বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ১৬ইমে প্রকাশ হওয়ার
ঠিক একমাস পর উন্মোচিত হ’ল নির্বাচিত প্রতিনিধির মুখ আর মুখোশের রহস্য।
গত ১৫ জুন নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র কৃষ্ণনগরের অন্তর্গত নাকাশিপাড়ার হরনগর গ্রামে নিহত তৃণমূল কর্মী আসাদুল মণ্ডলের স্মরণসভায় যোগ দিতে
যান তাপস পাল। ম্যাটাডরে চেপে সেই সভায় আসার পথে দুর্ঘটনায় আহত হন নাকাশিপাড়ার শেষ সীমানা চৌমাহা গ্রামের কয়েক
জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। তাই শুনে
স্মরণসভা থেকে সটান
চৌমাহা গ্রামে চলে যান তাপস পাল। সেখানে উত্তেজিতভাবে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বক্তব্য পেশ করেন।
কী বলেছিলেন তাপস পাল ?
“যদি বিরোধী কেউ থেকে থাকেন,
শুনে রাখুন, যদি এই গ্রামে আমাদের মা বোন, বাচ্চা, চাচা, চাচি – কারও
গায়ে হাত পরে,
এই তাপস পাল ছেড়ে কথা বলবে
না আমি বলে রাখলাম।”“তাপস পাল নিজে
রিভলবার বার করে গুলি করে দিয়ে
চলে যাবে। একজনের গায়ে হাত পড়লে
তাদের বাড়ি এখান
থেকে ভেঙ্গে চৌপাট
করে দেবে তাপস
পাল।
“আমি প্রচুর মস্তানি করেছি। আমি চন্দননগরের মাল, কলকাতার মাল না। আমি পকেটে
মাল নিয়ে ঘুরি।”
তার পরেই তাঁর ভাষণের সবথেকে বিতর্কিত মন্তব্য ছিল,
“যদি তৃণমূলের কারও গায়ে হাত দেয়, তাদের গুষ্টিকে আমি .. যা-তা করে দিয়ে চলে যাব। আমার ছেলেদের ঢুকিয়ে দেব, রেপ করে চলে যাবে। রেপ করে চলে যাবে” ইত্যাদি ইত্যাদি আরো আছে।
তার পরেই তাঁর ভাষণের সবথেকে বিতর্কিত মন্তব্য ছিল,
“যদি তৃণমূলের কারও গায়ে হাত দেয়, তাদের গুষ্টিকে আমি .. যা-তা করে দিয়ে চলে যাব। আমার ছেলেদের ঢুকিয়ে দেব, রেপ করে চলে যাবে। রেপ করে চলে যাবে” ইত্যাদি ইত্যাদি আরো আছে।
সোমবার সংবাদ মাধ্যমে তার বক্তব্যের এই ভিডিও প্রচার হওয়ার
পরে তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।
ক্রিয়ার যেমন প্রতিক্রিয়া আছে ঠিক তেমনি
প্রতিক্রিয়ারও আবার প্রতিক্রিয়া আছে। এখন সেই পর্ব চলছে দেশজুড়ে!
তাপস পালের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে তীব্র
প্রতিক্রিয়া! কিন্তু বাংলার মানুষ এইসবে অভ্যস্ত হ’য়ে গেছে
বহু বহু বছর আগে। তবুও আমাদের ভাগ্য ভালো তাপসবাবুর মুখ কথা বলেছে
এখনো হাত কথা বলেনি! এরকম আলগা
আলটপকা ভারসাম্য ও বোধবুদ্ধিহীন নিম্নরুচীর কথা আরও অনেক শিল্পী বলেছেন।
“ভোটের উত্তেজনা কেমন লাগছে” সাংবাদিকের এই প্রশ্নের উত্তরে আজকের জনপ্রিয় নায়ক
দেব বলেছিলেন, "ভোটের উত্তেজনা ধর্ষণের মত, হয় চিৎকার কর নয় উপভোগ কর"
দেবের এই বক্তব্য নিয়েই ওঠে বিতর্কের ঝড়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কমিশন দেবের
বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে। এমনকী, অভিযোগপ্রমাণিত হলে মহিলাদের বিরুদ্ধে কটূক্তি করার
জন্য এই টলিউট
স্টারের তিন বছরের
জেল এবং জরিমানাও হতে পারে।
যদিও এমন কিছু
এখনো ঘটেনি বা হয়নি এই বাংলায়!
শতাব্দী রায় বলেছিলেন, “আমাকে আপনারা আগে পয়সা
খরচ করে সিনেমা হলে দেখতেন, এম পি হবার পর ৫বছর বিনা পয়সায়
দেখেছেন। আবার যদি বিনা পয়সায় আমায়
দেখতে চান তাহ’লে আমাকে পুনরায় জিতিয়ে আনুন। কি বিনা পয়সায় আমায়
দেখতে চান?”
লোকসভা নির্বাচনের আগে মুনমুন সেন বলেছিলেন, “আমায় দেখলে দুষ্টুমি করতে ইচ্ছে করে না?”
নব নির্বাচিত এম পি মিঠুন চক্রবর্তী সিনেমার ডাইলগের অনুকরণে মস্তানী ঢঙে বলেছিলেন জনসভায়, “বোতাম টিপব এখানে, সরকার গড়ব দিল্লীতে”। যেন সবটাই হাতের মোয়া!!!!!!!
ইচ্ছেমত হাত ঘোরালেই নাড়ু পাওয়া যায়!
এরকম অনেক উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। এঁরা সব চলচিত্রশিল্পী। দিনের পর দিন, বছরের
পর বছর এঁরা
স্ক্রিপ্টের ডাইলগ নির্ভর জীবন কাটিয়েছে। পান্ডুলিপির জমকালো জমাট ডাইলগের বাইরে
বাস্তবজীবনে এঁদের কথা ফ্যাকাসে আলগা! আর রাজনীতির একটা স্বাভাবিক ছন্দ আছে! যে বা যারাই রাজনীতিতে অংশগ্রহন করে সে বা তারাই নিজেদের সমাজের সুপারম্যান হিসাবে ভাবতে শুরু করে। আর এই Tradition সমানে বয়ে চলেছে। দাদাগিরি করাটা
তাদের অধিকারের মধ্যে পড়ে। আর এই ধরণের যারা কৃষ্টি বা সংস্কৃতির জগৎ থেকে আসেন তাঁরা
রাজনীতির জগতের সঙ্গে
নিজেদের মানানসই করতে
গিয়ে অবাস্তব জগতের
সাহায্য নিতে গিয়ে
সমস্ত ব্যাপারটা ঘেঁটে ঘ ক’রে দেয়। তবুও ভাগ্য
ভালো এঁদের মুখ কথা বলে কিন্তু রাজনীতির জগতের সঙ্গে
যারা সরাসরি যুক্ত
তারা এতই পারদর্শী যে, মুখে যেটা
এরা বলেন নিশ্চিতভাবে হাতেও সেটা ক’রে দেখান। আর রাজনীতির বাইরে কৃষ্টি-সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত
বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্ব বা এলিট সম্প্রদায়ের মানুষ যারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত
বা সমর্থক তাঁরা
বিরোধী দলের একটা
ছোট্ট ফুটো নিয়ে
তীব্র সোচ্চার হ’লেও নিজের পছন্দের দলের হাজার হাজার
ভয়ানক ফুটো দেখেও
না দেখার ভান ক’রে থাকেন,
কথার মারপ্যাঁচে হ্যাঁ-কে না, না-কে হ্যাঁ ক’রে থাকেন কিম্বা নীরব ভুমিকা পালন
করেন আর সমাজের কাছে গুণী ও শ্রদ্ধার পাত্র হিসাবে বিবেচিত হ’ন আদি অনন্তকাল! এঁরা রবীন্দ্রনাথের সেই নির্মম সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকেন, “অন্যায় যে ক’রে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা
তারে তৃণসম দহে”।
এখন প্রশ্ন এই সংস্কৃতির শেষ কোথায়?
আমি বলি, এই (বয়ে চলা সংস্কৃতির) পথ যদি না শেষ হয়, তবে কেমন হ’ত জনতা বলোতো?
স্বাভাবিকভাবেই জনতা বলতে পারে, এ কেমনধারা আব্দার!?
আমি বলি, এই সংস্কৃতির যারা ধারক বাহক জননেতা তাদের তো আমরাই নির্বাচিত করি বছরের পর বছর বারবার হাজারবার!!!!!!!!!!!!!!!!!!
স্বাভাবিকভাবেই জনতা বলতে পারে, এ কেমনধারা আব্দার!?
আমি বলি, এই সংস্কৃতির যারা ধারক বাহক জননেতা তাদের তো আমরাই নির্বাচিত করি বছরের পর বছর বারবার হাজারবার!!!!!!!!!!!!!!!!!!
No comments:
Post a Comment