নেতাজীর সেই স্বপ্নের আহ্বান "আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব" আজ থেকে প্রায় ৭০ বছর আগে আসমুদ্রহিমাচল কাঁপিয়ে আছড়ে পড়েছিল পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ ভারতীয় জনজীবনে। তারপর কেটে
গেছে বহু বছর। ধীরে ধীরে নেবে
যাওয়া বন্যার তীব্র
জলস্রোত-এর মত থেমে গেছে মুক্তিযুদ্ধের কলরোল। রেখে গেছে বন্যার জলের ছেড়ে যাওয়া
পলিমাটির মত স্বাধীনতার আন্দোলন প্রবাহের ঘোলা মানসিকতা থেকে থিতিয়ে পড়া ঈর্ষা, বেইমানি, নেমকহারামীর প্রলেপ। আর সেই স্তূপীকৃত ঈর্ষা, বেইমানি, নেমকহারামী-র জঞ্জাল ভেদ ক’রে নেতাজীর সেই চাপা পড়ে যাওয়া
স্বপ্নের আহ্বান-এর সুঘ্রাণ হাওয়ায় ভেসে
উঠেছিল আজকের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কন্ঠে ভর ক’রে সেদিনের লোকসভা নির্বাচনী জনসভায়। সেদিন
নরেন্দ্র মোদী নেতাজীর সুরে বলেছিলেন, “আমাকে কেন্দ্রে ৬০ মাস দাও, আমি তোমাদের সুখ ও শান্তির জীবন দেব।“
আর আজ সরকার
গঠনের দু’মাস শেষে আবার আরও এক চাপা পড়া সুঘ্রাণে ভেসে উঠল আসমুদ্রহিমাচলব্যাপী গোটা দেশ!
দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর দেশকে মহান
উচ্চতায় নিয়ে যাবার
জন্য দেশের আম জনতার কাছ থেকে
বিভিন্ন বিষয়ে মুল্যবান দিকনির্দেশক পরামর্শ চেয়েছেন। এর জন্য mygov.nic.in website চালু ক’রে মানুষের কাছে পৌঁছে
দিয়েছেন তাঁর ‘সুরাজ্য’ গঠনের আহ্বান। ইতিমধ্যে তা’ পৌঁছে গেছে লক্ষ
লক্ষ মানুষের কাছে
আর ঝড়ের গতিতে
আছড়ে পড়ছে মানুষের সমর্থন। আর স্বাভাবিকভাবেই সেই স্বাধীনতা আন্দোলনের ছেড়ে যাওয়া স্তূপীকৃত ঈর্ষা, বেইমানী, নেমখারামী, নিন্দা, কটুক্তির জঞ্জাল থেকে
বেরিয়ে আস্তে শুরু
করেছে বিরোধীতার উৎকট গন্ধ।
কিন্তু আরও এক চাপা পড়া সুঘ্রাণ এলো বাতাসে, সেটা
কি?
মহাত্মা গান্ধীর vision (চরকা ও খদ্দরে দেশোদ্ধার), তাঁর আধ্যাত্মিকতা সম্বন্ধে disappointed হ’য়ে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন Non-Co-operation ছেড়ে দিয়ে
স্বরাজ্য দল গঠন করেছেন। কিন্তু এই হুজুগে রাজনীতি তাঁর
আর ভালো লাগছিলো না। কিন্তু ঐ হুজুগে রাজনীতি থেকে
বেরিয়েও আসতে পারছিলেন না দেশবন্ধু। স্বাধীনতার সেই দিনগুলিতে একজন উপযুক্ত লোক খুঁজে পাচ্ছিলেন না যার ওপর সব তুলে দিয়ে
তিনি নিশ্চিন্ত হ’তে পারেন। যার উপর ভার দিতে
যান হয় সেই ঠিকমত পারে না। কিম্বা যার ভাল করতে যান সেই হ’য়ে ওঠে নিন্দুক বা বিশ্বাসঘাতক। স্বরাজের কথা ভেবে ভেবে
এই হুজুগে রাজনীতির ডামাডোলে তিনি ক্রমশঃ হাঁপিয়ে উঠেছিলেন। তিনি স্পষ্ট বুঝতে পারলেন তাঁর
অন্তরের তীব্র আধ্যাত্মিক তৃষ্ণার সঙ্গে অপরিচিত ও বিজাতীয়-ভাবাপন্ন চারপাশের রাজনৈতিক বন্ধু ও ভক্তদের ভিড়ে
ও হুজুগে রাজনীতির এই ঘুর্ণিপাকে পড়ে তিনি ও তাঁর
স্বপ্ন ‘স্বরাজ’ তলিয়ে
যাচ্ছ। কারণ তাঁর
স্বরাজ্যদলের তৎকালীন নেতৃবৃন্দ দেশবন্ধুর Philosopy of life কখনো মানেননি, শুধুমাত্র তাঁর Political views মানতেন মাত্র। এই মানসিকতার মধ্যেই বপন হয়েছিল স্বরাজ্যদলের পরাজয় বীজ।
এখানেই লুকিয়ে আছে সেই চাপা পড়া সুঘ্রাণ!
দেশবন্ধুর স্বপ্নের ‘স্বরাজ্য’-এর মত আমরা ফিরে
পেলাম আমাদের নতুন
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-র স্বপ্ন ‘সুরাজ্য’। ‘স্বরাজ্য’ ফিরে এল একটু নতুন
রুপে, নতুন বেশে
‘সুরাজ্য’ হ’য়ে! দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দিতে
সেদিন দেশবন্ধু ‘স্বরাজ্য’-এর স্বপ্ন দেখেছিলেন আর আজকের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘কুরাজ্য’-এর কবল থেকে দেশকে উদ্ধার করতে ‘সুরাজ্য’-এর স্বপ্ন দেখেছেন। দেশবন্ধুর ‘স্বরাজ্য’ আর নরেন্দ্র মোদীর ‘সুরাজ্য’ এবং নেতাজীর “আমায় রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব” আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর “আমাকে কেন্দ্রে ৬০ মাস দাও,
আমি তোমাদের সুখ ও শান্তির জীবন
দেবো” এই দুই যেন একই মুদ্রার এ-পিঠ আর ও-পিঠ! মনে হ’ল যেন ভারতমাতা বহুদিন পর স্বপ্ন বুকে নিয়ে
হারিয়ে যাওয়া তাঁর
সন্তানকে ফিরে পেয়েছেন অন্য এক রুপে!
তাই সেদিনের মত ভারতমাতা আজও ভীত,
সন্ত্রস্ত যে, বিষাক্ত সংক্রামক ব্যাধি এই ঈর্ষার তীব্র বিষের
ছোবলে না আবার
ঘুমের দেশে হারিয়ে যায় তাঁর খুঁজে
পাওয়া হারানো সন্তান আজকের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী!
আমাদের আশা, প্রথম
চাপা পড়ে যাওয়া
সেই সু ঘ্রাণ
যেমন মানুষ চিনতে
পেরেছিল আর নিয়েছিল বুক ভর্তি ক’রে ঠিক তেমনি
এই দ্বিতীয় সু ঘ্রাণও মানুষ চিনতে
পেরে নেবে বুক ভরে।
এইভাবেই পরবর্ত্তীর মধ্যে দিয়েই পূর্ববর্তীর আবির্ভাব হয় আর বেঁচে থাকে
পরবর্তী পূর্ববর্তীর দেখানো পথে চলে।
নেতাজী ও দেশবন্ধুও বেঁচে থাকবে নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে!!!!!!!!!!!!!
No comments:
Post a Comment