সিপিআইএমের রাজ্য সম্মেলনে দাবিঃ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে দলে ফেরানোর মধ্যে দিয়ে ভুল শুধরে নেওয়া হোক।
সোমনাথ
চট্টোপাধ্যায়কে দলে ফিরিয়ে নিলে কি হবে?
সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মান ও গুরুত্ব বাড়বে? দলের শক্তি বৃদ্ধি হবে? সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় দলে না থেকেও দলের
জন্য বা মতাদর্শের জন্য দল থেকে বহিষ্কার হবার পরও যা করেছেন তার থেকে আর
বেশী কি করবেন দলে ফিরে এলে? এই
বয়সে তাঁকে দলে ফিরে এসে প্রমাণ করতে
হবে তিনি কম্যুনিস্ট?
তিনি সাম্যবাদ ও সমাজতন্ত্রবাদ তত্ত্বে বিশ্বাসী? তিনি দলে ফিরে এলে দলের সাধারণ সদস্য ও
সমর্থকদের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা
বেড়ে যাবে? এখন
কি তাঁর গ্রহণযোগ্যতায় ভাঁটা পড়েছে?
সেদিন তিনি যে
সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সংসদীয় রীতির যুক্তি টেনে সংসদের তত্কালীন
অধিবেশন শেষের
আগে স্পীকার পদে ইস্তফা না দেওয়ার সেই সিদ্ধান্ত ছিল তার মতে ঠিক আর দলের
মাথায় বসে থাকা কতিপয় ব্যক্তির মতে সেই সিদ্ধান্ত ছিল বেঠিক। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়
কি সচেতন ভাবেই দল থেকে বহিষ্কার হবেন জেনেও দলের সিদ্ধান্তের(?) না-কি কতিপয় ব্যক্তির সিদ্ধান্তের
বিরুদ্ধে গিয়ে স্পীকার পদে
থেকে গিয়েছিলেন? দলের
মাথায় যারা বসে থাকেন তাঁরা সব বোঝেন,
সব জানেন, সব
দেখতে পারেন আর বাকীঁরা এমনকি সরকার বা প্রশাসন চালানোর দায়িত্বে যারা থাকেন
তারাও সব অজ্ঞ, মূর্খ
আজ্ঞাবাহী তল্পীবাহক তাহ'লে
বুঝতে হবে গণতন্ত্রের
নামে সেই মাথায় বসে থাকা পদাধিকারীই হ'য়ে
ওঠেন একনায়কতন্ত্রের পূজারী।
জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী হতে না দেওয়া কি ছিল দলীয় সিদ্ধান্ত না-কি
মাথার ওপর বসে থাকা কতিপয় ব্যক্তির সিদ্ধান্ত?
ভারতবর্ষের মত দেশে
একজন কম্যুনিস্টের দেশ শাসনের সুযোগ পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল
ঘটনা। সেই সুযোগ থেকে
দেশকে, দেশের
মানুষকে, দলের
লক্ষ লক্ষ সদস্য ও সমর্থককে বঞ্চিত করার
সিদ্ধান্ত যে বা যারা নিয়েছিলেন তাঁরা সঠিক ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন
বাকী সব হাঁদাভোঁদার
দল? সেইজন্য
যে জ্যোতি বসুর প্রশাসনিক দক্ষতার দৌলতে দল
ক্ষমতায় ছিল দীর্ঘদিন সেই জ্যোতি বসুও ছিলেন দেশের
প্রধানমন্ত্রীর সর্ব্বসম্মত
প্রস্তাবের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারণে অদক্ষ,
অযোগ্য ও
অজ্ঞ আর দলের শীর্ষস্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি প্রস্তাবের বিপক্ষে
সিদ্ধান্ত গ্রহণে
ছিলেন যোগ্য, দক্ষ
ও বিজ্ঞ!? সোমনাথবাবু
ও জ্যোতিবাবু সম্পর্কে দলের
শীর্ষস্তরের গৃহীত সিদ্ধান্ত দলের তৃণমূল স্তর থেকে উচ্চ
পর্যায়ের সমস্ত নেতৃত্ব, সদস্য ও সমর্থক অনুমোদন করেন? না-কি উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত
সম্পর্কে তাদের অনুমোদনের কোনও মূল্য নেই,
নেই কোনও অধিকার?
এই কতিপয়
পদাধিকারীর সমষ্টিগত সিদ্ধান্তের নামে একনায়কতন্ত্রের মনোভাবের চোরা স্রোত
ধীরে ধীরে চারিয়ে গিয়ে গোটা দলটাকে আজকের এই অবস্থায় এনে দাঁড় করিয়ে দিল
না-তো? এর
জন্য কে বা কারা, কে
বা কাদের সিদ্ধান্ত দায়ী? না-কি
আয়নায় মুখ
দেখতে শীর্ষস্তরের দলীয় নেতৃবৃন্দ ভয় পান?
যারা পরিবর্তিত পরিস্থিতি অনুযায়ী সময়কে মোকাবিলা করতে ভয় পান, চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পিছু হঠেন, সময়ানুযায়ী সঠিক সময়মতো সিদ্ধান্ত
গ্রহণে দ্বিধাগ্রস্ত, দলীয়
আদর্শকে ঘায়েল ক'রে
চুক্তি রফা করতে দল বাঁধেন এবং বাঁধার পরেও নানা রকমারী কথার ফুলঝুরি ছড়িয়ে
ক্ষমতার চেয়ারে বসতে ভয় পান তাঁরা কোনও দলকে সঠিক
পথে পরিচালনা করবেন, দলের
লক্ষ লক্ষ সদস্য, সমর্থককে
পথ দেখাবেন, দেশকে
নির্ভুল, নিখুঁত
নেতৃত্ব দেবেন আর আবার কেন্দ্র তো দূর অস্ত কোনও রাজ্যে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবেন এ কথাও যা, ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন
দেখাও একই।
তাই সোমনাথবাবুদের ফিরিয়ে আনার আগে ক্ষমতার ছাতার তলায় থেকে ক্ষমতাকে অস্ত্র ক'রে নিজেদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তকে নানারকম তাত্ত্বিক কথার আমেজে সাধারণ সদস্য ও সমর্থককে ডুবিয়ে রেখে দলীয় সিদ্ধান্তের আড়ালে চাপিয়ে দেওয়ার ঘৃণ্য প্রকারান্তরে একনায়কতন্ত্রের মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। ভবিষ্যতে আবার যদি কখনো এমন কোনও জটিল সমসার সম্মুখীন হয় দল, সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে তখন প্রকৃত গণতন্ত্রের পথে হটার সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সিদ্ধান্ত নিতে হবে তৃণমূল স্তর থেকে উচ্চ পর্যায়ের দলীয় সমস্ত সদস্যের গোপন ভোটের মাধ্যমে মতামত গ্রহণের। একনায়কতন্ত্রের বিষাক্ত মানসিকতা দেশ, কাল, মতবাদ ভেদে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই রকম!!!!!!!!!!!!!!!!
তাই সোমনাথবাবুদের ফিরিয়ে আনার আগে ক্ষমতার ছাতার তলায় থেকে ক্ষমতাকে অস্ত্র ক'রে নিজেদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তকে নানারকম তাত্ত্বিক কথার আমেজে সাধারণ সদস্য ও সমর্থককে ডুবিয়ে রেখে দলীয় সিদ্ধান্তের আড়ালে চাপিয়ে দেওয়ার ঘৃণ্য প্রকারান্তরে একনায়কতন্ত্রের মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। ভবিষ্যতে আবার যদি কখনো এমন কোনও জটিল সমসার সম্মুখীন হয় দল, সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে তখন প্রকৃত গণতন্ত্রের পথে হটার সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সিদ্ধান্ত নিতে হবে তৃণমূল স্তর থেকে উচ্চ পর্যায়ের দলীয় সমস্ত সদস্যের গোপন ভোটের মাধ্যমে মতামত গ্রহণের। একনায়কতন্ত্রের বিষাক্ত মানসিকতা দেশ, কাল, মতবাদ ভেদে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই রকম!!!!!!!!!!!!!!!!
No comments:
Post a Comment