তাই আমরা ধার্মিকের আগে ও মানুষের আগে প্রকৃত শব্দ যোগ করিয়া আলাদা পরিচিতি তৈরী করিয়াছি। মানুষের সঙ্গে ধার্মিক শব্দ যোগ করিয়া ধার্মিক মানুষ নামে একশ্রেণীর নোতুন জাতের মানুষ তৈরী করিয়াছি। কিন্তু আমাদের মাথায় রাখিতে হইবে প্রকৃত ধার্মিক মাত্রই প্রকৃত মানুষ আর যে প্রকৃত মানুষ অর্থাৎ মানুষ অর্থে মানুষ সে প্রকৃত ধার্মিক অর্থাৎ ধার্মিক অর্থে ধার্মিক। প্রকৃত ধার্মিক আর প্রকৃত মানুষের মধ্যে প্রকৃতপক্ষে কোনও বিরোধ নাই। অহেতুক আমরা প্রকৃত বা তথাকথিত শব্দ যোগ করিয়াছি ধার্মিক বা মানুষের পিছনে ঐ ঘিয়ের পিছনে খাঁটি শব্দের তকমার মতো।
মানুষ মানে মান আর হুঁশ নিয়ে মানুষ। সৎসঙ্গের বর্তমান শ্রীশ্রীআচার্যদেব বাবাইদাদা আমাদের শ্রীশ্রীঠাকুরের দৃষ্টিতে আমাদের সামনে নোতুন অর্থ শেখাইলেন মানুষ অর্থের। মান মানে তিনি বলিলেন, অস্তিত্ব আর হুঁশ মানে হুঁশ অর্থাৎ চৈতন্য, চেতনা, জ্ঞান, সতর্কতা।
তাহ'লে মানুষ মানে হ'লো অস্তিত্ব সম্পর্কে, অস্তিত্বের রক্ষা ও শ্রীবৃদ্ধি সম্পর্কে জ্ঞান ও সতর্ক থাকা। ঠিক তেমনি ধর্ম মানে ধ'রে রাখা। এই জগতের যা কিছুর অস্তিত্ব আছে সেই সমস্ত অস্তিত্বকে যা যা ধরিয়া রাখে ও শ্রীবৃদ্ধির দিকে লইয়া যায় তাই-ই ধর্ম। আর এই অস্তিত্বকে রক্ষা করা ও শ্রীবৃদ্ধির দিকে লইয়া যাওয়ার জ্ঞান বা ক্ষমতা যাহার মধ্যে আছে সেই ধার্মিক বা মানুষ।
তাই ধার্মিক ও প্রকৃত ধার্মিক এবং মানুষ ও প্রকৃত মানুষের মধ্যে কোনও বিরোধ নাই। ঠিক তেমনি প্রকৃত ধার্মিক ও প্রকৃত মানুষের মধ্যেও কোনও বিরোধ বা ফারাক নাই। সবটাই আচার আচরণ, কথাবার্তা, চিন্তাভাবনার উপর নির্ভরশীল।
তাই শ্রীশ্রীঠাকুর বারবার কাতর কন্ঠে বলিতেন, "আমায় তোমরা কেউ মানুষ ভিক্ষা দিতে পার?"
( লেখা ২৬শে জুলাই'২০২৩)
No comments:
Post a Comment