Powered By Blogger

Monday, October 10, 2022

অভিজ্ঞতাঃ ধিক্কার। জানাই ধিক্কার।

অনেকদিন ধ'রে ব্যাপারটা লক্ষ্য করছিলাম। একটা তিক্ত অভিজ্ঞতা হ'লো। দেখছিলাম আমার কিছু ফেসবুক বন্ধু এবং অন্য অনেক ফেসবুক পাঠক লেখা পছন্দ না হলেই কিম্বা স্বার্থে অকারণ ঘা লাগলেই (নিজের থেকে নিজের উপরে নিয়ে নেয় যা আমাকে অবাক করে) আমার লেখায় খোঁচা মেরে অপমানজনক মন্তব্য করে। মন্তব্যের উত্তরে যখন আমি মন্তব্য করি তখন আবার নিজের ঐ খোঁচা মারা কমেন্ট ডিলিট ক'রে দেয়; কেন? এরকম অনেক ফেসবুক বন্ধু বা গুরুভাইদের দেখছি অপমানজনক খোঁচা মেরে চিমটি কেটে পরে কমেন্ট ডিলিট ক'রে দেয় যাতে আম পাঠক বা আম সৎসঙ্গী বুঝতে না পারে। সাধারণ আম পাঠকের কথা ছেড়ে দিলাম কিন্তু সৎসঙ্গীর চরিত্র এমন হ'তে বলেছিল নাকি ঋত্বিকরা দীক্ষা দেবার সময়? আমি শুধু বলতে পারি, জ্ঞানের খোঁচা মারলে, আর ঐ আমার পোষ্ট করা বিষয় সম্পর্কে কিম্বা সৎসঙ্গ জগৎ সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান থাকলে বাপের বেটার মত মুখোমুখি হবেন, কমেন্টের ময়দান ছেড়ে পালিয়ে যাবেন না। আর সৎসঙ্গীদের উদ্দেশ্যে বলি আলোচনার মুখোমুখি হ'য়ে বাপ কা বেটা সহিস কা ঘোড়ার মতন অন্তত নিজের পরিচয় দেবেন  আর তা না হ'লে কাউকে অপমানজনক খোঁচা দিয়ে চিমটি কেটে নিজেকে ঠাকুরের কাছে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন না। আমার বিচারের ফাঁকফোকর আছে সেই ফাঁকফোকর দিয়ে গলে বেরিয়ে যাবেন নিশ্চিত কিন্তু ঠাকুরের বিচার ভয়ঙ্কর, সাবধান। ঠাকুরের পরিষ্কার বলা আছে, "তুমি যা করছো বা ক'রে রেখেছো ভগবান তাই গ্রাহ্য করবেন আর সেগুলির ফলও পাবে ঠিক তেমনি।" খোঁচা মারুন, চিমটি কাটুন, অপমান করুন, গালাগালি দিন, সমালোচনা করুন কিন্তু গিদরের মত লেজ তুলে পালাবেন না। আম সৎসঙ্গী দেখুক, জানুক, বুঝুক কে বা কি বা কোনটা ঠিক বা বেঠিক। এমন সৎসঙ্গীদের ঠাকুর সোনার সৎসঙ্গী বলেছিলেন নাকি!? প্রায়ই এমন গুরুভাইদের মুখোমুখি হ'ই। হয় ফেসবুকে এসে ফাঁপা ভিত্তিহীন উপলব্ধিহীন অর্থহীন খাপছাড়া প্রাইমারী স্কুলের গন্ডি পার না হয়েই মন্তব্য করার অছিলায় জ্ঞানের পাঠশালা খুলে বসবে আর সেগুলি হজম করতে হবে। এটা সৎসঙ্গীদের মধ্যে ভয়ংকরভাবে প্রকট হ'য়ে উঠেছে। সবাই জ্ঞানের খাতা খুলে বসেছে। আর নাহয় অন্যকে, পরস্পর পরস্পরকে খোলাখুলি গালিগালাজ অপমান করছে। যুক্তিতে, জ্ঞানে, তত্ত্ব ও তথ্য মূলক আলোচনায় না পেরে, পোষ্ট করা বিষয়ের অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝতে না পেরে বিরাট পান্ডিত্যের ধ্বজা উড়িয়ে প্রতিপক্ষকে তার লেখার বিষয় সম্পর্কে না জেনে, আদ্যপান্ত না পড়ে, না বুঝেই মন্তব্য ক'রে দিচ্ছে। আবার কখনো বা রেগে উন্মাদ হ'য়ে  জন্ম বিকৃত আখ্যা দিয়ে দিচ্ছে আর পরমুহূর্তে ভালো মানুষের মত ভাব ক'রে ভন্ড, কপট ঈশ্বর প্রেমিক হ'য়ে পড়ছে। তারা খেয়ালই করছে না অদীক্ষিত মানুষেরা কি ভাবছে। সবটাই গিয়ে ঠাকুরের উপর পড়ছে এই বোধ কারও নেই। আরে ভুল হতেই পারে, আমারও ভুল হয়, প্রত্যেকের ভুল হয়। নানা চড়াই উৎরাই এলোমেলো ঘটনা ও নানারকম কালো সাদা ও রঙ্গীন কথার ভিড়ে মানুষের ভুল হতেই পারে। আমারও নানা সময়ে হয়েছিল। এবং যেটার ভুল বুঝতে পেরেছি সেটা স্বীকার ক'রে নিয়েছি, সংশোধন ক'রে নিয়েছি ও ক্ষমা চেয়েছি। উদাহরণ তুলে ধ'রে এখানেও বলতে পারি, শ্রীশ্রীঠাকুরকে নিয়ে সজনীকান্ত দাস তাঁর সম্পাদিত পত্রিকা 'শনিবারের চিঠি' সাহিত্য পত্রিকায় এত কুৎসা ক'রে এত জনপ্রিয় হয়েছিলেন যে পরে যখন তিনি আনন্দবাজার পত্রিকায় সম্পাদনার কাজে যুক্ত হন তখন তাঁর নাম আর নামী  আনন্দবাজার পত্রিকার জনপ্রিয়তা একসঙ্গে জড়িয়ে গেলে মানুষ ভাবতো 'শনিবারের চিঠি' আনন্দবাজার পত্রিকার একটা অংশ। আমারও সেই ভুল হয়েছিল। সেই ভুলের জন্য আমি আগেও ক্ষমা চেয়েছি আজও এই লেখার মধ্যে দিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আনন্দবাজার পত্রিকার কাছে। এতটাই সজনীকান্ত দাস আর আনন্দবাঝার পত্রিকার জনপ্রিয়তা ও নাম একাত্ম হয়ে গিয়েছিল যে আজও অসতর্কভাবে 'শনিবারের চিঠি' প্রসঙ্গ এলেই সজনীকান্ত দাসের সঙ্গে সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার কথা অসাবধানবশত এসে যায় মুখে।  

 
যাই হ'ক সবাই এতবড় ঠাকুর প্রেমী এক একজন যে তারা খেয়াল করছে না ছেলে খারাপ কাজ করলে আম পাবলিক বাপ-মাকে টেনে আনে বাপ-মায়ের দোষ না থাকলেও। ঠিক তেমনি এইটাও যেন আম সৎসঙ্গীর মাথায় থাকে অদীক্ষিত মানুষ ওপেন মিডিয়ার এই সমস্ত ঠাকুর সম্পর্কিত পোষ্ট দেখছে, পড়ছে, জানছে আর কোমর ক'ষে নেবে পড়ছে ঠাকুরের কুৎসা করতে আর এই রোগ বাংলা ও বাঙালির মধ্যেই সর্বাধিক প্রকট এবং তা' বহু আগে থেকেই। বোদ্ধা বাংলার যোদ্ধা  বাঙ্গালী কোনোদিনই বাংলার রত্নদের, বিশ্বশ্রেষ্ঠ বাংলার সন্তানদের স্বীকৃতি দেয়নি। দিয়েছে কখনও? যখন বহির্বাংলা ও  বহির্বিশ্বের এলিট সমাজ সেই রত্নদের গলায় রত্নহার পড়িয়েছে তখন। তখন বাংলার বুকে পড়েছে শ্রদ্ধা, সম্মান প্রদর্শনের চুলকানির হুড়োহুড়ি। কে কত আগে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাবে তার শুরু হ'য়ে যায় প্রতিযোগিতা। রাজনৈতিক দল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্লাব ইত্যাদির ভিড়ে নাভিশ্বাস ওঠে সেই রত্নের।  

The greatest phenomenon of the world শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের বেলায় এই বাংলার বুক থেকে উঠেছিল অকথ্য কুৎসার ঝড়। সেই ঝড়ে সামিল হয়েছিল বাংলার সব স্তরের কম বেশী কৃতী সন্তানেরা।  আর সেই সময় এই সরস কুৎসার নেতৃত্ব দিয়েছিল বাংলার সবচেয়ে অগ্রণী সংবাদপত্র আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদক সজনীকান্ত দাস তার একসময়ের সম্পাদনায় পরিচালিত 'শনিবারের চিঠি' সাহিত্য পত্রিকার মধ্যে দিয়ে। তখন 'শনিবারের চিঠি' ছিল আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদক সজনীকান্ত দাসের একসময়ের হট সাহিত্য পত্রিকা আর শ্রীশ্রীঠাকুর ছিলেন তাঁর 'শনিবারের চিঠি' র হট আইটেম। প্রতি শনিবার বেরোতো সজনীকান্ত দাসের 'শনিবারের চিঠি' সাহিত্য পত্রিকায়। আর আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদক সজনীকান্ত দাস তাঁর একসময়ের সম্পাদনায় পরিচালিত 'শনিবারের চিঠি' সাহিত্য পত্রিকায় ছদ্মনামে লেখা লেখক সেই শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলের মহান জীবনকে বলাৎকার ক'রে ক'রে জনপ্রিয়তার চূড়ায় বসে ঠাকুরকে আয়ের উপকরণ বানিয়ে চুটিয়ে ব্যবসা করতো ও রোজগার করতো। বাংলার বুকে বাঙ্গালিরা রসিয়ে রসিয়ে চা বিস্কুট খেতে খেতে, চাটনির মত চাটতে চাটতে সেদিন বিশ্বের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে খোরাক করতো যা আজও বাংলার বুকে পথে ঘাটে, মাঠে ময়দানে, পাড়ায় পাড়ায় ঐ খোরাকের ট্রাডিশান ব'য়ে নিয়ে চলেছে বিশ্বের সবচেয়ে মিষ্টি ভাষাভাষীর মানুষ মহান বাঙ্গালী। আর তাই দেখে অবাক হয়েছিল এবং এখনও হয় দেশবিদেশের অন্য ভাষাভাষীর মানুষ। তাই বোধহয় ঠাকুর বলেছিলেন আমার সৎসঙ্গের আন্দোলন বাংলার বাইরে থেকে উঠবে। আর তাই-ই যেন সত্য হ'য়ে উঠছে দিনে দিনে ক্রমশ অতি দ্রুতবেগে। হায়! বাঙ্গালী! ধিক! ধিক্কার জানাই তোমায়।

(লেখা ১০ই সেপ্টেম্বর'২০১৭)

No comments:

Post a Comment