কর্মস্থলে বহু মানুষ আছেন যারা অসহায় অবস্থায় বসের উপর নিজের জীবন ছেড়ে দিয়েছেন। তারা সেই কষ্ট চেপে রাখে সযত্নে বুকের মাঝে। পরিবারের কাউকে জানতে দেয় না। আমার কর্মজীবনে এরকম বহু তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে যা কাউকে কোনওদিন মুখ ফুটে বলিনি। কাজের জায়গায় মাথা উঁচু ক'রে কাজ করেছি। আমার আন্ডারে যারা কাজ করতো তাদের কি কাজে এসেছি জানি না শুধু এটুকু বলতে পারি আমাকে শিফটিং ডিউটি করতে হ'তো আর শিফটিং ডিউটি ছিল ১৫দিন অন্তর অন্তর। ১৫দিন শেষ হ'লেই শিফটিং চেঞ্জের সময় কর্মচারীরা শিফট চেঞ্জ রিপোর্ট কার্ডের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়তো আমি কোন শিফটে আছি জানার জন্য। ম্যানেজমেন্ট ও টাইম অফিস থেকে যখন হঠাৎ হঠাৎ অ্যাটেন্ডেন্স ভিজিটে আসতো তখন আমাকে তাদের ঢাল হ'য়ে দাঁড়াতে হ'তো। তার জন্যে মুখ বুজে অনেক মানসিক চাপ সহ্য করতে হ'তো। ডিউটি শেষে আউটপুট পারফরমেন্স আর ঝামেলাহীন ডিপার্ট্মেন্টের পরিবেশ বজায় রাখা ছিল আমার ফার্স্ট এন্ড ফরমোস্ট ক্রাইটেরিয়া। তাই কর্তৃপক্ষ আর কিছু দেখতো না তবে কেউ কেউ অকারণ বসিং করতে ছাড়ত না। অমুক কোথায়? তমুককে ডাকুন ব'লে আমাকে বিব্রত করতে চেষ্টা করতো। জেনেবুঝেই মজা করতো বা অন্যের রাগ আমার ওপর মিটিয়ে নিত। তবে এর জন্য আমাকে কর্মচারীদের মাঝে তাদের প্রোডাকশান ও শৃংখলা বজায় রাখার দায়িত্ব সম্পর্কে যাজন করতে হ'তো শাসন ও তোষণ এবং পালন ও পোষণ নীতির ওপর দাঁড়িয়ে কঠোর-কোমল হাতে। তারা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশী প্রোডাকশান দিত। কিন্তু আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কারও কারও কাছ থেকে যেমন সীমাহীন সম্মান ভালোবাসা পেয়েছি ঠিক তেমনি অকারণ এক একজনের কাছ থেকে রূঢ় ও চূড়ান্ত অসম্মানজনক ব্যবহার পেয়েছি। পেয়েছি তার কারণ মাথা উঁচু ক'রে স্বাধীনভাবে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে চেয়েছি আর তাই ছিল অপরাধ। কোনও কোনও কর্তৃপক্ষের ব্যক্তিগত কাজও করতে হয়েছে তাদের অনুরোধে। যেহেতু আমি বরাবরই ছিলাম স্পষ্টভাষী আর সেই স্পষ্টভাষীর জন্যে হয়েছি তাদের বিরাগভাজন। কিন্তু ঠাকুরকে ছোটোবেলা থেকে ধরার জন্য ছিলাম স্পষ্টভাষীর সঙ্গে মিষ্টভাষী ও ভদ্রভাষী।
( লেখা ৯ই জুন,২০২৩)
No comments:
Post a Comment