১৮ই ফেব্রুয়ারী এক পবিত্র তারিখ ও দিনের সাক্ষী বহন ক'রে চলেছে। নিরাকার ঈশ্বরের এক অপূর্ব রহস্যময় আসা যাওয়ার এক লীলার সাক্ষী এই ১৮ই ফেব্রুয়ারী।
নিরাকার ঈশ্বরের সাকার অষ্টম রূপের ষষ্ট রূপ শ্রীশ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু আজকের দিনে নেমে যেমন এসেছিলেন, ঠিক তেমনি এই দিনেই তিনি আবার নেমে এসেছিলেন শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণ রূপে। নেমে এসেছিলেন হিংসায় পরিপূর্ণ অহংকারী প্রেমহীন মূর্খ মানুষের মাঝে প্রেমের স্বাদ দিয়ে সবাইকে প্রেমের মহাসমুদ্রে মিশিয়ে দিতে। এইভাবে নিরাকার ঈশ্বর সাকার হ'য়ে নেমে এসেছিলেন মোট আটবার। আর এই আটবারের মধ্যে তিনবার তিনি প্রেম বিলাবার সঙ্গে সঙ্গে অসুর বধের জন্যও এসেছিলেন। এসে তাঁর দয়াল রূপের মাঝে থাকা ভয়ংকর ভয়াল রূপকে প্রকট করেছিলেন।
এই আটবারের আবির্ভাবে তাঁর দয়াল ও ভয়াল রূপের সংমিশ্রণে প্রথম এসেছিলেন শ্রীশ্রীরামচন্দ্র রূপে, দ্বিতীয়বার শ্রীশ্রীকৃষ্ণ, তৃতীয়বার অর্থাৎ পঞ্চম রূপে এসেছিলেন শ্রীশ্রীহজরত মহম্মদ রূপে। এই তিন তিনবার তিনি প্রভূত অর্থে বলবান ও জ্ঞানে সমৃদ্ধ অহঙ্কারী ঔদ্ধত্ব মানুষকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনিই শেষ কথা। মানুষের কাছে তা অতীত। মানুষ ভুলে গেছে সেই কথা। আবার আসছে সেই ভয়ংকর দিন আগামীতে। মানুষ তুমি প্রস্তুত থেকো সেই দিনের জন্য, আর রেখে যাও তুমি তোমাকে রেত শরীরে তোমার উত্তরসূরির মধ্যে সেই ভয়ংকর দিনের জন্য।
আর, বাকী যে কয়েকবার তিনি এসেছিলেন প্রতিবার তিনি প্রেমের বাঁধনে বাঁধতেই এসেছিলেন তাঁর সৃষ্ট সর্বশ্রেষ্ঠ মানব সন্তানদের। তাঁর সেই রূপ হ'লো শ্রীশ্রীবুদ্ধ, শ্রীশ্রীযীশু, শ্রীশ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু, শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ এবং সর্বশেষ The greatest phenomenon, greatest wonder of the world (বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়) শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র রূপে।
আজকের এই দিনে ১৮ই ফেব্রুয়ারী তারিখে বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের মালিক সৃষ্টিকর্তা, সৃষ্টির পরমকারণ, পরমসত্তা, পরমউৎস, পরমপিতা পরমপ্রেমময় নিরাকার ঈশ্বর সাকার রূপে নেমে এসেছিলেন মানুষ মায়ের গর্ভে শ্রীশ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ও শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ রূপে ৫০০ বছরের ব্যবধানে। আর এইবার এই কলি যুগের শেষে নেমে এলেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র রূপে। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ তিরোধান ও শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের আবির্ভাবের ব্যবধান মাত্র ২বছর ২৯দিন। এত অল্প দিনের ব্যবধানের কারণ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের ব'লে যাওয়া কথা। শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণ ব'লে গেছিলেন, আমি খুব শিগগিরি আসছি, যাবো আর আসবো। তাই এই অল্প সময়ের ব্যবধান। আজকের এই ১৮ই ফেব্রুয়ারী শুভ দিনেই তিনি দু'দুবার এসেছিলেন; আর আজকের এই তিথিতেই তিনি তাঁর সাকার রূপ ছেড়ে পুনরায় নিরাকার রূপে ফিরে গেলেন। আর ফিরে গেলেন প্রেমের তীব্র আকর্ষণের চরম রূপের নিদর্শন দিয়ে। সেই নিদর্শন দিয়ে গেলেন তাঁর কথার মধ্যে দিয়ে, "এইবার আমি বধ করতে আসিনি, এসেছি বশ করতে।" তাঁর এই বশ করার মধ্যে আছে প্রেমের নরম-গরম, মাখোমাখো, চরম অভূতপূর্ব রূপ!!!
তাই আজ একবার সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করি তাঁকে আর নিজের শুষ্ক প্রেমহীন হৃদয়ে চোখের জলে প্রেমকে প্রার্থনা করি।
( লেখা ১৮ই ফেব্রুয়ারী'২০২৪ )।
No comments:
Post a Comment