Powered By Blogger

Monday, July 28, 2025

প্রশ্ন ও উত্তর।

"যার জীবনে যত ভুল তার আনন্দে, সুখে থাকা তত দূরে। কারণ ঠাকুর নেই তার অন্তরে।" প্রবি।

আমার এই পোষ্টের উত্তরে
Pratima Karmakar প্রশ্ন করেছেন: "মানুষের তো ভুল থেকেই শিক্ষা হয়। ভুল আছে বলেই না ঠিকের এতো কদর।"

উত্তর: এসব কথা হয়তো বা ঠিক। কিন্তু আমার কাছে ঠিক বেঠিকের কদর অনাদরের কোনও মূল্য নেই। কারণ ভুল হ'লেই তার ফল ভোগ আমাকেই করতে হবে, দিতে হবে ভুলের ওজন অনুযায়ী খেসারত। তাই এসব কথা ব'লে পাশ কাটিয়ে যাবার ও নিজেকে আড়াল করার কোনও উপায় নেই। ভুল থেকে যতই শিক্ষা নিই না কেন ভুলের যনত্রনা ভোগ তাকেই করতে হবে যে ভুল করবে। এখানে ঠাকুর অসহায়। তাই সাবধান থাকতে হয়। সাবধানে ছেলেমেয়েদের মানুষ করতে হয়। ছোট্টো বেলা থেকে ছেলেমেয়েদের ধ'রে ধ'রে শেখাতে হয় ধৈর্য্য ধ'রে। নিজের জীবনের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ছোটো শিশুদের ভুল সম্পর্কে সচেতন করতে হয়। Pratima Karmakar যা বলেছেন তা সত্য বলেই আমি তা মেনে নিয়ে হাত গুটিয়ে বসে থেকে আমার ছেলেমেয়েদের ভুলের ভুলভুলাইয়ার অন্ধকার গহ্বরে জেনে-বুঝে ফেলে দিতে পারি না। তার পাশে থেকে তাকে শিখিয়ে পড়িয়ে বৃহত্তর সমাজে এগিয়ে দিতে যাতে পারি তার জন্য তার প্রতি তীক্ষ্ণ নজর রেখে তাকে এগিয়ে দিতে হবে যাতে সন্তান ভুল করলে সঙ্গে সঙ্গে তা'কে ধ'রে ফেলতে পারি পতন থেকে। সেই ভুল থেকে সে শিখবে। কিন্তু সেই ভুল তাকে বিরাট বিপদে ফেলবে না। কারণ তার জীবনে মাথার ওপর আদর্শ আছে, আছে মাথার ওপর আদর্শ প্রাণ মা-বাবা।
আমাদের মাথায় রাখতে হবে ঠাকুরের কথা। শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, "তুমি যা করছো বা ক'রে রেখেছো ভগবান তাই-ই গ্রাহ্য করবেন আর, সেগুলির ফলও পাবে ঠিক তেমনি।" ঠাকুর ছড়ার মধ্যে দিয়ে আমাদের আরও সাবধান ক'রে দিয়ে বললেন, "যা ইচ্ছা তাই করবে তুমি তা' করলে রে চলবে না, ভালো ছাড়া মন্দ করলে পরিস্থিতি ছাড়বে না।"

তাই যার জীবনে যত ভুল বেশী তার তত আনন্দে থাকা, সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকা তত কঠিন ও কম। তা সে যতই ঠাকুর ধ'রে লম্ফঝম্ফ করুক না কেন। ঠাকুরের কাজ, ঠাকুরের গান, কীর্তন, বক্তৃতায় পাহাড় ভাঙুক না কেন, একটা ভুলও ভুল, দশটা ভুলও ভুল।
মানুষ নানারকম ভাবে জীবনে শেখে। কেউ পড়ে শেখে, কেউ শুনে শেখে, কেউ দেখে শেখে, কেউ ঠেকে শেখে। যদি কেউ মনে ক'রে ভুল ক'রে, ঠেকে শিখবো তাহ'লে তাকে কিছু বলার নেই। আর যদি কেউ মনে করে, "মহাজ্ঞানী মহাজন যে পথে করে গমন" আমিও সেই পথে গমন করবো, সেই পথে চলবো তাহ'লে তার আর ভয় নেই। কারণ সেই পথ পরিক্ষিত পথ। সেই পথের কোথায় গর্ত আছে, আছে খানাখন্দ, কোথায় বিপদ পথের বাঁকে ওত পেতে বসে আছে তা সেই একমাত্র জানে। কারণ, সেই পথের ওপর দিয়ে মহাজ্ঞানী মহাজনেরা হেঁটে এসেছেন, হোঁচট খেয়ে, বিপদকে চিনে, ভয়ংকর খানাখন্দভরা পরিবেশ পরিস্থিতিকে মোকাবিলা ক'রে পরীক্ষা নিরিক্ষার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন ক'রে তবেই জ্ঞানার্জন করেছেন আর তাই আমাদের করতে বলেছেন। তাই বলে, Knowledge rules the world. Knowledge is the wing wherewith we fly to heaven. জ্ঞান পৃথিবীকে শাসন করে। জ্ঞান একমাত্র ডানা যার সাহায্যে আমরা স্বর্গে উড়ে যেতে পারি।

তাই বলি, শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন সেই জ্ঞান, সেই জ্ঞানের ডানা। সেই ডানায় ভর ক'রে আমি পৃথিবীর ওপর আধিপত্য বিস্তার লাভ করতে পারি, স্বর্গ কি ও কোথায় তা জানতে পারি, লাভ করতে পারি।

শ্রীশ্রীঠাকুর হ'লেন জ্ঞানীর জ্ঞানী মহাজ্ঞানীর গুরু সর্বজ্ঞ, সর্বদর্শী, সর্বব্যাপী জীবন্ত ঈশ্বর। এক ও একমাত্র তাঁকে জীবনে জড়িয়ে নিয়ে তাঁর বলা, তাঁর চলা আমার জীবনে যদি গেঁথে নিয়ে চলি তাহ'লে আমার জীবনে কখনোই কোনোদিনই ভুল হবে না। আর, যখন আমার জীবনে ভুল হবে না তখন আমি নিজে আনন্দে থাকতে পারবো ও যত মানুষের জীবনে আমার জীবন যুক্ত হবে সবাইকে আনন্দে রাখতে পারবো।

আসুন পথ পেয়েছি, আনন্দে থাকি, সবাইকে আনন্দে রাখি। 
( লেখা ২৮শে জুলাই'২০২৪)

No comments:

Post a Comment