Powered By Blogger

Wednesday, November 23, 2022

আচার্য প্রথাঃ সৎসঙ্গে বর্তমানের অতীশ দীপংকর।

আচার্য' সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুরের অনেক রকমভাবে অনেক বলা আছে।

ইদানীং ফেসবুকে ও ইউটিউবে 'আচার্য' নিয়ে কথার ঝড় তুলে চলেছে কিছু অতি ইষ্টপ্রাণ মানুষ। কথায় আছে অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ। সেই লক্ষণই আজ প্রকট ইদানিং ফেসবুকে ও ইউটিউবে।

যাই হ'ক যারা এই নিয়ে কনস্ট্যান্ট জল ঘোলা ক'রে চলেছে নানারকম কথার মারপ্যাঁচে ঠাকুরের কতিপয় বাণীকে হাতিয়ার ক'রে ফেসবুক, ইউটিউবকে প্ল্যাটফর্ম বানিয়ে তারা সারাজীবন কেন কয়েকশো বার জন্মালেও তাঁর এবারের হাজার হাজার বলাগুলি পড়ে শেষ করতে পারবেন না। আর যদি কয়েকশো বার জন্মাবার ফলে পড়ে উঠতে পারলেও বুঝে উঠতে পারবেন না। কারণ এরা সব আত্মপ্রতিষ্ঠায় মগ্ন। বুক ভর্তি হিংসা ও অশ্রদ্ধা নিয়ে কথার স্রোতে ভাসা কর্মহীন প্রচার পাগল জীবকোটি মানুষ এরা। এর জন্য দরকার জন্মগত সংস্কার। জীবন ব'লে দেয় কার সংস্কার কেমন। মানুষের চোখমুখ, কথাবার্তা, চালচলন, আচার আচরণ ইত্যাদি ব'লে দেয় কে কি সংস্কার নিয়ে জন্মেছে। আর ইশ্বরকোটি পুরুষ ছাড়া তাঁর বলাগুলি পড়ে শেষ করা এবং সেই বলাগুলি অনুধাবন করা সম্ভব নয়। যারা আচার্য ও আচার্য পরম্পরার বিরুদ্ধে ফেসবুকে ও ইউটিউবে সবজান্তা হ'য়ে ব'সে হরিদাস পালের মত আমিত্ব ফলাতে ব্যস্ত ও আমিত্ববোধে বেহুঁশ হ'য়ে আচার্য নিন্দা ও কুৎসা ক'রে চলেছে এবং ভিত্তিহীন কথার ফানুশ উড়িয়ে চলেছে সৎসঙ্গীদের বিভ্রান্ত করতে কর্মহীন কথার অম্ল ঢেঁকুর তুলে তাদের এখনও ঠাকুরের দর্শন, ঠাকুরের হাজার হাজার বাণী, লক্ষ লক্ষ করা কথা ও করার কথা বোঝার ও মানুষকে বোঝাবার মত জ্ঞান, বয়স এখনও হয়নি এবং সেই জীবন তারা এখনও লাভ করেনি। বটগাছের হাজার ঝুরি নামা প্রাচীন বটবৃক্ষের মতো বয়স হ'তে হবে তাদের এবারে ভয়ংকর রূপে আসা জীবন্ত ঈশ্বরের কথা বুঝতে একথা বিস্মৃত না হয় যেন তারা। তাদের এসব বালখিল্য প্রয়াস মাত্র। এখনও নাক টিপলে সদ্য মায়ের ঝিনুক দিয়ে খাওয়ানো দুধ বেরোবে আর কাল কা যোগী ভাতকে বলে অন্ন এমন সব বাচ্চা ছেলে যেখানে হাতি ঘোড়া তল পায় না সেখানে ঠাকুরের বিশাল সাহিত্যের মহাসমুদ্রে সাঁতার কাটতে এসে এরা মশার মতো বলে, কোথায় জল!? কি এমন জল!? ক্যামেরার সামনে এদের বসার ভঙ্গি, বলার ধরণ, চোখমুখের অভিব্যক্তি, হাত পা নাড়াবার কৌশল দেখলে বোঝা যায় এরা সব গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের দল স্বয়ং এক একজন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের প্রতিবিম্ব! এদের কথা শুনে মনে হয়, এরা সব জানে, এদের কথায় শেষ কথা, এদের কথা শুনলেই হবে কাউকে ঠাকুরের বই আর পড়তে হবে না, এরা সব ঠাকুরের মুখ!

এরা নিজেদের প্রচারের জন্য ভিডিও বানিয়েছে। যাঁর কথা এখানে এরা তুলে ধ'রে আচার্য প্রথার বিরুদ্ধে বলতে এসেছে সেই তিনি অর্থাৎ ঠাকুর স্বয়ং এবং ঠাকুর আত্মজ আচার্যদেব শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীদাদা প্রচার বিমুখ ছিলেন। আর সৎসঙ্গের বর্তমান শ্রীশ্রীআচার্যদেব বাবাইদাদা প্রতিমুহূর্তে তাঁর জীবন দিয়ে, তাঁর আচরণ দিয়ে, ব্যবহার দিয়ে, কথাবার্তা দিয়ে বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের বুঝিয়ে দিচ্ছেন যে তিনি অত্যন্ত সাধারণ প্রচার বিমুখ একজন মানুষ, ঠাকুরের সামান্য একজন সেবক মাত্র। আর ইউটিউবে আত্মপ্রচারকারী কাল কা যোগী ভাতকে বলে অন্ন-এর দল শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের জীবন, জীবন দর্শন, আগমনের উদ্দেশ্য, কাকে দিয়ে কি করাবেন, সৎসঙ্গ কোনদিকে যাচ্ছে, আগামী পৃথিবী কোনদিকে যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি সব সব বুঝে গেছেন এই বয়সে!!!! এরা যদি মনে করে এরা ঠাকুরের আচার্য কথার প্রকৃত ও নানাবিধ অর্থ ও আচার্য পরম্পরার অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝে গেছেন আর প্রবচন দেওয়ার মতন এই বয়সেই জ্ঞান অর্জন ক'রে ফেলেছেন কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের আর বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের কেউই কিচ্ছু জানে না তাহ'লে জেনে রাখা ভালো এদের মতন পাগল, আত্মপ্রতিষ্ঠায় আচ্ছন্ন মহামূর্খ দ্বিতীয় নেই। এদের উদ্দেশ্যে শুধু এটুকুই বলতে পারি সৎসঙ্গ প্ল্যাটফর্মে কিছু বলার আগে কয়েক জন্ম ঠাকুরের সাহিত্যে গভীর নিদ্রায় নিদ্রিত হ'ন তারপর যখন আবার আসবেন আর ঠাকুর যদি আপনাকে কিছু বলার জন্য নির্বাচন করেন তখন বলবেন তার আগে নয়।

এছাড়া এটা যেন ফেসবুকে ঝড় তোলা ও ইউটিউবে প্রবচন দেওয়া বালখিল্য ঋষিরা মনে রাখে, বিস্মৃত যেন না হয় এবার তাঁর আসা ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে আসা আর এই ইঙ্গিতটুকুই বোঝার জন্য যথেষ্ট। যেহেতু তারা বিরাট জ্ঞানী পুরুষ তাই আশা করি এই কথার মানে তারা বুঝতে পারবে কারণ তারা সব এক একজন সমঝদার। আর সমঝদারকে লিয়ে ইসারা হি কাফি হোতা হ্যায়। আর যদি ইশারা না বুঝে থাকেন তাহ'লে বলবো আপনাদের কিচ্ছু ভাবতে হবে না। কিচ্ছু বলতে হবে না। বিচারের ভার আপনাদের হাতে নিতে হবে না। বিচারের ভার ঠাকুরের ওপর ছেড়ে দিন। ঠাকুরকে বুঝতে দিন ঠাকুর তাঁর চলার পথে, তাঁর মিশন প্রতিষ্ঠার পথে বাধাদানকারীদের, ভন্ডদের, কপটদের নিয়ে কি করবেন। তিনি তাঁদের শূলে চড়াবেন কি গরম তেলের কড়াইয়ে ফেলে ভাজবেন সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার, তাঁর এক্তিয়ার। সেখানে অনধিকারচর্চা ক'রে নিজেদের নিজেরাই শূলে চড়ানো বা গরম তেলের কড়াইয়ে ফেলে ভাজার ব্যবস্থা করবেন না। আমি আপনাদের পরম বান্ধবের মত একথা শুধু বলতে পারি আপনারা শুধু তাঁর কথা ভাবুন, তিনি যা বলেছেন আগে শুধু তাই করুন নীরবে, হ'য়ে উঠুন নীরবে গোপনে তারপর দেখুন এই ট্রাঞ্জিশানাল পিরিয়ডে তাঁর মিশন প্রতিষ্ঠার পথে আপনাকে দিয়ে কিছু করাবার জন্য তিনি আপনার প্রতি আদৌ দয়া করেন কিনা। যদি দয়া ক'রে থাকেন, যদি আপনাকে নির্বাচন ক'রে থাকেন তাহ'লে আর কারও কোনও চিন্তা নেই। তাঁর দয়ায় আপনারা এক একজন হ'য়ে উঠবেন তাঁর মিশন প্রতিষ্ঠায় সৎসঙ্গে বর্তমানের এক একজন অতীশ দীপংকর। -------প্রবি।

( ২৭শে অক্টোবর'২০২২)

No comments:

Post a Comment