কার্টুন নিয়ে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়ে ওঠে। বাদ প্রতিবাদের শিরোনামে ঊঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে তৈরী কার্টুন কান্ড। কিছুদিন আগে চিত্রপরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষকে নকল করে মস্করা করা নিয়ে কমেডি শোয়ের উপস্থাপক মীরের সঙ্গে বিরোধ হয়েছিল। ঋতুপর্ণ ঘোষকে নিয়ে মীরের মিমিক্রি ঋতুপর্ণকে আঘাত করেছিল, করেছিল আহত। প্রখ্যাত শিল্পী মকবুল ফিদা হুসেনের আঁকা স্বরস্বতী দেবীর নগ্নমূর্তী ও অন্যান্য দেবদেবীর আঁকা মূর্তী ঈশ্বরবিশ্বাসী লক্ষ লক্ষ ভক্ত মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করেছিল। প্রখ্যাত ও বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন তাঁর লেখনী শক্তির সাহায্যে ধর্মদ্রোহিতার মাধ্যমে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেন। ফলে বাংলাদেশের সাধারণ মুসলমান জনগণের মনে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছিল।
এরকম বহু প্রতিভাশালী মানুষ তাদের প্রতিভার জোরে উচ্চমার্গের শিল্পসত্তার অজুহাতে মানুষের সম্মান, ইজ্জৎ, বিশ্বাস, শ্রদ্ধা, ভক্তি ও অনুভূতিকে কে উপেক্ষা ক’রে, অস্বীকার ক’রে, বলাৎকার ক’রে সমাজকে সাবালকত্ব দান করে চলেছে। ঠিক তেমনি প্রভু যীশুকে নিয়ে এই কার্টুনও সমাজকে সাবালক করার সেই একই Tradition ব’য়ে নিয়ে চলেছে। এমন শিল্পীসত্তা না হ'লেই কি নয়!? এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেল The greatest phenomenon of the world Sri Sri Thakur Anukul Chandra-এর একটা বাণী,
"
পড়শীরা তোর নিপাত যাবে
তুই বেঁচে সুখ খাবি বুঝি?
যা ছুটে যা তাদের বাঁচা
তাঁরাই যে তোর বাঁচার পুঁজি "।
তুই বেঁচে সুখ খাবি বুঝি?
যা ছুটে যা তাদের বাঁচা
তাঁরাই যে তোর বাঁচার পুঁজি "।
মর্যাদা পুরুষকে নিয়ে এই ধরণের দৃষ্টিকোণ না থাকাই ভালো। এই ধরণের মজার দৃষ্টিকোণ সুস্থ সংস্কৃতিকে আঘাত করে। সভ্যতাকে হত্যা করে। নিম্ন রুচির প্রসার ঘটে। মজারও একটা সীমা থাকা উচিৎ। যার আগমনে মানুষ 'জীবন'কে খুঁজে পায় ঝাঁ চকচকে উন্নতির 'মৃত্যু' নগরে তাঁকে নিয়ে নাই বা মস্করা করলাম। যে কার্টুন মানুষকে আঘাত দেয়, আহত করে তা'তে মজা থাকলেও সেই মজার আড়ালে লুকিয়ে থাকে কাটুর্নিষ্টের রসবোধ, রুচিবোধের মান। আর প্রকারন্তরে তার বর্হিপ্রকাশ ঘটে শিল্পের নামে, সাহিত্যের নামে। যে দৃষ্টিকোণ শিল্পসৃষ্টির নামে, স্বাধীনতার অজুহাতে বৃত্তি প্রবৃত্তিকে উস্কানি দেয়, বিশৃঙ্খল রিপুর তাড়নায় লাগামছাড়া হতে রসদ যোগায়, মরণ শিল্প-সংস্কৃতির আমদানি করে তার চর্চা নাই বা করলাম বন্ধু। নিজের প্রতিভার সাথে নাই বা করলাম অবিচার। নিজের সুপ্ত সম্ভাবনাময় প্রতিভাকে নাই বা করলাম বিপথে চালিত। তমসার পার অচ্ছেদ্যবর্ণ ইষ্টপ্রতীকে আবির্ভূত মহান পুরুষকে জীবনে গ্রহণ করতে না পারি, মান্য করতে না পারি কিন্তু তাঁকে অবমাননা যেন না করি, অপমান যেন না করি। তাঁকে অবমাননা ক’রে, অপমান ক’রে নিজের অস্তিত্বের, নিজ সত্ত্বার অপমান যেন না করি। মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত ক'রে জনমনে যেন অসন্তোষ সৃষ্টি না করি। যে সৃষ্টি ধ্বংসকে আবাহন করে, নিম্ন রুচীর ইংগিত বহন করে, মলপূর্ণ আনন্দ দেয়, সত্তার গভীরে তীব্র, তীক্ষ্ণ খোঁচা দেয় ও শান্ত সত্তাকে অশান্ত ক’রে তোলে সেই সৃষ্টির নাই বা জন্ম হ'ল বন্ধু। সেই সৃষ্টির নীল বিষে কারও অন্তর ক্ষতবিক্ষত ক’রে নিজে নাই বা আনন্দ পেলাম। ক্ষতি কি? লাভ তো সাময়িক। আর ক্ষতি যে সুদূরপ্রসারী বন্ধু। ফল্গুনদীর মত বয়ে চলে এই ক্ষতির নদী নিজের অজান্তে প্রজন্মের পর প্রজন্মের চেতনার গভীরে আর তার বিষাক্ত প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে অবচেতনে সযতনে সমাজ সভ্যতা সৃষ্টির আঙিনায়। আর ঘুণাক্ষরেও তার টেরও পায় না এই বিষাক্ত বায়ুর জন্মদাতা। টেরও পায় না সেই বিষাক্ত বায়ুতে পড়শীর সঙ্গে সঙ্গে নিজের ও আত্মজ’র জীবন প্রদীপও নিভে আসতে থাকে ধীরে ধীরে অতি সন্তর্পনে চুপি চুপি। তাই সাধু সাবধান!!!!!!!!!
No comments:
Post a Comment