Powered By Blogger

Monday, September 22, 2025

বিষয় যখনঃ প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশ কার?

এই বাংলাদেশ মেটিকুলাস ডিজাইনে সব ধ্বংস করার ও রি-সেট বাটন টিপে সব অতীত মুছে ফেলার স্রষ্টা শান্তির পুরষ্কার হাতে অশান্তি যজ্ঞের পুরোহিত মহম্মদ ইউনুস সাহেব। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষকে ভাগ করেছিল ব্রিটিশ ২০০বছর দেশ শাসন ক'রে ভারতবর্ষকে ভোগ করার পর। ২০০ বছর যে দেশকে ভিতরে ও বাইরে হাড়ের ওপর লেগে থাকা মাংস ও ভিতর থেকে মজ্জা চুষে বের ক'রে নেওয়ার মত ভোগ করেছিল যারা, সেই বৃটিশ ভারত ছেড়ে চলে যাবার আগে ভারতের সংগে বেইমানী নেমকহারামী করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনি। ভারতকে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে হিন্দু-মুসলমানে ভাগ ক'রে দিয়ে চিরকালীন দুই সম্প্রদায়কে পরস্পরের শত্রু বানিয়ে দিয়ে ভারতকে দুইভাগে ভাগ ক'রে দিয়ে গিয়েছিল। এবং এমনভাবে ভাগ করেছিল ভারতকে যার দ্বিতীয় উদাহরণ পৃথিবীর কোথাও নেই।

ভারতের পশ্চিমে এক টুকরো অংশ এবং ভারতের পূর্বের একটুকরো অংশ নিয়ে গড়ে উঠেছিল অদ্ভুত একটা দেশ পাকিস্তান। আর দুই টুকরো অংশের মাঝখানে ছিল বিশাল অবশিষ্ট ভারত। এই বিশ্বকে শাসন করা বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত সভ্য দেশ বৃটেন এই ব্যবস্থা ক'রে গেছিল ভারত ছেড়ে যাবার আগে। ভারত ভাগ ক'রে হিন্দু মুসলমানের মধ্যে চিরকালীন শত্রুতার বীজ বপন ক'রে গিয়েছিল ভারতকে ২০০বছর ভোগ করা বেইমান অকৃতজ্ঞ বৃটিশ সুকৌশলে দ্রষ্টাপুরুষের মত। তারা জানতো তাদের সূর্য একদিন অস্ত যাবে, জোর ক'রে চিরদিন নিজের আধিপত্য বজায় রাখা যায় না, চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়। কর্মফল সবাইকেই একদিন ভোগ করতে হয়; তা সে ব্যক্তি হ'ক, সমষ্টি হ'ক আর দেশ, বিদেশ যাই-ই হ'ক। ভারতের ওপর যে অত্যাচার হয়েছে যুগ যুগ ধ'রে ভিতরে ও বাইরে সময় তার হিসাব বুঝে নেবে একদিন এ আমার গভীর বিশ্বাস। বিজ্ঞানের ভাষায় "Every action has opposite and equal reaction অর্থাৎ প্রতিটি ক্রিয়ার বিপরীত ও সমান প্রতিক্রিয়া আছে" এই কথা যদি সত্য হয় তাহ'লে আমরা এর চরম পরিণাম দেখতে পাবো একদিন।

বৃটিশেরা মেটিকুলাস ডিজাইনে ভারতকে দু' ভাগ করেছিল এমনভাবে যাতে ভবিষ্যতে তিনভাগ হ'তে পারে। তিনভাগ হওয়াটা অর্থাৎ পাকিস্তানের দু'টুকরো হওয়াটা নিশ্চিত ছিল, শুধু সময়ের অপেক্ষা। আর হয়েছেও তাই। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ তিন টুকরো হয়েছে অখন্ড ভারত। আরও একটা সূক্ষ সম্ভাবনা ব্রিটিশ ক'রে রেখেছিল দূরদর্শীর মত ভবিষ্যতে যাতে ভারতকে ভাঙা যায়। মাত্র ২২কিলোমিটার শিলিগুড়ি করিডোর দিয়ে যুক্ত পূর্ব ভারতের ৭টা রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সামনে রেখে ভারত রাষ্ট্র স্বাধীন হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে, ১৯৭১ সালে ভারতের রাষ্ট্রনেতারা বুঝতে পারেনি বা খেয়াল করেনি কিংবা বুঝলেও, খেয়াল করলেও গুরুত্ব দেয়নি ভারত ভাঙ্গার সূক্ষ্ম সম্ভাবনাকে। আজ সেটা সময়ের সংগে সংগে উন্মোচিত হয়েছে। বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্রগুলির যে সেদিকে নজর ছিল তা' আজ প্রমাণিত। এরকম ভাঙ্গার বহু সূক্ষ্ম সম্ভাবনার জন্ম দিয়ে গেছে বৃটিশ ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের মধ্যে দিয়ে। বর্তমানে বাংলাদেশে বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকা ও ভারতের পার্শ্ববর্তী দেশ পাকিস্তানের দাদাগিরি অব্যাহত এবং ভারতকে ভাঙ্গার ষড়যন্ত্রে রত।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানের দানবদের হাতে বাংলাদেশের অবশিষ্ট জনগণ ও মা-বোনেদের নিহত ও যৌন অত্যাচার হওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য পাকিস্তান ও আমেরিকার শত্রু হয়েছিল ভারত আর তার পুরষ্কার স্বরূপ বর্তমান বাংলাদেশের অবৈধ শাসক আমেরিকার এজেন্ট ইউনুস অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অবৈধভাবে, অন্যায় ও অনৈতিক উপায়ে পিছনের দরজা দিয়ে ছদ্ম ছাত্র রাজনীতি ও ছদ্ম ছাত্র আন্দোলনকে হাতিয়ার ক'রে মেটিকুলাস ডিজাইনে বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের প্রধানকে সরিয়ে দিয়ে, নির্বাচিত সরকারকে ভেঙে দিয়ে বাংলাদেশের সিংহাসনে ৮ই আগষ্ট'২০২৫ বসেই ভারতের বিরুদ্ধে ভারত ভাঙ্গার জন্য ভারতের উত্তর-পূর্ব দিকের সাত রাজ্য অর্থাৎ সেভেন সিস্টার্স নিয়ে হুমকি দিলেন। এই প্রথম ভারতের তথা দুনিয়ার সাধারণ মানুষ জানতে পারলো সেভেন সিস্টার্সের গল্প। বোঝাই গেল মহম্মদ ইউনুসের এই হুমকি রাতারাতি মস্তিষ্ক প্রসূত না। এই ছক তিনি বৃটিশদের মত ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত শাসক আমেরিকার মদতে মেটিকুলাস ডিজাইনে বহুদিন থেকে মস্তিষ্কে ধারণ করে এসেছেন আর প্রথম রাতেই বিড়াল মারার মত রাজনীতির খেলার মাঠে ব্যাট হাতে এসেই বিরাট ছক্কা হাঁকাবার মত রাজনীতির ব্যাট হাতে ভারত ভাঙ্গার ছক্কা হাঁকিয়ে দিয়েছেন,। আর, এখন প্রতিদিন চলছে তাঁর ভারত থেকে সেভেন সিস্টার্স ভাঙ্গার নেশায় বুঁদ হ'য়ে ভাঙ্গার বালখিল্য স্বপ্ন দেখা।

প্রশ্ন জাগে মনে, এই জন্যেই কি বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল? ভারতকে ভাঙ্গার জন্যই কি আমেরিকার বুকে লালিত পালিত ও অর্থ, মান, যশ লাভে লাভিত মহম্মদ ইউনুসকে বাংলাদেশের শাসনভার হাসিনার পরিবর্তে তুলে দেওয়া হয়েছিল? ভারতকে ভাঙ্গার অলীক বালখিল্য স্বপ্ন দেখার জন্যই কি বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ, যুব সমাজ, সাধারণ জনগণ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছিল? নাকি বাংলাদেশ গঠনের জন্যই আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল? তাহ'লে এত উগ্র ভারত বিরোধীতা কেন? কার বা কাদের স্বার্থে? কাদের পরামর্শে, কাদের উসকানিতে পাকিস্তানের মত বাংলাদেশে শুধু এক ও একমাত্র ভারত বিরোধীতার বিষাক্ত বিষ বপন হ'য়ে চলেছে? পার্শ্ববর্তী আর সব দেশ বাংলাদেশের বন্ধু ও হিতাকাঙ্ক্ষী? সবাই বাংলাদেশের ভালো চায়? যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের ভয়ঙ্কর ধ্বংসের সময়ে পাশে ছিল না তারা আজ বন্ধু আর ভারত নিজের বিপদের কথা না ভেবে ১৯৭১ সালে বিশ্বের বৃহৎ ভয়ঙ্কর শক্তিশালী দেশ আমেরিকার চোখ রাঙ্গানিকে উপেক্ষা ক'রে শুধুমাত্র মানবতা ও মনুষ্যত্ব বোধকে সম্মান ও রক্ষা করার তাগিদে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল, সেই ভারত আজ শত্রু বাংলাদেশের!? এটা কি বেঈমানি, অকৃতজ্ঞতা নয়? এটা কি অমানবিকতা ও মনুষ্যত্বহীনতার চরম পরিচয় নয়?
তাহ'লে বাংলাদেশ কার? বাংলাদেশের জনগণের? নাকি বিশ্বের বৃহৎ কোনও শক্তির?

ঈশ্বর বা আল্লা ব'লে যদি কেউ বা কিছু থাকেন বিচারের ভার তাঁর হাতে ছেড়ে দিলাম।
( লেখা ২৯শে আগষ্ট'২০২৫)।

No comments:

Post a Comment