তাই আজ এই বিষয়ে কিছু বলতে আসা। আমি আজ গুরুভাইয়ের অনুরোধ, জানার ইচ্ছা, আগ্রহকে সম্মান দিয়ে আমি আমার বোধবুদ্ধির ওপর দাঁড়িয়ে যে উপলব্ধি হয়েছে তা' তুলে ধরবো আপনাদের সামনে। গ্রহণ ও বর্জন আপনাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আপনারা আপনাদের সুচিন্তিত গঠনমূলক মতামত দিয়ে আমাকে সাহায্য করবেন। আগামী বিবাহিত পুরুষদের জন্য সতর্কবার্তাও বলতে পারেন। এছাড়া শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের মায়ের বলা যা শ্রীশ্রীঠাকুর বিতর্কিত কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনার সময় বিপক্ষের প্রশ্নের উত্তরে বারবার বলতেন, "যেখানেই দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখো তাই, পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন।" আসুন দেখা যাক এখানে আলোচনার মধ্যে দিয়ে কোনও অমূল্য রত্ন পাওয়া যায় কিনা।
প্রথম কথা হচ্ছে, এই ভিডিওর ছবি সত্যি বিয়ের অনুষ্ঠানের নাকি সিনেমা বা সিরিয়ালে অভিনয়ের জন্য ফটো শুট? জানি না। তবে দেখা যাচ্ছে, ঘর ভর্তি ছোটোবড় বাচ্চা ছেলেমেয়ে সাথে বড়দের ভিড়ে এই অনুষ্ঠান হচ্ছে আর সবাই মোবাইলে অনুষ্ঠানের মুহুর্ত ধ'রে রাখছে। আর তা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নিশ্চয়ই অনেকের চোখে পড়েছে সেই ভিডিও। ফেসবুকে বেশ ভাইরাল হয়েছে সেই ভিডিও।
এই বিয়ের অনুষ্ঠান যদি সত্যি হ'য়ে থাকে তাহ'লে স্বাভাবিকভাবেই যে প্রশ্ন উঠে আসছে তাহ'লো এই মেয়েটির সম্মতি নেওয়া হয়েছিল কি এই ফটো শুট করতে কিংবা ফটো সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করতে? যদিও বিবাহ অনুষ্ঠানের কোনও ছবি তোলার ক্ষেত্রে সচরাচর কারও কোনও আপত্তি বা নিষেধাজ্ঞা থাকে না।
যাই হ'ক, অভিনয় হ'ক কিংবা সত্যি সত্যিই বিবাহের ছবি হ'ক এর থেকে শিক্ষণীয় ব্যাপার আছে। তা হ'লো, ছবি দেখে মনে হচ্ছে বেশ জমিদারী চালে উপভোগ করছে ব্যাপারটা পুরুষটি। কিন্তু প্রশ্নঃ বিয়ের এই পূর্বনির্দিষ্ট স্ত্রী কর্তৃক স্বামীর পা ধুয়ে দেওয়ার অনুষ্ঠান, সেই অনুষ্ঠানে পদসেবা নেওয়ার আগে পুরুষটি কি তার ঐ পরম পূজ্য পা'টি ভালো ক'রে ঘষে ঘষে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিল? ঐ পরম পূজনীয় পদযুগলে কোনও নোংরা জীবাণু ছিল না তো? কারণ আমরা পা দিয়ে হাঁটি আর হাত দিয়ে কাজ করি। তাই হাতের ও পায়ের দু'জায়গায় সবচেয়ে বেশী নোংরা লাগে। অথচ স্নানের সময় দেখা যায় যদিও বা আমরা মুখ সাবান দিয়ে ধুতে বেশী সময় ও সাবান ব্যয় করি, পায়ের জন্যে সেই অর্থে সময় ও সাবান খরচ করি না। ফলত যা হবার তা' হয়। যদি ভালো ক'রে হাত ও পা সাবান দিয়ে ঘষে পরিস্কার না করি তাহ'লে হাতে ও পায়ে এবং হাতের ও পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ও নখে সেই নোংরা থেকে যায় ও ধীরে ধীরে সেই নোংরা ভয়ঙ্কর এমনকি মারণ রোগের বিষাক্ত জীবাণুতে পরিণত হয়। ফলে তা একসময় জীবনঘাতী হ'য়ে ওঠে। এক্ষেত্রে স্বামী নামক পুরুষটির পায়ে যদি নোংরা থেকে থাকে বা কোনও চর্ম রোগ থেকে থাকে তবে এই প্রথার মধ্যে দিয়ে পায়ের সেই সমস্ত নোংরা ও চর্ম রোগের জীবাণু নারী তার নিজের শরীরে অর্থাৎ হাতে ও চুলে নিল। আর, এই জীবাণু নিল প্রথাকে মান্যতা দেওয়ার কারণে। যা পরবর্তী সময়ে নারীর শরীরে সংক্রামিত হ'য়ে বৃদ্ধি পেতে পেতে নারীর জীবন বিষময় হ'য়ে উঠবে। হয়তো একদিন সব চুল উঠে গিয়ে বা চর্মরোগের অধিকারী হয়ে আজকের সুন্দর শরীর বীভৎস কদাকার হ'য়ে উঠবে। ফলে দাম্পত্য জীবনে ও সংসার জীবনে তার প্রভাব পড়বে এবং এই প্রভাব পুরুষটিকেও রেহাই দেবে না। সবচেয়ে বড় মর্মান্তিক সত্য এই যে, নারীটি তার জীবনে সুখ শান্তি হারিয়ে ধীরে ধীরে এক বিষময় দুরারোগ্য শারীরিক ও মানসিক ব্যাধির এবং নারকীয় জীবনের অধিকারী হ'য়ে উঠলো। হ'য়ে উঠলো বিজ্ঞানকে অস্বীকার ক'রে ও হাইজিনিক গ্রাউন্ডকে অর্থাৎ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য উভয়কেই অগ্রাহ্য ক'রে প্রথা বা রীতিনীতি যা সুদীর্ঘকাল থেকে চলে আসছে অর্থাৎ যে কোনও ধরনের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, নিয়ম-কানুন, বিধি-নিষেধ, বিশ্বাস অথবা কর্মকাণ্ড যা অধিকাংশ সাধারণ জনগণ বা সমাজ কর্তৃক উৎপত্তিকাল থেকে যুগ যুগ ধ'রে বিনাদ্বিধায় পালন করা সহ মেনে চলে আসছে, সেইসমস্ত প্রথাকে বা রীতিনীতিকে পালন করার খেসারত দিতে হ'লো প্রথমত সবার সামনে নারীকে, দ্বিতীয়ত পরবর্তী সময়ে নারীপুরুষ উভয়কেই, সংসার বা পরিবারকে, সর্ব্বোপরি সমাজকে। এর ফলে যা হবার তাই হ'লো। কলঙ্কিত, নিন্দিত, সমালোচিত, উপেক্ষিত হ'তে হলো বিবাহ প্রথা বা রীতিনীতিকে এবং ব্যষ্টি জীবন, সমষ্টি জীবন ও সমাজ জীবন থেকে বিবাহ বিধান, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ইত্যাদিকে বিচার বিশ্লেষণ না ক'রেই জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রাচীন বিজ্ঞানভিত্তিক ধর্মানুষ্টান, ধর্মাচারকে বকোয়াস ব'লে সমাজকো বদল ডালো আওয়াজ তুলে উপড়ে ফেলে দিতে সচেষ্ট হ'লো একশ্রেণীর মত ও পথের পথিক।
এর জন্য কে দায়ী? পুরুষটি? নারীটি? পরিবারের সদস্য ও সদস্যারা? পারিবারিক ও সামাজিক সংস্কার? প্রাচীন বিবাহ নীতি? সমাজ সংস্কারক? কে দায়ী বা কোনটা দায়ী? নাকি দূরদৃষ্টির অভাব?
আর, সেইসব বিবাহের নামে বা অন্যান্য যে কোনও ধর্মানুষ্ঠান দৃশ্য পুরুষের তুলনায় নারীরাই তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করে বেশী। এই ভিডিওতেও তাই দেখা গেছে। প্রায় সবক্ষেত্রেই যে কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজনে থাকে কিন্তু পুরুষ। ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েরা বিশেষ ক'রে মেয়েরা সেইসব দৃশ্য দেখছে এবং মায়ের সংস্পর্শে সেইসব সংস্কার বা কুসংস্কার যাই-ই হ'ক না কেন ভালোমন্দ না বুঝেই শিখছে আর দুর্বল বা তথাকথিত সবল মনের অধিকারী হ'য়ে উঠছে এবং শরীরে ও মনে কিম্ভুতকিমাকার চরিত্রের এক আজব জীবে পরিণত হচ্ছে। কেননা পরিবারের বা সংসারের পুরোটাই নারীদের কর্তৃত্বে থাকে। আর নারীআচার সবটাই অদ্ভুত অদ্ভুত! যদিও এইসমস্ত আচার-অনুষ্ঠানের ভিতরে অনেক ক্ষেত্রেই হয়তোবা অন্তর্নিহিত অর্থ থাকে, থাকে বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা। আর, বাকিটাই থাকে নিছক মজার আদলে আদিম মানসিকতা। যে মজা বা আরাম একসময় সবার অগোচরে ব্যক্তিজীবনে হারাম হ'য়ে ওঠে।
আসলে এই ধরণের সব অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেই নারীপুরুষ উভয়ের দিক দিয়েই বিজ্ঞানগত ভাবেই হাইজিনিক গ্রাউন্ডেই কথাগুলি ভেবে দেখা উচিত, প্রাচীন সভ্যযুগে বা আর্য্য সমাজ ব্যবস্থায় যা কঠোর ভাবে মানা হ'তো। যা এখন বর্তমানের উপরি ঝাঁ চকচকে ঘোর নোংরা যুগে পালন করা আর দুরারোগ্য ব্যাধি বা মৃত্যুকে অজ্ঞানতার মোড়কে আমন্ত্রণ করা একই ব্যাপার, জেগে ঘুমোনোর মতন।
এই যে সর্ব্বসমক্ষে পা ধুয়ে দেওয়ার ও আরো নানাবিধ বিধান পালনের মধ্যে দিয়ে পুরুষটিকে যে উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়া হ'লো এই বিধানের প্রতিদান স্বরূপ পরবর্তী সংসার জীবনে পুরুষটি সুদসমেত প্রাপ্য যোগ্য সম্মান নারীকে ফিরিয়ে দেবে তো? সম্মান ফিরিয়ে দিয়ে নারীকে সংসারে সেই দেবীর উচ্চতায় স্থান দেবে তো? ভোগ্যপণ্য হিসেবেই দেখবে নাতো? পদসেবা নেওয়ার সময় এই পুরুষালি মেজাজটা ধ'রে রাখতে পারবে তো পরবর্তী দাম্পত্য জীবনে, সংসার জীবনে? স্ত্রৈণ হ'য়ে কাটাতে হবে নাতো সারাজীবন একদিনকা রাজার? স্বামী নামক পুরুষটিকে গোপনে শেষ পর্যন্ত অপ্রিয় হ'লেও এই পদসেবাটিই ক'রে যেতে হবে নাতো সারাজীবন আমৃত্যু তার সহধর্মিণীর? অপ্রিয় হ'লেও এটাই সত্য যে, বিবাহ বিধানের অন্তর্নিহিত অর্থ ও গুরুত্ব না জেনে পরিবারের দ্বারা স্বামী নামক পুরুষটির ওপর চাপিয়ে দেওয়া এই বিধান বিবাহ পরবর্তী জীবনে স্বামীকে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। কিছুদিন পরেই ফিকে হ'য়ে যাবে ঐ জমিদারী চালে আনন্দঘন দৃশ্য যে কোনও ছোটোখাটো কারণেই। দাম্পত্য ও সাংসারিক জীবনে স্বামী-স্ত্রীর অ্যাডজাস্টমেন্ট বা আন্ডারস্ট্যান্ডিং-এর অভাবের কারণে চুঁইয়ে চুঁইয়ে হ'তে থাকবে রক্তক্ষরণ। আর, এই অদৃশ্য রক্তক্ষরণ হ'তে থাকবে ভেতরে ভেতরে আমৃত্যু স্বামী-স্ত্রীর উভয়ের মধ্যে, হ'তে থাকবে উভয়ের জীবনের মধ্যে জীবন্ত আদর্শ স্বরূপ সিমেন্টিং ফ্যাক্টর না থাকার কারণে। পুরুষ মানুষদের এটা মাথায় রাখতে হবে সংসারের চাবিকাঠি থাকে নারীদের হাতেই। সংসার জীবনে তখন এই বিবাহ নীতি পালনের সময় ভিড় করা একজন মানুষও তখন থাকবে না পাশে। এ কথা মাথায় রাখতে হবে অনুষ্ঠান পালনের সময় পারিবারিক ভিড়ে এই প্রথা মুখ বুজে মেনে নেওয়ার কারণে স্বাভিমানী নারীর, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন নারীর নিজের মূল্য বা যোগ্যতার প্রতি আঘাত লাগার কারণে সারাজীবন নারীর দিক থেকে আমৃত্যু কারণে-অকারণে, তুচ্ছ ঘটনার সময়েও সুযোগের সদব্যবহার স্বরূপ প্রতিদানে খোঁটা হ"য়ে ফিরে আসবে নাতো পুরুষটির জীবনে? নারীমহলের আভ্যন্তরীণ কূটনীতির সংস্কৃতি সব যুগেই সমান; হয়তো বা কম বা বেশী। এই কথাটি পরিবারের বাবা-মা বা আর কেউ মনে রাখুক আর না-রাখুক গ্রাম্য বা শহুরে, শিক্ষিত-বা অশিক্ষিত, লেখাপড়াজানা বা না-জানা, গরীব-বড়লোক স্বামী নামক পদার্থ বা অপদার্থ পুরুষটি যেন মনে রাখে আজকের ঘোর কলি যুগের আদর্শ বিহীন জীবনে তার নিজের ভবিষ্যত মান-সম্মান রক্ষার কারণেই। স্বামী-স্ত্রী ছাড়া পারিবারিক প্রতিদিনের জীবনে সেদিন কিন্তু বিবাহের সময়ে নানারকম নিয়ম পালনের আপাত বা সত্যি সত্যিই উদ্ভট আনন্দের মুহুর্তগুলি ও মুহুর্তগুলির সময়ে ভিড় করা মানুষগুলি কোনওটাই বা কেউই থাকবে না। আর, স্বাভিমানী নারী বা শিক্ষিতা নারী কিংবা অহঙ্কারী নারীর মানসিকতা, শিক্ষা, সংস্কৃতি ধীরে ধীরে সমাজ জীবনে, সাংসারিক জীবনে, সহজ সরল সাদাসিধে নারীর জীবনেও ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলে। ফলে সেই সহজ সরল নারীর জীবনে তা আরও ভয়ঙ্কর হ'য়ে ওঠে। কাকের পিছনে ময়ুর পুচ্ছের মত হ'য়ে ওঠে। কখনই বা কোনওদিনই মূল জায়গায় হাত পড়েনি বা পড়েনা।
তাই এই ধরণের অনুষ্ঠান পালনের ক্ষেত্রে স্থান, কাল ও পাত্র ভেদে পালন করা উচিত, নতুবা নয়। যেমন, এই সব যে সাংসারিক বিধান তা সত্যযুগে পালনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা থাকলেও বর্তমানে হয় নারীপুরুষ উভয়েই ঐসব রীতিনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হ'ক, উপযুক্ত হ'য়ে উঠুক নিজ নিজ জীবনে, Compatible marriage অর্থাৎ সামঞ্জস্যপূর্ণ বিবাহ হ'ক নতুবা তথাকথিত নিয়মনীতি, সংস্কার পালন বন্ধ হ'ক উভয়ের ভবিষ্যত মঙ্গলের কারণে। কারণ কুত্তার পেটে ঘি সহ্য হয় না। পালন না করার ফলে যে ক্ষতি তার চেয়ে লক্ষ, কোটিগুন ক্ষয়ক্ষতি অনুপযুক্ত ক্ষেত্রে পালন করার ফলে হ'য়ে থাকে।
প্রথম কথা হচ্ছে, এই ভিডিওর ছবি সত্যি বিয়ের অনুষ্ঠানের নাকি সিনেমা বা সিরিয়ালে অভিনয়ের জন্য ফটো শুট? জানি না। তবে দেখা যাচ্ছে, ঘর ভর্তি ছোটোবড় বাচ্চা ছেলেমেয়ে সাথে বড়দের ভিড়ে এই অনুষ্ঠান হচ্ছে আর সবাই মোবাইলে অনুষ্ঠানের মুহুর্ত ধ'রে রাখছে। আর তা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নিশ্চয়ই অনেকের চোখে পড়েছে সেই ভিডিও। ফেসবুকে বেশ ভাইরাল হয়েছে সেই ভিডিও।
এই বিয়ের অনুষ্ঠান যদি সত্যি হ'য়ে থাকে তাহ'লে স্বাভাবিকভাবেই যে প্রশ্ন উঠে আসছে তাহ'লো এই মেয়েটির সম্মতি নেওয়া হয়েছিল কি এই ফটো শুট করতে কিংবা ফটো সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করতে? যদিও বিবাহ অনুষ্ঠানের কোনও ছবি তোলার ক্ষেত্রে সচরাচর কারও কোনও আপত্তি বা নিষেধাজ্ঞা থাকে না।
যাই হ'ক, অভিনয় হ'ক কিংবা সত্যি সত্যিই বিবাহের ছবি হ'ক এর থেকে শিক্ষণীয় ব্যাপার আছে। তা হ'লো, ছবি দেখে মনে হচ্ছে বেশ জমিদারী চালে উপভোগ করছে ব্যাপারটা পুরুষটি। কিন্তু প্রশ্নঃ বিয়ের এই পূর্বনির্দিষ্ট স্ত্রী কর্তৃক স্বামীর পা ধুয়ে দেওয়ার অনুষ্ঠান, সেই অনুষ্ঠানে পদসেবা নেওয়ার আগে পুরুষটি কি তার ঐ পরম পূজ্য পা'টি ভালো ক'রে ঘষে ঘষে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিল? ঐ পরম পূজনীয় পদযুগলে কোনও নোংরা জীবাণু ছিল না তো? কারণ আমরা পা দিয়ে হাঁটি আর হাত দিয়ে কাজ করি। তাই হাতের ও পায়ের দু'জায়গায় সবচেয়ে বেশী নোংরা লাগে। অথচ স্নানের সময় দেখা যায় যদিও বা আমরা মুখ সাবান দিয়ে ধুতে বেশী সময় ও সাবান ব্যয় করি, পায়ের জন্যে সেই অর্থে সময় ও সাবান খরচ করি না। ফলত যা হবার তা' হয়। যদি ভালো ক'রে হাত ও পা সাবান দিয়ে ঘষে পরিস্কার না করি তাহ'লে হাতে ও পায়ে এবং হাতের ও পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ও নখে সেই নোংরা থেকে যায় ও ধীরে ধীরে সেই নোংরা ভয়ঙ্কর এমনকি মারণ রোগের বিষাক্ত জীবাণুতে পরিণত হয়। ফলে তা একসময় জীবনঘাতী হ'য়ে ওঠে। এক্ষেত্রে স্বামী নামক পুরুষটির পায়ে যদি নোংরা থেকে থাকে বা কোনও চর্ম রোগ থেকে থাকে তবে এই প্রথার মধ্যে দিয়ে পায়ের সেই সমস্ত নোংরা ও চর্ম রোগের জীবাণু নারী তার নিজের শরীরে অর্থাৎ হাতে ও চুলে নিল। আর, এই জীবাণু নিল প্রথাকে মান্যতা দেওয়ার কারণে। যা পরবর্তী সময়ে নারীর শরীরে সংক্রামিত হ'য়ে বৃদ্ধি পেতে পেতে নারীর জীবন বিষময় হ'য়ে উঠবে। হয়তো একদিন সব চুল উঠে গিয়ে বা চর্মরোগের অধিকারী হয়ে আজকের সুন্দর শরীর বীভৎস কদাকার হ'য়ে উঠবে। ফলে দাম্পত্য জীবনে ও সংসার জীবনে তার প্রভাব পড়বে এবং এই প্রভাব পুরুষটিকেও রেহাই দেবে না। সবচেয়ে বড় মর্মান্তিক সত্য এই যে, নারীটি তার জীবনে সুখ শান্তি হারিয়ে ধীরে ধীরে এক বিষময় দুরারোগ্য শারীরিক ও মানসিক ব্যাধির এবং নারকীয় জীবনের অধিকারী হ'য়ে উঠলো। হ'য়ে উঠলো বিজ্ঞানকে অস্বীকার ক'রে ও হাইজিনিক গ্রাউন্ডকে অর্থাৎ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য উভয়কেই অগ্রাহ্য ক'রে প্রথা বা রীতিনীতি যা সুদীর্ঘকাল থেকে চলে আসছে অর্থাৎ যে কোনও ধরনের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, নিয়ম-কানুন, বিধি-নিষেধ, বিশ্বাস অথবা কর্মকাণ্ড যা অধিকাংশ সাধারণ জনগণ বা সমাজ কর্তৃক উৎপত্তিকাল থেকে যুগ যুগ ধ'রে বিনাদ্বিধায় পালন করা সহ মেনে চলে আসছে, সেইসমস্ত প্রথাকে বা রীতিনীতিকে পালন করার খেসারত দিতে হ'লো প্রথমত সবার সামনে নারীকে, দ্বিতীয়ত পরবর্তী সময়ে নারীপুরুষ উভয়কেই, সংসার বা পরিবারকে, সর্ব্বোপরি সমাজকে। এর ফলে যা হবার তাই হ'লো। কলঙ্কিত, নিন্দিত, সমালোচিত, উপেক্ষিত হ'তে হলো বিবাহ প্রথা বা রীতিনীতিকে এবং ব্যষ্টি জীবন, সমষ্টি জীবন ও সমাজ জীবন থেকে বিবাহ বিধান, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ইত্যাদিকে বিচার বিশ্লেষণ না ক'রেই জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রাচীন বিজ্ঞানভিত্তিক ধর্মানুষ্টান, ধর্মাচারকে বকোয়াস ব'লে সমাজকো বদল ডালো আওয়াজ তুলে উপড়ে ফেলে দিতে সচেষ্ট হ'লো একশ্রেণীর মত ও পথের পথিক।
এর জন্য কে দায়ী? পুরুষটি? নারীটি? পরিবারের সদস্য ও সদস্যারা? পারিবারিক ও সামাজিক সংস্কার? প্রাচীন বিবাহ নীতি? সমাজ সংস্কারক? কে দায়ী বা কোনটা দায়ী? নাকি দূরদৃষ্টির অভাব?
আর, সেইসব বিবাহের নামে বা অন্যান্য যে কোনও ধর্মানুষ্ঠান দৃশ্য পুরুষের তুলনায় নারীরাই তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করে বেশী। এই ভিডিওতেও তাই দেখা গেছে। প্রায় সবক্ষেত্রেই যে কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজনে থাকে কিন্তু পুরুষ। ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েরা বিশেষ ক'রে মেয়েরা সেইসব দৃশ্য দেখছে এবং মায়ের সংস্পর্শে সেইসব সংস্কার বা কুসংস্কার যাই-ই হ'ক না কেন ভালোমন্দ না বুঝেই শিখছে আর দুর্বল বা তথাকথিত সবল মনের অধিকারী হ'য়ে উঠছে এবং শরীরে ও মনে কিম্ভুতকিমাকার চরিত্রের এক আজব জীবে পরিণত হচ্ছে। কেননা পরিবারের বা সংসারের পুরোটাই নারীদের কর্তৃত্বে থাকে। আর নারীআচার সবটাই অদ্ভুত অদ্ভুত! যদিও এইসমস্ত আচার-অনুষ্ঠানের ভিতরে অনেক ক্ষেত্রেই হয়তোবা অন্তর্নিহিত অর্থ থাকে, থাকে বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা। আর, বাকিটাই থাকে নিছক মজার আদলে আদিম মানসিকতা। যে মজা বা আরাম একসময় সবার অগোচরে ব্যক্তিজীবনে হারাম হ'য়ে ওঠে।
আসলে এই ধরণের সব অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেই নারীপুরুষ উভয়ের দিক দিয়েই বিজ্ঞানগত ভাবেই হাইজিনিক গ্রাউন্ডেই কথাগুলি ভেবে দেখা উচিত, প্রাচীন সভ্যযুগে বা আর্য্য সমাজ ব্যবস্থায় যা কঠোর ভাবে মানা হ'তো। যা এখন বর্তমানের উপরি ঝাঁ চকচকে ঘোর নোংরা যুগে পালন করা আর দুরারোগ্য ব্যাধি বা মৃত্যুকে অজ্ঞানতার মোড়কে আমন্ত্রণ করা একই ব্যাপার, জেগে ঘুমোনোর মতন।
এই যে সর্ব্বসমক্ষে পা ধুয়ে দেওয়ার ও আরো নানাবিধ বিধান পালনের মধ্যে দিয়ে পুরুষটিকে যে উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়া হ'লো এই বিধানের প্রতিদান স্বরূপ পরবর্তী সংসার জীবনে পুরুষটি সুদসমেত প্রাপ্য যোগ্য সম্মান নারীকে ফিরিয়ে দেবে তো? সম্মান ফিরিয়ে দিয়ে নারীকে সংসারে সেই দেবীর উচ্চতায় স্থান দেবে তো? ভোগ্যপণ্য হিসেবেই দেখবে নাতো? পদসেবা নেওয়ার সময় এই পুরুষালি মেজাজটা ধ'রে রাখতে পারবে তো পরবর্তী দাম্পত্য জীবনে, সংসার জীবনে? স্ত্রৈণ হ'য়ে কাটাতে হবে নাতো সারাজীবন একদিনকা রাজার? স্বামী নামক পুরুষটিকে গোপনে শেষ পর্যন্ত অপ্রিয় হ'লেও এই পদসেবাটিই ক'রে যেতে হবে নাতো সারাজীবন আমৃত্যু তার সহধর্মিণীর? অপ্রিয় হ'লেও এটাই সত্য যে, বিবাহ বিধানের অন্তর্নিহিত অর্থ ও গুরুত্ব না জেনে পরিবারের দ্বারা স্বামী নামক পুরুষটির ওপর চাপিয়ে দেওয়া এই বিধান বিবাহ পরবর্তী জীবনে স্বামীকে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। কিছুদিন পরেই ফিকে হ'য়ে যাবে ঐ জমিদারী চালে আনন্দঘন দৃশ্য যে কোনও ছোটোখাটো কারণেই। দাম্পত্য ও সাংসারিক জীবনে স্বামী-স্ত্রীর অ্যাডজাস্টমেন্ট বা আন্ডারস্ট্যান্ডিং-এর অভাবের কারণে চুঁইয়ে চুঁইয়ে হ'তে থাকবে রক্তক্ষরণ। আর, এই অদৃশ্য রক্তক্ষরণ হ'তে থাকবে ভেতরে ভেতরে আমৃত্যু স্বামী-স্ত্রীর উভয়ের মধ্যে, হ'তে থাকবে উভয়ের জীবনের মধ্যে জীবন্ত আদর্শ স্বরূপ সিমেন্টিং ফ্যাক্টর না থাকার কারণে। পুরুষ মানুষদের এটা মাথায় রাখতে হবে সংসারের চাবিকাঠি থাকে নারীদের হাতেই। সংসার জীবনে তখন এই বিবাহ নীতি পালনের সময় ভিড় করা একজন মানুষও তখন থাকবে না পাশে। এ কথা মাথায় রাখতে হবে অনুষ্ঠান পালনের সময় পারিবারিক ভিড়ে এই প্রথা মুখ বুজে মেনে নেওয়ার কারণে স্বাভিমানী নারীর, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন নারীর নিজের মূল্য বা যোগ্যতার প্রতি আঘাত লাগার কারণে সারাজীবন নারীর দিক থেকে আমৃত্যু কারণে-অকারণে, তুচ্ছ ঘটনার সময়েও সুযোগের সদব্যবহার স্বরূপ প্রতিদানে খোঁটা হ"য়ে ফিরে আসবে নাতো পুরুষটির জীবনে? নারীমহলের আভ্যন্তরীণ কূটনীতির সংস্কৃতি সব যুগেই সমান; হয়তো বা কম বা বেশী। এই কথাটি পরিবারের বাবা-মা বা আর কেউ মনে রাখুক আর না-রাখুক গ্রাম্য বা শহুরে, শিক্ষিত-বা অশিক্ষিত, লেখাপড়াজানা বা না-জানা, গরীব-বড়লোক স্বামী নামক পদার্থ বা অপদার্থ পুরুষটি যেন মনে রাখে আজকের ঘোর কলি যুগের আদর্শ বিহীন জীবনে তার নিজের ভবিষ্যত মান-সম্মান রক্ষার কারণেই। স্বামী-স্ত্রী ছাড়া পারিবারিক প্রতিদিনের জীবনে সেদিন কিন্তু বিবাহের সময়ে নানারকম নিয়ম পালনের আপাত বা সত্যি সত্যিই উদ্ভট আনন্দের মুহুর্তগুলি ও মুহুর্তগুলির সময়ে ভিড় করা মানুষগুলি কোনওটাই বা কেউই থাকবে না। আর, স্বাভিমানী নারী বা শিক্ষিতা নারী কিংবা অহঙ্কারী নারীর মানসিকতা, শিক্ষা, সংস্কৃতি ধীরে ধীরে সমাজ জীবনে, সাংসারিক জীবনে, সহজ সরল সাদাসিধে নারীর জীবনেও ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলে। ফলে সেই সহজ সরল নারীর জীবনে তা আরও ভয়ঙ্কর হ'য়ে ওঠে। কাকের পিছনে ময়ুর পুচ্ছের মত হ'য়ে ওঠে। কখনই বা কোনওদিনই মূল জায়গায় হাত পড়েনি বা পড়েনা।
তাই এই ধরণের অনুষ্ঠান পালনের ক্ষেত্রে স্থান, কাল ও পাত্র ভেদে পালন করা উচিত, নতুবা নয়। যেমন, এই সব যে সাংসারিক বিধান তা সত্যযুগে পালনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা থাকলেও বর্তমানে হয় নারীপুরুষ উভয়েই ঐসব রীতিনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হ'ক, উপযুক্ত হ'য়ে উঠুক নিজ নিজ জীবনে, Compatible marriage অর্থাৎ সামঞ্জস্যপূর্ণ বিবাহ হ'ক নতুবা তথাকথিত নিয়মনীতি, সংস্কার পালন বন্ধ হ'ক উভয়ের ভবিষ্যত মঙ্গলের কারণে। কারণ কুত্তার পেটে ঘি সহ্য হয় না। পালন না করার ফলে যে ক্ষতি তার চেয়ে লক্ষ, কোটিগুন ক্ষয়ক্ষতি অনুপযুক্ত ক্ষেত্রে পালন করার ফলে হ'য়ে থাকে।
এছাড়া এই যে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করছে স্ত্রী স্বামীকে বা নারীপুরুষ গুরুজনদের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে তা যে বিজ্ঞানগত ভাবেই ভুল ও নিষিদ্ধ, তা কে মানছে বা জানে? যে প্রণাম করছে তার ভালো হ'লেও যাকে প্রণাম করা হচ্ছে তার যে জীবনী শক্তি কমে যাচ্ছে, আয়ু ক্ষয় হচ্ছে তা কি যুগ যুগ ধ'রে কেউ বলেছে নাকি মানুষের সামনে তুলে ধরা হয়েছে? এই যে স্ত্রী স্বামীকে বিয়ের দিনই পায়ে হাত দিয়ে বা মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করছে স্বামীর মঙ্গল কামনায় তা কি স্বামীর মঙ্গল হচ্ছে নাকি অমঙ্গল হচ্ছে তা' কি জানে স্বামীস্ত্রী উভয়েই? বিজ্ঞান কি এই পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম সমর্থন করে? বিজ্ঞানীরাই বলুক। অথচ তা চলে আসছে যুগ যুগ ধ'রে। এক্ষেত্রে এ কথা আজকের দিনে বলতে গেলে সবাই এর বিরুদ্ধে যাবে। যাবে, তার কারণ পায়ে হাত দিয়ে বা পায়ে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করলে কি ক্ষতি হ'তে পারে তা না জানার কারণে। এসব জানে একমাত্র সর্ব্বজ্ঞ, সর্ব্বদর্শী, সর্ব্বশক্তিমান পরমপুরুষ, পুরুষোত্তম, সদগুরু জীবন্ত ঈশ্বর। এই ঘোর কলি যুগে তিনি এসে এসে বললেন,
"শ্রেষ্ঠজনে ক'রলে প্রণাম নিয়ত মাথা ঠেকিয়ে পায়,
নিজের ভালো হ'লেও কিন্তু তাঁর আয়ুটি ক্ষয়েই যায়।"
পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা যে পাপ, আয়ু ক্ষয় হয় এ কথা আর কে জানে? যিনি এ কথা বলেছেন তাঁর অনুগামী দীক্ষিতরাই এ কথা জানে না, জানলেও মানে না। প্রশ্ন জাগে মনে, কে বলেছেন এ কথা? কারা জানে না ও জানলেও মানে না?
এ কথা জানে সৎসঙ্গীরা। এ কথা বলেছেন বিশ্বব্রহ্মান্ডের মালিক, সৃষ্টিকর্তা, পুরুষোত্তম, পরমপিতা, সদগুরু, বিশ্বের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। এ কথা অনেক সৎসঙ্গী জানে না, আর অনেক সৎসঙ্গী আছে জানলেও মানে না।
বিশ্বজুড়ে সৎসঙ্গীরা সবাই পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম যে পাপ, যাকে প্রণাম করা হয় তাঁর যে আয়ু ক্ষয় তা' জানে এটা হয়তো ঠিক কথা নয়, বহু সৎসঙ্গী জানে না, কিন্তু জানা উচিত। কারণ, শ্রীশ্রীঠাকুরের দীক্ষা নেওয়ার সময় দীক্ষার নিয়মকানুনের সঙ্গে সঙ্গে ঋত্বিক পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম না করার কথাও জানিয়ে দেন, কেমন ক'রে প্রণাম করতে হবে সে কথা জানিয়ে দেন, জানিয়ে দেন প্রণাম করার নিয়ম। কিন্তু, তা সত্ত্বেও কোটি কোটি দীক্ষিতরা তা জানে না বা জানলেও মানে না। কেন জানে না? ঋত্ত্বিকরা কি জানিয়ে দেননি? নাকি নাম কা ওয়াস্তে ঋত্ত্বিকরা যজমানদের তা বলতে হয়, বলেছেন? ঠাকুরের বলা আছে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা নিষেধ সৎসঙ্গীদের এবং অশুভ। এই নিষেধ, অশুভ ও ক্ষয়ক্ষতির দিকটা সিরিয়াসলি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেন ঋত্ত্বিকরা দীক্ষা গ্রহণকারীদের? আর সৎসঙ্গীরা জেনেও কেন মানে না? কারণ, তারা দীক্ষা নিয়েছিল তার কারণ একটা গুরু ধরতে হয় জীবনে তাই দীক্ষা নিয়েছিল। আর গুরু ধরতে হয় তিন কাল গিয়ে চারকালে গিয়ে যখন বয়স ঠেকে তখন। ছোটোবেলা থেকে ওসব ধর্ম পালন টালনের ও গুরু গ্রহণ ট্রহণের সময় বা বয়স নয়। বুড়ো বয়সে গিয়ে যখন মরার সময়, যখন সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার আর বয়স বা শক্তি থাকে না, তখন নিশ্চিন্তে বৈতরণী পার হবার জন্য, স্বর্গে যাবার জন্য, যৌবনের কৃত পাপকর্মের স্খলন করার জন্য, পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য তখন গুরু ধরার, ধর্ম করার ও ঈশ্বর আরাধনার দরকার।
বিশ্বজুড়ে সৎসঙ্গীরা সবাই পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম যে পাপ, যাকে প্রণাম করা হয় তাঁর যে আয়ু ক্ষয় তা' জানে এটা হয়তো ঠিক কথা নয়, বহু সৎসঙ্গী জানে না, কিন্তু জানা উচিত। কারণ, শ্রীশ্রীঠাকুরের দীক্ষা নেওয়ার সময় দীক্ষার নিয়মকানুনের সঙ্গে সঙ্গে ঋত্বিক পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম না করার কথাও জানিয়ে দেন, কেমন ক'রে প্রণাম করতে হবে সে কথা জানিয়ে দেন, জানিয়ে দেন প্রণাম করার নিয়ম। কিন্তু, তা সত্ত্বেও কোটি কোটি দীক্ষিতরা তা জানে না বা জানলেও মানে না। কেন জানে না? ঋত্ত্বিকরা কি জানিয়ে দেননি? নাকি নাম কা ওয়াস্তে ঋত্ত্বিকরা যজমানদের তা বলতে হয়, বলেছেন? ঠাকুরের বলা আছে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা নিষেধ সৎসঙ্গীদের এবং অশুভ। এই নিষেধ, অশুভ ও ক্ষয়ক্ষতির দিকটা সিরিয়াসলি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেন ঋত্ত্বিকরা দীক্ষা গ্রহণকারীদের? আর সৎসঙ্গীরা জেনেও কেন মানে না? কারণ, তারা দীক্ষা নিয়েছিল তার কারণ একটা গুরু ধরতে হয় জীবনে তাই দীক্ষা নিয়েছিল। আর গুরু ধরতে হয় তিন কাল গিয়ে চারকালে গিয়ে যখন বয়স ঠেকে তখন। ছোটোবেলা থেকে ওসব ধর্ম পালন টালনের ও গুরু গ্রহণ ট্রহণের সময় বা বয়স নয়। বুড়ো বয়সে গিয়ে যখন মরার সময়, যখন সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার আর বয়স বা শক্তি থাকে না, তখন নিশ্চিন্তে বৈতরণী পার হবার জন্য, স্বর্গে যাবার জন্য, যৌবনের কৃত পাপকর্মের স্খলন করার জন্য, পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য তখন গুরু ধরার, ধর্ম করার ও ঈশ্বর আরাধনার দরকার।
তাই নিয়ম কানুন অতটা মানার বা পালন করার দরকার বোধ করে না, দরকার বোধ করলেও অভ্যাসের অভাবে তা করা হ'য়ে ওঠে না।
আর, পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করাটা যুগ যুগ ধরে বিনাদ্বিধায় পালন করে এসেছে। ছোটোবেলা থেকে শিখে এসেছে বোদ্ধা মা-বাবা- দাদা-দিদা গুরুজনদের কাছ থেকে। তাই সেটাকেই মঙ্গলযোগ্য ব'লে জেনে এসেছে। আর, দীক্ষার সময় যা জেনেছে তা পালন করা হ'য়ে ওঠেনি কারণ ঠাকুরের দীক্ষা নিলেও ঠাকুরের নিয়ম নীতি পালন করাকে গুরুত্বপূর্ণ ব'লে মনে করেনি, ভালো ক'রে উল্টেপাল্টে দেখেইনি নিয়ম। ফুল, চন্দন, ধূপকাঠি দিয়ে ঠাকুরের চরণ পূজো করলেও তাঁর চলনপূজাকে গ্রাহ্য করেনি, তাঁর চলনকে নিজের চলন ক'রে নেয়নি তাই ঠাকুরকে প্রকৃতই জীবনে ধরা হয়নি সৎসঙ্গীদের। এর জন্যে কম বেশী সব সৎসঙ্গী দায়ী। কারণ বহু সৎসঙ্গী পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করাকে সমর্থন করেন। মূলত দায়ী ঋত্ত্বিকেরা; কারণ ঋত্ত্বিকেরা স্বয়ং সৎসঙ্গে সৎসঙ্গী দাদাদের ও মায়েদের, ছোটোছোটো ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে প্রণাম গ্রহণ করেন। সবার সামনেই পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করাকে প্রশ্রয় দেয়। এমনকি ঠাকুরের সামনেও বহু ঋত্ত্বিককে দেখেছি পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম নিতে। তাই, সাধারণ মানুষের কাছে পায়ে ঠাকুরের বলা, হাত দিয়ে প্রণাম যে পাপ তা' গ্রহণযোগ্য হ'য়ে ওঠেনি। এর জন্যে দায়ী ঋত্ত্বিক ও সাধারণ-অসাধারণ সৎসঙ্গীরা। সাধারণ দীক্ষিতরা দায়ী অজ্ঞতার কারণে ও জানার ইচ্ছার অভাবে। আর, অসাধারণ দীক্ষিতরা দায়ী বিজ্ঞতার অহঙ্কারের কারণে। আর, ব্যতিক্রম অবশ্যই অবশ্যই আছে, তবে তাঁরা ফিকে পড়ে গেছে প্রচারের আলোয় থাকা এইসমস্ত বিশিষ্ট ও নাম-কা-ওয়াস্তে সৎসঙ্গীদের কাছে।
যাই হ'ক, এসব যা কিছু বিজ্ঞানভিত্তিক সামাজিক রীতিনীতি সেগুলিকে উড়িয়ে না দিয়ে মানুষের মঙ্গলের জন্য, মানুষের বাঁচা-বাড়ার জন্য খুঁজে দেখে বের করা দরকার এর মধ্যে জীবনীয় কি আছে আর না-আছে, শ্রীশ্রীঠাকুরের ঐ কথার মত, "যেখানেই দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখো তাই, পাইলেও পাইতে পারও অমূল্য রতন।"।
আর যদি জীবনীয় কিছু না-থাকে বা যা কিছু পরগাছার মতো রস শুষে খেয়ে বৃদ্ধি পেয়ে মানুষের মূল বুনিয়াদকেই ধ্বংস করে সেইসব রীতিনীতি সমাজজীবন থেকে উপড়ে ফেলার প্রয়োজন। নতুবা হাতে ক'রে অমঙ্গল বা ধ্বংসকে ডেকে আনা যেতে পারে, ওয়েলকাম জানানো যেতে পারে।
এককথায় বলা যেতে পারে নিকৃষ্ট মানুষের জন্য উৎকৃষ্ট কিছুই নয়। অমৃত, নারীপুরুষ দেবদেবীদের জন্যেই। নিকৃষ্ট বা অসুরদের জন্যে নয়। প্রবাদ আছে, কুত্তার পেটে ঘি সহ্য হয় না। এখন পেট পচা কেউ যদি ঘি খেয়ে থাকে তাহ'লে তাকে তার খেসারত দিতে হবে, কিছুই করার থাকবে না, ক্রনিক গ্যাস্ট্রোএন্টারাইটিসে ভোগা রুগী যদি আবার দূষিত খাবার খায়, দূষিত জল পান করে, দূষিত পাত্র ব্যবহার করে, দূষিত লোকের সঙ্গ ক'রে তাহ'লে তাকে মরতে হবে ভুগে ভুগে। আর, যদি রবীন্দ্রনাথের শিষ্য হ'য়ে পরম ভক্ত সেজে জেনে শুনে বিষ পান করতে থাকে তাহ'লে আর কি করা যেতে পারে? একমাত্র বলা যেতে পারে, দু'হাত প্রসারিত ক'রে মাথা উচু ক'রে,
যাই হ'ক, এসব যা কিছু বিজ্ঞানভিত্তিক সামাজিক রীতিনীতি সেগুলিকে উড়িয়ে না দিয়ে মানুষের মঙ্গলের জন্য, মানুষের বাঁচা-বাড়ার জন্য খুঁজে দেখে বের করা দরকার এর মধ্যে জীবনীয় কি আছে আর না-আছে, শ্রীশ্রীঠাকুরের ঐ কথার মত, "যেখানেই দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখো তাই, পাইলেও পাইতে পারও অমূল্য রতন।"।
আর যদি জীবনীয় কিছু না-থাকে বা যা কিছু পরগাছার মতো রস শুষে খেয়ে বৃদ্ধি পেয়ে মানুষের মূল বুনিয়াদকেই ধ্বংস করে সেইসব রীতিনীতি সমাজজীবন থেকে উপড়ে ফেলার প্রয়োজন। নতুবা হাতে ক'রে অমঙ্গল বা ধ্বংসকে ডেকে আনা যেতে পারে, ওয়েলকাম জানানো যেতে পারে।
এককথায় বলা যেতে পারে নিকৃষ্ট মানুষের জন্য উৎকৃষ্ট কিছুই নয়। অমৃত, নারীপুরুষ দেবদেবীদের জন্যেই। নিকৃষ্ট বা অসুরদের জন্যে নয়। প্রবাদ আছে, কুত্তার পেটে ঘি সহ্য হয় না। এখন পেট পচা কেউ যদি ঘি খেয়ে থাকে তাহ'লে তাকে তার খেসারত দিতে হবে, কিছুই করার থাকবে না, ক্রনিক গ্যাস্ট্রোএন্টারাইটিসে ভোগা রুগী যদি আবার দূষিত খাবার খায়, দূষিত জল পান করে, দূষিত পাত্র ব্যবহার করে, দূষিত লোকের সঙ্গ ক'রে তাহ'লে তাকে মরতে হবে ভুগে ভুগে। আর, যদি রবীন্দ্রনাথের শিষ্য হ'য়ে পরম ভক্ত সেজে জেনে শুনে বিষ পান করতে থাকে তাহ'লে আর কি করা যেতে পারে? একমাত্র বলা যেতে পারে, দু'হাত প্রসারিত ক'রে মাথা উচু ক'রে,
আ বয়েল মুঝে মার।
No comments:
Post a Comment