Powered By Blogger

Friday, August 22, 2014

বন্যেরা বনেই সুন্দর!!!!!




উফফফফফফফ! কত্তোওওওওওওওওওও টিয়াপাখি!

আমাদের বাড়িতে একটা ছিল! কি সুন্দর মিষ্টি ক'রে মেয়ের নাম ধ'রে ডাকতো, 'গুড়িয়া, গুড়িয়া, গুড়ি য়াআআআআ!!!!!!!!!!!!!!!!!' ছোলা খেতো, বাদাম খেতো, খেতো কাঁচালংকা। একদিন খাঁচার ভিতর দিয়ে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিয়ে গলায় বুলিয়ে দিচ্ছিলাম। হঠাৎ ঘাড় ঘুড়িয়ে কামড়ে দিল। মনে হয় হয়তো ও ব্যথা পেয়েছিল। আমি দেখলাম আমার আঙ্গুলে রক্ত। আঙ্গুলটা ঠোঁটের কামড়ে কেটে গিয়েছিল। আমি ব্যথায় চিৎকার ক'রে আঙ্গুলটা বের ক'রে এনেছিলাম। দেখলাম পাখিটা খাঁচার ভিতর ছটফট করছে আরঘুরপাক খাচ্ছে। মাঝে মাঝে খাঁচার ফাঁক দিয়ে ঠোঁট বের করে মুখটা ঘষছে। বুঝলাম ও বুঝতে পেরেছে ও আমায় ব্যথা দিয়েছে আর আমি ব্যথা পেয়েছি!!!!!! তারপর কিছুক্ষণ পর আবার ওর গলায় খুব আস্তে আস্তে আঙ্গুল বুলিয়ে দিলাম। ও চোখ বুঝে চুপ ক'রে রইলো!!!!!! কি অদ্ভুত sense!!!!!!! মাঝে একদিন কি করে জানি খাঁচার দরজা খোলা পেয়ে উড়ে গেল। কিন্তু প্রতিদিনই কোথা থেকে জানি উড়ে এসে বসতো ছাদের ধারে পেয়ারা গাছটায় আর ডাকতো, 'গুড়িয়া, গুড়িয়া, গুড়ি য়াআআআ!!!!!!!!!!!! আমরা ডাকতাম, 'আয় আয় আয়'! টিয়াপাখিটা কিছুক্ষণ এ ডাল থেকে ও ডাল উড়াউড়ি করতো, গাছের পাকা পেয়ারা খেতো আর মাঝে মাঝেই ব্যস্তসমস্ত ভাবে ডেকে উঠতো 'গুড়িয়া, গুড়িয়া'! তারপর আবার যেমন আসতো তেমনি হঠাৎ কোথায় জানি উড়ে চলে যেত! এভাবে বেশ কয়েকদিন এসেছিল আর মিষ্টি সুরে 'গুড়িয়া' বলে ডাকতো। তারপর একদিন আসা বন্ধ ক'রে দিল! একেবারে বন্ধ ক'রে দিল! মনটা খারাপ হ'য়ে গেল! মনে হ'ল জীবন থেকে কি যেন হারিয়ে গেল! যেদিকে উড়ে চলে যেত সেদিকে দূরের নীল সাদা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতাম রোজ, এই বুঝি এলো, এই বুঝি ডেকে উঠলো মিষ্টি স্বরে 'গু-ড়ি-য়া'!!!!! কিন্তু না আর আসেনি, কোনোদিনই আসেনি। তবে আমার খাঁচায় বাঁধা থেকে আমায় আনন্দ দেবার বদলে ও ওর নীলাকাশের নিজস্ব জগতে ফিরে গেছে ভেবে চোখের কোণে জল এলেও সেই জল ছিল আনন্দের অশ্রু!!!!!!!! কারণ শিশুরা যেমন সুন্দর মাতৃক্রোড়ে, ঠিক তেমনি বন্যেরা বনেই সুন্দর!!!!!

No comments:

Post a Comment