আর, যদি গ্রেপ্তার ক'রে আইনের আওতায় আনা হয় ও বিচারে প্রমাণ হয় ধর্মীয় সঙ্কটকালে তাদের নেওয়া সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ ধর্মীয় সঙ্কটের ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে অমংগলজনক সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ ছিল না বরং ধর্ম ও ঈশ্বর নিয়ে হিন্দু মুসলমানের এই দীর্ঘদিনের যে গোলমাল, লড়াই তা'র সমাধানে, তা'র মিমাংসায় দৃষ্টান্তস্বরূপ এক যুগান্তকারী সার্বিক মংগলজনক সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ ছিল তখন আইন কি রায় দেয় ও উভয় সম্প্রদায়ের যারা এই ঘটনার বিরুদ্ধে ছিলেন তারা বিষয়টাকে কি চোখে দেখে ও কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটাও দেখার। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে একটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সূচনা হ'লেও হ'তে পারে, যা অন্যান্য ধর্মের পরস্পরের মধ্যে এর শুভ প্রভাব পড়তে পারে।
যুগপুরুষোত্তম পরমপিতা পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের
একজন দীক্ষিত শিষ্য ও তাঁর জীবনবাদ, অস্তিত্ববাদ সম্পর্কিত মতবাদ ও মিশনের অনুসারী ও পতাকাবহনকারী 'সৎসঙ্গী' হিসেবে আমার ব্যক্তিগত অনুভূতি, উপলব্ধি ও মতামত তুলে ধরলাম মাত্র। গ্রহণ ও বর্জন শ্রোতা বন্ধুদের।
এবার আসি নিজের সঙ্গে নিজে মুখোমুখি হ'তে। আসলে সৃষ্টিকর্তা নিজেই ভুল করেছেন এই ব্রহ্মান্ড সৃষ্টি ক'রে এবং সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ জীব মানুষকে সৃষ্টি করে। আসলে জীব জগত জীবন কারণের কারণ পরমকারণিক যিনি তিনি যুগে যুগে বারবার এসেছেন তাঁর সর্বশ্রেষ্ট উৎকৃষ্ট রূপ মানুষের রূপ ধরে তাঁর মানুষরূপী নিকৃষ্ট জীবেদের মাঝে। তাই তাঁর উদ্দেশ্যে অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে গাওয়া গানও যে স্থান কাল পাত্র অনুযায়ী অপরাধ ও পাপ হ'তে পারে এটাই সবচেয়ে বড় প্রমাণ যে এটা কলিযুগ। সৃষ্টিকর্তার সবচেয়ে বড় ভুল বোধহয় মানুষকে সৃষ্টি করা। আর, সবচেয়ে আরও বড় ভুল বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে তাঁর মানুষ হ'য়ে আসা তাঁর সৃষ্ট মানুষের মাঝে। মানুষ আজ মানুষ নয়, মানুষ আজ বালখিল্য হিন্দু, মুসলমান, খ্রীষ্টান ইত্যাদি। আর, ঘোর কলিযুগের এটাই আজ ট্র্যাজেডি যে সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি মানুষ যে আকৃতিতে মানুষ কিন্তু কখন যে বোধ, বুদ্ধি, শিক্ষা, সভ্যতা, চেতনা, জ্ঞান, আচার, আচরণ, স্বভাব ইত্যাদি সব হারিয়ে, লুপ্ত হ'য়ে এখন একতাল পচা দূর্গন্ধযুক্ত মাংসপিন্ডে পরিণত হয়েছে অর্থাৎ এককথায় প্রকৃতিতে বামনতা প্রাপ্ত হয়েছে নিশ্চিত ধ্বংস হওয়ার জন্য তা' মানুষ জানে না। বিশেষ ক'রে ধর্ম জগতের সবজান্তা বোদ্ধা্রা কথার স্রোতে ভাসা বক ধার্মিকের দল। এ ধ্বংস নিশ্চিত, আটকানোর কোনও উপায় আর নেই। কেউ বাঁচবে না; তা সে হিন্দু হ'ক, মুসলমান হ'ক, খ্রীষ্টান হ'ক, বৌদ্ধ হ'ক আর যে ধর্ম বা মতের বা সম্প্রদায়ের লোক হ'ক কেউ বাঁচবে না কলিযুগের মহাপ্রলয়ের হাত থেকে। এই ঘটনা অন্যতম অশনি সঙ্কেত।
এবার শ্রোতা বন্ধুদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই,
অনেকেই আমাকে আমার এই বক্তব্য বিষয়ে জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেছেন। তাদের কাছে আমার অনুরোধ আমার বক্তব্য ও কমেন্ট আবার পড়ুন, শুনুন, বুঝুন ও পারলে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করুন। আলোচনা করুন। মত বিনিময় করুন। বর্তমান যুগ টেবিল টকের যুগ। অন্তত শিক্ষিত মানুষের কাছে, সৎ, দক্ষ, যোগ্য, সচেতন ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে আমি আলোচনা আশা করতে পারি। তাঁদের মতামত জানতে পারি।
যখন কঠিন বিষয়ের ওপর সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার শ্রোতা ও দর্শক বন্ধুরা প্রশ্ন ক'রে পোষ্ট করবেন তখন চারদিক ভেবে পোষ্ট করবেন বিশেষ ক'রে সৎসঙ্গী ভাইবোন। কারণ আবার বলছি, আমরা যেন ভুলে না যায় আমি আপনি একজন সৎসঙ্গী। আমি আগে একজন সৎসঙ্গী অর্থাৎ জীব জগতের প্রতিটি জীবন, প্রতিটি অস্তিত্বের সঙ্গী, অস্তিত্বের অস্তিত্ব পরমঅস্তিত্বের সঙ্গী তারপর আমি হিন্দু কি মুসলিম কি খ্রীষ্টান ইত্যাদি সম্প্রদায়ের। দুনিয়ার সমস্ত প্রকৃত ঈশ্বর বিশ্বাসী, প্রকৃত ঈশ্বর প্রেমী ভক্ত মাত্রেই সৎসঙ্গী।
তাই একজন সৎসঙ্গী হিসেবে একজন সৎসঙ্গীর কাছে সৎসঙ্গীর মত উত্তর আশা করি। আশা করি সৎসঙ্গী হিসেবে সৎসঙ্গীর কাছে তথ্যবহুল উত্তর পাবো। অনেক কিছুই আমরা দেখিনি কারণ ধর্ম ও ঈশ্বর সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের দৌড় মোল্লার মসজিদ আর পুরোহিতের মন্দির পর্যন্ত দৌড়ের মতন। আর, তাই নিয়ে মোল্লা ও পুরোহিতরা ধর্ম ও ঈশ্বরের আঙ্গিনা কাঁপায়। আর, ধর্মে ও ঈশ্বর আরাধনায় মানুষকে ভয় পাইয়ে দেবার, অজ্ঞানতায় ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক অবৈজ্ঞানিক ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন অন্ধ দুর্বল ভীরু বিষয় আছে যা ধাঁধার সৃষ্টি হ'য়ে যুগ যুগ ধ'রে চলে আসছে আর মানুষকে অন্ধকারে ডুবিয়ে রেখে অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আলোর পথে আসতে বাধা দিচ্ছে।
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বললেন, "জ্ঞান ধাধাকে ধ্বংস ক'রে মানুষকে প্রকৃত চক্ষু দান করে। জ্ঞান বস্তুর স্বরূপকে নির্দেশ করে। আর, বস্তুর যে ভাব জানলে জানা বাকী থাকে না, তাই তার স্বরূপ।"
এবার শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র এসে সব বিষয়ের ধাঁধাকে ধ্বংস ক'রে হাঠে হাঁড়ি ভেঙে দিয়ে গেছেন ও প্রকৃত চোখ খুলে দিয়ে গেছেন, সমস্ত বিষয়বস্তুর স্বরূপ তুলে ধরেছেন। আবার, অনেক বিষয় সম্পর্কে নোতুন দিশা দেখিয়ে দিয়ে গেছেন ধর্ম ও ঈশ্বর জগতে অবস্থানকারী প্রকৃত ভক্তদের জন্য। সৎসঙ্গ জগতে ভণ্ডামি ও কপটতার কোনও জায়গা নেই। বিশেষ ক'রে সৎসঙ্গীদের কাছে শ্রীশ্রীঠাকুরের অনেক চাওয়া ছিল, আশা ছিল, ভরসা ছিল, ছিল স্বপ্ন। কিন্তু আমরা সৎসঙ্গী হ'তে পারিনি ব'লে সারাজীবন দুঃখ নিয়ে তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। কিন্তু তাঁর মিশন রথ চলবেই বিশ্বজুড়ে। এই রথ আটকায় এমন কেউ নেই এই পৃথিবীতে। কারণ এবার তিনি রেত শরীরে সুপ্ত থেকে অবস্থান করছেন আমাদের মাঝে। আর, সেই কথা স্বয়ং তিনি ব'লে গেছেন। একবার কথা প্রসঙ্গে তিনি বিজ্ঞানী কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্যকে ( যিনি সৎসঙ্গ জগতে কেষ্টদা নামে পরিচিত, যিনি নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত সি ভি রমণের অ্যাসিস্টেন্ট ছিলেন, ছিলেন কেমিষ্ট্রিতে গোল্ড মেডেলিস্ট) বলেছিলেন, "কেষ্টদা পদ্মার ভাঙ্গন দেখেছেন? উপর থেকে প্রথমে কিছুই বোঝা যায় না। হঠাৎ একদিন দেখা যায় নীরবে নিশব্দে পদ্মা পাড়ের বাড়ি ঘর গাছপালা জুড়ে বিশাল বিস্তির্ণ অঞ্চল সব পদ্মার পেটে ঢুকে গেছে, যেদিকে তাকায় শুধু জল, জল আর জল। ঠিক তেমনি একদিন গোটা পৃথিবী আমার সৎসঙ্গের পেটের মধ্যে ঢুকে যাবে।"
এখন আমরা সেই কলিযুগ থেকে সত্যযুগে প্রবেশের ট্রাঞ্জিশানাল পিরিয়ডে রয়েছি। তাই সৎসঙ্গীদের আজ সময় এসেছে বোঝার তারা সৎসঙ্গী, তারা সৎসঙ্গী, তারা সৎসঙ্গী। জয়গুরু।
( লেখা ১৪ই অক্টোবর'২৪)
No comments:
Post a Comment