Powered By Blogger

Sunday, September 28, 2025

প্রবন্ধঃ কিছু না বলা

Khardaha Satsang Kendra-এর পোস্ট শেয়ার করা নিয়ে প্রতিদিনই ফোনে, ইনবক্সে নানারকম প্রশ্নের মুখোমুখি হ'তে হচ্ছে। তাদের প্রত্যেকের বক্তব্য হচ্ছে প্রায় একইরকম। তাদের বক্তব্য, আমরা সবাই গুরুভাই, আমাদের মধ্যে এইরকম পরস্পর ঝগড়া বিবাদ হ'লে তো মুশকিল! আমাদের সকলের মিলেমিশে চলা উচিত; আর ফেসবুকে ঠাকুর নিয়ে এইসব ঝামেলা ঠিক নয় ইত্যাদি ইত্যাদি। ফোনে ও ইনবক্সে এত কথার উত্তর দিতে না পারার জন্য এখানে আমি আমার বক্তব্য সবার সুবিধার্থে তুলে ধরলাম।

আপনারা ঠিকই বলেছেন। কিন্তু মানছে কে? আজ ঠাকুরকে সবচেয়ে বদনাম করেছে বা করছে কারা? মুখে বলছে জয়গুরু আর প্রতিমুহূর্তে ঠাকুর আমাদের নোংরা ধান্দাবাজি মানসিকতার জন্য হেরে যাচ্ছে, পরাজিত হচ্ছে, কিন্তু সেদিকে আমাদের কারও নজর নেই। এটা কি আমরা অস্বীকার করতে পারি? বুকে হাত দিয়ে বলুন একজন গুরুভাইবোনও যে ঠাকুর যেমন আমাদের দেখতে চেয়েছেন আমরা তেমন ১০০ভাগের একভাগ হ'য়ে উঠতে পেরেছি? সেই ছোট বয়স থেকে আজ পর্যন্ত বহু মানুষের মুখোমুখি হয়েছি, সৎসঙ্গীদের সঙ্গে বহু অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গেছে জীবন, নীরবে লক্ষ্য করেছি সব! মাঝে মাঝে ঠাকুরের নীতিবিধি অনুযায়ী সরব হয়েছি, হওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বেশিরভাগ সময় নীরব কর্মী হওয়ার চেষ্টা করেছি। যাকে যাকেই মনে করেছি ভীষণ ইষ্টপ্রাণ মানুষ, গুরুভাই, গুরুবোন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বার্থের লেজে পা পড়লেই হঠাৎ তাদের বেরিয়ে আসা ভীষণ মুখ ও ব্যবহার দেখেছি! কোথায় তখন সেখানে ঠাকুর ও ঠাকুরের কথা! নাম তুলে ধরলে চমকে উঠবে সৎসঙ্গী সাধারণ গুরুভাইবোন! কিন্তু তা ঠাকুর চান না। তাই থাক সেইসমস্ত নিজেকে সৎসঙ্গের কেউকেটা মনে করা, প্রথিতযশা, সামনের সারিতে থাকা সৎসঙ্গীদের নাম উহ্য!

তাই যারা ঠাকুরকে নিজের রোজগার আর প্রতিষ্ঠার জন্য উপকরণ বানিয়ে নিয়েছে তাদের জয়যাত্রা অব্যাহত গতিতে ছুটে চলেছে। জীবন খুবই ছোট! অল্প কয়েকদিনের সফর! এই অল্প কয়েকদিনের সফরে গুরুভাইবোনরা যদি সত্যি সত্যিই ঠাকুরকে ঠাকুরের ইচ্ছা, ঠাকুরের স্বার্থ নিয়ে জড়িয়ে ধরতো তাহ'লে এই ভয়ঙ্কর দিন দেখতে হ'তো না। কিন্তু কথায় আছে চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী। যাদের কাছে 'টাকা আপন মানুষ পর, যত পারিস টাকা ধর' প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য জীবনে, তাদের কাছে এইসমস্ত নীতিকথা বাল ফেলাইন্না কথা! তারা এসবের কোনও ধার ধারে না, মূল্য দেয় না। তারা সাধারণ সৎসঙ্গীদের সরলতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্বার্থ সিদ্ধি করে। তাদের বিরুদ্ধে কবে প্রকৃত সৎসঙ্গীরা ঐক্যবদ্ধ হবে? হবে না। সবার একটাই চিন্তা, আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা। আর এই ধরণের মানসিকতার অধিকারী 90% গুরুভাইবোন। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগায় সব জায়গায় কালকে দীক্ষা নিয়ে আজকেই ভাতকে অন্ন বলা ভন্ড ভক্তের দল।

তবে ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে! আর ব্যতিক্রম আছে বলেই আজও সূর্য পূর্ব দিকে ওঠে আর পশ্চিমে অস্ত যায়। ঠিক তেমনি এই ব্যতিক্রম আছে বলেই সারা পৃথিবীতে আজ ছড়িয়ে পড়েছে ও পড়ছে হু হু ক'রে ঠাকুরের বাঁচা-বাড়ার মধুর বাতাস! আপনারা আমার গুরুভাইবোনেরা আমার এসব কথায় মনে অন্য কিছু নেবেন না।
আর, ফেসবুক ঝামেলারই জায়গা। আজ এই স্ট্রং মাধ্যমটা যা পজিটিভ মানুষের বিচরণ ক্ষেত্র হ'য়ে উঠতে পারতো তা হ'লো না পরিবর্তে নেগেটিভ লোকেদের আঁতুর ঘর হ'য়ে দাঁড়িয়েছে।

আর, মুশকিল আসান করে ওগো মানিক পীর! তাই চিন্তা করি না। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, নিজেদের মধ্যে তখনই লড়াই লাগে যখন পক্ষ-প্রতিপক্ষ কপট ও অকপট হয়। আর সেই লড়াই চিরন্তন!
( লেখা ২৯শে সেপ্টেম্বর'২০২০)

No comments:

Post a Comment