Powered By Blogger

Saturday, March 29, 2025

বিচিত্রা ১১৭

শুধু ভুল ধরালেই বন্ধু দায়িত্ব হয় না শেষ;
ঠিকটা দেখিয়ে দিয়ে ভুলকে বলতে হবে, বেশ!
ভুল এবার যা।
( লেখা ৩০শে মার্চ'২০১৮)

নেগেটিভ কথা, নেগেটিভ চিন্তা-ভাবনা, আলোচনা, 
নেগেটিভ লেখা সর্বোপরি নেগেটিভ সংগ সঞ্চালনা
শরীর ও মনকে ক'রে তোলে বিষাক্ত। 
সাবধান! এই সমস্ত বিষাক্ত ছোঁয়াছে রোগ থেকে 
নিজেকে রাখো দূরে, হ'য়ো না আসক্ত।

ভাবছি বাঙালি কয় প্রকার?
১) হিন্দু বাঙালি, ২) মুসলিম বাঙালি, ৩) খ্রিস্টান বাঙালি ইত্যাদি নানা ধর্মের (?) বাঙালি। আবার ১) ঘটি বাঙালি ও ২) বাঙাল বাঙালি। 
আর এক নতুন প্রজাতির এক বাঙালির সন্ধান পাওয়া গেছে যা সুপ্তভাবে ফল্গুধারার মত ব'য়ে চলেছে বাঙালির মননে ও চিন্তনে!
তা হ'লো বহিরাগত বাঙালি!

শয়তান ভগবানের চেয়েও দেখতে সুন্দর 
আর শয়তানের হাসি ভগবানের চেয়েও মিষ্টি 
আর কথা তার বড়ই মধুর মেয়েলী! 
সেই অলীক মোহিনি মায়ায় ফেঁসে 
জীবন ক'রো না ধ্বংস। সাবধান!
( লেখা ৩০শে মার্চ'২০২১)

যেমন চলছে চলুক; স্রোত যেদিকে বইছে বইতে দাও। 
স্রোতের বিপরীতে যেও না। 
গেলেই বই পড়ে বই হ'য়ে যাওয়া লোকেরাই 
তোমার বিরুদ্ধে যাবে।

আমি স্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতার কাটবো 
নাকি স্রোতের অনুকূলে গা ভাসাবো? 
নাকি নিরাপদ দূরত্বে নিরপেক্ষ সেজে দাঁড়িয়ে থাকবো?
কোনটা? কোনদিকে যাবো?

আমরা সৎসঙ্গীরা ঠাকুরের বাণীকে হাতিয়ার ক'রে নিয়েছি,
আর, 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' 
মানসিকতায় চালাকির আশ্রয় নিয়েছি।

নিজেও কিছু করিনি অন্যকেও করতে দিইনি। 
বিচারের ভার আপন হাতে তুলে নিও না ব'লে 
ঘাই মেরে বিন্দাস গাছেরও খেয়েছি তলারও কুড়িয়েছি।
( লেখা ৩০শে' মার্চ'২০২৪)































































কবিতাঃ রাগ অনুরাগ।

যত গণ্ডগোল মত প্রকাশের ভঙ্গীতে।
সংযম নিরুদ্দেশ! তোমরা দেখেছো কেউ তাকে?
একই কথা একটু অন্যভাবে, অন্যভঙ্গিতে বলা যেতে পারে?
লাশ না, পলাশ....................."
মন্দাক্রান্তা শাবাশ! এমনিভাবেই.........
কলম! ঝরুক ঝরঝর ঝর্ণা, প্রেমবৃষ্টি!
চাই না এই অসহ্য গরমে
তোমার অগ্নিবৃষ্টি।
কবি! আবার মনে পড়ে গেল,
'তুমি অধম বলিয়া আমি ইবো না কেন উত্তম ??
বন্ধু! তেজ ভালো, ভালো রাগ।
যদি থাকে সাথে সোহাগ!
কবি! কেন প্রতিবাদ? কেন প্রতিরোধ?
যদি অসুরক্ষিতই হয় ঐ নিরোধ!?
কবি! এত অভিমান! এত রাগ!
অভিমানের চেয়ে রাগ ভালো,
রাগের চেয়ে অনুরাগ!
কবি শ্রীজাত! কবি মন্দাক্রান্ত!
প্রতিক্রিয়ায় থাকো ধীর, থাকো স্থির,
হ'য়ো না অশান্ত।
( লেখা ৩০শে মার্চ'২০১৭)



















Thursday, March 27, 2025

গানঃ যা খুশী ওরা বলে বলুক।

যা খুশী ওরা বলে বলুক
ওদের কথায় কি আসে যায়,
ওরাই দিনের শেষে এসে
প্রভুর দয়ায় পড়বে যে পায়।
যা খুশী ওরা বলে বলুক।

ওরা দিনে যাদের কুৎসা ক’রে
বুকের জ্বালা মেটায়
আবার রাতে তাদের বন্ধু ক’রে
বিপদে ভিক্ষে চায়।
ওদের যেমন বুদ্ধি তেমন সিদ্ধি
প্রাপ্তিও ঘটে তাদের যে তায়
ওরাই দিনের শেষে এসে
প্রভুর দয়ায় পড়বে যে পায়।
যা খুশী ওরা বলে বলুক।

তোমরা নামপেয়ালা
হাতে পেয়েও যাদের বাপ বাপান্ত করো
তাদের কাছে কি পেলে তার
হিসাব কেন করো?
ওরা হলেও নগন্য নয় অমান্য
দয়াল জেনো ওদেরও চায়!
ওরাই দিনের শেষে এসে
প্রভুর দয়ায় পড়বে যে পায়।
যা খুশী ওরা বলে বলুক। প্রবি।

Wednesday, March 26, 2025

প্রবন্ধঃ সুনীতা উইলিয়ামসের পৃথিবীতে ফিরে আসা ও ঈশ্বর অবিশ্বাসীদের উল্লাস। ( ২য় পর্ব্ব)

সুনীতা উইলিয়ামসের ঈশ্বর বিশ্বাস, শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও শ্রীশ্রীআচার্যদেব।

সোশ্যাল মিডিয়ার মারফত দেখলাম ও জানতে পারলাম সুনীতা উইলিয়ামস শ্রীমদভগবদগীতার উপর আস্থা রাখেন, সনাতন ধর্মের উপর তাঁর বিশ্বাস আছে।
শ্রীমদভগবদগীতার উপর প্রকৃত আস্থা কা'কে বলে তা' সুনিতা উইলিয়ামসের সামগ্রিক কর্মজীবন ও তাঁর পূর্বনির্দিষ্ট ৮ দিনের মহাকাশ সফর যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে অনির্দিষ্ট সময়ে দীর্ঘায়িত হওয়ার ফলে তাঁর অটুট মনোবল, লড়াই করার তীব্র অদম্য মানসিকতা, আত্মবিশ্বাস, আত্মনির্ভরতা ইত্যাদি প্রমাণ করে।

আমরা সংবাদ মাধ্যম দ্বারা জানতে পারলাম,
২০২৪ সালের ৫ জুন মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন মহাকাশ্চারীরা। মাত্র আট দিনের অভিযানের পরিকল্পনা থাকলেও প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে দীর্ঘ ৯ মাস মহাকাশে আটকে ছিলেন সুনীতা উইলিয়ামস ও বুশ উইলমার। তবে কঠিন এই সময়ে সুনীতা উইলিয়ামসের ধৈর্য, মানসিক দৃঢ়তা এবং আধ্যাত্মিক বিশ্বাসই তাঁকে শক্তি যুগিয়েছিল।
খবরে আরও জানা যায়,
প্রথম মহাকাশ অভিযানে (২০০৬ সালে) সুনীতা উইলিয়ামস জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত বাণী ভগবদ গীতার একটি কপি সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। পুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণের ভগবদ গীতার বার্তা ও আধ্যাত্মিক শক্তি সুনীতা উইলিয়ামসের আশ্রয় ছিল। তিনি বিশ্বাস করেন, পরমপিতা পুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণের গীতার কর্মযোগের বার্তা জীবনের প্রতিটি সংগ্রামে তাঁকে জয়ী হতে সাহায্য করে। মহাশূন্যের নিঃসঙ্গতা ও চাপের পরিস্থিতিতেও গীতার শিক্ষা তাঁকে মানসিকভাবে শক্তিশালী রেখেছিল।
২০১২ সালে দ্বিতীয়বার মহাকাশ ভ্রমণের সময় তিনি দেবাদিদেব মহাদেব, পরমেশ্বর স্বয়ম্ভূ শিবের একটি ছবি এবং ওঁকার প্রতীক সঙ্গে রেখেছিলেন। মহাশূন্যে এই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সংস্পর্শে থাকায় তিনি আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্য ধরে রাখতে পেরেছিলেন। এই অচ্যুত, অস্খলিত, অদম্য আধ্যাত্মিক মহাশক্তি সুনিতা ইউলিয়ামসকে মহাকাশ জয়ে শারীরিক-মানসিক ও আত্মিক শক্তি যোগান দিয়েছিল।
এছাড়া ২০২৪ সালের অভিযানে যাওয়ার সময়ও সুনীতা উইলিয়ামস বিঘ্ননাশকারী, শিল্প ও বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক এবং বুদ্ধি ও জ্ঞানের দেবতা গণেশের একটি মূর্তি তাঁর সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেন, বিঘ্নহর্তা গণেশের আশীর্বাদ তাঁকে সমস্ত বাধা থেকে বিপত্তি থেকে রক্ষা করে। বিঘ্নহর্তা হলো সেই ব্যক্তি বা শক্তি যা সমস্ত বাধা দূর করেন। এবং সত্যি সত্যিই বিঘ্নহর্তা গণেশ মহাকাশে সুনীতা উইলিয়ামসদের দীর্ঘ ৯ মাসের সমস্ত বাধা, প্রতিবন্ধকতা বা সমস্যা হরণ করেছিলেন, দূর করেছিলেন। আর, গণেশকে সিদ্ধিদাতাও বলা হয়। বলা হয় সিদ্ধিদাতা গণেশ। অর্থাৎ সিদ্ধিদাতা শব্দের অর্থ হলো যিনি বা যা সফল করে বা desired ফল দেয়। সিদ্ধিদাতা মানে হ'লো যিনি বা যা অভীষ্ট পূরণকারী। তাই 'সিদ্ধিদাতা গণেশ' অর্থ হলো যিনি সিদ্ধি বা সাফল্য প্রদানকারী, বা যিনি সব কাজে বাধা দূর করেন এবং সাফল্যের পথ খুলে দেন। সুনীতা উইলিয়ামস মহাশূন্যে যাওয়ার সময় বিশ্বব্রহ্মান্ডের মালিক সিদ্ধিদাতা গণেশকে মাথায় ক'রে নিয়ে গিয়েছিলেন বলেই তাঁর ৮ দিনের মহাকাশ সফর যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে দীর্ঘ ৯ মাসে দীর্ঘায়িত হওয়ার সময়ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তাঁকে শান্ত, ধীর ও স্থির রেখেছিল এবং সব বাধা দূর ক'রে সাফল্যের পথ খুলে দিয়েছিল। মহাকাশযানের প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে ৯ মাস মহাকাশে আটকে থাকলেও গণেশের প্রতি তার বিশ্বাস অটুট ছিল। তিনি মনে করেন, বিঘ্নহর্তা ও সিদ্ধিদাতা গণেশ তাঁর জন্য সৌভাগ্যের প্রতীক এবং সব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রমের শক্তি।

কথায় আছে, বকনা বাছুর পেছন তুলে তুলে লাফায় বেশী। গাভী হ'লে আর লাফায় না, ধীর ও স্থির হয়ে যায়। অজ্ঞানী বা অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করীরা বকনা বাছুরের মত অর্থাৎ জ্ঞানের অভাবে ঈশ্বরের বিরোধীতা করে লম্ফ দিয়ে ঝম্প মেরে। গরম তেলে কাঁচা লুচির মত আওয়াজ ক'রে বেশী। যখন লুচির দু'পিঠের জল গরম তেলের সংস্পর্শে আসে তখন তা' বাস্প হ'য়ে উড়ে যাওয়ার আগে আওয়াজ করে। ঠিক তেমনি অজ্ঞানী বা অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী ঈশ্বরঅবিশ্বাসীদের অবস্থাও তেমনি। তারাও জ্ঞানীদের সামনে অজ্ঞানতার বোমা ফাটায় বেশী।
কথায় আছে, Knowledge rules the world. যার অর্থ জ্ঞান বিশ্বকে শাসন করে। আবার শেক্সপিয়ারের কিং হেনরি ষষ্ঠ, দ্বিতীয় খণ্ড" (King Henry VI, Part 2) নাটকের একটি উক্তি আছে তা' হ'লো, Knowledge is the wing wherewith fly to heaven. যার অর্থ, জ্ঞান হলো একটি ডানা যার সাহায্যে আমরা স্বর্গে উড়ে যেতে পারি। অর্থাৎ জ্ঞান এমন এক শক্তি যা আমাদের উন্নতি ও সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।

আর, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হ'লো সেই সমস্ত জ্ঞানের আধার, তাই তাঁকে সর্ব্বজ্ঞ বলা হয়। যে সর্ব্বজ্ঞের শক্তি সুনীতা উইলিয়ামসকে উন্নতি ও সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল। সর্ব্বজ্ঞের প্রতি আস্থা, বিশ্বাস, নির্ভরতা এই যে মহাশক্তি জ্ঞান, মহাকাশের বুকে তাঁকে সফল হ'তে সাহায্য করেছিল।

জীবনে সফল সুনীতা উইলিয়ামস আপাদমস্তক ঈশ্বরবিশ্বাসী ছিলেন। তিনি যে মহাকাশে বিশাল বিস্তৃতির বুকে গিয়েছিলেন সেই বিশাল বিস্তৃতি সম্পর্কে পরম বিজ্ঞানী সর্ব্বজ্ঞ জীবন্ত ঈশ্বর পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বলেছিলেন, "মহাকাশের বিশাল বিস্তৃতির যে মধ্যবিন্দু বা কেন্দ্রবিন্দু---বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে 'নিউট্রাল জোন' বলে, যাকে কেন্দ্র ক'রে 'পজিটিভ ও নেগেটিভ' পরস্পর মিলিত হবার আবেগে বারবার আবর্তিত হ'য়ে চলেছে। আর, সেই সম বিপরীত সত্ত্বার মিলন আবেগ যেখানে ঘনীভূত হ'য়ে ওঠে, সৃষ্টির সূচনা তো সেখান থেকেই হয়। মহাকাশের সেই বিশাল বিস্তৃতি হ'লো নারায়ণ আর সেই বিশাল বিস্তৃতির মধ্যবিন্দু বা কেন্দ্রবিন্দু---বিজ্ঞানের ভাষায় যা 'নিউট্রাল জোন' নিউট্রাল জোনই হ'লো নারায়ণের নাভিমূল।"
সেই এক ও অদ্বিতীয় নারায়ণের স্বরূপ জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীকৃষ্ণ, সেই দেবাদিদেব মহাদেব পরমেশ্বর স্বয়ম্ভূ শিব এবং ওঁকার প্রতীক, এবং সেই বিঘ্নহর্তা ও সিদ্ধিদাতা গণেশ, এই এক ও অদ্বিতীয়ের সঙ্গে ছিল সুনীতা উইলিয়ামসের যোগ। পরমাত্মার সঙ্গে জীবাত্মা মার্জ ক'রে গেছিল। তাই সুনীতা উইলিয়ামস ও তাঁর সঙ্গীরা ছিল স্বয়ং মালিকের কোলে। তাই মহাকাশে বিপদ তাঁদের কেশও স্পর্শ করতে পারেনি।
জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীকৃষ্ণের গীতার বাণী ছিল তাঁর আধ্যাত্মিক আশ্রয়। পুরুষোত্তম পরমপিতা প্রভু শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত পবিত্র বাণী সম্বলিত গ্রন্থ গীতার কর্মযোগ অধ্যায় ছিল তাঁর কর্মের মূল প্রেরণা।
দেবাদিদেব মহাদেব, পরমেশ্বর স্বয়ম্ভূ শিব এবং ওঁকার প্রতীক ছিল তাঁর শারিরিক-মানসিক ও আত্মিক শক্তির মূল।
আর, বিঘ্নহর্তা ও সিদ্ধিদাতা গণেশ ছিল তাঁর জন্য সৌভাগ্যের প্রতীক এবং সব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রমের মূল শক্তি।

অথচ মূর্খ ঈশ্বর অবিশ্বাসীর দল মানুষকে ঈশ্বর বিশ্বাস থেকে দূরে থাকার জন্য, ঈশ্বর নামক কুসংস্কার থেকে মুক্ত থাকার জন্য মানুষকে জ্ঞান দিল নাসা নভোচারী ঘোর ঈশ্বরবিশ্বাসী সুনীতা উইলিয়ামসকে দেখিয়ে, তাঁর ঈশ্বরের প্রতি আস্থা, বিশ্বাস, ভালোবাসা ও গভীর নির্ভরতা না জেনেই। এরাই অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করীর জ্বলন্ত উদাহরণ। এদের থেকে মানুষ সাবধান।

কথাটা বললাম এইজন্যে যে, মহাকাশ্চারী সুনিতা উইলিয়ামসের মাথার ওপর ছিলেন বিশ্বব্রহ্মান্ডের সর্ব্বশক্তিমান মালিক। কথায় আছে, রাখে হরি মারে কে? এই কথার অর্থ হরিকে অর্থাৎ সমগ্র সৃষ্টির মালিক ঈশ্বরকে যে ধ'রে রাখে, মাথায় ক'রে রাখে, বুকে ক'রে ধ'রে রাখে, তাঁকে মারে কার সাধ্য? সুনীতা উইলিয়ামস নভোচারী হিসেবে মহাকাশে যাত্রা করলেও এই মহাকাশের সৃষ্টিকর্তা মালিক জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীকৃষ্ণ, দেবাদিদেব মহাদেব, পরমেশ্বর স্বয়ম্ভূ শিব এবং ওঁকার প্রতীক, আর বিঘ্নহর্তা ও সিদ্ধিদাতা গণেশ ছিল তাঁর সাথে সবসময়, ছিল তাঁর মাথায়।
আর, এইসব অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করীর দল সাক্ষাৎ শয়তান স্বরূপ। তারা ঈশ্বর থেকে, মালিক থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যেতে চায় মানুষকে তাদের বালখিল্য বিষাক্ত জ্ঞান দিয়ে।

মাথার ওপর মালিক থাকলে কি হয়? শ্রীশ্রীআচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদার বলা সেই কাহিনী বলে আমি এই লেখা শেষ করবো।
এক জঙ্গলের ধারে গ্রামের একটা গরু ঘাস খেতে গেছিল। ঘাস খেতে খেতে সে তন্ময় হ'য়ে গিয়েছিল। কখন সন্ধ্যা নেমে এসেছিল সে জানে না। সাথীরা তার চলে গেছিল। তাঁর খেয়াল নেই। বাঘ বেরোলো শিকারে। বাঘ গরুকে দেখতে পেয়ে করলো তাড়া। বাঘের তাড়া খেয়ে গরুটি পড়লো দৌড়ে গিয়ে কাদার পাঁকে। বাঘও লাফ দিয়ে পড়লো ঐ কাদায়। এই যে আটকে পড়লো কাদায়, এই অবস্থাতেই বাঘ চেষ্টা করে গরুকে খাওয়ার জন্য আর গরু চেষ্টা করে পালাবার জন্য। এই উভয় জানোয়ারের চেষ্টা ব্যর্থ হ'লো। তখন বাঘ বললো, যখন এই কাদাটা শুখাবে তখন উঠে আমি তোকে খাবো। তখন গরুটি হাসতে শুরু করেছে। বলছে, তুই আমাকে কি খাবি রে? আমার কান খাঁড়া আছে। আমি কাঁসরের আওয়াজ পাচ্ছি, ঘন্টার আওয়াজ পাচ্ছি, আমি লোকজনের আওয়াজ পাচ্ছি। আমার লোকজন আসছে আমাকে বাঁচাবার জন্য, আমার লোকজন আসছে। আমার জীবনে একটা মালিক আছে। তিনি উদ্ধার ক'রে নিয়ে যাবেন। কিন্তু তোর তো মালিক নেই। আমার মালিকের সঙ্গী সাথীরা সবাই লাঠি, বল্লম সব নিয়ে আসছে, তোর কি হবে? আমাকে তো উদ্ধার ক'রে নিয়ে যাবে তোর কি অবস্থা হবে?
এই যে ব্যাপারটা, এই যে অবস্থাটা এর জন্যেই আমার একজন মালিক প্রয়োজন। জীবনে একজন মালিক দরকার, যিনি আমাকে রক্ষা করবেন, যিনি আমাকে বাঁচাবেন। সুনীতা উইলিয়ামসের মাথার ওপর সৃষ্টিকর্তা মালিক ছিলেন তাই শয়তান তাঁকে তাঁর সাথীদেরকে স্পর্শ করতে পারেনি ঐ শয়তান বাঘের মত ঐ মহাকাশের বুকে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর মালিক তাঁর সন্তানদের পাঠিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিল নির্বিঘ্নে সুনীতা উইলিয়ামসদের তাঁর কাছে পৃথিবীর বুকে।
তাই আমাদের প্রত্যেকের জীবনে একজন মালিক দরকার। সেই মালিকই হলেন জীবন্ত ঈশ্বর মানুষের রূপ ধ'রে মানুষ মায়ের গর্ভে মানুষের পৃথিবীতে মাটির বুকে নেমে আসেন, বারবার নেমে আসেন। নেমে এসেছিলেন শ্রীরামচন্দ্র হ'য়ে, শ্রীকৃষ্ণ হ'য়ে, বুদ্ধ, যীশু, হজরত মহম্মদ, চৈতন্য মহাপ্রভু, ঠাকুর রামকৃষ্ণ হ'য়ে। এবং সর্বশেষ তিনি নেমে এসেছিলেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'য়ে। সেই এক ও অদ্বিতীয় একজনই সেই যিনি ব্রহ্মা, তিনিই বিষ্ণু, আর তিনিই মহেশ্বর। সেই একজনই ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর মানুষের রূপ ধ'রে মানুষের মাঝে নেমে এসেছিলেন আট আটবার লীলা করতে, আমাদের বাঁচাতে। আমরা সেই আমাদের মালিককে ভুলে গিয়ে আমাদের জ্ঞানের অহঙ্কারে আমাদের নিজেদের শেষ করেছি, শেষ করছি, গোটা মানবজাতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছি অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী হ'য়ে আমরা বিষাক্ত মানুষেরা।
( লেখা ২৪শে মার্চ'২০২৫)

প্রবন্ধঃ সুনীতা ইউলিয়ামসের পৃথিবীতে ফিরে আসা ও ঈশ্বর অবিশ্বাসীদের উল্লাস। (১ম পর্ব্ব)।

৯ মাস পর ঘরে ফিরলেন সুনিতা উইলিয়ামস। ৮ দিনের জন্য গিয়ে ২৮৬ দিন মহাকাশে কাটিয়ে এলেন সুনিতা উইলিয়ামস ও বুশ উইলমোর।
তাঁদের পৃথিবীর বুকে নিরাপদে সুস্থভাবে ফিরে আসার জন্য সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের চরণে কোটি কোটি প্রণাম জানাই।
সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরকে মহাকাশে ৮ দিনের জন্য গিয়ে ৯ মাস বন্দী অবস্থায় কাটানোর অতিমানবীয় শারীরিকি-মানসিক কৃতিত্বের জন্য স্যালুট, ধন্যবাদ, গভীর ভালোবাসা ও নমস্কার জানাই।
আমেরিকার অন্যতম শিল্পপতি ইলন মাস্কের স্পেস এক্স নাসার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে দীর্ঘ ৯ মাসের পর গত বুধবার সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরকে মহাকাশ থেকে পৃথিবীর মাটিতে ফিরিয়ে আনার জন্য ইলন মাস্ককে ও নাসার বিজ্ঞানীদের জানাই ধন্যবাদ, গভীর ভালোবাসা ও নমস্কার।
ধন্যবাদ, ভালোবাসা ও নমস্কার জানাই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। কারণ তিনি তার রাষ্ট্রপতিত্বের সময় এই বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন এবং তাদের ফিরে আসার সুবিধার্থে কাজ করেছিলেন ও স্পেস এক্সের সিইও এলন মাস্ককে অনুরোধ করেছিলেন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।

এদের সকলের জন্য ঈশ্বরের চরণে মঙ্গল প্রার্থনা করি।
আটলান্টিক মহাসাগরে সফল অবতরণ করলেন চারজন মহাকাশ্চারী। গত ২০২৪ সালের জুন মাসে মহাকাশ যাত্রা করেন এই দুই মহাকাশ্চারী। কথা ছিল থাকবেন শুধু ৮ দিন। সেই ৮ দিন দীর্ঘ হ'তে হ'তে হ'য়ে গেল ৯ মাস। অবশেষে দীর্ঘ উৎকণ্ঠা, উদ্বেগ, ব্যাকুলতা, ভয় কাটিয়ে তাঁদের সকলের সফল অবতরণের জন্য আমরা আনন্দিত ও সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশ্চারিনী সুনিতা উইলিয়ামসের জন্য আমরা ভারতীয়রা আরও আনন্দিত। দীর্ঘ ৯ মাস মহাকাশে কাটিয়ে ১৯শে মার্চ'২৫ বুধবার ভারতীয় সময় ৩টে ২৪মিঃ এলন মাস্কের Space X Capsule এ ক'রে মহাকাশ্চারীদের পৃথিবীতে ফিরে আসার পর তাঁদের হাসি মুখ ও হাত নাড়া দেখে কিছুক্ষণের জন্য অভিভূত হ'য়ে গিয়েছিলাম! ৮ দিনের জায়গায় ২৮৬ দিন মহাকাশে যান্ত্রিক গোলোযোগের কারণে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে আটকে থাকার জন্য মহাকাশচারীদের নিজের সঙ্গে নিজের কি ভয়ংকর মানসিক লড়াই করতে হয়েছে প্রতিটি দিন ভাবলেই হতভম্ব হ'য়ে যাই। মহাকাশ্চারীদের ফিরে আসার খবরে গোটা বিশ্ববাসী আজ খুশী। সুনীতা উইলিয়ামস সহ অন্য মহাকাশ্চারীদের সেফ ল্যান্ডিং দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল গোটা বিশ্ব, অপেক্ষা করছিল তাঁরাও। ভারতবাসী আজ গর্বিত ভারতীয় বংশোদ্ভুত সুনিতা উইলিয়ামসের জন্য। ভারতের গুজরাতের কা ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরে আসার জন্য বরণ অনুষ্ঠান পালন করে মায়েরা। গুজরাটের মেহসানা জেলার ঝুলাসন গ্রামে নাসার মহাকাশচারী সুনিতা উইলিয়ামসের বাবা দীপক পান্ড্যের পৈতৃক বাড়ি। গ্রামের স্থানীয় মন্দিরে উইলিয়ামসের মহাকাশে যাওয়ার পর থেকে একটি 'অখণ্ড জ্যোতি' (চিরন্তন শিখা) জ্বলছিল। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিল গুজরাত রাজ্য তথা দেশবাসী এবং নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসায় আনন্দে ফেটে পড়ে।
মহাকাশ্চারীদের চোখমুখের খুশী, উজ্জ্বল হাসি মুখ প্রমাণ ক'রে দিয়েছে এই মিশন সফল ক'রে পৃথিবীতে ফিরে আটলান্টিক মহাসাগরে সফল অবতরণের জন্য তাঁরা কতটা খুশী।
আর একদল খুশী হয়ে নেমে পড়েছিল এটা প্রচার করতে যে সুনিতা উইলিয়ামসদের ৯ মাস পর পৃথিবীতে ফিরে আসার সঙ্গে ঈশ্বরের দয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।
সুনীতা উইলিয়ামসের দীর্ঘ ৯মাস মহাকাশে থাকার পর পৃথিবীর বুকে সফল অবতরণের সঙ্গে সঙ্গেই ঈশ্বর, আল্লা, ভগবানের কোনও অস্তিত্ব নেই তা' প্রমাণের জন্য ঈশ্বর অবিশ্বাসীর দল তৎক্ষণাৎ কোমর বেঁধে ফেসবুকে সোশ্যাল মিডিয়ায় অবতরণ করেছিল। বিজ্ঞানের জয়যাত্রা ও মানুষের অসীম ক্ষমতা প্রমাণে তারা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লেখা ও মন্তব্যের ঝড় তুলে দিয়েছিল তৃপ্তির অম্ল ঢেঁকুর তুলে তুলে।
ফেসবুকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সুনীতার সফল অবতরণের সঙ্গে ঈশ্বরের কোনও সম্পর্ক নেই এই বিতর্ক টেনে আনা কেন? কেন ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার? যত দোষ নন্দ ঘোষের মত সব কিছুতেই ঈশ্বরকে টেনে আনতে হবে? কাটগড়ায় দাঁড় করাতে হবে তাঁকে?
নিজেকে সব কিছুর উর্ধ্বে ভাবা স্বঘোষিত সবজান্তা অহংকারী ও হতাশা অবসাদগ্রস্থ মানুষের এইটা একটা গুরুতর মানসিক ব্যাধি ।
কেন এই কথা বললাম? বললাম, তার কারণ, সুনিতা উইলিয়ামসের দীর্ঘ ৯ মাস পর পৃথিবীর বুকে সফল অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে ঈশ্বর অবিশ্বাসীদের বকনা বাছুরের মত লম্ফঝম্প দেখে। তারা সুনিতা উইলিয়ামস থেকে শিক্ষা নিতে বলেছেন ঈশ্বরবিশ্বাসীদের। বলেছেন জ্ঞানের সঠিক শিক্ষা নিতে। বলেছেন স্বর্গ নরক ব'লে যে কিছুই নেই, নেই কোনও ঐশ্বরিক শক্তি নেই, এ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান লাভ করতে। ঈশ্বর অবিশ্বাসীরা বলেছেন, সুনিতা উইলিয়ামস ও বুশ উইলমোর মহাকাশে ৮ দিনের পরিবর্তে দীর্ঘ ৯ মাস কাটিয়ে আসার মধ্যে দিয়ে বিশেষ দৃষ্টিভংগী লাভ করেছেন। মহাকাশে যে সমস্যার মুখোমুখী হয়েছিলেন তাঁরা সেই সমস্ত সমস্যা, সমস্ত যান্ত্রিক গোলযোগের মোকাবিলা করেছেন মানুষেরই উদ্ভাবন শক্তি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করেই, মানুষের তৈরী খাবার, মানুষের তৈরী পোশাক পরিচ্ছদ ও প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার ক'রেই।

তারা বলছেন, মহাশূন্যে কোনও ঈশ্বর, কোনও আল্লা বা কোনও ভগবান কেউ তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি সেইসময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে। যা করতে হয়েছে মানুষকেই করতে হয়েছে তাঁর বুদ্ধিবৃত্তি ও মস্তিষ্ককে কাজে লাগিয়ে। অতিমানবের মত ধৈর্য ও সহ্য শক্তি, অসীম মনোবল, আত্মবিশ্বাস, আত্মনির্ভরতা, আত্মশক্তিকে কাজে লাগিয়ে তাঁরা বিপদকে অতিক্রম ক'রে সফল হয়েছে। এখানে কোনও ঐশ্বরিক শক্তি ব'লে কিছু নেই, সবই কাল্পনিক, কুসংস্কার। সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপরে কিছুই নাই।

ঈশ্বর অবিশ্বাসীদের এরকম নানা মন্তব্যের পর মন্তব্য সুনিতা উইলিয়ামসের পক্ষে ও ঈশ্বরের বিপক্ষে আছ্ড়ে পড়েছে ও পড়ছে অকারণে ফেসবুকে। একজনের যোগ্যতা, দক্ষতা, কর্মকুশলতা, জ্ঞান, বুদ্ধি, শারীরিক ও মানসিক মনোবল, প্রবল ইচ্ছাশক্তি, ঋজু, কঠিন, অনমনীয় ও দৃঢ় মনোভাব ইত্যাদি মানবীয় গুণকে তুলে ধরতে গিয়ে ঈশ্বরের উপস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করতে, তুলোধনা করতে ঈশ্বর অবিশ্বাসীরা মাঠে নেবে পড়েছেন 'আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে' গান গাইতে গাইতে।
বিজ্ঞানের কোনও সাফল্য হলেই জীবনে ব্যর্থ, অসফল একশ্রেণীর মানুষ মানুষকে মাথায় তুলে নাচতে নাচতে ঈশ্বরের বাপ বাপান্ত করা শুরু ক'রে দেবে।
এরকমটা কাদের হয়? ঈশ্বর আছে কি নেই, সত্যি কি মিথ্যে তা' নিয়ে বালখিল্য জ্ঞানের অধিকারী মানুষেরাই মনের অপূর্ণ ইচ্ছের অবদমিত রাগ মেটায় কথায় কথায় উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাবার মত ঈশ্বরের উপস্থিতিকে টেনে এনে অকারণ তর্ক ক'রে।

এই সমস্ত নেগেটিভ চিন্তার মানুষ পজিটিভ কোনও কাজে অংশীদার হ'তে পারেনি ও পারে না কোনওদিনও কোনও জন্মেই।

যারা জীবনে ব্যর্থ, অসফল এবং একসময় ঈশ্বরের কাছে কিছু না ক'রে ফোকটে আয়েশি ক'রে যাদু টোনার মত সফলতা পাওয়ার আশা করেছিল, আলাদিনের প্রদীপের মত কিছু অলৌকিক কর্মকান্ডের মত বাপের চাকর ঈশ্বরকে হুকুম দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু পাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল বাপ-দাদাদের দেখাদেখি এবং সেই ফাঁকিবাজি আশা, সেই ঠুনকো স্বপ্ন পূরণ হয়নি বিন্দুমাত্র যাদের, তারাই কথায় কথায় অকারণে জান্তে অজান্তে, চেতন ও অবচেতন মনে ঈশ্বরের কাছে কিছু না পাওয়ার জ্বালা স্বরূপ ঈশ্বরের উপস্থিতির বাপ বাপান্ত করে। এগুলি অন্যের সফলতায় ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অবচেতন মনে নিজের ব্যর্থতার রাগের বহির্প্রকাশ। কিছু না করা অভিজ্ঞতাহীন, অনুভূতিহীন, উপলব্ধিহীন শুধু কথার স্রোতে ভাসা কিছু মানুষ ঈশ্বরের কাছে কিছু না পেয়ে জীবনে ব্যর্থ হ'য়ে ঈশ্বরকেই গালাগালি ও বিরোধীতা করে।

এই ধরণের সমস্ত গিরিগিটি মানুষের পাল্লায় পড়ে সাধারণ সহজ সরল বোকা, মূর্খ, বেকুব, অসহায় ভীরু, দুর্বল, অজ্ঞ, অজ্ঞানী, আর্ত, কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষ আজ বিভ্রান্ত ও দিশাহীন।

কিন্তু আমরা ঈশ্বরবিশ্বাসীরা ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুনীতা উইলিয়ামসের ক্ষেত্রে কি দেখলাম? কি জানতে পারলাম? তিনি ঈশ্বর বিরোধী? তিনি কি ঈশ্বর অবিশ্বাসী? তিনি কি ঈশ্বর বিদ্বেষী? তিনি কি ঘোরতর নাস্তিক? সোশ্যাল মিডিয়ার মারফত আমরা কি দেখলাম ও কি জানতে পারলাম তা' পরবর্তী ভিডিওতে আলোচনা করবো। ( লেখা ২২শে মার্চ'২০২৫)

প্রবন্ধঃ দেওঘরে দোল উৎসবে অগণিত মানুষের ঢল। কেন?' (২য় পর্ব)

আজও দেওঘরে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসে।
কেন? কিসের জন্য? কার জন্য? কার টানে?

'দেওঘরে দোল উৎসবে অগণিত মানুষের ঢল। কেন?' (১ম পর্ব) এই টাইটেলে একটা লেখা আমি এর আগে প্রকাশ করেছিলাম। সেই লেখাতে আমি বলেছিলাম, দেওঘর 'সৎসঙ্গ' ঠাকুরবাড়িতে বিভিন্ন বড় বড় উৎসবের দিনগুলি ছাড়াও সারা বছর প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ কেন আসে? কি জন্যে আসে? কার কাছে বা কার টানে আসে? আমি বলেছিলাম এই নিয়ে পরবর্তী লেখাতে আলোচনা করবো। আসুন আলোচনা করি। আপনাদের সুচিন্তিত মতামতের অপেক্ষায় আমি থাকবো। দর্শক, শ্রোতা ও সৎসঙ্গী গুরুভাইবোনেরা আপনারা আমার এই বিশ্লেষণমূলক আলোচনার প্রেরণা।

যাই হ'ক, দেওঘরের বড় বড় উৎসব ছাড়াও এই যে বছরের প্রতিটি দিন ঠাকুরবাড়িতে মানুষের ঢল নামে এর একটাই কারণ তা হ'লো,
চৈতন্য ভাগবতে বলা আছে,
“অদ্যাপিহ সেই লীলা করে গোরা রায়, কোনো কোনো ভাগ্যবানে দেখিবারে পায়।”
বর্তমানে সেই গোরা রায় লীলা করেন দেওঘরের মূল কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ' ও বিশ্বের ১০কোটি সৎসঙ্গীর প্রাণের আরাম, নয়নের বিরাম, হৃদয়ে অবিরাম ব'য়ে চলা আনন্দ ধারার উৎস, মনের প্রশান্তি, বাঁচার অক্সিজেন শ্রীশ্রীআচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদার মধ্যে।
অবতারী শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হলেন সেই গোরা রায়। যিনি যুগে যুগে লীলা করেছেন প্রভু রামচন্দ্র, শ্রীকৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু ও ঠাকুর রামকৃষ্ণের মধ্যে এবং অবশেষে আবার শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র রূপে আবির্ভূত হ'য়ে লীলা ক'রেছিলেন। এই লীলার কথা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র কথাপ্রসঙ্গে প্রায় সময়ই তুলে ধরতেন, ইঙ্গিত দিতেন ভক্তমন্ডলীদের মাঝে চৈতন্য ভাগবতে বলা “অদ্যাপিহ সেই লীলা করে গোরা রায়, কোনো কোনো ভাগ্যবানে দেখিবারে পায়" আবৃত্তি ক'রে।
প্রতিদিন দেশ বিদেশের আর্ত মানুষেরা অর্থাৎ পীড়িত, দুঃখিত, কাতর, বা বিপন্ন মানুষেরা ছুটে আসেন দেওঘর সৎসঙ্গে শ্রীশ্রীআচার্যদেবের কাছে। তারা ছুটে আসে অসুস্থতা থেকে, কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, ছুটে আসে মন খারাপ থেকে, ব্যথা বেদনা থেকে রেহাই পেতে, ছুটে আসে দূর্বল ও অসহায় অবস্থা থেকে ত্রান পেতে, ছুটে আসে বিপদ থেকে রক্ষা পেতে। ছুটে আসে সমস্যা জর্জরিত ব্যক্তি জীবন ও সংসার জীবন থেকে মুক্তির সমাধান পেতে।
এই ছুটে আসার ঘটনা অবিরাম ঘটেছিল শ্রীশ্রীঠাকুর থাকাকালীন সময়ে এবং ১৯৬৯ সালে দেহ রাখার পর থেকে আজ ২০২৫সালে ৫৫বছর ধ'রে ঘটে চলেছে বিরামহীনভাবে। আর এই আসা ক্রমবর্দ্ধমান। যা' কিনা গত ১৪ই মার্চ' বৃহস্পতিবার দোল উৎসবে প্রমাণিত।
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত এক ও একমাত্র সংগঠন 'সৎসঙ্গ'-এর বর্তমান শ্রীশ্রীআচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদার মধ্যে শ্রীশ্রীঠাকুর প্রকট! শ্রীশ্রীবাবাইদাদার মধ্যে শ্রীশ্রীঠাকুর খুব স্পষ্টভাবে বা বিশেষভাবে প্রকাশিত। তিনি বাকসিদ্ধ পুরুষ। তিনি যা বলেন, যাকে যা বলেছেন, তা' নিখুঁত, অভ্রান্ত। যারা তাঁর মুখনিঃসৃত প্রতিটি কথা, প্রতিটি লাইন, প্রতিটি শব্দ ভালো ক'রে মন দিয়ে শুনেছেন, মনে রেখেছেন এবং অর্থ বুঝে হুবহু পালন করেছেন আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের মত তা' ফলেছে!
এখানে কোনও পক্ষপাতিত্ব বা দালালি, চামচাগিরির কোনও প্রশ্ন নেই। কারণ, আমি শ্রীশ্রীঠাকুরের দীক্ষিত অতি শৈশবে এ কথা ঠিক। শ্রীশ্রীঠাকুরের নিয়ম অনুযায়ী ৫ বছর বয়সে নাম পেয়েছি, ১২ বছর বয়সে দীক্ষা হয়েছে, স্বস্ত্যয়নী হয়েছে ভরা যৌবনে, এ কথাও ঠিক। ১২ বছর বয়সে দীক্ষা দিয়েছেন আমার মা-বাবা। কিন্তু স্বস্ত্যয়নী নিয়েছি আমি নিজে আমার ইচ্ছাতেই আমার ভরা যৌবনে। ব্যস এই পর্যন্ত। আমি কোনও ঋত্বিক, যাজক বা কোন অধ্বর্য্যুও নই। হওয়ার ইচ্ছেও কোনোদিন ছিল না, এখনও নেই, ভবিষ্যতেও থাকবে না। আমি সৎসঙ্গ জগতের কোনও পরিচিত বিশিষ্ট ভক্ত বা বিশিষ্ট বক্তাও নই। আমি সাধারণ একজন সৎসঙ্গী। ঠাকুরকে ভালোবাসি, আরও গভীর ভালোবাসতে চেষ্টা করি। কারণ তিনি বিশ্বের সমস্ত বিস্ময়ের বিস্ময় সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়, তিনি জাগতিক ও মহাজাগতিক সমস্ত বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত, সর্বজ্ঞ। ShreeShree Thakur Anukulchandra is the greatest wonder of all the wonders of the world. He is omniscient, aware of all things, both mundane and cosmic. তাই তাঁকে ভালোবাসি।
বিশ্বজুড়ে ১০কোটি সৎসঙ্গীদের আদরের বড় ভাই, নয়নের মণি পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দাকে ভালোবাসি, ভালোবাসি পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীদাদাকে। ঠাকুর পরিবারের সবাইকে ভালোবাসি। শ্রীশ্রীঠাকুরের মধ্যে খাঁটি রক্ত ব'য়ে যাচ্ছে রক্ত তাই সেই রক্ত ব'য়ে যাচ্ছে যাদের যাদের শরীরে, রেত ধারার মধ্যে সুপ্ত হ'য়ে আছে শ্রীশ্রীঠাকুর যার যার মধ্যে তাঁদের প্রত্যেককেই ভালোবাসি, তাঁরা প্রত্যেকেই আমার পূজনীয়। প্রত্যেকের মধ্যেই শ্রীশ্রীঠাকুর কম বেশী প্রকট। তাই তাঁরা আমার পূজার যোগ্য, আরাধ্য, শ্রদ্ধেয়, গুরুস্থানীয় বা সম্মানিত।
আর, শ্রীশ্রীঠাকুর নিজের হাতে এক ও একমাত্র যে সংগঠন তৈরী ক'রে গেছেন তা' হ'ল 'সৎসঙ্গ'। এই 'সৎসঙ্গ' সংগঠনের মধ্যে দিয়ে তিনি তাঁর সমস্ত স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার জন্য তিনি এই 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠা ক'রেছিলেন।
কলিযুগে ভয়ংকর পাপ থেকে, অভিশপ্ত জীবন থেকে, মহাপ্রলয় থেকে, ধ্বংসযজ্ঞ থেকে মানুষকে বাঁচাবার জন্য, কলিযুগ থেকে সত্যযুগে মানবজাতিকে নিয়ে যাবার জন্য তার যে মিশন, তিনি যে Blue print রচনা করেছিলেন সেগুলি বাস্তবায়িত করার জন্য তিনি 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান তৈরী করেছিলেন। আর, সেই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব তিনি দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর পরম ভরসার, পরম নির্ভরতার কেন্দ্র তাঁর আত্মজ, প্রথম সন্তান পরম আদরের বড়খোকার ওপর। যিনি বিশ্বজুড়ে ১০কোটি সৎসঙ্গীদের বড়ভাই ও শ্রীশ্রীঠাকুরের পরম ভক্ত এ যুগের হনূমান শ্রীশ্রীবড়দা।
শ্রীশ্রীঠাকুর ছিলেন নিখুঁত, অভ্রান্ত, সত্যদ্রষ্টা, সর্ব্বদর্শী, সর্ব্বজ্ঞ, সর্ব্বশক্তিমান; তার প্রমাণ তিনি তাঁর সৃষ্ট সংগঠনের দায়িত্ব কার হাতে তুলে দিয়ে যেতে হবে এই ভয়ংকর ধান্দাবাজ ভন্ড ভক্তদের যুগে, ঘোর অন্ধকারের যুগে, সীমাহীন অপকর্ম ও দুঃখের যুগে এবং কলহ ও কপটতার যুগে তা' তিনি জানতেন। তিনি জানতেন তাঁর চলে যাবার পর তাঁর সৃষ্ট সংগঠন 'সৎসঙ্গ'-এর দখলদারী নিয়ে চলবে তথাকথিত প্রতিষ্ঠিত ভক্তমন্ডলীদের মধ্যে হিংস্র কামড়াকামড়ি। তিনি জানতেন, তাঁর ভক্তমন্ডলীরা তাঁকে টেকেন ফর গ্রান্টেড ক'রে নেবে। তিনি এও জানতেন সংখ্যাগরিষ্ঠ তথাকথিত কথার স্রোতে ভাসা, বক্তৃতায় যাত্রার ঢঙে ঝড় তোলা বক্তা ও বহুনৈষ্ঠিক ভক্তমন্ডলী আত্মপ্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে, ক্ষমতা দখল ও অর্থের লোভে ভুলে যাবে শ্রীশ্রীঠাকুর যে সৃষ্টিকর্তা। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র যে সর্ব্বদর্শী, তিনি যে সর্ব্বজ্ঞ, তিনি যে সর্ব্বশক্তিমান তা' ভুলে যাবে সেইসমস্ত সাজা সৎসঙ্গীর দল, কপট ভক্তমন্ডলী। তিনি জানতেন তাঁকে আয়ের উপকরণ ক'রে নেওয়া এই সমস্ত ছোটো বড়, অখ্যাত ও বিখ্যাত ভক্তমন্ডলী ঘরে-বাইরে উভয়দিক থেকেই পিছন থেকে ছুরি চালাবে। তিনি জানতেন তাঁর সুযোগসন্ধানী ধান্দাবাজ, কপট, ভন্ড, ক্ষমতালোভী, আত্মপ্রতিষ্ঠাকামী, ছোটো-বড়, প্রতিষ্ঠিত ও অপ্রতিষ্ঠিত, অখ্যাত-বিখ্যাত দীক্ষিত সৎসঙ্গীরা তাঁর সৃষ্ট 'সৎসঙ্গ'-এর পতাকার তলায় এক হ'য়ে থাকবে না, ভেঙে দেবে তাঁর সৃষ্ট এক ও একমাত্র সংগঠন 'সৎসঙ্গ'। তাঁর ভক্তমন্ডলী তাঁর সৃষ্ট 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠানের মধ্যে থেকে, ভিতর থেকে প্রতিনিয়ত চক্রান্ত চালিয়ে যাবে এবং কেউ কেউ সৎসঙ্গের বাইরে বেড়িয়ে গিয়ে যার যার ইচ্ছামত শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের নাম দিয়ে সংগঠন তৈরী ক'রে বাইরে থেকে তাঁর স্বপ্ন, তাঁর মিশন, তাঁর রচিত যে Blue print তা' সমস্ত ধ্বংস করার কাজে লিপ্ত হবে তাঁকে, তাঁর বলাগুলিকে, তাঁর উপস্থিতিকে অস্বীকার ক'রে তাঁকে প্রতিষ্ঠা করার বাহানায়। তিনি যে তাঁর ভালোবাসার, তাঁর প্রাণের যে সংগঠন 'সৎসঙ্গ' তৈরী ক'রে গেলেন এবং সেই প্রতিষ্ঠানকে তাঁর অবর্তমানে রক্ষা করা ও সেই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে তাঁর মিশনকে একে একে ধীরে ধীরে বাস্তবায়িত ক'রে তোলার জন্য তিনি যে তাঁর চোখের মণি, তাঁর প্রাণ, তাঁর পরম আদরের, পরম ভালোবাসার আধার বড় খোকাকে দিয়ে গেলেন তাঁকে মানতে পারবে না, অস্বীকার করবে শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রথমসারীর পরম ভক্তমন্ডলীরা এবং তা' সংক্রামক ব্যাধির মত যে ছড়িয়ে পড়বে সাধারণ আপামর সীমাহীন ভাঙাচোরা সৎসঙ্গীদের মধ্যে এবং সেই সুযোগে যে যার মত গড়ে তুলতে লাগবে আত্মপ্রতিষ্ঠা ও অর্থের লোভে শ্রীশ্রীঠাকুরের নাম দিয়ে নানা প্রতিষ্ঠান সাধারণ সহজ, সরল, বোকা, মূর্খ, বেকুব, অজ্ঞ, ভীরু, দূর্বল, কুসংস্কারাচ্ছন্ন সীমাহীন ভাঙাচোরা মানুষকে বিভ্রান্ত ক'রে মূল কেন্দ্র থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে রাখার জন্য, এ-সবই তিনি আগাম জানতেন।
এর মধ্যে এমনও লোকজন ও সংগঠন আছে ও আগামীতে আরও বৃদ্ধি পাবে যারা বাইরের আর্থিক সহযোগীতায় মূল কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার জন্য ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে তুলবে শ্রীশ্রীঠাকুরের নাম দিয়ে নানা নামে এ কথাও তিনি জানতেন।
শ্রীশ্রীঠাকুর সৃষ্টিকর্তা, তিনি সর্ব্বজ্ঞ, তিনি সর্ব্বদর্শী, তিনি সর্ব্বব্যাপী, তিনি সর্বশক্তিমান, তিনি সত্যদ্রষ্টা, তিনি পরম পুরুষ, তিনি পরম কারণ, তিনি পরম অস্তিত্ব, তিনি পরম উৎস, তিনি পুরুষোত্তম, তিনি পরমপিতা। তাই তিনি এই সমস্ত কিছু জানতেন।
আর, জানতেন বলেই তিনি এবারে একেবারে একইসঙ্গে তাঁর ঔরসজাত ও কৃষ্টিজাত সন্তান ক'রে নামিয়ে নিয়ে এসেছিলেন তাঁর পরম ভক্ত হনুমানকে তাঁর বড়খোকা রূপে। যা' এর আগে তিনি যতবার এসেছেন, কখনও হয়নি।
এই কথা ধর্ম ও ঈশ্বরবিশ্বাসী বালখিল্য মানুষদের মধ্যে, তাঁর ১০কোটি দীক্ষিত সৎসঙ্গীদের মধ্যে কে মানলো, আর না-মানলো, কে বিশ্বাস করলো আর অবিশ্বাস করলো, কে পালন করলো আর না-করলো তা'তে তাঁর কিচ্ছু আসে যায় না। মহাপ্রলয়ের আগে ঈশ্বরের প্রত্যাদেশ পেয়ে নোয়া যেমন নৌকা তৈরী ক'রে মহাপ্লাবণ থেকে বাঁচিয়েছিলো বিশ্বাসীদেরকে তেমনি কলিযুগের শেষে মহাপ্রলয়ের হাত থেকে বাঁচবে বিশ্বাসী সৎসঙ্গীরা। তাই পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীদাদা বলেছিলেন, তাঁর রথ চলে যাচ্ছে যেমন ক'রে পারো টেনে হেঁচড়ে রথে উঠে পড়ো, তারপর নিশ্চিন্ত হ'য়ে যাও।
আর, ভয়ংকর কঠোর, কঠিন, দৃঢ়, শক্ত, অনমনীয়, এবং নিয়ম বা কাজের ক্ষেত্রে খুবই কড়া ও নির্ভুল অথচ কোমল, নরম, মৃদু, ললিত, মধুর, সুকুমার, স্নিগ্ধ ও সুন্দর অন্তর, মন, প্রাণের অধিকারী বিশ্বজুড়ে ১০কোটি সৎসঙ্গীদের নয়নের মণি শ্রীশ্রীবড়দার হাতে শ্রীশ্রীঠাকুর দেহ ত্যাগ করার আগে তুলে দিয়ে গিয়েছিলেন 'সৎসঙ্গ'-এর দায়িত্বভার নিশ্চিন্তে নির্ভাবনায়।
শ্রীশ্রীঠাকুরের দেহ রাখার পরে পরেই সত্য হয়েছিল ও প্রকট হ'য়ে উঠেছিল শ্রীশ্রীঠাকুরের অবর্তমানে 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুরের আগাম জানাগুলি। ভয়ংকর যন্ত্রণাদায়ক প্রতিকূল পরিবেশের চড়াই উৎরাই সমস্যা জর্জরিত কণ্টকিত পথ পেরিয়ে, সীমাহীন বাধা, অপমান, কুৎসা, নিন্দা, সমালোচনার ঝড় জলকে উপেক্ষা ক'রে শ্রীশ্রীঠাকুরকে মাথায় নিয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের নিজের হাতে গড়া 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠানকে কড়া হাতে, কঠোর, কঠিন, অনমনীয় ও কোমল মনে বুক দিয়ে আগলে রেখে রক্ষা করেছিলেন শ্রীশ্রীবড়দা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত। প্রকৃতির বুকে তাঁর চরিত্রের মোক্ষম নিখুঁত উদাহরণ যেমন নারকেল। উপরে শক্ত, কঠিন, রুক্ষ ভিতরে নরম, কোমল, রসময়!
সেই শ্রীশ্রীবড়দার কঠোর ও কোমল হাত ধ'রে ছুটে চলা 'সৎসঙ্গ' -এর ব্যাটন শ্রীশ্রীবড়দার উপযুক্ত, যোগ্য, দক্ষ ইষ্টপ্রাণ উত্তরসূরী শ্রীশ্রীদাদার হাত ধ'রে আজ শ্রীশ্রীঠাকুরের ৪র্থ পুরুষ বর্তমান শ্রীশ্রীআচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদার হাতে।
শ্রীশ্রীবাবাইদাদার মধ্যে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রকট। শ্রীশ্রীবাবাইদাদার জীবনে শ্রীশ্রীঠাকুর সুস্পষ্টরূপে প্রতীয়মান, বিশেষভাবে ব্যক্ত। বৃষ্টি শেষে আকাশের কালো মেঘ সরে গিয়ে মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়া সূর্য যেমন চতুর্দিকে আলো ছড়িয়ে প্রকাশিত হয় ও তার আলোয় ঝিকমিক ক'রে ওঠে বৃষ্টির পরে বৃষ্টির জলে স্নাত সমস্ত গাছপালা এবং গাছের পাতায় জমে থাকা ছোট্ট জলকণার মধ্যে, জমে থাকা স্ফটিকের মত স্বচ্ছ জলকণার মধ্যে যেমন ঐ বিশাল সূর্য তার সমস্ত রূপ নিয়ে সম্পূর্ণরূপে প্রতিফলিত হয় আর সেখান থেকে ছিটকে পরে আলো আর সেই আলোতে ধাঁদিয়ে যায় চোখ ঠিক সেইরকম পুরুষোত্তম পরমপিতা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র জলকণার মধ্যে প্রস্ফুটিত সূর্যের মত, অন্ধকার আকাশের বুকে পূর্ণিমার চাঁদের মত সম্পূর্ণ রূপে শ্রীশ্রীআচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদার মধ্যে প্রস্ফুটিত। এ বোঝে সে, প্রাণ বোঝেও যার।
তাই, এক্ষেত্রেও বলা যায়, “অদ্যাপিহ সেই লীলা করে গোরা রায়, কোনো কোনো ভাগ্যবানে দেখিবারে পায়।”
এ কথার অর্থ সেই গোরা রায় অর্থাৎ সেই শ্রীশ্রীরামচন্দ্র, সেই শ্রীশ্রীকৃষ্ণ, সেই শ্রীশ্রীবুদ্ধ, শ্রীশ্রীযীশু, শ্রীশ্রীমহম্মদ, শ্রীশ্রীমহাপ্রভু, শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণ সেই একজনই ত্রেতা যুগ থেকে, দ্বাপর যুগ পার হ'য়ে কলি যুগে লীলা ক'রেছেন এবং শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র রূপে এসে লীলা ক'রে গেলেন আর ব'লে গেলেন, "ইষ্টগুরু পুরুষোত্তম, প্রতীক গুরু বংশধর, রেত শরীরে সুপ্ত থেকে জ্যান্ত তিনি নিরন্তর।" ব'লে গেলেন এবার এলাম সব ডিসক্লোজ ক'রে দিয়ে গেলাম, এবার হাঠে হাঁড়ি ভেঙে দিয়ে গেলাম। আর, যা দিয়ে গেলাম আগামী দশ হাজার বছর কিছু লাগবে না।"
এই কথার অর্থ এবার শ্রীশ্রীঠাকুর রেত শরীরে সুপ্ত থেকে প্রকট হ'য়ে উঠবেন তার বংশধরদের কারও মধ্যে আর তাঁর মাধ্যমেই তাঁর ব'লে যাওয়া কথাগুলি ধীরে ধীরে ইমপ্লিমেন্ট ক'রে তুলবেন বংশপরম্পরায় দশ হাজার বছর। আর যদি এর মধ্যে শ্রীশ্রীঠাকুরের স্মেল উবে যাওয়ার মত হয়, ম্লান হ'য়ে যায় তখন তিনি আবার আসবেন ঈশী স্পর্শে মানুষকে সঞ্জীবিত ক'রে তুলতে।
আমরা শ্রীশ্রীঠাকুরকে শ্রীশ্রীআচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদার মধ্যে লীলা করতে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। শ্রীশ্রীঠাকুর ভয়ঙ্করভাবে মধ্যগগণের সূর্যের মত সূর্যের দীপ্তি নিয়ে, রাতের আকাশে্র পূর্ণিমার চাঁদের মত প্রকট হ'য়ে উঠেছেন শ্রীশ্রীবাবাইদাদার মধ্যে সম্পূর্ণরূপে! শ্রীশ্রীবাবাইদাদার দীর্ঘ দেহ, আজানুলম্বিত বাহু, ঋজু শরীর ও মন, তাঁর হাঁটাচলা, বসা, কথা বলা, আচার, আচরণ, কথাবার্তা, শরীরী ভাষা, তাঁর চোখ, চোখের চাউনি, হাবভাব, তাঁর মুখমণ্ডল, মুখের হাসি, অঙ্গুলি হেলন, তাঁর অসীম ভালোবাসা, অগাধ জ্ঞান, নিখুঁত নির্ভূল মুখনিঃসৃত কথা, গভীর ও কঠিন কঠিন বিষয়ের সহজ সরল বিশ্লেষণ, সমস্ত হালকা ও গূঢ় কঠিন প্রশ্নের ও সমস্যার তৎক্ষণাৎ উত্তর ও সমাধান প্রতিমুহুর্তে বিস্ময়ের চরমে নিয়ে যায়, ভাবতে বাধ্য করে কে ইনি? ইনি কে? কে তুমি?
আর্তরা ছুটে আসছেন তাঁর কাছে প্রতিদিন দেশ বিদেশ থেকে দুঃখ থেকে,
কষ্ট থেকে, মন খারাপ হওয়া থেকে, অসুস্থতা থেকে, ব্যথা বেদনা থেকে, বিপদ থেকে, দূর্বল ও অসহায় অবস্থা থেকে, হতাশা, অবসাদগ্রস্থতা থেকে মুক্তি পেতে।
অর্থার্থীরা ছুটে আসে অর্থ বা সম্পদের প্রতি আগ্রহী বা প্রত্যাশী হয়ে, বিষয় সম্পদ, ব্যবসা বাণিজ্যের জট খুলতে।
জ্ঞানীরা ছুটে আসছেন জ্ঞানের পিপাসা মেটানোর জন্য। নিখুঁত জ্ঞান লাভের জন্য আগ্রহী হয়ে।
জিজ্ঞাসুরা ছুটে আসছেন বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে কৌতূহলী হ'য়ে একটি অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে জাগতিক ও মহাজাগতিক নানা বিষয়ে অনুসন্ধান করার জন্য, গবেষণা করার জন্য অথবা নানাবিধ জটিল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা ক'রে উত্তর জেনে নেবার জন্য।
তাই বছরের প্রতিদিন ভিড় লেগে রয়েছে নাটমন্ডপে শ্রীশ্রীআচার্যদেবের সামনে। হাজার হাজার নারীপুরুষ লাইনে দাঁড়িয়ে নিবেদন ক'রে চলেছে সকাল ও সন্ধ্যে। দেশ বিদেশের ধর্ম, রাজনীতি, সাহিত্য, বিজ্ঞান, চিকিৎসা ইত্যাদি সমস্ত বিষয়ের বিশিষ্টরা ছুটে আসছেন তাঁর সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতে।
আর, ক্লান্তিহীন ভাবে প্রতিদিন শ্রীশ্রীআচার্যদেব সবার মুখোমুখী হচ্ছেন যতক্ষণ না শেষ হচ্ছে অপেক্ষারত আর্ত, অর্থার্থী মানুষের লাইন। জ্ঞানী, জিজ্ঞাসু বিশিষ্টদের আলাপ আলোচনা। হাসিমুখে স্পষ্টভাবে মিষ্টিভাষায় আর্ত, অর্থার্থী, জ্ঞানী ও জিজ্ঞাসু সবার সব সমস্যার ও সব প্রশ্নের সহজ সরল নিখুঁত নির্ভূল সমাধান ও উত্তর দিয়ে চলেছেন শ্রীশ্রীআচার্যদেব! একদৃষ্টে তাঁর দিকে চেয়ে থাকতে থাকতে ও তাঁর কথা, তাঁর সমাধানবাণী, তাঁর উত্তর শুনতে শুনতে মনে হয় যেন শ্রীশ্রীঠাকুর স্বয়ং তাঁর সমস্ত জ্যোতি চারপাশে ছড়িয়ে বসে আছেন সামনে!! শ্রীশ্রীআচার্যদেব যখন সমস্ত হাজারো নানারকম বিভিন্ন বিষয়ের উপর কঠিন প্রশ্নের উত্তর দেন, বিভিন্ন জটিল সমস্যার সমাধান দেন তখন সেই উত্তর ও সমাধানবাণী শুনে মনে হয় তিনি যে একনাগাড়ে বলে যাচ্ছেন, সেই মুখনিঃসৃত কথা অদ্ভুত অভাবনীয় নিখুঁত নির্ভূল এক উচ্চমার্গের অমৃতময় সাহিত্য! সাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক, কবি, প্রাবন্ধিক যখন কোনও কিছু রচনা করেন তখন তার ওপর তারা বারবার কলম চালান, কাঁটা ছেঁড়া করেন। কিন্তু শ্রীশ্রীআচার্যদেব যেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের হুবহু প্রতিমূর্তি! একইরকমভাবে সারাটা বছর মানুষের আগমন ও প্রশ্নোত্তরের, কথোপকথনের ট্রাডিশান ব'য়ে চলেছে প্রকাশ্যে হাজারো লোকের সামনে! কোনও কথার কাঁটাছেঁড়া নেই, নেই কথার পরিবর্তন! শ্রীশ্রীআচার্যদেবের শ্রীমুখ দিয়ে যা বেড়িয়ে যাচ্ছে তাই-ই বেদবাক্য! শ্রীশ্রীঠাকুর একবার বলেছিলেন, "When you speak i stand in front of your tongue." যার অর্থ যখন তুমি কথা বলো তখন আমি তোমার জিভের অগ্রে দাঁড়িয়ে কথা বলি। যা' সূর্যের মত সত্য হয়ে প্রকাশিত হচ্ছে প্রতিদিন সকাল বিকাল দেওঘর ঠাকুরবাড়ির নাটমন্ডপে। সেই সূর্যকে, সেই গোরা রায়ের লীলাকে, সেই রেত শরীরে সুপ্ত থেকে জ্যান্ত থাকা শ্রীশ্রীঠাকুরকে ভাগ্যবানেরা দেখতে পাচ্ছে শ্রীশ্রীআচার্যদেবের মধ্যে বছরের প্রতিটি দিন! এই অদ্ভুত লীলা চাক্ষুস করছে প্রতিদিন হাজার হাজার আর্ত, অর্থার্থী, জ্ঞানী ও জিজ্ঞাসু মানুষ। তাই দেশ বিদেশ থেকে প্রতিদিন মানুষ ছুটে ছুটে আসছে দেওঘরে ঠাকুরবাড়িতে আজও শ্রীশ্রীআচার্যদেবের কাছে শ্রীশ্রীঠাকুরকে অনুভব করার জন্য, উপভোগ করার জন্য। গমগম করছে বছরের ৩৬৫ দিন দেওঘর ঠাকুরবাড়ি।
আসুন এই রস আস্বাদন করি, চক্ষু কর্ণের বিবাদ দূর করি, শ্রীশ্রীআচার্যদেবের সান্নিধ্যে এসে রোগ, শোক, গ্রহদোষ, বুদ্ধি বিপর্যয় ও দারিদ্রতা মুক্ত হ'ই। আমরা ভাগ্যবান হ'ই।
( লেখা ২১শে মার্চ'২০২৫)

প্রবন্ধঃ দেওঘরে দোল উৎসবে অগণিত মানুষের ঢল! কেন? (১ম পর্ব)

গত ১৪ই মার্চ'২৫ শুক্রবার ছিল দোল উৎসব। এই দোল উৎসব বিভিন্ন স্থানে পালন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝাড়খন্ডের দেওঘরে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত একমাত্র প্রতিষ্ঠান 'সৎসঙ্গ' আশ্রমেও অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দেওঘরের এই দোল উৎসব সম্পর্কে প্রতিবেদন তুলে ধরার আগে ব'লে রাখা ভালো এই দোল উৎসব যে শুধু দেওঘরের 'সৎসঙ্গ' আশ্রমে পালন হয়েছে তা' নয়। এই উৎসব পালন হয়েছে বিশ্বের সব জায়গায় যেখানে যেখানে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের মূল কেন্দ 'সৎসঙ্গ'-এর শাখা কেন্দ্র মন্দির আছে। সেই সমস্ত শাখা কেন্দ্র মন্দিরের সব জায়গায় এই দোল উৎসব পালন হয়েছে। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র 'সৎসঙ্গ' নামে একটা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন, অন্য কোনও নামে নয়। তিনি তাঁর নাম দিয়ে কোনও প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন গড়ে তোলেননি। শ্রীশ্রীঠাকুর প্রতিষ্ঠিত এক ও একমাত্র মূল কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান ছাড়া 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান বিরোধীরা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের নামে আরো অন্যান্য যেসব প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন সেই সমস্ত প্রতিষ্ঠানেও কম বেশী দোল উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দেওঘর ঠাকুরবাড়িতে দোল উৎসবের আনন্দে মেতে উঠেছিল সকল ইস্টপ্রাণ দাদারা ও মায়েরা। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা বাবা মায়েদের সাথে নির্মল আনন্দে মেতে উঠেছিল। চারিদিকে হাজার হাজার নারীপুরুষ দোল উৎসবে এসে যোগ দিয়েছিল। এমনিতেই প্রতিদিনই হাজার হাজার সৎসঙ্গীদের আগমনে গমগম করতে থাকে সৎসঙ্গ নগর। তার উপর ১৩ তারিখ বৃহস্পতিবার থেকে গিজগিজ করতে থাকে আশ্রম প্রাঙ্গণ। লোকে লোকারণ্য ছিল রাস্তাঘাট, আশ্রমের চারপাশ। ঠাকুরবাড়ি থেকে ঘর বুকিং বন্ধ ক'রে দেওয়া হয়েছিল। আশেপাশে যত হোটেল ও প্রাইভেট ভাড়া বাড়ি ঘর ছিল সব হ'য়ে গিয়েছিল পরিপূর্ণ।

মনে প্রশ্ন জাগে, এই যে এত হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসে প্রতিদিন, লক্ষ লক্ষ মানুষ ছুটে আসে ঠাকুরবাড়ির নানা উৎসবের সময় তারা কারা? কারা আসে ছুটে ছুটে ভারত তথা বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে? কেন আসে? কিসের জন্য আসে? কার টানে আসে? এই প্রশ্নগুলি স্বাভাবিকভাবেই আমার মাথায় আসে। মাথায় আসে ভারত তথা বিশ্বের অন্য সব জায়গায় অবস্থিত শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের নামে যে সব কেন্দ্র মন্দির 'সৎসঙ্গ' বিরোধীদের দ্বারা গড়ে উঠেছে সেইসব কেন্দ্র মন্দিরের সঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুর প্রতিষ্ঠিত এক ও একমাত্র কেন্দ্র, দেওঘর মূল কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ'-এর তফাৎ দেখে? এই তফাৎ কিসের? আসুন একটু আলোচনা করা।

প্রথমে আলোচনা করা যাক দেওঘরে প্রতিদিন ও উৎসবের দিনগুলিতে হাজার হাজার ও লক্ষ লক্ষ মানুষ যে ছুটে আসে তারা কারা?
এককথায় বলতে পারি পর্যটক। পর্যটক কথাটা আংশিক ঠিক, পুরোপুরি নয়। যারা আসেন তাদের মধ্যে ইষ্টপ্রাণ ভক্তমন্ডলীও আছেন। পর্যটক যারা তারা আসে বিনোদন বা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। দীক্ষিত ও অদীক্ষিত যারা আসে তারা ঠাকুরবাড়ি ভ্রমণ ও দর্শনের সঙ্গে সঙ্গে আশেপাশের আরও অনেক কিছু যেমন ত্রিকূট পাহাড়, বৈদ্যনাথ ধাম ইত্যাদি ভ্রমণ ও দর্শনেও আসেন। অনেক দীক্ষিত আসেন শুধু ঠাকুরবাড়ির উদ্দেশ্যে। আর, আসেন আর্ত, অর্থার্থী, জ্ঞানী ও জিজ্ঞাসু।

এখন এই যে ঠাকুরবাড়ির উদ্দেশ্যে যারা আসেন তারা আসেন ঠাকুর ও ঠাকুরবাড়ির অন্যান্যদের প্রণামের উদ্দেশ্যে।

এই যে আর্ত, অর্থার্থী, জ্ঞানী, জিজ্ঞাসু মানুষের কথা বললাম এরা আসতেন পরমপুরুষ পুরুষোত্তম পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের কাছে, যখন তিনি দেহ্রূপে ছিলেন। যুগে যুগে যতবার ঈশ্বর মাটির বুকে মানুষের রূপ ধ'রে মানুষের মাঝে মানুষ মায়ের গর্ভে নেমে এসেছেন রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ রূপে ততবারই আর্ত, অর্থার্থী, জ্ঞানী, জিজ্ঞাসু ব্যক্তিরা ছুটে ছুটে এসেছিলেন তাঁদের কাছে। কিন্তু এখন তো শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র দেহরূপে নেই তাহ'লে এখনও সেই ট্রাডিশান কি ক'রে ব'য়ে চলেছে দেওঘরের বুকে? এখনও হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ উৎসবের দিনগুলিতে ছুটে ছুটে আসেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে, কেন? কিসের টানে? কার কাছে? কারা আসেন? এখন তো ঠাকুর নেই? তাহ'লে কি পর্যটক হিসেবে আসেন দর্শনার্থীরা?

শ্রীশ্রীঠাকুর দেহ রেখেছেন ১৯৬৯ সালে, আর, এখন ২০২৪ সাল। এই দীর্ঘ ৫৫বছরে পর্যটক, দর্শনার্থী, ভক্তের সংখ্যা বেড়েছে শ্রীশ্রীঠাকুর দেহরূপে থাকাকালীন আগত পর্যটক, দর্শনার্থী, ভক্তের সংখ্যার কয়েকগুণ বেশী।

আর, এখন যে আর্ত, অর্থার্থী, জ্ঞানী, জিজ্ঞাসু ব্যক্তিরা ছুটে ছুটে আসেন, তারা কার কাছে আসেন? এখন তো শ্রীশ্রীঠাকুর দেহরূপে নেই। কেন আসেন? কেন আর্ত, অর্থার্থী, জ্ঞানী, জিজ্ঞাসু ব্যক্তিদের সংখ্যা বেড়ে গেল? মূল কেন্দ্র সৎসঙ্গ দ্বারা পরিচালিত ভারত সহ বিশ্বের অন্যান্য সমস্ত কেন্দ্র মন্দিরগুলিতে এবং মূল কেন্দ্র বিরোধী শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র নামাঙ্কিত মন্দিরগুলিতে শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মমহোৎসব পালনের দিনগুলি ছাড়া বছরের অন্যান্য সময়গুলিতে কেন্দ্র মন্দিরগুলি ফাঁকা পড়ে থাকে। কেন? কেন সেখানে বছরের ৩৬৪ বা ৩৬৩ দিন সকাল বিকাল প্রার্থনাতেই ভক্ত সমাগম হয় না? অথচ দেওঘরে উৎসব ব্যতিত বছরের অন্যান্য দিনগুলিতেও প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের ঢল লেগেই আছে। কেন?

দেওঘর সৎসঙ্গ আশ্রমে বছরে বড় দুটি উৎসব পালিত হয়। বাংলা নববর্ষে (এপ্রিল) ‘পুরুষোত্তম স্বস্তিতীর্থ-মহাযজ্ঞ’ এবং শারদীয়া দুর্গোৎসবের পর ‘শ্রীশ্রীঠাকুরের শুভ জন্ম-মহামহোৎসব’। কখনও কখনও নববর্ষ উৎসব আশ্রমের বাইরে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হয়। আশ্রমে শ্রীশ্রীঠাকুর, শ্রীশ্রীবড়মা, শ্রীশ্রীবড়দা ও শ্রীশ্রীদাদার জন্মতিথি ও আবির্ভাব দিবসগুলি সাড়ম্বরে উদযাপিত হয়। এছাড়াও উদযাপিত হয় শ্রীশ্রীঠাকুরের-পুণ্যস্নানোৎসব, পাবনা থেকে দেওঘর আগমন স্মরণোৎসব, মানিকপুরে বনভোজন উৎসব, দোল উৎসব। এছাড়া বর্তমান আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদার জন্মদিবস এবং সৎসঙ্গ জগতের লক্ষ লক্ষ যুবকযুবতীর, ইয়ং জেনারেশরেন হার্টথ্রব শ্রীশ্রীঅবিনদাদার জন্মদিন পালন হয়। এই উৎসব পালনের দিনগুলিতে অগণিত লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম হয়।

কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে, এই বিশেষ দিনগুলিতে না হয় দেশ বিদেশের লক্ষ লক্ষ দীক্ষিত-অদীক্ষিত মানুষ, পর্যটক, ইষ্টপ্রাণ ভক্তমন্ডলী, আর্ত, অর্থার্থী, জ্ঞানী, জিজ্ঞাসু ছুটে আসে উৎসবকে কেন্দ্র ক'রে আনন্দ উপভোগ করতে, কৌতুহল মেটাতে এবং সমস্যা সমাধানের পথ পেতে। কিন্তু এই বিশেষ দিনগুলি ছাড়া বছরের অন্যান্য সাধারণ দিনগুলিতে প্রতিদিন এত হাজার হাজার আর্ত, অর্থার্থী, জ্ঞানী, জিজ্ঞাসু মানুষের কেন দেওঘরে সমাগম হয় যা' অন্য কোনও সৎসঙ্গ মন্দিরে বা সৎসঙ্গ বিরোধীদের দ্বারা নির্মিত কেন্দ্র মন্দিরগুলিতে হয় না? কে আছেন দেওঘরে যাঁর কাছে আর্ত, অর্থার্থী, জ্ঞানী, জিজ্ঞাসু মানুষেরা ছুটে আসেন তাঁদের সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়ার জন্য? শ্রীশ্রীঠাকুর তো নেই দেহরূপে সেখানে! তাহ'লে কে দেবেন সমাধান? কে দেখাবেন পথ? আর্ত, অর্থার্থীদের কথা না হয় ছেড়ে দিলাম তারা যেখানে সেখানে ছুটে যান বাঁচার টানে খড় কুটোকে আঁকড়ে ধ'রে ডুবন্ত মানুষের বাঁচার মত। নদীর জলে ডুবন্ত মানুষ বাঁচার টানে সামনে দিয়ে ভেসে যাওয়া খড় কুটোকে যেমন বৃথা আঁকড়ে ধরে ঠিক তেমনি ধর্মজগতের বিভিন্ন কপট, ভন্ড, অসৎ, প্রতারক, ছদ্মবেশী গোঁসাই, গোবিন্দ, যোগী, ধ্যানী, সাধু, সন্ত, বাবাজী, মাতাজীর খপ্পরে পড়ে ধর্ম ও ঈশ্বর বিশ্বাসী সাধারণ সহজ, সরল, বোকা, মূর্খ, ভীরু, দূর্বল, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, অজ্ঞ, বেকুব এবং তথাকথিত লেখাপড়াজানাওয়ালা সীমাহীন ভাঙাচোরা মানুষ। ঠিক তেমনি দেওঘরেও না-হয় ছুটে আসেন এইসমস্ত আর্ত ও অর্থার্থীদের দল। এইকথা বলতে পারেন অপপ্রচারকারী, তর্কবাগীশ এবং যুক্তি বিজ্ঞানবাদীদের দল। তাদের এই কথা মেনে নিলা্ম।

কিন্তু শ্রীশ্রীঠাকুর দেহরূপে না থাকা সত্ত্বেও দীক্ষিত-অদীক্ষিত জ্ঞানী ও জিজ্ঞাসুরা প্রতিদিন কেন এখনও ছুটে ছুটে আসেন দেশ বিদেশ থেকে দেওঘরে? কেন আসেন? কার কাছে আসেন তাঁরা? কেন আজও শিক্ষিতরা দেওঘরে এসে আরও পরিশীলিত হন ও হওয়ার আশায় ছুটে আসেন?

এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন নিয়ে পরবর্তী পর্বে আলোচনা করবো। আমার পাঠক ও সৎসঙ্গী গুরুভাইবোনের কাছে আমার একান্ত অনুরোধ ও প্রত্যাশা আপনার আমার সঙ্গে থাকবেন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে। আজকের মত বিদায়।
( লেখা ২০শে মার্চ' ২০২৫)

প্রবন্ধঃ আমি পবিত্র, আমি পবিত্র, আমি পবিত্র।

কথায় কথায় ঈশ্বরকে টেনে আনা কেন? যত দোষ নন্দ ঘোষের মত সব কিছুতেই ঈশ্বরকে টেনে আনতে হবে? এইটা মানসিক ব্যাধি নিজেকে সব কিছুর উর্ধ্বে ভাবা সবজান্তা অহংকারী ও হতাশা অবসাদগ্রস্থ মানুষের। ঈশ্বর আছে কি নেই, সত্যি কি মিথ্যে তা' নিয়ে বালখিল্য জ্ঞানের অধিকারী মানুষেরাই মনের অপূর্ণ ইচ্ছের অবদমিত রাগ মেটায় কথায় কথায় উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাবার মত ঈশ্বরের উপস্থিতিকে টেনে এনে অকারণ তর্ক ক'রে। এই সমস্ত নেগেটিভ চিন্তার মানুষ পজিটিভ কোনও কাজে অংশীদার হ'তে পারে না কোনওদিনও কোনও জন্মেই।

এখানেও তাই হ'লো। ফেসবুকে  আকাশ আনোয়ার নামে একজন 
পোষ্টদাতা ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
সুনীতা উইলিয়ামসের বিজয়ের সঙ্গে ঈশ্বরের যোগসূত্র খোঁজার কোনও দরকার ছিল কি? এখানে সুনীতা উইলিয়ামস মহাকাশে গেছেন, পোষ্টদাতা আকাশ  যাননি; আর মহাকাশে যাবার মত বায়োলজিক্যাল মেক আপ তার গঠিত হয়নি, সবার হয় না। সুনীতা উইলিয়ামস মৃত্যুকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে, ভয়কে উপেক্ষা ক'রে মহাকাশে গেছেন, দেখেছেন, অনুভব করেছেন, উপলব্ধি করেছেন, অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন কিন্তু তিনি নিজে ঈশ্বর বিরোধী কোনও কথা বলেননি, মন্তব্য করেননি। তিনি আগুনে ঝাঁপ দিয়েছেন, পোষ্টদাতা আকাশ আনোয়ার দেননি। আগুনে ঝাঁপ দেওয়া, আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার অভিজ্ঞতা প্রহ্লাদের হয়েছিল, ঠিক তেমনি মহাকাশ ভ্রমণের ভালো মন্দ, ভয়ংকর, মধুর, আনন্দ, ভয়, কোনও ঐশ্বরিক বা মহাজাগতিক শক্তি ইত্যাদির অভিজ্ঞতা সুনিতা উইলিয়ামসের হয়েছিল কি হয়নি সেটা সুনীতা উইলিয়ামস জানেন, আকাশ অস্ট্রেলিয়ার জানার কথা নয়। ঈশ্বর বিশ্বাসীরা যেমন নিজেরা আগুনের ভয়ংকর ভয়াবহ অস্তিত্ব অনুভব ও উপলব্ধি না ক'রেই এবং অভিজ্ঞতা অর্জন না ক'রেই আগুনের মুখে ফেলে দেওয়া প্রহ্লাদের ঈশ্বরের প্রতি গভীর বিশ্বাস, নির্ভরতা ও সমর্পিত প্রাণের গুণগান করে ঠিক তেমনি আকাশ অস্ট্রেলিয়া সুনিতা উইলিয়ামসের এই মহাকাশ সফরে্র কঠিন দিনগুলিতে তাঁর কি অভিজ্ঞতা, তাঁর কি অনুভূতি, কি উপলব্ধি হয়েছিল তা' না জেনেই বালখিল্য অহংকারী ঋষির বালখিল্য জ্ঞানের মত অকারণ ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কামান দেগে বসলেন সবজান্তার মত। সুযোগ পেয়েই বকনা বাছুরের মত লম্ফ দিয়ে ঝম্প মেরে ঈশ্বর বিরোধীতা ও নারী স্বাধীনতার ফাটা বস্তাপচা একঘেয়ে রেকর্ড বাজিয়ে দিলেন।
এর থেকে প্রমাণ হয় যারা জীবনে ব্যর্থ, অসফল এবং একসময় ঈশ্বরের কাছে কিছু না ক'রে ফোকটে যাদু টোনার মত সফলতা পাওয়ার আশা করেছিল, আলাদিনের প্রদীপের মত কিছু অলৌকিক কর্মকান্ডের মত বাপের চাকর ঈশ্বরকে হুকুম দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু পাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল এবং সেই ফাঁকিবাজি আশা, সেই ঠুনকো স্বপ্ন পূরণ হয়নি বিন্দুমাত্র তারাই কথায় কথায় অকারণে জান্তে অজান্তে, চেতন ও অবচেতন মনে ঈশ্বরের উপস্থিতির বাপ বাপান্ত করে।
এখানেও তাই সুনিতা উইলিয়ামসের মহাকাশ বিজয় নিয়ে বলতে গিয়ে যত দোষ নন্দ ঘোষের মত ঈশ্বরকে টেনে এনেছেন অস্ট্রেলিয়া থেকে আকাশ আনোয়ার নামক একজন পোষ্টদাতা ফেসবুকে। আর সেই কথার সমর্থনে হৈ হৈ ক'রে কমেন্ট বক্সে ঝাঁপিয়ে পড়েছে জীবনে ব্যর্থ, অলস, হতাশা ও অবসাদগ্রস্থ, অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী ফাঁপা জ্ঞানীর দল।

সুনিতা উইলিয়ামস যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে মহাকাশে আটকা পড়েছিলেন। স্বর্গ নরক, ঈশ্বর, আল্লা, ভগবান সম্পর্কে বোধহীন, অভিজ্ঞতা, অনুভূতি ও উপলব্ধিহীন, জ্ঞানহীন, নেগেটিভ মানুষের উপস্থিতি ছাড়াও পৃথিবীর কোটি কোটি পজিটিভ মানুষের পবিত্র প্রার্থনায় সুনিতা উইলিয়ামস ও অন্যান্য সাথীরা সুস্থ ও অক্ষতভাবে পৃথিবীতে ফিরে আসছেন ও আসবেন নিশ্চিত। মহাকাশ ও মহাকাশের সমস্ত সৃষ্টির কারণের কারণ পরমকারণের বুকে গিয়েছিলেন সুনিতা উইলিয়ামস ও তাঁর সাথীরা।

তাই, পরমকারুণিক তাঁদের বুকে করেই আগলে রেখেছেন ও নিরাপদে ফিরিয়ে দেবেন পবিত্র পৃথিবীর বুকে, পবিত্র মানুষদের প্রার্থনায় খুশী হ'য়ে পবিত্র মানুষদের কাছে। যতদিন পবিত্র মানুষ আছেন ততদিন আছে পবিত্র পৃথিবী আর পবিত্র মানুষের প্রার্থনায় সাড়া দেন পরমকারুণিক। তাই আসুন একসঙ্গে ব'লে উঠি, ' হে পরমকারুণিক, আমি পবিত্র, আমি পবিত্র, আমি পবিত্র।'
( লেখা ১৮ই মার্চ'২০২৫)

উপলব্ধিঃ রাঙিয়ে দিয়ে যাও---------

গতকাল ১৩ই মার্চ'২৫ বৃহস্পতিবার রাত দশটার সময় গিয়েছিলাম ফুড কোর্টে। ফুড কোর্টের পাশে খেলার মাঠের মাঝখানে দেখলাম সেখানে দু'রকমভাবে সাজানো হয়েছে দোল বা হোলির আগের দিন ন্যাড়াপোড়া বা বুড়ির ঘর পোড়ানো ও হোলিকা দহন অনুষ্ঠান। প্রথমে শুকনো গাছের ডালপালা দিয়ে সাজানো বুড়ির ঘর পোড়ানো হ'লো, তারপর ঘুঁটে দিয়ে সাজানো হোলিকা দহন হ'লো। দেখে বেশ ভালো লাগলো। চারপাশে সবাই গোল ক'রে দাঁড়িয়ে দেখছে। আবার একদিকে স্টেডিয়াম, সেখানে বহু লোক ব'সে ব'সে উপভোগ করছে দোল ও হোলীর অনুষ্ঠান। সবাই ফটো তুলছে। ফটো তোলার ইচ্ছা ছিল কিন্তু সঙ্গে মোবাইল না থাকায় বুড়ির ঘর পোড়ানো ও হোলিকা দহন অনুষ্ঠান ধ'রে রাখা গেল না।

যাই হ'ক তারপর এসে বসলাম ফুড কোর্টে। চায়ের অর্ডার দেওয়া হ'লো। আশেপাশের চেয়ারে বসে আছে বাঙালী অবাঙালি সবাই। আলোচনা হচ্ছে বুড়িপোড়া আর হোলিকা দহনের আগুনের উচ্চতা নিয়ে। গল্প করছে দোল বা হোলির প্রোগ্রাম নিয়ে। কিন্তু এই অনুষ্ঠানের উৎস সম্পর্কে আলোচনায় করলো না কেউ। আমি যেখানে বসেছিলাম সেখানে ন্যাড়াপোড়া ও হোলিকা দহন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করাতে বলতে পারলো না কেউ। তার মাঝে কানে ভেসে এলো সুরাপ্রেমীদের আলাপ। আলাপ আলোচনায় জানতে পারলাম সকাল ও সন্ধ্যেবেলার নানাজনের নানারকম সুরা আয়োজনের বৈচিত্র। তার মাঝে কানে ভেসে এলো একজন বলছে সে ১৩হাজার টাকার নানা ব্র্যান্ডের বিদেশী সুরার ব্যবস্থা ক'রে রেখেছে, আয়োজন তার সারা। যারা উল্লাস উদ্দীপনায় আলোচনা করছে তারা সবাই বাঙালী ও অবাঙালী। কোথাও বাঙালী-অবাঙালী আলাদা আলাদা ভাবে কোথাও বা সম্মিলিতভাবে দোল ও হোলীর অনুষ্ঠান সেলিব্রেট করবে। শুনতে পাই বলা হয়, বাঙালী দোলের দিন সকাল থেকে মদ খায় আর অন্য উৎসবে সন্ধ্যে থেকে।

তবে যে ১৩হাজার টাকার সুরা সংগ্রহ ক'রে রেখেছে সে একজন অবাঙালী। সুরা সঙ্গে বিরিয়ানি ও মাটন চাপ। নারীপুরুষ সবার নানারকম আনন্দময় জমায়েত ও আলোচনা শুনতে শুনতে বিড়বিড় ক'রে গেয়ে উঠলাম "রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাও যাও গো এবার যাবার আগে।"
তাই বাঙালী-অবাঙালী পার্থক্য করা গেল না। আমরা সবাই রাজা।

গানঃ কেমনে বাসিবো ভালো

কেমনে বাসিব তোমারে
ভালো প্রভু হে, কেমনে বাসিবো তোমারে।
সাড়া দেও না, কথা কও না
আর কত ডাকি সুরে
কেমনে বাসিব তোমারে
ভালো প্রভু হে, কেমনে বাসিবো ভালো তোমারে।

আশায় আশায় ব'সে থেকে
আর কতকাল বাঁচিব?
মনে হয় শবরী হইয়া
আর কতকাল রহিবো।
আশা রাখি আলো পাবো
ডুবে যাই অন্ধকারে,২
কেমনে বাসিব তোমারে
ভালো প্রভু হে, কেমনে বাসিবো ভালো তোমারে।

দেবালয়ে ঘুরে ঘুরে দেখি তার ভিতরে তুমি নাই
ফটোর ভিতরে খুঁঝে দেখি বৃথা সময় ফুরিয়ে যায়।
গ্রন্থ মাঝে কোথাও নাই
খুঁজতেছি কোন আঁধারে
কেমনে বাসিব তোমারে
ভালো প্রভু হে, কেমনে বাসিবো ভালো তোমারে।

অন্তর আমার কেঁদে বলে দয়া করো দয়াল আমারে
নতশিরে করজোড়ে বলি তোমার দরবারে,
দাও সাড়া দাও, দেখা দাও
এসো আমার অন্তরে
কেমনে বাসিব তোমারে
ভালো প্রভু হে, কেমনে বাসিবো ভালো তোমারে।
( লেখা ৭ই মার্চ'২০২৫)
( কেমনে চিনিবো তোমারে গানের সুরে।)

Saturday, March 22, 2025

উপলব্ধি

আগেকার দিনের একান্নবর্তী পরিবারের ( Joint family) কথা আজ ভীষণভাবে মনে পড়ে। কি সুন্দর ছিল সেই দিনগুলি। নিজের মায়ের চেয়ে কাকিমা, জেঠিমারা সোনামা, ভালোমা, বড়মা, রাঙামা, ছোটোমা রুপে ছিল বড় কাছের, বড় আপনার জন! নিজের বাবার চেয়ে ছিল কাকা, জ্যাঠারা বড়বাবা, মেজবাবা, ফুলবাবা, ছোটোবাবা রুপে ছিল আত্মার আত্মীয় পরমাত্মীয়! কখনই মনে হ'তো না, বুঝতে পারতাম না কে বেশী আর কে কম আপন! মনে পড়ে ১৯৭৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের দিনটার কথা, যেদিন বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেছিলেন চিরদিনের মত পরমধামে। সেদিন দেখেছিলাম আমার জ্যাঠতুতো দাদাদের ভুমিকা। দেখেছিলাম বাবার পা ধরে জ্যাঠতুতো দাদাদের 'ছোটোবাবা ছোটোবাবা' ব'লে কান্না, বুক ফাটা আর্তনাদ!

সেই যে ১৯৪৭ সালে , দেশভাগের যন্ত্রণা নিয়ে বাবা চলে এসেছিলেন এই বাংলায়, সেদিন বাবার হাত ধ'রে এই বাংলায় চলে এসেছিল আমার জ্যাঠতুতো দাদারা। আমার বাবা জ্যাঠারা ছিল পাঁচ ভাই। বাবা ছিলেন সবার ছোটো। সব কথা এখন আর মনে পড়ে না। শুধু এটুকুই মনে আছে কি কঠিন পরিশ্রমে বাবা নিজের ছয় সন্তান সহ টলমল পরিবারেরকে মাথায় নিয়ে সমস্ত দাদাদের কিভাবে সক্রিয়ভাবে পাশে থেকে একে একে বসিয়ে দিয়েছিল ঘর। আর তারই পরিণামে দেখেছিলাম বাবার অন্তিম যাত্রায় তাঁদের বুকফাটা কান্না। সেদিন পরিণত যুবক আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছিলাম সেই করুন দৃশ্য। ভুলে গেছিলাম আমরা ভাইয়েরা বাবার মৃত্যু শোক!!!!!! এই ছিল একান্নবর্তী পরিবারের মিলেমিশে থাকার হৃদয় নিংড়ানো আনন্দের ছবি। আজ আর সেই দিন নেই, নেই সেই ছবি। আছে শুধু বুকভরা হিংসা আর হাহাকার! হাহাকার আর হিংসা!!----প্রবি।
( লেখা ২২শে মার্চ'২০২২)

Friday, March 21, 2025

বিচিত্রা ১১৬

কারো সাহায্য ছাড়া কিছু করা কঠিন, 
শারিরিক-মানসিক কষ্টের ও যন্ত্রণার, 
এ কথা সত্য।
কিন্তু কোনও কিছুই নয় অসম্ভব 
জেনো এ কথাও যথার্থ।

ইষ্টকাজে কাউকে বাধা দিয়ে 
আটকে রাখা যায় কিছুদিন, চিরদিন নয়। 
কিন্তু চিরদিনের জন্য ইষ্টের কাছে 
সে অপরাধী হয়।
(লেখা ২১শে মার্চ'২০২১)

দয়াল তোমায় আমি ভালোবাসি। 
এ জীবন দিলাম তোমায়।
তুমি যা বলবে তাই করবো আমি। 
(লেখা ২১শে মার্চ'২০২৪)

বিচিত্রা ১১৫

সৎসঙ্গীদের প্রতি: ১ থেকে ১০

ভয় কি তোর ভাইরাসে করোনার!
করোনা নামক দৈত্যটিকে নাম আগুনে 
জ্বালিয়ে মার, পুড়িয়ে মার।

মহাশক্তি ঘুমায় তোর হৃদয়ে 
তুই কেনরে ভয়ে মরিস! 
করোনা নামক মৃত্যুদূতে 
নাম আগুনে পুড়িয়ে মারিস।

রাস্বা নামে জয়গুরু ব'লে দে না ঝাঁপ!
করোনার মরণ দুয়ারে পড়বে ঝাঁপ!!

যে যা বলে বলুক, যে যা করে করুক!
তার সাথে বুকের মাঝে আছে যে নাম, মহানাম 
সেই নামের তাপে করোনা পুড়ে মরুক!!

করোনার ঔষধ সদাচার 
আর, মহৌষধ তাঁর বীজনাম! 
নামামৃতে করো তুমি
করোনা ভাইরাসকে খানখান!

নাম করো, নাম করো, নাম করো ভাই!
নাম আগুনে করোনা ভাইরাস 
পুড়ে হবে ছাই!!

দিয়েছিলে কথা হ'য়োনা কথার খেলাপি;
করোনা ভীতি শুধু নয়, 
নাম থেরাপিতে কাটবে মহাভীতি, যমভীতি! 
নিঃশ্বাসে-প্রশ্বাসে করো নাম, গাও নাম, 
করো নাম আবৃত্তি!

করোনা-য় ক'রো না ভয়, হ'য়ো না আত্মঘাতী!
দয়ালের নাম অমৃত করো পান 
কাটবে অকাল যমভীতি!

করোনা নিয়ে ক'রো না হেলাফেলা, 
ক'রো না অবহেলা; 
করোনার চ্যালেঞ্জ জেনো মন্ত্র 'ক'রো না' 
আর বীজনাম মহানাম নহেলে পে দহেলা!

চীন থেকে এলো ভারতে মৃত্যুদূত করোনা 
আর চীনের প্রতি ভারতের আছে করুণা! 
কারণ পরম করুণাময় পুরুষোত্তম 
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের দেশ ভারত! 
তাই তাঁর কাছে আসুন প্রার্থনা করি 
তাঁর সৎনামে বাঁচুক জগৎ!
( লেখা ২১শে মার্চ'২০২০)


সৎসঙ্গীদের করোনা থেকে নেই কোনও ভয় নিশ্চয়ই। 
কপটতা ক'রে ত্যাগ অকপট হৃদয়ে করো নাম জপ; 
মাথার উপর আছেন দয়াল, আছে দয়ালের হস্ত অভয়!

নিষ্ঠা সহ অকপট হৃদয়ে প্রত্যহ অতি প্রত্যুষে 
করো ইষ্টভৃতি আর জপ নাম অবিরাম!
করোনার ভয় থেকে পাবে মুক্তি,
পাবে নিশ্চিত আরাম!!
( লেখা ২০শে মার্চ'২০২০)

তুমি আছো সব আছে। তুমি নেই কিচছু নেই। 
ব্রহ্ম সত্য জগত সত্য। ব্রহ্ম নেই জগৎ নেই। 
অর্থাৎ তুমি সত্য জগত সত্য। তুমি নেই জগত নেই।

পিতামাতা ছাড়া সন্তান অসম্ভব। 
ঠিক তেমনি ইশ্বর ছাড়া সৃষ্টি অসম্ভব। 
পিতামাতার অস্তিত্ব বাস্তব, 
তেমনি ইশ্বরের অস্তিত্বও বাস্তব।

শ্রীশ্রীঅবিনদাদা সূর্যকে বগলদাবা ক'রে 
কর্মসমুদ্রে দিয়েছেন ঝাঁপ। 
সৎসঙ্গী তোমরাও সূর্যকে বগলদাবা ক'রে 
তাঁর সঙ্গে দাও ঝাঁপ
( লেখা ২২শে মার্চ'২০২৪)

Thursday, March 20, 2025

প্রবন্ধঃ করোনা ও ক'রোনা (৪)

করোনা রোগের প্রতিষেধক হিসেবে সরকার পক্ষ থেকে ও চিকিৎসক মহল কিছু কিছু বিষয় করা আর না করার আবেদন জানিয়েছে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে। বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া, চোখে-নাকে-মুখে হাত না দেওয়া, মুখে মাস্ক ব্যবহার করা, পরস্পর থেকে দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম থেকে দূরে থাকা, অসুস্থ অবস্থায় ঘরে থাকা ইত্যাদি।


আর শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র কুটিল দুষ্ট রোগের হাত থেকে বাঁচতে মানুষকে ধর্মের মর্মকথা বোঝাতে গিয়ে ছোট ছোট ছড়ার মাধ্যমে বলেছিলেন,


স্পর্শ দোষে জীবাণু ধায় সংশ্রবেতে মন----
এই বুঝে তুই চলিস-ফিরিস বুঝলি বিচক্ষণ? ৬৭
বাহ্যি ক'রে ময়লা ঘেঁটে হাতটি ধুয়ে ফেলে,
ভাল ক'রে মাটি-জলে শুদ্ধি নাহি পেলে,
চর্ম্মরেখায় মলের কণা লুকিয়ে ধ'রে লক্ষ ফণা
চোখ আড়ালে ছোবল দিয়ে মারেই বিষটি ঢেলে। ২২
চোখের জল বা পিচুটি মুছে চোখ-হাত ধুয়ে ফেলাই ভাল,
নইলে কিন্তু হ'বি সবই হরেক ব্যাধির কুজঞ্জাল। ২৯
শিকনি ঝেড়ে ধোয় না হাত
বক্ষ ব্যাধির হয় উৎপাত। ৩৩
মলত্যাগ আর প্রস্রাব ক'রে উপযুক্ত শৌচে যাবি,
নইলে জানিস খল ব্যাধিতে হঠাৎ কিন্তু নষ্ট পাবি। ৩৪
যা' ছুঁলে যা ধরলে যা' ধরলে রে তোর
শরীর-জীবন বিষাক্ত হয়,
সেই ধরা, সেই করাগুলিতেই অস্পৃশ্যতার নীতি রয়। ৫৪


এমনিভাবেই নানা প্রকারে শ্রীশ্রীঠাকুর বহু বছর আগেই ক'রোনার মাধ্যমে অর্থাৎ করা আর না করার নির্দেশ দানের মাধ্যমে আমাদের সাবধান ক'রে দিয়েছেন করোনার মত নানা আরো ভয়াবহ মারণাস্ত্র মোকাবিলার।
শেষ। ( লেখা ২১শে মার্চ'২০২০)

Tuesday, March 18, 2025

বিচিত্রা ১১৪

মুক্ত মন মানে কি?
উলঙ্গ হ'য়ে দেখানো আছে কত রত্ন ধন!?
আর স্বাধীন? বুক বাজিয়ে দেখানো রিপু আমার নয়,
আমি কত রিপুর অধীন!?

গেঞ্জি গায়ে সৎসঙ্গে আছো বসে হ'য়ে গোঁসাই!
দেখে যেন মনে হয়, 
গোঁসাই রূপে বসে আছে স্বয়ং অনুকূল সাঁই!!
( লেখা ১৯শে মার্চ'২০১৮)

চতুর্দিকে ক্ষমতার এত দোর্দণ্ড প্রতাপ, 
দাপট আর ঔদ্ধত্বের তীব্র আস্ফালন! 
ঈশ্বর কি ধৃতরাষ্ট্র আর ঠুঁটো জগন্নাথ হ'য়ে বসে আছেন?

জানি না কাল সকাল কি নিয়ে অপেক্ষা করছে আমার জন্য। 
জানার ইচ্ছেও নেই। শুধু আক্ষেপ দয়াল তোমার জন্য 
কিছু করতে পারলাম না।
( লেখা ১৯শে মার্চ'২০২১)

প্রবন্ধঃ আমি পবিত্র, আমি পবিত্র, আমি পবিত্র।

কথায় কথায় ঈশ্বরকে টেনে আনা কেন? যত দোষ নন্দ ঘোষের মত সব কিছুতেই ঈশ্বরকে টেনে আনতে হবে? এইটা মানসিক ব্যাধি নিজেকে সব কিছুর উর্ধ্বে ভাবা সবজান্তা অহংকারী ও হতাশা অবসাদগ্রস্থ মানুষের। ঈশ্বর আছে কি নেই, সত্যি কি মিথ্যে তা' নিয়ে বালখিল্য জ্ঞানের অধিকারী মানুষেরাই মনের অপূর্ণ ইচ্ছের অবদমিত রাগ মেটায় কথায় কথায় উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাবার মত ঈশ্বরের উপস্থিতিকে টেনে এনে অকারণ তর্ক ক'রে। এই সমস্ত নেগেটিভ চিন্তার মানুষ পজিটিভ কোনও কাজে অংশীদার হ'তে পারে না কোনওদিনও কোনও জন্মেই।

এখানেও তাই হ'লো। সুনীতা উইলিয়ামসের বিজয়ের সঙ্গে ঈশ্বরের যোগসূত্র খোঁজার কোনও দরকার ছিল কি? এখানে সুনীতা উইলিয়ামস মহাকাশে গেছেন, পোষ্টদাতা আকাশ আনোয়ার (অস্ট্রেলিয়া) যাননি; আর মহাকাশে যাবার মত বায়োলজিক্যাল মেক আপ তার গঠিত হয়নি, সবার হয় না। সুনীতা উইলিয়ামস মৃত্যুকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে, ভয়কে উপেক্ষা ক'রে মহাকাশে গেছেন, দেখেছেন, অনুভব করেছেন, উপলব্ধি করেছেন, অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন কিন্তু তিনি নিজে ঈশ্বর বিরোধী কোনও কথা বলেননি, মন্তব্য করেননি। তিনি আগুনে ঝাঁপ দিয়েছেন, পোষ্টদাতা আকাশ আনোয়ার (অস্ট্রেলিয়া) দেননি।

আগুনে ঝাঁপ দেওয়া, আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার অভিজ্ঞতা প্রহ্লাদের হয়েছিল, ঠিক তেমনি মহাকাশ ভ্রমণের ভালো মন্দ, ভয়ংকর, মধুর, আনন্দ, ভয়, কোনও ঐশ্বরিক বা মহাজাগতিক শক্তি ইত্যাদির অভিজ্ঞতা সুনিতা উইলিয়ামসের হয়েছিল কি হয়নি সেটা সুনীতা উইলিয়ামস জানেন, আকাশ আনোয়ার (অস্ট্রেলিয়া)-এর জানার কথা নয়। ঈশ্বর বিশ্বাসীরা যেমন নিজেরা আগুনের ভয়ংকর ভয়াবহ অস্তিত্ব অনুভব ও উপলব্ধি না ক'রেই এবং অভিজ্ঞতা অর্জন না ক'রেই আগুনের মুখে ফেলে দেওয়া প্রহ্লাদের ঈশ্বরের প্রতি গভীর বিশ্বাস, নির্ভরতা ও সমর্পিত প্রাণের গুণগান করে ঠিক তেমনি আকাশ আনোয়ার (অস্ট্রেলিয়া) ফেসবুকে তার পোষ্টে সুনিতা উইলিয়ামসের এই মহাকাশ সফরে্র কঠিন দিনগুলিতে তাঁর কি অভিজ্ঞতা, তাঁর কি অনুভূতি, কি উপলব্ধি হয়েছিল তা' না জেনেই বালখিল্য অহংকারী ঋষির বালখিল্য জ্ঞানের মত অকারণ ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কামান দেগে বসলেন সবজান্তার মত। সুযোগ পেয়েই বকনা বাছুরের মত লম্ফ দিয়ে ঝম্প মেরে ঈশ্বর বিরোধীতা ও নারী স্বাধীনতার ফাটা বস্তাপচা একঘেয়ে রেকর্ড বাজিয়ে দিলেন।

এর থেকে প্রমাণ হয় যারা জীবনে ব্যর্থ, অসফল এবং একসময় ঈশ্বরের কাছে কিছু না ক'রে ফোকটে যাদু টোনার মত সফলতা পাওয়ার আশা করেছিল, আলাদিনের প্রদীপের মত কিছু অলৌকিক কর্মকান্ডের মত বাপের চাকর ঈশ্বরকে হুকুম দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু পাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল এবং সেই ফাঁকিবাজি আশা, সেই ঠুনকো স্বপ্ন পূরণ হয়নি বিন্দুমাত্র যাদের, তারাই কথায় কথায় অকারণে জান্তে অজান্তে, চেতন ও অবচেতন মনে ঈশ্বরের উপস্থিতির বাপ বাপান্ত করে।
এখানেও তাই সুনিতা উইলিয়ামসের মহাকাশ বিজয় নিয়ে বলতে গিয়ে যত দোষ নন্দ ঘোষের মত ঈশ্বরকে টেনে এনেছেন আকাশ আনোয়ার (অস্ট্রেলিয়া) নামক পোষ্টদাতা ফেসবুকে তার পোষ্টে। আর সেই কথার সমর্থনে হৈ হৈ ক'রে কমেন্ট বক্সে ঝাঁপিয়ে পড়েছে জীবনে ব্যর্থ, অলস, হতাশা ও অবসাদগ্রস্থ, অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী ফাঁপা জ্ঞানীর দল।

সুনিতা উইলিয়ামস যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে মহাকাশে আটকা পড়েছিলেন। স্বর্গ নরক, ঈশ্বর, আল্লা, ভগবান সম্পর্কে বোধহীন, অভিজ্ঞতা, অনুভূতি ও উপলব্ধিহীন, জ্ঞানহীন, নেগেটিভ মানুষের উপস্থিতি ছাড়াও পৃথিবীর কোটি কোটি পজিটিভ মানুষের পবিত্র প্রার্থনায় সুনিতা উইলিয়ামস ও অন্যান্য সাথীরা সুস্থ ও অক্ষতভাবে পৃথিবীতে ফিরে আসছেন ও আসবেন নিশ্চিত। মহাকাশ ও মহাকাশের সমস্ত সৃষ্টির কারণের কারণ পরমকারণের বুকে গিয়েছিলেন সুনিতা উইলিয়ামস ও তাঁর সাথীরা।

তাই, পরমকারুণিক তাঁদের বুকে করেই আগলে রেখেছেন ও নিরাপদে ফিরিয়ে দেবেন পবিত্র পৃথিবীর বুকে, পবিত্র মানুষদের প্রার্থনায় খুশী হ'য়ে পবিত্র মানুষদের কাছে। যতদিন পবিত্র মানুষ আছেন ততদিন আছে পবিত্র পৃথিবী আর পবিত্র মানুষের প্রার্থনায় সাড়া দেন পরমকারুণিক। তাই আসুন একসঙ্গে ব'লে উঠি, ' হে পরমকারুণিক, আমি পবিত্র, আমি পবিত্র, আমি পবিত্র।'

Monday, March 17, 2025

বিচিত্রা ১১৩

মানুষের সবচেয়ে বড় মুর্খামি কি? 
ঈশ্বরের সাথে করে চালাকি!!
( লেখা ১৮ই মার্চ'২০২০)

ঈশ্বর বিশ্বাসী ধার্মিকদের রাজনীতির লোকেরা দুর্বল ভাবে। ভাবে এরা ভাবপ্রবণ, আবেগ সর্বস্ব। ভাব আর আবেগকে এরা দুর্বলতা মনে করে। মনে করে এরা কোনো কাজের না। সমাজ বা রাষ্ট্র গঠনের কাজ রাজনীতি বা রাজনৈতিক নেতার। কিন্তু ভারতের প্রাচীন ইতিহাস তা বলে না। ধর্মের ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে রাজনীতির উত্থান আর ঈশ্বর বিশ্বাসী ধার্মিক প্রকৃত রাজনৈতিক নেতা। রাজনীতির রাজনীতি ধর্মনীতি আর নেতার নেতা ধর্মনেতা। ধর্ম মানে স্বপারিপার্শ্বিক বাঁচা বাড়া। আর স্বপারিপার্শ্বিক বাঁচাবাড়ার নীতিই ধর্মনীতি। তাই ঈশ্বর বিশ্বাসী ধর্মীয় নেতাদের ভাবুক আবেগ সর্বস্ব দুর্বল ভাবা মূর্খতা। ভাব নেই, আবেগ নেই সেই নেতা সাক্ষাৎ শয়তান। ভাবুক আবেগ সর্বস্ব  সক্রিয় ও নিয়ন্ত্রিত মানুষ ভগবান। প্রবি।

দোলের দিনে আমার পরমপিতা দয়ালের কাছে আমি কি আর চাইতে পারি। শুধু দয়ালের কাছে আমার একান্ত চাওয়া হে দয়াল! সত্যি সত্যিই সবার বিবর্ণ ফ্যাকাসে জীবন রঙ্গীন ঝলমলে ক'রে দাও। আমার আন্তরিক প্রার্থনা তুমি পূরণ করো দয়াল।
( লেখা ১৮ই মার্চ'২০২২)

Sunday, March 16, 2025

বিচিত্রা ১১২

অন্যের দর্শন বা মতকে নিজের দর্শন বা মত হিসাবে প্রচারে বাহাদুরি!
এ এক সাংঘাতিক ব্যাধি, যা বৃত্তি চুরির মত ঘৃণ্য মেধা চুরি!!

একটা সময় আসে যখন নিজেকে মনে হয় ভীষণ অসহায়!
সেই সময় প্রভু তুমি থেকো পাশে, থেকো সহায়।

কেন যে মাঝে মাঝে
অবিশ্বাস, সন্দেহ আসে!
মাথার ওপরে তুমি আছো প্রভু জানি আমি;
এ বিশ্বাস আমার আছে। তবুও.........।


তুমি আছো আর আমি আছি; 
দুজনার মাঝে আর কেউ নেই, কিছু নেই। 
তোমার চরণ ছুঁয়ে যেন আমি 
তোমার চলন পূজার পূজারী হই!!

আকাশের ভগবান বা অমূর্ত ভগবান বা দেবদেবীর মূর্তি
আমার লাগে ভালো।
কারণ বেসামাল বৃত্তি-প্রবৃত্তি বা চরিত্রে 
ফেলতে হয় না আলো! 

জীবন্ত ঈশ্বর বা মূর্ত ভগবান 
পূজন করে যেই জন 
সেইজন পূজিছে ঈশ্বর।

মূর্তি পূজা আর আকাশের ভগবানের পূজায় করো বৃথা কালক্ষেপ!
শেষের সেদিনে থেকে যাবে শুধু অন্তরে ব্যর্থতার আক্ষেপ!!

সংক্ষিপ্ত জীবন মাঝে বৃথা মূর্তি পজায়
কেন করো সময় অপচয়?
যদি করতেই হয় করো জীবন্ত ঈশ্বরে;
নয়তো রিপুর টানে হ'য়ে মত্ত
নাস্তিকের মত চুটিয়ে করো
জীবন এনজয়।

দিন শেষে মন বলে,ফিরে চলো মন সেই নিকেতন! 
যেথায় আছে বাঁধা শৈশব আর কৈশোরের হৃদস্পন্দন!!
( লেখা ১৬ই মার্চ'২০১৮)

ঠাকুর অপমানিত হন, 
ঠাকুরকে নিয়ে লোকে হাসাহাসি করে 
এমন কাজ করছো 
আবার বুক বাজিয়ে আমি গুরুভাই একথা বলছো!!

ঠাকুর তোমার হাতের পুতুল 
তাই ইচ্ছেমতো করছো মাতামাতি;
আর
ভক্তির হাতিয়ার তোমার ঐ 'হাতাহাতি'!!

( লেখা ১৬ই মার্চ'২০১৯)





























Tuesday, March 11, 2025

বিচিত্র ১১১

সমাজসেবা পয়সার বিনিময়ে হয় না।
আন্তরিকতা সাথে হৃদয়ের স্বচ্ছতা
না থাকলে কেউ তার সুফল পায় না।

হিংসা এমনই জিনিস তাকে বাড়তে দিলে বেড়েই যায়; 
কোনও ভালো কাজ করেও না, করতেও দেয় না; 
শুধুই কথার বিষাক্ত হাই!

কেউ ভালো কাজ করলে বাধা দেয়,
করতে দেয় না যারা;
ভবিষ্যৎ তাদের ঘোর অন্ধকারে ভরা!

কে করবে ভালো কাজ আর কেনই বা করবে?
কাঁকড়ার চরিত্র নিয়ে মারামারি ক'রে মরবে!

অতীতের সাহায্য ও দিনগুলি ভুলে যাও? 
অনিত্য ঝলমলে বর্তমান নিয়ে ব্যস্ত থাকো নেশাগ্রস্থের মত! ভবিষ্যতে কি অপেক্ষা করছে দেখে নাও!

কথায় আছে:
কাজের বেলায় কাজী কাজ ফুরোলে পাজি!
পাজির পাঁজিতে জেনো আছে 'শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর' 
বলতে পারি এ কথা রেখে বাজি!!

আজ তোমার দিন তাই ভুলে গেছো 
আর পড়ে না মনে সেইদিন!
কেউ ছিল না তোমার সাথে যেদিন!!
( লেখা ১১ই মার্চ'২০১৯)













































বিচিত্রা ১১০

বিষবৃক্ষ বপন ক’রে ফল পেতে চাও অমৃত!?‘
গোড়া কেটে আগায় জল’
বন্ধু! এই সংস্কৃতি চলবে আর কত!?
____________________________

আমি যাবো না তোমার সাথে 
আমার ঠাকুর আমায় ডাকে;
শঙ্খ, চক্র, গদা, পদ্ম হাতে
আমার ঠাকুর আমায় ডাকে!

তুমি কাঁদলে যে মন হয় ভারী 
তোমার ডাকে গেলে আমায় 
করতে হবে তাঁর সাথে আড়ি।
আমি কি তা পারি?

বলো, আমি ছাড়তে কি তাঁরে পারি?
আবার তোমায় ছাড়তেও আমি নারি!
জীবন যদি যায় হারিয়ে
এমন প্রেমে কেন মরি!?

এখন কি করবো বলো?
প্রাণ যে হলহল!
তাই তো বলি,
চলো, ঠাকুর বাড়ি চলো।

সেথায় থাকবো এক অঙ্গে,
ঠাকুর থাকবে মোদের সংগে; 
জীবন খুঁজে পাবে সেথায় 
রামধনুরই সাত রঙা রঙে!!
______________________________________

উন্নতি আর দুর্নীতি দুই সৎ ভাই! বলছে,
হাত ধরাধরি ক'রে চলো যাই!!

ভালো মানুষের মুখোশ পরে
তুমি কাকে দিচ্ছ ফাঁকি?
বুকের মধ্যে তাকিয়ে দেখো, 
সেথায় বসে কে যেন কিসব করছে আঁকিবুঁকি!!

তুমি বলো, ধোঁয়া তুলসী পাতা কেউ নয়।
আমি বলি, তুলসী পাতা নোংরা হ'লেও
সে তুলশি পাতা।
ধুয়ে নিলে আবার নারায়ণের পায়ে দেওয়া যায়।
বরং বলতে পারো বিছুটি পাতা।
যাকে ছুলেই পরে হয় ক্ষয়।
( লেখা ১১ই মার্চ'২০২৮)

































































































































































Sunday, March 9, 2025

বিচিত্রা ১০৯

হে দয়াল! আমার ভীষণ বাঁচতে ইচ্ছে করে, 
সবাইকে নিয়ে বাঁচতে ইচ্ছে করে। 
সবার মাঝে তোমায় মধ্যমনি ক'রে বাঁচতে চাই।
( লেখা ৯ই মার্চ'২০২২)

হে ঈশ্বর! হে দেবাদিদেব মহাদেব! 
আরো একবার হ'ক দক্ষযজ্ঞ! 
আরও একবার হ'ক মহাপ্রলয়! 
ফিরে যেতে চায় মন তব আলয়!!

 মন বলে চল ফিরে এবার, 
এই তো সময় ফিরে যাবার,
স্বপ্ন যাবে বাড়ি তোমার প্রভু! 
স্বপ্ন, যাবো বাড়ি তোমার! 
চরণতলে ঠাঁই দিও তোমার!!
( লেখা ১০ই মার্চ'২০১৮)




















































বিচিত্রাঃ ১০৮

মানুষ ও মানসিক সমস্যা ১ থেকে ১৫

মানুষ অকারণ মানসিক সমস্যায় ভুগছে, কষ্ট পাচ্ছে;
মুখোমুখি ব'সে পারস্পরিক আলোচনায় তা মিটে যেতে পারে।
মুখোমুখি বসুন। চা খান। মন খুলে কথা বলুন। 
খোলা মনে কথা বলুন। সমস্যা মিটে যাবে।

নিজেকে চিনুন। নিজের মনকে পড়ুন। 
মনের ঘুণপোকাকে খুঁজে বের করুন। 
তারপর তাকে আপোষহীনভাবে হত্যা করুন।

মানুষের মানসিক সমস্যার মূল কারণ তার অনিয়ন্ত্রিত মন। 
তাকে নিয়ন্ত্রণ করুন। সমস্যা মিটে যাবে।

মানুষের যত সমস্যার আঁতুড় ঘর তার মন! 
তাকে পরিস্কার করুন। বন্ধ দরজা জানালা খুলুন। 
অক্সিজেন পাবেন।

মনের নোংরা সাফ করুন; তা অন্যের মনে ত্যাগ করবেন না, 
তার নোংরাও আপনার মনে ত্যাগ করতে দেবেন না।

মনের বেয়াড়াপনাকে শাসন করো,
চুলকানি সারাও, বাড়তে দিও না। 
শান্তি পাবে। সম্মান পাবে।

অন্যের মনের আয়নায় নয়, 
নিজেকে নিজের মনের আয়নায় দেখুন। 
দেখতে পাবেন নিজের লুকোনো কুৎসিত মুখ।

যার সঙ্গ করলে মন নোংরা হ'য়ে যায়, 
হ'য়ে যায় অপবিত্র তার সঙ্গ ক'রো না।
মানসিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে।

মন উল্টালে নম, নম মানে নত হওয়া। 
হয় শাতনের পায়ে নতুবা ভগবানের পায়ে নত হও। 
অশান্তি-শান্তি তোমার হাতে।

মনের গলায় লাগাম পড়াও, 
মনের পায়ে বাঁধো শেকল, 
ঠুলি পড়াও মনের দু'পাশে 
তারপর দৌড় করাও সঠিক নিশানায়।

মন কিসের ভান্ডার? অমৃতের? গুয়ের? 
সুগন্ধ বা দুর্গন্ধ অনুযায়ী মানসিক সমস্যার 
অবসান ও উত্তরণ।

মানুষের দাস মন নাকি মনের দাস মানুষ?
দাসানুযায়ী জীবন, 
জীবন অনুযায়ী সুখ-অসুখ শান্তি-অশান্তি।

মানুষ মানসিক সমস্যায় ভোগে 
অসুস্থ ও দুর্বল মনের কারণে। 
সুস্থ ও বলিষ্ঠ মন পেতে চাই 
প্রভুর চরণ ও চলন।

মানসিক সমস্যা মুক্ত জীবন আর ঈশ্বর দর্শন সমার্থক। 
সমস্যা মুক্ত হওয়ার একটাই উপায় হ'লো
প্রভুর নির্দেশ ও নিদেশ পালন।
( ৯ই মার্চ'২০২১)