Powered By Blogger

Sunday, July 12, 2015

তিয়াসাকে খোলা চিঠি...............(১১)




আপনি বলেছেন সোস্যালিজম পৃথিবীর শ্রেষ্ট মতবাদ। শুধু মুখে বললেই বা ছোঁয়া দিয়ে চলে গেলেই হবে না। বিজ্ঞের মত শুধু superficial thoughts আউড়ে সাধারণ বোকাহাবা, লেখাপড়া না-জানা, বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে ডুবে থাকা চূড়ান্ত ভাঙ্গাচোরা মানুষকে কথার সুড়সুড়িতে তাতিয়ে দিলেই হবে না যা আপনার মত আপনার পুর্বসুরীরা করেছে আর যা আপনি করছেন এখন। আপনি মনে করবেন না আপনি যে কথাগুলি বলেছেন সাম্যবাদ, সমাজতন্ত্রবাদের স্বপক্ষে আর ধনতন্ত্রের বিপক্ষে তা আপনি প্রথম বলছেন। এইসব কথা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে কখনো মার্কসবাদীরা, কখনো মাওবাদীরা, কখনো নকশালবাদীরা বলে বলে সরল সাধাসিধে, লেখাপড়া না জানা, বোকাহাবা, বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে ডুবে থাকা চরম ভাঙ্গাচোরা মানুষগুলোকে এক কল্পনার রাজ্যে নিয়ে গেছে। আর নিয়ে গিয়ে গাছে তুলে দিয়ে মই সরিয়ে নেবার মত সমাজের মূল স্রোত থেকে, পরিবার পরিজন থেকে এক অন্ধকার জগতে সরিয়ে দিয়েছে যেখান থেকে আর কোনদিন ফিরে আসতে পারেনি বা পারেনা অসহায় তরুণ তাজা প্রজন্ম! কেন সমাজতন্ত্র শ্রেষ্ঠ মতবাদ তাযুক্তি দিয়ে, তথ্য ও তত্ত্ব দিয়ে বিজ্ঞান ভিত্তিক বিচার বিশ্লেষন করে আপনাকে ও সাম্যবাদ ও সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসীদের বুঝিয়ে দিতে হবে সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষকে সমাজের মূল স্রোতের মধ্যে থেকেই। বনে বাদারে, অন্ধকারে, জঙ্গলে আত্মগোপন করে নয়। সাম্যবাদ, সমাজতন্ত্রবাদ তো একটা জীবন দর্শন। আর এই দর্শন তো নিষিদ্ধ নয় যে জীবন থেকে পালিয়ে গিয়ে অন্ধকারে চোরের মতন লুকিয়ে চুরিয়ে বনে বাদারে জঙ্গলে এই সর্বশ্রেষ্ট জীবন দর্শনের পাট নিতে হবে? কেন ওপেন ফোরাম হবে না যেখানে খোলামেলা ভয়ভীতিহীন পরিবেশে বিজ্ঞানভিত্তিক এই জীবনদর্শনের চর্চা হবে? কেন সেখানে যুক্তি দিয়ে বোঝানো হবে না ব্যষ্টির চেয়ে সমষ্টির গ্রহণযোগ্যতা বেশী, সমষ্টির কাছে ব্যষ্টির কোন মূল্য নেই? কেন বোঝানো হবে না জমিদারের চেয়ে, রাজার চেয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকারের শীর্ষে বসা প্রকারান্তরে মুষ্ঠিমেয় কয়েকজন (অচিরেই সেই একজন!) সর্ব্বশক্তিমান মানুষের ওপরই সমস্ত ক্ষমতা অর্পনের বিশ্বাসযোগ্যতা বেশী? একতরফা জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার জন্য গুপ্ত পরিবেশের কেন সৃষ্টি হবে? সবসময় হিংসা দিয়েই হিংসাকে জয় করতে হবে, মারো-কাটো-শেষ করো দর্শন দিয়েই সব হাতিয়ে নিতে হবে এমন দর্শনে যারা বিশ্বাসী তারা আর যাই হক মানবতার পূজারী হতে পারে না। হিংসার গর্ভে হিংসার জন্ম হবেই হবে এ ফলিত বিজ্ঞান! আর নিজের অযোগ্যতার কারণে, অদক্ষতার কারণে, উচ্ছৃঙ্খল, বিশৃঙ্খল জীবনের অধিকারী হয়ে যে দারিদ্র্যের জীবন অতিবাহিত করে সেই সমস্ত লক্ষ লক্ষ গরীব মানুষের জন্য দায়ী কে? ক্যাপিটালিষ্টরা!!?? সমাজব্যবস্থা? স্বাধীনতার ৬৮বছরেও দেশের এবং ৩৪বছরের শাসনে রাজ্যের বা সমাজব্যবস্থার কোন পরিবর্তন হল না কেন? কে দায়ী? কার দোষ? শুধু ক্যাপিটালিষ্টরা?! কে বারণ করেছে নিজের যোগ্যতা দিয়ে, নিজের দক্ষতা দিয়ে, নিজের পরিশ্রম দিয়ে, নিজের একাগ্রতা দিয়ে, নিজের বুদ্ধি দিয়ে, আত্মবিশ্বাস, চেতনা, দৃঢ় মানসিকতা নিয়ে মাথা উঁচু করে সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার পথে এগিয়ে চলার?
তাই এটাই বলতে আজ ইচ্ছা করছে পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তৈরী বা বিপ্লব, বিদ্রোহের পথে তৈরী কোন বাদ’-এর শাসন মানুষকে তৃপ্তি দিয়েছে, দিয়েছে তুষ্টি!? পঞ্চায়েত ব্যবস্থা থেকে শুরু করে দেশের সর্বোচ্চ শাসন ব্যবস্থা কোন দেশে জমিদারী শাসন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে রাজার শাসন ব্যবস্থার থেকে বেশী সুখ, শান্তি, আনন্দ দিয়েছে? তাই বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের কথা স্মরণ করে দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলতে চাই,
শাসন যদি তুষ্টি না দেয়,
তৃপ্তি না দেয় জীবনটাই;
সে শাসনে কি হবে তোর,
মরবি শুধুই যে তেষ্টায়”!
সে জমিদার, রাজা বা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তৈরী যে শাসন ব্যবস্থায় হক না কেন।
আর জীবনকে তৃপ্তি দেয় যে শাসকের শাসন সেই শাসককে বা নেতাকে হতে হবে ইষ্টপ্রাণ। তানাহলে যা হবে তা ঠাকুরের কথায় বলি,
ইষ্ট নাই নেতা যেই,
যমের দালাল কিন্তু সেই

এরই জ্বলন্ত উদাহরণ সম্রাট অশোক! ঠাকুরের কথায়, “......বুদ্ধদেবের প্রতি admiration অশোকের ভিতর দিয়ে সম্ভব করে তুলেছিল এমন একটা empire যাএখন কল্পনা করেও আনা যায় নাবাকি আমরা পৃথিবী জুড়ে যা দেখি তা যমের দালালদের লম্ফঝম্ফ!!!
তাই সবশেষে শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের কথায় বলি,

বৈশিষ্ট্যপালী আপুরয়মান প্রেরিত-পুরুষই
প্রকৃত গণ-নেতা।

যিনি যা যারা তথাগত, অবতার বা প্রেরিতপুরুষ,
যাদের প্রীতিমুখর বেদোজ্জলা দৃষ্টিতে
সার্থক সুসঙ্গতি নিয়ে
আপূরয়মাণ পুর্ব্বতনদিগের বোধ ও বাণীগুলি
তাৎপর্য্য-সংহিত হয়ে উঠেছে
যিনি বা যারা
আপূরয়মাণ, বৈশিষ্ট্যপালী সত্তাপোষী
যিনি বা যারা
পূর্ব্বতনে সক্রিয় শ্রদ্ধানিবদ্ধ,
এমনতর যিনি বা যারা
তাঁরাই গণনেতা, ভাগবত মানুষঃ
বর্ত্তমানে যদি কেউ এমনতর থাকেন-----
সহজ স্বাভাবিক সন্দীপনা ও প্রাকৃতিক অনুচর্য্যা নিয়ে,----
তিনিই প্রকট নেতা,
তিনিই পুরুষোত্তম,----লোককল্যাণ-বিধাতা;
তাঁকে অবজ্ঞা বা অবহেলা করে
যাই কিছু করতে যাও না,-----
তাতে সমাজ-শরীরে
এমনতর সাংঘাতিক্কখতের সৃষ্টি করবে,
যে-ক্ষত লোপন করা
দুর্ঘট হয়ে উঠবে;
আর, ঐ ক্ষতই হবে শাতনের নিবাস-কেন্দ্র।
-------------

No comments:

Post a Comment