Saturday, November 26, 2022
কবিতাঃ মূর্ত ক'রে তোলো--------
আর কুৎসা, গালাগালিতে হ'চ্ছো ক্ষতবিক্ষত!
অন্যদিকে তাড়িয়ে আনা বাঁধা মোষের দুধ
দুয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে ঘোষের পো সতত!!
করবে টা কি? ভাবছো ব'সে, করবে টা কি?
আমি বলি,
গালাগালি, কুৎসা করবার কাজ যার
তিনি করবেন, ক'রে যাবেন, এই-ই তার নেশা।
সৃষ্টির বুকে প্রত্যেকের অবস্থান আছে নির্দিষ্ট
যেমন সেফটি ট্যাঙ্কের পোকা।
তাই বলি, তোমার কাজ মালির,
নয় বাবু সাজা! বাগান করবে ব'লে এসেছ তুমি
বাগান তৈরিতে তুমি রাজা!
বাবু সাজতে চায় যে সে সাজুকগে বাবু
বাবুর গালাগালিতে হ'য়ো না তুমি কখনো কাবু।
তোমার কাজ বাগান তৈরীর
পাথুরে জমিতে ফুল ফোটানো
রং বেরঙের ফুল ফুটবে সেথায়
হাসি-আনন্দে ভরপুর পরিবেশ চোখ জুড়ানো!
কলুর বলদের মত তুমি চলেছো টেনে
বাঁচা-বাড়ার ঘানি!
কিন্তু নিন্দা আর অকারণ অপবাদে বিধ্বস্ত তুমি
জানি বন্ধু, মান পায় না মানি!
করবেটা কি? ভাবছো বসে, করবেটা কি?
আমি বলি, করবার তুমি কে?
তুমি করো তোমার কাজ আর
করবার যিনি করবেন তিনি
তুমি মূর্ত ক'রে তোল তাঁর বলাকে।
----প্রবি।
( রচনা ২৭শে নভেম্বর' ২০১৯)
Friday, November 25, 2022
কবিতাঃ জপ নাম অবিরাম।
আসবে সেদিন যেদিন ঘোর আঁধারে
ভাঙার জাল শুধু বুনলে তুমি
ভাঙার কারিগর হ'লে শেষে বন্ধু
ছেনী হাতুড়ি গাঁইতি সম্বল তোমার এই বৈশিষ্ট্য
যখনি ভিড়েছো গড়ার দলে
গড়ার দলে ভিড়ে তলে তলে আঁটছ ফন্দি
সমাজ, সভ্যতা, দেশ আর করছো সবারে পর;
দিন শেষে ঘরে ফিরে এসে
দেখছো অবশেষে মাথার ওপরে
শ্মশান হয়েছে তব বাসভূমি;
আজ তুমি নিঃস্ব, রিক্ত, সহায়সম্বলহীন;
সময়ের আগে পাপের ভারে ধ্বস্ত বিধ্বস্ত তুমি,
অশক্ত হাতে আজ নেই ছেনী হাতুড়ি,
এসো বন্ধু যাবার আগে পর জন্মের তরে
প্রায়শ্চিত্ত করো কৃত কর্মের তরে
অবিরাম কেবল। ----প্রবি।
Thursday, November 24, 2022
অভিজ্ঞতাঃ সাজা সৎসঙ্গী।
সৎসঙ্গী সেজো না, সৎসঙ্গী হওয়ার চেষ্টা করো।
জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। সেই যে ছোটোবেলা থেকে দেখে আসছি আর আজও দেখছি জীবনের এই বয়স পর্যন্ত পোশাক সত্যি সত্যিই ম্যাটার করে। নিজের মনের ওপর ও পারিপার্শ্বিকের ওপর পোশাকের একটা বিরাট ভুমিকা আছে; ভূমিকা আছে মানসিক শান্তি প্রাপ্তির ওপর। ঠিক একইভাবে পুরুষের মতো নারী যখন আসে সৎসঙ্গে তখনও একইরকমভাবে নারীর সুন্দর পোশাক পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়ে, মাতৃভাবের সৃষ্টি করে।
এ প্রসঙ্গে শ্রদ্ধেয়া বড়বৌদির কথা মনে পড়ে গেল। সময়টা ২০১৬-১৭ হবে। তাঁর সামনে বসে আছি। কথা হচ্ছে মায়েদের পোশাক নিয়ে। তখন দু'টো কেন্দ্রে ( কেন্দ্রের নাম উহ্য রাখলাম) মাতৃসম্মেলনে পড়ার জন্য মায়েদের শাড়ির আলাদা আলাদা ব্যবস্থা হয়েছিল। একইরকম শাড়ি সব মায়েরা পড়ে আসবে মাতৃসম্মেলনে। একটা কেন্দ্রে একরকম, আর একটা কেন্দ্রে আর একরকমের শাড়ি। একটা ব্যবসা শুরু ক'রে দিয়েছিল কিছু সাজা সৎসঙ্গী। সেটা বলাতে আমি সাজা সৎসঙ্গীদের চক্ষুশূল হয়েছিলাম।
যাই হ'ক, বড়বৌদিকে আমি ও আমার স্ত্রী জিজ্ঞেস করেছিলাম মাতৃসম্মেলনে এক এক কেন্দ্রে এক একরকম শাড়ি আর সেই একইরকমের শাড়ি সবাই মাতৃসম্মেলনে পড়ে আসবে এমন কোনও নির্দেশ ঠাকুরবাড়ি থেকে আছে কিনা। একথা শুনে বড়বৌদির আকাশ থেকে পড়ার অবস্থা। তিনি প্রথমে কথাটা বুঝতে না পারায় আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান ইত্যাদি ক্লাবের জার্সির মত মাতৃসম্মেলনের জন্য কেন্দ্র অনুযায়ী কোনও আলাদা আলাদা একইরকম শাড়ি পড়ার নির্দেশ অর্থাৎ কোনও ড্রেস কোড আছে আছে কিনা। তখন তিনি বলেছিলেন, এ আবার কি অদ্ভুত কথা! তাহ'লে কে ক'টা শাড়ি কিনবে? এমন কোনও অদ্ভুত নির্দেশ ঠাকুরবাড়ি থেকে নেই। কোন কেন্দ্রে এমন ব্যবস্থা? তখন সেই সেই কেন্দ্রের নাম বলেছিলাম আর তা শুনে অবাক বিস্ময়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছিল বড়বৌদি। তখন আমার স্ত্রী বলল, তাহ'লে কি সাদা লাল পাড়ের শাড়ি পড়ে আসবে? তার উত্তরে তিনি বলেছিলেন, কার কত পয়সা আছে যে শুধু মাতৃসম্মেলনের জন্য আলাদা ক'রে একটা লাল পাড়ের শাড়ি কিনে আলমারিতে তুলে রাখবে? ঘরে যে শাড়ি থাকবে তাই-ই পড়বে। যে শাড়ি পড়লে মায়েদের মাতৃভাব ফুটে ওঠে, মিষ্টি লাগে, সুন্দর লাগে, স্নিগ্ধ লাগে সেই শাড়ি পড়বে। তা সে যতই কম দামের হ'ক আর যাই হ'ক পরিস্কার আর সুন্দর হ'লেই হ'লো। আর মাতৃভাব পোশাকের সঙ্গে আচরণেও যেন ফুটে ওঠে খেয়াল রাখতে হবে।" পরবর্তীতে একইরকম শাড়ি পড়ার আঞ্চলিক সিদ্ধান্ত দুই কেন্দ্রেই বন্ধ হ'য়ে গেছিল। ফলে ব্যবসা হয়েছিল বন্ধ।
তাই সৎসঙ্গে একসঙ্গে অনেকে সাদা ধুতি আর ফতুয়া পড়লে একটা শান্ত সৌম্য ভাব আসে, সুন্দর লাগে। পরিবেশের ওপর তার প্রভাব পড়ে। সৎসঙ্গীদের আলাদা একটা পরিচিতি হয়।
কিন্তু আমাদের মাথায় রাখতে হবে সাদা পোশাকের মর্যাদা রক্ষা না হ'লে সাদা পোশাক তার গৌরব হারায়। এখন সাদা পোশাক প্রায় সব রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ধ'রে ফেলেছে। যেখানেই যে দলের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান হয় সবাই সাদা পোশাকে সুসজ্জিত হ'য়েই মারণ যজ্ঞের ছক কষে। ফলে গেরুয়া পোশাকের মতো সাদা পোশাকও এখন প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে। গেরুয়া পোশাকের আর আগের মতো জৌলুশ নেই। যে গেরুয়া পোশাক ছিল ত্যাগের প্রতীক সেই পোশাক আজ ত্যাগের ওপর প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে। আর এঁকে দেওয়ার কাজটা একশ্রেণীর গেরুয়াধারীরা নিজেরাই করেছে। ঠিক তেমনি যেখানে যত রাজনৈতিক নোংরামো সেখানে তত সাদা পোশাকের ঝলকানি।
তাই আমরাও যারা সৎসঙ্গী তারা যেন সাদা পোশাকের মর্যাদা রক্ষা করি। ইদানিং দেখি সবাই সাদা পোশাকের সঙ্গে কাঁধে একটা একই রকমের কালো ব্যাগ ঝুলিয়ে তাকে সাদা পোশাকের সঙ্গী ক'রে নিয়েছি। সেই কবে বর্তমান শ্রীশ্রীআচার্যদেব কাঁধে একটা কালো ব্যাগ ঝুলিয়ে এয়ারপোর্টে বসেছিল তারপর থেকে সেই একই ডিজাইনের কালো ব্যাগ হ'য়ে গেল সৎসঙ্গীদের চলার সঙ্গী। হু হু ক'রে বিক্রি হ'তে লাগলো। ব্যবসা বুদ্ধি চাগাড় দিয়ে উঠলো।
ভালো অনুসরণ ভালো। কিন্তু তা যেমন পোশাকে পরিচ্ছদে ঠিক তেমনি যেন চরিত্র গঠনেও হয়। আমরা যেন প্রত্যেকেই শ্রীশ্রীবাবাইদাদার ব্যাগ অনুসরণের মতো তাঁর মনের মতো হ'য়ে উঠতে পারি। নতুবা সাজা সাধুর মতো সাজা সৎসঙ্গী হ'য়ে যাবো। আর এই সাজা সাধুর মতো সাজা সৎসঙ্গীর পোশাক প্রবণতা সুদুর প্রসারী হ'য়ে ভন্ডামীর পোশাকে গিয়ে দাঁড়াবে। মানুষের ওপর তার উল্টো প্রভাব পড়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে। সাদা পোশাকের প্রতি মানুষ বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে। ভবিষ্যতে সাদা রঙ তার পবিত্রতা হারিয়ে সৎসঙ্গীদের বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেবে। আমরা যেন সতর্ক থাকি। নিজের ভেতরে যেন ঝাঁক মেরে দেখি আমি সত্যি সত্যিই সৎসঙ্গী তো; সাজা সৎসঙ্গী নই তো?
শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী তখন সত্য হ'য়ে "সাধু সেজো না, সাধু হওয়ার চেষ্টা করো"-র বাণীর মতো 'সৎসঙ্গী সেজো না, সৎসঙ্গী হওয়ার চেষ্টা করো' বাণী বুমেরাং হ'য়ে ফিরে আসবে।
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র আরো বললেন,
"বকলমা যদি না-ই দিস নকল সাধু সাজিস না,
সাধু সেজে গুরু হ'য়ে মানুষ নিকেশ করিস না।"
সাধু ধাঁচের কায়দা-কথা মতলববাজী অন্তরে,
ইষ্টস্বার্থে মিথ্যা উদার নাশক জানিস সেই নরে।
ইষ্টস্বার্থী ঝোঁক নাই প্রেষ্ঠকথায় হামবড়াই
নিশ্চয় জানিস ভন্ড তা'রা উদ্দেশ্য ঠক সাধু সাজাই।"
প্রবি।
Wednesday, November 23, 2022
আচার্য প্রথাঃ সৎসঙ্গে বর্তমানের অতীশ দীপংকর।
ইদানীং ফেসবুকে ও ইউটিউবে 'আচার্য' নিয়ে কথার ঝড় তুলে চলেছে কিছু অতি ইষ্টপ্রাণ মানুষ। কথায় আছে অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ। সেই লক্ষণই আজ প্রকট ইদানিং ফেসবুকে ও ইউটিউবে।
যাই হ'ক যারা এই নিয়ে কনস্ট্যান্ট জল ঘোলা ক'রে চলেছে নানারকম কথার মারপ্যাঁচে ঠাকুরের কতিপয় বাণীকে হাতিয়ার ক'রে ফেসবুক, ইউটিউবকে প্ল্যাটফর্ম বানিয়ে তারা সারাজীবন কেন কয়েকশো বার জন্মালেও তাঁর এবারের হাজার হাজার বলাগুলি পড়ে শেষ করতে পারবেন না। আর যদি কয়েকশো বার জন্মাবার ফলে পড়ে উঠতে পারলেও বুঝে উঠতে পারবেন না। কারণ এরা সব আত্মপ্রতিষ্ঠায় মগ্ন। বুক ভর্তি হিংসা ও অশ্রদ্ধা নিয়ে কথার স্রোতে ভাসা কর্মহীন প্রচার পাগল জীবকোটি মানুষ এরা। এর জন্য দরকার জন্মগত সংস্কার। জীবন ব'লে দেয় কার সংস্কার কেমন। মানুষের চোখমুখ, কথাবার্তা, চালচলন, আচার আচরণ ইত্যাদি ব'লে দেয় কে কি সংস্কার নিয়ে জন্মেছে। আর ইশ্বরকোটি পুরুষ ছাড়া তাঁর বলাগুলি পড়ে শেষ করা এবং সেই বলাগুলি অনুধাবন করা সম্ভব নয়। যারা আচার্য ও আচার্য পরম্পরার বিরুদ্ধে ফেসবুকে ও ইউটিউবে সবজান্তা হ'য়ে ব'সে হরিদাস পালের মত আমিত্ব ফলাতে ব্যস্ত ও আমিত্ববোধে বেহুঁশ হ'য়ে আচার্য নিন্দা ও কুৎসা ক'রে চলেছে এবং ভিত্তিহীন কথার ফানুশ উড়িয়ে চলেছে সৎসঙ্গীদের বিভ্রান্ত করতে কর্মহীন কথার অম্ল ঢেঁকুর তুলে তাদের এখনও ঠাকুরের দর্শন, ঠাকুরের হাজার হাজার বাণী, লক্ষ লক্ষ করা কথা ও করার কথা বোঝার ও মানুষকে বোঝাবার মত জ্ঞান, বয়স এখনও হয়নি এবং সেই জীবন তারা এখনও লাভ করেনি। বটগাছের হাজার ঝুরি নামা প্রাচীন বটবৃক্ষের মতো বয়স হ'তে হবে তাদের এবারে ভয়ংকর রূপে আসা জীবন্ত ঈশ্বরের কথা বুঝতে একথা বিস্মৃত না হয় যেন তারা। তাদের এসব বালখিল্য প্রয়াস মাত্র। এখনও নাক টিপলে সদ্য মায়ের ঝিনুক দিয়ে খাওয়ানো দুধ বেরোবে আর কাল কা যোগী ভাতকে বলে অন্ন এমন সব বাচ্চা ছেলে যেখানে হাতি ঘোড়া তল পায় না সেখানে ঠাকুরের বিশাল সাহিত্যের মহাসমুদ্রে সাঁতার কাটতে এসে এরা মশার মতো বলে, কোথায় জল!? কি এমন জল!? ক্যামেরার সামনে এদের বসার ভঙ্গি, বলার ধরণ, চোখমুখের অভিব্যক্তি, হাত পা নাড়াবার কৌশল দেখলে বোঝা যায় এরা সব গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের দল স্বয়ং এক একজন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের প্রতিবিম্ব! এদের কথা শুনে মনে হয়, এরা সব জানে, এদের কথায় শেষ কথা, এদের কথা শুনলেই হবে কাউকে ঠাকুরের বই আর পড়তে হবে না, এরা সব ঠাকুরের মুখ!
এরা নিজেদের প্রচারের জন্য ভিডিও বানিয়েছে। যাঁর কথা এখানে এরা তুলে ধ'রে আচার্য প্রথার বিরুদ্ধে বলতে এসেছে সেই তিনি অর্থাৎ ঠাকুর স্বয়ং এবং ঠাকুর আত্মজ আচার্যদেব শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীদাদা প্রচার বিমুখ ছিলেন। আর সৎসঙ্গের বর্তমান শ্রীশ্রীআচার্যদেব বাবাইদাদা প্রতিমুহূর্তে তাঁর জীবন দিয়ে, তাঁর আচরণ দিয়ে, ব্যবহার দিয়ে, কথাবার্তা দিয়ে বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের বুঝিয়ে দিচ্ছেন যে তিনি অত্যন্ত সাধারণ প্রচার বিমুখ একজন মানুষ, ঠাকুরের সামান্য একজন সেবক মাত্র। আর ইউটিউবে আত্মপ্রচারকারী কাল কা যোগী ভাতকে বলে অন্ন-এর দল শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের জীবন, জীবন দর্শন, আগমনের উদ্দেশ্য, কাকে দিয়ে কি করাবেন, সৎসঙ্গ কোনদিকে যাচ্ছে, আগামী পৃথিবী কোনদিকে যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি সব সব বুঝে গেছেন এই বয়সে!!!! এরা যদি মনে করে এরা ঠাকুরের আচার্য কথার প্রকৃত ও নানাবিধ অর্থ ও আচার্য পরম্পরার অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝে গেছেন আর প্রবচন দেওয়ার মতন এই বয়সেই জ্ঞান অর্জন ক'রে ফেলেছেন কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের আর বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের কেউই কিচ্ছু জানে না তাহ'লে জেনে রাখা ভালো এদের মতন পাগল, আত্মপ্রতিষ্ঠায় আচ্ছন্ন মহামূর্খ দ্বিতীয় নেই। এদের উদ্দেশ্যে শুধু এটুকুই বলতে পারি সৎসঙ্গ প্ল্যাটফর্মে কিছু বলার আগে কয়েক জন্ম ঠাকুরের সাহিত্যে গভীর নিদ্রায় নিদ্রিত হ'ন তারপর যখন আবার আসবেন আর ঠাকুর যদি আপনাকে কিছু বলার জন্য নির্বাচন করেন তখন বলবেন তার আগে নয়।
এছাড়া এটা যেন ফেসবুকে ঝড় তোলা ও ইউটিউবে প্রবচন দেওয়া বালখিল্য ঋষিরা মনে রাখে, বিস্মৃত যেন না হয় এবার তাঁর আসা ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে আসা আর এই ইঙ্গিতটুকুই বোঝার জন্য যথেষ্ট। যেহেতু তারা বিরাট জ্ঞানী পুরুষ তাই আশা করি এই কথার মানে তারা বুঝতে পারবে কারণ তারা সব এক একজন সমঝদার। আর সমঝদারকে লিয়ে ইসারা হি কাফি হোতা হ্যায়। আর যদি ইশারা না বুঝে থাকেন তাহ'লে বলবো আপনাদের কিচ্ছু ভাবতে হবে না। কিচ্ছু বলতে হবে না। বিচারের ভার আপনাদের হাতে নিতে হবে না। বিচারের ভার ঠাকুরের ওপর ছেড়ে দিন। ঠাকুরকে বুঝতে দিন ঠাকুর তাঁর চলার পথে, তাঁর মিশন প্রতিষ্ঠার পথে বাধাদানকারীদের, ভন্ডদের, কপটদের নিয়ে কি করবেন। তিনি তাঁদের শূলে চড়াবেন কি গরম তেলের কড়াইয়ে ফেলে ভাজবেন সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার, তাঁর এক্তিয়ার। সেখানে অনধিকারচর্চা ক'রে নিজেদের নিজেরাই শূলে চড়ানো বা গরম তেলের কড়াইয়ে ফেলে ভাজার ব্যবস্থা করবেন না। আমি আপনাদের পরম বান্ধবের মত একথা শুধু বলতে পারি আপনারা শুধু তাঁর কথা ভাবুন, তিনি যা বলেছেন আগে শুধু তাই করুন নীরবে, হ'য়ে উঠুন নীরবে গোপনে তারপর দেখুন এই ট্রাঞ্জিশানাল পিরিয়ডে তাঁর মিশন প্রতিষ্ঠার পথে আপনাকে দিয়ে কিছু করাবার জন্য তিনি আপনার প্রতি আদৌ দয়া করেন কিনা। যদি দয়া ক'রে থাকেন, যদি আপনাকে নির্বাচন ক'রে থাকেন তাহ'লে আর কারও কোনও চিন্তা নেই। তাঁর দয়ায় আপনারা এক একজন হ'য়ে উঠবেন তাঁর মিশন প্রতিষ্ঠায় সৎসঙ্গে বর্তমানের এক একজন অতীশ দীপংকর। -------প্রবি।
( ২৭শে অক্টোবর'২০২২)
হে আমার প্রিয়। প্রার্থনা।
কর্ম আছে চিন্তা ও পথ অসৎ
পৃথিবীতে জীবন্ত ঈশ্বর তোমার দয়াল ঠাকুর ছাড়া আর কাউকে বিশ্বাস ক'রো না আর কারও উপর নির্ভর ক'রো না।
হে আমার প্রিয়!
ঠাকুরবাড়ির বিরোধিতা ক'রে, নির্দেশ অমান্য ক'রে, আঞ্চলিক কেন্দ্রকে উপেক্ষা ও অগ্রাহ্য ক'রে অনুকূল ঠাকুরকে শিখণ্ডী বানিয়ে আত্মপ্রতিষ্ঠায় যে পাগল তার শেষের সেদিন কিন্তু ভয়ঙ্কর! সাবধান হও। মনে রেখো ঠাকুর কিন্তু সব দেখছেন। দয়াল কিন্তু ভয়ালও।
-------প্রবি।
আহবানঃ আগাম সাবধান আমার প্রিয় মানুষেরা।
অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার মৃত্যু তার নিকটজন, পরিচিত মানুষ, যারা তাকে কম বেশী চেনে, খবর রাখে, টিভির সিরিয়ালের পর্দায় তাকে দেখে দেখে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে তারা প্রায় প্রত্যেকেই কমবেশী শোকাহত।
আমি তাকে চিনিনা, দেখিনি কোনওদিন সাক্ষাতে বা টিভি সিরিয়ালের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু ইদানিং ফেসবুকের দৌলতে অল্পবিস্তর তার সম্পর্কে জেনেছি। টিভি সিরিয়াল দেখি না, খবর শুনি না। কারণ সিরিয়াল দেখে পরিবার, সংসার, সমাজ, সভ্যতা ভাঙ্গার নীল নকশা শেখার ইচ্ছা আমার নেই আর টিভির পক্ষপাতপূর্ণ, অতিরঞ্জিত, মিথ্যে, ধ্বংসাত্মক খবরাখবর শুনে বাকী জীবনে আর নিদ্রাহীনতায়, সুগার, ব্লাডপ্রেসার আর নার্ভ ডিসঅর্ডার ইত্যাদিতে ভুগতে চাই না।
তবুও তুমি কি বাঁচবে? বাঁচবে না। কারণ, তোমার চারপাশের পরিবেশ তোমাকে বাঁচতে দেবে না।
তাহ'লে কি ক'রে বাঁচবে? কিভাবে তোমার প্রিয়জনকে বাঁচাবে?
ঐন্দ্রিলা দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগেছে দীর্ঘদিন। লড়াই করেছে ব্যাধির সঙ্গে। কখনও জিতেছে, কখনও হেরেছে। আর তা ছিল সাময়িক। অবশেষে সব বন্ধন ছিন্ন ক'রে এ পারের সব ছেড়ে চলে চলে গেল ওপারে অকালে। পিছনে রেখে গেল প্রিয় অপ্রিয় সব জনকে। প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেল প্রিয়জনের মনে ঈশ্বরের অবিচারের আর জন্ম দিয়ে গেল ঈশ্বরের প্রতি অবিশ্বাসের!
প্রশ্ন জাগে মনে। এটা কি যাওয়ার বয়স? ঈশ্বরের এ কি রকম অবিচার? ঈশ্বরের প্রতি কি আর বিশ্বাস রাখা যায়?
এমন ঘটনা যখনই কারো পরিবারে, সংসারে, সমাজে কারো জীবনে ঘটে তখন স্বাভাবিকভাবেই এই প্রশ্নগুলি ওঠে। তখন সাধারণ ভাঙ্গাচোরা মানুষের মনে এই প্রশ্নগুলি বড় হ'য়ে দেখা দেয়। তখন বিচার বিবেচনার দরজা রুদ্ধ হ'য়ে যায়। একটা মারাত্মক ব্যক্তিগত ক্ষতি মানুষকে বোধবুদ্ধি রহিত বিবেকহীন মানুষে পরিণত করে। আর স্বাভাবিকভাবেই সেটা হয়েছে ঐন্দ্রিলার শুভানুধ্যায়ীদের ক্ষেত্রে। তারা প্রায় সবাই ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর দায় ঈশ্বরের ওপরে চাপিয়ে দিয়েছে। এটা ঐন্দ্রিলার প্রতি ঈশ্বরের অন্যায় অবিচার।
যাই হ'ক। আমার প্রিয়জন,
তোমরা জেনে রাখো এই একটা জায়গা আছে যেখানে জীবনের প্রতি ক্ষেত্রের খারাপ ফলাফলের সমস্ত দায় দায়িত্ব ঈশ্বরের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায়। ঈশ্বরকে না মেনে, ঈশ্বরের অস্তিত্বে অবিশ্বাস রেখে, ঈশ্বরকে গাল দিয়ে, ঈশ্বর সম্পর্কে কটু কথা ব'লে, ঐশ্বরিক কাজের বিরোধীতা ক'রে দুর্দশাগ্রস্ত জীবনের চরম দুর্বল মুহূর্তে ঈশ্বরের সাহায্য, দয়া চেয়ে বঞ্চিত হ'য়ে ঈশ্বরকে দ্বিগুণ উৎসাহে একেবারে উলঙ্গ হ'য়ে গালি দেওয়া যায়। আবার যুগ যুগ ধ'রে ঈশ্বর পূজার নামে বৃত্তি-প্রবৃত্তির ঘেরাটোপে বন্দী হ'য়ে রিপু তাড়িত জীবন যখন ঈশ্বরের দয়া লাভে বঞ্চিত হয় তখন ঈশ্বর হ'য়ে যায় আমার শত্রু। যখন ঈশ্বরের চলন পূজার পরিবর্তে তাঁর চরণপূজায় মগ্ন হ'য়ে ধূপধুনো, ফুল চন্দনের আবেশে ডুবে গিয়ে মত্ত হ'য়ে থাকি আর পরিবর্তে যখন শয়তানের বিষাক্ত ছোবলে ক্ষতবিক্ষত হ'ই, না ফেরার দেশের অতিথি হ'য়ে যাই তখন ঈশ্বর আমার হ'য়ে ওঠে সাক্ষাৎ শয়তান, যম।
হে আমার প্রিয়, যারা একদিন ঈশ্বরকে, ঈশ্বরের অস্তিত্বকে স্বীকার করতো না, সাম্যবাদের হাওয়ায় পাখনা মেলে উড়তে উড়তে প্রবল ঝাপটা মারতো ঈশ্বরের চোখেমুখে, যারা ঈশ্বরকে কন্ডোম পড়াতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা বা লজ্জাবোধ করতো না তারা যখন বিরাট কিছু পাওয়ার লোভে ঈশ্বরের আরাধনা করে আর পেয়েও যায় কোনও জ্ঞাত অজ্ঞাত কারণবশতঃ তখন তারা আবার ঈশ্বরের পা চাটা পূজারী ব'নে যায়। আর ভাবে ঈশ্বরের পা চাটলেই যখন যা ইচ্ছা হবে তাই আলাদিনের প্রদীপের দৈত্যের মতো পেয়ে যাবো। আর না পেলে? না পেলে? ছুঁড়ে ফেলে দেব আস্তাকুড়ে।
তাই আমার প্রিয়জনেরা।
তোমরা সাবধান হও। এটা কলি যুগ। ঘোর কলি। এ যুগে তিন ভাগ অধর্ম আর এক ভাগ ধর্ম। সময় তোমাদের অধর্মের পথে টেনে নিয়ে যাবেই যাবে। তোমরা আটকাতে পারবে না। অধর্মের ঝড় প্রবল ভয়ঙ্কর। অধর্মের পাল্লা ভারী। বাঁচতে পারবে না। তোমায় তোমার চারপাশ বাঁচতে দেবে না।
তাই বাঁচতে যদি চাও তাহ'লে তুমি বুড়ি ছুঁয়ে রাখো অর্থাৎ জীবন্ত ঈশ্বর পরমপিতা যুগ পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের চরণে আশ্রয় নাও। তাঁর বিধান মেনে চলো। তোমার কোনও ভয় নেই। তোমার অদৃষ্টে অশুভ যা থাকে থাকুক। তুমি যা কিছু খারাপ নিয়েই জন্ম গ্রহণ করো না কেন। তোমার পিতামাতার কুকর্মের ফল তোমার ওপর যাই নেবে আসুক না কেন। তোমার কুষ্টিতে দুর্ঘটনা বা মৃত্যুযোগ যাই-ই লেখা থাক না কেন। তুমি যতই স্বল্প আয়ু নিয়ে আসো না কেন। এসো, পরমপিতার চরণতলে এসো। যুগোপযোগী ক'রে আসা ঈশ্বর পরমপিতার নূতন জীবন্ত রূপকে জীবনে গ্রহণ করো। তাঁর দেওয়া বীজনাম অনবরত জপ ক'রে যাও। তুমি কিছু করো আর না করো তাঁর দেওয়া ইষ্টভৃতি অর্থাৎ নিজে কিছু অন্নজল গ্রহণ করার পূর্বেই অতি প্রত্যুষে তাঁকে যা পারো কিছু খেতে দাও। দু'বেলা না পারলে একবেলা, একবেলা না পারলে অন্তত সপ্তাহে একদিন শুক্রবার তাঁর প্রার্থনা করো। তাঁর দেওয়া বীজনাম শয়নে স্বপনে জাগরণে নাম জপ করো। নাম জপ করার চেষ্টা করো। অভ্যাস করো। ভুলে যাবে ঠিক আছে; মনে পড়লেই করো। মনে পড়া সত্ত্বেও অবহেলা ক'রো না। দয়াল ঠাকুরকে ভালোবাসো, প্রত্যাশাহীন ভালোবাসো। বিশ্বাস করো তাঁকে। বিশ্বাস রাখো তাঁর প্রতি। তাঁর প্রতি নির্ভর করো। দেখবে ধীরে ধীরে তোমার জীবনের সব বিপদের মেঘ কেটে যাবে, সমস্যার জট খুলে যাবে, সমস্ত অন্ধকার দূর হ'য়ে যাবে তোমার জীবনের। পিতামাতা, স্বামীস্ত্রী, ভাইবোন, পুত্রকন্যা নিয়ে ঝমঝম ভরা সংসারে সবাইকে নিয়ে সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে। গ্যরান্টি। ১০০ তে ২০০ ভাগ শান্তি, সুখের গ্যারান্টি। এমন সুখ শান্তি কোথাও পাবে না।
আর, হে আমার প্রিয়!
তুমি বুকে হিংসা রেখো না। মানুষকে অপমান, অশ্রদ্ধা ক'রো না। কাউকে কটু কথার আঘাত দিও না। সব সহ্য করো। অন্যের দোষত্রুটি ধ'রো না। কারও নিন্দা, কুৎসা ক'রো না। গুরুজনকে, শ্রেষ্ঠকে, বড়কে অমান্য, অসম্মান ক'রো না। তোমার গুরুজনের প্রতি সমীহ ক'রে কথা ব'লো। পদে পদে কাউকে অপদস্থ, লাঞ্ছনা ও গঞ্জনা ক'রো না। শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির, শ্রেষ্ঠজনের বিরুদ্ধে মিথ্যে প্রচার, গালাগালি, ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়িয়ো না। ষড় রিপুকে কন্ট্রোল করো, লাগামছাড়া ব্যবহার ক'রো না। তোমার প্রতি করা অন্যায়কে সহ্য করো। বৃত্তি-প্রবৃত্তির দাসত্ব ক'রো না আর ইত্যাদি নারকীয় গুণের অধিকারী হ'য়ো না।
তাহ'লে তুমি ভালো থাকবে, সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে, আনন্দে থাকবে। দীর্ঘায়ূ ও সুস্থ জীবনের অধিকারী হবে। ঐন্দ্রিলার মতো অকাল মৃত্যু হবে না। রোগ, শোক, গ্রহদোষ, বুদ্ধি বিপর্যয়, দারিদ্রতা ব'লে কিছু থাকবে না। যদিও বা কিছু বিপদ বা সমস্যা আসে তাহ'লে তা তাঁর দয়ায় সামান্যের উপর দিয়ে চলে যাবে। এক মণ এক সের ওজনের হ'য়ে যাবে। তাঁকে যদি প্রাণপণে জড়িয়ে ধ'রে থাকো সবসময় উঠতে, বসতে, চলতে, ফিরতে তাহ'লে কুষ্ঠিতে লেখা যাবতীয় অশুভ তাঁর দয়ায় মুছে যাবে। দয়াল ঠাকুর নিজের মুখে বলেছেন, "ইচ্ছে করলে আমি কুষ্ঠি ওলোট পালোট ক'রে দিতে পারি।" তাঁকে ধ'রে থাকলে, তাঁর কাজ করলে আয়ু বৃদ্ধি পায়।
তাই বলি, হে আমার প্রিয়! The greatest phenomenon of the world SriSri Thakur Anukulchandra-কে জীবনে গ্রহণ করো, তাঁর দেওয়া বিধান পালন করো, পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাঁচো ও বাঁচাও। আর চুটিয়ে সারাজীবন আনন্দ উপভোগ করো।
ঐন্দ্রিলার মতো তা যতই মৃত্যু যোগ থাকুক না কেন অকালে অসময়ে অতৃপ্তি নিয়ে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যেতে হবে না।
কারণ দয়াল আমার পরমপিতা যুগপুরুষোত্তম জীবন্ত ঈশ্বর সৃষ্টিকর্তা নিজেই অকাল মৃত্যু অনুমোদন করেননি। -------প্রবি।
( রচনা ২২শে নভেম্বর'২০২২)
হে আমার প্রিয়,
সৎসঙ্গীর সংজ্ঞা ঠাকুর কি দিয়েছেন তা তুমি জানো তো? ঠাকুরের দীক্ষা নিলেই কি সৎসঙ্গী হ'য়ে যায়? তুমি কি নিজেকে সৎসঙ্গী ব'লে মনে করো? রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণের অনুগামীরা কি সৎসঙ্গী নয়? জীবন্ত ঈশ্বর ছাড়া নিরাকার ঈশ্বর বা মূর্তির একনিষ্ঠ পূজারী যারা তাঁরা কি সৎসঙ্গী নয়? সৎসঙ্গ বা সৎসঙ্গীর ব্যাপক অন্তর্নিহিত অর্থ কি? যদি মনে করো তুমি ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের দীক্ষা নিয়েছো আর সৎসঙ্গী হ'য়ে গেছো তাহ'লে মূর্খের স্বর্গে বাস করছো।
আর, দায়সারা গোছের তাঁর দীক্ষা নিলেই যে তাঁর দয়ার অধিকারী হওয়া যায় তা কিন্তু নয়। বিধি থেকে বিধাতা। তিনি বিধির বাইরে যান না। যদি তাই হ'তো তাহ'লে সৎসঙ্গীদের জীবনে, সৎসঙ্গীদের সংসারে এত দুঃখ, কষ্ট, বিপদ আপদ থাকতো না। তাঁর দয়ার বাতাস সবার জন্য বইছে। যে তার শরীরের, মনের, আত্মার দরজা, জানালা খুলে রাখবে তার জীবনেই তাঁর দয়ার বাতাস ঢুকবে, ব'য়ে যাবে; নতুবা নয়। যে আলোর দিক থেকে অর্থাৎ তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকবে আর অন্ধকার অন্ধকার অর্থাৎ দুঃখ, কষ্ট, জ্বালা, যন্ত্রণা ব'লে চীৎকার করবে সেক্ষেত্রে দয়ালের চোখের জল ফেলা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। ছেলে যদি বাপকে না মানে, বাপের অনুশাসন না মানে তাহ'লে বাপের যেমন কিছু করার থাকে না ঈশ্বরের ক্ষেত্রেও তাই। বাস্তবে আমার তোমার ঘরের পিতামাতার মতো। সেক্ষেত্রে তোমার না বুঝে বলা ঈশ্বর 'স্বার্থপর" কথাই ঠিক। হ্যাঁ! তোমার বোধ অনুযায়ী ক্ষুদ্রতর অর্থে তিনি স্বার্থপর! তিনি বিশেষ কাউকে দয়া করেন আর কাউকে করেন না তা নয়। তিনি দয়ার সাগর! যে ডুব দিয়েছে সেই সাগরে সেই তাঁর দয়ায় স্নান করেছে। তাঁর দয়ার সাগরে অর্থাৎ বিস্তারে তোমার অস্তিত্ব হারাও। সৎ-এর সঙ্গী হও। অর্থাৎ সত্ত্বার সত্ত্বা পরমসত্ত্বায়, অস্তিত্বের অস্তিত্ব পরম অস্তিত্ব, আত্মার আত্মা পরমাত্মায় মিলিত হও, লীন হও তখন আর তোমার আলাদা অস্তিত্ব ব'লে কিছু থাকবে না। নুনের পুতুলের মতো নোনা জলে গলে যাবে। বগবগানি আর থাকবে না। ঈশ্বর আমার বাপের চাকর না। ঈশ্বর আমার জমিদারী নয় যে আমি যা ইচ্ছা তাই তাঁকে ব্যবহার করবো, তাঁকে দিয়ে করাবো। তাই জেনেবুঝেই আমার আগের লেখায় সৎসঙ্গীর আগে 'প্রকৃত' শব্দ ব্যবহার করেছি। বাঁচতে যদি চাও, অস্তিত্বের বিনাশ যদি না চাও, বাড়তে যদি চাও, তাঁর দয়া যদি পেতে চাও, অকাল মৃত্যু যদি না চাও, দীর্ঘায়ু যদি চাও, রোগ, শোক, গ্রহদোষ, বুদ্ধি বিপর্যয়, দারিদ্রতার হাত থেকে যদি নিস্তার পেতে চাও তাহ'লে এই 'প্রকৃত সৎসঙ্গী' হ'য়ে ওঠা ছাড়া দ্বিতীয় কোনও উপায় নেই, পন্থা আমার জানা নেই।
বুক ভরা হিংসা, মানুষকে অপমান, অশ্রদ্ধা করা, কটু কথার আঘাত করা, সহ্য না করা, অন্যের দোষত্রুটি ধরা, নিন্দা, কুৎসা করা, গুরুজনকে, শ্রেষ্ঠকে, বড়কে না মানা, সম্মান, সমীহ না করা, পদে পদে অপদস্ত করা, লাঞ্ছনা ও গঞ্জনা করা, শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির, শ্রেষ্ঠজনের বিরুদ্ধে মিথ্যে প্রচার করা, গালাগালি করা, ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানো, ষড় রিপুকে লাগামছাড়া ব্যবহার করা, বৃত্তি-প্রবৃত্তির দাসত্ব করা ইত্যাদি নারকীয় গুণের অধিকারী কি সৎসঙ্গী হ'তে পারে?
তুমি কি এগুলির একটারও অধিকারী?
----প্রবি।
অভিজ্ঞতাঃ দুরন্ত এক্সপ্রেস ও আমার দয়াল ঠাকুর।
10 comments
0 Comments
অভিজ্ঞতাঃ কৃষ্ণপূজা ও অনুকূলপূজা।
বর্তমানে এই উৎসব তথা পুজো তথাকথিত মূর্তি পুজা বা পুতুল পুজাতে পরিণত হয়েছে। সারাদিন ধ'রে লোকদেখানো শ্রীকৃষ্ণের চরণপুজায় মগ্ন থাকে তাঁর ভক্তরা। তাঁর গ্রন্থ গীতা পাঠ তো দূরের কথা গীতা গ্রন্থ দর্শন করায় হয়নি আজ পর্যন্ত। গীতা গ্রন্থ আজ শুধু হিন্দুদের মৃত্যুর পর শ্রাদ্ধের সময় পাঁচটি টাইটেলধারী ব্রাহ্মণকে দান করা প্রথায় এসে দাঁড়িয়েছে। আজ জীবন্ত ঈশ্বর পুরুষোত্তম পরমপিতা মূর্ত ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অমূর্ত ভগবান তেত্রিশ কোটি দেবদেবীর মূর্তি পূজার মতো পূজিত হয় কৃষ্ণমন্তরীদের দ্বারা! আজ থেকে পাঁচ হাজার কি ততোধিক বছর আগে তিনি এসেছিলেন। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা, সংগ্রাম, লড়াই, যুদ্ধ, অপমান, লাঞ্ছনা, জীবনে গৌরবময় উত্থান ও অমানুষিক পরিশ্রম ইত্যাদিতে পরিপূর্ণ বৈচিত্রময় জীবন। সেইসমস্ত বিশাল দুঃখময় যন্ত্রণাময় সংগ্রামে পরিপূর্ণ জীবনের কথা কৃষ্ণমন্তরী বা কৃষ্ণানুগামীরা খোঁজখবর ও খেয়াল রাখে না এবং রাখার প্রয়োজনও মনে করে না। শুধু তাঁর জন্মকে বা রাসপূর্ণিমাকে কেন্দ্র ক'রে বাড়ীতে বা মাঠেঘাটে পুজোর নামে তিলক সর্ব্বস্ব ফুর্তি, ফুর্তি আর ফুর্তি! ব্যাস! রঙ্গিন ঝলমলে কাপড় দিয়ে জড়ানো নাড়ু হাতে বাল গোপালকে কিম্বা বাঁশি হাতে কৃষ্ণকে ঘরে ঘরে স্থাপনা ক'রে পুজো করার মাধ্যমে তাঁর আগমনের উদ্দেশ্য শেষ। এতেই কৃষ্ণ আরাধনা শেষ! এর বেশী আর কিছু না।
ঠিক তেমনি ইদানীং একই জিনিস পরিলক্ষিত হয় শ্রীকৃষ্ণের বর্তমান শেষ নবরূপ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের কিছ দীক্ষিতদের মধ্যে। রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের অধিবাস ও পূজার আয়োজন হ'য়ে থাকে অনেক গৃহে। নানারকমের ফল সাজিয়ে, ফুল, তুলসী, বেলপাতা ইত্যাদি দিয়ে, আমপল্লব, সিন্দুর দিয়ে ঘট সাজিয়ে, আলপনা দিয়ে, ধূপ ধুনো ও প্রদীপ জ্বালিয়ে পুরোহিতের মাধ্যমে খুব ধুমধাম ক'রে মন্ত্রোচারণের মধ্যে দিয়ে সারাদিনব্যাপী ভোগ আরতি সহ দূর্গা, কালী, শিব ইত্যাদি মূর্তি পূজার মতো শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের পূজা হয়। এই পুজো কেন করা হয়? এই পুজোর কথা কি ঠাকুর ব'লে গেছেন? ঠাকুর কি কোথাও বলেছেন আমার মূর্তি বানিয়ে পূজার সামগ্রী সাজিয়ে ঠাকুরমশাই দিয়ে ধূপধুনো উড়িয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুকূলপূজার মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যে দিয়ে তথাকথিত নিষ্ঠাভরে আমার পুজা করবি তোরা? তিনি কি অনুকুলপূজার নিয়ম ও মন্ত্রো তৈরী ক'রে দিয়ে গেছেন? প্রতিবছর নিয়ম ক'রে এই অনুকূলপুজো অনুষ্ঠান পালন করা হয়। যতদিন কোমরে জোর থাকে ততদিন ধূমধাম ক'রে মূর্তিপুজার মত অনুকূলের মূর্তি পূজা করা হয়। তারপর একদিন প্রথায় পরিণত হ'য়ে দাঁড়াবে এই পূজো। এখন যেমন প্রতিবছর বিশেষ দিনে বারোয়ারী পুজোর মতো ছোটবড় নানা দেবদেবীর পুজা করা হয় সারাবছর ঠিক তেমনি বর্তমানে জন্মাষ্টমীতে, রাসপূর্ণিমাতে বারোয়ারী পুজা হয় শ্রীকৃষ্ণের, তেমনি আগামীতে সৎসঙ্গের পরিবর্তে, তাঁর চলনপূজার মাধ্যমে চরিত্র গঠনের পূজার পরিবর্তে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের বারোয়ারী চরণপূজার অনুষ্ঠান দেখতে পাবো আমরা। যার শুরুয়াত আমরা এখনই দেখতে পাই বিভিন্ন বিক্ষুব্ধ সৎসঙ্গী দ্বারা মদতপুষ্ট গোষ্টিদ্বন্ধে আক্রান্ত যজন, যাজন, ইষ্টভৃতি না করা, স্বস্ত্যুয়নী, সদাচার পালন না করা, প্রার্থনা, নামধ্যানের ধার না ধারা কিছু ব্যক্তি ও চরণপূজায় বিশ্বাসী কিছু সৎসঙ্গী দ্বারা আয়োজিত অনুষ্ঠানের মহরাতে।
তাই বুঝি শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র এবারে ব'লে গেছিলেন, "পথ খুঁজে তুই পথ হারালি অনুষ্ঠানের মহরায়, অনুষ্ঠানই বসলো পেয়ে পাওয়া যে গেল গোল্লায়।"
কথায় আছে, পঞ্চভূতের ফাঁদে ব্রহ্মা পড়ে কাঁদে।"
ঠিক তেমনি, ভক্তকূল মাঝে পরমপিতা কাঁদে।------প্রবি।
( রচনা ৯ই নভেম্বর)
1
হে আমার প্রিয়জন।

Tuesday, November 22, 2022
হে আমার প্রিয়জনঃ আগাম সাবধান।।
আমি তাকে চিনিনা, দেখিনি কোনওদিন সাক্ষাতে বা টিভি সিরিয়ালের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু ইদানিং ফেসবুকের দৌলতে অল্পবিস্তর তার সম্পর্কে জেনেছি।
টিভি সিরিয়াল দেখি না, খবর শুনি না। কারণ সিরিয়াল দেখে পরিবার, সংসার, সমাজ, সভ্যতা ভাঙ্গার নীল নকশা শেখার ইচ্ছা আমার নেই আর টিভির পক্ষপাতপূর্ণ, অতিরঞ্জিত, মিথ্যে, ধ্বংসাত্মক খবরাখবর শুনে বাকী জীবনে আর নিদ্রাহীনতায়, সুগার, ব্লাডপ্রেসার আর নার্ভ ডিসঅর্ডার ইত্যাদিতে ভুগতে চাই না।
তবুও তুমি কি বাঁচবে? বাঁচবে না। কারণ, তোমার চারপাশের পরিবেশ তোমাকে বাঁচতে দেবে না।
তাহ'লে কি ক'রে বাঁচবে? কিভাবে তোমার প্রিয়জনকে বাঁচাবে?
ঐন্দ্রিলা দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগেছে দীর্ঘদিন। লড়াই করেছে ব্যাধির সঙ্গে। কখনও জিতেছে, কখনও হেরেছে। আর তা ছিল সাময়িক। অবশেষে সব বন্ধন ছিন্ন ক'রে এ পারের সব ছেড়ে চলে চলে গেল ওপারে অকালে। পিছনে রেখে গেল প্রিয় অপ্রিয় সব জনকে। প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেল প্রিয়জনের মনে ঈশ্বরের অবিচারের আর জন্ম দিয়ে গেল ঈশ্বরের প্রতি অবিশ্বাসের!
প্রশ্ন জাগে মনে। এটা কি যাওয়ার বয়স? ঈশ্বরের এ কি রকম অবিচার? ঈশ্বরের প্রতি কি আর বিশ্বাস রাখা যায়?
এমন ঘটনা যখনই কারো পরিবারে, সংসারে, সমাজে কারো জীবনে ঘটে তখন স্বাভাবিকভাবেই এই প্রশ্নগুলি ওঠে। তখন সাধারণ ভাঙ্গাচোরা মানুষের মনে এই প্রশ্নগুলি বড় হ'য়ে দেখা দেয়। তখন বিচার বিবেচনার দরজা রুদ্ধ হ'য়ে যায়। একটা মারাত্মক ব্যক্তিগত ক্ষতি মানুষকে বোধবুদ্ধি রহিত বিবেকহীন মানুষে পরিণত করে। আর স্বাভাবিকভাবেই সেটা হয়েছে ঐন্দ্রিলার শুভানুধ্যায়ীদের ক্ষেত্রে। তারা প্রায় সবাই ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর দায় ঈশ্বরের ওপরে চাপিয়ে দিয়েছে। এটা ঐন্দ্রিলার প্রতি ঈশ্বরের অন্যায় অবিচার।
যাই হ'ক। আমার প্রিয়জন,
তোমরা জেনে রাখো এই একটা জায়গা আছে যেখানে জীবনের প্রতি ক্ষেত্রের খারাপ ফলাফলের সমস্ত দায় দায়িত্ব ঈশ্বরের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায়। ঈশ্বরকে না মেনে, ঈশ্বরের অস্তিত্বে অবিশ্বাস রেখে, ঈশ্বরকে গাল দিয়ে, ঈশ্বর সম্পর্কে কটু কথা ব'লে, ঐশ্বরিক কাজের বিরোধীতা ক'রে দুর্দশাগ্রস্ত জীবনের চরম দুর্বল মুহূর্তে ঈশ্বরের সাহায্য, দয়া চেয়ে বঞ্চিত হ'য়ে ঈশ্বরকে দ্বিগুণ উৎসাহে একেবারে উলঙ্গ হ'য়ে গালি দেওয়া যায়। আবার যুগ যুগ ধ'রে ঈশ্বর পূজার নামে বৃত্তি-প্রবৃত্তির ঘেরাটোপে বন্দী হ'য়ে রিপু তাড়িত জীবন যখন ঈশ্বরের দয়া লাভে বঞ্চিত হয় তখন ঈশ্বর হ'য়ে যায় আমার শত্রু। যখন ঈশ্বরের চলন পূজার পরিবর্তে তাঁর চরণপূজায় মগ্ন হ'য়ে ধূপধুনো, ফুল চন্দনের আবেশে ডুবে গিয়ে মত্ত হ'য়ে থাকি আর পরিবর্তে যখন শয়তানের বিষাক্ত ছোবলে ক্ষতবিক্ষত হ'ই, না ফেরার দেশের অতিথি হ'য়ে যাই তখন ঈশ্বর আমার হ'য়ে ওঠে সাক্ষাৎ শয়তান, যম।
হে আমার প্রিয়, যারা একদিন ঈশ্বরকে, ঈশ্বরের অস্তিত্বকে স্বীকার করতো না, সাম্যবাদের হাওয়ায় পাখনা মেলে উড়তে উড়তে প্রবল ঝাপটা মারতো ঈশ্বরের চোখেমুখে, যারা ঈশ্বরকে কন্ডোম পড়াতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা বা লজ্জাবোধ করতো না তারা যখন বিরাট কিছু পাওয়ার লোভে ঈশ্বরের আরাধনা করে আর পেয়েও যায় কোনও জ্ঞাত অজ্ঞাত কারণবশতঃ তখন তারা আবার ঈশ্বরের পা চাটা পূজারী ব'নে যায়। আর ভাবে ঈশ্বরের পা চাটলেই যখন যা ইচ্ছা হবে তাই আলাদিনের প্রদীপের দৈত্যের মতো পেয়ে যাবো। আর না পেলে? না পেলে? ছুঁড়ে ফেলে দেব আস্তাকুড়ে।
তাই আমার প্রিয়জনেরা।
তোমরা সাবধান হও। এটা কলি যুগ। ঘোর কলি। এ যুগে তিন ভাগ অধর্ম আর এক ভাগ ধর্ম। সময় তোমাদের অধর্মের পথে টেনে নিয়ে যাবেই যাবে। তোমরা আটকাতে পারবে না। অধর্মের ঝড় প্রবল ভয়ঙ্কর। অধর্মের পাল্লা ভারী। বাঁচতে পারবে না। তোমায় তোমার চারপাশ বাঁচতে দেবে না।
তাই বাঁচতে যদি চাও তাহ'লে তুমি বুড়ি ছুঁয়ে রাখো অর্থাৎ জীবন্ত ঈশ্বর পরমপিতা যুগ পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের চরণে আশ্রয় নাও। তাঁর বিধান মেনে চলো। তোমার কোনও ভয় নেই। তোমার অদৃষ্টে অশুভ যা থাকে থাকুক। তুমি যা কিছু খারাপ নিয়েই জন্ম গ্রহণ করো না কেন। তোমার পিতামাতার কুকর্মের ফল তোমার ওপর যাই নেবে আসুক না কেন। তোমার কুষ্টিতে দুর্ঘটনা বা মৃত্যুযোগ যাই-ই লেখা থাক না কেন। তুমি যতই স্বল্প আয়ু নিয়ে আসো না কেন। এসো, পরমপিতার চরণতলে এসো। যুগোপযোগী ক'রে আসা ঈশ্বর পরমপিতার নূতন জীবন্ত রূপকে জীবনে গ্রহণ করো। তাঁর দেওয়া বীজনাম অনবরত জপ ক'রে যাও। তুমি কিছু করো আর না করো তাঁর দেওয়া ইষ্টভৃতি অর্থাৎ নিজে কিছু অন্নজল গ্রহণ করার পূর্বেই অতি প্রত্যুষে তাঁকে যা পারো কিছু খেতে দাও। দু'বেলা না পারলে একবেলা, একবেলা না পারলে অন্তত সপ্তাহে একদিন শুক্রবার তাঁর প্রার্থনা করো। তাঁর দেওয়া বীজনাম শয়নে স্বপনে জাগরণে নাম জপ করো। নাম জপ করার চেষ্টা করো। অভ্যাস করো। ভুলে যাবে ঠিক আছে; মনে পড়লেই করো। মনে পড়া সত্ত্বেও অবহেলা ক'রো না। দয়াল ঠাকুরকে ভালোবাসো, প্রত্যাশাহীন ভালোবাসো। বিশ্বাস করো তাঁকে। বিশ্বাস রাখো তাঁর প্রতি। তাঁর প্রতি নির্ভর করো। দেখবে ধীরে ধীরে তোমার জীবনের সব বিপদের মেঘ কেটে যাবে, সমস্যার জট খুলে যাবে, সমস্ত অন্ধকার দূর হ'য়ে যাবে তোমার জীবনের। পিতামাতা, স্বামীস্ত্রী, ভাইবোন, পুত্রকন্যা নিয়ে ঝমঝম ভরা সংসারে সবাইকে নিয়ে সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে। গ্যরান্টি। ১০০ তে ২০০ ভাগ শান্তি, সুখের গ্যারান্টি। এমন সুখ শান্তি কোথাও পাবে না।
আর, হে আমার প্রিয়!
তুমি বুকে হিংসা রেখো না। মানুষকে অপমান, অশ্রদ্ধা ক'রো না। কাউকে কটু কথার আঘাত দিও না। সব সহ্য করো। অন্যের দোষত্রুটি ধ'রো না। কারও নিন্দা, কুৎসা ক'রো না। গুরুজনকে, শ্রেষ্ঠকে, বড়কে অমান্য, অসম্মান ক'রো না। তোমার গুরুজনের প্রতি সমীহ ক'রে কথা ব'লো। পদে পদে কাউকে অপদস্থ, লাঞ্ছনা ও গঞ্জনা ক'রো না। শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির, শ্রেষ্ঠজনের বিরুদ্ধে মিথ্যে প্রচার, গালাগালি, ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়িয়ো না। ষড় রিপুকে কন্ট্রোল করো, লাগামছাড়া ব্যবহার ক'রো না। তোমার প্রতি করা অন্যায়কে সহ্য করো। বৃত্তি-প্রবৃত্তির দাসত্ব ক'রো না আর ইত্যাদি নারকীয় গুণের অধিকারী হ'য়ো না।
তাহ'লে তুমি ভালো থাকবে, সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে, আনন্দে থাকবে। দীর্ঘায়ূ ও সুস্থ জীবনের অধিকারী হবে। ঐন্দ্রিলার মতো অকাল মৃত্যু হবে না। রোগ, শোক, গ্রহদোষ, বুদ্ধি বিপর্যয়, দারিদ্রতা ব'লে কিছু থাকবে না। যদিও বা কিছু বিপদ বা সমস্যা আসে তাহ'লে তা তাঁর দয়ায় সামান্যের উপর দিয়ে চলে যাবে। এক মণ এক সের ওজনের হ'য়ে যাবে। তাঁকে যদি প্রাণপণে জড়িয়ে ধ'রে থাকো সবসময় উঠতে, বসতে, চলতে, ফিরতে তাহ'লে কুষ্ঠিতে লেখা যাবতীয় অশুভ তাঁর দয়ায় মুছে যাবে। দয়াল ঠাকুর নিজের মুখে বলেছেন, "ইচ্ছে করলে আমি কুষ্ঠি ওলোট পালোট ক'রে দিতে পারি।" তাঁকে ধ'রে থাকলে, তাঁর কাজ করলে আয়ু বৃদ্ধি পায়।
তাই বলি, হে আমার প্রিয়! The greatest phenomenon of the world SriSri Thakur Anukulchandra-কে জীবনে গ্রহণ করো, তাঁর দেওয়া বিধান পালন করো, পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাঁচো ও বাঁচাও। আর চুটিয়ে সারাজীবন আনন্দ উপভোগ করো।
ঐন্দ্রিলার মতো তা যতই মৃত্যু যোগ থাকুক না কেন অকালে অসময়ে অতৃপ্তি নিয়ে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যেতে হবে না।
কারণ দয়াল আমার পরমপিতা যুগপুরুষোত্তম জীবন্ত ঈশ্বর সৃষ্টিকর্তা নিজেই অকাল মৃত্যু অনুমোদন করেননি। -------প্রবি।
কবিতাঃ তোমারি জন্য।
কখন তুমি প্রভু সামনে এসে বাড়িয়ে দেবে হাত ??
তৃষ্ণা আমার জীবনভর তোমায় কাছে পেতে
বিষয় তৃষ্ণা যদি ভুলায় সে তৃষ্ণা রাজী ন'ই তা'তে।
ভালোবাসি তোমায় প্রভু সত্যি বলছি আমি
অন্য ভালোবাসা যদি ফোটায় হুল
ওঝা হ'য়ে প্রভু বিষ ঝড়িয়ে দিও তুমি।
তোমার নেশায় বুঁদ হ'য়ে আমি থাকি সারাক্ষণ
কাটিয়ে দিও অন্য নেশা যদি ভুলায় আমার মন।
বিদ্যার সাগর আমি চাই না হ'তে,
চাই না দিতে ডুব জ্ঞান সাগরে
যদি প্রশ্ন তোলে মন তোমাতে, তোমার অস্তিত্ব মাঝারে।
তোমারি চরণে সুখ প্রভু, তোমারি চরণে শান্তি
যে সুখ তোমারে ভুলায় আমি চাই না সে সুখশান্তি ;
তুমি বিনা সংসারে যা কিছু আছে বিত্তবৈভব
তা সুখশান্তির নামে অসুখ আর অশান্তি।
কথার স্রোতে ভাসি শুধু কথার ফানুশ ওড়ায়
দিনের পর দিন রাতের পর রাত তোমার কথা নাই
যদিও থাকে কখনও তোমার কথা চরিত্রে কদাপি নয়
সে কথার জঞ্জালে দয়াল মরিতে আমায় যেন না হয়।
বুকেতে হাজারো কষ্ট মাথায় যন্ত্রণা প্রভু
যদি তোমারে পেতে সহিতে আমারে হয়
হাসি মুখে তা সহিবো আমি তোমারে করিতে জয়।
আঁখি জলে ভাসিবো আমি ভাসিবো জীবনভর
ভাসিতে ভাসিতে রাজি আমি প্রাণ ত্যাজিতে
যদি আসো প্রভু দয়াল আমার থাকো আমার ঘর।
প্রবি।
Monday, November 21, 2022
প্রবন্ধঃ ছাত্র আন্দোলন ( Degree is not the measurement---------)
Degree is not the measurement of human being based on education.
Saturday, November 19, 2022
কবিতাঃ এমনিভাবেই............
একদিন চলে যাবো ওপারে,
ঘুচিয়ে সব যত ভেদাভেদ;
সেদিন থাকবে না কোনো দুঃখ,
কোনো যন্ত্রণা, থাকবে না ব্যর্থতা
আর না পাওয়ার কোনো খেদ।
ঘুম ভাঙলেই পড়বে না মনে
ছন্নছাড়া জীবনের ব্যথা,
শুনবে না এ কান আর প্রতিনিয়ত
কিছু না হতে পারার জন্য
এ জীবনে আপনজনের কথা;
ভেসে উঠবে না আর কখনো
যৌবনের ফেলে আসা দিনগুলির
ব্যর্থতার নিদারুণ যন্ত্রণাময় ছবি।
অসংখ্য মানুষের অহেতুক কৌতুহল
জীবনকে করবে না আর ব্যতিব্যস্ত,
শুনবে না হুংকার আর এই জীবন
বেইমানি আর নেমকহারামীর;
প্রতিদিন ঘুম ভেঙ্গে মাঝরাতে
বিছানায় উঠে বসবে না আর এই জীবন
চরম বেইমানির সাবলীল রূপ দেখে!
আঃ কি শান্তি! কি সুখ! এই ভেবে_______
ভেসে আসবে না আর মীরজাফরের কান্না.........
‘তোমার ভাগ্য নিয়ে যারা হ’ল ভাগ্যবান,
সিঁড়ি হয়ে জীবনে যাদের বসালে সিংহাসনে
ব্যর্থ হয়ে নিজে যাদের করেছো সফলতা দান
বাঁচাতে প্রাণ অন্যের পড়েছো বিপদে বারেবারে জীবনে
সেই ভালোমানুষরা যদি করে নির্লজ্জ শয়তানি
কি এমন তবে করেছি আমি বেইমানি?
যে এই নাম আর রাখে না কেহ সন্তানের’!
বেঁচে যাবো সেদিন, মির্জাফরের প্রশ্নের
নিরুত্তর থাকার অসহ্য যন্ত্রণা থেকে,
যেদিন যাবো চলে।
বড় ভালো হবে সে দিনটা!
অনেক মানুষের ভালোবাসা
অকৃত্রিমভাবে ঝরে পড়বে
নিথর শরীরের ওপর! গুঞ্জনে গুঞ্জনে
ভরে যাবে চারপাশ! ভালোবাসার
আলিঙ্গনে বন্দী হয়ে ঘুরে বেড়াবো
সকলের মন থেকে মনে স্মৃতিচারণের
অবসরে! সেদিন ঐ হিম হয়ে যাওয়া
শরীরের প্রতি থাকবে না কারও
ঘৃণা, কোনও প্রতিশোধ,অকারণ রাগ।
শুধু ভালোবাসা শিউলি ফুলের মত অনবরত
ঝরে পড়বে উদার ও অকৃত্রিমভাবে!!
বন্ধু হয়েও অকারণ শ্ত্রু
যারা ছিল আমার, তারাও.........
ফুলের মালায় জানাবে অশেষ ভালোবাসা
মনে ক'রে সেই দিনের_______
প্রয়োজনে বা দুর্দিনে তাদের প্রতি
অকৃত্রিম আর নিঃস্বার্থ আমার
______বাড়ানো হাতের কথা!
এমন কেন হয় না এখন??
যা বেঁচে থাকতে চাই!!
আর যেদিন যাবো চলে সেদিন
আকাশের কোণে কোণে, শিউলির ডালে ডালে,
বাতাসে বাতসে ঘুরে ঘুরে দেখে যাবো সব
আর ভেজা চোখে মাতাল করা ভালোবাসায়
সবার শরীরে শরীর ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাবো চলে
অকৃত্রিম, নির্মল হাসিতে অশরীরী হয়ে!
নরম অশরীরী হাতের স্পর্শে
শরীরী হাতের মত তখনও
শুষে নেবো সকলের দুঃখকষ্ট
আর সেদিনও বলে যাবো সবার কানে কানে
ভালো থেকো আর সবাইকে রেখো ভালো,
ভালোবেসো আর দেখিও সবাইকে আলো;
ঐ শোনো, ডাক এসেছে, বন্ধু আমার যত
তমসার পার হতে মহান পুরুষের!
দিও তাঁরে কূল, হৃদয় ফুল
যাবার বেলায় কোরো নাকো ভুল
আর আগের মত।
এমন যেন থাকি এখন
বাকি সময় জুড়ে।
( রচনা ২০শে নভেম্বর'২০১৫)
Friday, November 18, 2022
খোলা চিঠিঃ অর্ণব গোস্বামীকে।
অর্ণব গোস্বামী বর্তমানে আপনি ভারতের সবচেয়ে বিতর্কিত সংবাদিক। বিতর্ক আপনার জনপ্রিয়তা নিয়ে, বিতর্ক আপনার গলার উঁচা আওয়াজ নিয়ে, বিতর্ক আপনার সাংবাদিকতার স্টাইল নিয়ে, বিতর্ক আপনার সাংবাদিকতার সীমাবদ্ধতার অলিখিত শর্ত লঙ্ঘন করা নিয়ে, বিতর্ক আপনার ওঠা, বসা, বলা, চলা, চিন্তা, ভাবনা সব নিয়ে!
জনপ্রিয়তা বিতর্কের সৃষ্টি করে থাকে। আর এর ফলে জন্ম হয় হিংসার। আর হিংসা থেকেই অপছন্দের সূত্রপাত। হীনমন্যতার কারণে ক্রোধ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। তখন কথাবার্তা, চালচলন, চিন্তাভাবনা, মতামত সবকিছুর মধ্যে দোষত্রুটির গন্ধ পায় নিন্দুকেরা। বিতর্ক চরম আকার ধারণ করে।
যেমন আপনার মধ্যে আপনার সংবাদ জগতের বিরোধীরা আপনার জনপ্রিয়তার কারণে আপনার মধ্যে অকারণ দোষত্রুটির গন্ধ পেয়েছে শিয়ালের আঙ্গুর ফল টকের মত!
যেমন,
১) উঁচু গলায় কথা বলা! এদের মতে আপনি চেঁচিয়ে কথা বলেন।
২) সাংবাদিকতার স্টাইল! এদের মতে আপনি আধুনিক মিডিয়া জগতের উপযুক্ত নন।
৩) সংবাদ জগতের অলিখিত এল ও সি লঙ্ঘন করা! এদের মতে ধরি মাছ না ছুঁই পানি তত্ত্ব পালনে আপনি অনুপযুক্ত ও অযোগ্য।
৪) কেঁচো খুঁড়তে খুঁড়তে সাপ বের ক'রে আনার মানসিকতা ইত্যাদি!
আমরা চিরকালীন টিভি চ্যানেলে যে ধরণের খবর পরিবেশনের সঙ্গে পরিচিত সেই পরিচিত জগতের বাইরে অন্য একটা জগতের মধ্যে আপনি আনতে চেয়েছেন দর্শক শ্রোতাদের আপনার নিজস্বতা ও স্বকীয়তা দিয়ে। সেই স্টাইল আমার পছন্দ হ'লে আমি আপনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ আর পছন্দ না হ'লে আপনার নিন্দা, কুৎসায় জগৎ ভাসিয়ে দেবো। আর তাই-ই হয়েছে। আপনি অপছন্দের শিকার হয়েছেন। তাই সরকারী প্রশাসনের অন্যায় চাবুক যখন নেবে এসেছিল আপনার উপর, যখন দিনের পর দিন আপনাকে অপদস্ত ও হয়রানী করার প্রক্রিয়া চলছিল সেইসময় আপনার পেশার জগতের তাবড় তাবড় কোনও কেউ আপনার পাশে ছিল না এই স্বাধীন গণতান্ত্রিক ভারতে (?)!
এই পছন্দ অপছন্দ যতটা না সত্যের উপর দাঁড়ায়, ব্যক্তির নিজস্ব মতামতের উপর দাঁড়ায় তার থেকে বেশি, বেশি নির্ভর করে প্রভাব প্রতিপত্তির উপর। রাজনৈতিক দলের প্রভাব, ব্যক্তি বিশেষের প্রভাব, আর্থিক ক্ষমতার প্রভাব ইত্যাদি নানা ধরণের প্রভাব মানুষকে চালিত করে। এই অন্ধ প্রভাব মানুষকে ঠিক বেঠিক চিন্তা থেকে বঞ্চিত করে, বোধশক্তি নষ্ট ক'রে দেয়। কোমর সোজা ক'রে দাঁড়াতে দেয় না। যেমন আপনি সুশান্ত হত্যা, হাতরস কাণ্ড, পালঘর সাধু হত্যা ইত্যাদি নানা বিষয়ে প্রশ্ন তোলার কারণে মহারাষ্ট্রে সরকারে আসীন দল ও প্রভাবশালী ব্যক্তির অনুগামীদের বিরাগভাজন হয়েছেন আর তা ক্রমেক্রমে ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে নানাদিকে নানাস্তরে। এর ফলে আম জনতার মধ্যে বপন হয়েছে বিভেদের বীজ। আর আপনার বিরোধী মিডিয়াকুল এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভেদের বীজকে মহীরুহে পরিণত করতে উঠেপড়ে লেগেছিল নানা কথার ভাঁজে। আর এখান থেকেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল আপনার বিরুদ্ধে আপনার জনপ্রিয়তাকে, আপনার ভাবমূর্তিকে নষ্ট করতে। প্রশ্ন তুলেছিল আপনার চিৎকার ক'রে কথা বলার ধরণ নিয়ে, প্রশ্ন তুলেছিল সংবাদ পরিবেশনের অলিখিত সীমাবদ্ধতাকে ভাঙ্গা নিয়ে; প্রশ্ন তুলেছিল আপনার সততা নিয়ে; বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে; প্রশ্ন তুলেছিল আপনার চরিত্র নিয়ে! সব প্রশ্নগুলিই ছিল অবৈধ। আপনি সমস্ত প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন নিষ্ঠার সাথে আপনার কর্মের উপর দাঁড়িয়ে। আর আম জনতা আম খেতেই ব্যস্ত; গাছ রইলো কি না রইলো সেদিকে দেখার বা ভাবার সময় আমজনতার নেই। আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা এমন মানসিকতা তার। তবে ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে আর সেই ব্যতিক্রমরাই আপনার শক্তি। সেই ব্যতিক্রম শক্তিই আপনাকে শক্ত হ'য়ে দাঁড়াতে সাহায্য করেছে।
যাই হ'ক, আপনার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল প্রার্থনা করি। শুধু এটুকু আপনাকে জানিয়ে রাখার জন্যে পরমপ্রেমময় শ্রী"শ্রীঠাকুর অনুকুল চন্দ্রের কথায় বলি,
১) "তেজ মানে ক্রোধ নয়কো বরং বিনয় সমন্বিত দৃঢ়তা।"
মানুষ আপনার তেজকে ক্রোধ ব'লে ভুল করছে।
২) "স্থিরপ্রতিজ্ঞ হও, গোঁয়ার হ'য়ো না।"
আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী আপনার স্থিরপ্রতিজ্ঞ মনোভাবকে অর্থাৎ দৃঢ়ভাবে সুনিশ্চিত মনোভাবকে গোঁয়ার্তুমি ব'লে ভুল করে।
৩) "স্পষ্টবাদী হও কিন্তু মিষ্টভাষী হও।"
আপনার স্পষ্টকথাকে আপনার বিরুদ্ধবাদীরা মনে করে মিষ্টতাহীন তেতো কথা।
৪) "সত্য বল, কিন্তু সংহার এনো না।"
আপনার শত্রুপক্ষ আপনার সত্যের পক্ষে জবরদস্ত সওয়াল তোলাকে সংহার আনা ব'লে মনে করে ও প্রচার করে।
যাই হ'ক আর নাই হ'ক আম জনতা আম খেতেই ব্যস্ত তাতে গাছ বাঁচলো কি না বাঁচলো তার ধার ধারে না। আপনি এইকথা নিশ্চয়ই জানেন যে, কুৎসা নিন্দা করা সাধারন ও তথাকথিত অসাধারন মানুষের সহজাত ব্যাপার আর তা শত্রুপক্ষের হাত শক্ত করে। আর সঙ্গে যদি যুক্ত থাকে প্রচার মাধ্যম তাহ'লে সোনায় সোহাগা। তবে আবার বলি ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে আর এই ব্যতিক্রমরাই সত্যের পূজারীর শক্তি, মহাশক্তি, প্রাণভোমরা; যেমন আপনার ক্ষেত্রে যা ঘটেছে।
শুধু শেষে আপনাকে আপনার চলার পথে চলার সুবিধার জন্য বলি, একথা নিশ্চয়ই জানবেন ঈশ্বর ছাড়া আপনার আপন ব'লে কেউ নেই এই মতলবি দুনিয়ায়। সব মিথ্যে! সব সময় কাটাবার বন্ধু (Just to kill the time!) আর সুখের দিনের পায়রা! এ প্রসঙ্গে একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে গেলো। এখানে উল্লেখ করলে বেমানান হবে না।
আমার তখন বয়স তিরিশের কাছাকাছি। আমার এলাকার যিনি গড ফাদার ছিলেন (এখন অবশ্য আর নেই, রাজনৈতিক টানাপোড়েনে মার্ডার হ'য়ে যান) তিনি একদিন ছুটির দিনের সকালবেলায় তার সব চ্যালাচামুণ্ডা নিয়ে আড্ডায় মগ্ন। সেইসময় আমি বিশেষ কাজে সেখানে গিয়ে উপস্থিত হ'ই। আমাকে দেখে তিনি ব'লে উঠলেন, ঐ যে বাপী এসেছে (আমার ডাক নাম বাপী) ঐ বলতে পারবে এর উত্তর। আমি প্রথম থেকে না থাকার জন্য ঠিক কি বলতে চাইছে ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। পরে বুঝতে পারলাম যখন আমাকে বললো, আচ্ছা বলতো, ভাত ছেটালে কাকের অভাব হয়? আমাকে কয়েকবার জিজ্ঞেস করলেন। তবুও আমি চুপ ক'রে আছি দেখে বললো, চুপ ক'রে আছিস কেন? আমি তোর কাছে সঠিক উত্তরটা আশা করি। আমি কি করবো, কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না। কারণ আমি এই তির্যক কথার ইঙ্গিতটা বুঝতে পেরেছিলাম। বুঝতে পেরেছিলাম তিনি কাদের উদ্দেশ্যে আর কেনই বা এই কথা বলেছিলেন। ঐ ঘরে তখন সবাই চুপ, মুখে কুলুপ এঁটে চুপ ক'রে ব'সে আছে। 'আরে বল না, চুপ ক'রে আছিস কেন!?" ঝাঁঝালো জোরে কথায় সম্বিৎ ফিরে পেলাম। বুঝতে পারছিলাম একটা চাপা রাগ যেন ফেটে বেরিয়ে আসতে চাইছে। দেখলাম সবাই আমার দিকে চেয়ে আছে। সবার রহস্যময় চাউনিগুলি যেন আমাকে কি বলতে চাইছে! আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে আমতা আমতা ক'রে ব'লে ফেললাম সেই কথাটা যেটা আমার বিবেক বলতে চাইছিল। আমি বললাম, "হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন, ভাত ছেটালে কাকের অভাব হয় না, কোনও না কোনও কাক জুটে যাবে এটা ঠিক কিন্তু আসল রহস্যটা অন্য জায়গায়।" একথা শুনে তিনি উৎসুক হ'য়ে উঠে বললেন, এর মধ্যে আবার রহস্যটা কোথা থেকে এলো!? দেখলাম, সবাই বেশ কৌতূহল নিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে আমি কি বলি তা শুনবে ব'লে। আমি বললাম, "ভাত ছেটাবার পর যখন ছেটানো ভাত খাওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে কাকেরা তখন দেখতে ভালোই লাগে, একটা মজা হয়, আত্মতৃপ্তি হয়। কিন্তু তারপরে যেটা হয় সেটা মর্মান্তিক!" খুব আগ্রহ নিয়ে এলাকার সেই দাদা অবাক স্বরে ব'লে উঠলো, "মর্মান্তিক! সেটা কি রকম!? আমি বললাম, " ছেটানো ভাত খাওয়া হ'য়ে গেলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তারা সবাই উড়ে চলে যায়। আর উড়ে যাবার সময় যেটা করে তা হ'লো কর্কশ স্বরে কা কা ক'রে উড়ে যায়!" কথাটা বলতে বলতেই যেটা হ'লো সেটা আমার কল্পনার বাইরে ছিল। কথাটা শুনেই দাদা দড়াম ক'রে উঠে দাঁড়িয়ে এক লাথি মেরে পিছনে চেয়ারটা ঠেলে দিয়ে সামনে টেবিলটাকে সরিয়ে দিল তারপরে রাগে গটমট ক'রে বেরিয়ে গেল। ঘরে যারা ছিল তারা সবাই হতভম্ব হ'য়ে তাকিয়ে রইলো তার যাবার পথের দিকে তাকিয়ে। তারপরে সবাই সবার মুখের দিকে চাওয়াচাওয়ি করতে লাগলো। আর ফিসফিস করতে লাগলো আমাকে টার্গেট ক'রে। আমি বুঝতে পারলাম আমার কথা তাদের ল্যাজে পা পড়ার মত অবস্থা হয়েছে।
যাই হ'ক ঘটনাটা তুলে ধরলাম যা আপনার জন্য ইঙ্গিতবহ!
তাই বলি, ঈশ্বর আপনার জীবনে আছেন তো আপনি আছেন আর ঈশ্বর নেই তো আপনার জীবনে কেউ নেই। আপনি একা! ভীষণভাবে একা! জন কোলাহলের মাঝে শুধু হলাহল, জনভূমি মাঝে ধূধূ মরুভুমি আর সব মরীচিকা! তাই সাধু সাবধান! সাবধান সাধু!!
আবার বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের কথায় বলি,
"You are for the Lord not for others,
You are for the lord and so for others."
( তুমি একমাত্র প্রভুর জন্য অন্য কারও জন্য নও'
তুমি একমাত্র প্রভুর জন্য বলেই তুমি সকলের জন্য।)
আপনি ঈশ্বর বিশ্বাসী মানুষ তাই আপনাকে এই কথা বললাম বা লিখলাম। এছাড়া শ্রীশ্রীঠাকুর তাঁর সত্যানুসরণ গ্রন্থে আমার জন্য বলা কিছু কথা তুলে ধরলাম যদি আপনার কোনও কাজে আসে।
১) "হৃদয় দাও, কখনও হ'টে যেতে হবে না।"
২) "নির্ভর কর, কখনও ভয় পাবে না।"
৩) "বিশ্বাস কর, অন্তরের অধিকারী হবে।"
৪) "ধৈর্য ধর, বিপদ কেটে যাবে।"
৫) "সংযত হও, কিন্তু নির্ভীক হও।"
৬) "সরল হও, কিন্তু বেকুব হ'য়ো না।"
৭) "বিনীত হও, তাই ব'লে দুর্বল-হৃদয় হ'য়ো না।"
এখন প্রশ্নঃ
প্রঃ হৃদয় কাকে দেবেন?
উত্তরঃ ইশ্বরকে।
প্রঃ নির্ভর কার উপর করবেন?
উত্তরঃ ঈশ্বরের উপর।
প্রঃ বিশ্বাস কাকে করবেন?
উত্তরঃ ঈশ্বরকে।
প্রঃ কোন ঈশ্বর?
উত্তরঃ এক এবং অদ্বিতীয় জীবন্ত ঈশ্বর! রক্তমাংসের ঈশ্বর! মানুষের পৃথিবীতে মানুষ মায়ের গর্ভে নেবে আসা মানুষ ঈশ্বর!!!
ঈশ্বর রাম, ঈশ্বর কৃষ্ণ, ঈশ্বর বুদ্ধ, ঈশ্বর যীশু, ঈশ্বর মোহাম্মদ, ঈশ্বর মহাপ্রভু, ঈশ্বর রামকৃষ্ণ ও সর্বশেষ জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র।
পরমপিতার কাছে আপনার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল প্রার্থনা ক'রে চিঠি শেষ করলাম।
ইতি, প্রবি।