Powered By Blogger

Saturday, September 7, 2024

প্রবন্ধঃ ঠাকুর ও আমরা সৎসঙ্গীরা।

প্রায়শঃই দেখি ফেসবুকে কেউ ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে কিছু পোস্ট করলেই রে রে ক'রে ডাকাত দলের মত তেড়ে আসে কিছু মানুষ রূপী অদ্ভুত জীব! আর এদের মধ্যে দীক্ষিত যেমন থাকে ঠিক তেমনি অদিক্ষিত মানুষজনও থাকে। তবে দীক্ষিত যারা থাকে তারা অবৈধ দীক্ষিত ও স্বঘোষিত দীক্ষিত! তাদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ও সংশ্রব নেই মূল কেন্দ্র সৎসঙ্গ দেওঘর-এর সঙ্গে। তারা নানারকম কুৎসা, নিন্দা, সমালোচনা, গালাগালি ইত্যদির পশরা সাজিয়ে বসে যায় ফেসবুকের আঙ্গিনায়! এদের মধ্যে বহু তথাকথিত দীক্ষিত ও অদিক্ষিত নারীও আছে! অবাক লাগে এই মাতৃসম নারী জাতি কি অবলীলায় অবহেলায় ঠাকুরকে ও ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে থাকে! ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবার নিয়ে কুৎসাকারী পুরুষ দীক্ষিত ও অদিক্ষিতদের নিয়ে আলোচনা করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে আমার নাই। তারা আলোচনার পাত্র নয়। এই ধরণের পুরুষদের পরিবারের অনেক মা, স্ত্রী ও বোন সদস্যদের দেখেছি এদের ঘৃণা করতে! পরিবারের মা, স্ত্রী ও বোনেরা এই সমস্ত পুরুষদের সরাসরি মুখে হয়তো সবাই কিছু বলে না কিন্তু তাদের অভিব্যক্তি প্রমাণ করে তারা এই ধরণের পাপ কাজকে সমর্থন করে না, ঘৃণা করে; তবে অনেকেই সামনা সামনি প্রতিবাদ করে কিন্তু ঐ সমস্ত অসংস্কৃত অসভ্য পুরুষদের তা গায়ে লাগে না! কিন্তু যখন দেখি এই ধরণের তথাকথিত দীক্ষিত ও অদিক্ষিত অসংস্কৃত জংলী পুরুষদের মত কিছু অবৈধ দীক্ষিত ও অদিক্ষিত নারীও আছে যারা কল্পনাতীত খিস্তি খেউর বাজি করে ঠাকুরকে নিয়ে ও ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তখন ভাবি কি দুর্ভাগ্য অভিশাপ নিয়েই না জন্মেছে এদের পরিবারের সন্তানেরা! এদেরও বলতে হবে মা! এরাও মা! এরাও মায়ের জাত! এদের সন্তানেরাও এদের পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র শব্দ মা নামে ডাকে! এইসমস্ত সন্তানের জন্য দুঃখ হয়! কি পরিবেশে এরা মানুষ হচ্ছে, বড় হচ্ছে! এক তো জন্মগত কি সংস্কার নিয়ে এসেছে তা তো শিশু জানে না উপরন্তু ভাগ্য ক'রে ছোট বয়স থেকে নরক তুল্য পরিবেশে বড় হচ্ছে! এইসমস্ত সন্তানেরা তাদের দুঃখময় ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য দায়ী নয়। দায়ী এদের রক্তমাংস দিয়ে তৈরি একতাল বোধ-বুদ্ধি -অনুভূতিহীন অশিক্ষিত অহং সর্বস্ব বাবা-মা! এরা ছোটবেলায় এইধরণের মায়ের সান্নিধ্যে মায়ের বিষাক্ত দুধ খেয়ে মায়ের ছোট মনের ছায়ায় বড় হয়েছে ও হচ্ছে তাই এদের ভবিষ্যৎ কি ধরণের হ'তে পারে তা নির্ধারিত! তাই রামপ্রসাদ বলেছিলেন, "জন্ম দিলেই হয় না মাতা, মা হওয়া নয়কো সহজ কথা।" তবে ব্যতিক্রম অবশ্যই থাকে! আর তারা যথার্থই ভাগ্যবান! তাদের জৈবি সংস্থিতি ও পূর্ব জন্মের সুসংস্কার তাদের ভাগ্যবান ক'রে তোলে! তারা ঐরকম অপদার্থ মা-বাবা পাওয়ার পরও স্বাস্থ্যকর বাঁচা-বাড়ার পরিবেশের সন্ধান পায় ও পেয়েছে! আর কথায় আছে, ভাগ্যবান-এর বোঝা ভগবান বয়!!!!

যাই হ'ক এবার আসল কথায় আসি।

ফেসবুকে যখন ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অশ্লীল নোংরা নরক সদৃশ ভাষা প্রয়োগে মন্তব্য পোষ্ট করা হয়, ঠাকুর বিরোধী পেজ খুলে সেই পেজে কানে গরম সীসা ঢেলে দেওয়ার মত ঠাকুরবাড়ির মায়েদের নিয়ে কুৎসিত শব্দ প্রয়োগে ফেসবুককে কালিমালিপ্ত করা হয় তখন ভাবি এদের কোন মা জন্ম দিয়েছে, কোন বাবার রেত ব'য়ে বেড়াচ্ছে!!!!! শয়তান কিলবিসও এদের মুখের ভাষায় লজ্জায় নীল হ'য়ে যাবে! আর ঠিক সেই সময় দেখা যায় এদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে কিছু দীক্ষিত গুরুভাইবোন! কখনো কখনো কিছু কিছু গুরুভাইবোনেদের মুখের ভাষাও লাগাম হারিয়ে ফেলে ভারসাম্য বজায় রাখতে না পেরে! সেইসমস্ত গুরুভাইবোনেদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চায়,

আপনারা এইসব কথার উত্তর দেন কেন? আপনাদের চুলকানি কবে বন্ধ হবে? আপনারা এখনো কার সঙ্গে কথা বলতে হয় আর কাকে ইগনোর করতে হয় এখনো পর্যন্ত তার কলাকৌশলের অ, আ, ক, খ শেখেন নি! এর থেকে ভালো হয় কোনও পোষ্ট করবেন না। কেন তৈরি না হ'য়ে ময়দানে নাবতে আসেন!? এরা কি দীক্ষিত? দীক্ষিত হ'লে আর স্টাডি করার মেটরিয়াল হ'লে এদের কথাবার্তা এমন হ'তো? কথাবার্তা আর ভাষা শুনে বুঝতে পারেন না কার কি স্ট্যান্ডার্ড!? বোঝেন না কার দৌড় কতদূর!? রেফারেন্স দিয়ে পোষ্ট করা সত্ত্বেও কোনও কোনও পোষ্টে যখন কেউ আবালের মত মন্তব্য করে, বালখিল্য কথা বলে তখন বোঝেন না এদের ইন্টেনশন কি!? বোঝেন না কি করা উচিত!? এটাও যদি শিখিয়ে দিতে হয় তাহ'লে ধ'রে নিতে হয় ঠাকুর ধরা বৃথা! বৃথা এ জনম! তখন মনে প্রশ্ন জাগে সত্যিই কি আমরা দীক্ষা নেওয়ার সময় ঠাকুরের কাছে যে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম তা পূরণ করেছি!? যে প্রেসক্রিপশন ঠাকুর আমাদের জন্য দিয়েছিলেন তা কি আমরা অনুসরণ করেছি ও করছি!? আমাদের জন্য যে হাজার হাজার বাণী দিয়েছেন তার একটা বাণীও কি পড়েছি, অনুধাবন করছি!? সত্যানুসরণ আমরা কি পড়ি!? তার একটা বাণীও কি চরিত্রে গেঁথেছি!? বিবেকের কাছে প্রশ্ন ক'রে দেখা যেতে পারে! আজ বাড়িতে বাড়িতে সৎসঙ্গ আয়োজন তার মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হ'য়ে কি বাড়ির শনি-সত্যনারায়ণ পূজার পর্যায়ে নেবে আসেনি!? যাক সে সব কথা।

যারা বলেন, এই ধরণের মানুষদের কি উত্তর দিতে হয়, কিভাবে এদের টাইট দিতে হয় সেটা আমাদের ভালোই জানা আছে তখন তাদের উদ্দেশ্যে শুধু একটা কথায় বলতে পারি, আপনাদের জানা যখন আছে তখন একটা কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি, তাহ'লে জেনে শুনে আপনারা বিষ পান করতে আগ্রহী!!!!!! আপনারা রবীন্দ্রনাথের বড় ভক্ত! "আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান, প্রাণেরও আশা ছেড়ে সঁপেছি এই প্রাণ; আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান"! এইরকম পরিস্থিতি যখন সামনে আসে তখন আমাদের কি করা উচিত এ সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুর, শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীদাদা ও শ্রীশ্রীবাবাইদাদার কি বলা আছে তা জেনে নিন! সৎসঙ্গের বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত! ডিসিপ্লিনড হওয়া উচিত! আর যদি নিজের ইচ্ছেমত চলি তাহ'লে আমার কিছু বলার নেই। আপনি/আপনারা যারা ঠাকুরের বলে যাওয়া বাণীগুলো পোষ্ট করছেন সেই মূল পোষ্টের দিকে নজর দিন আর এইভাবেই মানুষের কাছে ঠাকুরের কথা পৌঁছে দিন রেফারেন্স সহ কিন্তু দেখতে যাবেন না এর প্রতিক্রিয়ায় কে কি বললো। খারাপ, বিতর্কিত, অশ্লীল খোঁচামারা মন্তব্য যদি করে তাদের কোনও উত্তর দেবেন না, কোনও বিরোধিতায় যাবেন না। তাদের মন্তব্য ডিলিট ক'রে দিন, ডিরেইল্ড হওয়া থেকে নিজে বাঁচুন, অন্যদেরকেও বাঁচান। নতুবা একাগ্রতায় বাধা ও ভাটা পড়বে; ডিরেইল্ড হ'য়ে অন্ধকারের ঘুলঘুলাইয়ার ঘুলঘুলিতে হারিয়ে যাবেন! বিরুদ্ধবাজ শয়তানের সহচররা জিতে যাবে। ঠাকুরের মিশন জানুন, ঠাকুরের লক্ষ্য জানুন, ঠাকুরের উদ্দেশ্য জানুন, ঠাকুরের আন্দোলনের খসড়া জানুন, ঠাকুরের স্বপ্ন জানুন, ঠাকুরের আসার কারণ জানুন, ঠাকুরের ব'লে যাওয়া কথাগুলি জানুন, ঠাকুরের কান্না শুনুন আর তারপর বুক ঠুকে বলুন আমি ঠাকুরের দীক্ষিত! আমি ঠাকুরের শিষ্য, আমি ঠাকুরের অনুগামী, আমি ঠাকুরের মিশনের পতাকাবাহী সৎসঙ্গী!!!!!!! নতুবা কোটি কোটি শিষ্য হ 'য়েও লাভ নেই, ঠাকুরের আনন্দ নেই। যা করছেন সে গুড়ে বালি! সব বকোয়াস!

আমার বক্তব্য গ্রহণ ও বর্জন একান্তই আপনার/আপনাদের ব্যক্তিগত। জয়গুরু। 
( লেখা ৭ই সেপ্টেম্বর'২০১৯)

No comments:

Post a Comment