আপনার মূল্যবান প্রশ্ন অনেকের মনের খোরাক জোটালো। আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার প্রশ্নের উত্তরটা এখানে তুলে দিলাম অনেকের সুবিধার জন্য।
ঠাকুরের 'অজ্ঞাত কুলশীল........." বলা এই কথাটা সদাচার সংক্রান্ত বাণী। ঠাকুরের ব'লে যাওয়া যে পাঁচটা পিলারের উপর জীবনকে দাঁড় করাতে বলেছেন তার একটা হ'লো সদাচার। তাই সদাচার পালনের ক্ষেত্রে ঠাকুর ছিলেন অত্যন্ত কঠোর। ঠাকুর সদাচার সম্পর্কে বললেন,
"সদাচারে বাঁচে-বাড়ে/ লক্ষী বাঁধা তা'র ঘরে, সদাচারে রত নয় / পদে-পদে তা'র ভয়।
আবার বললেন, সদাচার বলে কা'রে তা' কিরে তুই বুঝিস? যে-আচারে বাঁচে-বাড়ে সদাচার তা' জানিস।"
আর ঠাকুর, যে সদাচারী নয় অসদাচারী তার সম্পর্কে কি বলছেন? তিনি বললেন,
"সদাচারী নয়কো যে-জন ইষ্ট-বিহীন রয় / পান ও ভোজন তাহার হাতে বিষ-বহনী হয়।" আবার বললেন, "বিপ্রও যদি কদাচারী/ শীল ও শ্রদ্ধা-হারা, তা'রও দত্ত ভোজ্য অন্ন বয় বিষেরই ধারা।"
আর সদাচারী সম্পর্কে কি বলছেন ঠাকুর? "ইষ্টনিষ্ঠ সদাচারী / নীচ জাতিও হ'লে, অন্নপানীয়ে কমই দোষ জাত যায় না ছুঁলে।"
তাহ'লে দেখুন ঠাকুর বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার জন্য সদাচারকে কতটা গুরুত্ব দিয়েছেন। আমরা যাতে অনাচার না করি এবং যে কাজই করি না কেন সদাচারের দিকে লক্ষ্য রেখে যাতে করি ও চলি সে সম্পর্কে ঠাকুর নানাভাবে হাজার হাজার কথার মধ্যে দিয়ে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন।
তিনি ছড়ার আকারে বললেন, " সদাচারে লক্ষ্য রেখে যে-কাজ করিস চলিস দেখে, অনাচারে বাড়বে ভয় আনবে কতই বিপর্যয়।"
তাই এই ঘোর ভয়ংকর বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ঠাকুর আমাদের "অজ্ঞাত কুলশীল মানুষের হাতে খেতে বারণ করেছেন"। 'অজ্ঞাত কুলশীল' মানে যে মানুষকে আমি চিনি না, জানি না, কোনোদিন তাকে দেখিনি, কোথায় থাকে, কি তার বংশপরিচয়, তার স্বভাব কেমন, ব্যবহার কেমন, চরিত্রই বা কেমন, তার রুচি, তার জীবনযাপন সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ওয়াকিবহাল ন'ই তেমনতর মানুষের হাতে না খাওয়ার কথাই ঠাকুর বলেছেন মানে আমাদের রোগ, শোক ইত্যাদির আক্রমণ থেকে আগাম সাবধান ক'রে দিয়েছেন। আর এই সাবধানতা সম্পুর্ণ আমার অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে।
জয়গুরু।
( লেখা ৯ই নভেম্বর'২০১৭)
No comments:
Post a Comment