আমার চারপাশে গভীর এক অরণ্য।
গভীর অরণ্যে আমি একা।
একাকী আমি ক্রন্দনরত।
গভীর অরণ্যে চারপাশের গাছপালা নড়ে উঠলো,
মাথার চুল উড়িয়ে, চোখে মুখে হাত বুলিয়ে
ব'য়ে গেল এক নরম শীতল বাতাস,
মাথা নাড়িয়ে, গা ঝেড়ে গাছেরা সমস্বরে বলে উঠলো,
এই কে তুমি?
এই জনশূন্য গহীন বনে একাকী কি করছো?
কেন, কি জন্যে কাঁদছ এই নির্জন বনে? কার জন্যে কাঁদছ?
এখানে কি ক'রে তুমি এলে? পথ হারিয়েছো?
শীতল নরম বাতাসে অবগাহণরত যেন নেশাগ্রস্ত আমি
নেয়ে উঠে নেশাতুর চোখে চকিতে কান্না থামিয়ে
ব'লে উঠলাম, সত্যি তো! কেন, কি জন্য কাঁদছি আমি?
কার জন্যে কাঁদছি? নিজের জন্যে? অন্য কারও জন্যে?
কে শুনছে আমার কান্না?
ঐ গহীন বনে নেমে এলো ক্রমশ অন্ধকার,
ঘন অন্ধকার! থেমে গেল শ্বাপদের গর্জন,
পাখির কলকাকলি, মধুর গুঞ্জন।
মাঝে মাঝে নিস্তব্ধতা ভেঙে ভেসে আসছে
নিঝুম রাতে একটানা ঝিঝির ডাক।
আমি নিঃসঙ্গ, নিঃস্ব, বিচ্ছিন্ন,
গভীর নির্জন অরণ্যে একা বান্ধবহীন একজন।
হঠাৎ গভীর অন্ধকার নির্জন অরণ্যে নিঝুম রাতে
তমসার পার হ'তে অচ্ছেদ্যবর্ণ
ইষ্টপ্রতীক রূপে আবির্ভূত এক মহান পুরুষ
আলোর বন্যায় ভাসিয়ে চারপাশ,
হাত বাড়িয়ে ক্রন্দনরত আমায় বললে,
ডর কিস বাত কি? ম্যায় হুঁ না? আও মেরে পাস!
ঘন অন্ধকার গভীর নিঝুম বনে আমি ভয়ে ভয়ে
কান্না ভেজা ঝাপসা চোখে দেখলাম,
এক স্ফটিক আলোয় উদ্ভাসিত চারিদিক,
আর সেখানে দন্ডায়মান দয়াল আমার
মিষ্টি মধুর হাসিতে আমার পানে চেয়ে বলছে,
ডরো মাত্! হাম হ্যাঁয় না!!
আর সেই মুহুর্তে সেই গভীর অরণ্যে
গাছপালা, পশুপাখি, পোকামাকড় সমস্ত অস্তিত্ব
অন্ধকারের বুক চিরে বেড়িয়ে এসে
সেই স্ফটিক আলোর আবর্তে আমায় ঘিরে
নাচতে নাচতে সমস্বরে গান গেয়ে বলতে লাগলো,
মাভৈ বন্ধু, মাভৈ! চোখ খোলো,
খোলো চোখ, দ্যাখো সামনে স্ফটিক আলো!!
ডরো মাত্, ডরো মাত্, মাত্ ডরো!
No comments:
Post a Comment