আজ সকালে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে 'সগোত্রে বিবাহ নিষিদ্ধ' বিষয় উঠে এলো। সেটা আলোচনার জন্য এখানে তুলে দিলাম।
আলোচনার টেবিলে সকলকেই আমন্ত্রণ জানাই। আসুন এই ব্যাপারে শ্রীশ্রীঠাকুরের কি বলা আছে যারা জানেন তারা তা তুলে ধরলে সবাই উপকৃত হবে।
সগোত্র মানে হ'লো একবংশীয়, একবংশজাত, জ্ঞাতিগুষ্টির মধ্যে বিবাহ। রক্তের আত্মীয়দের মধ্যে বিয়ে এড়াতে এই নিয়ম চালু হয়েছিল। কারণ, একই রক্তের মিশ্রণের কারণে সন্তানের জিনে জেনেটিক বিকৃতি দেখা দেয়; অর্থাৎ শিশুর শারীরিক বিকৃতি হতে পারে। একই রক্তের মিশ্রণের কারণে শারীরিক বিকৃতি না হ'লেও মানসিক বিকৃতি অবশ্যম্ভাবী।
যাই হ'ক, এ এক কঠিন ও জটিল জন্ম বিজ্ঞান যা বিজ্ঞানীদের বিষয়। দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের এই বিবাহ ও জন্ম বিজ্ঞানের ওপর বিশদে সুক্ষাতিসুক্ষভাবে বলা আছে, যা গবেষকদের গবেষণার বিষয়। সাধারণ মানুষ মানলো কি মানলো না তা'তে বিজ্ঞানের বা সত্যের কিছু যায় আসে না। সত্য সত্যই থেকে যায় আর বিজ্ঞান বিজ্ঞানই। এই বিধানের উল্লঙ্ঘনকারীকে তার ফল পেতেই হয়।
এবার আসি আলোচনার বিষয়ে।
যেমন, ঘোষ পদবী তে শান্ডিল্য গোত্র কি ভাবে? কাশ্যপ গোত্রের মধ্যে ব্রাহ্মণ, শূদ্র ইত্যাদি আছে কেন? গোত্রের ধারা কি বর্ণাশ্রম অনুযায়ী ঋষিদের ঔরসজাতদের মধ্যে বংশ পরম্পরায় বহমান? এইরকম নানা প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য বিষয়টা ফেসবুকে আলোচনার জন্য তুলে দিলাম।
প্রসঙ্গের মধ্যে থেকেই আলোচনা করার অনুরোধ রইলো। আমি আমার ধারণা ব্যক্ত করলাম। এই বিষয়ে জ্ঞানী ও অভিজ্ঞদের উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী গোত্র মানে একটা বংশ বা গোষ্ঠীকে বোঝানো হয়। অর্থাৎ কোনও ঋষির ঔরসজাত সন্তান ও তাঁদের বংশধরদের বোঝায়। আবার গোত্র বলতে বিশেষ অঞ্চল বা বিশেষ চিহ্নকেও চিহ্নিত করে।
এছাড়া আমার জানা অনুযায়ী গোত্র মানে সাধনার ধারা। এই সাধনা ঔরসজাত ও কৃষ্টিজাত সন্তান উভয়ের সাধনা হ'তে পারে। এই অর্থে ঔরসজাত সন্তানেরা যেমন তাঁদের পিতা ঋষির সাধনার ধারাকে ব'য়ে নিয়ে যায় বংশ পরম্পরায়, ঠিক তেমনি ঋষির কৃষ্টিজাত সন্তানেরাও গুরুর সাধনার ধারাকে ব'য়ে নিয়ে যায়, তাই সেই কৃষ্টিজাত সন্তানেরাও সেই গুরুর গোত্রের অধিকারী হয়, অধিকারী হয় কৃষ্টির কারণে ব'লে আমার মনে হয়, নতুবা একই গোত্রের অধিকারী বিপ্র ও অন্যান্য বর্ণের মানুষেরা হয় কি ক'রে আমার জানা নেই।
আর ঔরসসজাত সন্তানেরা কৃষ্টিকে ব'য়ে নিয়ে যাক আর না যাক তারা রক্তের কারণে সেই গোত্রের স্বাভাবিক ভাবেই অধিকারী হয়। আর যে সন্তান পিতার রক্ত ও কৃষ্টিকে একইসঙ্গে গুরুত্বের সঙ্গে ব'য়ে নিয়ে যায় সেই উত্তম সন্তান। সেই প্রকৃত গোত্রের ধারক ও বাহক।
যাই হ'ক, আমি গোত্রের অন্তর্নিহিত অর্থকে বিশ্লেষণ ক'রে বোঝার চেষ্টা করলাম। বোঝার চেষ্টা করলাম কৃষ্টিজাত সন্তানেরা ঔরসজাত সন্তানদের মতো ঐ একই ঋষির গোত্রের অধিকারী হয় কিনা। তাই ঔরসজাত গোত্রের অধিকারী সন্তানদের মধ্যে একই রক্তের সংমিশ্রণের কারণে বিবাহ নিষিদ্ধ হ'লেও কৃষ্টিজাত গোত্রের অধিকারী সন্তানদের মধ্যে রক্তের সংমিশ্রণের সম্ভাবনা না থাকা সত্ত্বেও বিবাহ নিষিদ্ধ কিনা সেটা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের 'বিবাহ বিধান' বিষয় সম্বন্ধে গবেষকরা সঠিক বলতে পারবেন। আমার ধারণা ঠিক হ'তেও পারে, নাও পারে।
যাই হ'ক, যদি কেউ জানে বিশ্লেষণ ক'রে এখানে তুলে ধরে তাহ'লে উপকৃত হ'ই। (লেখা ১৯শে ফেব্রুয়ারী'২০২৪)
No comments:
Post a Comment