নোবেল শান্তি পুরস্কার!
কি হবে ও কি হয়েছে এই পুরস্কার প্রদানে?
কি হবে নারীর অধিকারের দাবীতে লড়াই করার জন্য জেল খাটা, অত্যাচারিতা, নির্যাতিতা ইরান নিবাসী মহিলা চিকিৎসক ৫৩বছর বয়সী নার্গীস মুহাম্মদীকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দিয়ে? আর কতদিন চলবে পুরস্কারের আড়ালে নিজেদের অপদার্থতা ঢাকার নির্লজ্জ খেলা? কতদিন চলবে অত্যাচারিতকে, ভুক্তভোগীকে রসকষহীন নিষ্প্রাণ মেডেল, শুখা প্রশংসা পত্র আর টাকা প্রদানের মাধ্যমে অত্যাচারীকে, অন্যায়কারীকে তোষণ পোষণের অমানবিক লুকোচুরির খেলা? জেলের ক্ষুদ্র কুঠুরিতে বন্দী নার্গীস মুহাম্মদীর ওপর শারীরিক মানসিক অমানুষিক অত্যাচারের অসহনীয় জ্বালা, যন্ত্রনা, কষ্ট, ব্যথা কমে যাবে এই শান্তি পুরস্কারে ? মলম বা ওষূধের কাজ করবে এই তথাকথিত নোবেল শান্তি পুরস্কার? শান্তি পুরস্কার পেলেই তাঁর ৩৫বছরের জেল খাটা ও বেঁচে থাকলে প্রকাশ্যে ১৫৬ ঘা চাবুক মারার শারিরিক-মানসিক অসহ্য যন্ত্রণা, অপমান ম্যাজিকের মতন শান্তিতে পরিণত হবে? তাঁর চিকিৎসার ওপর ও ইসলাম ধর্মের ওপর গবেষণালব্ধ জ্ঞান যে দেশের সম্পদ তা যে নষ্ট হ'লো নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলেই তা কি পূরণ হবে, অন্ধকারের আলো ভেদ ক'রে আলোয় উদ্ভাসিত হবে তাঁর জ্ঞান?
কথায় আছেঃ "Knowledge rules the world.-----Francis Bacon
Knowledge is Power, Power is Wisdom, Wisdom is understanding. ---A famous quote by Lilcent King.
Ignorance is the curse of God,. Knowledge is the wing where with we fly to heaven." W. Shakespeare.
এসব কথার কি কোনও মূল্য নেই নোবেল কমিটির কাছে? জ্ঞান বিজ্ঞানের সমস্তদিকের অগ্রগতি নিয়ে কাজ নোবেল কমিটির। এই যে জ্ঞান বিজ্ঞানের অগ্রগতিকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে ধর্মের মিথ্যে দোহাই দিয়ে সেই বিষয়ে কি নোবেল কমিটির নোবেল মানুষদের কোনও সদর্থক ভুমিকা থাকা উচিত নয়? বিশ্বের সমস্ত জ্ঞানী, পন্ডিত, বিজ্ঞ মানুষদের এই জ্ঞানের ওপর দাঁড়ানো উচিত নয়? এই জ্ঞানের অহিংস লড়াই সংগঠিত করা, দিকে দিকে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার কাজ তো জ্ঞানী, পন্ডিত, বিজ্ঞদের; এ কাজ তো আম জনতার নয়? তাহ'লে সবই কি ভালো ভালো কথার আড়ালে মিথ্যের বেসাতি? সবই কি ভালো ভালো কথার হাই? সবই কি মুখে মারিতং কথার স্রোতে ভাসা? সবই কি নাটক? সবই কি প্রহসন? বিশ্বজুড়ে সবারই কি মন এক আর মুখ আর এক? সবই কি শুধু বিশ্বজুড়ে মুখেতে আছে আর বইয়ের পাতার বড় বড় কথা? আচরণে বা বাস্তবে তা নেই? অলীক মায়াময় কথার মালা?
তাহ'লে সবই কি ইউটোপিয়া? এই ইউটোপিয়াকে সামনে রেখেই তিলে তিলে অসহনীয় যন্ত্রণায় কষ্টে ক্ষতবিক্ষত হ'য়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় পুরুষের হাতে মারা যাবে নারীর অধিকারের দাবীতে লড়াই করার জন্য আলোর দিশারী, নারী মুক্তির যোদ্ধা ইসলামের পুজারী রাসুল প্রেমী কোরানজ্ঞ এক মুসলিম নারী ইরান নিবাসী মহিলা চিকিৎসক ৫৩বছর বয়সী নার্গীস মুহাম্মদী!? আর নীরবে চেয়ে চেয়ে দেখবে সমগ্র বিশ্বের সমগ্র পুরুষসমাজ??
নার্গীস মুহাম্মদী-র আগেও তো অনেককে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে তা'তে কি হয়েছে? কার ঘুম ভেঙ্গেছে? কে বা কোন দেশের কোন সরকার, কোন প্রশাসন, কোন সংগঠন অজ্ঞানতা ও কুসংস্কারের অন্ধকারে ঘুমিয়ে থাকা কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙ্গাবার জন্য সংগঠিত হয়েছে বা সংগঠিত করেছে গোটা বিশ্বকে? শান্তি পুরস্কার পাওয়ার পর এরকম অন্ধকার যুগ ঘুচে শান্তি এসেছে? পুরস্কার পাওয়া কি কোনও আন্দোলনের লক্ষ্য? পুরস্কার পাওয়ার লক্ষ্যে কি কেউ ন্যায্য দাবী আদায়ের মরণপণ লড়াই করে? এই ধরণের বিভিন্ন পুরস্কার কমিটির বিচারে গৃহীত পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত কি গোড়া কেটে আগায় জল দেওয়ার মতন নয়, আইওয়াশ নয়, আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' ইত্যাদির মতো সস্তা মানসিকতা নয়?
নারী অধিকার রক্ষা ও দাবী আদায়ের জন্য অন্যায্য নির্ম্মম সাজা পাওয়া মহিলা চিকিৎসক নার্গীস মুহাম্মদী মুক্তির জন্য নোবেল কমিটি বলিষ্ঠ ভুমিকা পালন করুক, জনচেতনা জাগ্রত ক'রে আন্দোলন সংগঠিত করুক বিশ্বজুড়ে, ইসলামি দেশগুলোর প্রধান ও ইসলামি বুদ্ধিজীবীদের কাছে বার্তা পাঠাক তাদের মানবিক ভুমিকা পালন করার জন্য। বিশ্বজুড়ে নারী স্বাধীনতা, নারীর অধিকার রক্ষা ও দাবীর জন্য লড়াইয়ে বলিষ্ঠ ভুমিকা পালনকারী নারী সংগঠনগুলি বিশ্বজুড়ে সংঘবদ্ধ হ'য়ে একযোগে সোচ্চার হ'ক এই অমানুষিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে। সমস্ত বিশ্বের রাষ্টপ্রধান মানবিকতার পক্ষে, মানব সভ্যতার অগ্রগতির পক্ষে দাঁড়িয়ে তাঁদের মানবিক মানসিকতা ব্যক্ত করুক, আর্জি জানাক ইরানের প্রশাসকের কাছে। প্রয়োজনে সমস্ত মুসলিম কান্ট্রির প্রশাসক ও সচেতন মানবিক বিবেকবান ইসলামিক বুদ্ধিজীবীদের সম্মিলিত উপস্থিতিতে নবী মহাম্মদের কোরানের আয়াতে বিচার বিশ্লেষণ হ'ক নিম্নে উল্লিখিত অন্যায় নির্ম্মম সাজা প্রাপ্ত নার্গীস মুহাম্মদীর দাবীরঃ
"নারীদের হিজাব বোরখা বাধ্যতামূলক পরার আইন রদ। নারীর শিক্ষার অধিকার, পুরুষের সমান অধিকার দাবী। এছাড়া নিজের গর্ভের অধিকার। অর্থাৎ নারী নিজে না চাইলে গর্ভবতী হবেন না, তিনি জন্ম নিয়ন্ত্রনের পদ্ধতি ব্যবহার করবেন স্বেচ্ছায়। নারীর ও অধিকার থাকবে তালাক দেবার। নারী চিকিৎসক না পেলে পুরুষ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করার অধিকার।"
ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দনকে যেভাবে, যে প্রক্রিয়ায়, যে দূরদৃষ্টিতে, যে বুদ্ধিমত্তায়, যে পারদর্শিতায়, যে চতুরতায়, যে ঐকান্তিক ইচ্ছা ও প্রচেষ্টায় ও যে বৈদেশিক কূটনীতির তৎপরতায় পারস্পরিক প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ ও যোগাযোদের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়েছিল বিনা ক্ষয়ক্ষতিতে ঠিক তেমনভাবেই উদ্ধার করা হ'ক নারীর অধিকারের দাবীতে লড়াই করার জন্য জেল খাটা, অত্যাচারিতা, নির্যাতিতা ইরান নিবাসী মহিলা চিকিৎসক ৫৩বছর বয়সী নার্গীস মুহাম্মদীকে এবং তাঁর দাবীকে পূরণ করার মধ্যে দিয়ে মর্যাদা দেওয়া হ'ক সমগ্র মুসলিম নারীজাতিকে এবং পুরুষ নারীর পারস্পরিক সম্পর্ক মধুর হ'ক নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার পরিবর্তে।
বন্ধ হ'ক নোবেল পুরস্কারের গোড়া কেটে আগায় জল দেবার মিথ্যে সস্তার নাটক। (লেখা ১৭ই অক্টোবর'২০২৩)
No comments:
Post a Comment