Powered By Blogger

Wednesday, July 30, 2025

প্রশ্ন ও উত্তর। মুক্তির উপায়, বাঁচার উপায়।

হে দয়াল! 
শেষমেশ তোমায় ধ'রে ভাঙ্গার কারিগর হ'লাম!? গড়ার কারিগর হ'তে পারলাম না? ঘরে-বাইরে অর্থাৎ পরিবারে, হাটে-মাঠে-বাটে সব জায়গায় হ'লাম সংহতিতে ভাঙ্গন ধরানোর ছেদক!? 
আমি কি ভুলে গেলাম পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীদাদার সাবধান বাণীঃ 
"তোর খেয়াতে মাঝিই যে নেই, শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর!"
দয়াল প্রভু আমার, মুক্তির উপায়, বাঁচার উপায় ব'লে দাও।

এর উত্তর পাওয়ার একমাত্র উপায় নাম আর ধ্যান। 

জীবন্ত ঈশ্বর পুরুষোত্তম, পরমপিতা শ্রীশ্রীঠাকুরের দেওয়া বীজ নাম যা সৃষ্টির মরকোচ অর্থাৎ কৌশল, তুক সেই বীজ নাম উষানিশায় সাধনা করলে আর চলাফেরা সবসময় তাঁর দেওয়া সেই বীজ নাম জপ করলে মানুষ তীক্ষ্ণ হয়। শয়নে, স্বপনে, জাগরণে, ভোজনে, স্নানে সবসময়, ঘরে-বাইরে উঠতে, বসতে, ঘুমোতে, চলতে, ফিরতে, সকালে ঘুম থেকে উঠে আবার রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত এবং শুয়ে শুয়ে তাঁর দেওয়া বীজ নাম স্মরণ করতে হয়, ভাবতে হয়, করতে হয়। এই অভ্যাসের ফলে নাম করতে করতে ঘুমের মধ্যে চলতে থাকে সেই নাম। আর এইভাবে ধীরে ধীরে নাম সাগরে অবগাহন করতে হয়। ফলে ঘরে-বাইরে অর্থাৎ পরিবারে, হাটে-মাঠে-বাটে সব জায়গায় কৃত কর্মের ঠিক ভুল সমস্ত কিছু নিজের কাছে নিখুঁত ভাবে ধরা পড়ে। এটা বিজ্ঞান। এই বিজ্ঞান বিজ্ঞানীদের কাছে ধরা পড়ে না, ধরা পড়বে না। 

আর যে কোনও একটা নির্দিষ্ট সময় একান্তে বসে তাঁর মুর্তি ধ্যান করতে হয়, তাঁকে ভাবতে হয়, তাঁর দীর্ঘ জীবনের প্রতিমূহুর্তের দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা, আনন্দময় ঘটনাগুলি ভাবতে হয়, তাঁর বলা কথাগুলি, তাঁর বাণীগুলি যে কোনও একটা ধ'রে নিয়ে ভাবতে হয়। একাকী নিভৃতে চুপ ক'রে ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ ক'রে ভাবতে হয় তিনি আমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন। ভাবতে হয় তিনি আমাকে কি করতে বলছেন, তিনি আমাকে কেমন দেখতে চাইছেন।
 
আর, কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছোবার আগে তাঁকে মাথায় নিয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের মুখ স্মরণ ক'রে অনবরত ভাবতে হয় ঘরে-বাইরে অর্থাৎ পরিবারে, হাটে-মাঠে-বাটে সব জায়গায় চলার পথে আমি যেটা দেখলাম, যেটা জানলাম, যেটা শুনলাম, যেটা পড়লাম, যেটা ভাবলাম, যেটা বললাম, যেটা করলাম, সেটা ঠিক না বেঠিক। যদি ঠিক হয় তাহ'লে ঠিকের আরও নিখুঁতে পৌঁছে যাওয়া যায় কিনা, আর যদি বেঠিক হয় তাহ'লে তাকে কি ক'রে, কত তাড়াতাড়ি ঠিক করা যায় এই উভয় দিক ভাবা। এইভাবে অনবরত ধারাবাহিকভাবে ভাবাকে ধ্যান বলে। এই ধ্যানে ধীরে ধীরে ঠিক বেঠিক, সত্যি-মিথ্যা, সত্য-অসত্য সবকিছু চোখের সামনে উদ্ভাসিত হয়, ফলে বিবেক জেগে ওঠে এবং সমস্ত অনুকূল ও প্রতিকূল পরিবেশ-পরিস্থিতি, ঘটনা, কথা, ব্যবহার ইত্যাদি গ্রহণ করার ক্ষমতা বাড়ে। এটা বিজ্ঞান, ফলিত বিজ্ঞান। এই বিজ্ঞান অর্থাৎ বিশেষ ফলিত জ্ঞান তথাকথিত অহংকারী জ্ঞানী-বিজ্ঞানীদের কাছে ধরা পড়ে না। ধরা পড়ে জীবন্ত ইষ্টের প্রতিষ্ঠা ও ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠাকারী অটুট অচ্যুত অস্খলিত ইষ্টপ্রাণ ভক্তের অকপট, সহজ সরল বোকা ভালোবাসাময় প্রাণে।
( লেখা ৩০শে জুলাই' ২০২১) 

No comments:

Post a Comment