Powered By Blogger

Wednesday, November 2, 2022

শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী পোষ্ট।

একজন সৎসঙ্গীর একটা কমেন্ট চোখে পড়লো। ভালো ক'রে পড়ে দেখলাম কমেন্টে সে অনুরোধ করেছে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সব বাণী সব জায়গায় যেখানে সেখানে পোষ্ট না করতে। পোষ্টের বিষয়বস্তু স্বামীস্ত্রীর যৌন জীবন সম্পর্কিত। এরকম দুটো বাণী চোখে পড়লো। কমেন্টটা আবার ভালো ক'রে পড়লাম। আমার মনে হ'লো সৎসঙ্গী গুরুভাইয়ের পরামর্শটা ভেবে দেখা যেতে পারে।

যেহেতু আমরা সবাই ঠাকুরের ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপ দিতে সচেষ্ট হয়েছি তখন স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যেকে প্রত্যেকের পরামর্শগুলিকে ভেবে দেখতে পারি; ভেবে দেখতে তো আপত্তি নেই। ঠাকুরের হাজার হাজার বাণী আছে, অজস্র কথা আছে প্রত্যেকটি বাণী, প্রত্যেকটি কথা স্থান, কাল, পাত্র অনুযায়ী বলা হয়েছে। ঠিক তেমনি প্রত্যেকটি বাণীর পরিবেশনেরও স্থান, কাল ও পাত্র রয়েছে। ঠাকুরের বাণী পরিবেষণের সময় মনে রাখতে হবে বাণী পরিবেষণ উপযুক্ত স্থানে, উপযুক্ত সময়ে ও উপযুক্ত ব্যাক্তির সামনে পরিবেষণ হচ্ছে কিনা। এই বাণীই (স্বামীস্ত্রীর যৌন জীবন সম্পর্কিত) অবশ্যই পোষ্ট করা যেতে পারে যখন Science of progeny নিয়ে আলোচনা হবে কিম্বা জন্ম বিজ্ঞান নিয়ে কোনও আর্টিকেল লেখা হবে তখন। নিখুঁত জৈবি সংস্থিতি সম্পন্ন জীবন আবির্ভাবের উপায় স্বরূপ আলোচনার ক্ষেত্রে পথের সন্ধান দিতে এই বাণী তুলে আনা যেতে পারে। হঠাৎ ক'রে কোনও বাণী পোষ্ট হ'লে সব মানুষ সমান ভাবে সব কিছুর গভীর অর্থ বুঝে নিতে পারে না। তার উপর কোনও বিষয়ের গভীর অন্তর্নিহিত অর্থ না বুঝে সব কিছুকে বাঁকা দৃষ্টিতে দেখার স্বভাবওয়ালা ও বিরুদ্ধ মনোভাবাপন্ন মানুষের সংখ্যায় বেশী। এদের কথা যেন আমরা ভুলে না যায়, মনে রাখি। এই সমস্ত আলটপকা হালকা মুখরোচক কথা বলতে অভ্যস্ত নড়বড়ে বোধহীন মানুষেরা অহেতুক সুযোগ পেয়ে যায় ঠাকুরকে নিয়ে নোংরা আলোচনা ও মজা করার।

যাই হ'ক, ঠাকুরের সব কিছুই এত অ্যাডভানস্ যে তা আজকের লেখাপড়া জানাওয়ালা মানুষের পক্ষে তা’ বোঝা, গ্রহণ করা খুব কঠিন। ঠাকুরের সমাজ, রাষ্ট্র, ব্যাষ্টি, সমষ্টি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, দর্শন, বিবাহ ইত্যাদি ইত্যাদি অসংখ্য বিষয় নিয়ে বলে যাওয়া হাজার হাজার বাণী, কথা ঠাকুরের সময়ের বিখ্যাত বিখ্যাত ব্যাক্তিরা বুঝতে পারেননি, মেনে নিতে পারেননি। আর ফেস বুকের পাঠকের সামনে সেইসব জটিল বিষয় হঠাৎ হঠাৎ তুলে ধরা আর মরুভূমির বুকে জলের সন্ধান করা একই , অর্থহীন। মাছ ও মাছের জাত সম্পর্কে যার বা যাদের কোনও ধারণা নেই তাদের যদি মাছের ল্যাজা আর মুড়ো বাদ দিয়ে মাঝখানের পেটি বা গাদার অংশ দেখিয়ে বলা হয় এটা কি মাছ তাহ’লে তাদের যে অবস্থা হবে ঠিক তেমনি হঠাৎ জন্মবিজ্ঞানের উপর বা Science of progeny উপর বা সৃজন প্রগতির উপর বা প্রচলিত ক্রোমোজোমের উপর বা ম্যাটার ও স্পিরিট একই এই বিষয়ের উপর একটা বাণী সাধারণ মানুষের কাছে বিশেষত অজ্ঞ, আমার মত লেখাপড়া জানাওয়ালা অল্পজ্ঞানী, কিম্বা নেগেটিভ মানসিকতার অধিকারী, বিকৃত মনোভাবাপন্ন মানুষের কাছে হাসির ও সুড়সুড়ির খোরাক হ’য়ে দাঁড়ায়। তাই আমাদের সৎসঙ্গীদের খেয়াল রাখতে হবে ঠাকুর তথাকথিত কোনও ধর্ম্মগুরু বা তত্ত্ব কথার ধ্বজাধারী কোনও পোঙ্গা পন্ডিত নন যে আমরা সবাই তার জীব জগৎ, জীবন যৌবন, জ্ঞান বিজ্ঞান, ব্যাষ্টি সমষ্টি, সমাজ সভ্যতা, স্বাস্থ্য চিকিৎসা, অর্থনীতি রাজনীতি ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি বিভিন্ন কঠিন ও জটিল বিষয় সম্বন্ধে ব’লে যাওয়া হাজার হাজার গদ্যবাণী, ছড়া, ইংরেজি বাণী ও কথোপকথন নিয়ে যখন তখন রাস্তা ঘাটে, মাঠে ময়দানে, ট্রেনে বাসে, পিকনিকে বিয়ে বাড়িতে, মোড়ে মোড়ে, চায়ের দোকানে, রকে ইত্যাদি যেখানে সেখানে স্থান কাল পাত্র বিবেচনা না ক’রেই, বিষয়বস্তুর অন্তর্নিহিত অর্থ না বুঝেই আউরে যেন না যায়; ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের ধৃষ্টতা না দেখায়। মনে রাখতে হবে, আমরা যেন ভুলে না যায়, আমরা যেন একথা জেনে রাখি ঠাকুর হ’লেন The greatest phenomenon of the world. আর আমরা হলাম The greatest danger of the world. তাই আমরা ঠাকুরের বলে যাওয়া সোনার সৎসঙ্গীরা যেন তাঁর অর্থাৎ The greatest phenomenon of the world SriSriThakur Anukul Chandra-এর মান রাখতে পারি আর না পারি তাকে যেন অকারণ অযথা যেখানে সেখানে হাসির খোরাক বা পান পাত্র ক’রে না তুলি।

( লেখা ৩রা নভেম্বর'২০১৭)

No comments:

Post a Comment