Powered By Blogger

Wednesday, September 10, 2025

প্রবন্ধঃ পাহারাদার।

আমাদের পূজা আমরাই পাহারা দিবো। রাষ্ট্রীয় নিরপত্তার জন্য যদি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আসেন তাহলে সাধুবাদ জানাবো, এছাড়া কোন অহিন্দু পূজার আঙ্গিনায় দেখতে চাই না।

এটা কি ধরণের কথা বললেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোট-কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক মহাশয়? বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোট-কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক হ'য়ে এই ধরণের আলটপকা বিতর্কিত মন্তব্য ক'রে মহাজোটকে মহাঘোটে পরিণত করা হ'লো না কি? সব সম্প্রদায়ের মধ্যে এই ধরণের আলটপকা আবেগ তাড়িত খোঁচা মারা অর্থহীন হালকা কথাবার্তার জন্য সমস্যা জর্জরিত আজ সব সম্প্রদায়ের মানুষ। কেন অহিন্দু পূজার আঙিনায় দেখতে চান না এই প্রশ্ন উঠতেই পারে, তাই না? অহিন্দু বলতে কাদের কাদের বুঝিয়েছেন তিনি? এই ধরণের অসুস্থ কথাবার্তার জন্য কি প্রভাব পড়তে পারে আদৌ তা' জানা আছে? তার ওপর আবার বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোট-কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েছেন। দায়িত্ব নিয়ে বালখিল্য ছেলেখেলা চলে না। একজনের একটা ভুল, অন্যায়, অগোছালো, ভিত্তিহীন, অপমানজনক মন্তব্যের জন্য অহিন্দুদের প্রতিক্রিয়া হ'তে পারে এবং তার খারাপ প্রভাব পড়তে পারে গোটা হিন্দু জাতটার ওপর। হিন্দুদের পক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোট-কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব যখন কেউ নেবে তখন মুখে লাগাম লাগাতে হবে ও নিজের ধর্মের ও অন্য ধর্মের সবাইকে লাগাম লাগাতে অনুরোধ করতে হবে। কথায় আছে, আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শেখায়। নিজে আচরণ ক'রে অন্য সব সম্প্রদায়ের মানুষকে শেখাতে হবে কেমনভাবে আচরণ করতে হবে, কেমনভাবে কথা বলতে হবে। যুক্তির ওপর দাঁড়িয়ে স্পষ্টবাদী হন কিন্তু মিষ্টভাষী হন। তবেই সাধারণ মানুষ তা' সে হিন্দু হ'ক, মুসলমান হ'ক বা খ্রীষ্টান-বৌদ্ধ যে সম্প্রদায়েরই হ'ক না কেন মানুষ আপনাকে মানবে, শ্রদ্ধা, সম্মান করবে। তবেই সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে সম্প্রীতি অটুট থাকবে। নতুবা সব বকোয়াস।

এই কথা বলার জন্য আমাকে বলা হ'লো আমি যেন বেশী মাতব্বরি না দেখায়, তা' না হ'লে আমাকেও ওরা অ্যাটাক করবে, ওদের থেকে সাবধান থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কমেন্ট বক্সে।

এই হ'লো তথাকথিত হিন্দুদের সমস্যা। এখানে 'মাতব্বরি' শব্দ ব্যবহার ক'রে আমাকে অকারণ অপমান করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা হ'লো না এবং হিন্দুদের মধ্যে যে ঐক্য নেই সেটা প্রকাশ্যে প্রমাণ হ'লো। শুধু মুখে মারিতং জগত। কেউ ভুল কথা ব'লে সমস্যার সৃষ্টি করলে সেই ভুল তাকে ধরিয়ে দিয়ে সঠিক পথে শুধরে দেওয়ার যে শিক্ষা সেই শিক্ষা যে দেয় সে পরম হিতাকাঙ্ক্ষী। বর্তমানে সেই হিতাকাঙ্ক্ষী তো নেই শুধু সমস্যাকে আরও জটিল ক'রে আগুন জ্বালানোতে ওস্তাদ সবাই। আমার মাতব্বরি কি দেখলেন? আমি হিন্দু হ'য়ে আমার একজন হিন্দু ভাই যদি ভুল কথা বলে, ভুল পদক্ষেপ নেয় আর তার ফল যদি সমগ্র হিন্দু সমাজকে বইতে হয় সে ক্ষেত্রে সচেতন হিন্দু হিসেবে আমার আপনার সবার একটা গুরুদায়িত্ব আছে তাকে ভুল ধরিয়ে দেওয়ার। কিন্তু এখানে উল্টোটা করা হ'লো। আমাকেই খামোকা কথার খোঁচা দিয়ে অপমান করা হ'লো যা সবাই ফেসবুকে দেখেছে।

আর, অ্যাটাক যদি করে কারা করবে? অ্যাটাকের পাল্টা অ্যাটাক করার ক্ষমতা যদি না থাকে তাহ'লে আলটপকা কথা ব'লে সমস্যা সৃষ্টি করা কেন? আর, যদি পাল্টা অ্যাটাক করার ক্ষমতা থাকেও তাহ'লেও সমস্যার জন্ম দিতে পারে এমন আলটপকা অনুচিত, অন্যায়, ভুল কথা দায়িত্বশীল পদে বসে বলবো কেন? কেন সতর্ক থাকবো না? আমি যে পদের দায়িত্ব নিয়েছি সেই দায়িত্ব কথাবার্তা, চালচলনে কেন সঠিকভাবে পালন করবো না। আমার মাথার ওপর যদি সমাজের কোনও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়ে থাকে মানুষ তাহ'লে তাদের রক্ষা করার সম্পূর্ণ দায় দায়িত্ব আমার।

আর, আমার পরিবার আমার ভুল কথা, ভুল চলনের জন্য যেমন ধ্বংস হ'য়ে যায় ঠিক তেমনি আমি যদি সমাজে কোনও দায়িত্বশীল পদে বসে থাকি তখন আমার সমাজের মঙ্গলের কথা, সমাজের বৃহত্তর স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই কথা বলতে হবে, নিজের জীবনকে পরিচালনা করতে হবে। নইলে ব্যক্তি, সমষ্টি, সমাজ, দেশ ধ্বংস হ'য়ে যাবে। যা আজ চলছে গোটা বিশ্ব জুড়ে শুধুমাত্র দূরদৃষ্টির অভাবে আলটপকা বেহিসেবি কথা বলার জন্যে। তাহ'লে এ আমি কেমন পাহারাদার!

তাই হে পারারাদার, কাউকেই কারও থেকে সাবধান হ'তে হবে না। আমি নিজেই নিজের ভয়ের কারণ, নিজেই নিজের যম। আমার নিজের থেকে আমাকেই সাবধানে থাকতে হবে। নতুবা ধ্বংস অনিবার্য।

আমার মতামত জানালাম গ্রহণ করতে পারে কিংবা বর্জনও করতে পারে পাঠকবর্গ। সবাই ভালো থাকবেন।
( লেখা ১১ই সেপ্টেম্বর' ২০২৪ )

No comments:

Post a Comment