জহরলাল নেহেরুকে মুছে ফেলা অত সহজ নয়। তিনি ছিলেন অসাধারণ বক্তা। ভারতবর্ষের ইতিহাস ও সমাজ সর্ম্পকে ছিল তার অগাধ জ্ঞান। তার লেখনি অতি চমৎকার। গণতন্ত্র প্রিয় এই মানুষটির বিজ্ঞানের প্রতি ছিল অপরিসীম শ্রদ্ধা। স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি আধুনিক ভারত নির্মাণে সচেষ্ট হয়েছিলেন।------কবিতা সরকার। (২৮শে অক্টোবর'২০১৪)
কবিতা সরকার আপনার লেখাটা সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ! তাই লেখাটা শেয়ার করলাম ও আমার মনের মধ্যে বহুদিনের চাপা থাকা কয়েকটা মনের কথা লিখলাম।
আপনার কথাটা ঠিকই। কোনও ভুল নেই। অবশ্যই তিনি অসাধারণ বক্তা ছিলেন, ছিলেন পন্ডিত। আর তাই তাঁর নামের আগে 'পণ্ডিত' বিশেষণটি ব্যবহৃত হয় এখনও। তাঁর অগাধ পান্ডিত্যের পরিচয় তিনি রেখে গেছেন তাঁর "Letters from a Father to his Daughter, The Discovery of India, Glimpses of World History, Mahatma Gandhi" ইত্যাদি বিভিন্ন রচনার ওপর! এটাও সত্য বিজ্ঞানের প্রতি তাঁর অপরিসীম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার জন্য তাঁকে 'Jawaharlal Nehru — Builder of Modern Science and Promoter of Scientific Temper' আখ্যাও দেওয়া হয়েছে! আধুনিক ভারত নির্মাণের জন্য তিনি সচেষ্টও হয়েছিলেন এ কথাও সত্যি এবং এই সমস্ত কিছুর চেয়েও বড় সত্যি তাঁর বাগ্মিতা, জ্ঞান, পান্ডিত্য, বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা ও আধুনিক ভারত নির্মাণের স্বপ্ন দিয়ে তৈরী আর স্মৃতি দিয়ে ঘেরা এক খন্ড ভারত 'ভুমি'-র সঙ্গে তিনি রেখে গেছেন 'নেতাজী' সম্পর্কিত এক বিতর্কিত বিষয় সহ এক গভীর দগদগে ভয়ংকর দেশভাগের ঘা যা আজ স্বাধীনতার ৬০বছর পরও প্রজন্মের পর প্রজন্ম প্রশ্ন তোলে, ‘এগিয়ে চলার পথে শুরুতেই এমন এক মহাজ্ঞানী মহানজনের হাত ধরার পরও কেন অখন্ড ভারতের মানবজাতির আজ এই করুণ অবস্থা? আর কতদিন ভোগ করবে এই ভাগের বিষের জ্বালা অখন্ড ভারতের টুকরো টুকরো হ'য়ে যাওয়া দেশের সাধারণ নিরীহ মানুষ !? আর কতদিন চলবে এই করুণ দেশভাগের রক্তাক্ত অস্থিরতা !? আর কতদিন চলবে এই সাম্প্রদায়িক হানাহানি, ধর্মীয় উন্মত্ততা!?’ আমরা তো ভারত, পাকিস্থান, বাংলাদেশ মিলে সব এক ছিলাম! কত আক্রমণ তো এই অখন্ড ভারতের বুকে হয়েছে, তারপরেও ভারত অখন্ড থেকেছে! কত রক্ত মিলেমিশে এক হয়ে ফুলের মালা হ'য়ে ঝরে পড়েছে অখন্ড ভারতবর্ষের গলায়! স্বাধীনতার সময়ের এত এত মহাজ্ঞানী, মহান পন্ডিত, মহান আত্মাদের সম্মিলিত অবস্থান সত্ত্বেও কেন এমন হ'ল যে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ, শ্রেষ্ট, সর্বোৎকৃষ্ট, প্রধান, চূড়ান্ত 'আর্য্য ভারতবর্ষ'-কে টুকরো টুকরো ক'রে দিয়ে গেল ব্রিটিশের ঘৃণ্য নীতি 'Divide & Rule' !!!!????
কি কারণে এমন হ'ল?????? কে দেবে এর উত্তর?????? ভারতবর্ষকে টুকরো টুকরো ল্যাংড়া খোঁড়া ক'রে দিয়ে গেল যে ব্রিটিশ তাদের নোংরা নীতি দিয়ে তাদেরও আজ ল্যাংড়া খোঁড়া হ'তে আর যদিও বিশেষ কিছু বাকি নেই! কিন্তু আমার অখন্ড ভারতবর্ষের আজকের এই করুন অবস্থার দায় কার? এই প্রশ্ন কি উঠবে না? ওঠা কি অপরাধ, অন্যায়? আজ অখন্ড ভারতবর্ষের খন্ড খন্ড ভুমি ভারত, পাকিস্থান, বাংলাদেশের ঘরে ঘরে পরস্পরের বিরুদ্ধে পরস্পরের যে শ্ত্রুতার ডিম ফুটছে, ফুটে চলেছে অহরহ সেই দায় কার !? আমরা তো আম চাষার দল, আমরা না হয় আগাম বুঝতে পারিনা, দেখতে পারি না, চিনতে পারিনা, ধরতে পারিনা আমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মুর্তিমান বিপদকে, ভবিষ্যৎ শয়তানকে!!! কিন্তু সেই মহাজ্ঞানী মহাজন যাদের হাত ধরে তামাম অখন্ড ভারতের আম চাষার দল বাঁচতে চেয়েছিল, ভরসা করেছিল এই বলে 'বাড়িয়ে দাও তোমার, তোমাদের হাত , আমরা তোমার, তোমাদের হাত ধরে বাঁচতে চাই-ই", বেঁচেছিল কি বা বেঁচে আছে কি মহাজ্ঞানীদের হাত ধ’রে চলা অখন্ড ভারতের ও খন্ড খন্ড ভারত, পাকিস্থান, বাংলাদেশ ভুমির আম চাষার দল????? দেশের সেই মহাজ্ঞানী, মহাপন্ডিত, মহান আত্মা, মহান দেশপ্রেমিকরা চিনতে, বুঝতে, জানতে, ধরতে পেরেছিল কি সেই দেশভাগের ভবিষ্যৎ বিপদকে, মুর্তিমান রক্তচোষা শয়তান বাদুড়কে???? কেন পারেনি? না-কি চিনতে, ধরতে, জানতে, বুঝতে চায়নি? কোনটা? যদি না পেরে থাকে, নাই পারতে পারে, তাহ'লে সেই ভয়ঙ্কর বিপদ সম্পর্কে তো আগাম সাবধান ক'রে দিয়েছিল The greatest phenomenon of the world The living Ideal, The great seer Sri Sri Thakur Anukul Chandra. তাঁর সৃষ্ট Satsang-এর পক্ষ থেকে সেই সময়ের দেশোদ্ধারের মহান যোদ্ধাদের, মহান জ্ঞানীদের কাছে পাঠানো তাঁর message-এ কি ছিল? শ্রী শ্রী ঠাকুরের পক্ষ থেকে সৎসঙ্গের তৎকালীন সম্পাদক নিজের হাতে পৌঁছে দিয়েছিলেন দেশের প্রধান নেতাদের হাতে সেই message! দ্রষ্টাপুরুষের সেই সাবধানবাণী আজ পড়লে বিস্ময়ে চমকে উঠতে হয়, শিউরে ওঠে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ! এক লাইনের এক সংক্ষিপ্ত বাণী, "DIVIDING COMPROMISE IS THE HATCH OF THE ANIMOSITY' (ভাগ ক’রে সমাধান করা মানে তা’ দিয়ে শত্রুতার ডিম ফোটানো!) মহাজ্ঞানী মহাজনদের মত সমজদারোকে লিয়ে এই ঈশারা কি কাফি ছিল না!! এ ছাড়াও শ্রী শ্রী ঠাকুর ব্রিটিশদের এই 'Divide & Rule' ঘৃণ্য নীতিকে মোকাবিলা করার জন্য সেই সময় সাম্প্রদায়িক বসতি প্রতিস্থাপনের যে মোক্ষম অস্ত্রের সন্ধান দিয়েছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে এবং দেশের নেতৃবৃন্দের কাছে , দুর্ভাগ্যের বিষয় সেই সময় দেশ স্বাধীনের উন্মত্ত নেশায় 'Divide & Rule' কে মোকাবিলা করার জন্য দ্রষ্টাপুরুষ শ্রী শ্রী ঠাকুরের সেই মোক্ষম অস্ত্রকে সেই মহাজ্ঞানী মহাজনদের মনে হয়েছিল ভোঁতা ফালতু অস্ত্র ও দ্রষ্টাপুরুষের ঐ মেসেজকে মনে হয়েছিল Baseless message!!!!!!!!!!!!!!! কেন? কেন মহাজ্ঞানী মহাজনরা চিনতে পারলেন না দ্রষ্টাপুরুষকে!? অজ্ঞানতা না-কি ইচ্ছাকৃত!?
পরিণতি আজকের ভারত, পাকিস্থান, বাংলাদেশ আর রক্তাক্ত ভুমি!!!!!!!!!!!!! শত্রুতার ডিম ফুটে চলেছে নিরন্তর!!!! ঝাঁকে ঝাঁকে বেরিয়ে আসছে শত্রতার ডিম ফুটে রক্ত বীজের ঝাড় রক্ত গঙ্গা বইয়ে দেবে বলে!!!! আরও কত ভাগ ও রক্তপাতের মধ্যে দিয়ে কোথায় এর শেষ কেউ জানে না!!!!
এর পরেও বলব আমরা মহাজ্ঞানী, মহান আত্মা!!!!!!
(লেখা ২৯শে অক্টোবর '২০১৪)
No comments:
Post a Comment