Powered By Blogger

Wednesday, November 23, 2022

আহবানঃ আগাম সাবধান আমার প্রিয় মানুষেরা।

ঐন্দ্রিলার মতো অকালে ঝ'রে পড়ো না।

অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার মৃত্যু তার নিকটজন, পরিচিত মানুষ, যারা তাকে কম বেশী চেনে, খবর রাখে, টিভির সিরিয়ালের পর্দায় তাকে দেখে দেখে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে তারা প্রায় প্রত্যেকেই কমবেশী শোকাহত।

আমি তাকে চিনিনা, দেখিনি কোনওদিন সাক্ষাতে বা টিভি সিরিয়ালের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু ইদানিং ফেসবুকের দৌলতে অল্পবিস্তর তার সম্পর্কে জেনেছি। টিভি সিরিয়াল দেখি না, খবর শুনি না। কারণ সিরিয়াল দেখে পরিবার, সংসার, সমাজ, সভ্যতা ভাঙ্গার নীল নকশা শেখার ইচ্ছা আমার নেই আর টিভির পক্ষপাতপূর্ণ, অতিরঞ্জিত, মিথ্যে, ধ্বংসাত্মক খবরাখবর শুনে বাকী জীবনে আর নিদ্রাহীনতায়, সুগার, ব্লাডপ্রেসার আর নার্ভ ডিসঅর্ডার ইত্যাদিতে ভুগতে চাই না।
তবুও তুমি কি বাঁচবে? বাঁচবে না। কারণ, তোমার চারপাশের পরিবেশ তোমাকে বাঁচতে দেবে না।

তাহ'লে কি ক'রে বাঁচবে? কিভাবে তোমার প্রিয়জনকে বাঁচাবে?
ঐন্দ্রিলা দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগেছে দীর্ঘদিন। লড়াই করেছে ব্যাধির সঙ্গে। কখনও জিতেছে, কখনও হেরেছে। আর তা ছিল সাময়িক। অবশেষে সব বন্ধন ছিন্ন ক'রে এ পারের সব ছেড়ে চলে চলে গেল ওপারে অকালে। পিছনে রেখে গেল প্রিয় অপ্রিয় সব জনকে। প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেল প্রিয়জনের মনে ঈশ্বরের অবিচারের আর জন্ম দিয়ে গেল ঈশ্বরের প্রতি অবিশ্বাসের!

প্রশ্ন জাগে মনে। এটা কি যাওয়ার বয়স? ঈশ্বরের এ কি রকম অবিচার? ঈশ্বরের প্রতি কি আর বিশ্বাস রাখা যায়?

এমন ঘটনা যখনই কারো পরিবারে, সংসারে, সমাজে কারো জীবনে ঘটে তখন স্বাভাবিকভাবেই এই প্রশ্নগুলি ওঠে। তখন সাধারণ ভাঙ্গাচোরা মানুষের মনে এই প্রশ্নগুলি বড় হ'য়ে দেখা দেয়। তখন বিচার বিবেচনার দরজা রুদ্ধ হ'য়ে যায়। একটা মারাত্মক ব্যক্তিগত ক্ষতি মানুষকে বোধবুদ্ধি রহিত বিবেকহীন মানুষে পরিণত করে। আর স্বাভাবিকভাবেই সেটা হয়েছে ঐন্দ্রিলার শুভানুধ্যায়ীদের ক্ষেত্রে। তারা প্রায় সবাই ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর দায় ঈশ্বরের ওপরে চাপিয়ে দিয়েছে। এটা ঐন্দ্রিলার প্রতি ঈশ্বরের অন্যায় অবিচার।

যাই হ'ক। আমার প্রিয়জন,
তোমরা জেনে রাখো এই একটা জায়গা আছে যেখানে জীবনের প্রতি ক্ষেত্রের খারাপ ফলাফলের সমস্ত দায় দায়িত্ব ঈশ্বরের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায়। ঈশ্বরকে না মেনে, ঈশ্বরের অস্তিত্বে অবিশ্বাস রেখে, ঈশ্বরকে গাল দিয়ে, ঈশ্বর সম্পর্কে কটু কথা ব'লে, ঐশ্বরিক কাজের বিরোধীতা ক'রে দুর্দশাগ্রস্ত জীবনের চরম দুর্বল মুহূর্তে ঈশ্বরের সাহায্য, দয়া চেয়ে বঞ্চিত হ'য়ে ঈশ্বরকে দ্বিগুণ উৎসাহে একেবারে উলঙ্গ হ'য়ে গালি দেওয়া যায়। আবার যুগ যুগ ধ'রে ঈশ্বর পূজার নামে বৃত্তি-প্রবৃত্তির ঘেরাটোপে বন্দী হ'য়ে রিপু তাড়িত জীবন যখন ঈশ্বরের দয়া লাভে বঞ্চিত হয় তখন ঈশ্বর হ'য়ে যায় আমার শত্রু। যখন ঈশ্বরের চলন পূজার পরিবর্তে তাঁর চরণপূজায় মগ্ন হ'য়ে ধূপধুনো, ফুল চন্দনের আবেশে ডুবে গিয়ে মত্ত হ'য়ে থাকি আর পরিবর্তে যখন শয়তানের বিষাক্ত ছোবলে ক্ষতবিক্ষত হ'ই, না ফেরার দেশের অতিথি হ'য়ে যাই তখন ঈশ্বর আমার হ'য়ে ওঠে সাক্ষাৎ শয়তান, যম।

হে আমার প্রিয়, যারা একদিন ঈশ্বরকে, ঈশ্বরের অস্তিত্বকে স্বীকার করতো না, সাম্যবাদের হাওয়ায় পাখনা মেলে উড়তে উড়তে প্রবল ঝাপটা মারতো ঈশ্বরের চোখেমুখে, যারা ঈশ্বরকে কন্ডোম পড়াতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা বা লজ্জাবোধ করতো না তারা যখন বিরাট কিছু পাওয়ার লোভে ঈশ্বরের আরাধনা করে আর পেয়েও যায় কোনও জ্ঞাত অজ্ঞাত কারণবশতঃ তখন তারা আবার ঈশ্বরের পা চাটা পূজারী ব'নে যায়। আর ভাবে ঈশ্বরের পা চাটলেই যখন যা ইচ্ছা হবে তাই আলাদিনের প্রদীপের দৈত্যের মতো পেয়ে যাবো। আর না পেলে? না পেলে? ছুঁড়ে ফেলে দেব আস্তাকুড়ে।
তাই আমার প্রিয়জনেরা।

তোমরা সাবধান হও। এটা কলি যুগ। ঘোর কলি। এ যুগে তিন ভাগ অধর্ম আর এক ভাগ ধর্ম। সময় তোমাদের অধর্মের পথে টেনে নিয়ে যাবেই যাবে। তোমরা আটকাতে পারবে না। অধর্মের ঝড় প্রবল ভয়ঙ্কর। অধর্মের পাল্লা ভারী। বাঁচতে পারবে না। তোমায় তোমার চারপাশ বাঁচতে দেবে না।

তাই বাঁচতে যদি চাও তাহ'লে তুমি বুড়ি ছুঁয়ে রাখো অর্থাৎ জীবন্ত ঈশ্বর পরমপিতা যুগ পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের চরণে আশ্রয় নাও। তাঁর বিধান মেনে চলো। তোমার কোনও ভয় নেই। তোমার অদৃষ্টে অশুভ যা থাকে থাকুক। তুমি যা কিছু খারাপ নিয়েই জন্ম গ্রহণ করো না কেন। তোমার পিতামাতার কুকর্মের ফল তোমার ওপর যাই নেবে আসুক না কেন। তোমার কুষ্টিতে দুর্ঘটনা বা মৃত্যুযোগ যাই-ই লেখা থাক না কেন। তুমি যতই স্বল্প আয়ু নিয়ে আসো না কেন। এসো, পরমপিতার চরণতলে এসো। যুগোপযোগী ক'রে আসা ঈশ্বর পরমপিতার নূতন জীবন্ত রূপকে জীবনে গ্রহণ করো। তাঁর দেওয়া বীজনাম অনবরত জপ ক'রে যাও। তুমি কিছু করো আর না করো তাঁর দেওয়া ইষ্টভৃতি অর্থাৎ নিজে কিছু অন্নজল গ্রহণ করার পূর্বেই অতি প্রত্যুষে তাঁকে যা পারো কিছু খেতে দাও। দু'বেলা না পারলে একবেলা, একবেলা না পারলে অন্তত সপ্তাহে একদিন শুক্রবার তাঁর প্রার্থনা করো। তাঁর দেওয়া বীজনাম শয়নে স্বপনে জাগরণে নাম জপ করো। নাম জপ করার চেষ্টা করো। অভ্যাস করো। ভুলে যাবে ঠিক আছে; মনে পড়লেই করো। মনে পড়া সত্ত্বেও অবহেলা ক'রো না। দয়াল ঠাকুরকে ভালোবাসো, প্রত্যাশাহীন ভালোবাসো। বিশ্বাস করো তাঁকে। বিশ্বাস রাখো তাঁর প্রতি। তাঁর প্রতি নির্ভর করো। দেখবে ধীরে ধীরে তোমার জীবনের সব বিপদের মেঘ কেটে যাবে, সমস্যার জট খুলে যাবে, সমস্ত অন্ধকার দূর হ'য়ে যাবে তোমার জীবনের। পিতামাতা, স্বামীস্ত্রী, ভাইবোন, পুত্রকন্যা নিয়ে ঝমঝম ভরা সংসারে সবাইকে নিয়ে সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে। গ্যরান্টি। ১০০ তে ২০০ ভাগ শান্তি, সুখের গ্যারান্টি। এমন সুখ শান্তি কোথাও পাবে না।

আর, হে আমার প্রিয়!
তুমি বুকে হিংসা রেখো না। মানুষকে অপমান, অশ্রদ্ধা ক'রো না। কাউকে কটু কথার আঘাত দিও না। সব সহ্য করো। অন্যের দোষত্রুটি ধ'রো না। কারও নিন্দা, কুৎসা ক'রো না। গুরুজনকে, শ্রেষ্ঠকে, বড়কে অমান্য, অসম্মান ক'রো না। তোমার গুরুজনের প্রতি সমীহ ক'রে কথা ব'লো। পদে পদে কাউকে অপদস্থ, লাঞ্ছনা ও গঞ্জনা ক'রো না। শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির, শ্রেষ্ঠজনের বিরুদ্ধে মিথ্যে প্রচার, গালাগালি, ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়িয়ো না। ষড় রিপুকে কন্ট্রোল করো, লাগামছাড়া ব্যবহার ক'রো না। তোমার প্রতি করা অন্যায়কে সহ্য করো। বৃত্তি-প্রবৃত্তির দাসত্ব ক'রো না আর ইত্যাদি নারকীয় গুণের অধিকারী হ'য়ো না।

তাহ'লে তুমি ভালো থাকবে, সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে, আনন্দে থাকবে। দীর্ঘায়ূ ও সুস্থ জীবনের অধিকারী হবে। ঐন্দ্রিলার মতো অকাল মৃত্যু হবে না। রোগ, শোক, গ্রহদোষ, বুদ্ধি বিপর্যয়, দারিদ্রতা ব'লে কিছু থাকবে না। যদিও বা কিছু বিপদ বা সমস্যা আসে তাহ'লে তা তাঁর দয়ায় সামান্যের উপর দিয়ে চলে যাবে। এক মণ এক সের ওজনের হ'য়ে যাবে। তাঁকে যদি প্রাণপণে জড়িয়ে ধ'রে থাকো সবসময় উঠতে, বসতে, চলতে, ফিরতে তাহ'লে কুষ্ঠিতে লেখা যাবতীয় অশুভ তাঁর দয়ায় মুছে যাবে। দয়াল ঠাকুর নিজের মুখে বলেছেন, "ইচ্ছে করলে আমি কুষ্ঠি ওলোট পালোট ক'রে দিতে পারি।" তাঁকে ধ'রে থাকলে, তাঁর কাজ করলে আয়ু বৃদ্ধি পায়।
তাই বলি, হে আমার প্রিয়! The greatest phenomenon of the world SriSri Thakur Anukulchandra-কে জীবনে গ্রহণ করো, তাঁর দেওয়া বিধান পালন করো, পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাঁচো ও বাঁচাও। আর চুটিয়ে সারাজীবন আনন্দ উপভোগ করো।

ঐন্দ্রিলার মতো তা যতই মৃত্যু যোগ থাকুক না কেন অকালে অসময়ে অতৃপ্তি নিয়ে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যেতে হবে না।

কারণ দয়াল আমার পরমপিতা যুগপুরুষোত্তম জীবন্ত ঈশ্বর সৃষ্টিকর্তা নিজেই অকাল মৃত্যু অনুমোদন করেননি। -------প্রবি।
( রচনা ২২শে নভেম্বর'২০২২)

No comments:

Post a Comment