Powered By Blogger

Wednesday, January 29, 2025

বিচিত্রা ৮৯

সাধ আর সাধ্যের মিলনের রূপ কেমন!?
করুণাময়ী মা রাণী রাসমণি যেমন!!

ধর্ম ব্যবসায়ীদের ধর্ম ব্যবসা আর 
ধর্ম গুরুদের ঈশ্বর সাজা কাদের দয়ায়?
অশিক্ষিত মূর্খ বেকুব ধর্মভীরু দুর্বল মানুষ; 
যারা ডুবে আছে বৃত্তি-প্রবৃত্তির মদিরায়। 
( লেখা ২৯শে জানুয়ারী' ২০১৯)

দয়াল দাও ফিরিয়ে, ফিরিয়ে দাও জীবন!
অলৌকিক লৌকিক হ'য়ে উঠুক বারবার তোমার স্পর্শে,
তোমার দয়ায় নিস্তব্ধ নিথর হ'ক মরণ!!
( লেখা ২৯শে জানুয়ারী' ২০২০)

প্রভু! তোমার চোখের তারা ছাড়া 
আর কিছু নেই এই দুনিয়ায়!
(লেখা ২৯শে জানুয়ারী' ২০২১)

Saturday, January 25, 2025

বিচিত্রাঃ ৮৮

নিজেকে পরিবর্তন করো, 
ঠাকুরের উপস্থিতি ও দয়া 
প্রতি মুহূর্তে অনুভব করতে পারবে।

নিজেকে পরিবর্তন যদি না করো
দয়ালের দয়া থেকে বঞ্চিত হবে।
যদি ঘরের দরজা জানালা বন্ধ থাকে
সূর্যের আলো বাইরেই পড়বে।

আমার সঙ্গে চালাকি করতে পারো 
কিন্তু ঠাকুরের সঙ্গে নয়।
ঠাকুরের সঙ্গে চালাকি করতে গেলে 
বুঝতে পারবে না তাঁর চাল কি!

আমি জীবাত্মা। 
আমি জীবন্ত ঈশ্বরকে চিনতে অক্ষম। 
কিন্তু ঈশ্বর পূজারী মহাত্মারা কেন 
জীবন্ত ঈশ্বরকে চিনতে পারে না? কোথায় ত্রুটি?

যখন গোটা পৃথিবী হিংসার আগুনে জ্বলছে 
তখন নীরবে চোখের জল ফেলছেন পৃথিবীর স্রষ্টা। 
আর, স্রষ্টার অনুগামীরা করছে মারামারি।

"শিক্ষা আনে চেতনা, চেতনা আনে বিপ্লব, বিপ্লব আনে মুক্তি"; 
গোড়া কেটে আগায় জল ঢালার মত যত্ত সব বালখিল্য যুক্তি।

"লড়াই, লড়াই, লড়াই চাই, লড়াই ক'রে বাঁচতে চাই।"
আদর্শহীন বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে ডুবে থাকা চরম ভাঙাচোরা জীবন 
কার বিরুদ্ধে লড়বে?

রিপুতাড়িত বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে আকন্ঠ ডুবে থাকা জীবাত্মা;
ক্ষমতার লোভ কার নেই?
কে নির্লোভী? কে উদাসীন? কে নিস্পৃহ?

বিবেকহীন ও বর্জিত ব্যক্তিই বেশী বিবেকের ঢঙ্কা বাজায়।
এদের বিবেক ভাসে কথার স্রোতে ও শর্ট কাট করাতে, 
প্রকৃত করার স্রোতে নয়।
( লেখা ২৫শে জানুয়ারী'২০২৫)
























Thursday, January 23, 2025

বিচিত্রা ৮৭

রঘুনাথ! কোথায় তুমি?
দাও গো তোমার চরণ চুমি।
আমার জীবন জুড়ে শুধুই তুমি,
তুমি বিনা আমি নই আমি।
রঘুনাথ! কোথায় তুমি?
আমি তোমার রাধা, তুমি আমার স্বামী,
দু'য়ে মিলে রাধাস্বামী।
(২৩শে জানুয়ারী'২০১৮)

আসুন আলোচনা করি।
বিষয়ঃ 'জয় শ্রী রাম' ধ্বনি আজ দলীয় স্লোগান!?
উচ্ছৃঙ্খলার আভিধানিক অর্থ কি উৎসাহ!?

প্রাজ্ঞদের আছে আবেদনঃ
আসুন আলোচনা করি।
বিষয়ঃ 'জয় শ্রীরাম ধ্বনি কি অপসংস্কৃতি'!?

জয় শ্রীরাম' কি আজ বাংলায় অচ্ছ্যুত!?
পুরুষোত্তম পরমপিতা শ্রীশ্রীরামচন্দ্র আজ রাজনীতির বোড়ে!?

বিজেপি নেতা শমীকবাবু আপনাকে জিজ্ঞাস্যঃ
নেতাজীর উচ্চতার কাছে পুরুষোত্তম পরমপিতা 
শ্রীশ্রীরামচন্দ্রের উচ্চতা ছোটো!?

জয় শ্রীরাম' ধ্বনি কি কাউকে 
খেপানো ও তাতানোর হাতিয়ার!? 
কি বলেন শ্রীরাম ভক্তরা!?
(২৩শে জানুয়ারী'২০২১)









































প্রবন্ধঃ নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসের ১২৮তম জন্মদিন।

নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তী যেটি পরাক্রম দিবস হিসাবে পালন করা হয়ে থাকে, সেই দিনটিকে স্মরণে রেখে ১২৮তম জন্মদিনে আমি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি ভারতমাতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান নেতাজীকে।

দেশকে ইংরেজদের কবল থেকে মুক্ত করতে স্বাধীনতা আন্দোলনে যােগ দিয়েছিলেন নেতাজী। অল্পদিনের মধ্যেই সুভাষচন্দ্র বসু জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতা হয়ে উঠেছিলেন। তিনি দুবার কংগ্রেসের সভাপতিও নির্বাচিত হন। এরপর একবার কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন‌। ইংরেজ সরকার তাঁকে বাড়িতে নজরবন্দি করে রাখার সময় ছদ্মবেশ ধরে পালিয়ে যান তিনি। তখন ১৯৪১ সাল। প্রথমে জার্মানিতে সেখান থেকে পরে জাপান চলে যান। জাপানে রাসবিহারী বসুর সঙ্গে যােগ দিয়ে আজাদ হিন্দ ফৌজের সর্বাধিনায়ক হয়ে ওঠেন তিনি। সেই প্রথম সকলের কাছে নেতাজি হয়ে উঠলেন সুভাষ। এরপর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বাহিনী নিয়ে উত্তর -পূর্বের মণিপুর দখল করে সেখানে ভারতের পতাকা উড়িয়ে দেন। নেতাজি গঠিত আজাদ হিন্দ সরকারের পতনের পর থেকে তাঁর আর কোনও খবর পাওয়া যায়নি। কেউ কেউ মনে করেন বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু আজও প্রমাণ হয়নি। তাঁর মৃত্যু নিয়ে আজও বিতর্ক হ'য়ে চলেছে। এক রহস্যের ঘোর আঁধার ঘিরে রেখেছে নেতাজির মৃত্যু কাহিনীকে।

আজকের ২৩জানুয়ারী ১২৮তম জন্দিনটিকে 'দেশপ্রেম দিবস’ হিসেবেই পালন করেছে অনেকে। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে সুভাষ চন্দ্র বোসের সংগ্রামী, ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শকে আরও বেশি করে স্মরণ করছে বাংলা তথা দেশের মানুষ। কিন্তু দুঃখের বিষয় সুভাষ চন্দ্র বোসের এই "ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র' একটা ভুল ধারণাকে মাথায় নিয়ে আজ স্বাধীনতার পর ৭৮বছর ধ'রে দেশের সমস্ত সরকার ও রাজনৈতিক দল দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছে। তিনি ছিলেন অবিভক্ত ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। যদি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি দেশে থাকতেন এবং দেশ পরিচালনার কাজে যুক্ত থাকতেন তাহ'লে হয়তো বা আজ ৭৮ বছর ধ'রে এই ধর্ম নিরপেক্ষ ভুল শব্দ দেশের মাথার ওপর মুকুট হ'য়ে চেপে বসে অসহ্য এক দমবন্ধকর অবস্থার সৃষ্টি করতো না। হয়তো তিনি এই ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদের অসারতা বুঝতে পারতেন। বুঝতে পারতেন যদি তিনি সেই সময় দেশবন্ধুর মত সর্ব্বশ্রেষ্ঠ জীবন্ত আদর্শ সত্যদ্রষ্টা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সংস্পর্শে থেকে রাজনীতির ময়দানে বিরাজ করতেন। বুঝতে পারতেন ধর্ম্ম নিরপেক্ষ শব্দটা কেন ভুল, মারাত্মক ভুল। বুঝতে পারতেন, ধর্ম্ম নিরপেক্ষ কথাটার মধ্যে যতটা অস্বচ্ছতা ও ভুলের বীজ লুকিয়ে আছে ততটাই শ্রীশ্রীঠাকুরের বলা 'সম্প্রদায় নিরপেক্ষতা' কথার মধ্যে আছে স্বচ্ছতা ও নিখুঁতের উপস্থিতি। বলা হ'য়ে থাকে রাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি থেকে ধর্ম বিশ্বাসকে সম্পূর্ণ পৃথক রাখার কথা বলেছেন নেতাজি। আরও বলা হ'য়ে থাকে, ব্যক্তিগত ধর্ম বিশ্বাসকে নেতাজি কোনও দিন ধর্মনিরপেক্ষ নীতির উপরে স্থান দেননি। কিন্তু শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ধর্ম ও রাজনীতির সম্পর্কের মধ্যে কোনও ভুল দেখতে পাননি। বরং ধর্ম ও রাজনীতি একে অপরের পরিপূরক। শ্রীশ্রীঠাকুর ধর্ম ও পলিটিক্সের সম্পর্ক সম্পর্কে বলেছিলেন, "আমি ধৰ্ম্ম ছাড়া politics (পূৰ্ত্তনীতি) বুঝি না। ধৰ্ম্ম মানে ধৃতি, বাঁচাবাড়ায় চলা। আর, পলিটিক্স মানে পূর্ত্তনীতি বা পূরণনীতি। ধর্ম্মকে অর্থাৎ বাঁচা-বাড়াকে পরিপূর্ণ করে যা তাই পলিটিক্স, রাজনীতি। ধর্মের মধ্যে পলিটিক্স থাকবে না কেন? বাঁচতে গেলে পরিবেশের দরকার। পরিবেশ বাঁচবে না, আমি বাঁচব, তা' হয় না। তথাকথিত রাজনীতিতে হবে না। প্রকৃত রাজনীতি চাই। প্রকৃত রাজনীতি বা পূর্ত্তনীতি সে-ই করতে পারে, যে খোদাকে ভালোবাসে, prophet (প্রেরিত)-কে ভালোবাসে, প্রেরিতদের মধ্যে ভেদ করে না।

আজও আমাদের দেশের রাজনৈতিক দল ও দেশের সব দলের নেতৃবৃন্দের মুখে শুনতে হচ্ছে ধর্ম্ম নিরপেক্ষ শব্দটা। দেশ স্বাধীন হওয়ার সময়েই শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ধরিয়ে দিয়েছিলেন দেশের সমস্ত বিদগ্ধ ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্বের সামনে ধর্ম নিরপেক্ষ কথাটা যে ভুল কথা, ভুল ধারণা সে সম্পর্কে। শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছিলেন, ধর্ম্মনিরপেক্ষা কথাটাই ভুল। ধর্ম্ম কখনও নিরপেক্ষ হ'তে পারে না, বরং কথাটা সম্প্রদায় নিরপেক্ষ হ'তে পারে। ধর্ম নিরপেক্ষ কথাটা পরিবর্তে সম্প্রদায় নিরপেক্ষ কথাটা সঠিক ও উপযুক্ত। কিন্তু কেউই শ্রীশ্রীঠাকুরের কথাকে সেদিন আমল দেননি। যদিও ঠাকুরের সঙ্গে দেশের প্রায় সমস্ত শীর্ষ নেতৃবৃন্দ দেখা করেছিলেন, আলাপ করেছিলেন, শুনেছিলেন বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর মতামত কিন্তু সবই ঐ শোনা পর্যন্ত কিন্তু কেউই আমল দেননি, প্রয়োজন মনে করেননি। শ্রীশ্রীঠাকুরের কথা বাস্তবায়িত করার মত কারোরই ইচ্ছা, আগ্রহ বা যোগ্যতা ছিল না। একটা সূক্ষ্ম ব্যক্তিত্বের ইগো দেওয়াল হ'য়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁদের সামনে। শুধু দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন শ্রীশ্রীঠাকুরকে গুরুপদে বরণ করেছিলেন এবং তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হ'য়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করছিলেন, কিন্তু শারীরিক ভাবে অক্ষম হ'য়ে পড়া ও মৃত্যুর কারণে মানুষের অভাবে শ্রীশীঠাকুরের দেশগঠনের সমস্ত পরিকল্পনা বাঞ্চাল হ'য়ে যায়।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু তিনবার ঠাকুর দর্শনে আসেন। প্রথমবার আসেন I.C.Sপাশ করার পর। ঠাকুর তখন কলকাতাতেই, দ্বিতীয় ও তৃতীযবার আসেন পাবনা সংসঙ্গ আশ্রমে। সুভাষ বসু ঠাকুর দর্শনে পাবনা সৎসঙ্গ আশ্রমে এলে ঠাকুরের অন্যতম ভক্তপার্ষদ পূজনীয় শ্রী সুশীল বসু তাঁকে আশ্রমের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখান। ঠাকুরের মতাদর্শ ও তাঁর পরিকল্পনার বিভিন্ন বিষয় নেতাজীর কাছে তুলে ধরেন সুশীলদা। শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গে কথা বলার সময় কোথা থেকে দেশের প্রকৃত সেবা করা শুরু করা যায় সম্পর্কে জানতে চাইলে শ্রীশ্রীঠাকুর বিবাহ সংস্কার ও সুসন্তান লাভের জন্ম বিজ্ঞানের কথা তুলে ধরেন। তখন সুভাষ চন্দ্র বোস শ্রীশ্রীঠাকুরের কথায় সম্মত হ'লেও দেশ স্বাধীন করার ক্ষেত্রে এ যে দীর্ঘসময় সাপেক্ষ ব্যাপার তা তুলে ধরেন। তখন শ্রীশ্রীঠাকুর দৃপ্তকন্ঠে বলেছিলেন, - দীর্ঘ সময় তো নেবেই - আমরা তো এতদিন পর্যন্ত জাতির বা সমাজের জন্য কিছুই করিনি। বহু গলদ জমে গেছে। সাফ করতে সময় নেবে বৈকি ? কোন Shortcut Programme (সংক্ষিপ্ত কর্মসূচী) এ জাতির সত্যিকার কল্যান হবে বলে আমার মনে হয় না।

শেষবার যখন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস দেখা করতে এসেছিলেন তখন শ্রীশ্রীঠাকুর দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত আর্ত, অর্থাথী, জিজ্ঞাসু ও জ্ঞানী ভক্ত মন্ডলী ও দর্শকবৃন্দ দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিলেন ফলে শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত স্তরে কোনও কথা হয়নি। নেতাজীকে সেদিন আশ্রমে থেকে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল কিন্তু স্বাধীনতার কারণে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ভয়ঙ্করভাবে জড়িয়ে যাওয়ায় ব্যস্ততার কারণে সেদিন তিনি থাকতে পারেননি। তাঁকে চলে যেতে হয়েছিল। আর তারপর আর কোনোদিনই শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গে নেতাজীর দেখা হওয়ার সুযোগ হয়নি। ১৯৪১ সালের ১৭ জানুয়ারি রাতে কলকাতায় তার এলগিন রোডের বাড়ি থেকে ব্রিটিশদের নজরদারি এড়িয়ে, তার ভাগ্নে শিশির কুমার বসুকে সঙ্গে নিয়ে সুভাষচন্দ্র বসু পালাতে সক্ষম হন। তারা পালিয়ে তৎকালীন বিহার রাজ্যের (বর্তমানে ঝাড়খণ্ড) গোমোহ্‌ রেলওয়ে স্টেশনে (বর্তমানে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু গোমোহ্‌ স্টেশন) পৌছান। তারপরে সব ইতিহাস। ভারত থেকে আফগানিস্তান হয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন, সেখান থেকে জার্মানি, তারপরে জাপান সেখানে পুনরায় আজাদ হিন্দ ফৈজের পুনর্গঠন করেন। তারপর বহু জল গড়িয়ে যায়। জাপান আত্মসমর্পণ করে। এরপরের ইতিহাস জানা অজানা নানা ঘটনায় জড়িত ইতিহাস। মোট কথা এর পরে নেতাজীর আর ঘরে ফিরে আসা হয়নি।

যাই হ'ক, আজ নেতাজীর জন্মদিন স্মরণে মনে পড়ে নেতাজী ও শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা। মনে পড়ে, দেশের প্রকৃত সেবা কোথা থেকে শুরু করা যায় এ সম্পর্কে জানতে চাইলে শ্রীশ্রীঠাকুর দেশের ও দশের প্রকৃত মঙ্গল কোথায় আছে তার মোদ্দাকথা মানুষের মত মানুষের অভাবের কথা মনে করিয়ে 'বিবাহ সংস্কার ও সুসন্তান লাভের জন্ম বিজ্ঞানের কথা তুলে ধরেন। তখন সুভাষ চন্দ্র বোস শ্রীশ্রীঠাকুরের কথায় সম্মত হ'লেও দেশ স্বাধীন করার ক্ষেত্রে এ যে দীর্ঘসময় সাপেক্ষ ব্যাপার তা তুলে ধরেন। তখন শ্রীশ্রীঠাকুর দৃপ্তকন্ঠে বলেছিলেন, - দীর্ঘ সময় তো নেবেই - আমরা তো এতদিন পর্যন্ত জাতির বা সমাজের জন্য কিছুই করিনি। বহু গলদ জমে গেছে। সাফ করতে সময় নেবে বৈকি? কোন Shortcut Programme (সংক্ষিপ্ত কর্মসূচী) এ জাতির সত্যিকার কল্যান হবে বলে আমার মনে হয় না।

আজ স্বাধীনতার মধ্যে দিয়ে শুরু হওয়া Shortcut Programme (সংক্ষিপ্ত কর্মসূচী)-তে অভ্যস্ত ভারত ও ভারতের নেতৃবৃন্দ, জনগণ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম এইসব কথা শুনতে, বুঝতে ও মানতে চায় না। কেউ চাইলেও বা কোনও রাজ্য চাইলেও বাংলা ও বাঙালী দেশভাগের আগে ও দেশভাগের পরে কোনোদিনই চায়নি। শুনতে, বুঝতে, মানতে চাওয়া তো দূর থাক্তেই দেয়নি কোনও বাংলায়। দুই বাংলার বাঙালী শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সম্মান, মর্যাদা, গুরুত্ব কোনওদিনও দেয়নি, আজও দেয় না। তাঁর নিজের হাতে তিল তিল ক'রে গড়ে তোলা বাংলাদেশের পাবনা হিমায়েতপুরের বিশাল আশ্রম আজও ফিরিয়ে দেয়নি বাংলাদেশের সরকার তাঁর সৃষ্ট সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠানকে। আর, এ বাংলায় বর্দ্ধমান জেলার পানাগড়েও থাকতে দেওয়া দেয়নি শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে।

তাই বোধহয় শ্রীশ্রীঠাকুর চটজলদি Shortcut Programme (সংক্ষিপ্ত কর্মসূচী)-তে অভ্যস্ত বাংলা ও বাঙালী সম্পর্কে বলেছিলেন, "আমার সৎসঙ্গের আন্দোলন বাংলার বুক থেকে উঠবে না, বাংলার বাইরে থেকে উঠবে।" আমাদের মাথায় রাখতে হবে বাংলা বলতে তিনি বাংলার আগে কোনও পূর্ব-পশ্চিম শব্দ ব্যবহার করেননি। বলেছিলেন বাংলার বুক থেকে উঠবে না। আজ ভারতের চারপাশে চোখ মেলে চাইলেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
নমস্কার, জয়গুরু।

Tuesday, January 21, 2025

শ্রীশ্রীঅবিনদাদার জন্মদিন।

আজ ৫ই জানুয়ারী'২৫ শ্রীশ্রীঅবিনদাদার ২৫তম জন্মদিন।

আজ তাঁর শ্রীচরণে শতকোটি প্রণাম জানাই। পরমপিতার শ্রীচরণে প্রার্থনা করি শ্রীশ্রীঅবিনদাদা যেন সুস্থ, সবল থেকে দীর্ঘ জীবন আজকের মত লক্ষ লক্ষ তরুণ যুবকদের প্রাণে শ্রীশ্রীঠাকুরের আলোয় ঝড় তোলেন ও তাদের বিপথগামী হওয়া থেকে ও হওয়ার পথ থেকে রক্ষা করেন ও শ্রীশ্রীঠাকুরের বাঁচা-বাড়ার পথে চালিত করেন। আজ হাজার হাজার তরুণ তরুণী, যুবক যুবতী তাঁর ২৫তম জন্মদিন পালনে দেওঘরে উপস্থিত, লক্ষ নরনারী তাঁর সঙ্গ লাভে উদগ্রীব।

আসুন আজকের এই পূণ্যদিনে বিশ্বের সমস্ত সৎসঙ্গী যে যেখানে আছি তাঁকে স্মরণ করি ও শ্রদ্ধা, প্রণাম জানাই। আজকে আমি শ্রীশ্রীঅবিনদাদা সম্পর্কে শ্রীশ্রীদাদার কথা স্মরণ ক'রে আমার ভিডিও শুরু করছি। শ্রীশ্রীদাদা একদিন বলেছিলেন, "অবিন আজ তোকে একটা কথা ব'লে যাই। একদিন গোটা ভারতবর্ষের মানুষ ঠাকুর ঠাকুর করবে। সেদিন হয়তো আমি থাকবো না। আমি দেখে যেতে পারবো না। তোর বাবাও হয়তো দেখে যেতে পারবে না। কিন্তু তুই যখন আমার বয়সে আসবি তখন তুই দেখে যেতে পারবি, সমস্ত ভারতের মানুষ ঠাকুর, ঠাকুর করছে।"

আজ আমরা তার নমুনা বা ঝলক দেখতে পাচ্ছি। আজ শ্রীশ্রীঅবিনদাদার ২৫তম জন্মদিন। এই অল্প বয়সেই তিনি কত লোকের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। সমস্ত রাজ্যের সমস্ত সম্প্রদায়ের ছোটোবড়, কিশোর কিশোরী, তরুণতরুণী, যুবক যুবতী, প্রৌঢ় প্রৌঢ়া, বৃদ্ধ বৃদ্ধা কত আর্ত, অর্থার্থী, কত জিজ্ঞাসু, কত জ্ঞানী, পন্ডিত, বিদগ্ধ মানুষ তাঁর কাছে ছুটে আসেন, তাঁর একটু দর্শন লাভের জন্য, তাঁর মুখের একটু কথা শোনার জন্য। আজ দেওঘরের বুকে তাই হ'য়ে চলেছে। কেন ছুটে আসেন তাঁরা? কিসের টানে? কিসের তাগিদে? কেউ তো তাঁদের ডাকেন না। বরং ঠাকুর বাড়ি থেকে বারবার নিষেধ করা হয় স্থান সংকুলানের অভাবে্র কারণে। তবুও তাঁরা ছুটে আসেন, মাঠে ঘাটে, রাস্তায় থাকেন এই শীতে কত কষ্ট সহ্য ক'রে। আর্ত অর্থাৎ পীড়িত, দুঃখিত, কাতর, বিপন্ন ভর্য়াত মানুষ ছুটে আসেন 'মাভৈঃ' ভয় করো না, নির্ভয় হও। ঠাকুর আছেন, তাঁর নাম পেয়েছেন, ভয় কি? ডরো মাত, ডর কিস বাত কি? ঠাকুরজী হ্যাঁয় না! দয়াল প্রভুজী হ্যাঁয় না! ছুটে ছুটে আসে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ শুধু ঐ অপূর্ব আলোময়, রূপময়, রসময়, মধুময়, লাবণ্যেভরা সদা হাস্যময় মিষ্টি মুখের ঐ বরাভয় কথা শোনার জন্য। 'মাভৈঃ' ভয় করো না, নির্ভয় হও। ঠাকুর আছেন, তাঁর নাম পেয়েছেন, ভয় কি? ডরো মাত, ডর কিস বাত কি? ঠাকুরজী হ্যাঁয় না! দয়াল প্রভুজী হ্যাঁয় না!
যে দেখেছে, সেই জানে ; যে বুঝেছে সেই বোঝে, বোঝে যার প্রাণ। আজ দয়াল ধাম দেওঘর লক্ষ লক্ষ লোকে পরিপূর্ণ।

শ্রীশ্রীদাদার কথা এর আগে আমি বলেছি আপনারা শুনেছেন। এবার বলি শ্রীশ্রীঅবিনদাদার কথা। শ্রীশ্রীঅবিনদাদা একদিন বললেন, .কি করবো ,কতটুকু করতে পারবো জানি না | তবে আমি বেঁচে থাকতে থাকতে অর্ধেক পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিয়ে যেতে চাই |

শ্রীশ্রীদাদা আর শ্রীশ্রীঅবিনদাদার কথাকে আসুন একটু বিশ্লেষণ ক'রে দেখি এই দুইজনের কথার রসায়ন কি হ'তে পারে। আবার বলি, শ্রীশ্রীঅবিনদাদার পিতামহ শ্রীশ্রীদাদা (শ্রীঅশোক চক্রবর্তী) বললেন, "অবিন আজ তোকে একটা কথা ব'লে যাই। একদিন গোটা ভারতবর্ষের মানুষ ঠাকুর ঠাকুর করবে। সেদিন হয়তো আমি থাকবো না। আমি দেখে যেতে পারবো না। তোর বাবাও হয়তো দেখে যেতে পারবে না। কিন্তু তুই যখন আমার বয়সে আসবি তখন তুই দেখে যেতে পারবি, সমস্ত ভারতের মানুষ ঠাকুর, ঠাকুর করছে।" আর শ্রীশ্রীঅবিনদাদা বললেন, "কি করবো ,কতটুকু করতে পারবো জানি না | তবে আমি বেঁচে থাকতে থাকতে অর্ধেক পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিয়ে যেতে চাই |" শ্রীশ্রীদাদার কথা অনুযায়ী আমরা আজ দেখতে পাচ্ছি ভারতবর্ষের প্রতিটি রাজ্যে আজ সৎসঙ্গের ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে, সমস্ত রাজ্যের সমস্ত সম্প্রদায়ের হিন্দু, মুসলমান, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ইত্যাদি সমস্ত ধর্মের নয়, শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, সমস্ত ধর্ম কথাটা ভুল, ধর্ম কখনও বহু হয় না, ধর্ম এক, বরং মত, সমস্ত মত, তাই সমস্ত মতের মানুষ আজ শ্রীশ্রীঠাকুরের দীক্ষিত। এর থেকে আমরা ভারতের একটা আংশিক ছবি দেখতে পাই শ্রীশ্রীদাদার কথার সমর্থনে। আর আজ থেকে ৬০ বছর পর যখন অবিনদাদার ৮৫ বছর বয়স হবে সেদিন আমরা পুরো ছবিটা দেখতে পাবো।
আর, শ্রীশ্রীঅবিনদাদা বলেছিলেন, "কি করবো ,কতটুকু করতে পারবো জানি না | তবে আমি বেঁচে থাকতে থাকতে অর্ধেক পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিয়ে যেতে চাই |" এর সমর্থনে বর্তমানে আমরা ভারত ছাড়া, বাংলাদেশ, নেপাল, বার্মা বর্তমানে মায়ানমার, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও আমেরিকাতেও সৎসঙ্গের পাঁচ হাজারেরও বেশি শাখা রয়েছে। আজ থেকে ৬০বছর পরে আমরা শ্রীশ্রীঅবিনদাদার কথার পুরো ছবিটা দেখতে পাবো। সেদিন আমি ও আমার মত বহু সৎসঙ্গীরা থাকবো না সেই দৃশ্য দেখার জন্য। হয়তো বা আবার নোতুন দেহ নিয়ে আসবো সেই দৃশ্য দেখবার জন্য। সৎসঙ্গ যে মূলত একটা আন্দোলন সেই সৎসঙ্গ আন্দোলনে হয়তো বা সক্রিয় ভূমিকা পালন করবো। পালন করবো স্মৃতিবাহী চেতনা নিয়ে।

তাই আসুন এই জন্মে যতদিন বেঁচে আছি স্মৃতিবাহী চেতনাকে স্ট্রং ক'রে তুলি তাঁর নামধ্যানের মধ্যে দিয়ে।

এখন আরও একটা প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই মনে ভেসে আসে। এই যে শ্রীশ্রীঅবিনদাদা বললেন, "আমি বেঁচে থাকতে থাকতে অর্ধেক পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিয়ে যেতে চাই।" এটা কিভাবে সম্ভব হবে? কিভাবে তিনি অর্ধেক পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিয়ে যাবেন? শ্রীশ্রীঠাকুর যেমন তাঁর সময়ের অনেক অনেক আগে এসেছিলেন। তাই তাঁর কথা বুঝতে মানুষের দেরী হচ্ছে। ঠিক তেমনি শ্রীশ্রীঅবিনদাদার পরিকল্পনাও তাই। যা তাঁর অনুগামী এবং অদীক্ষিত যুব সমাজের পক্ষেও বোঝা মুশকিল।
(লেখা ৫ই জানুয়ারী' ২৫)

বিচিত্রাঃ ৮৬

জন্মগত বৈশিষ্ট্য বানায়মুনি শ্রেষ্ঠ বশিষ্ঠ!
বিশিষ্টতাহীন জীবন আনে
চরম অনিষ্ট!!

বৈশিষ্ট্যের ওপর দাঁড়িয়ে সফলতাকে 
করো জীবনে আবাহন;
বিশিষ্টতা লাভে বৈশিষ্ট্যপালী আপুরয়মানকে
করো জীবনে গ্রহণ।

পুরুষোত্তম তিনি, 
বৈশিষ্ট্যপালী আপুরয়মান যিনি। 
ঈশ্বর তিনি, 
পুরুষোত্তম ব'লে যাকে জানি। 
তাই, বন্দে পুরুষোত্তমম!!

তমসার পার হ'তে কে ডাকে আমারে!
বলে, ওরে আয় আয় ছুটে আয়রে!
জীবন মাঝে আঁধার রাতে লাগেই যদি ভয়
আমার পানে চেয়ে চেয়ে তুই দেখরে।

তমসার পার অচ্ছেদ্যবর্ণ মহান পুরুষ 
হন আবির্ভূত ইষ্টপ্রতিকে; 
তাঁকে আর তাঁর কথা ছেড়ে 
যাকেই ধরো আর যাই করো 
নেই মুক্তি ক্ষণিকের!

বৈশিষ্ট্য কি তা জানিই না, 
তাই বৈশিষ্ট্য মানি না।
ফলে বৈশিষ্ট্য পালনের 
অনুশীলন করি না।
অথচ পেতে চাই জীবনে প্রতিষ্ঠা!
বৈশিষ্ট্যপালী আপূরয়মানই যে জীবন্ত ঈশ্বর
তার খবর রাখি না তাই নেই তাঁর প্রতি ভালোবাসা,
নেই কোনও নিষ্ঠা।

জীবন্ত ঈশ্বরকে ক'রে অবহেলা
মূর্তি পূজায় বুঁদ হ'য়ে 
বৈশিষ্ট্যকে মারছো উদোম ঠেলা।
ভাবছো থাকবে সুখে, দুধেভাতে;
নরকপানে ভাসিয়ে জীবন ভেলা।
( লেখা ২১শে জানুয়ারী'১৮)

সৎ পথে না থাকার দায় কার বা কাদের?
যারা অসৎ তাদের একার নাকি যারা অসৎ পথে
চলতে বাধ্য করান বা সাহায্য করেন, তাদের?
( লেখা ২১শে জানুয়ারী'১৯)

কেউ বলে সুখে থাকতে করলে সুমিরণ 
হবে না গো মন উচাটন! 
কেউ বা বলে ভুগতে হবে কর্মফল জনম জনম!! 
কি করি ভেবে পায় না আমার মন!!

কেউ বলে গেলে গয়া কাশী থাকবে হাসিহাসি 
পুরাবে মনের কামনা গো! 
কেউ বা বলে ঘরের মধ্যে ঘর তুলে দয়ালধাম 
হ'লে পরে সব পাওয়া হয় গো!
( লেখা ২১শে জানুয়ারী'২০)










































Monday, January 20, 2025

বিচিত্রা ৮৫

রামকৃষ্ণ উবাচ ও প্রসঙ্গে।

আমি যাবো আর আসবো।'
এটা শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণের উক্তি? 
যদি তা' হয় রামকৃষ্ণ মিশন তা' অনুসন্ধান করেছিল কি?
এটা কি অবনতি?

আমি যাবো আর আসবো'--এই কথাটা কার?
শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণের? '
যাবো আর আসবো' বলতে কতদিন?
অভিধান কি বলে? রামকৃষ্ণ মিশন কি বলে?

"আমি যাবো আর আসবো" 
এই কথা কি শ্রীশ্রীঠাকুর রামুকৃষ্ণ বলছিলেন? 
রামকৃষ্ণ মিশন কি এই কথা বিশ্বাস করে?

শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণের শিষ্যদের গুরু কে? 
শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণ নাকি দীক্ষাদাতা? 
গুরু-শিষ্যের মাঝে দেওয়াল? মিশন কি বলে?

ভগিনী নিবেদিতার গুরু কে? 
শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণ নাকি স্বামী বিবেকানন্দ? 
মিশন কি বলে?

স্বামী বিবেকানন্দ কি কারও গুরু ছিলেন? 
তিনি কি কোথাও ব'লে গেছেন
আমি যাকে দীক্ষা দিলাম আমি তার দীক্ষাগুরু?
( লেখা ২০শে জানুয়ারী'২৪)


বিচিত্রা ৮৪

যারই ধরলাম হাত তুলে আনবো ব'লে
ভর দিয়ে হাতে উঠে এসে অবশেষে 
মারে মুখে লাথ, ছক কষে ছলে বলে কৌশলে!!
(২০শে জানুয়ারী'১৮)

শয়তানের ছোবল যদি খেতে না চাও
তবে ঈশ্বরকে মাথায় বসাও, রাখো হৃদয়ে।
তবে তা অমূর্ত ঈশ্বর নয়, মূর্ত ঈশ্বর কিন্তু,
এটা মনে রেখো।
আর করো তার চলনপুজো, নয় চরণপুজো। ( ২০শে জানুয়ারী'২৪)

Sunday, January 19, 2025

বিচিত্রা ৮৩

আমার আমির মাঝে খুঁজে পাই না আমার আমিকে 
এ কেমনতর আমি? এ আমি মোমের আমি! 
জীবন্মৃত এক মমি!! 
লাগলে তাপ তবেই না হবে গ'লে তুমি!! 

তাপ নেই, ভাপ নেই, নেই উত্তাপ;
বোধ নেই, শোধ নেই, নেই কোনও আলাপ।
জীবন মাঝে আছে শুধু
বুক ভরা বিলাপ!!
(১৯শে জানুয়ারী'২০১৮)

একলহমায় চোখের পলকে কর্মীদের 
পিছনে ফেলে নেতানেত্রী হওয়া আজ আর কঠিন নয়। কিভাবে?
যে কোনও পেশায় উপরের সারির হ'লেই সম্ভব।
(১৯শে জানুয়ারী'২০২১)





























Saturday, January 18, 2025

বিচিত্রাঃ ৮২

জীবনের ট্র্যাজেডি! (১)
হে জীবন!
তুমি গড়তে পারলে না কিছুই 
শুধু ভাঙার নায়ক হ'য়েই র'ইলে!

জীবনের ট্র্যাজেডি! (২)
হে জীবন!
তুমি নিজেও হাসলে না, হাসাতেও পারলে না!
শুধুই কাঁদিয়ে গেলে সবাইকে!!

জীবনের ট্র্যাজেডি! (৩)
হে জীবন!
জীবনে দিলে না কিছুই কাউকে
হাত বাড়িয়ে নিয়ে গেলে শুধুই আর 
প্রতিদানে দিলে শুধুই আঘাত আর আঘা

জীবনের ট্র্যাজেডি! (৪)
হে জীবন!
নিজেকে নিয়েই মত্ত উল্লাসে 
অন্যের জীবনে ঢেলে সর্বনাশের আগুন! 
তোমার জীবনে বইছে হাওয়া ফাগুন!!

জীবনের ট্র্যাজেডি! (৫)
হে জীবন!
উগ্রতাকে করলে সাথী ভদ্রতাকে পা দিয়ে মাড়িয়ে! 
আর মৃত্যুকে করলে বন্ধু
জীবনকে তাড়িয়ে!!

জীবনের ট্র্যাজেডি! (৬)
হে জীবন!
ভুলের হুলে জীবনকে করলে ক্ষতবিক্ষত 
আর অন্যের ঘাড়ে ব'সলে চেপে!
নিজের ভুল দেখলে না একবার মেপে!

জীবনের ট্র্যাজেডি! (৭)
হে জীবন!
নিজে থাকতে চাও হাসিখুশি অন্যকে কাঁদিয়ে! 
থাকতে চাও কূলের শক্ত জমিতে 
অন্যকে অকূলে ভাসিয়ে!!

জীবনের ট্র্যাজেডি! (৮)
হে জীবন!
জীবন একটা অংক। 
অন্যের অংক ক'রে জটিল 
নিজের অংককে করো সরল! 
সরলতা ভালো যদি না থাকে বুকে গরল!

জীবনের ট্র্যাজেডি! (৯)
হে জীবন!
যার ব্যথা বুঝলে না তাকে কি করবে সাহায্য!? 
নিজে ব্যস্ত বুঝে নিতে নিজের ন্যায্য-অন্যায্য!

জীবনের ট্র্যাজেডি! (১০)
হে জীবন!
ভুল জীবন করে, মহাজীবন ঈশ্বর নয়! 
তুমি তো ঈশ্বরপুত্র সামান্য ভুলে 
করো অন্যের অসামান্য ক্ষয়!

জীবনের ট্র্যাজেডি! (১১)
হে জীবন!
তোমাকে বিশ্বাস ক'রে ধরেছিল যে জীবন তোমার হাত 
সেই দু'হাত কেটে নিয়ে ক'রে দিলে তার জীবন বরবাদ!
( লেখা ১৮ই জানুয়ারী'২০২০)

জীবনের ট্র্যাজেডি! (১২)
হে জীবন!
যে তোমায় বাসলো ভালো 
দিলো তোমায় বুকে স্থান 
সেই বুকেই তুমি মারলে লাথি 
জীবন করলে খানখান!!
( লেখা ২০শে জানুয়ারী'২০২০)

ঈশ্বর এদের সহায় হ'ন! অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে এদের জন্য প্রার্থনা জানাই এরা যেন পরমদয়ালের অযাচিত দয়ায় ভরপুর হ'য়েই এই দুর্গম পথ পাড়ি দেয়!! হে দয়াল! এই ভয়ঙ্কর যাত্রার সময় যেন কোনোদিনই কোনও অবস্থায় তোমার দয়া থেকে তোমার এই সন্তানরা বঞ্চিত না হয়!!!
( লেখা ১৮ই জানুয়ারী'২০২০)

এখন দেশের প্রধান বিষয় এবং তা সমস্ত ক্ষেত্রের----- তা সে রাজনীতি, ধর্ম্ম, শিক্ষা, ক্রীড়া ইত্যাদি ইত্যাদি তা সে যে বিষয় হ'ক না কেন------ইয়ং জেনারেশনের মাথা দাও গুলিয়ে, মাথার ঘিলু দাও চটকে যাতে সে কোনওদিনই খুঁজে না পায় সমস্যার উৎস ও সর্ব্বাঙ্গীন সমাধান।
( ১৮ই জানুয়ারী'২০২০)
























































Friday, January 17, 2025

চিঠিঃ শ্রীকান্ত মল্লিকদাকে খোলা চিঠি।

সৎসঙ্গী সাবধান।

" শরৎদা ছিলেন জ্যোতি ঋত্বিক।" জ্যোতি ঋত্বিক নয়, জ্যোতি ঋত্বিকের পরিবর্তে হবে যতি ঋত্বিক।

১৯৪৮ সালে ১২ই অক্টোবর, মঙ্গলবার, বিজয়া দশমীর দিন শ্রীশ্রীঠাকুর প্রণামের পর ৬ জন ভক্ত প্রাণ কর্মীকে নিয়ে শুরু হয়েছিল যতি আশ্রম। ননী গোপাল চক্রবর্তী, শরৎ চন্দ্র হালদার, যতীন্দ্রনাথ দাস, কালিদাস মজুমদার, নরেন্দ্রনাথ মিত্র, সুরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস এরা ছিলেন যতি ঋত্বিক অর্থাৎ সন্ন্যাসী ঋত্বিক। শ্রীশ্রীঠাকুর যতি ঋত্ত্বিকদের বলতেন সক্রিয় ভক্ত ও জ্ঞানী ঋত্বিক।

যাই হ'ক, আপনার লেখাটা পড়ে খুব ভালো লাগলো। এরকম লেখা আরও লিখুন। মন আনন্দে ভরে থাকবে। পারস্পরিক আলোচনায় সৎসঙ্গীদের চোখ খুলবে। সৎসঙ্গীরা সত্য জানতে পারবে। পাঠক সৎসঙ্গী যদি অবশ্য পড়ে। আপনাকে অনেক ভালোবাসা ও ধন্যবাদ জানাই এইরকম লেখা লেখার জন্য।

আপনার মনের বেদনা বুঝতে পারছি। আর, পারছি বলেই আপনার ভালো সুন্দর লেখাটা শেয়ার করলাম দু'টো অপ্রিয় সত্য কথা সৎসঙ্গীদের কাছে তুলে ধরবো ব'লে।

আপনি অনেক মহান ভক্তদের নাম তুলে ধরেছেন। সত্যি শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রতি তাঁদের নিবেদিত প্রাণ, তাঁদের নিঃস্বার্থ অবদানের ফল আজকের এই সৎসঙ্গ। তাঁদের শ্রীচরণে ভক্তিপূর্ণ প্রণাম জানাই। এঁদের ছাড়াও আরও অনেক ভক্তপ্রাণ আছেন যাদের নাম আপনি উল্লেখ করেননি, তাঁদেরও শ্রীচরণে জানাই ভক্তিপূর্ণ প্রণাম। এঁদের অনেকের সঙ্গেই অল্পবিস্তর মেলামেশা করেছি ছোটোবেলায় স্কুল জীবনে, সঙ্গসুখ হয়েছে পরবর্তী সময়েও। যতি ঋত্বিক শ্রদ্ধেয় পূজ্যপাদ শ্রীনরেন্দ্রনাথ মিত্রদা ছিলেন আমার পিতামাতা ও পরিবারের গুরুজনদের ঋত্বিক। বহুবার তিনি আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। তিনিও পরবর্তী সময়ে মূল কেন্দ্র থেকে বিচ্ছিন্ন হ'য়ে যান শ্রীশ্রীঠাকুরের দেহ রাখার পরে। তাই স্মৃতিপটে ভেসে উঠলো এঁদের ছবি আপনার লেখা পড়ে। মনটা আনন্দে ও বেদনায় ভরে গেল।

এবার আসি অপ্রিয় সত্য কথনে।
শ্রদ্ধেয় পূজ্যপাদ শ্রীপ্রফুল্লদার মত মানুষ শ্রীশ্রীবড়দা থাকতে শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী সংশোধন করেছেন আচার্য প্রথাকে খন্ডন করতে অথচ শ্রীশ্রীবড়দাকে বাণী সংশোধনের বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করবার, দেখাবার প্রয়োজন বোধ করেননি। এখানে প্রশ্ন থেকে যায়, প্রফুল্লদা নিজে শ্রীশ্রীঠাকুর থাকতে শ্রীশ্রীঠাকুরের মুখ নিঃসৃত যে বাণী লিপিবদ্ধ করেছেন সে বাণী কেন তিনি শেষ বয়সে এসে শ্রীশ্রীঠাকুরের অবর্তমানে শ্রীশ্রীঠাকুরের দিয়ে যাওয়া বাণী সংশোধন করার মত পদক্ষেপ নিলেন? যদিও বা নিলেন শ্রীশ্রীঠাকুর থাকতে কেন নিলেন না? যদি নিলেন কেন তিনি শ্রীশ্রীবড়দাকে না দেখিয়ে, শ্রীশ্রীবড়দার সঙ্গে আলোচনা না ক'রে একক সিদ্ধান্তে সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিলেল? কেন? কি কারণ? কি উদ্দেশ্যে? এরকম ত্রুটি বিচ্যুতি (?) সৎসঙ্গের দিকপালরা করেছেন। সেই ধারা শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীদাদার সময়েও দেখা গেছে এবং বর্তমানেও আছে।

বর্তমান শ্রীশ্রীআচার্যদেবের সময়েও একজন গুণী ইয়ং ভক্ত প্রফুল্লদার সেই সংশোধিত বাণীর সমর্থনে ভিডিও বানিয়েছিলেন এবং আবার পরবর্তী সময়ে তা' এডিটও করেছেন। কেন? কেন তিনি শ্রীশ্রীআচার্যদেবের সংস্পর্শে থেকেও ঐ সংশোধিত বাণীর সমর্থনে ভিডিও বানালেন এবং আবার পরে এডিট করলেন? এরকম বহু গুণী ও উচ্চ লেখাপড়াজানাওয়ালা ভক্তদের বিচিত্র ওঠাপড়া দেখা যায়।

এবার বলি, আপনি লিখেছেন "আমরা সবাই আপন প্রতিষ্ঠাপন্থী, ঠাকুর পন্থী কেউ হলাম না------সুতরাং আবার আমরা এক হই "।
খুব ভালো লাগলো আপনার এই কথাটা। কিন্তু প্রশ্ন জাগে মনে, এখনও কি আমরা সবাই ঠাকুরপন্থী হ'তে পেরেছি? আমরা কি শ্রীশ্রীআচার্যদেবকে নিয়ে, শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে নিয়ে অতি ভক্তির ফোয়ারায় সময়ে সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে অজ্ঞতাবশত ফেসবুকে ও ভিডিওর মাধ্যমে নানা বিতর্কিত পোষ্ট ক'রে, লেখা লিখে, মন্তব্য ক'রে তামাম সৎসঙ্গীদের মনে, অদীক্ষিতদের মনে বিরক্তির জন্ম দিয়ে শ্রীশ্রীআচার্যদেব ও শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে বিড়ম্বিত করছি না কি? অপ্রীতিকর অবস্থার মধ্যে ফেলছি না কি? 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠানের বিরোধীদের শ্রীশ্রীআচার্যদেব ও শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে সমালোচনা করা, কটুক্তি করার সুযোগ ক'রে দিচ্ছি না কি? শ্রীশ্রীঠাকুরের মিশন প্রতিষ্ঠার পথে বাধা সৃষ্টি করছি না কি?

আবার দেখুন, আমাদের ইয়ং জেনারেশনের মধ্যে কেউ কেউ শ্রীশ্রীঅবিনদাদার প্রতি ভক্তির আতিশয্যে শ্রীশ্রীবিবেকদাদা ও শ্রীশ্রীকাজলদাদাকেও অশ্লীল যৌন গালাগালিও করছি প্রকাশ্যে ফেসবুকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। একবার দু'বার নয় বারবার করছি, আবার সেই অশ্লীল যৌন গালাগালির সমর্থনে শ্রীশ্রীঅবিবদাদা প্রেমী কেউ কেউ ইয়ং তাকে বাহবা দিচ্ছি, উৎসাহ দিচ্ছি এবং যদি কেউ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে তার বিরোধিতা করছি। একদিকে শ্রীশ্রীঠাকুর আত্মজদের প্রকাশ্যে অশ্লীল গালিগালাজ করছি আবার বুক বাজিয়ে নিজেদের শ্রীশ্রীঅবিনদাদার D. P. Works-এর সৈনিক বলছি। এইভাবে নাকি তারা নাকি শ্রীশ্রীঅবিনদাদার D. P. Works-এর মহাযজ্ঞের সৈনিক হ'য়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের হারিয়ে যাওয়া, শ্রীশ্রীঠাকুরকে ছেড়ে চলে যাওয়া মেষ শাবকদের ফিরিয়ে আনবে।

সত্য সৎসঙ্গী! কি বিচিত্র এই সৎসঙ্গীরা!!

আর, এসব দেখে শুনেও আমরা শ্রীশ্রীঠাকুরের সোনার সৎসঙ্গীরা চুপ ক'রে থাকছি, প্রতিবাদ করছি না, যে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে তাকে সমর্থন করছি না, উল্টে তাকে মহান ভক্তের মতো শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী তুলে ধ'রে বিচারের ভার আপন হাতে তুলে না নেবার জ্ঞান দিয়ে নিরাপদ দূরত্বে নিজেকে রেখে বিচারের ভার ঠাকুরের মাথায় চাপিয়ে দিচ্ছি সুকৌশলে 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতায়।

এবার বলুন তো, আপনি যে লিখেছেন "সুতরাং আবার আমরা এক হই। আমার অন্তর দেবতা, প্রিয় পরম যেন খুশী হন, আশীর্বাদ বর্ষন করেন" এর পরেও কি আপনার মনে হয় আপনার অন্তরের ইচ্ছা পূর্ণ হবে? শ্রীশ্রীঠাকুর কি এরকম পরস্পরের প্রতি বিদ্ধেষভাবাপন্ন, আত্মপ্রতিষ্ঠামূখর, শ্রীশ্রীঠাকুর আত্মজদের না-মানা, তাঁদের গালাগালি করা, তাঁদের বিরুদ্ধে অশ্লীল কটুক্তি করা, ধান্দাবাজ, কপট, কুৎসিত, চৌর্য মনোবৃত্তি সম্পন্ন, ভীরু, দূর্বল, মূর্খ, অজ্ঞ, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, কৌশলী অতি ভক্তি পরায়ণ নোংরা মনের সাজা সৎসঙ্গী চেয়েছিলেন?
তাই বলি, সৎসঙ্গী সাবধান।
ইতি,
প্রকাশ বিশ্বাস।

Wednesday, January 15, 2025

বিচিত্রা ৮১

মানুষের চরিত্র (৯)

গায়ে পড়া আর কথার ফানুস ওড়ানো মানুষ 
সহজেই ক'রে নেয় মানুষের মন জয় আর 
ভালো মানুষ আম মানুষের পিছনে পড়ে রয়!

মানুষের চরিত্র (১০)

যাকে ভালোবাসি সে মাথায়-মুখে মারে লাথি
আর যে মারে লাথি পদে পদে
তাকে করে সে সাথী!!
( লেখা ১৬ই জানুয়ারী'২০২০)

বিচিত্রাঃ ৮০

ঈশ্বর একমাত্র সত্য, ঈশ্বর বিনা সব মিথ্যা।
ঈশ্বর একমাত্র আশ্রয়, ঈশ্বর ছাড়া সব নিরাশ্রয়।
ঈশ্বর একমাত্র আনন্দ ঈশ্বরহীন বাকী সব বিষয়
সাময়িক অবশেষে নিরানন্দ।
ঈশ্বর একমাত্র সুন্দর ঈশ্বর বাদ দিয়ে জীবন কুৎসিত।
ঈশ্বর নিখুঁত সঠিক, ঈশ্বর বাদ দিয়ে বাকী সব যা' কিছু
ভুল ও বেঠিক।
আর ঈশ্বর মানে? রক্তমাংস সঙ্কুল জীবন্ত ঈশ্বর।
( লেখা ১৬ই জানুয়ারী'২০১৮)

যার যা ভাবনা তাই নিয়েই সে থাকুক;
আমার ভাবনা হে প্রভু! দিন শেষে অবশেষে
সবার সাথে সবার ভাব থাকুক!

ইট মারলেই মারতে হবে পাটকেল!?
এই কি তোমার আক্কেল!
ঐ ইটকেই ক'রে নিয়ে ব্রহ্মাস্ত্র
বন্ধু দেখাও বাঁচা-বাড়ার মিরাক্কেল!!
( লেখা ১৬ই জানুয়ারী'২০১৯)

কর্ণের দুঃখজনক মৃত্যু ছিল চক্রব্যূহে নিরস্ত্র অভিমুন্যকে নৃশংস ভাবে হত্যার কর্মফল। সমঝদারোকে লিয়ে ইশারা কাফি হোতা হ্যায়। তাই বিচারের ভার ঠাকুরের উপর ছেড়ে দিলাম।
( লেখা ১৬ই জানুয়ারী'২০২৩)
























প্রবন্ধঃ ঢাকার রমনা কালী মন্দির।

 বাংলাদেশে ঢাকার রমনা কালি মন্দিরে পুজোর সময় মাইকে ইসলামীয় ধর্মগ্রন্থ পাঠ।

বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকার রমনা কালী মন্দিরে অনুষ্ঠিত ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সামনে মাইকে ইসলামীয় ধর্মীয় অনুষ্ঠানের গান ভেসে আসছে বা ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআনের সুরাসমূহের পঙ্‌ক্তি বা বাক্য পাঠ বা আবৃত্তি শোনা যাচ্ছে ব'লে এক প্রতিবেদনে জানা গেল। খবরে জানা গেল ০৯/০১/২৫ বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার রমনা কালী মন্দিরে বিশেষ পূজানুষ্ঠান ছিল। গোটা মন্দির আলোকশয্যায় সাজিয়ে তোলা হয়েছিল। প্রচুর ভক্তের আগমন হয় মন্দিরে। সেই সময় মন্দিরের বিপরীতে রাস্তার পাশে একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে জোড়া মাইক লাগিয়ে জোরে জোরে ইসলামিক সংগীত বাজানো হচ্ছিল।

এই ঘটনাটি ফেসবুকে লাইভে এসে বর্ণনা করেছেন আকাশ চক্রবর্তী নির্ঝর নামে একজন ভক্ত। ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা গেছে, এই মাইক থেকে আসলে কি বাজছে সে সম্পর্কে সে নিজেও একটু কনফিউজড ছিল৷ কারন তিনি এসেছিলেন রমনা কালী মন্দিরে। সেখানে বড়সড়ো অনুষ্ঠান হচ্ছিল এবং চারিদিক আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছিল রমনা কালি মন্দির। আকাশ চক্রবর্তী নির্ঝর নামে ভক্তের কথা অনুযায়ী মাইকে ভেসে আসা ভাষা তিনি ঠিক বুঝতে পারছিলেন না। কিছুক্ষণ বোঝার চেষ্টা করেছিলেন তিনি যে মাইকে সনাতন ধর্মীয় কিছু বাজছে কিনা। পরে দেখলেন যে, মাইকে ইসলাম ধর্মীয় কিছু বাজছে ।’তিনি বলেন, আমার সরল মনে একটা প্রশ্ন হল এই মাইকগুলো মন্দিরের পাশে কেন? এইখানে কেন এই মাইকটা লাগাতে হলো আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না । কারণ এটা তো মন্দির এরিয়া, আমি আশেপাশে তো কোন মসজিদ দেখতে পাচ্ছি না। আমি কোন মাহফিলও দেখতে পাচ্ছি না । তাহলে এই মাইক কোথা থেকে এল? মন্দিরের পুজো অনুষ্ঠানের ভেতর কোনও ইসলাম ধর্মীয় শব্দ মাইকে কেন শোনা যাচ্ছে, মাইক কারা লাগালো, কেন লাগালো আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না৷ আমি লাইভে এসেছি কারণ পরে হয়তো বলতে পারে এটা এডিট করা ভিডিও।

এইটা হ'লো গত ৯ই জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের ঢাকার রমনা কালী মন্দিরের পুজোমন্ডপে উপস্থিত এক ভক্তের বয়ান। এর প্রতি উত্তরে একজন মুসলমান যুবক তার মতামত ব্যক্ত করেছে ফেসবুকের কমেন্ট বক্সে।

সেই মুসলমান ভক্তের মতামত অনুযায়ী আমরা যা জানতে পারি তা' হ'লো তিনি বললেন,
 
"রমনা কালী মন্দির থেকে দূরে রাস্তার পাশে লাগানো মাইকে কোরআন পাঠের বিরোধীতা করছে এক হিন্দু যুবক!! এটি নাকি হিন্দু যুবকের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করছে!!
তাহলে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ হাটহাজারী মাদ্রাসার পাশে কিভাবে একটা মন্দির টিকে থাকে?? কিভাবে পূজার সময় দিনের পর দিন ২৪ ঘন্টা মাইকে উচ্চস্বরে কীর্তন/গান বাজিয়ে পুরো শহরকে দূষিত করা হয়?? যখন এইসব কীর্তনের আওয়াজ মসজিদে প্রবেশ করে তখন আমাদের অনুভূতিও কাজ করে। আমরা কি তোমাদের মন্দিরের সামনে নাচানাচি করি,যেটা তোমরা ভারতে মসজিদের সামনে করো??। সুখে থাকলে আসলে ভুতে কিলায়....।"

অভিযোগ করেছিল বাংলাদেশের এক হিন্দু যুবক বাংলাদেশের ঢাকা শহরের রমনা কালী মন্দিরে পুজোমন্ডপের সামনে মাইকে কোরআন পাঠ নিয়ে। আর, তার উত্তরে মুসলিম যুবক মাইকে কোরাণ পাঠের সমর্থনে যুক্তি খাড়া করতে গিয়ে প্রমাণ স্বরূপ বাংলাদেশের হাটহাজারী মাদ্রাসার পাশে একটা মন্দির টিকে থাকার যুক্তির পাশাপাশি ভারতে মসজিদের সামনে নাচানাচির অভিযোগ তুলে আনলো।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কার কথা ঠিক, কার কথা বেঠিক? হিন্দু ভাই যা বলেছে এবং তার উত্তরে মুসলমান ভাই যা বলেছে সেই সব কথার যুক্তি আদৌ আছে কি?

হিন্দু যুবকের কথা অনুযায়ী, হিন্দুদের দ্বারা আয়োজিত কোনও হিন্দুর ধর্ম্মীয় অনুষ্ঠানের আশেপাশে যদি অন্য সম্প্রদায়ের ধর্ম্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন হয় আর তা'তে যদি মাইকের ব্যবস্থা থাকে তাহ'লে সেই মাইকের আওয়াজে হিন্দুদের ধর্ম্মীয় অনুষ্ঠান চলাকালীন  ঈশ্বর আরাধনায় স্বাভাবিকভাবেই ব্যঘাত ঘটে। আর, এই ঘটনা যদি মুসলমানদের ধর্ম্মীয় অনুষ্ঠান চলাকালীন হিন্দুদের তরফ থেকে ঘটে তাহ'লে মুসলমানদের
 ধর্ম্মীয় অনুষ্ঠান বা ঈশ্বর আরাধনায়ও স্বাভাবিকভাবেই ব্যঘাত ঘটে। এতে হিন্দু-মুসলমান-খ্রীষ্টান ইত্যাদি সকল সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেই ঈশ্বর/আল্লা/গড খুশী হন না, বরং তিনি নারাজ হন  

এরকম ঘটনা যদি অনিচ্ছাকৃত ঘটনা হ'য়ে থাকে তাহ'লে বলতে হবে অনুষ্ঠান আয়োজকদের দূরদৃষ্টির অভাবে এই ঘটনা সংগঠিত হওয়ার ফলে এর ফল ভোগ করতে হবে দুই সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষকে, যা অতীতে হ'য়ে এসেছে বহুবার।

যাই হ'ক, এইরকম হিন্দু-মুসলমানের পারস্পরিক ইচ্ছাকৃত, অনিচ্ছাকৃত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, উদ্দেশ্যহীন, ধর্মীয় অজ্ঞানতা ও স্পর্শকাতরতার লড়াই, রাজনৈতিক লড়াই, অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। মানবতা ও মনুষ্যত্বের ভিত আজ প্রায় ধ্বংসের মুখে। হিন্দু মুসলমানের দীর্ঘ বহু বছরের পারস্পরিক সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যপূর্ণ, ভ্রাতৃত্বপূর্ণ, বন্ধুত্বপূর্ণ, প্রীতি, সুন্দর, মার্জিত ও সহানুভূতিশীল সম্পর্ক নষ্ট হ'য়ে গেছে।

মনে পড়ে যায় এই প্রসঙ্গে প্রায় দেড় হাজার গানের স্রষ্টা আবদুল করিম রচিত একটা গানের কথা।
গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান,
মিলিয়া বাউলা গান আর মুর্শিদি গাইতাম
আমরা আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম।
হিন্দুগো বাড়িতে যাত্রা গান হইত
নিমন্ত্রণ দিত আমরা যাইতাম,
বাউলা গান, ঘাটু গান আনন্দের তুফান
গাইয়া সারি গান নৌকা দৌড়াইতাম, 
হায়রে, আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম
বর্ষা যখন আইত, গাজির গান গাইত
রঙে চঙ্গে গাইতে আনন্দ পাইতাম,
কেহ বা মেম্বার, কেহ বা মিনিস্টার,
আমরা কি এসবের নাম জানিতাম
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম
করি এ ভাবনা, সেই দিন আর পাব না
ছিল বাসনা সুখি হইতাম,
দিন হইতে দিন আসে রে কঠিন,
করিম দীনহীন কোন পথে যাইতাম, 
হায়রে, আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম,

সত্যি আজ যখন হিন্দু মুসলমানের কারণ-অকারণ, ইচ্ছাকৃত-অনিচ্ছাকৃত, অজ্ঞতা-অতি বিজ্ঞতা, উদ্দেশ্যপূর্ণ বা উদ্দেশ্যহীনতা ইত্যাদি ভুলের কারণে ধর্মীয় সংঘাত দেখি তখন ভাবি সত্যিই কি আর সেই 
সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যপূর্ণ, ভ্রাতৃত্বপূর্ণ, বন্ধুত্বপূর্ণ, প্রীতি, সুন্দর, মার্জিত ও সহানুভূতিশীল সম্পর্কের দিন ফিরে আসবে কোনোদিন? কারণ কেউ জানতেই চায় না, বুঝতে চায় না, শিখতে চায় না যেটা বলছি, যেটা করছি, যেটা শুনছি সেটা কতটা ঠিক বলছি, কতটা ঠিক করছি বা ঠিক শুনছি সেটা বিচার করার। বাস্তব জ্ঞান বর্জিত লেখাপড়া জানাওয়ালা মানুষেরা যে যা পারছে তাই বোঝাচ্ছে, তাই করছে, তাই বলছে আর সাধারণ মানুষ, আর্ত মানুষ, অর্থার্থী মানুষ, অজ্ঞানী, মূর্খ মানুষ, কুসংস্কারাছন্ন মানুষ, ভীরু, ধর্ম ভীরু, ঈশ্বর ভীরু ও দুর্বল মানুষ তাই শুনছে, তাই করছে অন্ধের মত। তথাকথিত লেখাপড়াজানাওয়ালা মানুষদের অসম্পূর্ণ জানা, দেখার ওপর দাঁড়িয়ে বলা বা উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে বলা ও করাকেই নিজেদের অজান্তে ফলো করছে সাধারণ মানুষ। এর ফলে সত্য চাপা পড়ে যাচ্ছে মিথ্যার পায়ের নীচে।

ঠিক যেমনিভাবে ঢাকার রমণা কালী মন্দিরের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা হিন্দু ও মুসলমান যুবকের বলা পরস্পর বিরোধী মন্তব্যের নীচে চাপা পড়ে গেল ঢাকার রমনা কালী মন্দিরের মূল ঘটনার যৌক্তিকথা বরাবরের মত। ভাবি, হিন্দু মন্দিরে যে পূজানুষ্ঠান চলছিল তাও ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নিবেদিত অনুষ্ঠান ছিল আবার মাইকে ইসলামীয় ধর্মীয় অনুষ্ঠানের যে গান ভেসে আসছিল বা ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআনের সুরাসমূহের পঙ্‌ক্তি বা বাক্য পাঠ বা আবৃত্তি ভেসে আসছিল তাও ঈশ্বর/আল্লার উদ্দেশ্যে নিবেদিত পাঠ বা আবৃত্তি ছিল। তাহ'লে এখানে বিরোধ কোথায় বা কেনই বা এই ধরণের অকারণ বিরোধ সৃষ্টি?

তাই আসুন দেখা যাক এর সমাধান কোথায়। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের দীক্ষিত পরম ভক্ত মোহাম্মদ খলিলুর রহমানদা একবার শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গে আলোচনার সময় প্রশ্ন করেছিলেন,
প্রশ্নঃ হিন্দু-মুসলমানে সারা ভারতময় গোলমাল চলছে, এর মিমাংসাই বা কোথায় আর তার সমাধানই বা কি? এ দুয়ের ভিতর তো কোন সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া যায় না। আবার কাফেরদের বাঁচতে আর বাড়তে দেওয়াও তো অধর্ম্মই----এই ভেদের সামঞ্জস্য কোনখানে?

এর উত্তরে শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছিলেন,
ভেদ কিরে পাগল? যারা বাঁচতে চায়, বৃদ্ধি পেতে চায়, তা'দের ভিতর কি-ক'রে ভেদ থাকতে পারে? ভেদ ত' কেবল হামবড়াইয়ের ভিতর। ভেদই যদি আমাদের বৈশিষ্ট্য হ'ত, তবে খৃষ্টানদেরই বা মানতে যাই কেন----আর শাস্ত্রেরই বা এমনতর ইঙ্গিত কেন?

যারা বাঁচতে চায়, বৃদ্ধি পেতে চায়, যেমন করেই হ'ক না কেন, তা'রা ধর্ম্মকে মানেই। কারণ ধর্মের আদি উপাদানই হ'চ্ছে----ঐ বাঁচা আর বৃদ্ধি পাওয়া। আর বাঁচতে হ'লে, বৃদ্ধি পেতে হ'লেই চাই-----যাঁকে ধ'রে এই দুনিয়ায় পাঁচ ভূতের পঞ্চাশ রকমের কামড়ানি, পাঁচশ' রকমের বেঠক্কর ঠোকরানিকে এড়িয়ে, তা'দের কাবেজে এনে---বা ক্ষতি না করতে পারে এমনতরভাবে জব্দে রেখে চলা যায়, তাঁ'কে ধরা। তাহ'লেই এই চলাটা আমার তেমনতর হওয়া চাই তাঁর-মাফিক----যাঁকে ধরায় আমার এই বাঁচা ও বৃদ্ধি পাওয়াটা মাথাতোলা দিয়ে, পরম পরিপোষণে, মোটাসোটা হ'য়ে বেশ কায়দা মাফিক চলতে পারে। তাহ'লেই এলো-----যাঁকে ধ'রে আছি, তাঁরই প্রতিপাদ্য পথে ব্যোম বাজিয়ে, বেঢং ঢঙে গাল বাজিয়ে, যাজন-ফোয়ারায় মশগুল হ'য়ে এন্তার হওয়া।"
তাঁর মানে কি দাঁড়ালো?
"তার মানে----যাঁকে ধ'রে আমার এরকম জীবন শুরু হ'ল তাঁর প্রতিপাদ্যের ভিতর মহান একমাত্র খুঁটিই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে খোদা। তবেই চাই---এই ধর্ম্মের ভিতর, বাঁচা ও বৃদ্ধি পাওয়ার উপকরণের ভিতর----ঐ খোদা, ঐ রসুল, ঐ কোরাণ---তাঁ'র মহান, উদ্দীপ্ত, অমৃত ছিটান, জীবন-পথে চলার বিবেকময়ী চেরাগ। ঐ খোদাকে যে না মানে, পয়গম্বর রসুলকে যে না মানে, তাঁর বা তাঁদের নির্দেশকে যে না মানে, সেই মরণ- পথের যাত্রী----কাফের।
এই কাফেরদের সাথে আর্য্যদ্বিজ, মুসলমান, খৃষ্টান বা বৌদ্ধের-----যা'রাই হোক না কেন, ঢের ফারাক থাকতে পারে; কিন্তু এই যে ফারাক, তা' শরীর ও জীবনে নয়কো----চলার কায়দায়। তাই ভগবান যীশু বলেছেন, "পাপীকে ঘৃণা ক'রো না, পাপকে ঘৃণা করো।" আবার কোরাণেও হজরত সজোরেই ঘোষণা ক'রেছেন-----"নিশ্চয় যাহারা পরমেশ্বর ও তাঁহার প্রেরিতগণের সঙ্গে বিদ্রোহিতাচরণ করে এবং ইচ্ছা করে যে ঈশ্বর ও তাঁহার প্রেরিতগণের মধ্যে বিচ্ছেদ স্থাপন করে এবং বলে যে আমরা কাহাকে বিশ্বাস করিতেছি এবং কাহারও প্রতি বিদ্রোহী হইতেছি এবং ইচ্ছা করে যে ইহার মধ্যে কোন পথ অবলম্বন করে----এই তাহারা, তাহারাই প্রকৃত কাফের।"

তাহ'লেই দেখা যায়----ধর্ম্মের দিক দিয়ে, আচরণে ধর্ম্মকে যা'রা অনুভব ক'রেছে তা'দের দিক দিয়ে, বাঁচা ও বৃদ্ধি পাওয়ার দিক দিয়ে, তার লওয়াজিমা যা'র যেমন দরকার তার দিক দিয়ে কোথাও কোন ফারাক দেখতে পাওয়া যায় না-----আর নাই-ও। হিন্দু, মুসলমান তো দূরের কথা, মানুষে-মানুষে যে ফারাক, এই ফারাকের একমাত্র সমাধানই হ'চ্ছে ধর্ম্ম। ধর্ম্মে কোথাও দলাদলি, ভেদ, বিসম্বাদ থাকতে পারে না। হিন্দুরা বলে, পূর্বগুরু বা ধর্ম্ম প্রবর্ত্তককে অবলম্বন ক'রেই পরবর্তীর আবির্ভাব হয়; আর এই যে পরবর্তী-----পূর্ব্ববর্তীরই পরিণতিমাত্র। ভগবান হজরত রসুলও তাঁর মুখনিঃসৃত কোরাণে এমনতরই ব'লে গেছেন।

যখন বন্যায় সারা দেশ জলে ডুবে যায়, ঘর বাড়িতে থাকা অসম্ভব হয়, জঙ্গলে জীব, জানোয়ার তো দূরের কথা-----শুনেছি বাঘ, ভালুক, বাঁদর, সাপ, মানুষ হয়তো এক গাছে উঠে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখার আগ্রহে হিংসা ভুলে যায়-----কেউ কা'কেও কামড়ায় না। অস্তিত্ব বা জীবন, আর তা'র রাখবার টান জীবের এমনতরই ভীষণ।

জীবন বাঁচাবার টানে যখন জীব, জানোয়ারের এমন হ'তে পারে, হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্টান এ আর কি। তবে চাই, অমনতর ধর্ম্মের প্রতি হাড়ভাঙ্গা টান -----তাহ'লে সব চুকে যায়। ঐরকম টানের মানুষের ভিতর কি দেখা গেছে ----হিন্দু ব'লে কোনও গন্ডী, হিন্দু ব'লে কোনও ভেদ, মুসলমান ব'লে কোনও গন্ডী, মুসলমান ব'লে কোনও ভেদ, কি বৌদ্ধ, খৃষ্টান ব'লে কোনও গন্ডী, কোনও ভেদ? জীবন-জড়িত প্রাণময় প্রেমের প্লাবনে তা'দের কি ঐ সব হামবড়াইয়ের আইনগুলি ভেঙে চুরমার হ'য়ে যায়নি? ঐ সব গন্ডী-ফন্ডি---তা'দের নামের দোহাই দিয়ে আত্মম্ভরিতায় সেবাহারা ফাঁকিবাজির বদমাইসি ছাড়া কি আর কিছু বোঝা যায়?

এই যে গত ৯ই জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ঢাকার রমনা মন্দিরে যে ঘটনাকে সামনে রেখে হিন্দু-মুসলমানে বাংলাদেশের বর্তমান অস্থির পরিস্থিতিতে যে বিতর্ক তৈরী হ'লো, এ নোতুন কোনও ঘটনা নয়। হিন্দু মুসলমানের মধ্যে এই ধরণের ঘটনা বৃটিশ শাসিত ভারতে, ভারত ভাগের পরে ও বর্তমানেও ঘটে চলেছে, সেই ট্রাডিশান সমানে চলেছে। এর সমাধানে বা মিমাংসার জন্য কোনও পথ কোনও রাজনৈতিক বা ধর্মীয় নেতার কাছে নেই। 

এর মিমাংসাই বা কোথায় আর তার সমাধানই বা কি তা' দিয়ে গেছেন ঈশ্বর স্বয়ং। সেই মানুষ রূপী স্বয়ং ঈশ্বর, আল্লা বা গড যে নামেই ডাকি না কেন তাঁকে সেই তিনি 
পরমপিতা, সদগুরু, পরম কারণ, পরম উৎস, পরম অস্তিত্ব ত্রেতা যুগের শ্রীশ্রীরামচন্দ্র, দ্বাপর যুগের শ্রীশ্রীকৃষ্ণ ও দ্বাপর যুগের শেষে কলি যুগের প্রথমে আসা শ্রীশ্রীবুদ্ধ, প্রভু যীশু, হজরত মহম্মদ, চৈতন্য মহাপ্রভু, ঠাকুর রামকৃষ্ণ সেই একজনই এক ও অদ্বিতীয় সৃষ্টিকর্তার নোতুন রূপ বর্তমান যুগপুরুষোত্তম, পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র? যা আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম। আজকের মত এই পর্যন্ত। পরবর্তী সময়ে আবারও আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো শ্রীশ্রীঠাকুরের বলা হিন্দু-মুসলমানের এই দ্বন্ধের মিমাংসা ও সমাধানের নানা দিক।  
নমস্কার, জয়গুরু।

Monday, January 13, 2025

বিচিত্রা ৭৯

প্রভু তোমায় দেখে জুড়ায় মন
কাঁপে তনু থরথর প্রতিক্ষণ
তুমি থেকো প্রভু মোর হৃদয় জুড়ে
রবো না আর তোমার চরণ ছেড়ে
জীবন মাঝে দূরে দূরে।

ভাবি এক হ'য়ে যায় আর এক! 
পরিশেষে বলি,
নিজেকে নিজে একবার দ্যাখ!
তোর ভাবা আর করার আগে
কে যেন সাজিয়ে রেখেছে ম্যাপ!!
( লেখা ১৪ই জানুয়ারী'১৮)

ঝড় উঠেছে! কিসের ঝড়!?
ইষ্টপ্রতিষ্ঠার বাহানায় অর্থ-মান-যশ
কামানোর ঝড়!?!?

অর্থের লোভে দয়ালের কাছে আসো!?
আসো মান-যশের লোভে!?
দয়াল আমার কাঁদেন বসে
আর মারবে ছোবল শয়তান শেষে!!

বাঁচবে কতদিন!? আদি অনন্তকাল!?
ইষ্টের চেয়ে অর্থ হ'লো বড়?
মান-যশ করলো বেসামাল!?

অর্থ ছাড়া কিছু হয় না তা যেমন সত্য,
ইষ্ট আমার জীবন দাঁড়া, জীবন মেরু
এ কথা সত্যের সত্য, মহাসত্য!
ইষ্টকে ঘায়েল ক'রো না।
( ১৪ই জানুয়ারী'২০)

কবে সত্যের মুখোমুখি হবো?
কতদিন আর দেখবো মিথ্যে স্বপ্ন?
তুমি এসো দয়াল! তুমি হও প্রকট।
সত্য এবং মিথ্যের পর্দা ফাঁস হ'ক।
নিশ্চিন্তে ঘুমোবো আর মরবো তো শান্তিতে!
যতদিন বাঁচবো দয়াল বাঁচবো তোমার চিন্তাতে!

Kob sach ka samna koru!
Kob tak jhuta swpna dekhu!
Tum aao dayal! Samne prokot ho!
Sach aur jhut ka parda fans ho.
chyen se nid zau moro to shanti se
Zob tak jiu tob tak tumari kheyalo main.
( ১৪ই জানুয়ারী'২২)




















































































Saturday, January 11, 2025

প্রবন্ধঃ ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর ও শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র।

শুভ নববর্ষ। 2025 সালের প্রতিটি দিন আপনার জন্য শান্তি, আনন্দ এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসুক। সম্প্রতি কিছুদিন আগে ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর ভারত সম্পর্কে একটা ইন্টারভিউতে তাঁর অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি ব্যক্ত করেছিলেন। ইন্টারভিউতে বলা ভারতের বিদেশ মন্ত্রীর কথা শুনতে শুনতে মনে পড়ে যাচ্ছিল আজ থেকে ৮৩বছর আগে ভারত ভাগের আগে ১৯৪১ সালে বলা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের কথা। আসুন পড়ে দেখি কি বলেছিলেন সেদিন ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর এবং আজ থেকে ৮৩বছর আগে শ্রীশ্রীঠাকুর কি তাঁর মনের কথা বলে গেছিলেন।

বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বললেন, বর্তমান সময়ে কোনও দেশকে নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা হ'য়ে থাকে তবে সেই দেশের নাম ভারত। ভারতকে যারা এর আগে নীচা দেখিয়েছিল সেই দেশ এখন ভারতের কাছে মাথ নত করে। বিশ্বের শক্তিশালী দেশের মধ্যে একটি দেশ ইজরায়েল। সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারত কোনও ছোটো দেশ নয়। ভারত বিশ্বশক্তিতে পরিণত হ'তে যাচ্ছে। ইজরায়েলের এই কথা শুনে কিছু দেশ বিরক্ত। এদের মধ্যে পাকিস্তান, চিন, আমেরিকার মত দেশ আছে। ইজরায়েল জানে বিশ্বে বিভিন্ন শক্তিশালী দেশের ওপর ভারতের প্রভাব সবচেয়ে বেশী। বিশ্বে যেখানেই যুদ্ধ হয় প্রথমে ভারতের কথা সবার আগে মনে পড়ে। ইজরায়েলের কট্টর প্রতিদ্বন্ধি দেশ ইরাণ ভারতের কথা মানে। দুনিয়ার যেখানে মিটিং হয় সেখানেই ভারতের আমন্ত্রন হয় এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করা হয়।

চীন চেষ্টা করে ভারতের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে। ভারত তার কাউন্টার রিপ্লাই করে। বিশ্বের কোনও দেশ যদি চীনের সঙ্গে হেড টু হেড মোকাবিলা করছে তা'হ'লো ভারত। দুনিয়ায় চীনের সঙ্গে মোকাবিলায় চোখে চোখ রেখে লড়াই যদি কেউ ক'রে তা হ'লো ভারত।---জয়শঙ্কর।

ভারতের বিদেশ মন্ত্রীর কথায় মনে পড়ে গেল আজ থেকে ৮৩বছর আগে ভারত ভাগের আগে ১৯৪১ সালে বলা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের কথা। কথাপ্রসঙ্গে একদিন শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছিলেন, "ভারতকে একসময় পৃথিবীর লোকে দেবভূমি বলতো। তাঁর মানে ভারতবর্ষে আগে যে-সব লোক বাস করতো, তাদের বেশীরভাগ লোকের চরিত্রই ছিল দেবোপম। এই ভারতবর্ষই আবার দেবভূমি, দেবলোক হ'তে পারে যদি তোমরা আর্য্যাচারে চল। বৈশিষ্ট্যপালী আপূরয়মান পুরুষোত্তমের অনুবর্ত্তন অর্থাৎ অনুসরণ, বর্ণাশ্রম, দশবিধ-সংস্কার, নিত্য পঞ্চমহাযজ্ঞ, আদর্শ বিবাহ, আদর্শ শিক্ষা, অনুলোম অসবর্ণ বিবাহ, দৈনন্দিন জীবনে যজন, যাজন, অধ্যয়ন, অধ্যাপনা, দান, প্রতিগ্রহ, পারিপার্শ্বিকের সেবা, সদাচার পালন, ব্রত ও তীর্থের অনুসেবন---এই সবগুলি হ'লো আর্য্যাচারের অঙ্গীভূত। এইগুলির অনুসেবনে মানুষ ধীরে ধীরে বংশপরম্পরায় দেবতুল্য হ'য়ে ওঠে। এবং সে শুধু এক আধজন নয়, গোটে গোটে হ'তে থাকে, ঘরে ঘরে হ'তে থাকে।

তোমরা কতকগুলি মানুষ যদি দাঁড়িয়ে যাও, তাহ'লে আমি সারা দেশ, এমনকি দুনিয়া সম্বন্ধে নিশ্চিন্ত হ'তে পারি। স্ফুর্তিযুক্তভাবে শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, যাবার আগে আমাকে একটু সুখ ক'রে যেতে দাও তোমরা, আমি দেখে যাই যে ভারতের ঘরে ঘরে আবার নারায়ণ জন্মাচ্ছে, ভারতের তেত্রিশ কোটি লোক আবার দেবতা হ'য়ে উঠছে, আর সারা দুনিয়া তাদের দেখে শিক্ষা লাভ করছে, তাদের দেখে শ্রদ্ধা ক'রে বর্ত্তে যাচ্ছে।

ভারতের প্রতি লুব্ধ দৃষ্টি সবারই আছে। ফলকথা India হ'লো Key to the world ( জগতের চাবিকাঠি)। যেমন যেমন বলেছি তেমনি ক'রে যদি সবাইকে organise ও integrate (সংগঠিত ও সংহত) করতে পার ধর্ম্ম ও কৃষ্টির ভিত্তিতে ---পারস্পরিক সেবা-সহযোগিতা ও সর্ব্বতোমুখী গঠনমূলক কর্ম্মের সুপ্রসারণায়---তাহ'লে সারা ভারতের স্বরাজ আসতে আর বেশী দেরী লাগবে না। স্বাধীনতার সে রূপ দুনিয়াকেও সত্যিকার স্বাধীনতার পথ দেখাবে। ভারত আবার জগতের গুরু হবে।

আবার বললেন, কি বিজ্ঞানের দিক দিয়ে, কি যন্ত্রপাতির দিক দিয়ে---কোন দিক দিয়ে আমাদের দেশের খাঁকতি থাকে তা' আমার ভালো লাগে না। ধর্ম্মের ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আপনারা সব ব্যাপারে অদ্বিতীয় হ'য়ে ওঠেন, এই আমার ইচ্ছা। এই বাস্তব দক্ষতা যদি না ফোটে, তবে ধর্ম্ম হ'য়ে দাঁড়ায় শুধু কথার কথা। শিক্ষা কা'কে বলে, সভ্যতা কা'কে বলে, কৃষ্টি কা'কে বলে, দেবদক্ষ চৌকস মানুষ কা'কে বলে, আমার বড় সাধ হয় তার নমুনা দেখাতে।

আমরা ভারতবর্ষ দু'টুকরো হওয়ার মধ্যে দিয়ে তথাকথিত স্বাধীন হওয়ার পর দীর্ঘ ৭৭ বছর আমরা দেখেছি বিশ্বে ভারতের অবস্থান কি ছিল, কি অবস্থার মধ্যে দিয়ে গেছে ও বর্তমানে ভারতের অবস্থা কি ও কোথায়। ধর্ম্ম ও কৃষ্টির দেশ ভারত কোন ধর্ম ও কৃষ্টির ওপর দিয়ে দীর্ঘ ৭৭বছর পার হয়েছে তা' আমরা দেখেছি ও দেখছি। আজ ভয়ংকর রণক্ষেত্র হ'য়ে উঠেছে গোটা বিশ্ব। দেশে দেশে মানুষে মানুষে, সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে আজ হানাহানি, কাটাকাটি, ঘৃণা এই যদি ধর্ম্মের ভিত্তি হয়, রাম প্রেমী, রসুল প্রেমী, খ্রীষ্ট প্রেমী, বুদ্ধ প্রেমীর মধ্যে মারামারি কাটাকাটি গালিগালাজ যদি কৃষ্টির ভিত্তি হয়, পারস্পরিক দোষ দেখা, বিদ্বেষ, অসহযোগিতা করা, আঘাত ও ক্ষতি করা, কষ্ট, যন্ত্রণা দেওয়া যদি কৃষ্টির ভিত্তি হয় তবে এক ভয়ংকর ভয়াবহ অকল্পনীয় ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে মানুষের সামনে। মানুষের মনুষ্যত্ব লোপ পেয়ে যাওয়ার মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। আবার ফিরে যাবে মানুষ আদিম যুগে। কিংবা বিলুপ্ত হ'য়ে যাবে মানব জাতী।

তাই, বৈশিষ্ট্যপালী আপূরয়মান যুগ-পুরুষোত্তমকে ধ'রে চলার রীতি যদি থাকে, তাহ'লে বিভিন্ন সম্প্রদায় থাকলেও সাম্প্রদায়িকতা থাকে না, প্রত্যেকে প্রত্যেককে মনে করে আমারই একজন। কারণ যুগপুরুষোত্তমের মধ্যে পূর্বতন প্রত্যেকটি অবতার মহাপুরুষই জীয়ন্ত থাকেন। তাঁকে ভালোবাসলে আমরা পূর্বতন কাউকেই অবজ্ঞা করতে পারি না। রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ ও শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রত্যেককেই মনে করি আমার ঠাকুর। তাই গুরুভাইয়ের প্রতি যে প্রীতি সেই প্রীতিরই জাগরণ হয় হিন্দু, মুসলমান, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ইত্যাদি পরস্পর পরস্পরের প্রতি, সকলের প্রতি। তখন সেখানে সাম্প্রদায়িকতা থাকে না। শ্রীশ্রীঠাকূর বললেন, সাম্প্রদায়িকতা সেখানে আসবে কোথা থেকে? যুগপুরুষোত্তম যিনি তিনিই গুরু, আর গুরুই সব। তাঁকে ভালোবাসলে আর কাউকে ছাড়তে ইচ্ছা করে না। তাই সৎসঙ্গীরা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে ভালোবাসে বলেই তারা রামকে ভালোবাসে, কৃষ্ণকে ভালোবাসে, বুদ্ধ, যীশু, হজরত মহম্মদ, মহাপ্রভু ও ঠাকুর রামকৃষ্ণকে ভালোবাসে। এই একজনই যুগে যুগে বারবার যুগের প্রয়োজনে এসেছেন। শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, এই ভালোবাসাই হ'লো Magnetic pull অর্থাৎ চুম্বক সংক্রান্ত আকর্ষণ বল। ভারতের যত মানুষ আছে তারা এরকমভাবে লেগে যাক ইষ্টের সাথে। India হবে magnetic pull (চৌম্বক টান)। তখন ইউরোপও এসে গুচ্ছ হ'য়ে ভারতের সাথে যোগসূত্র রচনা করবে। তারপর আরো একটা গুচ্ছ। এভাবে Whole world (সমগ্র পৃথিবী) একায়িত হবে। তাই-ই United world (একায়িত পৃথিবী)।

শ্রীশ্রীঠাকুরের এই স্বপ্ন আমরা সৎসঙ্গীরা কি পূর্ণ করতে পারি না? নিশ্চয়ই পারি। আর পারবোও। তাই আসুন আমরা সবাই শ্রীশ্রীআচার্যদেবের নিখুঁত ভালোবাসাময় দেখানো পথে চলে শ্রীশ্রীঠাকুরের স্বপ্নকে পূরণ করি।

স্বপ্নে দীক্ষা।

একটা লেখা পড়লাম। একজন পোষ্ট করেছে এক মা স্বপ্নে দেখেছেন তিনি একটা মন্দিরে গেছেন সেখানে সেই মন্দিরে একজন অপূর্ব সুদর্শন যুবক বসে আছেন। সেই সুদর্শন যুবক তাঁকে ডেকে বলছেন দীক্ষা নিতে। তারপরে তার ঘুম ভেঙে যায়। সকাল হ'লে তিনি সেই কথা স্বামী ও শাশুড়িকে বলেন। কিন্তু তারা এ সম্পর্কে তাকে কিছু বলতে পারেননি। পরে তিনি পথেঘাটে সেই সুন্দর যুবককে অনেক খুঁজেছেন কিন্তু কোথাও তার সন্ধান পাননি। পরে হঠাৎ একদিন ফেসবুকে প্রকাশিত এক সুন্দর যুবকের ছবি দেখে সেই স্বপ্নে দেখা যুবকের চেহারার সঙ্গে তার হুবহু সাদৃশ্য দেখতে পান। তখন সেই মা প্রোফাইলের ইনবক্সে ও ফোনে পোষ্টদাতার সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করেন এবং পোষ্টদাতা তাকে পোষ্টে প্রকাশিত ছবির যুবকের সঙ্গে যোগাযোগের পথ ব'লে দেন।
 
পরে অবশ্য কি হ'লো তা আর জানা যায় না ঐ পোষ্ট থেকে।

সেই স্বপ্নে দেখা অপূর্ব সুদর্শন পুরুষ হ'লেন আমাদের কোটি কোটি প্রাণের ভালোবাসার মানুষ শ্রীশ্রীঅবিনদাদা। যাকে দেখলে মনে হয় এতো সুন্দর কেউ হ'তে পারে? এত সহজ সরল আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব কারও হ'তে পারে? যত দেখি তত মুগ্ধ হ'য়ে যায়। এই বয়সে চোখে জল এসে যায় যখন তাঁর সামনে বসি। কথা বলবো ব'লে যাই কিন্তু মুখের দিকে তাকিয়ে কথা হারিয়ে যায়। এমন নয়ন ভুলানো প্রাণ জুড়ানো অবয়ব!!!!!! তাঁকে সামনা সামনি যখনি দেখি তখনি খালি মনে হয় এমন মনে প্রাণে সুন্দর যেন হয় আমার সন্তান!!! যে দেখেছে সে জানে।

স্বপ্নে শ্রীশ্রীঠাকুরকে ও ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের কোনও কোনও ভক্তপ্রাণ দেখতেই পারে। আর এ বিষয়ে অবিশ্বাসীরা তর্ক, ঝগড়াও করতেই পারে। এটা স্বাভাবিক। আর অজ্ঞানতা থেকেই অবিশ্বাসের জন্ম। এই ঘটনাকে অলৌকিক ঘটনা বলা হ'য়ে থাকে। অলৌকিক ব'লে কিছুই নেই, সবই লৌকিক। যতক্ষণ না আমরা ঘটনার কার্যকারণ জানতে পারছি, বুঝতে পারছি ততক্ষণ তা অলৌকিক আর যে মুহূর্তে ঘটনার কারণ হস্তগত হয় তখনি তা হ'য়ে যায় লৌকিক। ঠাকুরের কাছে যা জেনেছি তাই বললাম। অলৌকিক সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুর বলতেন,
 
"জগতে যা কিছু-ঘটে তারই কারণ আছে, আমরা যেখানে কারণটা ধরতে পারি না, সেখানে সেইটাকে বলি অলৌকিক।"
ইংরেজি ভাষার কবি, নাট্যকার ও সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক শেক্সপিয়ারের 'হ্যামলেট' নাটকের একটা লাইন শ্রীশ্রীঠাকুর প্রায়ই বলতেন, "There are more things in heaven and earth, Horatio, than are dreamt of in your philosophy." যার অর্থ ছিল, স্বর্গ ও পৃথিবীর মাঝখানে আরও বহু জিনিস আছে, হোরাশিও, যা তোমার দর্শনের পাল্লার বাইরে ও স্বপ্নের অতীত।

তবে ঠাকুর এও বলতেন, "অলৌকিকের ওপর দাঁড়ালে টান হয় না, আর টান না হ'লে মানুষের কোনও লাভ হয় না।"
যারা যে বিষয়ে, যার সঙ্গে যত বেশী ঘনিষ্ঠ, যাদের ভালোবাসা যত বেশী গভীর তারা স্বপ্নে সেই বিষয়কে, তাদের ভালোবাসার মানুষকে, প্রিয়জনকে স্বপ্নে দেখতেই পারে। এটাও একটা বিশেষ জ্ঞানের মধ্যে পড়ে যা আমার অজানা। কেউ কেউ একে ইলিউশানও ব'লে থাকে। আমরা যখন যে ভাবের মধ্যে দিয়ে যাই, একনাগাড়ে দীর্ঘ সময় অবস্থান করি তখন সেই ভাব অনুযায়ী স্বপ্ন দেখা যায়। ঘুমের মধ্যে তা ভেসে ওঠে। আমাদের মাথার মধ্যে যে ধরণের চিন্তাভাবনা, ইচ্ছা তীব্রভাবে অহরহ খেলা করে, অবচেতন মনে যা সুপ্ত অবস্থায় থাকে তা হয়তো বা স্বপ্ন আকারে ভেসে ওঠে। এ নিয়ে বিশ্বাসী অবিশ্বাসীর মধ্যে তর্ক ঝগড়া বেঁধে যেতে পারে। স্বপ্নে শুধু অতীত, বর্তমান নয়, ভালো মন্দের ভবিষ্যতও ভেসে ওঠে। স্বপ্নে দেখা বিষয়ের সঙ্গে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত-এর হয়তো বা কোনও যোগসূত্র থাকতেও পারে। আমাদের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যের বাইরেও অনেক কিছু স্বপ্ন হ'য়ে আমাদের সামনে ঘুমের মধ্যে হাজির হয়। আমাদের ইন্দ্রিয় দুর্বল তাই আমারা দুর্বল ইন্দ্রিয় দিয়ে ইন্দ্রিয়ের উপরে অবস্থিত জিনিস দেখতে বা বুঝতে পারি না। আর আমি বুঝতে পারি না, দেখতে পারি না ব'লে যে তা যে সব বোগাস, বুজরুকি তা কিন্তু নয়। এই মাথা এক আজব মাথা। ঠাকুরের কথায় চিত্রগুপ্তের খাতা। চিত্রগুপ্ত মানে চিত্র মানে ছবি আর গুপ্ত মানে লুকোনো অবস্থায় যা আছে। অর্থাৎ অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ অনন্ত জীবনের ইতিহাসের ছবিগুলি সব লুকিয়ে আছে আমার এই মস্তিষ্কের মধ্যে।

যাই হ'ক উপরিউক্ত বিষয়ে ঠাকুরের কাছ থেকে যা জেনেছি তাই চেষ্টা করলাম নিজের মতো ক'রে তুলে ধরতে। ভুল হ'তে পারে। নিজ গুণে ক্ষমা ক'রে দেবেন। এ বিষয়ে আমি বিশেষজ্ঞ ন'ই। স্বপ্ন বিশেষজ্ঞেরা এই বিষয়ে বলতে পারবেন। কিন্তু আমার এই পোষ্টে আলোচনার বিষয় সম্পূর্ণ অন্য।

এবার বলি, ঐ যে বললাম স্বপ্নে দীক্ষা নেবার কথা বলছে শ্রীশ্রীঅবিনদাদা; এই ধরণের পোষ্টে হয়তো কতিপয় সৎসঙ্গী বিশ্বাসীর মন আশ্বস্ত হয়, ঠাকুরের প্রতি নির্ভরতা বাড়ে। হু হু ক'রে প্রচার ছড়িয়ে পড়ে। তার উপর আবার প্রকাশ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তা'তে হয়তো বা অবিশ্বাসীরও মনে দোলা লাগতে পারে।
কিন্তু আমরা প্রতি মুহূর্তে অবিশ্বাসের গোলামি ক'রে চলেছি। বিশেষ ক'রে আমরা যারা সৎসঙ্গী তাদেরই বিশ্বাস কম, নেই বললেই চলে। ঘরে ঘরে দুঃখ দুর্দশা তার প্রমাণ। আর আমরা তাবিজ, মাদুলি, তুকতাক, নানা দেবদেবী, অলৌকিক ঘটনা ইত্যাদিতে বিশ্বাসী। আমি অনেক সৎসঙ্গী দাদা ও মায়েদের মা কালীর কাছে ভক্তিভরে প্রার্থনা পূরণের জন্য জীব বলি দেবার মানত করতে ও ভক্তি গদগদ চিত্তে বলি দিতেও দেখেছি। আর প্রশ্ন করলে অশ্রদ্ধা, অসম্মান পেয়েছি। আর বেশী পেয়েছি ভক্তিমতি সৎসঙ্গী মায়েদের কাছে, কখনো কখনো উগ্রতার সঙ্গে। আর, 'যদি ভালো কিছু ফল পেতে চান এক্ষুনি মা কালীর ছবিতে লাইক দিন আর শেয়ার করুন কিম্বা এই পোষ্টকার্ড বা লিফলেট পাওয়ার সাথে সাথে পোষ্টকার্ডে বা লিফলেটে যা লেখা আছে তা লিখে বা ছাপিয়ে ১০০ জনের মধ্যে ছড়িয়ে দিন নতুবা বিপদ আসন্ন'----এই সমস্ত ধরণের ভয়জনিত ঈশ্বর ভক্তির প্রচারে আমরা সৎসঙ্গীরাই বিশ্বাসী; অদীক্ষিতদের কথা না হয় ছেড়েই দিলাম।
আর যারা ঠাকুর বিরোধী ও ঠাকুর অবিশ্বাসী যারা তাদের কাছে এমন ঘটনা প্রচারসর্ব্বস্ব হাস্যকর গল্প ও খিল্লি মাত্র। যা অতিমাত্রায় ভীষণভাবে অহেতুক বিতর্কের, খিল্লির রসদ যোগায় ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঠাকুর বিরোধীদের কাছে। নিজের জীবনের ওপর ঘটা অলৌকিক (?) বাস্তব ঘটনা যা পরীক্ষিত সত্য তা যতটা দৃঢ়তার সঙ্গে বলিষ্ঠ প্রভাব ফেলে ব্যক্তিজীবন ও সমাজ জীবনের ওপর তার কানাকড়িও প্রভাব ফেলে না অন্যের জীবনের অপরীক্ষিত শোনা গল্পে এবং তা পরিবেশনে। এমনই আমাদের বাস্তব, কঠিন, রূঢ়, তিক্ত, মিথ্যেতে ভরা চারপাশের পরিবেশ ও মানুষজন। তার ওপর স্বপ্নে পাওয়া ওষুধের মতো স্বপ্নে পাওয়া দীক্ষার গল্প হ'লে তো অবিশ্বাসী বিরোধীদের কথায় নেই। রে রে ক'রে নেবে পড়বে ময়দানে। এমনিতেই পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীঅবিনদাদা ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত খিল্লির শিকার 'সৎসঙ্গ' বিরোধীদের কাছে। তাদের কাছে এইধরণের গল্প আজগুবি, গাঁজাখুরি গল্প; যা মেঘ না চাইতেই জল-এর মতো ব্যাপার। আর সুযোগ সন্ধানী যারা এগুলিকে নিয়ে দূর্বলদের ওপর ব্যবসা করার সুযোগ পায় তাদের কাছে এই গল্পগুলি মোক্ষম পাওনা। আর মনে রাখতে হবে আমাদের, এটা ঘোর কলির সময়। এটাই স্বাভাবিক। তাই প্রচার সম্পর্কে সাবধান হ'য়েই আমাদের প্রচার করতে হবে। যাতে প্রচারের ঠেলায় শিব গড়তে বাঁদর না গড়ে বসে। ঠাকুরের স্বপ্ন দেখা ও অলৌকিক ঘটনা প্রসংগে বলাগুলি মাথায় রেখে সবকিছুর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে যেন আমরা সৎসঙ্গীরা চলি। ঠাকুর সমস্ত কিছুকে বাস্তবে রূপ দিতে পছন্দ করতেন।

এ প্রসঙ্গে বলি, একবার ঠাকুরকে প্রফুল্লদা বলেছিলেন, "শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবের মৃত্যুর পর স্বামীজী তো তাঁকে বহুবার দেখেছেন।

তার উত্তরে শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছিলেন, "স্বামিজী হয়তো দেখতে পারেন, কি আর একজন হয়তো দেখতে পারে---কিন্তু environment-এর (পরিবেশের) সকলে যদি স্বাভাবিকভাবে না দেখতে পারে---তাহ'লে কী হ'লো? আমার রকমটাই এইরকম যে concrete (বাস্তব) না হ'লে আমার কিচ্ছু ভাল লাগে না। যদি কোন instrument-এর মধ্যে দিয়ে কিংবা অন্য কোনভাবে environment-এর সকলে মিলে বোধ করতে না পারি---তাহ'লে খুশী হ'ই না। তাই, আমার কথাগুলির মধ্যে বোধহয় Philosophy, Art, Religion--সবকিছু Science-এ merge ক'রে গেছে।" জয়গুরু।
(লেখা ১১ই জানুয়ারী'২৩)।
.

বিচিত্রাঃ ৭৮

O Dayal!
My request to you is to reflect your character in my character;
I don't want anything else in my life.

কাল কাল ক'রে ক'রে মহাকাল গ্রাস ক'রে ফেলবে তোমায়।
মুখ ফেরাও, ফেরাও তোমার মুখ।
দূরে, ক্রমশ দূরে সরে যেও না দয়াল থেকে।
নিজে বাঁচো, অন্যকে বাঁচাও।

শরীরের সমস্ত রোগের উৎস নেতিবাচক মানসিকতা (Negative mentality)। এর ফলেই শরীরে secretion (নিঃসরণ) হয় ভয়ংকর অ্যাসিডের। সাবধান।

The source of all diseases in the body is negative mentality. 
As a result of this, the body secretes dangerous acids. be careful.
( ১১ই জানুয়ারী'২৪)

দেশের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে দেশের ভিতরেই রাজ্য সফরের সময় 'গো ব্যাক' না ব'লে নির্বাচনে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটের মাধ্যমে তাঁকে কুর্শি থেকে 'গো ব্যাক' করা হ'ক। কবে এই সংস্কৃতি চালু হবে!? কবে বন্ধ হবে এই অশিক্ষার-কুশিক্ষার চাষ !? কবে আসবে সেই দিন!?

দেশের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী দেশের কোনও রাজ্যে আসতে পারবে না!? কেন!? কি বলেন রাজ্যের নেতা ও বিদগ্ধজন!?
কেউ নেই তোমার পাশে, চারপাশে! ঈশ্বরও নেই!!
আছে শুধু বিধি আর তার বিধান!!! সাবধান।

ঈশ্বরের উপর ছেড়ে দাও বিচারের ভার।
বিচারে উপহার-প্রহার স্থির হ'য়ে আছে 
ইষ্টপ্রতিষ্ঠা ও আত্মপ্রতিষ্ঠাকারী
সত্য-মিথ্যার জন্য।
( লেখা ১১ই জানুয়ারী'২০)

শুরু করি কিন্তু হয় না শেষ!
কেন জানি না বারবার
থেকে যায় অবশেষ!!
( ১১ই জানুয়ারী'১৮)
















































































Friday, January 10, 2025

বিচিত্রাঃ ৭৭

হে প্রিয়,
যদি শরীরে-মনে হালকা থাকতে চাও, রক্তচাপের ওষুধ খেতে না চাও, নার্ভের এবং হার্টের সমস্যায় ভুগতে না চাও, চাও ঘুমের ওষুধ ছাড়া গভীর ঘুমে নিশ্চিন্তে ডুবে যেতে, চাও আনন্দে থাকতে তাহ'লে মনকে ডাস্টবিন ক'রো না, অন্তর পরিষ্কার রাখো, ঈশ্বরকে হৃদয়ে বসতে দাও ও খেলা করতে দাও।

হে প্রিয়,
ভয় থেকে বাঁচো, দূর্বলতা থেকে বাঁচো। শয়তানের হাত থেকে তুমি নিজেকে বাঁচাও, বাঁচাও তোমার সন্তানকে, তোমার পরিবারকে। ভগবানের কাছে নিজেকে সঁপে দাও। শয়তান তোমার মধ্যেই বাস করছে। তাড়াও যতশীঘ্র পার শয়তানকে। শয়তান কিছুই না, শয়তান তোমার বৃত্তি-প্রবৃত্তি, তোমার অনিয়ন্ত্রিত উচ্ছৃঙ্খল ষড়রিপু। ভগবান তোমার সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছেন তোমাকে সাহায্য করবে ব'লে; খুঁজে নাও। খোঁজার দায়িত্ব তোমার।

শয়তানের ছোবল যদি খেতে না চাও তবে ঈশ্বরকে মাথায় বসাও, রাখো হৃদয়ে। তবে তা অমূর্ত ঈশ্বর নয়, মূর্ত ঈশ্বর কিন্তু, এটা মনে রেখো। আর করো তার চলনপুজো, নয় চরণপুজো।


যদি এই কঠিন পৃথিবীতে টিকে থাকতে চাও সর্বশক্তিমানের কাছে আত্মসমপর্ণ করো। তিনি তোমাকে শক্তিমান ক'রে দেবেন।


ঈশ্বর নিষ্ঠুর, নির্ম্মম, নির্দয় একইসঙ্গে প্রেমিক, দয়াল, দয়াময়। সাবধান! নিজেকে পাল্টাও। নতুবা শেষের সেদিন কিন্তু ভয়ংকর।

মানুষের দুঃখ-কষ্ট কোনওদিনই যাবে না কারণ শয়তান তার জন্য নানা মিথ্যে মায়ার রঙিন জাল বিছিয়ে রেখেছে ভগবানের সাগরেদদের সাহায্যে।

সাধারণ মানুষ অতীতকে খুব তাড়াতাড়ি ভুলে যায় বলেই শয়তানরা ফিরে ফিরে আসে বারবার নতুন রূপে নতুন মোড়কে অজ্ঞ মানুষের সাহায্যে।

God is cruel, merciless yet loving, kind, compassionate. Be careful! Change yourself; If not, But the last day is terrible.

If you want to be light in body and mind, don't want to take blood pressure medicine, don't want to suffer from nerve and heart problems, want to sink into deep sleep peacefully without sleeping pills, want to be happy then don't dustbin your mind, keep your heart clean, let God sit in your heart. Let him play.

Surrender to the Almighty if you want to survive in this difficult world. He will strengthen you.


WOMAN IS THE SOURCE OF ALL POWER & MOTHER OF BOTH MAN-WOMAN BY GIVING BIRTH. THIS IS THE ONE & ONLY BEAUTY & WONDER-STRICKEN SUBJECT MATTER IN THE WORLD. NOTHING CAN STAND BESIDE THIS AND EVERYTHING IS DULL BESIDE .... WOMAN IS WOMAN!!!!! ONE & ONLY ACQUAINTANCE OF WOMAN IS MOTHER, MA, M-A-A-A-A!!!!!!!!!!!!
( লেখা ১০ই জানুয়ারী'২৪)
.














































Wednesday, January 8, 2025

প্রবন্ধঃ D. P. Works নাকি H. I. Works (a hypocrite ingenuity Work) (২য় পর্ব)।

জয়গুরু। আমার সৎসঙ্গী গুরুভাইবোন।

এরকম যে শুধু এরা ফেসবুকে করে তা নয়, প্রায় সমস্ত মন্দিরেই এই ধরণের কিছু ইয়ং সৎসঙ্গী আছে যারা এরকম উদ্ধত আচরণ করে, অবিনদাদার নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেদের অবিনদাদার ঘনিষ্ঠ বলে প্রচার ক'রে। শ্রীশ্রীঠাকুর, শ্রীশ্রীআচার্যদেব এদের কাছে গৌণ। অথচ এদের অনেকেই অবিনদাদার মুখোমুখি কোনোদিন হয়নি। এরকম অপমানিত বহু নোতুন পুরোনো সৎসঙ্গী আছে যারা এই সমস্ত নব্য ইয়ং সৎসঙ্গীদের 'গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল' জাতীয় আচরণে অপমানিত হ'য়ে ঘৃণায়, রাগে, বিরক্তিতে, ভয়ে পিছনে সরে গেছে ও যাচ্ছে। একদিকে পুরোনোদের ও হারিয়ে যাওয়াদের ঘরে ফেরার ডাক দিয়ে শ্রীশ্রীঅবিনদাদা যে প্রভু যীশুর মতো তাঁর হারিয়ে যাওয়া ভেড়াগুলিকে ঘরে ফিরিয়ে আনার নিদ্রাহীন কঠিন কাজে নিমগ্ন অন্যদিকে জুডাস রূপী, মীরজাফর রুপী ও জগত শেঠ-এর মত মানুষেরা সৎসঙ্গীদের মাঝে ভিড়ে সৎসঙ্গী সেজে শ্রীশ্রীঅবিনদাদার স্কোয়াডের শিরোভাগে দাঁড়িয়ে গেছে নিজেদের ব্যবহার দিয়ে ঘরের বাইরে ক'রে দেবে ব'লে।

মনে হয় এদের জিজ্ঞেস করি এরা সৎসঙ্গী কিনা? এদের ধারণা আমাদের কারও কোনও কাজ নেই ও এদের থট প্রসেস খুব স্ট্রং। তাই এরা মনে করে এরাই একমাত্র ঠাকুরের কাজ করে আর আমাদের কাজ নেই। এরা ডি পি-র কাজে যুক্ত আছে। তা' এদের যখন জিজ্ঞেস করি, আপনার স্ট্রং থট প্রসেস দিয়ে ডি পি ওয়ার্কের Full form এবং মূল অর্থটা কি একটু বলবেন? তখন বলতে পারে না এরা ডি পি ওয়ার্কের Full form। আর, যখন জিজ্ঞেস করি ডি পি ওয়ার্কের কাজে যখন এতই ব্যস্ত আছেন তখন ফেসবুকে কি করছেন আপনারা? তখন আরও চটে যায় এরা। অন্যকে যখন ফেসবুকে এসে 'কাজ নেই তো খই ভাজ' বলে কটাক্ষ করে তখন এরা নিজেরাই ফেসবুকে এসে এই বিষয়ে মন দিতে সময় পাচ্ছেন কিভাবে? তার মানে এরাও মুখে মারিতং জগতের সৎসঙ্গী? নিজেরাই 'কাজ নেই তো খই ভাজ' দলের লোক হ'য়ে অন্যকে পরামর্শ দিতে এসেছেন ডি পি ওয়ার্ক করার? একটা দু'টো পোষ্ট দেখেই গাত্রদাহ হ'চ্ছে এদের? এরা বলে দেবে, এরা ডিক্টেট করবে কে কি লিখবে আর না লিখবে ফেসবুকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বা অন্য কোনওখানে? এরা বলে দেবে কে কি বলবে ভিডিওতে? সৎসঙ্গী হ'য়ে সত্যের সন্ধানে অনাগ্রহী এরা? এরা ডি পি ওয়ার্ক ক'রে দিনের শেষে এসে এদের এইরকম অন্যায্য ব্যবহার হয় তাহ'লে ডি, পি, ওয়ার্ক কি কাজ দিল? ডি পি ওয়ার্ক করার মধ্যে দিয়ে শ্রীশ্রীঅবিনদাদা কি এটা শিখিয়েছেন নাকি দিনের শেষে ডি পি ওয়ার্ক করছেন ভেবে অহংকারে ধাক্কা মেরে অপমান ক'রে পুনরায় পুরোনো ও প্রবীণ সৎসঙ্গীদের পিছনে ঠেলে দেবেন? এটাই ডি পি ওয়ার্কের অবিনদাদার শিক্ষা? কে দিল এই শিক্ষা? শ্রীশ্রীঅবিনদাদা নাকি এদের ডি পি ওয়ার্কের দল নাকি 'কাল কা যোগী ভাতকে বলে অন্ন' এই ঔদ্ধত্বপূর্ণ সৎসঙ্গীর শিক্ষা? ডি পি ওয়ার্ক করতে গিয়ে সৎসঙ্গীদের সঙ্গে এইভাবে কথা বলেন নাকি এরা? নাকি তখন ভালোমানুষের মুখোশ পড়ে থাকেন? ঘরে এলেই জে কে স্টীল? এরা আমাকে ব্যাঙ্গাত্মক খোঁচা মেরে কথা বলছেন আবার অন্য গুরুভাই প্রবীণ এক দাদাকে গুরুজন জেনেও প্রতিবাদ করার কারণে 'আপনি অনেক বুদ্ধি রাখেন' ব'লে কটাক্ষ করছেন। গুরুভাই দাদারা তো এদের কাছে জানতে চান, এদের ব্যবহারের সম্বন্ধে, সেটা গুরুভাইদের অপরাধ? সৎসঙ্গী হ'য়ে সৎসঙ্গীর প্রশ্নের উত্তরটা তো দিন! শ্রীশ্রীঠাকুরের দীক্ষা নিয়ে এটা শিখেছেন নাকি, উত্তর জানা না থাকলে কটাক্ষ ক'রে অপমান করতে হবে? তাহ'লে অকারণ প্রশ্ন করার সুযোগ কেন দেন ইনারা? ডি পি ওয়ার্ক করছেন বলে অহংকারে রাতারাতি বিরাট কথার স্রোতে ভাসা ভক্ত সৎসঙ্গী হ'য়ে নোংরা যাকে তাকে অশ্লীল কথা বলবেন, শ্রীশ্রীঠাকুরের আত্মজদের কানে গরম সীসা ঢেলে দেওয়ার মত সীমাহীন ক্ষমাহীন অশ্লীল যৌন কথা বলবেন, আঘাত করবেন নোতুন পুরোনো প্রবীণ সৎসঙ্গীদের আবার বড় গলায় ফেসবুকে এসে নিজেরাই ডি পি ওয়ার্কের নামে ঝাঁঝালো অম্ল ঢেঁকুর তুলছেন? এরা যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে, দিনের পর দিন ফেসবুকে এরকম ঘৃণ্য নোংরা আস্পর্ধা ঔদ্ধত্ব দেখাতে পারেন তাহ'লে তাঁর বিরুদ্ধে শালীন প্রতিবাদটুকু করা যাবে না? শ্রীশ্রীঠাকুরের কথা অনুযায়ী মিষ্টি ভাষায় স্পষ্ট কথা বলা যাবে না? এরা যদি এর পরেও সৎসঙ্গী হয় আমরা তাহ'লে এই প্রবীণ বয়সে এসে লাঞ্ছিত অপমানিত হবো একদল নব্য ইয়ং জেনারেশনের কাছে? শ্রীশ্রীঅবিনদাদা কি এইরকম অসভ্য ইয়ং জেনারেশন চেয়েছিলেন নাকি? এইরকম অসভ্য ইয়ং জেনারেশন শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে তাদের ঘৃণ্য কাজের পৃষ্টপোষক ব'লে মনে করে নাকি? এরা মনে করে যে শ্রীশ্রীঅবীনদাদা এদের সমর্থন করেন? যারা মূল কেন্দ্রের সৎসঙ্গী হ'য়ে শ্রীশ্রীঠাকুর আত্মজদের অশ্লীল গালাগালি করে, গুরুভাইবোনেদের সম্মান করতে জানে না, প্রবীণ বয়োজ্যেষ্ঠদের অসম্মান ক'রে খোঁচা মেরে নোংরা কথা বলে, গালাগালি করে তারাই আবার নিজেদের শ্রীশ্রীঅবিনদাদার প্রোজেক্ট ডি, পি, ওয়ার্কের দায়ীত্বপ্রাপ্ত জ্ঞানী কর্মী সাজিয়ে প্রচার ক'রে বেড়ায়?

তাদের জিজ্ঞেস করছি, আলিপুর দুয়ারে যখন শ্রীশ্রীঅবিনদাদার মঞ্চের বক্তব্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় ব'য়ে গিয়েছিল, তোলপাড় হয়েছিল সৎসঙ্গ জগত তখন আপনারা যারা শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে আপনাদের ইয়ং জেনারেশনের একক সম্পত্তি মনে করেন তারা সেইসময় আপনারা ক'জন তাঁর পাশে ঢাল হ'য়ে দাঁড়িয়ে সমালোচকদের তীক্ষ্ণ শানিত আপাত যৌক্তিক হাজার হাজার প্রশ্নের মোকাবিলা করে যৌক্তিক উত্তর দিয়েছিলেন? যখন শ্রীশ্রীঅবিনদাদা বারবার মঞ্চ থেকে অনুরোধ করেছিলেন ফটো না তুলতে, ভিডিও না বানাতে, ভিডিও বানিয়ে প্রকাশ না করতে তখন আপনাদের মত লাখো শ্রীশ্রীঅবিনদাদা প্রেমী ইয়ং জেনারেশন তাঁর গাইড মেনেছিলেন সেদিন? বারণ করা সত্ত্বেও ভিডিও তুলে তা' পোষ্ট করেছিলেন। মনে ক'রে দেখুন সেই সময়ের ছবি, যদি জানা থাকে। স্মৃতিবাহী চেতনায় ভর ক'রে ফিরে যান সেই সময়ের ফেসবুক, ভিডিও ও ইউ টিউব জুড়ে বিরোধীদের শ্রীশ্রীঅবিনদাদা বিরোধী আয়লা ঝড়ের দিনগুলিতে। যদি অবশ্য স্মৃতিবাহী চেতনা ব'লে কিছু থেকে থাকে। কোথায় ছিল সেদিন শ্রীশ্রীঅবিনদাদার তথাকথিত কথার স্রোতে ভাসা লক্ষ লক্ষ ইয়ং জেনারেশন?

তাই স্বাভাবিকভাবেই অনেক দুঃখ নিয়ে এই বয়সে এসে মনে প্রশ্ন জাগে এরা এদের মতো ইয়ং জেনারেশন দিনের পর দিন ডি পি ওয়ার্কের নামে এরকম অশালীন আচরণ ক'রে বেড়ায় কিসের জোরে? কোন শক্তিতে বলবান হ'য়ে এরা সৎসঙ্গী গুরুভাইবোনেদের কথা ছেড়ে দিলাম শ্রীশ্রীঠাকুর আত্মজদের পর্যন্ত অশ্লীল আক্রমণ করতে ছাড়ে না? এরা এতটাই শক্তিমান যে ফেসবুকে এদের এরকম শয়তানী দাপাদাপি দেখেও একজন সৎসঙ্গীও ছোটো থেকে বড়, নবীন থেকে প্রবীণ, অখ্যাত থেকে খ্যাত, পরিচিত থেকে অপরিচিত কেউই এদের বিরুদ্ধে মৃদু প্রতিবাদ পর্যন্ত করে না? কিন্তু এদেরই লেখায়, কমেন্টে শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রতি প্রেমের ভালোবাসার দয়ার কথা বলবার সময় বা লিখবার সময় বুকের বরফ গলে একেবারে ঝরণা হ'য়ে যায়। এমনই সৎসঙ্গী শ্রীশ্রীঠাকুর চেয়েছিলেন? শুধু কোয়ান্টিটিই চেয়েছিলেন ঠাকুর, কোয়ালিটি চাননি? শ্রীশ্রীঠাকুরের কথামতো মিষ্টিভাষায় স্পষ্টবাদী হ'তে পর্যন্ত এদের মন সায় দেয় না? ভাবি এদের কি বিবেক ব'লে কিছুই নেই? 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতা নিয়ে ফেসবুকের পোষ্টে শ্রীশ্রীঠাকুরের আত্মজ পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবিবেকদাদা ও শ্রীশ্রীকাজলদাদা সম্পর্কে এরকম অশালীন অশ্লীল মন্তব্য দেখেও এরা কিছু বলে না, পাশ কাটিয়ে চলে যায়, নতুবা এখানেও 'জয়গুরু' জানিয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রতি ভক্তি ভালোবাসা জানিয়ে দায়িত্ব ও কর্তব্য শেষ করে। এরাই হবে saviour of mankind (মানুষের ত্রাণকর্ত্তা)? শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছিলেন, "মনে রাখবেন আমি চাই আপনারা হয়ে ওঠেন future saviour of mankind." এই তার হ'য়ে ওঠার নমুনা?

শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন,টান হ'লো ইষ্টে অসীম
পরাক্রমহীন কিন্তু,পশুর টানেও বিক্রম থাকে
তুই কেমনতর জন্তু।

তাই সবশেষে বলি, এই ডি, পি, ওয়ার্কের মত মহাযজ্ঞে এদের ব্যবহার, আচার আচরণ, কথাবার্তা দেখে মনে হয় এরা সব জুডাস, মীরজাফর, জগত শেঠের দল যারা ডি পি ওয়ার্কের নামে H. I. Work (a hypocrite ingenuityWork/কপট চাতুরী কাজ) ক'রে বেড়াচ্ছে, তারা শ্রীশ্রীঅবিনদাদার ডি পি ওয়ার্কের সৈনিক হ'তে পারে না।

যাই হ'ক, পরমপিতা সব দেখছেন, সবাইকে দেখছেন। তিনিই বিচারক, তিনিই এর বিচার করুন।

আজ এই পর্যন্ত। নমস্কার, জয়গুরু। প্রবি।

প্রবন্ধঃ D. P. Works নাকি H. I. Works (a hypocrite ingenuity Work) (১ম পর্ব)

জয়গুরু। আমার সৎসঙ্গী গুরুভাইবোন।

আজ আমি কলম ধরলাম কিছু কথা বলার জন্য। আপনারা আমার লেখা ও বিভিন্ন পোষ্ট ফেসবুকে যারা দেখেছেন এবং পড়েছেন ও নিয়মিত পড়েন তারা কেউ কেউ আমাকে ফেসবুকের মধ্যে দিয়ে চেনেন এবং ব্যক্তিগত ভাবেও চেনেন অনেকেই। আমি আজকে আপনাদের জন্য কলম ধরেছি এই কারণে যে আপনারা অনেকেই দেখেছেন সম্প্রতি আমার একটা পোষ্ট 'ফটো বিতর্ক' নামে প্রকাশ হয়েছে আমার প্রোফাইলে ফেসবুক পেজে। সেই পোষ্ট আপনারা যারা দেখেছেন, পড়েছেন এবং কমেন্ট করেছেন তারা সবাই জানেন যে সেই পেজে কিছু শ্রীশ্রীঅবিনদাদা অনুগামী সৎসঙ্গী যারা শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে মনে করেন তাদের গুরু, ইষ্ট তারা কিভাবে ঐ 'ফটো বিতর্ক' পোষ্টের কমেন্ট বক্সে শ্রীশ্রীঠাকুর আত্মজ ও শ্রীশ্রীঅবিনদাদার প্রপিতামহ শ্রীশ্রীবিবেকদাদা ও শ্রীশ্রীকাজলদাদাকে ও একজন সৎসঙ্গীকে এবং আমাকে অশ্লীল আক্রমণ করেছেন। এখনও তার প্রমাণ আমার পেজের ঐ পোষ্টে আছে। আমি প্রথমেই বলে রাখি আমি কারও নাম এখানে বলবো না, বলতে চাইও না। শ্রীশ্রীঅবিনদাদার অনুগামী বললাম এইজন্যে যে তারা নিজেদের শ্রীশ্রীঅবিনদাদার সৈনিক মনে করেন এবং প্রচারও করেন, কেউ কেউ মনে করেন শ্রীশ্রীঅবিনদাদা তাদের গুরু, কেউ কেউ বা মনে করেন শ্রীশ্রীঅবিনদাদা তাদের ইষ্ট। তা' সেটা তারা করতেই পারেন, সেখানে আমার কিছু বলার নেই। সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। এরা সবাই নিজেদের সৎসঙ্গী ইয়ং জেনারেশনের মুখ বলে মনে করেন ও জাহির করেন। এরা সবাই নিজেদের শ্রীশ্রীঅবিনদাদার D. P. Works কাজের যোদ্ধা, সৈনিক ব'লে নিজেদের সম্বোধন করেন পরস্পরের মধ্যে নিজের ঢাক নিজে পেটাবার মতো। কে কাকে কি মনে করলো, কিভাবে গ্রহণ করলো সেটা আমার বক্তব্য বিষয় নয়। সেটা যার যার বোধের ব্যাপার ও ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেখানে আমি হস্তক্ষেপ করি না। কিন্তু যখন দেখি বৃহৎ সৎসঙ্গী সমাজে এর একটা ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে, ভুল বার্তা যাচ্ছে তখন আমি সেখানে চেষ্টা করি যুক্তির ওপর দাঁড়িয়ে তথ্য ও তত্ত্ব সহযোগে ভুল ব্যাখ্যাটার ওপরে পোষ্টের মাধ্যমে সামগ্রিকভাবে নিজস্ব মতামত দেবার। এবং তা করি একজন সৎসঙ্গী হিসেবেই শ্রীশ্রীঠাকুর ও সৎসঙ্গের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এবং দায়বদ্ধতা ও কর্তব্যের খাতিরেই। এটা আমার অধিকারের মধ্যেই পড়ে। সেখানে সবসময় মতামত বিনিময় চলতেই পারে, পরস্পর মনোভাবের আদান প্রদান চলতেই পারে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি কিছু সৎসঙ্গী গুরুভাইবোন আমার প্রোফাইলে এসে কিছুক্ষণ মত বিনিময়ের পর মতের অমিল হলেই উগ্র বিরোধীতায় চলে যায় এবং ব্যক্তিগত আক্রমণের পর্যায়ে চলে আসে। এটা করে ইন্টেনশনালি। এতদিন দেখেছি এই ধরনের ব্যবহার এসেছে মূল কেন্দ্র বিরোধী এবং অদীক্ষিত শ্রীশ্রীঠাকুর বিরোধীদের কাছ থেকে। কিন্তু এখন দেখছি সৎসঙ্গের মূল ধারার সঙ্গে যুক্ত সৎসঙ্গীদের কাছ থেকেও এই একই ধরণের ব্যবহার পাওয়া যাচ্ছে। যে যা ইচ্ছা করে যাচ্ছে, বলে যাচ্ছে আমরা সবাই রাজা আমাদেরই রাজার রাজত্বে এই মানসিকতায়। সেখানে যদি আমার পোষ্ট করা কোনও বিষয়ে আলোচনা শুরু হয় তখন মতের অমিল হলেই অধৈর্য্য হ'য়ে পড়ে এবং তৎক্ষণাৎ ইংগিতপূর্ণ কখনো বা সরাসরি ব্যক্তিগত আক্রমণে চলে যায়, দল বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। একজন আরেক জনের পাশে ঢাল হ'য়ে দাঁড়িয়ে পড়ে কমেন্ট বক্সে মতামত দিয়ে সাহায্য করতে, কখনো বা সেই আক্রমণ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শুরু হ'য়ে যায়। তখন যুক্তি, তথ্য ও তত্ত্বের ধার ধারে না, পোষ্টের বিষয় ছাড়িয়ে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে চলে যায় আক্রমণ। এরকম বহুদিন ধরেই দেখা গেছে। আমি একা নই, এরকম অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা গেছে। এখানে এবারেও তাই হয়েছে। কিন্তু সেগুলির দিকে তাকাবার বা মনোযোগ দেবার বিশেষ তাগিদ অনুভব করিনি এতদিন। এড়িয়ে গেছি কিংবা সাধারণ কমেন্টের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছি। বেশীরভাগ সময় এড়িয়েই গেছি। কিন্তু মাথার ওপর দিয়ে যখন জল যেতে শুরু করে তখন জলের ওপর নাকটা তুলে রাখতেই হয় নিজেকে সেভ করার তাগিদেই।

ইদানীং প্রায়ই সময়ই ইয়ং জেনারেশনের মধ্যে একটা ঔদ্ধত্ব্য লক্ষ্য করা যায়। আর বিশেষ ক'রে সেটা শুরু হয়েছে শ্রীশ্রীঅবিনদাদার D. P. Works শুরু হওয়ার পর থেকেই। শ্রীশ্রীঠাকুর ও সৎসঙ্গ-এর যে কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনায় মত বিনিময় চলাকালীন হঠাৎ আলোচনার বিষয় থেকে ১৮০ডিগ্রি সরে গিয়ে চলে আসে D. P. Works সংক্রান্ত বিষয়ে। এবং তাও আমার প্রোফাইলে এসে আমার পোষ্ট করা বিষয়ের বিরোধীতায়। আর তারপরই শুরু হয়ে যায় তাদের চেইন ওয়াইজ ইংগিতপূর্ণ আক্রমণ। যখনই জোর ক'রে অযৌক্তিক তর্ক ক'রে আলোচনা চালিয়ে যাবার রসদ আর থাকে না, স্টক ফুরিয়ে যায় তখনি মূল বিষয়কে চাপা দেওয়ার জন্য, দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেবার জন্য, নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য যাতে ধরা না পড়ে তার জন্য চলে আসে অন্য প্রসঙ্গে, ব্যক্তিগত নোংরা আক্রমণে। এমনই হ'লো বর্তমান D. P. Works । এরা যখন D. P. Works-এর নামে শ্রীশ্রীঅবিনদাদার নাম ভাঙ্গিয়ে স্বৈরাচারীদের মত উচ্ছৃঙ্খল বিশৃঙ্খল আচরণ করে তখন মনে মনে ভাবি এটা কোন সৎসঙ্গ!? এরা কারা? কেমন সৎসঙ্গী? এদের মুখে যখন অশালীন অশ্রাব্য অশ্লীল খিস্তি খেউর শুনি, যৌন বলাৎকারের কথা শুনি তখন ভাবি এরা শ্রীশ্রীঅবিনদাদার D. P. Works-এর সৈনিক? এরা ফিরিয়ে আনবে হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলিকে? এরা ফিরিয়ে আনবে ঘরে বৃত্তি প্রবৃত্তিতে জর্জরিত সমস্যার কষাঘাতে ক্ষতবিক্ষত অশান্ত ক্লান্ত বিধ্বস্ত মানুষগুলিকে? তা এদের অস্ত্র কি? কি অস্ত্র দিয়ে ফিরিয়ে আনবে তাদের? গালাগালি, অশ্লীল যৌন খিস্তি, খোঁচা মারা কথা, অপমান, অশ্রদ্ধার ক্ষুরধার অস্ত্র দিয়ে? এদের অহংকারী ঊদ্ধত অমার্জিত স্বৈরাচারীদের মত মেজাজ দিয়ে? শ্রীশ্রী অবিনদাদা কি সৎসঙ্গ থেকে হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলিকে ফিরিয়ে আনার জন্য এদের হাতে এই অস্ত্রগুলি তুলে দিয়েছেন? নাকি এই আচরণের পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য আছে? এরাই জুডাসের ভুমিকায়, মীরজাফরের ভূমিকায় শ্রীশ্রীঅবিনদাদার সৈন্যদলের মধ্যে আত্মগোপন ক'রে নেই তো পিছন থেকে ছুরি মারবে বলে?

এদের আচরণ, এদের কথাবার্তা, এদের মুখের ভাষা, এদের ঠাকুর সম্পর্কে ধারণা স্পষ্টতই প্রমাণ করে দেয় এরা শ্রীশ্রীঠাকুরের 'সৎসঙ্গ' যে একটা আন্দোলন সেটাই জানে না। জানে না এই আন্দোলনের আদর্শ, আন্দোলনের মূলনীতি, এই আন্দোলন কিসের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য, এই আন্দোলনের নীতিবাক্য। কিছুই জানে না। কোনও কিছুই, একটাও এরা পালন করে না। শুধুই এদের ইষ্ট, এদের গুরু, এদের আদর্শ শ্রীশ্রীঅবিনদাদার কথা অনুযায়ী এরা কথার স্রোতে ভাসা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ডাস্টবিন 'মন' সেই ডাস্টবিন মনের অধিকারী সৎসঙ্গী এরা। আপনারা পাঠক বন্ধুরা, আপনারা প্রমাণ দেখে নিতে পারেন আমার প্রোফাইলের পোষ্টে গিয়ে। এদের কমেন্ট পড়ে নিজেরাই ঠিক ক'রে নিন আমি যা বলছি তা' আদৌ সত্যি কিনা ।

ফেসবুকে প্রমাণস্বরূপ এইধরণের মানসিকতা সম্পন্ন ডি, পি, ওয়ার্কস কর্মীদের আচরণের অনেকের অনেকগুলি উদাহরণ দিতে পারি। কিন্তু পুরোনো কাসুন্দি ঘাটার আমার ইচ্ছা নেই। শুধু সম্প্রতি আমার পেজে আমার 'ফটো বিতর্ক' নামে একটা পোষ্টে এদের আচরণ আপনারা দেখতে পাবেন যদি আপনারা প্রমাণ চান। বহুদিন ধ'রে যেদিন থেকে এই ডি, পিঁ, ওয়ার্কস শুরু হয়েছে সেদিন থেকে দেখে আসছি একশ্রেণীর 'গাঁয়ে মানে আপনি মোড়ল'-এর মানসিকতার মতো ইয়ং সৎসঙ্গী যারা নিজেদের শ্রীশ্রীঅবিনদাদার অনুগামী ব'লে প্রচার করেন তারা ফেসবুকে সৎসঙ্গীদের ওপর খবরদারী করে ডি, পি, ওয়ার্কস নিয়ে। ডি, পি, ওয়ার্কস করছে কিনা তা নিয়ে ধমক দিয়ে জানতে চায়, কোড নাম্বার, পিন কোড, ডিস্ট্রিক্ট জানতে চায় তদন্ত ক'রে দেখবে ব'লে। যখনি কোন পোষ্টের বিষয় বুঝুক না বুঝক গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল হ'য়ে বকনা বাছুরের মতো শ্রীশ্রীঅবিনদাদার কট্টর প্রেমী হ'য়ে লম্ফ দিয়ে ঝম্প মেরে ফেসবুক পেজে এসে হম্বিতম্বি শুরু ক'রে দেয় ডি, পি, ওয়ার্কসের বিষয় নিয়ে। সঙ্গে সঙ্গে চেইন ওয়াইজ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এদের ফেসবুকের দলবল এদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নানারকম কটু খোঁচা মারা মন্তব্য করতে থাকে, শুরু ক'রে দেয় কটু কথার আক্রমণ। বেচারি সৎসঙ্গী অসহায় হ'য়ে পড়ে, এদের ভয় পায় রাজনীতির দাদাদের মত। তখন অবাক হয়ে ভাবি এরা সৎসঙ্গী? এরা শ্রীশ্রীঅবিনদাদার ডি, পি ওয়ার্কস কাজের স্কোয়াড!?
ক্রমশঃ
পরবর্তী অংশঃ
D. P. Works নাকি H. I. Works (a hypocrite ingenuity Work) পর্ব ২-এ।

Monday, January 6, 2025

কবিতাঃ প্রশ্ন করলে বলি, নিপাত যাও!

হাতে কলম, কলমে কালি
মনের কোনে ওঠে জমে
বিদ্রোহের-ই মেঘ খালি
ঝরণা হয়ে আসে নেবে
ঘুম আসে না ভেবে ভেবে
বিপ্লব ঐ হাঁক দিয়ে যায়
চটজলদি তাই লিখে ফেলি--
'যুদ্ধটাকে চিতায় তোল
যুদ্ধটাকেই চিতায় দাও'
তোমার মেঘের মত আমারও মনে
জমে প্রশ্ন মনের কোণে,
পাল তোলে হাজার প্রশ্নের নাউ!
চিতার উপরে যুদ্ধটাকে
কে তুলবে আর কিভাবে তুলবে?
তাত্ত্বিক আমেজে ঢেকুর তুলে বলি,
প্রশ্ন করলে বলি, নিপাত যাও!

( লেখা ৭ই জানুয়ারী'২০১৫)