Powered By Blogger

Thursday, November 9, 2023

চিঠিঃ বাগ্মীপ্রবর শ্রী প্রলয় মজুমদারকে খোলা চিঠি (২)

হে বাগ্মীপ্রবর, ইউ টিউবে আপনি আপনার 'আচার্য পরম্পরা প্রসঙ্গে বাগ্মীপ্রবর শ্রী প্রলয় মজুমদার' ভিডিওতে বক্তৃতায় অনায়াস দক্ষতায় কত উচ্চাসনে শ্রীশ্রীবড়দাকে বসিয়ে পরমুহূর্তে তাঁকে নীচে ফেলে দিলেন, কেন? আপনাকে বড়দা বলেছিল বাংলা অভিধান থেকে বাছা বাছা শব্দ প্রয়োগে তাঁকে উপরে তুলে ধরতে?
আপনি আপনার বক্তৃতায় E Forum-এ শ্রোতা গুরুভাইবোনেদের সঙ্গে সম্মিলিত হওয়ার সঙ্গে শরীর ও মনের সম্মিলিত অবস্থা ব্যাখ্যা করার সাথে সাথে মন হাইজ্যাক হ'য়ে যাবার কথাও বললেন। বললেন এককেন্দ্রিকতার মধ্যে বহুনৈষ্ঠিকে আচ্ছন্ন থাকার কথা। এককেন্দ্রিক না থাকার ফলে বহুতে নিষ্ঠা থাকার ফলে মন আমাদের হাইজ্যাক হ'য়ে যায়, সঠিকভাবে সম্যকভাবে কোনও কিছু দেখতে না পাওয়ার, এককেন্দ্রিক যোগ না হওয়ার কথা ও তাঁর সঙ্গে নিজেকে সম্মিলিত না করতে পারার কথা বললেন। ফলে ভিতর থেকে বিভাজন, বিকেন্দ্রিকতা ও বিচ্ছিন্নতার মনোভাব দেখা দেয়। ফলে অচ্ছেদ্য বর্ণ মহান পুরুষকে পূজা, তপস্যা, প্রার্থনা, সাধনা, আরাধনা করা সত্ত্বেও কিন্ত সত্যকে দেখতে না পাওয়ার কথা বললেন। আর এই দেখতে না পাওয়ার জন্য আমার সত্তা থেকে বিচ্ছুরিত শক্তি অন্যের সত্তাকে স্পর্শ করতে পারে না, তাও বললেন। এখানেও সেই স্পর্শ করতে না পারার কারণ হিসেবে মন হাইজ্যাক হ'য়ে যাওয়ার কথা বললেন। দোষ দেখা, নিন্দা সমালোচনা করা ইত্যাদি ইত্যাদির কারণেও নানা কথার মাঝেও সেই মূল থেকে মন হাইজ্যাক হ'য়ে যাওয়ার কথা বলেছেন।
এই যে এতবার বারবার মন হাইজ্যাক হওয়ার কথা ব'লে শ্রোতাদের সাবধান করছেন তা আপনাকে জিজ্ঞাস্য কে মন হাইজ্যাক করছে বা ক'রে নেবে? প্রকারান্তরে আপনি এই কথা ব'লে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কথার জাগলিং-এ আচার্য প্রথা ও আচার্য পরম্পরার দিকে আঙ্গুল তুলছেন না কি? তা সরাসরি বলুন না আচার্যদেব শ্রীশ্রীবড়দা শ্রীশ্রীঠাকুর থেকে তাঁর দিকে মন হাইজ্যাক ক'রে নিচ্ছেন। এত ভনিতার কি প্রয়োজন আছে? এত ঘোমটার তলায় খেমটা নাচের কি প্রয়োজন? আপনি তো মিষ্টভাষী এতে কোনও সন্দেহ নেই। তবে স্পষ্টভাষী হ'তে অসুবিধা কোথায়? ঠাকুর কিই বলেননি সত্যানুসরণে "স্পষ্টভাষী হও কিন্তু মিষ্টভাষি হও"? তাহ'লে ঠাকুরের বাণীর ওপরে দাঁড়াতে ভয় বা শঙ্কা কিসের? কিসের লুকোচুরি খেলা?
মাঝে মাঝে শ্রীশ্রীবড়দাকে এ সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুর কি বলেছেন তাও বললেন। আপনি বললেন শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছেন, বড়খোকার সময় জ্ঞান সুন্দর! সূর্যোদয়ের আগে উঠে পড়ে তারপর তাঁর জপতপ পূজাপাঠ সব সেরে ফেলে। আপনি আরও বললেন, শ্রীশ্রীঠাকুর যে ব্যক্তি বিনির্মাণের প্রশিক্ষণের অর্থাৎ ব্যাক্তিকে বিশেষভাবে গড়ে তোলার প্রশিক্ষণের কথা বলেছেন তা আপনি বড়দার চরিত্রে দেখেছেন।
তা' আপনার কি মনে যে মানুষের চরিত্রে আপনি শ্রীশ্রীঠাকুরের বিনির্মাণের গুণাবলী প্রত্যক্ষ করেছেন সেই মানুষের সংস্পর্শে এলে সৎসঙ্গীদের মধ্যে বিভাজন, বিকেন্দ্রিকতা ও বিচ্ছিন্নতার মনোভাব দেখা
দেবে? ঠাকুরের পরম আদরের ভালোবাসার প্রথম সন্তান আদরের স্নেহের বড় খোকা সৎসঙ্গীদের বড়ভাই চোখের মণি শ্রীশ্রীবড়দা আচার্য রূপে ঠাকুর থেকে নিজের দিকে মন হাইজ্যাক ক'রে নেবে? কথার স্রোতে ভেসে শব্দের কারসাজিতে শ্রীশ্রীবড়দাকে অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিলেন?
পরবর্তী চিঠিতে আপনার শ্রীশ্রীবড়দার প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন স্বরূপ শব্দ দিয়ে গাঁথা মালা তুলে ধরবো।
ইতি,
প্রকাশ বিশ্বাস (প্রবি)
উত্তরপাড়া, হুগলী।
ক্রমশ।
#প্রবিরচিঠি
(লেখা ৬ই জুলাই'২০২৩)

No comments:

Post a Comment