শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সঙ্গে দীক্ষিত অনুগামীদের তফাৎ কি?
১) শ্রীশ্রীঠাকুর ছিলেন করার মানুষ আর আমরা দীক্ষিত অনুগামীরা কথার মানুষ।
২) শ্রীশ্রীঠাকুর ভাসতেন করার স্রোতে আর আমরা দীক্ষিতরা ভাসি কথার স্রোতে।
৩) শ্রীশ্রীঠাকুর নিজের জীবনে যা যা করেছেন তাই-ই বলেছেন, যা করেননি তা কখনো বলেননি আর আমরা কিছুই তো করিইনি যদি কিছু সামান্য করেছি তো গলা ফাটিয়ে বলেছি আর যা করিনি সে সম্পর্কে বেশী বেশী বলেছি আর সুযোগ পেলেই ঠাকুরের বাণী শুনিয়ে নিজেকে অন্যের কাছে পন্ডিত সাজিয়েছি।
৪) শ্রীশ্রীঠাকুর ছিলেন প্রেমিক পুরুষ আর আমরা দীক্ষিত নারীপুরুষ অনুগামীরা অনুগামীদের সহ্য করতে পারি না।
৫) শ্রীশ্রীঠাকুর ছিলেন ব্যথাহারী আমরা ব্যথাদানকারী।
৬) শ্রীশ্রীঠাকুর কোনোদিন কাউকে মানুষ তো দূরের কথা সৃষ্টির একটি তৃণ কণাকেও কখনো আঘাত দেননি আর আমরা দীক্ষিত দাদামায়েরা প্রতিনিয়ত ঘরে বাইরে একে অপরকে কটু কথার প্রহার ক'রে চলেছি আর ক'রে চলেছি প্রকাশ্যে বাচ্চাবুড়ো ওপেন মিডিয়ায়।
৭) শ্রীশ্রীঠাকুর সাধু সাজতে বারণ করেছিলেন, কোনো কিছু নকল করতে বারণ করেছিলেন আর বলেছিলেন অকপট হ'তে কিন্তু আমরা আজ সাদাকাপড়ে আবৃত সাধু সেজে বসেছি আবার কেউ কেউ বা মন্দিরে কেন্দ্রে ঠাকুর স্টাইলে বসে ঠাকুর স্টাইলে 'করা লাগে, বলা লাগে, ধরা লাগে' সুরে প্রবচন দিয়ে চলেছি আর হয়েছি আপাদমস্তক কপট!
৮) শ্রীশ্রীঠাকুর ইষ্টপ্রতিষ্ঠার জন্য জীবন বলী দিতে বলেছিলেন আর আমরা তার সোনার সৎসঙ্গীরা আত্মপ্রতিষ্ঠার উন্মাদনায় দিকে দিকে মন্দিরে মন্দিরে মত্ত হ'য়ে রয়েছি।
৯) শ্রীশ্রীঠাকুর ছিলেন মানব প্রেমী আর আমরা দীক্ষিত অনুগামীরা কামিনীকাঞ্চন প্রেমী।
১০) শ্রীশ্রীঠাকুরের আয় ছিল মানুষ আর ব্যয় ছিল ভালোবাসা আর আমাদের আয়ের লক্ষ্য কামিনী কাঞ্চন আর ব্যয় অন্যের সমালোচনা, নিন্দা, কুৎসা করা ও পরের দোষ দেখা।
আরও অনেক আছে। তবুও আমরা শ্রীশ্রীঠাকুরের চোখে সোনার সৎসঙ্গী! এরপরেও তিনি আমাদের ফেলে দেননি, ছেড়ে দেননি, দূরে সরিয়ে দেননি বুক দিয়ে আগলে রেখেছিলেন আমৃত্যু আমাদের এখনও রেখে চলেছেন আমরা কালের গহবরে হারিয়ে যাবো ব'লে। এইজন্যই তিনি বোধহয় দয়াল।
প্রবি।
(লেখা ২৬শে সেপ্টেম্বর' ২০২২)
No comments:
Post a Comment