Powered By Blogger

Monday, September 30, 2024

আমার সোনামা আর সোনাবাবা।



আমার সোনামা আর সোনাবাবার মিষ্টি মধুর ছবি দ্যাখো।
এমন মধুর ভালোবাসার সম্পর্ক আর কোথায় গেলে পাবো!?
এখানেতেই আছে স্বর্গ এখানেতেই যাবো।
এখানেতেই জ্বলে আলো এখানেতেই শ্বাস
দয়াল প্রভু করে আমার এদের মাঝেই বাস
এ আমার গভীর বিশ্বাস।
প্রবি।


Monday, September 23, 2024

কয়েকটি প্রশ্নের উত্তরঃ

কয়েকজন অজানা ছদ্মনামধারী ও নাম-পরিচয় ও ছবিহীন মানুষ আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন! তাদের করা প্রশ্নগুলি পড়লাম। প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়ার আগে তাদের কয়েকটা প্রশ্ন করে নিয়ে তারপরে প্রশ্নগুলির উত্তর দেবো।

হে ছদ্মনামধারী! হে নাম-পরিচয় ও ছবিহীন জীব!

আপনি কে? আপনারা কারা? আপনাদের কারও অদ্ভুত নাম, কারও বা নাম আছে অথচ ছবি নেই এইরকম অদ্ভুত কিছু মানুষ আমার সঙ্গে কথা বলছেন!? আপনার/ আপনাদের পরিচয় কি!? বিনা পরিচিত রহস্যময় আনজান কারও সঙ্গে কোনও ভদ্রলোক কথা বলে!? না বলবে!? নাম লুকিয়ে কথা বলছেন কেন!? আপনি/আপনারা কে তা না আপনার/আপনাদের ছবি আছে, না নাম আছে; কোনও কিছু দিয়েই আপনাকে/আপনাদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে না! তা কিসের ভয়ে মুখ লুকিয়ে, নাম লুকিয়ে সত্য রক্ষার লড়াইয়ে নেবেছেন!? কিসের ভয়ে নাম উহ্য রেখে একটা অদ্ভুত হাস্যকর বিকৃত নাম ব্যবহার করে শ্রীশ্রীঠাকুরকে অবিকৃত রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন আমাকে!? আপনারা যারা মূল কেন্দ্র বিরোধী লড়াইয়ে নেবেছেন, আপনারা যারা শ্রীশ্রীবড়দাকে, শ্রীশ্রীবড়দা পরিবারকে কলঙ্কিত করার মরণপণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, আপনারা যারা মানুষ নামের কলঙ্ক একশ্রেণীর অদিক্ষিতদের মাঝে ঠাকুরকে কলঙ্কিত করার জন্য ঘৃণ্য, নোংরা, অশ্লীল শব্দাবলীর হাতিয়ার তুলে দিচ্ছেন, ঠাকুরকে ও ঠাকুরের জীবন দর্শনকে, ঠাকুরের মিশনকে বলাৎকার করার জন্য তাদের জন্য ফুলের বিছানা বিছিয়ে দিয়েছেন ও দিচ্ছেন আপনাদের পূর্বপুরুষদের হাত ধ'রে ৫০বছর ধ'রে ঠাকুরের দেহ রাখার কিছুদিন আগে থেকে ও দেহ রাখার অব্যবহৃত পরে পরেই আর ফেসবুককে করেছেন এর জন্য হাতিয়ার তা সেই আপনারা শ্রীশ্রীঠাকুরকে অবিকৃত রাখার লড়াইয়ে নামা বীরপুঙ্গবরা নারীপুরুষ সবাই মুখ লুকিয়ে রাখেন কেন!? কিসের ভয়ে এমন করেন!? কি সেই দুঃস্বপ্ন যার জন্য আপনারা সবাই এমন আচরণ করেন!? এটা কি আপনাদের পথপ্রদর্শকদের নির্দেশ, স্ট্র্যাটেজি!? এই স্ট্র্যাটেজি, এই নির্দেশ কার বা কাদের!? আপনাদের পথপ্রদর্শক শ্রদ্ধেয় দাদারা নাকি তাদের পরবর্তী শ্রদ্ধেয় বংশধরদের!? তাঁরা কি আদৌ জানেন আপনাদের এই কুকর্ম, কুকীর্তি!? তাঁদের চোখে কি পড়ে এই পাপ প্রবৃত্তি, ঘৃণ্য পদক্ষেপ!?

এর পরে আপনার/আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেবো। একটু অপেক্ষা করুন।
ক্রমশ:
( ২৩শে সেপ্টেম্বর'২০১৯)

Sunday, September 22, 2024

কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর:

প্রশ্ন ৭) জানা, লেখনী শক্তি ও সত্য!

আমাকে প্রশ্নকর্তারা লিখেছেন, "আমি কত জানি! প্রবল লেখনী শক্তি! অথচ প্রকৃত সত্য স্বীকার করতে পারছি না।"
এর উত্তরে তাদের জানাই যে, আপনি/আপনারা আমার জানা নিয়ে ব্যঙ্গ করতে পারেন, প্রবল লেখনী শক্তিকে হিংসা করতে পারেন কিন্তু প্রকৃত সত্যের কথা স্বীকার করার কথা বলেছেন সেই প্রশ্ন আপনাদেরও আমি করছি,
১) আপনি/আপনারা প্রকৃত সত্য জানেন?


২) কত সালে আপনার/ আপনাদের জন্ম হ'য়েছিল?


৩) জন্মাবার পর কত সালে কত বছর বয়সে আপনাদের দীক্ষা হয়েছিল?


৪) আপনারা ঠাকুরকে দেখেছেন?


৫) আপনারা শ্রীশ্রীবড়দাকে দেখেছেন?


৬) আপনারা শ্রীশ্রীকাজল দাদাকে দেখেছেন?


৭) শ্রীশ্রীকাজল দাদার সঙ্গে কথা বলেছেন কখনো?


৮) আপনি/আপনারা কি জানেন শ্রীশ্রীঠাকুর দেহ রাখার পর কে বা কারা শ্রীশ্রীবড়দার বিরুদ্ধে নানা মিথ্যে ও অপরিপক্ক অদূরদর্শী দৃষ্টি নিয়ে অভিযোগের লিফলেট ছেপে বিলি করেছিল?


৯) কি ছিল সেই লিফলেটে তা কি আপনি/আপনারা জানেন?


১০) আপনারা আদৌ কি জানেন শ্রীশ্রীবড়দার বিরুদ্ধে অন্যায় লিফলেট ছেপে বিলি হয়েছিল সৎসঙ্গ জগতে সৎসঙ্গীদের কাছে?


১১) সৎসঙ্গ জগতে এমন কাজ ঠাকুর কোনোদিন কল্পনাতেও ভেবেছিলেন?


১২) প্রকাশ্যে পরম প্রেমময়ের পতাকার তলায় এমন ঘৃণ্য কাজ, ঠাকুরের অপছন্দ যা সেই পদক্ষেপ গ্রহণের বিরুদ্ধে শ্রীশ্রীবড়দা কি কোনও ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া স্বরূপ কোনও পদক্ষেপ নিয়েছিলেন?
তারা কবিগুরুর কথা টেনে এনেছেন! লিখেছেন সত্য স্বীকার করার জন্য চাই সাহস ও অনাসক্তি।


আমার প্রশ্ন তাদের:
১) কবিগুরুর কথামত আপনার/আপনাদের আছে তো প্রকৃত সত্যকে জানার ও স্বীকার করার মত সাহস ও অনাসক্তি?
২) মিথ্যেকে সত্য ব'লে জেনে প্রকৃত সত্য থেকে এতদিন বঞ্চিত হননি তো?


৩) প্রকৃত সত্য জানার পর মাথা ঠিক রাখতে পারবেন তো? অন্যদের মত পাগল হ'য়ে যাবেন নাতো?
এর থেকে না জানাই ভালো। আপনারা যা জানেন তাই-ই নিয়েই থাকুন! সুখে থাকুন, ভালো থাকুন! অহেতুক চুলকে ঘা করবেন না! বরং নিজের বিবেকের আয়নায় দেখুন সাহস ও অনাসক্তি কোনটা আপনাদের আছে! নইলে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে আসতে পারে! আর যে বিশ্বাসের উপর দাঁড়িয়ে ঠাকুর আত্মজদের বিরুদ্ধে অজ্ঞানতার অন্ধকার থেকে অন্যের মুখে ঝাল খেয়ে বিরোধীতার পাপ কাজ করেছেন সেই বিশ্বাস ভেঙে চুরমার হ'য়ে গিয়ে মস্তিস্ক বিকৃতি ঘটতে পারে! সাধু সাবধান! ইচ্ছে করলেই ঠাকুর বাড়ি তা করতে পারতো! সেই শিক্ষা শ্রীশ্রীবড়দা দেননি, দেন না আচার্যদেব শ্রীশ্রীদাদা, কোটিকোটি সৎসঙ্গীদের প্রেরণাদাতা শ্রীশ্রীবাবাইদাদা, লক্ষ লক্ষ ইয়ং জেনারেশনের আইডল শ্রীশ্রীঅবিনদাদা ও অন্যান্য পূজনীয় দাদারা!
ক্রমশ:
এরপরে পরবর্তী প্রশ্ন।
( লেখা ২৩শে সেপ্টেম্বর'২০১৯)

কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর:

প্রশ্ন: ৮) সত্য স্বীকার ও গ্রহণ এবং তার পরিণতি!

এই অদ্ভুত বিকৃত মানসিকতাসম্পন্ন ছদ্মনামধারী, ছবিহীন ভিনগ্রহের জীবের মত প্রাণীরা আমাকে লিখেছেন, তাদের সত্যকে যদি স্বীকার করি, স্বীকার ক'রে নিয়ে ঠাকুরের নির্দেশ মত প্রার্থনা, ইষ্টভৃতি আর শুধুমাত্র ঠাকুরকে আচার্য হিসেবে বিবেচনা করি তাহ'লে ঠাকুর বাড়ির আশ্রয় ও ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হবো আর্থিক দৈন্যতার শিকার হবো যেমন নাকি ঘটেছে বহু মানুষের জীবনে!
তাদের কাছে আমার প্রশ্ন:

১) কোন সত্যের কথা বলছেন? সমুদ্রের বালুচরের উপর গড়ে ওঠা সত্য?
২) সমুদ্রের বালুচরের উপরে গড়ে ওঠা সত্যের উপর দাঁড়িয়ে কি পার্মানেন্টলি কিছু গড়া যায়? বাস্তব কি বলে? আপনারা গড়তে পেরেছেন না পারছেন? বালি দিয়ে তৈরি ঘর প্রকৃতির নিয়মে সমুদ্রের জলে গলে গিয়ে সমুদ্রে মিশে যাবে না তো? এ সমুদ্র মানুষের সমুদ্র কিন্তু! দেখেছেন মানুষের সমুদ্র!? চোখ মেলে দেখুন! ঠাকুরের কথামতো পদ্মার ভাঙনের মত ধীরে ধীরে গোটা পৃথিবী সৎসঙ্গের পেটের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে! দেখার চোখ আছে? মিথ্যাচারে অবসেসড হ'য়ে নেই তো!!!!!!
৩) কারা কারা ঠাকুর বাড়ির আশ্রয় ও ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হ'য়েছেন আর কারা আর্থিক দৈন্যতার শিকার হয়েছেন তাদের নামগুলো বলবেন?
৪) আজ শৈশব থেকে এই প্রৌঢ়ত্বের দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় ঠাকুরবাড়ির আশ্রয় ও ভালোবাসার যে রূপ দেখেছি সেই রূপ কি আপনারা দেখেছেন?
৫) কুয়োর ব্যাঙের মত কুয়োয় থেকে অন্তহীন আকাশের পরিমাপ করতে এসেছেন?
৬) কোন আর্থিক দৈন্যতার শিকার হবার কথা আমায় বলছেন?

৭) ঠাকুরবাড়ি আমার ও আমার সংসারের আর্থিক দায় নিয়েছেন এই বালখিল্য খবর আপনাদের কে দিল?

৮) কোন প্রার্থনা, ইষ্টভৃতি ও আচার্যের কথা বলছেন? আপনারা যে প্রার্থনার কথা বলেন সেই প্রার্থনা করতে কেউ বারণ করেছে নাকি আপনাদের? ইষ্টভৃতির মন্ত্র আপনাদের মনের অভিভূত অবস্থাকে ত্রাণ করতে পেরেছে কি ৫০বছরে? আচার্য কথার মানে জানেন? 'আচার্য'-এই বিষয়ের উপর বাছা বাছা বাণী যেগুলি আপনাদের বৃত্তি-প্রবৃত্তির সঙ্গে খাপ খায় সেই কয়েকটি ছাড়া বাকি বাণী পড়েছেন?

৯) আপনারা আপনাদের সত্যকে স্বীকার ক'রে নিয়ে ঠাকুরের নির্দেশ মত প্রার্থনা, ইষ্টভৃতি আর ঠাকুরকে শুধুমাত্র আচার্য বিবেচনা ক'রে কতদূর ঠাকুরের মিশনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছেন সেটা ভেবে দেখেছেন?

১০) ঠাকুরের কোন নির্দেশের কথা বলছেন? কোন নির্দেশ শুধু আপনাদের পথপ্রদর্শকরা জানেন, আপনারা জানেন আর ঠাকুরের আত্মজ পরমপ্রিয় আদরের বড়খোকা, বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের লক্ষ্য শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে পৌঁছবার সেতু, ঠাকুর পরবর্তী নিশ্চিন্ত নিরাপদ পরম আশ্রয়, ঠাকুর সৃষ্ট 'সৎসঙ্গ'-কে রক্ষা করার এক এবং একমাত্র কঠিন কঠোর বর্ম, ঠাকুরের জীবন্ত চলমান সত্যানুসরণ, প্রানের বড়ভাই ও এ যুগের হনুমান শ্রীশ্রীবড়দা জানতেন না, শ্রীশ্রীদাদা জানেন না, জানেন না শ্রীশ্রীবাবাইদাদা ও ঠাকুরবাড়ির সদস্যরা এমনকি মূল কেন্দ্রের কোটি কোটি প্রায় ৫ কোটি অনুগামী জানেন না!? শুধু আপনারা কুয়োর ব্যাঙের দল জানেন?
তারা শ্রদ্ধেয় বিবেকদা ও কাজলদার কথা লিখেছেন। লিখেছেন, শ্রদ্ধেয় বিবেকদা ও শ্রদ্ধেয় কাজলদা কেউই উনাদের আরাধ্য ও নন, আচার্যও নন!

আমার প্রশ্ন:
১) শ্রীশ্রীঠাকুর ছাড়া আরাধ্য আবার কেউ আছেন নাকি!? থাকলে সে কে!? বোকাবোকা আর মনগড়া বালখিল্য কথা বলেন কেন!? আর ব'লে নিজেকে নিজে মূর্খ আর ছোট প্রমাণ করেন কেন!?

২) 'আচার্য' শব্দে আপনাদের ছোট বড় সকলের এলার্জি আছে! কেন? আর এই এলার্জি ইনফিউরিরিটি কমপ্লেক্স থেকে। আপনাদের বিক্ষুব্ধদের, মূল কেন্দ্র ও শ্রীশ্রীবড়দা বিরোধীদের কে পরিচালনা করেন? কেউ একজন আছেন তো? নাকি যে যেমন ইচ্ছা চলেন? তাঁকে মেনে চলেন তো? তাঁকে কি বলেন? কি ব'লে সম্বোধন করেন? কিছু একটা তো বলেন? আচার্য না বলুন অধ্যক্ষ, মহারাজ বা প্রধান কিম্বা ইংরেজিতে প্রিন্সিপ্যাল, প্রেসিডেন্ট বা চেয়ারম্যান একটা কিছু তো বলেন, নাকি? তা নিয়ে মূল কেন্দ্র বা মুলকেন্দ্রের বৈধ দীক্ষিত সৎসঙ্গীরা কোনোদিন কিছু বলেছে? বলেনি তো? তা আপনাদের এত গায়ের জ্বালা কেন? আপনারাও শ্রদ্ধেয় কাজলদাদাকে আচার্য বলুন না, কে বারণ করেছে? কেউ করেছে? করেনি তো? তা হ'লে এত গাত্রদাহ কেন!? যিনি আপনাদের প্রধান তিনি কি আপনাদের সকলকে ৫০বছর ধ'রে আচরণ ক'রে ক'রে এইসব আচরণ শিখিয়েছেন নাকি!? তাঁকে বা তাঁদের এইভাবে সমাজের বুকে নেকেড করছেন কেন? তাঁদের প্রতি এই আপনাদের ভালবাসা? এই আপনাদের শ্রদ্ধা-সম্মান জ্ঞাপনের নমুনা, বোধ!?

৩) 'আচার্য' শব্দ অর্থের ভিন্নতা, ব্যাপকতা ও বিশালতা কতদূর বিস্তৃত, কত গভীরে নিহিত তা জানেন কি? জেনে নিন আগে তারপরে আসবেন আলোচনার টেবিলে।

৪) আপনার আমার ইচ্ছেমত যাকেতাকে সংঘ প্রধান করা যায় নাকি!? শাস্ত্রমতে ঠাকুর পরবর্তী ঠাকুর সৃষ্ট 'সৎসঙ্গ' পরিচালনার দায়িত্ব কার ওপর বর্তায়, কার অধিকার তা জানেন কি? না জানলে পড়াশুনা করুন কিংবা আপনাদের প্রধানদের কাছ থেকে জেনে নিন।
উনারা লিখেছেন কোনও উদ্দেশ্য সাধনের জন্য উনারা আমাকে প্রশ্ন করেননি অথচ ব্যঙ্গাত্মক কটু প্রশ্নের পর প্রশ্ন ক'রে ক'রে বিব্রত করার, উত্যক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে গ্যাছেন! তা তাদের কোনও উদ্দেশ্য সাধন করার ইচ্ছা থাকুক আর না থাকুক তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না আর এইভাবে কাউকে ডিরেইল্ড করা যায় না, নিজেরাই ডিরেইল্ড হ'য়ে অবশেষে দুর্দশার গভীর খাদে নিমজ্জিত হয়, হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে সমূলে হবে।
ক্রমশ:
পরবর্তী প্রশ্ন এরপরে। 
(লেখা ২৩শে সেপ্টেম্বর'২০১৯)

কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর।

প্রশ্ন ৯) স্তাবক বৃত্তি!

প্রশ্নকর্তারা আমাকে আমার স্তাবক বৃত্তি নিয়ে কথা তুলেছেন আর লিখেছেন আমি ঠাকুর বাড়ির স্তাবকতা করছি! আর কারা বলছেন!? যারা বলছেন তারা নাকি ঠাকুরের দীক্ষিত ও অবিকৃত পথের অনুসারী! তাদের নাকি কারও কোনোরকম স্তাবকবৃত্তির ইচ্ছে নেই তারা তাদের পথপ্রদর্শক শ্রদ্ধেয় কাজলদা, শ্রদ্ধেয় বিবেকদা ও তাঁদের শ্রদ্ধেয় দাদাদের পক্ষে কোনও স্তাবক বৃত্তি পোষণ করেন না ও পছন্দ করেন না। তাদের কারও স্তাবক বৃত্তি আছে কি নেই সেই প্রসঙ্গে তার সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে যিনি বা যারা আমার সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসবেন তাদের সঙ্গে কিন্তু যাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা হচ্ছে না, আলোচনা করিনি, করছি না বা করতে চাই না তাদের সঙ্গে স্তাবক বৃত্তি নিয়ে আলোচনায় আমি রাজি নই।
আমার প্রশ্নকর্তাদের কাছে আমি বলতে চাই, অন্যের হ'য়ে স্তাবক বৃত্তি, অন্যের কুৎসা, সমালোচনা আপনাদের থাকতে পারে আমার সেই রুচি নেই। অন্যের কাজের প্রশংসা করতে পারি, আলোচনা করতে পারি কিন্তু স্তাবক বৃত্তি পালন-পোষণ নয়; অবশ্য প্রশংসা আর স্তাবক বৃত্তিকে আপনি ও আপনারা এক চোখে দেখেন কারণ প্রশংসা আপনাদের কালচারে ও রক্তে নেই, থাকলে অন্ততঃ ঠাকুর আত্মজদের বিরুদ্ধে কুৎসার দামামা বাজাতেন না! মুখ, জিভ সহ সমস্ত শরীর আপনাদের পাপে নীল হ'য়ে গ্যাছে আর সেই ভয়ে মুখ দেখাতে পারেন না, নাম প্রকাশে আপনারা ভীত, সন্ত্রস্ত!

আর স্তাবক বৃত্তি?
তা আমার একটা ছোট্ট প্রশ্ন, আপনারা যারা শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের বিরোধিতা করছেন ৫০বছর ধ'রে কুৎসা, নিন্দা, গালাগালি, অপমান, অশ্রদ্ধা, সমালোচনাকে হাতিয়ার ক'রে আর যাদের হ'য়ে করছেন সেটা তাদের হ'য়ে স্তাবকতা নয়!?

আপনারা আমার লেখনীর উপর কটাক্ষ করেছেন। লিখেছেন, আমার লেখনী শক্তি দিয়ে আপনাদের প্রভাবিত করতে পারবো না। আমি বলি, এই একটা কথা একদম ঠিক বলেছেন, খাঁটি বলেছেন! কারণ যাদের স্বয়ং ঠাকুর পারেননি তাঁর লেখনী শক্তি দিয়ে প্রভাবিত করতে, তাঁর অসীম অনন্ত মনোমুগ্ধকর প্রেম-ভালোবাসা দিয়ে, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি দিয়ে তাদের প্রভাবিত করতে যে আমি পারবো না এই কথাটা সমস্ত সৎসঙ্গী সমাজ এককথায় মেনে নেবে। কারণ রামায়ণ, মহাভারতের যুগেও স্বয়ং রাম, কৃষ্ণও পারেননি রাবণ, রাবণের বংশধর, অনুগামী এবং কৌরব ও কৌরবপক্ষদের শেষদিন পর্যন্ত বোঝাতে, যেমন পারেননি আপনাদের পূর্বসূরিদের এই ঘোর কলিযুগে স্বয়ং শ্রীশ্রীঠাকুর! যে পাপের বোঝা ব'য়ে চলেছেন আপনারা উত্তরসূরীরা!!!!!

আপনারা প্রশ্নকর্তারা এও লিখেছেন আপনারাও লেখনী শক্তিতে ও কথনে প্রবল দক্ষ! এই কথাটাও ঠিক লিখেছেন। তার প্রমাণ গোটা বাঙালি সমাজ ও যারা বাংলা পড়তে ও বুঝতে পারে সেই সমাজ পাচ্ছে প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে ফেসবুক নামক মিডিয়ার মধ্যে দিয়ে; যে মহান সুযোগ পায়নি আপনাদের পূর্বসূরীরা। কিন্তু ভুলে যাবেন না আপনাদের থেকেও প্রবল পরাক্রমশালী লেখক ও বক্তা ছিলেন সেই ঠাকুরের সময়ে! জানেন তো তাদের নাম? ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ আছে সেই বিখ্যাতদের নাম! আপনারা জানেন তবুও নামগুলো বলি, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হ'লেন স্বনামধন্য কেষ্ট দাস ও শনিবারের চিঠির শক্তিশালী কলমচি সজনীকান্ত দাস! তাঁরা কি পেরেছিলেন তাঁদের প্রবল লেখনী শক্তি ও কথনে ঠাকুরের জয়রথ ঠেকাতে!? তাঁদের পিছনে যে প্রবলপরাক্রম শক্তি মদদ দিয়েছিল তারা কি পেরেছিল শ্রীশ্রীঠাকুরকে কলঙ্কিত করতে? সেসময়ের অনেক অনেক বড় বড় জ্ঞানী পন্ডিত বিদগ্ধ ব্যক্তিত্ব ছিলেন যারা সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন ঠাকুর আত্মজ, ঠাকুরের প্রথম সন্তান আদরের বড়খোকা শ্রীশ্রীবড়দাকে !!!! কি হয়েছিল তার পরিণতি? আপনারা ব্যক্তিস্বার্থে, ক্ষমতার দখল নিতে, কায়েমী স্বার্থ বজায় রাখতে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের নিজের হাতে তৈরি 'সৎসঙ্গ'-এর পাল্টা সংগঠন তৈরি ক'রে যে মরণ পথে যাত্রা শুরু করেছিলেন আজ থেকে ৫০ বছর আগে আপনারা ঠাকুরের সেই পরমভক্তকুল ও তাদের উত্তরসূরীরা শ্রীশ্রীবড়দাকে শ্রীশ্রীঠাকুরের মত কলঙ্কিত ক'রে তাঁর বিজয়রথকে থামাতে পারেন কিনা সেই চেষ্টা ক'রে দেখতে পারেন।
ক্রমশঃ।
পরবর্তী প্রশ্ন এর পরে।
( লেখা ২৩শে সেপ্টেম্বর'২০১৯)

কয়েকটি প্রশ্নের উত্তরঃ

প্রশ্ন: ১০) পেশীশক্তি ও যুক্তিবাদ।

এই প্রশ্নকর্তারা আমাদের পেশীশক্তির কথা তুলেছেন। কেন মুখ লুকিয়ে ছদ্মনামে কটু প্রশ্নের পর কটু প্রশ্নের বাণ ছুঁড়ছেন আর ঠাকুরবাড়ির বিরুদ্ধে গালাগালির বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন তা জানতে চাইলে এদের মধ্যে একজন লিখেছেন, আমাদের নাকি নেটওয়ার্ক খুব স্ট্রং আর তাই কোন গুরুভাইদের দ্বারা নাকি নিগৃহিত হ'তে হ'তে বেঁচে গ্যাছেন! তাই আত্মরক্ষার্থে ও সত্য প্রচারের স্বার্থে তারা নাকি ফেসবুকে নিজেদের ছবি পোস্ট করেন না, পরিচয় গোপন রাখেন! কি অদ্ভুত! পরম প্রেমময়ের প্রেমের দরবারে এরা কতটা নীচে নাবতে পারেন ও চরম হতাশাগ্রস্থ তার প্রমান এই পেশীশক্তির কথা উচ্চারণ!
প্রশ্ন জাগে,
* ঠাকুরের দরবারে পেশীশক্তি!?
* কেন আপনারা নিগৃহীত হয়েছিলেন গুরুভাইদের হাতে?
* কি কারণ? এমনি এমনি অকারণে নিগৃহীত!?
* এক হাতে তালি বেজেছিল?
* আপনার/আপনাদের কোনও দোষ ছিল না?
* দীর্ঘ দিন ধ'রে আপনাদের ঠাকুরবাড়ির বিরুদ্ধে ঘৃণ্য বিরোধিতা কি প্রকাশ্য রাস্তায় নাবিয়ে এনেছিলেন যার পরিণতিতে পেশীশক্তি প্রসঙ্গ উত্থাপন?
* পেশীশক্তি প্রসঙ্গ উত্থাপন আজ আপনাদের ঠাকুরবাড়ির বিরোধীতার নতুন নোংরা হাতিয়ার?
* কেষ্ট দাস ও সজনীকান্ত মহোদয়দের কোন পেশীশক্তি কাবু করেছিল!?
* পেশীশক্তিতে তারা শেষ হয়েছিল নাকি কর্মফলে!?
* কর্মফলে বিশ্বাস হারিয়েছেন?
বিশ্বাস হারাবেন না। আপনাদের জন্যও কর্মফল অপেক্ষা করছে।
এরপরে আপনি বলবেন আমাদের কর্মফলের কথা। হ্যাঁ! আমরাও কর্মফলের অপেক্ষায় আছি।
প্রশ্নকর্তারা যুক্তিবাদের চর্চা করেন লিখেছেন। তারা আমাকে লিখেছেন তারা যুক্তির উপর দাঁড়িয়ে আলোচনা করেন ও রেফারেন্স সহ যুক্তি প্রয়োগ করেন!
প্রশ্নকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন:
* ক্ষমতা দখল, মিথ্যের গালাগালি কবে থেকে যুক্তিবাদের ভিত্তিভূমি হ'লো!?
মনে পড়ে গেলো সেই কথা, "একি কথা শুনি আজ মন্থরার মুখে!?"
ঠাকুরের দেহ রাখার সঙ্গে সঙ্গে ঠাকুরের পরমপ্রিয় আদরের বড়খোকা সৎসঙ্গীদের চোখের মণি এ যুগের হনুমান শ্রীশ্রীবড়দার নেতৃত্বে যখন 'সৎসঙ্গ'-এর জয়যাত্রা শুরু হ'লো তখন আপনাদের পূর্বসূরী ক্ষমতালোভীরা ক্ষমতা দখলের লোভে, 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠানকে কুক্ষিগত করার বাসনায়, শ্রীশ্রীবড়দাকে নিজেদের ইচ্ছেমত পিছন থেকে চালাবার দুঃসাহসিক প্রচেষ্টায় নিজেদের কায়েমী স্বার্থকে বজায় রাখার জন্য জোট বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়লেন সাধারণ সৎসঙ্গীদের বিভ্রান্ত করার জন্য আপনাদের এই বস্তাপচা উপরি চকচকে যুক্তিবাদকে সামনে রেখে!


প্রশ্নকর্তারা আমাকে লিখেছেন, "এমন বহু গুরুভ্রাতা আছেন যাদের জীবনযাপন, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব তথা আলোচনায় ঠাকুর পরিবারের বহু ব্যক্তিত্বকে হার মানায়"।


তাদের উদ্দেশ্যে বলি,
হে প্রশ্নকর্তা! যে আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বদের কথা বলছেন, যাদের বড় করতে গিয়ে ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের ছোট করছেন ভুলে যাবেন না আপনাদের সেই আজকের আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বদের চেয়েও জাঁকজমকপূর্ণ অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সেদিনও ছিল! ভুলে যাবেন না সেদিন যে সমস্ত শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব ছিলেন তাঁদের তুলনায় আজকে আপনাদের যারা আছেন যাদের কথা গর্বভরে বলছেন তাঁরা নগন্য। সেদিন শ্রীশ্রীবড়দাকে যারা চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে অনেক ঠাকুরের লীলাসঙ্গী তো ছিলই এমনকি যতি ঋত্বিকও ছিলেন! এসব তথ্য জেনে নেবেন আপনাদের পথ প্রদর্শকদের কাছ থেকে। কোথা থেকে জানবেন!? কেউ আছে নাকি আপনাদের আশেপাশে!? আছে তো "কাল কা যোগী, ভাতকে বলে অন্ন" প্রবাদের মত মানুষ যারা দুঃসাহস দেখায়, অস্পর্ধা রাখে ঠাকুর আত্মজদের বিরুদ্ধে শুধু ফেসবুকে কুৎসা, নিন্দা, গালাগালি, অশ্লীল শব্দে সমালোচনা করার!
আমার সবিনয় প্রশ্ন আপনাদের,


কারা সেই অসাধারণ ব্যক্তিত্ব যারা ঠাকুর পরিবারের ব্যক্তিত্বদেরও হার মানায়!? নামগুলি বলবেন!? তাঁরা নিজেরা কি আপনাকে এই ঔদ্ধত্বপূর্ণ অহংকারী কথা বলেছেন না বলতে বলেছেন!? ঠাকুরের রক্ত বাহিত ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের থেকেও নিজেদের স্বঘোষিত আচার্য ও উচ্চমার্গীয় ব'লে যদি কোনও কেউ দাবী করেন বা করতেন কিংবা আপনার/আপনাদের মত কোনও গুরুভ্রাতা(?) তাদের মনে করেন বা করতেন অথচ তাদের সেই আসনে বসাননি তাহ'লে এটা জেনে রাখুন যদি তেমন কেউ বসতেন প্রধান হ'য়ে তাহ'লে এতদিন যাও বা টিমটিম ক'রে টিকেছিল তার সলিল সমাধি ঘটতো সেই শুরুতেই, মুখ থুবড়ে হাঁটু ভেঙে 'দ' হ'য়ে পরে থাকতো ঘোর অন্ধকার শ্মশানে। ভাগ্যিস শ্রদ্ধেয় পূজ্যপাদ বিবেকদাদা ও কাজলদাদা ছিলেন মাথার ওপরে!!!!!! আর এখন আপনারা দায়িত্ব নিয়ে তাঁদেরও সলিল সমাধিতে পাঠাবার জন্য কোমর বেঁধে উঠে পড়ে লেগেছেন শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীঅশোকদাদা, শ্রীশ্রীবাবাইদাদা ও অবিনদাদা এবং এমনকি ঠাকুর পরিবারের মায়েদেরও বিরুদ্ধে নানারকমের বিভিন্ন ধরণের কুৎসিত গালাগালি, কুৎসা, নিন্দার অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে!!!!!!!!
কথায় আছে, মহাজ্ঞানী মহাজন যে পথে করে গমন, ঠিক সেরকম হে আমার প্রশ্নকর্তা! আপনারাও আপনাদের মহাজ্ঞানী মহান জনদের পথ অনুসরণ ক'রে চলুন।
ক্রমশ:। ( লেখা ২৩শে সেপ্টেম্বর'২০১৯)

প্রবন্ধঃ শ্রীশ্রীঠাকুরের ১৩৭ তম জন্মদিবস উৎযাপন ও কেক কাটা প্রসঙ্গ।

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের ১৩৭তম জন্মদিন পালনে সম্প্রতি কোচবিহার সৎসঙ্গ মন্দিরে কেক কাটা নিয়ে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন বেশ কিছু ইষ্টপ্রাণ সৎসঙ্গী। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইষ্টপ্রাণ সৎসঙ্গীদের অকারণ এই কেক কাটা নিয়ে বিতর্ক সৎসঙ্গীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। কেক কাটা বিষয়টাকে কিছু ইষ্টপ্রাণ সৎসঙ্গী ঠাকুর পরিবারের রীতি বিরুদ্ধ অনুষ্ঠান ব'লে চিহ্নিত করেছেন। ঠাকুর পরিবারের অভ্যন্তরে এইসব কেক কাটার রীতি নেই। অথচ কোন রীতিটা ঠাকুর পরিবারে আছে আর কোন রীতিটা নেই আর, ঠাকুর পরিবারের অভ্যন্তরে কোন রীতি পালন হচ্ছে আর কোন রীতি পালন হচ্ছে না সেটা তুলে ধরছেন না ইষ্টপ্রাণ সৎসঙ্গী সমালোচকরা।।

কেউ কেউ বলছেন, পাশ্চাত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করার জন্য এই কেক কাটা অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছে। এই পাশ্চাত্য সংস্কৃতি শ্রীশ্রীঠাকুর যে আর্য্য কৃষ্টি ও সংস্কৃতির ধারক বাহক তার একেবারে বিপরীত সংস্কৃতি। এই সব পাশ্চাত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করার জন্য শ্রীশ্রীঠাকুর বিধান দিয়ে যান নি তাই এই সংস্কৃতি বর্জনীয়। এভাবেই বিকৃতি জন্ম নেয়। ভাবের ঘোরে সৎসঙ্গে আমরা এমন কিছু কাজ করি যা অনেক সময়ই বিতর্কিত বিষয় হয়ে দাঁড়ায়!!! তাই ইষ্টপ্রাণ সৎসঙ্গীদের আবেদন, সৎসঙ্গে সৎসঙ্গী প্রজ্ঞাবান মানুষ নিশ্চয়ই আছে যারা এই কাজকে কোনোভাবেই ঠাকুরের ভাবধারার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ মনে করবেন না।

এই নিয়ে বিতর্ক এমন জায়গায় চলে যায় যে সৎসঙ্গীরা একে অপরকে জ্ঞান দেবেন না, আমরা সপরিবারে সৎসঙ্গী, কেউ বা নিজেকে স্বস্ত্যয়নী ব্রতধারী সৎসঙ্গী উল্লেখ করে বিতর্ককে আরো উসকে দিচ্ছেন। কেউ বা অতি উৎসাহে এই কেক কাটার তীব্র বিরোধীতা ক'রে নিজেকে আচার্যদেবের খুবই ঘনিষ্ঠ উল্লেখ করে বলছেন, যান আমার নাম নিয়ে আচার্যদেবকে বলুন। আবার পরমুহুর্তে বলছেন, আচার্যদেব এই কেক কাটা সংস্কৃতি অনুমোদন করলে আমি মানবো এই কেক কাটা অনুষ্ঠান।
কেক কাটা বিষয়ে দীর্ঘ কমেন্টে বিরোধীতার ঝড় তুলে পরমূহুর্তে আবার আমি স্বল্প জ্ঞানী, আমি ঋত্ত্বিক নই বলে কমেন্ট করছে অনেকেই। আচ্ছা, ঋত্বিক হলেই সব জানবেন? কেউ কেউ শ্রীশ্রীঠাকুরের নির্দেশিকা সম্পর্কে বলছেন কিন্তু সেই নির্দেশিকা কি তা তুলে ধরছেন না। নির্দেশিকাটা তুলে ধ'রে এই কেক কাটার সঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুরের নির্দেশিকাটা কি তুলনামূলক আলোচনা করলে সমস্ত পাঠকের কাছে বিষয়টা ক্লিয়ার হয়। বিতর্কের সুষ্ঠ অবসান ঘটে। নতুবা শুধুই বকোয়াস ছাড়া আর কিছুই নয়। কিন্তু সেই রাস্তায় কেউ হাঁটছেন না, হাঁটবেন না, হাঁটতে চান না। শুধু নোতুন কিছু দেখলেই তার পিছনে আপাদমস্তক যতই লজিক থাকুক তা' না ভেবেই, বিশ্লেষণ না করেই, বিষয়ের গভীরতা অনুধাবন না করেই উপলব্ধিহীন ভিত্তিহীন অর্থহীন মন্তব্যের ঝড় তুলে, কখনও ঠাকুরের বলা কথাকে প্রয়োগ ক'রে জোর ক'রে যৌক্তিক ক'রে তুলে ধ'রে সোশ্যাল মিডিয়ায় নোতুন বিষয়কে ঘেঁটে দেওয়ার একটা অসুস্থ প্রবণতা তীব্র হ'য়ে দেখা দিয়েছে আমাদের সৎসঙ্গীদের। প্রচলিত যে কোনও বিষয় থেকে একটু সরে এসে সময়োচিত আধুনিক নোতুন কিছু দেখলেই শুরু হ'য়ে যাচ্ছে তীব্র বিরোধী মানসিকতা সম্পন্ন ইষ্টপ্রাণতার বহির্প্রকাশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেসবুকে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র আর্য্য কৃষ্টি ও সংস্কৃতির ধারক বাহক তাই এইসমস্ত স্রোতের বিপরীত নোতুন কিছু চলবে না, গ্রহণ যোগ্য নয়।

এই প্রবণতা দেখা দিয়েছিল শ্রীশ্রীঠাকুরের দেহ রাখার সঙ্গে সঙ্গেই শ্রীশ্রীবড়দা বিরোধীদের, যা আজও বহমান। সেই নোতুন কিছুর বিরোধীতার ট্রাডিশান এখন দেখা দিয়েছে মূল সৎসঙ্গীদের মধ্যে।
শ্রীশ্রীঠাকুরের আর্য্যকৃষ্টি, আর্য সংস্কৃতি এইসব কথা শুধু মুখে নামমাত্র ব'লে ফেসবুকে অকারণ বিতর্কের ঝড় তুলে বিরোধীতা সৃষ্টি না করে আর্য কৃষ্টি ও আর্য্য সংস্কৃতির কি পরিচয় তা' তুলে ধরা যেতে পারে। আর্য কৃষ্টি ও সংস্কৃতির রূপ কি তা' বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে তুলনামূলক আলোচনা করা যেতে পারে, তা'তে সৎসঙ্গীরা উপকৃত হবে। পাশ্চ্যত্য সংস্কৃতি মানেই তা খারাপ ও পরিত্যাজ্য? জন্মদিনে কেক কাটার রীতিটা কেন সমর্থন যোগ্য নয় তার একটা যুক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ ক'রে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট করলে মানুষের বুঝতে সুবিধা হয়। কেক কাটার রীতি পাশ্চাত্য রীতি তাই সেটা খারাপ এটাই একমাত্র স্ট্রং লজিক? তাই তা' পালন করা যাসবে না? এছাড়া পালন না করার স্বপক্ষে কোনও লজিক থাকবে না? আর বহু পাশ্চাত্য রীতি তো আমাদের কালচারে মিশে গেছে তার সবটাই খারাপ? আমাদের বহু রীতিও তো পাশাত্য সংস্কৃতির অন্তভুক্ত হয়েছে তাহ'লে সেগুলিও তারা বলবে প্রাচ্য সংস্কৃতি তাই তা' গ্রহণ করা যাবে না, খারাপ। এতটাই সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গী? তাও আবার সৎসঙ্গীদের? দেওঘরে কোনও দিনই হয়নি তাই আর কোথাও হ'তে পারবে না? ভালো জিনিস প্রথমে দেওঘরে যদি না হয় তাহ'লে কোথাও করা যাবে না? ভালো জিনিস কেউ কোথাও করলে তা দেওঘরে যদি প্রথমে না হয় তাহ'লে তা দেওঘর অনুমোদন করবে না? এমন কোনও বিধি নিষেধ আছে ঠাকুরবাড়ি থেকে? তাহ'লে কেন শুধু শুধু কথায় কথায় 'ঠাকুরবাড়িতে হয়েছে?' আচার্যদেব অনুমোদন করেছে? এই কথাগুলি আসে? এর মধ্যেও কেন জোর ক'রে অকারণ আচার্য বিরোধীতার গন্ধ খুঁজে বের করা হয়?

বিতর্কিত বিষয় ঠাকুরকে নিয়ে সৎসঙ্গীরাই শুরু করেছে ঠাকুরের দেহ রূপে থাকার সময় থেকে। এখন মূল ধারার সৎসঙ্গীদের মধ্যে যে কোনও নোতুন বিষয় নিয়ে সৎসঙ্গীরা বিতর্ক তুলে দেয়, বিতর্ক তুলে দিয়ে জল ঘোলা ক'রে দিয়ে পরে আচার্যদেবের নির্দেশ মেনে নেবার কথা তোলে। তা' এতটাই যখন আমরা আচার্যপ্রাণ তখন আচার্যদেবের নির্দেশ মেনে আমরা মন্দিরে কেন্দ্রে ঠিক ঠিক চলি তো? আচার্যদেবের নির্দেশ মেনে আমরা ঠাকুরকে মুখ্য ক'রে জীবন গড়ে তুলেছি ও তুলছি তো? শ্রীশ্রীআচার্যদেব আর কোনটা কোনটা অনুমোদন করবেন? আজ পর্যন্ত যতগুলি অনুমোদন করেছেন সেগুলি ঠিক ঠিক পালন হয়েছে ও হচ্ছে সমস্ত মন্দির আর কেন্দ্রগুলিতে কিংবা নিজ নিজ ব্যক্তিগত জীবনে?
এই কেক কাটা নিয়ে কেউ কেউ বলছেন, এটা ঠিক, কেক দিয়ে কিন্ত ভোগ দেওয়া হয়নি। কেক কেটে ভক্তদের বিতরণ করা হয়েছে মাত্র।

কেক ভোগ হিসেবে দিলে কি ক্ষতি হ'তো আর ভোগ হিসেবে দিয়েই বা কি লাভ হয়েছে? মানুষ ভালোবেসে তার ভালো লাগার জিনিস ঠাকুরকে দেয়। কেকের মধ্যে এমন কি আছে যা ঠাকুরকে ভোগ হিসেবে দেওয়া যাবে না? যারা এই কেক কাটা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছেন ফেসবুকে, তারা কেক অমৃত নাকি কেক বিষ, এগুলি নিয়ে বিস্তৃত যুক্তিসংগত আলোচনা থাকলে সৎসঙ্গীদের উপকার হ'তো। ঠাকুর কি সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে কুলুঙ্গিতে ফুলচন্দন ধূপধুনো দিয়ে নানা দেবদেবীর ভিড়ে শুধু ফটো ক'রে তুলে রাখার জন্য? ঠাকুরকে কি নিজের জীবন থেকে দূরে দূরে সরিয়ে রেখে ভয়ে ভয়ে নিরাপদে শুধু নিজের স্বার্থে, সন্তান, পরিবার, পরিজনের স্বার্থে পূজা করার জন্য? ঠাকুর কি অমূর্ত ভগবান, আকাশের ভগবান, বোবা মাটির ভগবান ছিলেন? তাঁর কেক খেতে নেই? নাকি শাস্ত্রে নিষেধ আছে? তা' কেন ঠাকুরের কেক খেতে নেই, কেন কেক খাওয়া নিষেধ, কেন অশাস্ত্রীয়, কেন পাপ তা লজিকের ওপর দাঁড়িয়ে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে না? কেন ফেসবুক জুড়ে শুধু ভিত্তিহীন, অর্থহীন, ফালতু সস্তা অজ্ঞানতায় ভরা বালখিল্য ভক্তি ও কথার স্রোতে ভাসা? তাহলে ঠাকুর কি খাবে? শুধু জল আর ভাঙ্গা গুড়ো পিঁপড়ে খাওয়া বাতাসা, নকুলদানা? সেই অমূর্ত ভগবানদের প্রসাদ দেওয়ার মতো?

ঠাকুর যদি কেক খেতে না পারেন রক্তমাংসের শরীরের মানুষ হওয়া সত্ত্বেও তাহ'লে তো আমাদেরও খাওয়া উচিৎ নয়। তাই নয় কি? আর ঠাকুরকে কি আমিষ কেক দেওয়া হয়েছে? যা ঠাকুর খেতেন না তা' আমার খাওয়া উচিৎ নয়? বহু সৎসঙ্গী তো মাছ, মাংস, ডিম, রসুন, পেঁয়াজ, আরও কত কত কত কি যেমন জর্দা, সিগারেট, মদ ইত্যাদি ইত্যাদি খান যা ঠাকুর খেতেন না। শুধু নিজে খেতেন না তা' নয় খেতে পছন্দ করেন না এবং তাঁর এসব খাওয়ায় নিষেধ আছে, তাঁর বিধানে আছে। তা' আমরা সৎসঙ্গীরা খাই কেন? কেন আমি স্বস্ত্যয়নীব্রতধারী সৎসঙ্গী এই ঢাকঢোল পিটিয়ে নিজেকে সাধারণ সৎসঙ্গীদের সামনে বড় ক'রে তুলে ধরে রাজসিক এবং তামসিক নিরামিষ খায়? শ্রীশ্রীঠাকুর কি রাজসিক ও তামসিক নিরামিষ খেতেন? কেউ কেউ আমরা স্বস্ত্যয়নীধারীরা লুকিয়ে চুরিয়ে মাছ, মাংস, অ্যালকোহল গ্রহণ করি। কেউ কেউ ইষ্টপ্রাণতার ঝড় তুলে ইষ্টপ্রতিষ্ঠা ও ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠার জন্য ছুটে বেড়ায় আর, বৃত্তি প্রবৃত্তিতে ডুবে থেকে এমন এমন কাজ আমরা বহু সৎসঙ্গীরা করি যা ঠাকুর পছন্দ করেন না, এবং তা তিনি কঠোরভাবে নিষেধ ক'রে গেছেন। আমরা সৎসঙ্গীরা কেন তা' করি?

ঠাকুরের জন্মোৎসব এ ঋত্বিক দের কেক কাটা অনেকের ভালো লাগেনি, কারণ তাদের বক্তব্য ঋত্বিকরা ভগবান নন।

এই বক্তব্যের পিছনে লজিকটা কি একটু বুঝিয়ে বললে চোখটা খোলে। কারণ, শ্রীশ্রীঠাকুরের কেক কাটা, কেক কেটে জন্মদিন পালন করা ও সেই কেক শিষ্য অনুগামীদের, উপস্থিত ভক্তমন্ডলীর মধ্যে প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করার মধ্যে ঋত্ত্বিকদের দোষ বা অন্যায়টা কোথায়? আর, ঋত্ত্বিকরা ভগবান নয় এটা ঠিক। কিন্তু কে বলতে পারে সমগ্র ঋত্ত্বিকদের মধ্যে একজনও ভগবান নয়? ভগবান অর্থ কি?
অনেকে বলছেন, ঠাকুরবাড়ির পরিবারের কারও জন্মদিনে কেক কাটা হয়নি। আমার জিজ্ঞাস্য কেক কাটা অনুষ্ঠান কি পাপ? ঠাকুরবাড়ির পরিবারে কোনওদিনও কেক কাটা হয়নি এ ব্যাপারে সমালোচকরা স্থির নিশ্চিত? ঠাকুরবাড়ির পরিবারের লোকেরা কি সাধারণ মানুষ নয়? সাধারণ মানুষের মত তাদের কোনও ইচ্ছা থাকতে পারে না যা অস্তিত্ববিরোধী নয়? সাধারণ জনজীবন থেকে ঠাকুর পরিবার ও পরিবারের সদস্যদের জীবন বিচ্ছিন্ন? নাকি আমরা নিজেরা ঠাকুরের বলা কথা পালন না করা, ঠাকুরের নিয়ম না মানা, দীক্ষা, স্বস্ত্যয়নী অর্থ কি না জানা, না মানা, অজ্ঞানতার অন্ধকারে ডুবে থাকা অতিবোদ্ধা তথাকথিত সৎসঙ্গীরা ঠাকুরবাড়ির সদস্যদের একটা কড়া নিয়মের শেকলের গেড়োয় বেঁধে রেখে তাদের স্বাভাবিক সাধারণ সহজ সরল জীবন থেকে দূর ক'রে রেখে দেবো? এ তো মানসিক অত্যাচার ।
তাই বলি, নোতুন নোতুন সংযোজন তো সময়ের দাবী। এই সময়ের দাবী মেনে আগামীদিনে অনেক কিছুই হবে। তবে তা' যেন কখনই বিকৃত না হয়, বাঁচা ও বাড়ার বিরুদ্ধ না হয়। সেই নোতুনত্ব থেকে যেন জীবনবাদের, অস্তিত্ববাদের, আদর্শবাদের ও জীবন্ত আদর্শের স্মেল উবে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, জ্ঞান রাখতে হবে।

তবে বর্ত্মান ঘোর কলি যুগে কোনটা বিকৃত আর কোনটা বিকৃত নয় সেই বোধটাই হারিয়ে গেছে। তাই সুন্দরের মধ্যে মানুষ অসুন্দর দেখে আবার অসুন্দরের মধ্যে সুন্দর দেখে। তাই দেখার চোখ চাই। দেখতে গেলে চাই জ্ঞান, চাই বোধ, চাই বুদ্ধি, চাই আগ্রহ, চাই একাগ্রতা, চাই তীব্র ভালোবাসা। চাই নিরবচ্ছিন্ন নামধ্যান, নামধ্যানের প্রতি অনুরাগ। চাই শয়নে, স্বপনে, জাগরণে, চলতে, ফিরতে, কাজ করতে করতে, অফিসে, ব্যবসায়, হাটেবাজারে, বাথরুমে মুখ ধুতে, পায়খানা করতে, স্নান করতে, বেডরুমে, ভোজনে দিন শুরু থেকে রাতে ঘুমতো যাওয়া পর্যন্ত এবং ঘুমের মধ্যেও সর্ব্বক্ষণ, সবসময় তার সঙ্গে যুক্ত থাকা। আর এই যুক্ত থাকা তাঁর নামের মধ্যে দিয়ে, তাঁর নাম করার মধ্যে দিয়ে।

আর, দয়ালের ধ্বনি দিয়ে আবার কেক কাটা হচ্ছে এটাও একটা অভিযোগ। দয়ালের ধ্বনি দিয়ে কেক কাটায় অন্যায় বা দোষ কোথায়, জানি না?

"বর্তমান সময়ে সাধারণ মানুষের জন্মদিন পালন করার পর সেই কেক নাকে মুখে মেখে একাকার করার মত যেন ঠাকুরের জন্মদিনে কেক কাটার পর সেই কেক নিয়ে যেন পরস্পরের মধ্যে তা' না করা হয় এটা খেতাল রাখতে হবে উদ্যোক্তাদের। কারণ সেই কেক শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রসাদ, কেক শ্রীশ্রীঠাকুরে নিবেদিত প্রসাদ, মহাপ্রসাদ। এটা যেন সৎসঙ্গীরা মনে রাখে।

যাই হ'ক, আজ ফেসবুকের মত স্ট্রং মিডিয়ার দৌলতে আমরা অনেক কিছু ভালো মন্দ জানতে পারছি। তবে ভালো গঠনমূলক সিরিয়াস কিছু থাকলেও তা কম ও অনালোচিত ও অনালোকিত অবস্থায় পড়ে থাকে। তার কোনও পাঠক থাকে না। লাইক, লাভ ইত্যাদি সাইন আর কমেন্টের সংখ্যা তার প্রমাণ। এছাড়া একে অপরের বিরুদ্ধে সমালোচনা, গালাগালি, কুৎসা, নিন্দা, অপপ্রচার, অপমান, অসম্মান, অশ্রদ্ধা, অপবাদ ইত্যাদির বান ডাকে ফেসবুক। আর চটজলদি হালকা বিষয়, সুড়সুড়ি দেওয়া বিষয়, উস্কানিমূলক লেখা, ছবি, ভিডিওর মজবুত প্ল্যাটফর্ম বর্তমানে ফেসবুক।

এই ফেসবুকের মধ্যে দিয়েও ঠাকুরের বিরুদ্ধে আমরা অশ্লীল বাক্যবাণের প্রমাণ পেয়েছি। আর, আমরা সৎসঙ্গীরা এরকম কেক কাটার মত নোতুন কিছু বিষয় সামনে দেখতে পেলেই রে রে ক'রে ছুটে এসেছি সৎসঙ্গীর বিরুদ্ধে আর ঝাঁপিয়ে পড়েছি দলবদ্ধভাবে। আজ কোচবিহারের মন্দিরে বিশাল সৎসঙ্গী সমাবেশে কেক কাঁটাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে আসার ফলে এটা চোখে পড়েছে। এরকম শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মদিনে, শ্রীশ্রীআচার্যদেবের জন্মদিনে এবং আমার গুরুভাইদের জন্মদিন উপলক্ষে সৎসঙ্গ আয়োজনের মধ্যে দিয়ে কেক কাটা অনুষ্ঠান করার জন্য তীব্র সমালোচিত, অপমানিত হয়েছি আমার ইষ্টপ্রাণ গুরুভাইবোনেদের কাছে। যেন বিরাট অন্যায় ও পাপ কাজ হ'য়ে গেছে জন্মদিনে কেক কাটা ও শ্রীশ্রীঠাকুরকে নিয়ে সমবেতভাবে গুরুভাইদের জন্মদিন পালন করার জন্য। গুরুভাইবোনেদের কাছে কেক কাটা বিষয় নিয়ে বিতর্কের মতো এরকম কয়েকটা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আমি পরবর্তী ভিডিওতে আপনাদের সামনে আসবো আমার বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে। জয়গুরু।

( লেখা ২১শে সেপ্টেম্বর' ২৪)

Saturday, September 14, 2024

প্রবন্ধঃ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের ১৩৭তম জন্মদিন ও আমরা সৎসঙ্গীরা।

আজ ১৫ই সেপ্টেম্বর'২৪ রবিবার শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের ১৩৭তম শুভ জন্মদিন। আজকের এই শুভ দিনে আমরা তাঁর যারা দীক্ষিত অনুগামী সবাই তাঁর জন্মদিন পালন করছি ঘরে ঘরে ও কেন্দ্র মন্দির গুলোতে। আজ দেওঘরে ঠাকুরবাড়িতেও মূল কেন্দ্র দেওঘর 'সৎসঙ্গ'-এ শ্রীশ্রীঠাকুরের শুভ জন্মদিন পালিত হচ্ছে। গত ১২ই সেপ্টেম্বর'২৪ বৃহস্পতিবার দেওঘরে ঠাকুরবাড়িতে শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মতিথি মহা সমারোহে পালন হয়েছিল। আজও ভারতবর্ষ সহ বিশ্বের প্রতিটি কেন্দ্র মন্দিরে ও ঘরে ঘরে মানুষ শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মদিন পালন করছে। শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মভূমি বাংলাদেশের পাবনা জেলার হিমাইয়েতপুরে ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার 'সৎসঙ্গ' কেন্দ্র মন্দির ও শ্রীশ্রীঠাকুরের দীক্ষিত অনুগামীদের ঘরে ঘরে তাঁর জন্মদিন পালন হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের আজ মহা আনন্দের দিন। 

আজ সমস্ত সৎসঙ্গীরা আনন্দ করছে। শ্রীশ্রীঠাকুরের লীলাভূমি ও কর্মভূমি ভারতবর্ষ এবং তাঁর জন্মভূমি, লীলাভূমি ও কর্মভূমি বাংলাদেশের প্রতিটি রাজ্যের প্রতিটি জেলার প্রতিটি পৌরসভা ও পঞ্চায়েত এলাকার সৎসঙ্গীদের ঘরে ঘরে এবং তাঁর ভাবাদর্শ ছড়িয়ে পড়া দেশগুলি নেপাল, বার্মা, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আফ্রিকা, আমেরিকা, কানাডা, অষ্টেলিয়ায় সৎসঙ্গীদের ঘরে আজ জন্মদিন পালন হচ্ছে। আজকে আমি পরমদয়াল পরমপিতা পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুরের রাতুল চরণে সমস্ত হিন্দু, মুসলমান, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ইত্যাদি সমস্ত সম্প্রদায়ের দীক্ষিত সৎসঙ্গীদের জন্য এবং অস্থির বিশ্বের প্রায় ৮০০কোটি প্রতিটি মানুষের জন্য সুখ, শান্তি ও সুস্থ জীবন প্রার্থনা করছি।
আজকের এই আনন্দের দিনে আমি আমার সমস্ত সৎসঙ্গী গুরুভাইবোনেদের সঙ্গে আমার আনন্দ শেয়ার করার জন্য কিছু মনের কথা তুলে ধরছি। তুলে ধরছি আন্তরিক ও অকপটভাবেই শ্রীশ্রীঠাকুরের সোনার সৎসঙ্গী ও আমার প্রিয় সৎসঙ্গী গুরুভাইবোনেদের প্রতি একজন সৎসঙ্গী গুরুভাই হিসেবে ও সেই অধিকারে।

আমি মূলত দু'টি বিষয় সংক্ষেপে শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। প্রথমত আসুন, আলোচনার মাধ্যমে জেনে নিই, শ্রীশ্রীঠাকুর কেন জন্মেছিলেন? যে মানুষটার আজ জন্মদিন পালন করছি সেই মানুষটা কেন জন্মেছিলেন সেটা সৎসঙ্গীদের তাঁর জন্মদিন পালনের সঙ্গে সঙ্গে জানা ও উপলব্ধি হওয়া দরকার। আর, তাঁর সঙ্গে সঙ্গে আমরাই বা কেন জন্মেছি? ও কেন তাঁর জন্মদিন পালন করছি? কে তিনি? কেন তিনি এসেছিলেন? এই সমস্ত বিষয় একটু জানা দরকার। নতুবা তাঁর জন্মদিন পালন আর একটা সাধারণ মানুষের জন্মদিন পালনের মত লক্ষ্যহীন উদ্দেশ্যবিহীন নিছক হতাশা, অবসাদ, ক্লান্তি, অস্থিরতায় ভরা জীবনে একটু হৈ হুল্লোড় করে জন্মদিন পালন করার মধ্যে দিয়ে আনন্দ উপভোগ করার চেষ্টা করা ও এই পালনের মধ্যে দিয়ে আর একটা ফ্যাকাশে দিনকে একটু রঙ্গীন ক'রে কটানো ছাড়া আর কিছুই নয়। ঐ দিনগত পাপক্ষয়। তারপর আবার সেই যে কে স্টীল অর্থাৎ পূর্বের অপরিবর্তনীয় ফাকাশে বর্ণহীন জীবন।

তাই আসুন এই সাময়িক আনন্দ উপভোগের সুযোগে আমরা আজ দেওঘরে ঠাকুরবাড়িতে, দেশে, বিদেশের কেন্দ্র, মন্দিরে, ঘরে, বাইরে যে যেখানে আছি আনন্দ করতে করতে, ঘুরতে ঘুরতে, চা খেতে খেতে, টিফিন খেতে খেতে, ঠাকুর নিয়ে গল্প করতে করতে, আড্ডা মারতে মারতে আসুন একটু মোবাইলে চোখ রাখতে রাখতে একবার পড়ে নিই শ্রীশ্রীঠাকুর কেন, কি কারণে জন্মেছিলেন, একটু জেনে নিই আমরাই বা কেন জন্মেছি? ও কেন তাঁর জন্মদিন পালন করছি? কে তিনি? কেন তিনি এসেছিলেন?

এইসমস্ত কিছু জানবো আমরা শ্রীশ্রীঠাকুর নিজে এই বিষয়ে কি বলেছেন
সেটা আলোচনা করার মধ্যে দিয়ে। আমার ব্যক্তিগত কোনও কথা এখানে নেই।

শ্রীশ্রীঠাকুর আমাদের দরদভরা কণ্ঠে বললেন,
" তুমি কেন জন্মেছ মোটাভাবেও কি দেখেছ ? থাকাটাকে কি উপভোগ ক'রতে নয় ---- চাহিদা ও কর্ম্মের ভিতর - দিয়ে পারস্পরিক সহবাসে ----- প্রত্যেকরকমে ? তেমনি বুঝছ না ভগবান কেন সৃষ্টি ক'রেছেন ? উত্তর কি এখন ?----- নিজেকে অনুভব ক'রতে , উপভোগ ক'রতে ---- বিশ্বে ,প্রত্যেক অনুপাতে --- দেওয়ায় , নেওয়ায় -- আলিঙ্গনে , গ্রহণে , কর্ম্মবৈচিত্রে , ----- নয় কি ? "

আসুন এবার কি ভেবে দেখি, তলিয়ে দেখি তিনি কি বলতে চেয়েছিলেন।
শ্রীশ্রীঠাকুরের কথামত আমি প্রকাশ বিশ্বাস কেন জন্মেছি একবারও কি ভেবে দেখেছি? সুক্ষ্মভাবে ভেবে দেখবার দরকার নেই, মোটাভাবেও কি ভেবে দেখেছি? দেখিনি। যদি ভেবে দেখতাম তাহ'লে এত দুঃখ, কষ্ট, এত অভাব অভিযোগ কি থাকতো? থাকতো না। এত রোগ, এত শোক, এত গ্রহদোষে আক্রান্ত হতাম? হতাম না। এত বুদ্ধিবিপর্যয় হ'তো? হ'তো না। এত দরিদ্রতা তা' সে আর্থিক দরিদ্রতা হ'ক, জ্ঞানের দরিদ্রতা হ'ক, প্রেম-ভালোবাসার দরিদ্রতা, চরিত্রের দরিদ্রতা হ'ক যে দরিদ্রতাই হ'ক এই দরিদ্রতার কষাঘাতে কি ক্ষতবিক্ষত হ'তাম? উত্তর কি? হতাম না।

তাহ'লে কি দাঁড়ালো? শ্রীশ্রীঠাকুরের কথামত আমি কি আমার এই যে থাকাটা, মানে আমার এই যে অস্তিত্ব এই থাকাটাকে, এই অস্তিত্বটাকে প্রকৃত উপভোগ করতে পেরেছি? পারছি? যদি প্রকৃত উপভোগ করতে পারতাম তাহ'লে আমি নানারকম রোগে, কতরকম আপনজনের বিয়োগ ব্যাথার শোকে, বিভিন্ন গ্রহদোষ অর্থাৎ গ্রহণদোষে, পদেপদে বুদ্ধিবিপর্যয়ে ও আর্থিক দরিদ্রতা, চরিত্রের দরিদ্রতা অর্থাৎ উচ্ছৃঙ্খল বিশৃঙ্খল রিপুতাড়িত জীবন এবং জ্ঞানের দরিদ্রতা অর্থাৎ অভাব, প্রেম-ভালোবাসার দরিদ্রতা বা অভাব অর্থাৎ আপনজনদের কাউকে প্রেম বা ভালবাসতে না পারা, ঠাকুরের যেমন পর ব'লে কেউ বা কিছু ছিল না, সবাই ছিল আপন, যেমন শ্রীশ্রীআচার্যদেব আমাদের বলেন, শিক্ষা দেন আপনজনকে ৫টাকা দিলে তোমার শত্রুকে ১০টাকা দিও, তার অসময়ে, বিপদে আপদে সবসময় পিছন থেকে খেয়াল রেখো এবং তোমার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিও তোমার যতটুকু ক্ষমতা তাই দিয়ে, এরকম যে জ্ঞানের দরিদ্রতা অর্থাৎ জ্ঞানের অভাব ইত্যাদি নানা দরিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত হতাম না।
শ্রীশ্রীঠাকুর আমাকে বললেন, তুমি যদি থাকাটাকে উপভোগ করতে চাও তাহ'লে তোমার যেমন চাহিদা থাকবে তেমন কর্মও দরকার। চাহিদা ও কর্মের উভয়ের মিলন দরকার। চাহিদা ও কর্মের ভিতর দিয়ে পারস্পরিক মিলনের মধ্যে দিয়ে সবসরমভাবে থাকাটাকে তুমি উপভোগ করো। ব্যাপারটা কেমন? যেমন আমি একজন পুরুষ, আমার চাহিদা আছে। এই জগত সংসারে বেঁচে থাকার জন্য ও বেড়ে ওঠার জন্য আমার অন্ন, বস্ত্র, টাকাপয়সা, বাড়ি, গাড়ি্‌, নারী ইত্যাদি ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিস প্রয়োজন, ঠিক তেমনি নারীরও অন্ন, বস্ত্র, টাকাপয়সা, পুরুষ, বাড়ি, গাড়ি্‌ ইত্যাদি ইত্যাদি যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিস প্রয়োজন। তা এগুলি কোথা থেকে আসবে? আকাশ থেকে আসবে? ম্যাজিক ক'রে আসবে? গুপি গাইন বাঘা বাইনের মত হাততালি দিলেই মহাশূন্য থেকে আসবে? না, আসবে না। তা' আসবে তোমার চাহিদা অনুযায়ী তোমার কর্ম করার মধ্যে দিয়ে। চাহিদা ও কর্মের মিলনের মধ্যে দিয়ে। তোমার চাহিদা আর কর্মের মধ্যে পারস্পরিক সহবাস চাই অর্থাৎ একসঙ্গে চাহিদা ও কর্মকে স্বামীস্ত্রীর মত বাস করতে হবে, উপযুক্তভাবে মিলিত হ'তে হবে, তবেই তোমার ঈপ্সিত ফল লাভ হবে। এককথায় কর্ম ছাড়া ধর্ম পালন বা ঈশ্বর আরাধনায় কোনও কিছু পাওয়া যাবে না।

তাই শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, তুমি কেন জন্মেছো যেমন ভেবে দেখতে বলেছেন ঠিক তেমনি ভেবে দেখতে বলেছেন, ভগবান কেন সৃষ্টি করেছেন? উত্তরে শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, ভগবান সৃষ্টি করেছেন নিজেকে নিজে অনুভব করার জন্য, উপভোগ করার জন্য। কিভাবে উপভোগ করবেন তিনি? বিশ্বে যা কিছু আছে সব কিছুর মধ্যে ভগবান নিজেকে নানারকম বিচিত্র কাজের মধ্যে দিয়ে, নিজেকে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে, নেওয়ার মধ্যে দিয়ে, আলিঙ্গন করার মধ্যে দিয়ে, গ্রহণ করার মধ্যে দিয়ে তিনি নিজেকে নিজে অনুভব করার জন্য ও উপভোগ করার জন্যই সৃষ্টি করেছেন।

ঠিক একইরকমভাবে আমিও যদি নিজেকে, নিজের অস্তিত্বকে অনুভব করতে চাই, উপভোগ করতে চাই তাহ'লে ঠিক একইভাবে আমার চারপাশে ঘরে বাইরে সকলের সঙ্গে জীবনের সব দিক দিয়ে দয়া, মায়া, প্রেম, ভালোবাসা, সাহায্য, সহানুভূতি সব রকমভাবে দেওয়া-নেওয়া, আলিঙ্গম-গ্রহণের মধ্যে দিয়ে নিজেকে একইসঙ্গে এই দুনিয়াকে প্রকৃত অনুভব ও উপভোগ করতে পারবো। নতুবা এই জন্মদিন পালন মিথ্যা হ'য়ে যাবে, হ'য়ে যাবে বকোয়াস।

তাহ'লে আজ এই পবিত্র শুভ জন্মদিনে আমাদের তাঁর জন্ম পালন করার সময় মনে রাখতে আমরা সৎসঙ্গীরা একটা সর্ব্বশ্রেষ্ঠ আদর্শের পূজারী। আজকের দিনে আমাদের বুঝতে হবে, দেশ বিদেশে চতুর্দিকে নানারকম আন্দোলন হচ্ছে। সত্যি মিথ্যার আন্দোলন। আর, আমাদের সৎসঙ্গীদের সৎসঙ্গও হচ্ছে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রবর্তীত একটা আন্দোলন, ধর্মীয় আন্দোলন। এই ধর্মীয় আন্দোলনের আদর্শ হচ্ছে, ধর্ম কোনও অলৌকিক ব্যাপার নয় বরং বিজ্ঞানসিদ্ধ জীবন সূত্র। ভালোবাসাই মহামূল্য, যা দিয়ে শান্তি কেনা যায়। শ্রীশ্রীঠাকুরের ধর্ম হচ্ছে ফলিত বিজ্ঞান, applied science.

আর সৎসঙ্গের উদ্দেশ্য কি?, "সৎসঙ্গ’-এর উদ্দেশ্য মানুষকে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। সৎসঙ্গ কখনো সম্প্রদায়ে বিশ্বাস করে না। ধর্ম কখনও বহু হয় না-ধর্ম এক। হিন্দু ধর্ম, মুসলমান ধর্ম, খ্রীষ্টান ধর্ম ইত্যাদি সব মত। সপারিপার্শ্বিক জীবন-বৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলাই ধর্মের প্রধান লক্ষ্য। ধর্ম মূর্ত্ত হয় আদর্শে এবং শ্রীশ্রীঠাকুর হলেন ধর্মের মূর্ত্ত আদর্শ। তিনি কোন সম্প্রদায়-বিশেষের নন, বরং সব সম্প্রদায়ই তাঁর। শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছেন-“একজন মানুষের বিনিময়ে আমি একটি সাম্রাজ্য ত্যাগ করতে পারি, কিন্তু একজন মানুষকে ছাড়তে পারি না।”

এবার আসি, আমরা কেন তাঁর জন্মদিন পালন করছি? কে তিনি? কেন তিনি এসেছিলেন?

এককথায় বলতে পারি, আমরা তাঁর জন্মদিন পালন করছি আমরা কেন জন্মেছি এটা জানার জন্য, বোঝার জন্য এবং সেইভাবে নিজেকে তাঁর মনের মত গড়ে তোলার জন্য। আর এই গড়ে তোলার পথ জন্মদিনে শুধু জাঁকজমকভাবে ফুল, আলো, মোমবাতি, ধূপ, ধুনো, কাঁসর, ঘন্টা, শঙ্খধ্বনি, গান, কীর্তন করার মধ্যে দিয়ে তথাকথিত তাঁর চরণপূজা করার জন্য নয়, তাঁর চলনপূজার মধ্যে দিয়ে নিজেকে তাঁর মনের মতো গড়ে তুলে তাঁর চরণতলে নিজেকে, নিজের জীবনকে উপহার দেওয়া।
আজ যার জন্মদিন পালন করছি তিনি হলেন বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের মালিক সৃষ্টিকর্তা, সৃষ্টির পরম উৎস, সৃষ্টির পরম কারণ, পরমপিতা, পরমপুরুষ, পুরুষোত্তম জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীশ্রীরামচন্দ্র, শ্রীশ্রীকৃষ্ণ, শ্রীশ্রীবুদ্ধ, শ্রীশ্রীযীশু, শ্রীশ্রীবুদ্ধ, শ্রীশ্রীহজরত মহম্মদ, শ্রীশ্রীমহাপ্রভু, শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ-এর নোতুন রূপ The greatest phenomenon, the greatest wonder of the world শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। তাঁর রাতুল চরণতলে আমার প্রণাম জানিয়ে সবার মঙ্গল প্রার্থনা ক'রে আমার শেষ আবেদন, আজ যে যেখানে আছে সবাই একসঙ্গে একজায়গায় নিজ নিজ কেন্দ্র মন্দিরে মিলিত হ'য়ে মিলেমিশে ঠাকুরের প্রাণে আনন্দ দিয়ে এই আনন্দ উপভোগ করি। জয়গুরু।
প্রকাশ বিশ্বাস।
ভদ্রকালী, উত্তরপাড়া।

Tuesday, September 10, 2024

কবিতাঃ হামিমদা।



( হামিম ফারুকের কবিতার উত্তরে)

হামিমদা,

যত দূরে গেছি তত মন বলেছে,
'ফিরে চল মন নিজ নিকেতন!'
কবিতায় যত ডুব দিই তত পঙক্তি বলে,
'যেথা আছে আমার বড় প্রিয়, বড় আপনজন!!'
পারি না ফিরিতে, পারি না বলিতে, পারি না সহিতে আর.........
স্মৃতি নিয়ে আছি বেঁচে, স্মৃতি নিয়ে চাই চলে যেতে বন্ধু তোমার!!
থাক চাপা যত পুরাতন........., ঝাঁপি খুলে যাক আর চাই না এখন!
স্মৃতির যাতনা ভুলে যেতে চাই স্মৃতিভ্রংশ শেষ জীবন;
হামিমদা! চাই এক শান্ত শান্তিময় নিরালা নিকেতন!!
প্রবি।
( লেখা ১১ই সেপ্টেম্বর'২০১৮)



হামীম ফারুক

September 11, 2018 ·

যত দূরে যাই
..
যত দূরে যাই,
মানুষের মায়া কাছে ডাকে, দূরত্ব সব বুঝে নেয়,
যত দূরে যাই,
গাছের শেকড় ছড়িয়ে পড়ে পাঁচিলের গায়ে
প্রতি বসন্তে পোষা বেড়াল অপেক্ষা করে কার্নিশের কোনে
যত দূরে যাই,
আকাশ কাছে যেতে ডাকে,
পাহাড় ডেকে বলে, নদী ভুলে গেছে এখন ফিরতে হবে
যত দূরে যাই,
পায়ের কাছে ঘোরে প্রকৃতি পুরাণ
অবশ্যসম্ভাবী ঋতু ছুঁড়ে দেয় অবিনাশি জাল
যত দূরে যাই
চেনা দৃশ্যাবলী ত্রস্তে ঢুকে পড়ে ফটো এ্যালবামে
শ্রুতি বধির করে দ্যায় ঝিঁঝিঁ পোকার কোরাস
যত দূরে যাই
দৃশ্যমান হয় বসন্ত বিলাস, শীতের শস্যখেত
যত দূরে যাই, হিসেবের খাতাগুলো বড় চেনা ঠেকে

Realization: What's the difference ?

What's the difference be2in haves & have-nots!?
Nothing.
Donohi
putla (Unseen God) pujari!!!!

What's the difference be2in
You & Me!?
Nothing.
Donohi Sing a Song (Gan Do)!!

What's the difference be2in Honest & Dishonest?
AMAZING!!!
Honest: Timid, week & colourless personality.
Dishonest: Brave, Bold & Colourful personality.

What's the difference be2in "HONESTY & DISHONESTY"!? Thinkable!!!
It depends on bundle of Rupee!!



























প্রবন্ধঃ আমরা ঘুমিয়ে আছি। এটাই বোধহয় ভবিতব্য।

পুরুষোত্তম আর দেবদেবী কি একই হ'লো? অন্যান্য পুরুষোত্তমের সঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুরের সম্পর্কটা কি?

কিছু সৎসঙ্গী নিজেই জানে না কখন কি লিখছে, পরস্পর বিরোধী মন্তব্য করছে আর কখন কোথায় কার কথায় কি সমর্থন করছে ও বিতর্কের সৃষ্টি করছে। একেই বলে ব্যভিচারী ভক্তি।

যারা পুরুষোত্তমদের নিয়েও বহুনৈষ্ঠিকতার কথা তোলেন তারা দেখাতে পারবেন পূর্ব রূপের পুরুষোত্তমদের নিয়ে বহুনৈষ্ঠিকতার উদাহরণ স্বরূপ শ্রীশ্রীঠাকুরের কোনও বাণী আছে?

কিছু সৎসঙ্গী কি যে বলতে চাইছে আর কিছু পাঠক কি বুঝতে পারছে সেটা আজ দুর্ভাগ্যের বিষয় হ'য়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ তারা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে দেবদেবতার সঙ্গে একই আসনে বসানোর বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখাকে সমর্থন করছে এবং ঠাকুরঘরেও শ্রীশ্রীঠাকুরের পাশে পূর্ব পূর্ব পুরুষোত্তমের ছবি রাখা মানেই শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রতি ভক্তির গাঢ়ত্ব কমে যায় ও বহুনৈষ্ঠিকতার চর্চা হয় এ বক্তব্যকে স্বীকার করছেন, প্রতিষ্ঠা করছেন জোরালোভাবে। শ্রীশ্রীঠাকুরকে নিয়ে কিছু কিছু সৎসঙ্গীদের অদ্ভুত এক উগ্র ভক্তি।

পুরুষোত্তম আর দেবদেবীদের অবস্থান নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলেছেন তাদের উদ্দেশ্যে আরও সহজভাবে যদি বলা যায় তাহ'লে বলা যেতে পারে পরম প্রেমময় পুরুষোত্তম পরমপিতা জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীশ্রীরামচন্দ্র, শ্রীশ্রীকৃষ্ণ, শ্রীশ্রীবুদ্ধ, শ্রীশ্রীযীশু, শ্রীশ্রীহজরত মহম্মদ, শ্রীশ্রীমহাপ্রভু, শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ ও সর্বশেষ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র যদি হন সূর্য তাহ'লে সূর্যের যেমন কিরণ আছে ঠিক তেমনি সূর্যের কিরণ স্বরূপ দেবদেবীরা হ'লো জীবন্ত ঈশ্বরের বিভিন্ন গুণাবলীর বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিফলন। তাই পুরুষোত্তম আর দেবদেবীদের একই আসনে বসানোর ব্যাপারে এই সূক্ষ্ম সতর্কতা জরুরী। সূর্যের মধ্যে কিরণের যেমন অবস্থান ঠিক তেমনি পুরুষোত্তম পরমপিতা জীবন্ত ঈশ্বরের মধ্যে মুনি ঋষিদের তপস্যাসঞ্জাত উপলব্ধি থেকে উদ্ভূত এক ও অদ্বিতীয়ের শক্তি ও গুণাবলী সমৃদ্ধ বিভিন্ন দেবদেবীর অবস্থান।

আর, পুরুষোত্তমদের নিয়ে বহুনৈষ্ঠিকতার বিষয়ে যারা যে পোষ্ট করেছেন ও করছেন সেটার ওপর আমার যে বক্তব্য ছিল সেই বক্তব্যের মধ্যে আমার বোঝার ভুল আছে ব'লে সৎসঙ্গী কেউ কেউ আমার বক্তব্যের বিরোধীতা করেছেন। তাদের কাছে আমার অনুরোধ ছিল ও আছে যে, কোনওরকম অপ্রাসঙ্গিক কথা না টেনে আমার বক্তব্যের মধ্যে বোঝার ভুল আছে শুধু একথা না ব'লে বক্তব্যের মধ্যে ভুলটা কোথায় আছে সেই ভুলটা যুক্তি দিয়ে ধরিয়ে দিন। আর, যিনি বা যারা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের পাশে পূর্ব পূর্ব পুরুষোত্তমদের ফটো রাখা নিয়ে বহুনৈষ্ঠিকতার প্রশ্ন তুলে অকারণ বিতর্ক সৃষ্টি করছেন ও এই লেখার বিষয় নিয়ে পোষ্ট করেছেন তার বা তাদের যদি বোঝার ও বোঝানোর ভুল হ'য়ে থাকে ব'লে মনে করেন পাঠক, যিনি আমার বক্তব্যের বিরুদ্ধতা ক'রে তাদের পক্ষে মন্তব্য করেছেন, তাহ'লে তার দায় পোষ্টদাতার পক্ষ অবলম্বনকারী পাঠক কি অন্যের ঘাড়ে চাপাতে পারেন? যিনি পুরুষোত্তমদের নিয়েও বহুনৈষ্ঠিকতার কথা তুলে পোষ্ট করতে পারেন সেই তিনি বোঝাতে যদি ভুল করেন তাহ'লে অনেকেই তাঁর মতো বুঝতে ভুল শিক্ষা পাবে, আবার অনেকে তার ভুলটাকে ভুল ব'লে ধরিয়ে দেবে এটাই তো স্বাভাবিক; তাই নয় কি? নাকি উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপিয়ে দেবো সৎসঙ্গীরা?

আর এখানে চোখে আঙ্গুল দাদা হওয়ার বিষয়টা কি প্রাসঙ্গিক? পাঠক যদি একজন সমাজ সচেতন শিক্ষিত মানুষ হন তাহ'লে তিনি কি তাঁর চারপাশে যদি ভুল কিছু দেখেন তাহ'লে তার গঠনমূলক প্রতিবাদ করবেন না? ঠাকুর কি আমাদের ভুল, অন্যায়ের বিরুদ্ধে গঠনমূলক প্রতিবাদ না করার শিক্ষা দিয়েছিলেন নাকি? তার উপর যদি সে আমার গুরুভাই হয়, একজন সৎসঙ্গী হয় তখন কি আমার কোনও দায়দায়িত্ব থাকে না তাকে যাজন করার? ঠাকুর কি এরকম 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতার অধিকারী হ'তে শিখিয়েছিলেন দীক্ষা নেওয়ার সময়? কারও ভুল ধরিয়ে দিলেই নিজেকে কি মহাপন্ডিত ভাবা হয়? তাঁকে মহাপন্ডিত ব'লে ব্যাঙ্গ করতে হবে সৎসঙ্গীদের? আমার ভুল কথার জন্য যদি ঠাকুরের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, ঠাকুরের দর্শন বিকৃত হয়, সর্বোপরি আমার ক্ষতি হয় আর পাঠক যদি ঠাকুরের দীক্ষিত হন, সৎসঙ্গী পাঠক যদি বুঝতে পারেন আমার ভুলটা কোথায়, তাহ'লে সেটা যদি পাঠক আমায় ধরিয়ে দেয় আমি পাঠককে মহাপন্ডিত ভাববো? আমার যদি কোনও ভুল সত্যি সত্যিই থাকে আর তা যদি পাঠক ধরিয়ে দেন তাহ'লে তো পাঠক আমার হিতাকাঙ্খী। পাঠক আমার পরম বন্ধু। কেন 'ভুল শোধরাতে ব্যস্ত ব'লে' পাঠককে ব্যঙ্গ করবো? পাঠক যদি আমার তাঁর জ্ঞানের আলো দিয়ে আমার অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর ক'রে দেন তাহ'লে কেন তাঁকে খোঁচা মেরে বলবো, প্রদীপের নীচে অন্ধকার? এটা তো সত্যকে অস্বীকার করা। সচেতন ইষ্টপ্রাণ পাঠকের প্রতি ইর্ষা করা। এটা তো স্ট্রং ইগোর ব্যাপার। আর প্রদীপ যে আলো দেখায় সেই আলোতে তো সামনের অন্ধকার দূর হয় আর মানুষ সামনে এগিয়ে যায়; তার নীচে অন্ধকার তো প্রদীপের শিখার নয়, সেই অন্ধকার তো প্রদীপের। একথা শ্রীশ্রীআচার্যদেব পরিষ্কার ক'রে ব'লে বুঝিয়ে আমাদের অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর ক'রে দিয়েছেন। এটা অনেকের জানা নাই থাকতে পারে। আর, একটা বাজে লোকও তো কখনো কখনো ভালো কথা বলে। তাই ব'লে কি তার ভালো কথাটা বাজে হ'য়ে যায় বাজে লোকটার মতো?

এবার আসি অকারণ দোষারোপ করা প্রসঙ্গে। পুরুষোত্তমদের নিয়েও বহুনৈষ্ঠিকতার কথা তোলা নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে আমার উত্তেজিত হওয়া কোথায় দেখতে পেলেন আমার বিরুদ্ধ সমালোচক? আলোচনা বিস্তার লাভ করলেই তার মধ্যে উত্তেজনা দেখতে পান? কারও ব্যক্তিগত ব্যাপারে আমি যদি নাক গলায় সেখানে সেই ব্যক্তি আমাকে বলতে পারেন আমায়, 'আপনি বিচার করার কে, আপনি বলার কে?' কিন্তু যখন শ্রীশ্রীঠাকুর নিয়ে কেউ কথা বলবেন তখন আমার ঠাকুর নিয়ে যদি কোনও কথার মধ্যে দিয়ে ভুল বার্তা যায়, যে কথায় আমার ঠাকুরের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয় তখন আমার অধিকার থাকে সেখানে ভুল বক্তব্যকে খন্ডন ক'রে আমার ঠাকুরকে ডিফেন্ড করার। এটা আমার নৈতিক দায় ও কর্তব্য।

আবেগ থাকা ভালো, নিশ্চয়ই ভালো। কিন্তু আবেগের বশে ভেসে গিয়ে ভুল বলা ভালো নয়। আবেগের বশে ঠাকুরকে ভুল ভাবে তুলে ধরা, পরিবেশন করা ঠিক নয়। মহাপন্ডিত, মহাযোগী, মহাজ্ঞানী, ঈশ্বরকোটি পুরুষরা শ্রীশ্রীঠাকুরকে, শ্রীশ্রীঠাকুরের ব'লে যাওয়া কথাকে বুঝতে পারেনি ও পারছে না, বুঝতে হিমশিম খেয়েছে ও খাচ্ছে সেখানে আমাদের মতন সাধারণ, অতি সাধারণ জীবকোটি মানুষের তাঁর সম্পর্কে কোনও কথা বলার আগে হাজারবার ভাবা উচিত, হাজারবার জন্ম নিতে হবে।

আমি যদি জানি আমার ঠাকুরই শ্রীশ্রীরাম, শ্রীশ্রীকৃষ্ণ তাহ'লে কেন আমার মন বিচলিত হবে, কেন আমি সত্যের মার্গ থেকে সরবো? সত্য যদি শ্রীশ্রীঠাকুর হন তাহ'লে সত্য তো শ্রীশ্রীরাম, শ্রীশ্রীকৃষ্ণ এবং তাঁর অন্যান্য রূপও। তাহ'লে কেন আমি বিভ্রান্ত হবো? তিনি তো একজনই আর একজনই তো বারেবারে এসেছেন। শ্রীশ্রীঠাকুর যদি আবার মানুষ রূপে আসেন তখন আমি ঠাকুরকে ছেড়ে দেবো, নাকি তাঁকে ভুলে যাবো? নাকি অতি ভক্তিতে তাঁর নোতুন রূপকে নিয়ে মেতে উঠে ভক্তির আবেগে কথার ফুলঝুড়ি ছুটিয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরকে জীবন থেকে সরিয়ে দেবো? যদি জীবন থেকে সরিয়ে দিই তবে প্রকৃত ভক্ত হবো? আর যদি নোতুন রূপকে নিয়ে পুরোনো রূপের কাছে বসে থাকি সেটা বহুনৈষ্ঠিকতা হবে? তাহ'লে পরমভক্ত শ্রীহনুমান কি বহুনৈষ্ঠিক ছিলেন? তিনি তো শ্রীকৃষ্ণকে পেয়েছিলেন, বলেছিলেন,
শ্রীনাথে জানকীনাথে অভেদঃ পরমাত্মনি |
তথাপি মম সর্বস্বঃ রামঃ কমললোচনঃ ||

আর যদি বিভ্রান্ত হ'ই, আমার পদস্খলন হয় তাহ'লে বুঝতে হবে আমার পুরুষোত্তমকে বোঝার ঘরে অসম্পূর্ণতা আছে, আছে অজ্ঞানতা, আছে ভক্তিতে গলদ।

পূর্বতন বিগ্রহ দিয়ে কি করবেন এই কথা সৎসঙ্গীদের মুখে? এ কথার মানে? এই কথা আমার সমালোচক ও তার সমর্থনকারীরা কোথায় পেলেন? শ্রীশ্রীঠাকুর কোথাও বলেছেন নাকি এই ধরণের কথা? নাকি নিজেদের অপরিপক্ক অজ্ঞানতা অন্যের ওপর চাপিয়ে দেবেন? শ্রীশ্রীঠাকুরের পূর্ব পূর্ব রূপকে ঘরে রাখার জায়গার অভাবের কারণে অনেকে শ্রীশ্রীঠাকুরের পুর্ব পূর্ব রূপকে ঘরে রাখতে পারেন না আর শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রতি ভক্তির গাঢ়ত্বের কারণে পূর্ব রূপের আর প্রয়োজন নেই কিংবা পূর্ব রূপের প্রতি অবিশ্বাসের কারণে পূর্ব পূর্ব রূপের ফটো রাখেন না, এই প্রশ্ন কি এক? আমরা সমস্ত সৎসঙ্গীরা কি জানি ঠাকুর বাড়িতে পূর্ব পূর্ব পুরুষোত্তমের জন্মদিন পালন হ'তো? শ্রীশ্রীঠাকুরই যদি শ্রীশ্রীকৃষ্ণ হ'য়ে থাকেন তাহ'লে তাঁর প্রতি তো আমার ভালোবাসা আরও গভীর হবে। সৎসঙ্গীরা শ্রীশ্রীরামচন্দ্র, শ্রীশ্রীকৃষ্ণ, শ্রীশ্রীবুদ্ধ, শ্রীশ্রীযীশু, শ্রীশ্রীমহম্মদ, শ্রীশ্রীমহাপ্রভু, শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকে এত গভীর ভালোবাসতে শিখেছে শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে এসেই। এরকম নিখুঁত অটুট অস্খলিত ভালোবাসা সৎসঙ্গ শিখিয়েছে সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষকে; যার ফলে গড়ে উঠছে ধীরে ধীরে এক মহামিলন ক্ষেত্র। পুরুষোত্তমদের সম্পর্কে অজ্ঞানতার কারণে এবং মিথ্যে, ভুল ও বিকৃত প্রচারের কারণে ভয়ংকর এক সর্বনাশা ভাঙ্গার খেলার যে বিষাক্ত হিংস্র নেশা পুরুষোত্তমদের অনুগামীদের পরস্পরের বিরুদ্ধে সংক্রামিত হয়েছে সেই নেশার ঘোর অবস্থা থেকে কাটিয়ে উঠে নোতুন পৃথিবীর প্রায় ৮০০ কোটি মানুষের প্রতিটি সম্প্রদায়ের প্রতিটি অস্তিত্বের সঙ্গে অস্তিত্বের যে মহামিলনের ডাক দিয়েছেন শ্রীশ্রীঠাকুর, এটা গভীর বোঝার ব্যাপার।
তাই শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র তাঁর পূর্ব পূর্ব রূপ শ্রীশ্রীরামচন্দ্র, শ্রীশ্রীকৃষ্ণ, শ্রীশ্রীবুদ্ধ, শ্রীশ্রীযীশু, শ্রীশ্রীহজরত মহম্মদ, শ্রীশ্রীমহাপ্রভু ও শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণকে অধিকার করেই নোতুন রূপে এসেছেন কলিযুগে আমাদের যুগের মত ক'রে পরিচালনা করবার জন্য, আমাদের আগামী ঘোর কলিযুগের ভয়াবহতার হাত থেকে রক্ষা করবার জন্য। তাই তাঁর পূর্ব পুর্ব রূপ ও তিনি, তাঁর অতীত ও বর্তমান রূপ এক ও অদ্বিতীয়। আমরা সবাই পৃথিবীর ৮০০ কোটি মানুষ সেই একেরই অনুগামী যিনি মানুষের মাঝে মানুষ রূপে বারবার নেমে এসেছেন। কিন্তু আমরা মানুষেরা, বিশেষ ক'রে সৎসঙ্গীরা সেই মহামিলনের আহ্বান বুঝতে চাইছি না, শুনতে চাইছি না। 
আমরা ঘুমিয়ে আছি প্রায় ১০কোটি লক্ষ্যে ছুটে চলা সৎসঙ্গীরা! ভেসে চলেছি ভয়ংকর সর্বনাশা ভাঙনের দিকে, ধ্বংসের দিকে। এটাই বোধহয় ভবিতব্য।
( লেখা ১০ইসেপ্টেম্বর'২০২৩)

Saturday, September 7, 2024

গল্পঃ ত্রিফলার ত্রিবর্ণ ২- এর শেষ অংশ।

বাস ছুটে চলেছে হাওড়ার দিকে। ভিড় বাড়তে লাগলো ক্রমশ। কন্ডাক্টর আমাকে আর আমার স্ত্রীকে ভিতরের দিকে এগিয়ে যেতে অনুরোধ করল। বাসের সব সীটেই নারী পুরুষে ভর্তি। একটা সিটও খালি নেই। আমরা পিছনের দিকে একটু এগিয়ে গেলাম। স্ত্রী লেডিস সিটের সামনে রড ধরে দাঁড়ালো। আমি তার পিছনে দাঁড়িয়ে আছি। বাস যত এগিয়ে চলেছে তত ভিড় বাড়ছে। আমার স্ত্রীর সামনে লেডিস সীটে দুজন মহিলা বসে আছে। স্ত্রীর সামনে দাঁড়িয়ে আছে একটি অল্প বয়সী ছেলে আর সীটের সামনে বসে আছে ঐ ছেলেটির বয়সী একটি মেয়ে। দুজনেই আমার ছেলের বয়সী। বড়জোর ২০/২২ বছর বয়স হবে। বোঝা গেল দুজনে দুজনের পরিচিত। ওরা দুজনে গল্প করছিল। নিজেদের মধ্যে অনবরত কথা বলে যাচ্ছিল দুজনে। কথা বলছিল হিন্দিতে। একদিকে ভিড় তায় আবার গরম। ভিড়ে ঠাসা গরমে হাঁসফাঁস করছিল প্রাণটা। এরই মাঝে একটানা দুজন অল্পবয়সী ছেলেমেয়ের ক্লান্তিহীন যৌবনের উচ্ছ্বাস!!! দুজনের কথা, হাসি কানের মধ্যে আছড়ে পড়ছিল। মনে বিরক্ত বোধ হলেও বিবেকের ডাকে সাড়া দিয়ে এই ভিড়ে ঠাসা গরমের মাঝেও তাদের অমলিন আনন্দের অকৃত্রিম উচ্ছ্বাসকে সাদরে স্বীকৃতি দিলাম। স্ত্রীর দিকে চেয়ে দেখলাম ঘামে নেয়ে উঠেছে যেন। মাঝে মাঝে ঝাঁকানিতে টলে উঠছিল শরীরটা। মনে মনে ভাবলাম কেন যে উঠলাম বাসে। আর একটু চেষ্টা করলে হয়তো একটা ট্যাক্সি পেতাম। যাই হোক মনকে তৈরি করে রেখেছিলাম ঠাকুরের বলে যাওয়া 'সব অবস্থার জন্য রাজী থাকো, দুঃখ তোমার কি করবে?' কথাকে স্মরণ করে। স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম দাঁড়াতে কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা। উত্তরে স্ত্রী খুব স্বাভাবিকভাবেই বলল, কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। আমিও মনে মনে অন্য বিষয়ে মনোনিবেশ করলাম। এইভাবে কিছুক্ষণ চলার পর দেখলাম স্ত্রীর সামনে বসা মেয়েটি স্ত্রীকে উদ্দেশ্য ক'রে কি যেন বলছে। ভাবলাম কি জানি স্ত্রীর সঙ্গে দাঁড়ানো নিয়ে কোনো ঝামেলা হ'ল কিনা। অন্যমনস্ক থাকায় খেয়াল করিনি ব্যাপারটা। সামনে দঁড়ানো দুজনের মাঝখান দিয়ে মাথাটা গলিয়ে বোঝার চেষ্টা করলাম ব্যাপারটা। শুনলাম মেয়েটি বলছে, আন্টি আপ বৈঁঠিয়ে। কথাটা বলেই মেয়েটি সিট থেকে উঠে পড়লো আর আবার বলল, আপ বৈঁঠিয়ে। স্ত্রী অনিচ্ছাসত্ত্বেও মেয়েটির আন্তরিক আহ্বানে সেই ফাঁকা সীটে বসে পড়লো। আমি হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম। যাক অবশেষে সীট পাওয়া গেল। এখনও হাওড়া অনেকদূর। মনে মনে ঠাকুরকে ধন্যবাদ জানালাম। ভাবলাম যাক মেয়েটি সামনে নেবে যাবে। ভাগ্যিস মেয়েটি হাওড়ার যাত্রী নয়। এবার আমি একটু নিশ্চিন্ত হ'লাম। বাস এগিয়ে চলেছে। আমিও আবার নিজের মনের গভীরে ডুব দিলাম। এইভাবে কতক্ষণ কেটে গেল খেয়াল করিনি। হঠাৎ সামনে দাঁড়ানো ছেলেমেয়ে দুটির হাসির ঝলকানিতে সম্বিত ফিরে পেলাম। মনে মনে ভাবলাম আরে মেয়েটা তো এখনো নাবেনি! অবাক হয়ে গেলাম! ভাবলাম তাহ'লে হয়তো সামনেই নাববে। একটু আগেই দাঁড়িয়ে পড়েছে বাস থেকে নাবতে সুবিধা হবে বলে কিম্বা দু'জনের কথা বলার সুবিধা হবে। কিন্তু দেখলাম বাস ক্রমশ ছুটে চলেছে আর এদেরও সামনে নাবার কোনো সম্ভাবনাই নেই। একই জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলে চলেছে দুজনে। ভাবলাম সামনে যদি কোথাও নাবে তাহ'লে তো দরজার সামনে এগিয়ে যাবে। কিন্তু তাও দেখলাম না। এইভাবে মনে মনে ভাবতে লাগলাম সামনে নাববে, সামনে নাববে আর ভাবতে ভাবতেই দেখলাম বাস ব্রিজের ওপরে উঠে পড়েছে। বুঝতে আর কিছুই বাকী রইলো না। আর তারপর একসময় বাস এসে থামলো ব্রিজ পার হ'য়ে তার নির্দিষ্ট জায়গায়। সবাই নাবতে লাগলো। আমিও এগিয়ে গেলাম ধীরে ধীরে দরজার দিকে তারপর নেবে পড়লাম বাস থেকে। দেখলাম বাস থেকে নেবে আসছে ছেলেমেয়ে দুজন হাসতে হাসতে আর পিছন পিছন আমার স্ত্রীও নেবে এলো। আমার পাশ দিয়ে দুজন চলে যাবার সময় মনে হ'ল মেয়েটি কি নির্বিকার! নিজে এতটা রাস্তা কষ্ট ক'রে হাসিঠাট্টার মধ্যে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এলো আর চোখেমুখে তার কোনও ছাপ নেই। মেয়েটি হনহন ক'রে এগিয়ে গেল সামনের দিকে। পিছন পিছন ছেলেটি আস্তে আস্তে ভিড় ঠেলে এগিয়ে চলেছে। আমি পাশ দিয়ে যাবার সময় ছেলেটিকে পিঠে হাত দিয়ে ডাকলাম। ছেলেটি ঘুরে দাঁড়ালো। আমি তাকে মেয়েটিকে ডেকে দিতে বললাম। ছেলেটি অবাক হ'য়ে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে তারপরে মেয়েটিকে ডাকলো। মেয়েটি কাছে এলে আমি স্ত্রীকে বললাম এই সেই মেয়েটি যে তোমাকে ভিড় বাসে ভ্যাপসা গরমে জায়গা ছেড়ে দিয়ে দীর্ঘ রাস্তা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এসেছে! কথাটা বলেই মেয়েটির মাথায় হাত দিয়ে আমি প্রাণ ভরে আশীর্বাদ করলাম। মেয়েটি আমার কথা শুনে হাসতে হাসতে ব্যাপারটাকে উড়িয়ে দিয়ে বলল, নেহি, নেহি উহ ঠিক হ্যায়, উহ কুছ নেহি। আমি আশীর্বাদ ক'রে হাসি মুখে বললাম, থ্যাংকস! ছেলে আর মেয়েটা দুজনে হনহন ক'রে চলে গেল ট্রেন ধরবে বলে। ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গেল দুজনে। আমরা দু'জনে হাঁটতে হাঁটতে সাব ওয়ের দিকে এগিয়ে গেলাম। তারপরে প্ল্যাটফর্মে এসে ট্রেনে উঠে বসলাম। এক সময় ট্রেন ছেড়ে দিল। ট্রেন ছুটে চলেছে আর মাথার মধ্যে মেয়েটির মানবিক আচরণ আমাকে মনে পড়িয়ে দিল ঠাকুরের বাণীঃ


"মেয়ে আমার, তোমার সেবা, তোমার চলা, তোমার চিন্তা, তোমার বলা পুরুষ জনসাধারণের ভিতর যেন এমন একটা ভাবের সৃষ্টি করে---- যা'তে তারা অবনত মস্তকে, নতজানু হ'য়ে সসম্ভ্রমে, ভক্তিগদ্গদ কন্ঠে-----'মা আমার,----জননী আমার'! ব'লে মুগ্ধ হয়, বুদ্ধ হয়, তৃপ্ত হয়, কৃতার্থ হয়,----তবেই তুমি মেয়ে, তবেই তুমি সতী।"


ট্রেন এসে থামলো উত্তরপাড়া স্টেশনে। আমি নেবে পড়লাম। স্ত্রী উঠেছিল লেডিস কম্পার্ট্মেন্টে। আমি তার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। ট্রেন থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে লোক নেবে এল প্ল্যাটফর্মে। ভিড়ের মাঝে ট্রেনের পিছন দিকে প্ল্যাটফর্মের ভিড়ের মাঝে চেয়ে রইলাম স্ত্রীর অপেক্ষায়। ট্রেন ছেড়ে দিল। হঠাৎ পাশ দিয়ে একজন ভিড়ের মাঝখান দিয়ে চলে গেল ফোনে কথা বলতে বলতে, মিশে গেল দূরে আরও ভিড়ের মাঝে। দেখলাম সেই মেয়েটিকে। মেয়েটির সঙ্গে আবার দেখা হ'ল। শুনলাম মেয়েটি ফোনে মাকে জানান দিচ্ছে সে এসে গেছে, এখন সে আছে উত্তরপাড়া স্টেশনে। ভিড়ের মাঝে হারিয়ে গেল মেয়েটি। জানি না আর কোনোদিন দেখা হবে কিনা। ( লেখা ৭ই সেপ্টয়েম্বর' ২০১৬)

প্রবন্ধঃ ঠাকুর ও আমরা সৎসঙ্গীরা।

প্রায়শঃই দেখি ফেসবুকে কেউ ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে কিছু পোস্ট করলেই রে রে ক'রে ডাকাত দলের মত তেড়ে আসে কিছু মানুষ রূপী অদ্ভুত জীব! আর এদের মধ্যে দীক্ষিত যেমন থাকে ঠিক তেমনি অদিক্ষিত মানুষজনও থাকে। তবে দীক্ষিত যারা থাকে তারা অবৈধ দীক্ষিত ও স্বঘোষিত দীক্ষিত! তাদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ও সংশ্রব নেই মূল কেন্দ্র সৎসঙ্গ দেওঘর-এর সঙ্গে। তারা নানারকম কুৎসা, নিন্দা, সমালোচনা, গালাগালি ইত্যদির পশরা সাজিয়ে বসে যায় ফেসবুকের আঙ্গিনায়! এদের মধ্যে বহু তথাকথিত দীক্ষিত ও অদিক্ষিত নারীও আছে! অবাক লাগে এই মাতৃসম নারী জাতি কি অবলীলায় অবহেলায় ঠাকুরকে ও ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে থাকে! ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবার নিয়ে কুৎসাকারী পুরুষ দীক্ষিত ও অদিক্ষিতদের নিয়ে আলোচনা করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে আমার নাই। তারা আলোচনার পাত্র নয়। এই ধরণের পুরুষদের পরিবারের অনেক মা, স্ত্রী ও বোন সদস্যদের দেখেছি এদের ঘৃণা করতে! পরিবারের মা, স্ত্রী ও বোনেরা এই সমস্ত পুরুষদের সরাসরি মুখে হয়তো সবাই কিছু বলে না কিন্তু তাদের অভিব্যক্তি প্রমাণ করে তারা এই ধরণের পাপ কাজকে সমর্থন করে না, ঘৃণা করে; তবে অনেকেই সামনা সামনি প্রতিবাদ করে কিন্তু ঐ সমস্ত অসংস্কৃত অসভ্য পুরুষদের তা গায়ে লাগে না! কিন্তু যখন দেখি এই ধরণের তথাকথিত দীক্ষিত ও অদিক্ষিত অসংস্কৃত জংলী পুরুষদের মত কিছু অবৈধ দীক্ষিত ও অদিক্ষিত নারীও আছে যারা কল্পনাতীত খিস্তি খেউর বাজি করে ঠাকুরকে নিয়ে ও ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তখন ভাবি কি দুর্ভাগ্য অভিশাপ নিয়েই না জন্মেছে এদের পরিবারের সন্তানেরা! এদেরও বলতে হবে মা! এরাও মা! এরাও মায়ের জাত! এদের সন্তানেরাও এদের পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র শব্দ মা নামে ডাকে! এইসমস্ত সন্তানের জন্য দুঃখ হয়! কি পরিবেশে এরা মানুষ হচ্ছে, বড় হচ্ছে! এক তো জন্মগত কি সংস্কার নিয়ে এসেছে তা তো শিশু জানে না উপরন্তু ভাগ্য ক'রে ছোট বয়স থেকে নরক তুল্য পরিবেশে বড় হচ্ছে! এইসমস্ত সন্তানেরা তাদের দুঃখময় ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য দায়ী নয়। দায়ী এদের রক্তমাংস দিয়ে তৈরি একতাল বোধ-বুদ্ধি -অনুভূতিহীন অশিক্ষিত অহং সর্বস্ব বাবা-মা! এরা ছোটবেলায় এইধরণের মায়ের সান্নিধ্যে মায়ের বিষাক্ত দুধ খেয়ে মায়ের ছোট মনের ছায়ায় বড় হয়েছে ও হচ্ছে তাই এদের ভবিষ্যৎ কি ধরণের হ'তে পারে তা নির্ধারিত! তাই রামপ্রসাদ বলেছিলেন, "জন্ম দিলেই হয় না মাতা, মা হওয়া নয়কো সহজ কথা।" তবে ব্যতিক্রম অবশ্যই থাকে! আর তারা যথার্থই ভাগ্যবান! তাদের জৈবি সংস্থিতি ও পূর্ব জন্মের সুসংস্কার তাদের ভাগ্যবান ক'রে তোলে! তারা ঐরকম অপদার্থ মা-বাবা পাওয়ার পরও স্বাস্থ্যকর বাঁচা-বাড়ার পরিবেশের সন্ধান পায় ও পেয়েছে! আর কথায় আছে, ভাগ্যবান-এর বোঝা ভগবান বয়!!!!

যাই হ'ক এবার আসল কথায় আসি।

ফেসবুকে যখন ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অশ্লীল নোংরা নরক সদৃশ ভাষা প্রয়োগে মন্তব্য পোষ্ট করা হয়, ঠাকুর বিরোধী পেজ খুলে সেই পেজে কানে গরম সীসা ঢেলে দেওয়ার মত ঠাকুরবাড়ির মায়েদের নিয়ে কুৎসিত শব্দ প্রয়োগে ফেসবুককে কালিমালিপ্ত করা হয় তখন ভাবি এদের কোন মা জন্ম দিয়েছে, কোন বাবার রেত ব'য়ে বেড়াচ্ছে!!!!! শয়তান কিলবিসও এদের মুখের ভাষায় লজ্জায় নীল হ'য়ে যাবে! আর ঠিক সেই সময় দেখা যায় এদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে কিছু দীক্ষিত গুরুভাইবোন! কখনো কখনো কিছু কিছু গুরুভাইবোনেদের মুখের ভাষাও লাগাম হারিয়ে ফেলে ভারসাম্য বজায় রাখতে না পেরে! সেইসমস্ত গুরুভাইবোনেদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চায়,

আপনারা এইসব কথার উত্তর দেন কেন? আপনাদের চুলকানি কবে বন্ধ হবে? আপনারা এখনো কার সঙ্গে কথা বলতে হয় আর কাকে ইগনোর করতে হয় এখনো পর্যন্ত তার কলাকৌশলের অ, আ, ক, খ শেখেন নি! এর থেকে ভালো হয় কোনও পোষ্ট করবেন না। কেন তৈরি না হ'য়ে ময়দানে নাবতে আসেন!? এরা কি দীক্ষিত? দীক্ষিত হ'লে আর স্টাডি করার মেটরিয়াল হ'লে এদের কথাবার্তা এমন হ'তো? কথাবার্তা আর ভাষা শুনে বুঝতে পারেন না কার কি স্ট্যান্ডার্ড!? বোঝেন না কার দৌড় কতদূর!? রেফারেন্স দিয়ে পোষ্ট করা সত্ত্বেও কোনও কোনও পোষ্টে যখন কেউ আবালের মত মন্তব্য করে, বালখিল্য কথা বলে তখন বোঝেন না এদের ইন্টেনশন কি!? বোঝেন না কি করা উচিত!? এটাও যদি শিখিয়ে দিতে হয় তাহ'লে ধ'রে নিতে হয় ঠাকুর ধরা বৃথা! বৃথা এ জনম! তখন মনে প্রশ্ন জাগে সত্যিই কি আমরা দীক্ষা নেওয়ার সময় ঠাকুরের কাছে যে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম তা পূরণ করেছি!? যে প্রেসক্রিপশন ঠাকুর আমাদের জন্য দিয়েছিলেন তা কি আমরা অনুসরণ করেছি ও করছি!? আমাদের জন্য যে হাজার হাজার বাণী দিয়েছেন তার একটা বাণীও কি পড়েছি, অনুধাবন করছি!? সত্যানুসরণ আমরা কি পড়ি!? তার একটা বাণীও কি চরিত্রে গেঁথেছি!? বিবেকের কাছে প্রশ্ন ক'রে দেখা যেতে পারে! আজ বাড়িতে বাড়িতে সৎসঙ্গ আয়োজন তার মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হ'য়ে কি বাড়ির শনি-সত্যনারায়ণ পূজার পর্যায়ে নেবে আসেনি!? যাক সে সব কথা।

যারা বলেন, এই ধরণের মানুষদের কি উত্তর দিতে হয়, কিভাবে এদের টাইট দিতে হয় সেটা আমাদের ভালোই জানা আছে তখন তাদের উদ্দেশ্যে শুধু একটা কথায় বলতে পারি, আপনাদের জানা যখন আছে তখন একটা কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি, তাহ'লে জেনে শুনে আপনারা বিষ পান করতে আগ্রহী!!!!!! আপনারা রবীন্দ্রনাথের বড় ভক্ত! "আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান, প্রাণেরও আশা ছেড়ে সঁপেছি এই প্রাণ; আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান"! এইরকম পরিস্থিতি যখন সামনে আসে তখন আমাদের কি করা উচিত এ সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুর, শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীদাদা ও শ্রীশ্রীবাবাইদাদার কি বলা আছে তা জেনে নিন! সৎসঙ্গের বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত! ডিসিপ্লিনড হওয়া উচিত! আর যদি নিজের ইচ্ছেমত চলি তাহ'লে আমার কিছু বলার নেই। আপনি/আপনারা যারা ঠাকুরের বলে যাওয়া বাণীগুলো পোষ্ট করছেন সেই মূল পোষ্টের দিকে নজর দিন আর এইভাবেই মানুষের কাছে ঠাকুরের কথা পৌঁছে দিন রেফারেন্স সহ কিন্তু দেখতে যাবেন না এর প্রতিক্রিয়ায় কে কি বললো। খারাপ, বিতর্কিত, অশ্লীল খোঁচামারা মন্তব্য যদি করে তাদের কোনও উত্তর দেবেন না, কোনও বিরোধিতায় যাবেন না। তাদের মন্তব্য ডিলিট ক'রে দিন, ডিরেইল্ড হওয়া থেকে নিজে বাঁচুন, অন্যদেরকেও বাঁচান। নতুবা একাগ্রতায় বাধা ও ভাটা পড়বে; ডিরেইল্ড হ'য়ে অন্ধকারের ঘুলঘুলাইয়ার ঘুলঘুলিতে হারিয়ে যাবেন! বিরুদ্ধবাজ শয়তানের সহচররা জিতে যাবে। ঠাকুরের মিশন জানুন, ঠাকুরের লক্ষ্য জানুন, ঠাকুরের উদ্দেশ্য জানুন, ঠাকুরের আন্দোলনের খসড়া জানুন, ঠাকুরের স্বপ্ন জানুন, ঠাকুরের আসার কারণ জানুন, ঠাকুরের ব'লে যাওয়া কথাগুলি জানুন, ঠাকুরের কান্না শুনুন আর তারপর বুক ঠুকে বলুন আমি ঠাকুরের দীক্ষিত! আমি ঠাকুরের শিষ্য, আমি ঠাকুরের অনুগামী, আমি ঠাকুরের মিশনের পতাকাবাহী সৎসঙ্গী!!!!!!! নতুবা কোটি কোটি শিষ্য হ 'য়েও লাভ নেই, ঠাকুরের আনন্দ নেই। যা করছেন সে গুড়ে বালি! সব বকোয়াস!

আমার বক্তব্য গ্রহণ ও বর্জন একান্তই আপনার/আপনাদের ব্যক্তিগত। জয়গুরু। 
( লেখা ৭ই সেপ্টেম্বর'২০১৯)

Tuesday, September 3, 2024

প্রবন্ধঃ রক্তের খেলা ও পশু হত্যার আনন্দ............

সুকৃতি সুন্দর দা একটা পোষ্ট করেছেন আর সেই পোষ্টের বিষয় নিয়ে শুরু হ'য়ে গেছে নানা মন্তব্য। কেউ বলছেন, ভুল লিখেছে, কেউ এই মন্তব্যকে ঢিল মারার সঙ্গে তুলনা করেছেন, বলছেন পশুরা অভিশাপগ্রস্থ, কোরবানির মধ্যে দিয়ে মুক্তি ঘটে, পূর্বপুরুষের রীতি রেওয়াজ, কেউ বা বলছেন, হত্যা আর জবাই এক নয়, পশু জবাই করায় নাকি স্রষ্টার কিছু যায় আসে না; এটা নাকি একটা আনন্দের মাধ্যম!!!!! কেউ আবার সুকৃতিকে অজ্ঞ ব'লে ফুঁৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন, অন্যের বিশ্বাসকে কটুক্তি করা হয়েছে ব'লে মনে করছেন। কেউ বা মনে করছেন কুরবানি নিয়ে সুকৃতি সুন্দরের কোনও মন্তব্য করার অধিকার নেই বরং মন্তব্য পরিহার করার অনুরোধ জানিয়েছেন এবং বলেছেন ধর্মীয় মূল্যবোধ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করার আগে আরও বেশী সচেতন হ'তে হবে সুকৃতি সুন্দরকে। অনেকে আবার সুকৃতি সুন্দরের এই কুরবানি নিয়ে মন্তব্য করাকে বাড়াবাড়ি ব'লে মত প্রকাশ করেছেন। আবার অনেকে সুকৃতিকে সমর্থন ক'রে বক্তব্য রেখেছেন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে সুকৃতি কি এমন মন্তব্য করেছিল যার জন্য এমন শোরগোল পড়ে গেল!? তার বক্তব্যের বিষয় ছিল 'রক্তের খেলা ও পশু হত্যার আনন্দ বন্ধ হ'ক'। তাই এই বিষয় যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী মনে হওয়ায় সুকৃতি সুন্দরদার পোষ্ট শেয়ার করলাম ও নিজের মত জানালাম।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে সুকৃতি সুন্দর কিসের বিরোধিতা করেছেন? কুরবানির নাকি কুরবানির নামে পশু হত্যার? সুকৃতির বক্তব্য বিষয় পড়ে এটা পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে যে সুকৃতি সমস্ত রকম রক্তের খেলা বন্ধ করার কথা বলেছেন এবং বলেছেন এই খেলার মাধ্যমে আনন্দ লাভ বন্ধ হ'ক সমস্ত দেশেই মায় পৃথিবীতে। এটা থেকে পরিস্কার বোঝা যায় যে সুকৃতি শুধু মুসলিম ধর্মের এই প্রথার বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন তাই নয় তিনি সমস্ত পৃথিবীতে যত ধর্ম আছে আর সেই ধর্মের নামে পশু হত্যার বিরুদ্ধে বলেছেন; আর এর মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই তার হিন্দু ধর্মও এসে পড়েছে এবং তাকে তিনি এড়িয়ে যাননি।। কুরবানির পশু হত্যার মধ্যে দিয়ে যদি নৃশংসতা, ভয়ংকরতা, অমানবিকতা ফুটে ওঠে তাহ'লে একথা কোনওভাবেই অস্বীকার করা যায় না যে সুকৃতির হিন্দু ধর্মে এই পশু হত্যার ভয়াবহতা, নির্মমতা, নৃশংসতা, বর্বরতা, অসভ্য জংলী সভ্যতা কোনও অংশে তো কম নয়ই বরং আরও বহুল পরিমাণে উৎকট ও বীভৎসভাবে প্রতীয়মান যা কিনা মানব সভ্যতার পক্ষে চরম পাপ এবং বিধাতার বিধানে ঘোরতর ক্ষমাহীন অপরাধ। আর এই বিধাতার বিধান শুধু হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ বা আর যেই ধর্মের হ'ক না কেন আলাদা আলাদা নয়। তিনি এক ও অদ্বিতীয় এবং তাঁর বিধানও এক ও অদ্বিতীয়; একথা যেন আমরা ভুলে না যাই কিম্বা বৃত্তি-প্রবৃত্তির স্বার্থে, চুলকানিতে, সুড়সুড়িতে নানারকম কথার মারপ্যাঁচে ধর্মীয় আইন-কানুন কিম্বা বিধান দেখিয়ে এবং বিধাতাকে সাক্ষী রেখে যেন কোনও শক্তিশালী অজুহাতের সৃষ্টি ক'রে অজুহাতের সৃষ্টিকর্তা হ'য়ে না বসি। এরকম নতুন নতুন নিজের নিজের বিশৃঙ্খল, উচ্ছৃঙ্খল, অদূরদর্শী, অল্প ও আধাজ্ঞানী ধান্দাবাজি জন্ম বিকৃত বৃত্তি-প্রবৃত্তির স্বার্থে উন্মাদ স্বঘোষিত সৃষ্টিকর্তারা নিজের নিজের সম্প্রদায়, নিজের নিজের জাত ও নিজের নিজের ধর্ম ইত্যাদির মধ্যে সাম্প্রদায়িক, বজ্জাতি ও অধর্মীয় আচরণের সৃষ্টি ক'রে নিজেরাই স্বঘোষিত সৃষ্টিকর্তা হ'য়ে বসে গেছে। স্বয়ং ঈশ্বর মানুষের রূপ ধ'রে মানুষের মাঝে বারবার নেবে আসা সত্তেও এইসমস্ত ভন্ড ও কপট ইশ্বরপ্রেমী মানুষেরা ঈশ্বরের সঙ্গে বেইমানি ক'রে চলেছেন চার অক্ষর মানুষদের সাহায্যে। এছাড়া স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে, স্বার্থ পোষণ পায় তেমনি বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে আপাদমস্তক ডুবে থাকা সীমাহীন ভাঙাচোরা তথাকথিত শিক্ষিত মানুষের দ্বারা ঈশ্বর প্রেরিত অবতারের ধর্ম্মগ্রন্থের ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ ও মূল গ্রন্থের অনুবাদ সমস্যাকে আরও জটিল ও রহস্যঘন ক'রে তুলে ধর্মকে, সম্প্রদায়কে, জাতকে ঘেঁটে ঘ ক'রে দিয়েছে। প্রায় সময় অনেককে বলতে শুনি, 'ধর্ম যার যার দেশ সবার'। এটা যে কত বড় ভুল আজও আমরা তা ভেবে দেখিনি। আমরা আজও দেখি ধর্ম নিয়ে মারামারি, কাটাকাটি, খুনোখুনি। এইখানে এই কমেন্টের মধ্যেও অনেককে বলতে দেখলাম----সে হিন্দু, মুসলমান যে সম্প্রদায়ের হ'ক না কেন----অন্য ধর্মের ব্যাপারে নাক না গলাতে। যেন ধর্ম এবং ঐ ধর্মের প্রবক্তা ঐ ধর্মের লোকেদের একচেটিয়া পৈতৃক সম্পত্তি আর ঐ একই কথারই পুনরাবৃত্তি, 'ধর্ম যার যার দেশ সবার'। মনে হয় যেন রামায়ণ, মহাভারত, কোরান, বাইবেল, ত্রিপিটক, চৈতন্য চরিতামৃত, কথামৃত, সত্যানুসরণ এই সমস্ত গ্রন্থ সেই সেই ধর্মের অনুগামীদের পৈতৃক সম্পত্তি!


The greatest phenomenon of the world SriSriThakur Anukulchandra-এর কাছে এসে জানলাম, "ধর্ম কখনও বহু হয় না, ধর্ম্ম একই আর তার কোন প্রকার নেই। মত বহু হ'তে পারে, এমনকি যত মানুষ তত মত হ'তে পারে, কিন্তু তাই ব'লে ধর্ম্ম বহু হ'তে
পারে না। হিন্দুধর্ম, মুসলমানধর্ম্ম, খৃস্টানধর্ম্ম, বৌদ্ধধর্ম্ম ইত্যাদি কথা আমার মতে ভুল, বরং ও-সবগুলি মত। কোনও মতের সঙ্গে কোনও মতের প্রকৃতপক্ষে বিরোধ নেই, ভাবের বিভিন্নতা, রকমফের-----একটাকেই নানাপ্রকারে একরকম অনুভব। সব মতই সাধনা বিস্তারের জন্য, তবে তা' নানাপ্রকারে হ'তে পারে। আর, যতটুকু বিস্তারে যা' হয় তাই অনুভতি, জ্ঞান। তাই ধর্ম্ম অনুভুতির উপর।"


এবার আমরা যদি এই অনুভূতির উপর দাঁড়ায় তাহ'লে কি দেখতে পাবো? দেখতে পাবো এই ধর্মের নামে পশু হত্যা সম্পর্কে সুকৃতি সুন্দর যা বলেছেন এবং তার উত্তরে যে বা যারা যারা পক্ষে ও বিপক্ষে যে মত প্রকাশ করেছেন তাতে এই 'অনুভূতির' ব্যাপারটাই তীব্রভাবে স্পষ্ট হ'য়ে উঠেছে। সুকৃতি সুন্দর তাঁর মন্তব্যে এই 'অনুভুতি'কেই প্রাধান্য দিয়েছেন এবং আরো কয়েকজন এই একইভাবে তাদের মন্তব্যে 'অনুভূতি'র পক্ষেই জোরালো সওয়াল করেছেন। কিন্তু যারা এর বিরোধিতা করেছে তারা প্রকৃত পক্ষে ঐ অন্ধকার বস্তাপচা হাজার হাজার বছরের পুরোনো ট্রাডিশান 'বলি বা কুরবানি'র ভুল অর্থের পূজারী। মিথ্যাকেই তারা সত্য ব'লেই জেনেছে। 'কি 'বলি', কেন 'বলি' বা কুরবানি কি?' এই সমস্ত অর্থের গভীরে যাওয়ার ক্ষমতাই নেই। এই ধর্ম্মের নামে পশু হত্যা সম্পর্কে ও পশু হত্যার বিরুদ্ধে সমস্ত মনিষীরাই জোরালো প্রতিবাদ ক'রে গেছেন; কিন্তু ধর্মীয় কুসংস্কার ও কপট মানুষেরা দুর্বল মানুষকে, ভীরু মানুষকে, অজ্ঞ ও মূর্খ মানুষকে, লোভী মানুষকে আচ্ছন্ন ও ভীত, সন্ত্রস্ত ক'রে রেখেছে। সমস্ত সম্প্রদায়ের এই আছন্ন ও ভীত সন্ত্রস্ত মানুষেরা মনে ক'রে তাদের ধর্ম্মের (?) ঈশ্বর প্রেরিত পুরুষ ও তাঁদের মুখ নিঃসৃত বাণী উভয়ই তাঁদের পৈতৃক সম্পত্তি; তাঁদের ধর্ম্মের (?) মানুষেরা ছাড়া আর কারও কোনও অধিকার নেই এই সম্পত্তিতে। আর এদের জন্যই ঈশ্বর প্রেরিত পুরুষ স্বদেশে কলঙ্কিত, লাঞ্ছিত ও অপমানিত হন এবং শয়তান পুজা পান ও মানুষ সীমাহীন দুঃখকষ্ট ভোগ করে। প্রবি।

( লেখা ৪ই সেপ্টেম্বর'২০১৭)


Adv Sukriti Sundar Mondal

September 3, 2017 ·

চলছে রক্তের খেলা। সারা দেশ জুড়ে পশু হত্যার আনন্দ। আর, এ পশু হত্যা হচ্ছে, হত্যাকারীদের সৃষ্টকারীর সন্তুষ্ট লাভের জন্য।
অন্যকে হত্যা করে কি করে আনন্দ করা যায়?
একটা দীর্ঘ নীঃশ্বাস ছাড়া আর কিছুই বলার নাই!
বন্ধ হোক সব রক্তের খেলা, তা মায়ানমার, বাংলাদেশ, আফগানিস্থান, সিরিয়া, ভারত, ইরাক সব খানে।

খোলা চিঠিঃ বাচ্ছু কীর্তনীয়াদাদাকে ২য় খোলা চিঠি।

আপনার প্রথম পোষ্টের স্বপক্ষে সাফাই স্বরুপ আপনার দ্বিতীয় পোস্ট পড়লাম। আপনার প্রথম পোষ্টে সৎসঙ্গ জগতের গান সংক্রান্ত আপনার ব্যক্তিগত মতকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য দ্বিতীয়বার আরও মজবুত ক'রে বিরুদ্ধতার কলম ধরলেন প্রকাশ্যে এবং আপনার বিরুদ্ধ মতকে ছক্কা মেরে উড়িয়ে দিলেন। তাই আমিও আপনার প্রকাশ্যে কলম ধরার জন্য ও আপনার বক্তব্যকে খন্ডন করার জন্য এবং আপনার মহানুভবতার প্রকাশ্য প্রচারকে সামনে তুলে ধ'রে বর্তমান সৎসঙ্গ ধারার বিরোধিতার বিরুদ্ধে কলম ধরার জন্য প্রকাশ্যে আবার আপনাকে খোলা চিঠি লিখলাম। আপনি যে আপনার প্রথম পোষ্টের বক্তব্যে সঠিক ছিলেন তা নানা বিশ্লেষণে আরও বিশদে ব্যাখ্যা করলেন আপনার দ্বিতীয় পোস্টে। আর ব্যাখ্যার শেষে লিখলেন, "-----------------এইসব অনেক কথা বলা যায় সেগুলো আর বলবো না। কারণ ---------------আবার হৈ হট্টগোল শুরু ক'রে দেবে কিছু মানুষজন। তারা এতবড় ভক্ত যে তাদের বোঝানোও আমার অসাধ্য।"

এখন আমার প্রশ্নঃ
১) আপনি আপনার প্রথম পোষ্টের মত দ্বিতীয় পোষ্টেও বর্তমান বাদ্যযন্ত্রসহ গান প্রসঙ্গে তীব্র সমালোচনার পড়েও আর কি অনেক কথা বলবেন? আপনার দু'দুটো পোস্টে বর্তমান সৎসঙ্গের গানের ধারা প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে বিশদে সমালোচনা সত্ত্বেও মন ভরছে না? মন শান্ত হচ্ছে না? এত দুশ্চিন্তা কিসের? আপনি কি হারাচ্ছেন? সৎসঙ্গ জগতের কি ক্ষতি হচ্ছে? সৎসঙ্গ জগতে মালিক নেই? কে বা কারা হৈ চৈ হটগোল করছে? কে প্রথম হৈ চৈ হট্টগোলের সূচনা করলো? কে বিরোধিতার আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছড়ালো সৎসঙ্গ জগতে? তুমি মহারাজ সাধু হ'লে আজ বাকীরা আজ অসাধু বটে? আপনার কথার বিরোধিতা করলেই তাদের 'বড় ভক্ত' ব'লে ব্যাঙ্গ করবেন আর আপনি সৎসঙ্গ জগতের বর্তমান গানের ধারার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কটুক্তি সহ নানা যুক্তির অবতারণা ঘটিয়ে তীব্র সমালোচনা করবেন আপনার পক্ষে সমর্থনসূচক আর্জি নিয়ে আপনার পরিচিত জনের কাছে ভিক্ষা চেয়ে আর আচার্য পরম্পরাকে অসম্মান অবমাননা করবেন তখন যদি আপনাকে বলা হয় আপনি আচার্যদেব ও ঠাকুরবাড়ির শ্রীশ্রীদাদাদের থেকেও উচ্চকোটির বা ঈশ্বরকোটি পুরুষ তখন আপনার কাছে এই উপাধি ব্যাঙ্গ ব'লে মনে হবে নাতো? আপনি খুশী হবেন তো? মেনে নেবেন তো এই তকমা?


২) আপনার লেখার সমালোচকদের আপনি ''বড় ভক্ত' ব'লে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করতে পারেন আর আপনাকে কেউ গান সম্পর্কে যদি কোনও প্রশংসাসূচক বিশেষণ প্রয়োগ করেন তখন সেটা দোষের? আপনার প্রকাশ্যে সমালোচনা করা, ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা দোষের না?

এরপরে আপনি আপনাকে যারা গালাগালি দিচ্ছে বলছেন, ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করছে বলছেন, পরিবার নিয়ে, গান নিয়ে, রোজগার নিয়ে কটুক্তি, দয়া করছে বলছেন তাদের বিরুদ্ধে আপনি কি করছেন?

আপনি লিখেছেন, আপনি তাদের ভালোবাসা জানাচ্ছেন, ভালো থাকার কামনা করেছেন। কিন্তু পরমূহুর্তে কি লিখছেন? এ সম্পর্কে আপনি লিখেছেন, "এ সমস্ত যার যার রুচির পরিচয়, পারিবারিক শিক্ষার পরিচয়।"
এখানে আমার প্রশ্নঃ

আপনি এদের উদ্দেশ্য ক'রে বলেছেন, এরা মানসিক অসুস্থ। এবং এদের উদ্দেশ্যে মূর্খ, তুই, তোকারি ক'রে মন্তব্য করেছেন। এক্ষেত্রে আপনার রুচির, আপনার পারিবারিক শিক্ষার কি পরিচয় পাওয়া গেল?
আবার আপনার লেখার শেষে অভিমান ফুটে উঠেছে আপনার আপনজনরা কেন আপনার হ'য়ে প্রতিবাদ করেনি। তাদেরও আপনি বুক ভরা অভিমান নিয়ে ভালোবাসা জানিয়েছেন, ভালো থাকার প্রার্থনা করেছেন। এটাকে কি বলবো? আপনার পক্ষে সহানুভূতি টানার হ্যাংলামো না ব্ল্যাকমেইল?

আচ্ছা আপনার মনে আছে আপনার প্রথম পোষ্টে যখন আমি মন্তব্য করেছিলাম তখন দু'জন আমার মন্তব্যের সমর্থনে মন্তব্য করেছিলেন ব'লে আপনি তাদের কি বলেছিলেন? বলেছিলেন তারা নাকি আমার লোক! যদিও আমি তাদের চিনিও না। যদি তাদের ও তাদের উদ্দেশ্যে করা আপনার মন্তব্য ডিলিট না ক'রে থাকেন তাহ'লে দেখে নিতে পারেন। মনে হয় নেই। ডিলিট হ'য়ে গেছে।

এবার আসি শেষ প্রশ্নেঃ
আপনি আপনার করা প্রথম ও দ্বিতীয় পোস্ট ডিলিট করবেন না বলেছেন। ডিলিট করা বা না করা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু একথাও আপনাকে জানিয়ে রাখি যতবার আপনি প্রকাশ্যে বর্তমান সৎসঙ্গ ধারা তা সে গানের ধারা হ'ক, সৎসঙ্গ পরিচালনার ধারা হ'ক কিম্বা আচার্য পরম্পরার এবং ঠাকুরবাড়ির বিরোধিতার জন্য কলম ধরবেন ততবারই আমি আপনাকে প্রকাশ্যে চিঠি লিখবো।

এবার আসি সরাসরি আপনার ভালোমানুষির প্রশ্নে। আমি যখন আপনার প্রথম পোষ্টে মন্তব্য করলাম তখন তার উত্তরে আপনি আমাকে রেগে গিয়ে যে অপমান, লাঞ্চনা, কটুক্তিতে ভরা দীর্ঘ কমেন্ট করলেন তা ডিলিট করলেন কেন? আপনি উত্তেজিত হ'য়ে হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হ'য়ে কি লিখেছিলেন আপনার মনে আছে? আপনার আমাকে লেখা কমেন্ট সমস্ত গুরুভাইবোন পাঠককূলকে পড়তে দিলেন না কেন? কেন মুছে দিলেন? দেখতাম আজ যারা আপনার বিনয়ের পক্ষে, মহানুভবতার পক্ষে কলম ধরেছেন তখন আপনার আমাকে লেখা কটুক্তিতে ভরা কমেন্ট পড়ে কি বলতো, কি লিখতো। আমাকে লেখা আপনার একটা দু'টো কটুক্তি মনের ঘর থেকে বের ক'রে এনে আপনার স্মৃতি শক্তিকে জাগ্রত করার জন্য তুলে ধরলাম। আপনি লিখলেন, আমার বয়সের কথা ভেবে নাকি আপনি আমাকে ছেড়ে দিচ্ছেন। কিছু বলছেন না। আমার জিজ্ঞাস্যঃ আপনি আমাকে ছেড়ে দিচ্ছেন দয়া ক'রে। যদি বয়স কম হ'তো কি করতেন? মারতেন? খুন করতেন? এছাড়া লিখলেন, আমার লেখার কোনও মাথামুণ্ডু নেই। অর্থহীন পাগলের প্রলাপ। আমার দু'একটা লেখা নাকি আপনি ফেসবুকে পড়েছেন। তখন দেখেছেন, সব লেখা ফালতু। আজেবাজে ভিত্তিহীন সব লেখা। তাই আমার এই কমেন্টও ফালতু, এর কোনও গুরুত্ব আপনার কাছে নেই ইত্যাদি ইত্যাদি আরও অনেক আপত্তিজনক ক্রোধান্বিত দীর্ঘ মন্তব্য। যা লিখে আপনাকে আর বেশী লজ্জায় ফেললাম না, লেখা আর দীর্ঘ করলাম না।
যাক আপনি আমার 'রা' নন্দিত জয়গুরু জানবেন ও অকৃত্রিম ভালোবাসা নেবেন।
----------প্রবি। ( লেখা ৪ই সেপ্টেম্বর'২০২২)

কবিতা/গানঃ ওগো দয়াল পরমপিতা।

আমায় চলনপূজার মতি দাও
ওগো দয়াল পরমপিতা।
তুমি বিশ্বপিতা, জগৎপিতা
জগত জুড়ে মহিমা
বিশ্বপিতা।
তুমি বিশ্বপিতা, জগৎপিতা
(তোমার) জগত জুড়ে মহিমা
ছড়িয়ে আছে তোমার লালিমা।
আমায় চলনপূজায় মতি দাও
ওগো দয়াল পরমপিতা।

তোমার রাঙা চরণে পুজি চলন চন্দনে
চলন পুজায় পুজে তোমায় সাজায় যতনে।
তুমি আমার পতি জগৎপতি
জগত জুড়ে গড়িমা
তুমি আমার পতি,
তুমি আমার পতি, জগত পতি
তোমার জগত জুড়ে গরিমা
তোমার স্পর্শে হলাম আলিমা।
তোমার চলন পূজায় মতি দাও
ওগো দয়াল পরমপিতা।

তুমি রাম নামেতে, তুমি কৃষ্ণ নামেতে
বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু নামে।
তুমিই রামকৃষ্ণ হ'য়ে প্রভু
এসেছিলে ধরাতে,
রামকৃষ্ণ,
তুমিই রামকৃষ্ণ হ'য়ে প্রভু
এসেছিলে ধরাতে,
মোদের সবার জীবন বাঁচাতে।
তোমার চলন পূজায় মতি দাও
ওগো দয়াল পরমপিতা।

খোলা চিঠিঃ বাচ্চু কীর্তনিয়াদাদাকে।

আপনার একটা লেখা পড়লাম। আপনি যেহেতু প্রকাশ্যে ফেসবুকে লিখেছেন তাই একজন সৎসঙ্গী ও পাঠক হিসেবে প্রকাশ্যেই খোলা চিঠি লিখলাম। আপনার লেখায় আপনি বর্তমানে সৎসঙ্গে আধুনিক বাদ্যযন্ত্র সহযোগে গাওয়া গানের বিরোধিতা তথা তীব্র সমালোচনা করেছেন। করেছেন ভিতরে চাপা একটা বিরক্তিকে সাথী ক'রে। যা আপনার লেখায় প্রকাশ পেয়েছে পুরাতনী সঙ্গীতের পক্ষে প্রশংসাসূচক ওকালতির মাধ্যমে।

আপনার লেখা পড়ে মনে হ'লো আপনি দ্বিচারিতায় ভুগছেন। কিছু একটা বলতে চাইছেন কিন্তু খোলাখুলি বলতে পারছেন না। কোথায় যেন সততায় বাধছে। একদিকে বলছেন আধুনিকতার আপনি পূজারী আবার অন্যদিকে আধুনিকতার বিরোধিতা করছেন প্রাচীনকে স্মরণ ক'রে। আপনার লেখা পড়ে মনে হ'লো ঈশ্বর আরাধনা, ঈশ্বর আরাধনার সৌন্দর্য, মধুরতা, ভক্তিভাব ইত্যাদি নির্ভর করে একমাত্র সেই পুরাতন হরি বোল ঢঙে খোল করতাল বাজিয়ে। আধুনিক মানেই যে হৈ হট্টগোল নয়, শ্রুতি কটু নয়, উচ্ছৃঙ্খল বিশৃঙ্খল নয় সেটা আমরা অতি ভাবের আবেগে হারিয়ে ফেলি। বহু আধুনিক যন্ত্র সহযোগে ঈশ্বর আরাধনার বহু বিখ্যাত গান আমরা ইউ টিউব খুললেই শুনতে পাই। শুনতে পাই ইদানিং নতুন প্রজন্মের গাওয়া শ্রীশ্রীদাদা, শ্রীশ্রীবাবাইদাদা, শ্রীশ্রীবিংকিদাদা, শ্রীশ্রীসিপাইদাদা, শ্রীশ্রীঅবিনদাদা ও ঠাকুরবাড়ির দাদাদের লেখা ও সুর দেওয়া একের পর এক অসাধারণ মাধুর্যপূর্ণ গানগুলি। আপনাদের ধারণা ঈশ্বর বা ঈশ্বর আরাধনা মানেই আধুনিকতা বর্জিত মান্দাতার আমলের যখন নতুন কোনও কিছুর আবিস্কার হয়নি সেই পুরাতন স্টাইলকে জড়িয়ে ধ'রে রাখা। যেমন ঠাকুর হাজার হাজার বছরের ঈশ্বর আরাধনা বা পূজার অর্থ ও পদ্ধতির খোলনলচে আমূল-পরিবর্তন ক'রে চলন পূজার পথ দেখিয়েছেন সেই দেখানো পথেও বিতর্ক তুলেছে তুলছে পুরাণের আরাধনা বা পুজার নানা উদাহরণকে সামনে রেখে কূটকচালকে তোল্লা দিয়ে একশ্রেণীর অতি সনাতনী ভক্তের দল। বিতর্ক তুলেছে তুলে চলেছে তথাকথিত সৎসঙ্গীর দল।

এ কথা সত্য যে সবার সব ভালো নাই লাগতে পারে তাই ব'লে বিতর্ক তৈরী ক'রে আধুনিকতার সমালোচনা ক'রে বাহবা লাভ করা যায় না। সৎসঙ্গে বর্তমানে আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের সাহায্যে যে অসাধারণ গানগুলি গাওয়া হয় সেগুলিতে কি ঈশ্বর আরাধনার ভক্তিভাব চটকে গেছে? আধুনিক মানেই যেমন মনোজ্ঞ নয় ঠিক তেমনি হাজার বছরের বিকৃত গলায় 'হরে-এ-এ-এ' ব'লে চিৎকারও মনোজ্ঞ নয়। এক একজায়গায় উদোম খোল ঢোল করতাল সহযোগে পুরাতনকে আঁকড়ে ধ'রে বিকৃত সুরে আসুরিক ভঙ্গিতে যখন 'হরে কৃষ্ণ' ব'লে চেচিয়ে ওঠে তালজ্ঞানহীন ভক্তির আতিশয্যে একদল মানুষ মন্দিরে মন্দিরে তখন যে মানুষের শুধু বিরক্ত লাগে তা নয় তখন তা শব্দদূষণের আওতায় প'ড়ে স্বয়ং ঈশ্বর দ্বারকানাথ, বৈকুন্ঠনাথ, আমার প্রাণনাথ, প্রাণবল্লভ প্রাণ বাচাতে কাছা খুলে হাতের বাশী ফেলে দৌড়ে পালান উন্মাদের মত। লুকোনোর মত জায়গা খুঁজে পান না।
আর, এখন সৎসঙ্গে যে নতুন নতুন অপূর্ব প্রাণ জুড়ানো কথার সঙ্গে প্রাণ মাতানো সুরে যে গানগুলি হয় সেগুলি তো আধুনিক যন্ত্র সহযোগেই হয়; তাই নয় কি? তা সেগুলি তো সৎসঙ্গে প্রকাশ্যেই হয় সেগুলির সুরকার কারা? আপনি সেখানে কি বলবেন? সব কুরুচীকর সুরে ভরা আধুনিকতার বিকৃত ডামাডোলের বহির্প্রকাশ? যা বলবার খোলামেলা বলুন। ঈঙ্গিতপূর্ণ কথা ব'লে নতুন বিতর্ক তৈরী করবেন না। বিতর্ক তৈরী করা সহজ, আগুন জ্বালানো সহজ, ঘৃণা জন্মানো সহজ, দোষ ধরা, ত্রুটি খুঁজে বের করা সহজ, ভালো না লাগার আবহাওয়া, পরিবেশ রচনা করা সহজ; এতে আপনি অনেক আপনার মতের অনুগামী পেয়ে যাবেন কিন্তু অহেতুক একটা দু'টো আধুনিক হল্লা গানের দোহাই দিয়ে বাজার গরম করা ভালো না। কারণ আপনি যা বোঝেন তা অন্য হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি ভক্ত বৃন্দের কথা না হয় ছেড়ে দিলাম ঠাকুর বাড়ির পূজ্যপাদ দাদারা বোঝেন না ব'লে কি আপনার মনে হয়? তখন প্রশ্ন উঠতে পারে ঈশ্বর আরাধনার নামে হরি নামের জোয়ার তুলে গ্রামে গ্রামে পাড়ায় পাড়ায় হাটে মাঠে ঘাটে সূর তালহীন বিকৃত গলায় যখন আসুরিক হিক্কারে আকাশ বাতাস গরম করা হয় তখন আপনার সুর মাধুর্যে ভরা মস্তিষ্ক কি বলে? সেগুলি ঠিক? যখন গগনভেদী বিকট ঢাক ঢোল পিটিয়ে ঘন্টার পর ঘণ্টা শব্দদূষণের তোয়াক্কা না ক'রে আকাশ ভেদ ক'রে ঈশ্বরকে টেনে হিচড়ে নীচে নাবিয়ে আনার তীব্র প্রতিযোগিতা চলে রাতভোর তখন আপনার কলম নেটের বুকে বিদ্রোহ ঘোষণা করে? করে না। সৎসঙ্গের বিরোধিতা করাটা একটা সহজ স্বাভাবিক ব্যাপার। এটা হ'য়ে আসছে ঠাকুর পরবর্তী সময় থেকে যখনই প্রচলিত নিয়ম থেকে নতুন কিছুকে সৎসঙ্গে আহবান জানানো হয়েছে তখন থেকে। আপনাকে কে বললো শুধু খোল করতালেই ভক্তি ভাব থাকে? এটা আপনার ব্যক্তিগত মতামত হ'তে পারে। কিন্তু সমগ্রের উপর চাপিয়ে দেওয়ার প্রয়াস না চালানোয় ভালো। এতে সামগ্রিক ক্ষতি হয়, লাভের লাভ কিছুই হয় না। এই দু'দিন আগে আমারও আধুনিক যন্ত্র সহযোগে হওয়া একটা সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান ভালো লাগেনি। তাই ব'লে আধুনিকতার ছোয়াকে সমূলে উৎখাত করতে নেবে পড়িনি ফেসবুকে। আপনি চূড়ান্ত আধুনিকতার ছোয়ায় তৈরী অবিনদাদার কম্পোজিশনে তৈরী ঠাকুরের ইংরেজি বাণীর গানটা শুনেছেন? যে গানটা বিদেশী ভক্তদের মাঝে এমনকি বিদেশী ইয়ং জেনারেশনের মাঝে ঝড় তুলেছে। তাই বলি, কলম ধরার আগে, কিছু বলার আগে, কিছু লেখার আগে একবার ভাবুন। হাত থেকে তীর বেরিয়ে গেলে তা আর ফিরে আসে না। সেই তীর বিরোধীদের বিরোধকে শক্তিশালী ক'রে তোলে আর ঠাকুরবাড়ি ও ঠাকুরবাড়ির সদস্যদের ভাবমূর্তিতে অহেতুক ভয়ংকর আঘাত হানে; যা আমাদের কাম্য নয়। আপনার লেখা বেরোতে না বেরোতেই দেখুন কমেন্টের ঝড় বইছে। এতে হয়তো আপনার ভালো লাগতে পারে কিন্ত আম ভক্ত বললেই তা সত্য হয় না। মন্তব্য পড়ে মনে হচ্ছে সবাই গানের জগতের বিশেষজ্ঞ পি এইচ ডি। যেমন, জনগণের কথা ঈশ্বরের কথা; এটা ভুল প্রবাদ। জনগণের কথা ঈশ্বরের কথা নয়। কোন জনগণ? বৃত্তি প্রবৃত্তির রসে টই টম্বুর রিপু তাড়িত জনগণের কথা ঈশ্বরের কথা? না; তা নয়। পূরণপুরুষ পরমপিতার কথা ঈশ্বরের কথা। ঠিক তেমনি কারা গানের বিশেষজ্ঞ? -----------------------?
কথায় আছে যার যেমন ভাব তার তেমন লাভ। আমার ভালোবাসা ও জয়গুরু জানবেন।
ইতি, প্রবি। 
( লেখা ৩রা সেপ্টেম্বর'২০২২)

কবিতা/গান" নব বৃন্দাবন।

মোদের দয়াল এসেছে রে নব বৃন্দাবন
(দেওঘরের) নব বৃন্দাবন!
যেথা রাজার রাজা দয়াল আমার
সাজে আকিঞ্চন, নব বৃন্দাবন!
যেথা সকাল সন্ধ্যা বারো মাসে
বাঁচার টানে মানুষ আসে
দিনেরাতে বারো মাসে
বাড়ার পথ মানুষ খোঁজে
(প্রভুর) গায়ের সুবাস ছড়িয়ে আছে ঠাকুর নিকেতন!
নব বৃন্দাবন!
দেওঘরের নব বৃন্দাবন!
যেথা রাধা নামের ঢেউ ওঠে রে নদী দারোয়ায়
ডিগরিয়ার পাহাড় তলে প্রভুর হাসি শোনা যায়
আজো যাহার জাম তলে গন্ধ ভাসে সাঁঝ-সকালে
পদধ্বনি যায় শোনা মধুর কম্পন!
মোদের দয়াল এসেছে রে নব বৃন্দাবন
(দেওঘরের) নব বৃন্দাবন!
( লেখা ৩রা সেপ্টেম্বর'২০২০)

Monday, September 2, 2024

বিচিত্রা ৩০

তিনি আছেন আর আপনি আছেন ব্যস আর কি চাই? সবসময় বিন্দাস থাকুন। ফুর্তিতে থাকুন। আনন্দে থাকুন।
আপনি ঠাকুর ধরেছেন মানে আপনার একজন আছে যাকে আপনার মনের সব কথা বলতে পারবেন, তাঁর সঙ্গে কথা বলুন।

আপনার বিপদের দিনে, সমস্যার দিনে কেউ নেই মানে আপনি কোনোদিন কারও জন্য ছিলেন না। ঠিক আছে। কিন্তু ঠাকুর আছে আপনার, ভয় কি?

আপনার বিপদের দিনে, সমস্যার দিনে কেউ নেই মানে আপনি কোনোদিন কারও জন্য ছিলেন না। ঠিক আছে। কিন্তু ঠাকুর আছে আপনার, ভয় কি?

আপনি ঠাকুরকে গ্রহণ করেছেন জীবনে, তারপর তাঁকে ছেড়ে দিয়েছেন, তাঁর জন্য কিছু করেননি, করেননা। কিন্তু ঠাকুর আপনাকে ছাড়েননি।
( লেখা ১লা সেপ্টেম্বর' ২০২৪)

বিচিত্রা ২৯

সমস্ত সমস্যার সমাধান একমাত্র এ যুগের যুগাবতারের দেওয়া বীজনাম।
নামময় হ'য়ে থাকো আর নামের নামিকে কাজ করতে দাও। তাঁকে অবিশ্বাস ক'রো না।
ভয় পেও না। নাম করো। অনুরাগের সঙ্গে নাম করো আর বিন্দাস থাকো। সব তাঁর ওপর ছেড়ে দাও। দ্যাখো ম্যাজিক।

নাম থেকেই সব সৃষ্টি। নামের ভয়ংকর তীব্রতায় পৃথিবী ভেঙে টুকরো টুকরো হ'য়ে যেতে পারে! এসো নাম করি। শয়তান ছিন্নভিন্ন হ'য়ে যাবে।
যে নামময় থাকে তাকে লক্ষণ রেখা ঘিরে রাখে। রাবণের বাপ তাকে ছুঁতে পারে না।

তোমার সামনে পিছনে, উপরে নীচে, ডাইনে বাঁয়ে সর্বত্র শয়তান বিরাজমান। নাম রসে ডুবে যাও আর শয়তানের পরিণতি ঠাকুরের ওপর ছেড়ে দাও।
নাম করো। আরাম ক'রে মনে মনে নাম করো। মুহূর্তে বিপদের কালো মেঘ কেটে যাবে। তুমি বিপদমুক্ত হবেই হবে, নিশ্চয়ই হবে।

আর এই নিয়ে, কারও সঙ্গে তর্ক করতে যেও না, সবাইকে সবার বুঝ নিয়ে থাকতে দাও। তুমি নামময় হ'য়ে থাকো।
(লেখা ৩১শে আগষ্ট'২০২৪)