গতকাল ১৩ই মার্চ'২৫ বৃহস্পতিবার রাত দশটার সময় গিয়েছিলাম ফুড কোর্টে। ফুড কোর্টের পাশে খেলার মাঠের মাঝখানে দেখলাম সেখানে দু'রকমভাবে সাজানো হয়েছে দোল বা হোলির আগের দিন ন্যাড়াপোড়া বা বুড়ির ঘর পোড়ানো ও হোলিকা দহন অনুষ্ঠান। প্রথমে শুকনো গাছের ডালপালা দিয়ে সাজানো বুড়ির ঘর পোড়ানো হ'লো, তারপর ঘুঁটে দিয়ে সাজানো হোলিকা দহন হ'লো। দেখে বেশ ভালো লাগলো। চারপাশে সবাই গোল ক'রে দাঁড়িয়ে দেখছে। আবার একদিকে স্টেডিয়াম, সেখানে বহু লোক ব'সে ব'সে উপভোগ করছে দোল ও হোলীর অনুষ্ঠান। সবাই ফটো তুলছে। ফটো তোলার ইচ্ছা ছিল কিন্তু সঙ্গে মোবাইল না থাকায় বুড়ির ঘর পোড়ানো ও হোলিকা দহন অনুষ্ঠান ধ'রে রাখা গেল না।
যাই হ'ক তারপর এসে বসলাম ফুড কোর্টে। চায়ের অর্ডার দেওয়া হ'লো। আশেপাশের চেয়ারে বসে আছে বাঙালী অবাঙালি সবাই। আলোচনা হচ্ছে বুড়িপোড়া আর হোলিকা দহনের আগুনের উচ্চতা নিয়ে। গল্প করছে দোল বা হোলির প্রোগ্রাম নিয়ে। কিন্তু এই অনুষ্ঠানের উৎস সম্পর্কে আলোচনায় করলো না কেউ। আমি যেখানে বসেছিলাম সেখানে ন্যাড়াপোড়া ও হোলিকা দহন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করাতে বলতে পারলো না কেউ। তার মাঝে কানে ভেসে এলো সুরাপ্রেমীদের আলাপ। আলাপ আলোচনায় জানতে পারলাম সকাল ও সন্ধ্যেবেলার নানাজনের নানারকম সুরা আয়োজনের বৈচিত্র। তার মাঝে কানে ভেসে এলো একজন বলছে সে ১৩হাজার টাকার নানা ব্র্যান্ডের বিদেশী সুরার ব্যবস্থা ক'রে রেখেছে, আয়োজন তার সারা। যারা উল্লাস উদ্দীপনায় আলোচনা করছে তারা সবাই বাঙালী ও অবাঙালী। কোথাও বাঙালী-অবাঙালী আলাদা আলাদা ভাবে কোথাও বা সম্মিলিতভাবে দোল ও হোলীর অনুষ্ঠান সেলিব্রেট করবে। শুনতে পাই বলা হয়, বাঙালী দোলের দিন সকাল থেকে মদ খায় আর অন্য উৎসবে সন্ধ্যে থেকে।তবে যে ১৩হাজার টাকার সুরা সংগ্রহ ক'রে রেখেছে সে একজন অবাঙালী। সুরা সঙ্গে বিরিয়ানি ও মাটন চাপ। নারীপুরুষ সবার নানারকম আনন্দময় জমায়েত ও আলোচনা শুনতে শুনতে বিড়বিড় ক'রে গেয়ে উঠলাম "রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাও যাও গো এবার যাবার আগে।"
তাই বাঙালী-অবাঙালী পার্থক্য করা গেল না। আমরা সবাই রাজা।
No comments:
Post a Comment