তিনি কি তাঁর
"A WORLD OF THREE ZEROS
THE NEW ECONOMICS of ZERO POVERTY, ZERO UNEMPLOYMENT, and ZERO NET CARBON EMISSIONS" থিয়োরী বাংলাদেশে লাগু ক'রে বাংলাদেশকে মডেল দেশে পরিণত করতে পারবেন?
আমেরিকার তো অর্থবল, জ্ঞানবল, লোকবল সব ছিল তাহ'লে আমেরিকায় জীবন কাটানো ডাঃ ইউনুসকে আমেরিকা নিজের দেশে এবং যে দেশগুলিতে উনি ZERO PROBLEM এর ভাষণ দিয়ে বেড়ান ও বিভিন্ন দেশ তাঁকে ডেকে নিয়ে যায় সেই দেশগুলি কেন নিজেদের দেশে ডাঃ ইউনুসের এই অভিনব 'A WORLD OF THREE ZEROS' থিয়োরীকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নতি ঘটায় না? আমেরিকা সারা বিশ্বজুড়ে যে ছোটো ছোটো দরিদ্র দেশগুলির উন্নয়নের জন্য সেবা প্রদান করে সেই ছোটো গরীব দেশগুলিতে কেন ডাঃ ইউনুসকে পাঠিয়ে তাঁর থিয়োরী 'A WORLD OF THREE ZEROS' কাজে লাগায় না? তা না ক'রে কি দরকার ছিল ডাঃ ইউনুসের মতন একজন মহান মার্গ দর্শনকারী মহাপুরুষের এই সমস্ত নোংরা রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে জড়াবার? তাঁর থিয়োরী কি শুধুই পুস্তকের মধ্যেই পড়ে থাকবে মার্ক্সের সমাজ কো বদল ডালোর থিয়োরীর মতন? আর, পুরস্কারের মধ্যে আবদ্ধ থাকবে তাঁর জীবন? মানুষের স্বপারিপার্শ্বিক বাঁচাবাড়ার কাজে লাগবে না?
আজকের আঠারোর যৌবনকে ভাবতে হবে, মগডালে বসা শকুনের মতো পাকা চুলের মাথার লোকেরা ওঁত পেতে বসে থাকে আঠারোর মাথা চিবিয়ে খেয়ে নিজেদের অসম্পূর্ণ স্বপ্ন পূরণ করার জন্য। আজকের যারা উত্তেজিত মস্তিষ্ক আর বৃথা আড়ম্বর যুক্ত কল্পনায় ভেসে বেড়ানো স্বপ্ন ভাঙ্গার দল তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে যখন তাদের অসফল জীবনে ব্যর্থতার ঘানি টেনে চলতে চলতে আগামী দিনে বিদ্ধ্বস্ত বিক্ষুব্ধ পাকা মাথার চুলের অধিকারী হবে তখন তারা ওঁত পেতে বসে থাকবে বুড়ো শকুনের মত তখনকার উঠতি অল্পবয়সী ছেলেদের মাথা চিবিয়ে খাওয়ার জন্য, ঐ অনেকটা আমি ফাস্ট ইয়ারে র্যাগিং হয়েছি আমিও পরবর্তী বছরে র্যাগিং করবো ও ফাইনাল ইয়ারে এসে দ্বিতীয়, তৃতীয় বর্ষের ছেলেদের সিনিয়ার দাদা হিসেবে পরবর্তী সময়ে দাদাগিরির পেশাকে চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের হাতা, চামচা বানানোর নেশায় পিছন থেকে তাদের উসকে দিয়ে, মদদ দিয়ে র্যাগিং করাবো নবাগতদের। ব্যর্থ আমি, অসফল আমি, জীবনে যখন জীবনযুদ্ধে আমার পুর্বপুরুষ অর্থাৎ আমার সিনিয়ারদের দ্বারা ভুল পথে পরিচালিত হ'য়ে ব্যর্থ হয়েছি তখন আমি আমার এই ব্যর্থতার বিষ পরবর্তীর জীবনে ইঞ্জেক্ট না করা পর্যন্ত আমার এ পোড়া জীবনে শান্তি নেই, এতে যদি বিড়ালের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ার মতন আশায় বসে থেকে থেকে শেষ জীবনে এসে এদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে আমার ভাগ্যের যদি শিকে ছেঁড়ে তা'তেই বা কম কি? এতে এরা মরলো কি বাঁচল আমার কি আসে যায়? ক্ষমতায় ব'সে একটু সুড়সুড়ি দিয়ে দিলেই হবে।
যেমন, জ্বলন্ত সাক্ষী, ডাঃ ইউনুস, যিনি বাংলাদেশের বর্তমান Pseudo student movement অর্থাৎ কপট কোটা আন্দোলনের নামে হাসিনার পতনের আন্দোলনে, আগষ্ট'২৪ সরকার পতনের আন্দোলনে কোনও অংশগ্রহণই করেননি সরাসরি, সামনাসামনি, তিনি হাসিনার দেশত্যাগের পরে হাসিনা সাম্রাজ্যের যখন পতন হয়েছিল তখন হঠাৎ আরামে বিলাসিতায় দিন কাটানো আমেরিকা থেকে উড়ে এসেই প্রধান উপদেষ্টা হ'য়ে জুড়ে বসেই আন্দোলনে রহস্যজনকভাবে মৃত ছাত্র সাঈদের বাড়িতে গিয়ে ছাত্রদের কপট আন্দোলন, হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের অশ্লীল নোংরা যৌন শ্লোগান, প্রকাশ্যে হাসিনার অন্তর্বাস, সায়া নিয়ে উল্লাস প্রদর্শন, দেশজুড়ে ভাঙচুর, লুটপাট ইত্যাদির বিরুদ্ধে বিন্দুমাত্র প্রতিবাদ না ক'রে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া শান্তির দূত তিনি ছাত্রদের সুড়সুড়ি দিয়ে, উসকে দিয়ে বললেন,
"তোমরা যে এত আন্দোলন করলা তোমাদের সেলাম দেওয়ার জন্য আসলাম। মুক্ত করলে আমাদের। আজকে গেলাম আবু সাঈদের বাড়িতে। সে শুধু এখানে প্রাণ দিয়েছে তা না; আমি ওদেরকে বলতেছিলাম আমরা মহাকাব্য বলি না? মহাকাব্যের নায়ক থাকে, সাংঘাতিক ঘটনা ঘটে, নায়ক নায়িকারা কি সাংঘাতিক রকমের ক্যারেক্টার, আবু সাঈদ হ'লো মহাকাব্যের ক্যারেক্টার। ভবিষ্যতে এটা নিয়ে বহু কবিতা, বহু সাহিত্য বহু কিছু রচনা হবে। সে দেখাইয়া দিয়েছে সবাইকে, চমকে দিয়েছে সবাইকে।"
আর কি করলেন, অকারণ ভারতের বিরুদ্ধে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে হুমকি দিয়ে দুই দেশের আঠারো বছর বয়সের মাথাকে আরও গুলিয়ে দিয়ে গরম ক'রে দিলেন।
ঠিক তেমনি, এমন বহু দৃশ্য আমরা দেখেছি দেশে দেশে সেই স্বপ্ন ব'য়ে নিয়ে ভেসে বেড়ানো আঠারোর রক্ত গরম ছেলেদের মাথা চিবিয়ে খায় ঐ পাকা চুলের মাথার বুড়ো শকুনেরা তাদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্যে। আর, সাঈদেরা পড়ে থাকে যে তিমিরে সেই তিমিরেই। শুধু একটু সুড়সুড়ি দিয়ে দাও বোকা সাঈদদের। কেউ মনে রাখে না, রাখতে চায় না। নইলে ৭১ এর ইতিহাসের ভয়াবহ নৃশংসতম ৩০ লক্ষ মানুষের হত্যাকান্ড আর লক্ষ লক্ষ মা বোনেদের ওপর দানবীয় উল্লাসে বলাৎকার ও বলাৎকার শেষে নিষ্ঠুর হত্যার ইতিহাস আজকের আঠারো মনে রাখে না? কেউ রিসেট বাটন টিপে মুছে দিতে চায় সেই মর্মান্তিক ইতিহাস?????? যদি শান্তির দূত এমনটা ঘৃণ্য কাজ ও কথা বলতে পারে তাহ'লে অন্যদের বা আঠারোদের দোষ কোথায়? যদি ৭১এর নির্মম ইতিহাস মুছে দেওয়া যায় তাহ'লে সাঈদদের কে মনে রাখবে? প্রশ্ন জাগে মনে।
তাই, যারা জীবনে সফল হয়েছে, অর্থ, মান আর যশের অধিকারী হয়েছে, নানারকম পুরস্কার পেয়েছে দেশে বিদেশে, তারাও কেন এমন নোংরা খেলা খেলে? কি পায়নি তারা জীবনে? তাহ'লে তাঁরা কি প্রকৃত শিক্ষিত নন? তাঁরাও কি সব তথাকথিত লেখাপড়াজানাওয়ালা ভদ্রলোকের দল?
তারা যখন এই পথে পা বাড়ায় তখন ভাবি 'তেলের শিশি ভাঙল বলে' কবিতায় কবি অন্নদাশঙ্কর রায় আজ থেকে কত বছর আগে এই বুড়ো খোকাদের ভন্ডামিকে উদ্দেশ্য ক'রে বলেছিলেন,
তেলের শিশি ভাঙল বলে
খুকুর পরে রাগ করো
তোমরা যে সব বুড়ো খোকা
ভারত ভেঙে ভাগ করো !
তার বেলা?
ভাঙছ প্রদেশ ভাঙছ জেলা
জমিজমা ঘরবাড়ী
পাটের আড়ত্ ধানের গোলা
কারখানা আর রেলগাড়ী !
তার বেলা ?
চায়ের বাগান কয়লাখনি
কলেজ থানা আপিস-ঘর
চেয়ার টেবিল দেয়ালঘড়ি
পিয়ন পুলিশ প্রোফেসর !
তার বেলা ?
যুদ্ধ জাহাজ জঙ্গী মোটর
কামান বিমান অশ্ব উট
ভাগাভগির ভাঙাভাঙির
চলছে যেন হরির-লুট !
তার বেলা ?
কামান বিমান অশ্ব উট
ভাগাভগির ভাঙাভাঙির
চলছে যেন হরির-লুট !
তার বেলা ?
তেলের শিশি ভাঙল বলে
খুকুর পরে রাগ করো
তোমরা যে সব বুড়ো খোকা
বাঙলা ভেঙে ভাগ করো !
তার বেলা?
খুকুর পরে রাগ করো
তোমরা যে সব বুড়ো খোকা
বাঙলা ভেঙে ভাগ করো !
তার বেলা?
এই ভাঙ্গাগড়ার খেলা আমরা আগেও দেখেছি, সম্প্রতি বাংলাদেশে দেখলাম, আগামীতেও দেখবো। এই ভয়ঙ্কর খেলা আজও চলছে জীবনে ব্যর্থ হওয়া আর সফল হওয়া লেখাপড়াজানাওয়ালা বুড়ো শকুনের দল তথাকথিত ভদ্রলোকেদের দ্বারা আঠারোর রক্ত গরম উত্তেজিত মস্তিষ্ক আর বৃথা আড়ম্বর যুক্ত কল্পনায় ভেসে চলা আদর্শহীন ছাত্র যুবকদের সরলতাপূর্ণ বেকুবীকে হাতিয়ার ক'রে তাদের কাঁচা মাথায় Pseudo-idealism অর্থাৎ ছদ্ম আদর্শবাদের তীব্র নেশার বিষ ঢুকিয়ে দিয়ে। তা'তে মিথ্যে আদর্শে্র উন্মাদনায় ভেসে গিয়ে ধ্বংস হ'ক আঠারোর যৌবন, ধ্বংস হ'ক তাদের সোনার ভবিষ্যৎ, ধ্বংস হ'ক সমাজ, সভ্যতা, উন্নয়ন তা'তে আমি পাকা মাথার ব্যর্থতার জ্বালায় ক্ষতবিক্ষত হতাশাগ্রস্থ পাকা চুলে ভরা মাথার বুড়ো শকুন, আমার কিচ্ছু আসে যায় না। আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা। কিন্তু আর কতদিন ঘুমিয়ে থাকবে আঠারোর যৌবন? তারা কি কখনই জাগবে না? তারা কি সারাজীবন দাবার বোড়ে হ'য়ে কাটিয়ে দেবে? তারা কি কখনোই বেড়িয়ে আসবে না এই মরণ ফাঁদ থেকে? যুগের কি কোনওদিনই পরিবর্তন আসবে না? তাহ'লে যুগের পরিবর্তন কি মিথ্যা?
তাই আঠারোর রক্ত গরম যৌবনদের বলি, বিশেষ ক'রে আমার আঠারোর সৎসঙ্গী ভাইবোনেদের সৎসঙ্গের শ্রীশ্রীদাদার (অশোকদাদা) লেখা গানের কথা তুলে ধ'রে বলি,
"অলীক মায়ার মোহন বাঁশি বাজিয়ে ডাকে রাত্রে দিনে
ঐ ফাঁদেতে পড়িসনে মন, নে তোর পরম আপন চিনে।"
( লেখা ১৭ই অক্টোবর'২৪)
No comments:
Post a Comment