Powered By Blogger

Sunday, June 9, 2024

প্রবন্ধঃ নূপুর শর্মা ও ধর্মীয় কেচ্ছা!

ভারতে নবী হযরত মুহাম্মদকে নিয়ে নূপুর শর্মার আপত্তিকর বক্তব্যকে সামনে রেখে সারা ভারত ও মুসলিম বিশ্ব নাকি তোলপাড়। এই নিয়ে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে সৌদি আরব, কুয়েত এবং বাহরাইন ইত্যাদি কয়েকটি মুস্লিম দেশ। ডাক দেওয়া হয়েছে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক। ভারতেও দেশের ভিতরে প্রতিবাদের ঝড় যেমন উঠেছে তেমনি নূপুর শর্মার পক্ষেও ঝড় উঠেছে!

আর এই বিষয়ে দেশের ভিতরে ও বাইরে সঙ্কট মোকাবিলায় ভারত সরকার যা যা পদক্ষেপ গ্রহণ করার করেছে ও করছে।

এখন প্রশ্ন জাগে মনে নূপুর শর্মার বক্তব্যে সারা ভারত ও মুস্লিম বিশ্বে নাকি বাওয়াল লেগে গেছে। তা বাওয়ালটা কি উদ্দেশ্য প্রণোদিত? কারণ নূপুর শর্মার বক্তব্যে যা যা একশান নেওয়ার কেন্দ্রীয় সরকার নিয়েছে। কিন্তু নূপুর শর্মার সমর্থন যারা করছে বা করেছে তারা কি উদ্দেশ্যে তাকে সমর্থন করছে? একটা কিছু তো উদ্দেশ্য আছে। তা বদ হ'ক বা সৎ যে উদ্দেশ্যই হ'ক। কারণ নূপুর শর্মা বিজেপির সাংসদ ও নানা দলীয় ও সরকারি বেসরকারি নানা দায়িত্বে আছেন আর সেই সমস্ত দায়িত্ব থেকে বিজেপি দল তাকে সরিয়ে দিয়েছে এমনকি ৬ বছরের জন্য দল তাকে সাস্পেন্ড করেছে। এটা দলের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। বিজেপি দল তাদের সংগঠন, সরকার এবং দেশের স্বার্থে যা কঠিন পদক্ষেপ নেওয়ার নিয়েছে। অথচ প্রেম পিরিতি বা স্বার্থ দলের বা সরকারের না হ'য়ে কাদের হ'লো যে তাদের বুকের বরফ গলে ঝর্ণা হ'য়ে ঝ'রে পড়ছে নূপুর শর্মার দুঃখে!? আজ কারা তারা যারা নূপুর শর্মার পাশে দাঁড়াচ্ছে!? কোথায় থাকে তখন তারা যখন মুসলমানদের উগ্রতার বলী হয় দেশের হিন্দু সম্প্রদায়!? কোথায় থাকে তখন তারা যখন হিন্দু ধর্মের আস্থা শ্রীরাম ও হিন্দু দেবদেবীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানায়, ভাংচুর করে প্রকাশ্যে মুসলমানদের উগ্র একাংশ তখন কেন তারা প্রতিবাদে মুখর হয় না আজ যেমন নূপুর শর্মার বক্তব্যে খুশীতে দরদ উথলে উঠছে, বুকের বরফ গলে ঝর্ণা হ'য়ে যাচ্ছে যাদের, তাদের!? কি উদ্দেশ্য আছে এর পিছনে? তারা কি মনে করছে ভারতের সমগ্র হিন্দু সমাজ নূপুর শর্মার বক্তব্য সমর্থন করে? মুষ্ঠিমেয় কয়েকটি মানুষ দলবদ্ধ বা বিচ্ছিন্নভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হ'য়ে নূপুর শর্মাকে সমর্থন করলেই সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়কে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধ উসকে দেওয়া যাবে নাকি সমগ্র হিন্দু সমাজের মুখপাত্র হ'য়ে যাবে? হিন্দু বা মুসলিম সমাজ বা অন্যান্য সম্প্রদায় বা সমাজ কি কারও পৈতৃক সম্পত্তি!? এতটাই নপুংসক ভাবে কেন্দ্রিয় সরকার বা বিজেপি দলকে!? আর জনগণকে কি ভাবে এরা? চার অক্ষর? আর নূপুর শর্মার কথা যদি ধরি তাহ'লে বলতে হয় এতটাই কাচা মাথার অপরিপক্ক তিনি!? এটা বিশ্বাস যোগ্য? তিনি দায়িত্ববান একজন সাংসদ ও দলীয় কর্মী। তিনি জানেন না কোন কথাটা দেশের পক্ষে, সম্প্রদায়ের পক্ষে এবং দল ও সরকারের পক্ষে ক্ষতিকর ও বিপজ্জনক এবং নিজের ভাবমূর্তির পক্ষে কলঙ্কজনক !? যদি এর জন্যে বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হয় দেশ, জনগণ, সরকার ও দলের তাহ'লে কি করা উচিৎ!? কড়া থেকে কড়া ভবিষ্যতের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ কি উচিৎ না? নাকি ধ'রে নেবো এর পিছনে অনেক বড় রাজনৈতিকভাবে আন্তর্জাতিক সাজিস আছে, আছে কোনও শক্তিধর রাষ্ট্রের উস্কানি বর্তমান সারা বিশ্বে রাশিয়া আর ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ভারতের বর্তমান জবরদস্ত অবস্থানের ভিত্তিতে আর তার মদদদাতা আছে দেশের ভিতরে দেশ শত্রু রাবণ ও দুর্যোধনেরা?

এছাড়া যখন ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এবং বহির্ভারতে হিন্দুদের ওপর প্রকাশ্যে আক্রমণ হয় এবং হিন্দু দেবদেবীদের ভাংচুরসহ হিন্দুদের ওপর প্রকাশ্যে আক্রমণ হয় তখন তো সারা ভারত নূপুর শর্মার জন্য যেমন পক্ষ অবলম্বন ক'রে গর্জে ওঠে তেমন তো গর্জে উঠতে তখন দেখি না!? কেন? আর কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের ভূমিকা কি থাকে তখন!? এর আগে বহু বহু ঘটেছে ও ঘটে চলেছে, প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়েছে সম্প্রতি বাংলাদেশেও আমরা কোরাণ আর হনুমান সংক্রান্ত নোংরামোও দেখেছি কিন্তু এ সম্পর্কে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও সদর্থক বলিষ্ঠ কড়া দৃষ্টিভঙ্গি বা ভূমিকা দেখিনি। দেখেছি কি!?
পক্ষপাতিত্ব দিয়ে কি আর দেশ চালানো যায় নাকি সমাজ সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখা যায়!?!?!?।
(লেখা ৮ই জুন, ২০২২)

No comments:

Post a Comment