'চাপ বাড়ছে কেষ্টর'
শিরোনামে tv9bangla টিভির প্রতিবেদন।
"গত ৯ বছরে লাফিয়ে বেড়েছে কেষ্টর পরিবারের আয়। ২০১৩ সালে কেষ্টর বার্ষিক আয় ছিল ৫ লক্ষ। আর ২০২২ সালে অনুব্রতর বার্ষিক আয় ১ কোটিরও বেশি। আয়করের নথিতে রোজগার বেড়ে ২০ গুণ, তাজ্জব সিবিআই কর্তারা।"
জেলের দেওয়ালে দেওয়ালে কান পাতলে শোনা যাবে কান্না ভেজা গলায় এদের স্বগোক্তিঃ 'তুমি মহারাজ সাধু হ'লে আজ আমি আজ চোর বটে।'
এছাড়া আরও প্রবাদ আছেঃ চুরি বিদ্যা মহাবিদ্যা যদি না পড়ে ধরা।
তাহ'লে এত কথা উঠছে কেন? ধরা পড়েছে বলে? ধরা পড়েছে তো কি হয়েছে? আবার ছাড়া পেয়ে যাবে সময় হ'লেই। এটুকু কষ্ট করায় যায়। একটু কষ্ট তো করতেই হবে দাদা। আর চুরি করেছে? বেশ করেছে। চোরের দেশে চুরি করা অন্যায় কোথায়? প্রথম থেকে আজ পর্যন্ত যার যখন ক্ষমতা ছিল বা আছে তখন সে চুরি করেছে ও করছে। আগামীতে তুমি অঞ্চল থেকে জেলা, জেলা থেকে রাজ্য, রাজ্য থেকে দেশ পর্যন্ত ক্ষমতাশীল পার্টির কিম্বা পঞ্চায়েত, মিউনিসিপ্যালিটি, বিধানসভা বা লোকসভা যে কোনও একটার ক্ষমতা দখল করো, তারপর কমিশনার, পঞ্চায়েত প্রধান, চেয়ারম্যান, এম এল এ, এম পি, মন্ত্রী হ'য়ে যাও। ব্যাস! পাঁচ বছরের জন্য নিশ্চিন্ত হ'য়ে সারা জীবনের ধন কামিয়ে নাও। মাত্র পাঁচটা বছর হ'লেই হ'লো। কাফি। পরের বারের জন্য আর লোভ ক'রো না। পরের পাঁচ বছরের জন্য অন্য আর একজন গরীব আসুক। অন্য আর একজন ক্ষমতাসীন পার্টির সভাপতি, জনপ্রতিনিধি, মন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পাক। গরীবি হঠাও স্লোগান রাতারাতি সফল হবে। খুব কম সময়ে দেশজুড়ে একসঙ্গে অনেক গরীবের বড়লোক হবার সবচেয়ে সহজ কর্ম, ব্যবসা আর কিছুই নেই। মাত্র পাঁচ বছরে কোটিপতি হবার সবচেয়ে সহজ অর্থনীতি। পাঁচ বছর অন্তর অন্তর সে যে দলই সরকারে ক্ষমতায় থাকুক সেই দলের নোতুনরা যদি সুযোগ পায় এলাকা এলাকায় পার্টি সংগঠনের দায়িত্বশীল গুরুত্বপূর্ণ পদে কিম্বা পঞ্চায়েত, মিউনিসিপ্যাল স্তর থেকে বিধানসভা, লোকসভা ও রাজ্যসভায় প্রতিনিধিত্ব করার, সরকারে মন্ত্রী হবার তাহ'লে হিসাব ক'রে দেখা যেতে পারে পাঁচ বছরে ভারতবর্ষে কতজন কোটিপতি হচ্ছে। দেশজুড়ে পঞ্চায়েতে কটা সিট, মিউনিসিপ্যালিটিতে কটা সিট, রাজ্যে বিধানসভা, লোকসভায় কটা সিট হিসাব করলেই বেরিয়ে যাবে পাঁচ বছরে কোটিপতির সংখ্যা। উন্নতি আর দুর্নীতি হাত ধরাধরি ক'রে পায়ে পা মিলিয়ে "কদম কদম বাড়ায়ে যা, খুশীতে গীত গায়ে যা" গাইতে গাইতে এগিয়ে যাবে হাত ধরাধরি ক'রে পাঁচটা বছর। ব্যাস। কেল্লা ফতে। সারা জীবনের জন্য নিশ্চিন্ত। কোটিপতি হবার এমন সুন্দর ফর্মুলা আর নেই। দেশের রাজনৈতিক দলগুলো, অর্থনীতিবিদেরা দেশের স্বার্থে ভেবে দেখতে পারে।
তবে একটা শর্ত থাকবে। পাঁচ বছরের বেশী যেন কেউ না থাকে। অন্যকে কোটিপতি হওয়ার সুযোগ ক'রে দিতে হবে। মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং থাকতে হবে দলের মধ্যে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার স্বার্থে।। নতুবা অহেতুক সবার পক্ষে অমঙ্গল।
তবে বাঁ হাতি রোজগারে লালিতপালিত জীবন শেষের সেদিনের জন্য কিন্তু ভয়ঙ্কর; এটা মাথায় রাখতে হবে। কোটিপতি হওয়ার জন্যে এটুকু শিরোধার্য কি বলেন রাজনীতিবিদরা?-----প্রবি।
(লেখা ৫ই নভেম্বর'২০২২)
No comments:
Post a Comment