আমার এই প্রতিবেদন পড়ে হয়তো পাঠকের অনেকের মনে হ'তে পারে তাদেরই মিন করেছি, যেটা আমি করিনি। আমি যেটা বলতে চেয়েছি এখানে সেটা ওভার অল বলতে চেয়েছি। যাই হ'ক যদি কারও খারাপ লেগে থাকে তাহ'লে অনিচ্ছাকৃত আঘাতের জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী এবং এর সঙ্গে এটাও বলতে চাই একবার লেখাটা নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বায়াসড না হ'য়ে পড়ার জন্য।
শ্রীশ্রীঅবিনদাদার ১৫০-এর অধিক গাড়ি নিয়ে আসাম সফর নিয়ে ইতিমধ্যে ফোনে পক্ষে বিপক্ষে উল্লাসে, আনন্দে বুকের বরফ গ'লে ঝরণা হ'য়ে গিয়ে এবং হিংসায় ক্ষিপ্ত হ'য়ে মিশ্রিত অনেক মন্তব্যের মুখোমুখি হ'লাম। এবং ফেসবুকেও তাই দেখেছি ও দেখছি। আমার এই বিষয়ে লেখা কথাগুলি হয়তো কারও গায়ে লেগে যেতে পারে। কিন্তু আমি কাউকেও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য ক'রে কিছু লিখিনি ও লিখি না। যে বা যারা প্রকৃত সৎসঙ্গী, প্রকৃত মানুষ তাদের গায়ে আমার এই অপ্রিয় কথাটা লাগবে না বলেই বিশ্বাস করি।
'আমি সৎসঙ্গী' এ কথাটা যদি বুক ফুলিয়ে বলতে পারে সৎসঙ্গীরা ঘরে-বাইরে সেটা ঠাকুরের কাছে ভীষণ আনন্দের ও খুশীর বিষয়। আর ভালো কিছু হ'তে দেখলে নিশ্চয়ই গর্ব হয়। তার থেকেও গর্ব বেশী হয় নিজে যদি ঠাকুরের জন্য ভালো কিছু করতে পারি বা সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিই। আমি শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীদাদা, শ্রীশ্রীআচার্যদেব ও শ্রীশ্রীঅবিনদাদা-দের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধবাদী, কুৎসাকারীদের বক্তব্য সম্পর্কে যে ঘটনাগুলোর কথা এর আগে আমার বিভিন্ন লেখায় বলতে চেয়েছি আরও পরিস্কার ক'রে বললে বলতে হয়, ইঙ্গিত দিয়েছি সেগুলি যেমন আগের, অনেক আগের ঘটনা তেমনি সেগুলি আবার একেবারে কারেন্ট ঘটনা যার ট্রাডিশান সমানে ব'য়ে চলেছে আজও। অথচ আমার লেখায় লিখিত সেই ঘটনাগুলির বিরুদ্ধে কোনও প্রতিবাদ চোখে পড়ে না। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। আর ব্যতিক্রম ব্যতিক্রমই। আমার লিখিত ও বর্ণিত প্রতিবাদ্মুখর লেখাগুলিতে শুধু চোখে পড়ে 'জয়গুরু আর জয়গুরু' কমেন্ট। আর চোখে পড়ে ফেসবুক জুড়ে সাজানো বাগানে ফুল তোলার ছবি।
কে নবীন আর কে পুরাতন, কে চাক্ষুস করেছে কি করেনি তা আমার লেখার বিষয় নয়। ঠাকুর আর ঠাকুর আত্মজ ঠাকুরের পরম আদরের বড়খোকা ও বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের বড়ভাই, চোখের মণি প্রিয় শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ঠাকুরের প্রথম জীবন থেকে শেষ জীবন পর্যন্ত এবং আজও যে কুৎসা হ'য়ে চলেছে তা কে জানে আর জানে না, কে মাথা ঘামায় আর মাথা ঘামায় না, কার বুকে কতটুকু ব্যথা, ক্ষোভ, রাগ জমে আছে কি আদৌ নেই সেটা নিয়ে আমার কোনও অভিযোগ বা বক্তব্য নেই। আমি শুধু সত্যকে তুলে ধরতে চেয়েছিলাম আমার সব লেখায়; আর সত্য চিরকালই অপ্রিয়। আর এখানেও সত্য তুলে ধরবো পরবর্তী 'চকচক করলেই সোনা হয় না (২)' লেখায়।
আর এই অপ্রিয় সত্য কথা তুলে ধরতে গিয়ে সেই প্রথম যুগ থেকে আজ পর্যন্ত অপ্রিয় হ'য়ে চলেছি এবং আবারও শ্রীশ্রীঅবিনদাদার আসাম সফর নিয়ে অনেকের কাছে অপ্রিয় হ'য়ে গেলাম। তা'তে অবশ্য আমার কোনও মান-অপমান বোধ হয় না। এই লড়াই আজ আমার ৫৫ বছর ধ'রে তথাকথিত সৎসঙ্গী ও 'সৎসঙ্গ' বিরোধী ঠাকুর অনুগামী এবং অদীক্ষিত কুৎসাকারীদের সঙ্গে। একজন লিখেছে, সৎসঙ্গের এখনকার ঘটনাগুলোর মধ্যে যে ঘটনাগুলি গর্ব করার সেগুলি নিয়ে অবশ্যই গর্ব করে। কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে, সৎসঙ্গের এখনকার কোন ঘটনাগুলো গর্ব করার মতো নয়? সেই শ্রীশ্রীঠাকুর থেকে আজ পর্যন্ত চিরকালই সৎসঙ্গের ঘটনাগুলি গর্ব করার মতন ব্যাপার ছিল, আছে এবং থাকবে। তর্ক-বিতর্ক হ'তে পারে এ নিয়ে। সে সম্পর্কে বলতে পারি আমার বক্তব্য নিয়ে আমি কাউকে কৈফিয়ৎ দিই না, তাই তর্ক-বিতর্ক করার কোনও প্রশ্ন ওঠে না। আমার বক্তব্য পাঠক গ্রহণ করতে পারে আবার জঞ্জালের মতো ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারে। এই স্বাধীনতা পাঠকের একান্তই ব্যক্তিগত। সেখানে হাত গলাবার অধিকার আমার নেই। তবে সাজানো বাগানে যেমন ঘুরতে আসে অনেকে, এসে ফুল ছিঁড়তে যেমন আসে সেটাও যেমন সত্য, আবার সেই বাগানের মালিকের বাগান সাজানোর নির্ম্মম কষ্টটাও সত্য; আর আরও সত্য বাগান এবং মালীর বিরুদ্ধাচরণের বিরুদ্ধে যারা রুখে দাঁড়ায় তাদের উপস্থিতিও সত্য।
তাই আমার এই লেখা, চকচক করলেই সোনা হয় না। আর, সাজানো বাগানে ফুল সবাই ছিঁড়তে আসে, একজন দু'জন বাগান প্রেমী ছাড়া। তাই আসুন বাগান প্রেমী হ'ই।
প্রকাশ বিশ্বাস।
ভদ্রকালী, হুগলী।
পরবর্তী অংশ 'চকচক করলেই সোনা হয় না (২)'
ক্রমশঃ।
( ৮ই ফেব্রুয়ারী'২০২৩)
No comments:
Post a Comment