন ক'রে ভাবার দিক খুলে দিল কি?

১০) "আমরা বৈষম্য দূর করার জন্য, সমাজের ন্যায় বিচার ও জীবনের নিরাপত্তার জন্যই আমরা আন্দোলন ঘোষণা করেছিলাম, সেই ঘোষণার প্রতি সবাই যেন শ্রদ্ধাশীল থাকে।"
ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের মুখ দিয়ে ঘোষণার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আবেদন করা হয়েছে দেখে স্বপ্ন দেখি ও বেশী বেশী ক'রে স্বপ্ন দেখতে ইচ্ছে করে যে হয়তো আগামী দিনে মানবিক গুণসম্পন্ন ছাত্রদের হাত ধ'রে দেশ আবার গড়ে উঠবে। কিন্তু যখন, রাস্তার ওপর দেওয়ালে নোংরা ভাষায় বিরাট বড় বড় ক'রে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেওয়াল লিখন যা দেখে লজ্জায় মাথা হেঁট হ'য়ে যায়, মুখ লুকোবার জায়গা পাই না, বিশ্বের দরবারে গোটা বাঙালি জাতের ওপর কলঙ্ক লেপন হ'য়ে যায় এবং এর সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের মূর্তির মাথার ওপর পা রাখা, পা রেখে হাতুড়ির আঘাতে, বুল ডোজারের ধাক্কায় মাথা ভেঙে ফেলে দেওয়া এবং দেশের ও দশের জন্য প্রাণ উৎসর্গিত ও দেশের মানুষের হাতেই পরিবার সহ নির্মম নিষ্ঠুরভাবে নিহত স্বাধীনতা সংগ্রামী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর মাথার ওপর পেচ্ছাপ করা দেখে বিস্ময়ে স্তব্ধ হ'য়ে যায়, ঝুরঝুর ক'রে ভেঙে পড়ে মাথার ওপর চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে হাজার হাজার স্বপ্নগুলি। মনে প্রশ্ন জাগে, এগুলি কি শ্রদ্ধার বহির্প্রকাশ? এগুলিই বাংলা ও বাঙ্গালীর কৃষ্টি-সংস্কৃতি? এই কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে কিভাবে নেবে বাংলাদেশের বর্তমানের ছাত্র নাগরিকের গণ অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে গড়ে ওঠা আগামী দিনের নোতুন সরকার?


১১) মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার যারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছিল তাঁরা বঙ্গবন্ধু মুজিবার রহমানের একসময়ের মুক্তিযুদ্ধের সাথী ছিল তাঁরা শেখ মুজিবর রহমানের মূর্তিকে ভেঙ্গে ফেলা, মাথায় পা রাখা ও মাথার ওপর পেচ্ছাপ করার ঘটনা ও দৃশ্যকে কিভাবে নেবেন?


১২) বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় যারা ছাত্র আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছিল তাদেরই বা এইসব ব্যাপারে বিশেষ ক'রে ১১ নম্বর প্রশ্নের প্রতিক্রিয়া কি?


যাই হ'ক, বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটির ঘোষণাকে সামনে রেখে যে প্রশ্নগুলি চোখের সামনে ভেসে উঠেছিল সেইগুলি ভাবা ও আলোচনা করার জন্য তুলে ধরলাম। আগামী দিনে বাংলাদেশের ও জনগণের সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতিকে দ্রুততার সঙ্গে সামলে নিয়ে নোতুন ক'রে আবার দেশের ও জনগণের সর্ব্বাঙ্গীন সাফল্যের কথা, মঙ্গল ও দ্রুত উন্নতির কথা মাথায় রেখেই নিরপেক্ষ দৃষ্টিতেই এই বিষয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।


প্রবন্ধঃ পানাগড় ও শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র।

এই সেই পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার পানাগড় যেখানে আজ থেকে ৭৭ বছর আগে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার কথা ছিল।

কিন্তু আজ সময়ের এমন করুণ পরিণতি যে, সেই পানাগড় নিয়ে স্বাধীনতার ৭৭বছর পরে বাংলার পানাগড়ে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের 'সৎসঙ্গ' নিয়ে বলার পরিবর্তে বাংলার বর্ধমান জেলার পানাগড়ে মদের ঠেক গড়ে ওঠা বিষয়কে কেন্দ্র ক'রে বলতে হচ্ছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এমনই বিপর্যস্ত, বিধ্বস্ত ভবিষ্যৎ নিয়ে পথে নেমেছে, পথে নেমেছে ছোটো ছোটো স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা। এর থেকে বড় লজ্জা, সময়ের ভয়ংকর বিষাক্ত বড় থাপ্পড় আর কি হ'তে পারে জানি না। এরকম আরও কত কত ভবিষ্যৎ সময়ের বিষাক্ত ছোবল, ভয়ংকর থাপ্পড় অপেক্ষা করছে তা' আমাদের জানা নেই।
আজ সময়ের মেশিনের ওপর ভর ক'রে ফিরে গেলাম ১৯৪৭ সালে।
সৎসঙ্গী গুরুভাইবোন আমার, চলুন ঘুরে আসি ১৯৪৭ সাল থেকে।

১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের কারণে, শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের প্রতিষ্ঠান 'সৎসঙ্গ' পাবনার সম্পত্তি হারায় যার মূল্য ছিল তৎকালীন প্রায় ১.৫ কোটি টাকা; যা ১৯৪৭ সালের পরপরই অনুমান করা হয়েছিল। দেশ ভাগের পর পাকিস্তান সরকার শ্রীশ্রীঠাকুরের সমস্ত সম্পত্তি দখল ক'রে নেয়।
ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু শ্রীশ্রীঠাকুরকে পশ্চিম বঙ্গের বর্ধমান জেলার পানাগড়ের কাছে 6000 বিঘা জমি দিতে প্রস্তুত ছিলেন মানবজাতির মঙ্গলের জন্য বিভিন্ন স্থাপনা স্থাপন করতে। যাতে পানাগড়ে বাংলাদেশের পাবনা জেলার হিমায়েতপুর গ্রামে গড়ে ওঠা বিভিন্ন কর্মযজ্ঞ পুনরায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার পানাগড়ে গড়ে ওঠে।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর সেই ৬০০০ হাজার বিঘা দানের নির্দেশ পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় নাকচ ক'রে দেন।
যদিও জওহরলাল নেহুরু সৎসঙ্গকে 6000 বিঘা জমি দিতে প্রস্তুত ছিলেন, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় প্রাথমিকভাবে 800 বিঘা জমি দেওয়ার মানসিকতা নিয়েছিলেন। শ্রীশ্রীঠাকুরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য 800 বিঘা জমি যথেষ্ট বলে বিবেচিত হয়নি, তাই শ্রীশ্রীঠাকুর প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
শ্রীশ্রীঠাকুরের ইনটেনশান যদি খারাপ হ'তো, যদি জমি দখলই মূল উদ্দেশ্য হ'তো তাঁর তাহ'লে বাংলাদেশের তৎকালীন ১৯৪৭ সালের মূল্য ১.৫ কোটির (বর্তমান সময়ের মূল্য পাঠক হিসেব ক'রে নেবেন) বিশাল সম্পত্তি ছেড়ে দিয়ে খালি হাতে এপাড়ে চ'লে আসতেন না। যদি জমি দখল বা অর্থ লোভ থাকতো শ্রীশ্রীঠাকুরের তাহ'লে তিনি মোটা অর্থের বিনিময়ে বাংলাদেশের সৎসঙ্গের জমি হস্তান্তরের পাকিস্তান সরকারের প্রস্তাব গ্রহণ করতেন। যদি শ্রীশ্রীঠাকুরের উদ্দেশ্য খারাপ হ'তো, যদি শ্রীশ্রীঠাকুর জমি পাওয়ার যোগ্য ও দক্ষ প্রার্থী বিবেচিত না হতেন তাহ'লে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের জন্য ৬০০০হাজার বিঘা জমি দেওয়ার জন্য অনুমোদন করতেন না। ভারতের প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু বেকুব ছিলেন না যে তিনি মানুষ চিনতেন না। আর, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ই বা কেন প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদিত ৬০০০ হাজার বিঘার পরিবর্তে ৮০০ বিঘা দিতে চেয়েছিলেন? নিশ্চয়ই কিছু কারণ ছিল, তিনিও কিছু অনুভব করেছিলেন। কি সেই কারণ? কি সেই অনুভব?

১) ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়ের কি শ্রীশ্রীঠাকুরের কর্মকাণ্ডের ওপর সন্দেহ ছিল?
২) তিনি কি শ্রীশ্রীঠাকুর সম্পর্কে কিছুই জানতেন না?
৩) তিনি কি শ্রীশ্রীঠাকুর সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন? অজ্ঞ ছিলেন?
৪) তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরের 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কিছুই জানতেন না?
৫) তিনি কি পাবনার হিমায়েতপুরের বিশাল 'সৎসঙ্গ' আশ্রম, সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থাপনা সম্পর্কে কিছুই খবর রাখতেন না?
যে প্রতিষ্ঠান দেখে জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী বিস্ময়ে স্তম্ভিত হ'য়ে বলেছিলেন, "আমি যে ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলাম তা' ইতিমধ্যে এই আশ্রমে গড়ে উঠেছে। যে মানুষটিকে দেখে তিনি বলেছিলেন,
"I have seen many greatmen in this world, but have never seen a man with such on extra ordinary power in all respect and as lovely as SriSriThakur Anukulchandra."
যার অর্থ, "আমি এই পৃথিবীতে অনেক মহাপুরুষ দেখেছি, কিন্তু শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের মতো অসাধারন ক্ষমতার অধিকারী এবং এত সুন্দর মানুষ দেখিনি।"
এই কথা জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী ১৯২৫ সালের ১৬ই জুলাই 'Young India Newspaper'-এ-ব্যক্ত করেছিলেন।
ইয়ং ইন্ডিয়া পত্রিকা ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে লালা লাজপত রায় দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এবং পরে জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী দ্বারা প্রকাশিত একটি ইংরেজি ভাষার সাপ্তাহিক পত্রিকা। এই পত্রিকার মাধ্যমে, মহাত্মা গান্ধী ভারতের স্ব-শাসন বা স্বরাজের দাবিকে জনপ্রিয় করতে চেয়েছিলেন এবং সেই সঙ্গে তাঁর অহিংস আন্দোলনের দর্শন প্রচার করাও ছিল আর একটি লক্ষ্য।

এই পত্রিকায় জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সম্পর্কে তাঁর অন্তর উৎসারিত শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেছিলেন। তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গে দু'বার দেখা করতে গিয়েছিলেন। একবার পাবনা আশ্রমে, আর একবার কলকাতায়।
যাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস তিন তিনবার ছুটে গেছিলেন, ছুটে গেছিলেন তাঁর সঙ্গে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য, সেই তিনি হলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন, সাম্প্রদায়িক হানাহানি ও দেশভাগের মত সবচেয়ে ভয়ংকর বিতর্কিত দুঃখজনক বিষয়ে উপেক্ষিত ব্যক্তি বিশ্বের বিষ্ময় সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র।
দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন যিনি ব্রিটিশ ভারতের বিচার বিভাগের কাছে ত্রাস ছিলেন, ছিলেন আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা সংগ্রামী, কবি, লেখক ও দানবীর, ছিলেন কলকাতার মহানাগরিক সেই দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন শেষজীবনে সব ছেড়ে যাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন, যাঁর কাছে নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন ও দীক্ষা নিয়েছিলেন বাকী জীবন গুরুর দেখানো পথে জীবন অতিবাহিত করবেন দেশ গড়ে তোলার কাজে সেই তিনি হ'লেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র।

আজকের শাসক দল বি জে পি তৎকালীন জনসংঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে এসেছিলেন এবং দীর্ঘ সময় আলোচনা করেছিলেন। সেই সময় দেশভাগ যাতে না হয় এবং বাংলা ভাগকে আটকাবার জন্য, হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে সাম্প্রদায়িক হানাহানি আটকাবার জন্য ও দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য, শান্তি ও সম্প্রীতি অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য শ্রীশ্রীঠাকুর যে বিধান দিয়েছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে তা' তিনি পূরণ করতে ব্যর্থ হন এবং পূর্ব বাংলা দুই সম্প্রদায়ের হানাহানির মধ্যে দিয়ে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। দেশভাগ ও বাংলা ভাগের পর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গে দেখা ক'রে তাঁর ব্যর্থতা দুঃখের সঙ্গে চোখের জলে স্বীকার ক'রে নেন।

এর থেকে মহান নেতাদের সীমাবদ্ধতা বোঝা যায়।
এরকমভাবে তৎকালীন বহু রাজনৈতিক বিখ্যাত ব্যক্তিদের উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। তাই উদাহরণের সংখ্যা না বাড়িয়ে আসল কথায় আসি।

৬) উপরে উল্লিখিত এসব খবর তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বিখ্যাত ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় জানতেন না?

৭) তিনি নিজে একজন বিখ্যাত ব্যক্তি হ'য়েও তিনি কি ভারতের তৎকালীন সময়ের কোনও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ খবর ও বিখ্যাত ব্যক্তিদের সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন না?
কথায় আছে, রতনে রতন চেনে। এক্ষেত্রে তাহ'লে কি ধ'রে নেবো? দু'জনের মধ্যে কে ভারতের রত্ন ছিল না? দু'জনেই ছিল না? নাকি যে কোনও একজন রত্ন ছিল আরেকজন ছিল না? তাহ'লে বাকী অন্যজন কি ছিল? কে সে? নাকি এক্ষেত্রে ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়ের ইগো কাজ করেছিল?

৮) ভারতের প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুর অনুমোদিত ৬০০০ হাজার বিঘে জমি তিনি তাঁর প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে নাকচ ক'রে ৮০০ বিঘা জমি The greatest phenomenon, The greatest wonder in the world শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে দিয়ে ঠাকুরকে দয়া দেখিয়েছিলেন?

৯) পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় কেন ৬০০০বিঘার পরিবর্তে ৮০০ বিঘা দিতে রাজি হয়েছিলেন? প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুর অনুমোদনকে একেবারে পুরোপুরি উপেক্ষা করতে পারেননি, তাই ?

কেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় ৬০০০হাজার বিঘা জমি পশ্চিমবঙ্গের পানাগড়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের স্বপ্ন পূরণের জন্য শ্রীশ্রীঠাকুরকে দিলেন না তা আজ আর জানা যাবে না। অনুমান নির্ভর কথার ওপর থেকে যেতে হবে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিকে।
অনুমান নির্ভর কথাগুলি এমন হ'তে পারে।

১) ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় শ্রীশ্রীঠাকুরকে কোনওদিন দেখেননি।

২) তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরকে চিনতেন না এবং তাঁর সম্পর্কে কিছুই জানতেন না।

৩) শ্রীশ্রীঠাকুর ও তাঁর অভূতপূর্ব বিশাল কর্মমুখর প্রতিষ্ঠান 'সৎসঙ্গ' সম্পর্কে তিনি কোনও খবর রাখতেন না।

৪) বাংলা তথা ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে এবং বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে যে হাজার হাজার জিজ্ঞাসু ও জ্ঞানী বিজ্ঞানীরা বর্তমান বাংলাদেশের পাবনা হিমায়েতপুরের আশ্রমে ও দেওঘরে ছুটে ছুটে আসতেন, শ্রীশ্রী ঠাকুরের খবর দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীরা জানতেন এবং দেশভাগের পর বর্তমান ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে নোতুন ক'রে আবার আশ্রম গড়ে তুলতে লাগলেন শ্রীশ্রঈঠাকুর একেবারে শূন্য থেকে সেইসব খবর তিনি রাখতেন না বা পাননি স্বাধীনতার পরবর্তী প্রায় ১৫ বছর বেঁচে থেকেও।

যাই হ'ক,
৫) ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের ১৯৫০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে শ্রীশ্রীঠাকুরের সাহায্য তিনি কি মনে রেখেছিলেন?

যার জন্য তিনি প্রবল প্রতিদ্বন্ধি বিরোধী প্রার্থী কম্যুনিষ্ঠ নেতা মহমমদ ইসমাইলের কাছে মাত্র ৪০০ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন সেই তাঁকেই বাংলার পানাগড়ে জায়গা না দেওয়ার জন্য কি তিনি অনুতপ্ত ছিলেন? ছিলেন না। থাকলে তিনি একবার হ'লেও কৃতজ্ঞতাবশতঃ তা স্বীকার করতেন, একবার হ'লেও শ্রীশ্রীঠাকুরের পরম ভক্ত শ্রীবালকৃষ্ণ কাপুরদার কাছে শ্রীশ্রীঠাকুরের নির্দেশে রাজনৈতিক কোনও দলের কর্মী না হ'য়েও নির্বাচনে তাঁর নির্বাচনী কআ বিরাট সৎসঙ্গী মহলে তাঁর হ'য়ে প্রচার করার ও তাঁকে জেতাবার জন্য অমানুষিক পরিশ্রম করার জন্য কাপুরদাকে ডেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারতেন। ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়কে নির্বাচনে জেতাবার জন্য এই প্রচার কাজে সব সময়ে কাপুরদার সাথী ছিলেন জনার্দন মুখার্জিদা। কিন্তু এই কাপুরদা ও জনার্দনদাকে তাঁর হ'য়ে প্রচার কার্য চালাবার জন্য তাঁর অন্যান্য পরিচিত ও দলীয় কর্মীদের প্ররোচনায় তাঁর অফিসে ডেকে ভর্ৎসনা করেছিলেন। যদি তিনি এই সমগ্র বিষয় উপলব্ধি করতেন ও কৃতজ্ঞ থাকতেন তাহ'লে একবার অন্তত শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গে দেখা করতে দেওঘরে যেতেন, যেতেন অন্তত শুধু এই কৌতুহলটুকু মাথায় নিয়ে যে, কে এই অনুকূলঠাকুর যাঁকে প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু ৬০০০হাজার বিঘা জমি দিতে রাজি হয়েছিলেন!!

৬) ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় যিনি এতবড় ডাক্তার ছিলেন, ছিলেন জ্ঞানী পন্ডিত ও রাজনীতিবিদ তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরকে চিনতে পারেননি। হয়তো বা তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরের ধর্ম, ঈশ্বর ও দর্শন সম্পর্কে, জীবনবাদ সম্পর্কে বিরুদ্ধ মনোভাবাপন্ন ছিলেন।

৭) হয়তো শ্রীশ্রীঠাকুর বিরোধী প্রতিষ্ঠিত লোকজন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দ্বারা ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় প্রভাবিত ছিলেন।

যাই হ'ক এমন অনেক কিছুই ভাবা যেতে পারে। তা'তে যা হবার হ'য়ে গেছে তা' আর ফিরিয়ে আনার বা সংশোধনের আর উপায় নেই।

শুধু ভাবি, সময় বড় নির্মম ও বলবান। আজকের পানাগড়ে যখন বর্তমান পরিস্থিতি অস্বাস্থ্যকর হ'য়ে ওঠে, জনজীবন বিপর্যস্ত হয়, জনজীবনে নেমে আসে ভয়ংকর ঘোর অন্ধকার পানাগড়ের বুকে, মদের গন্ধে দূষিত হ'য়ে উঠেছে পানাগড়ের আবহাওয়া, মানুষের জীবন যৌবন, শিক্ষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি, বিলুপ্ত হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, নষ্ট হ'তে চলেছে প্রজন্মের পর প্রজন্মের ভবিষ্যৎ। প্রতিবাদে পথে নেমেছে স্কুল পড়ুয়া ছোটো ছোটো হেলেমেয়েরা। সেখানে যদি সেদিন ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের স্বপ্ন পূরণের পৃষ্টপোষক হতেন তাহ'লে পানাগড়ের বুকে আজ স্বর্গ রচনা হ'তো। আজ নরকের পরিবেশ ও কলুষিত আবহাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হ'তো না।

আজ আর শ্রীশ্রীঠাকুর নেই, নেই শ্রদ্ধেয় ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়। কিন্তু বাংলা আছে বাংলাতেই, বাংলার মধ্যেই আছে সেই পানাগড়।
আর, আছে বাংলার বাইরে ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে শ্রীশ্রীঠাকুরের স্মৃতি বিজরিত তাঁর হাতে তৈরি এক ও একমাত্র প্রতিষ্ঠান 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান, যা গড়ে উঠতো বাংলার বুকে সেদিন যদি ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় ৬০০০ হাজার বিঘা জমি দিতে রাজী হতেন। দুঃখের বিষয় পরবর্তী সময়েও তাঁর ৮০০ বিঘা জমি দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখানের বিষয়টিও তিনি ভেবে দেখেননি।
আজও আছে বাংলার সরকার। আর আজও আছে পন্ডিত জওহরলা্ল নেহেরু অনুমোদিত সেই স্বপ্ন পূরণ না হওয়া শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের স্বপ্নের উপেক্ষিত পানাগড়ের ৬০০০ হাজার বিঘা জমি, যে জমি ঈশ্বরের জমি হ'য়েও ঈশ্বরের পদস্পর্শ থেকে বঞ্চিত দুর্ভাগ্য বুকে নিয়ে।

এখান থেকে কি আমরা সৎসঙ্গীরা কিছু শিক্ষা নিতে পারি? আসুন ভেবে দেখি।