Powered By Blogger

Monday, January 19, 2015

অবশেষে গীতা স্কুলের পাঠ্যক্রমে



আজ এতদিন পর অবশেষে গীতা স্কুলের পাঠ্যক্রমে যুক্ত হল। একেবারে কোনদিন না হওয়ার চেয়ে দেরীতে হওয়াও ভালো। এর পাশাপাশি উঠে গেল নানা বিতর্কও। বিতর্ক দানা বাঁধাতে বিবেকানন্দকেও টেনে আনা হবে ও হচ্ছেও। বিবেকানন্দের বলা গীতা পড়ার চেয়ে ফুটবল খেলা ভালোএই ক্ষেত্রে বিরোধীদের মোক্ষম অস্ত্র। স্বামীজীর এই কথা অনেককেই বলতে শুনি। বিশেষ করে বামপন্থীদের যখনই ধর্ম্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেখা যায় তখনই যেন এই বাণীটা তারা ধর্ম্মের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসাবে পেয়ে যায় এবং প্রয়োগ করে। এখন প্রশ্ন স্বামীজী কি গীতার বিরুদ্ধে ছিলেন। আর ফুটবল খেলার কথা কেন বলেছেন? আমাদের দেখতে হবে কোন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে স্বামীজী এই কথা বলেছেন। আসলে দেখা গেছে তথাকথিত ধর্ম্মীয় পন্ডিতরা গীতাকে উত্তাল সংসার সমুদ্রে জীবনতরীকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দেবার শ্রেষ্ঠ মার্গ হিসাবে যতটা না দেখেছেন তার থেকে বেশী পবিত্র এক ধর্ম্ম পুস্তক রূপে গীতাকে কুলঙ্গিতে সযত্নে তুলে রাখা শ্রেয় মনে করেছেন। আর তাঁরা যদি কেউ গীতা পড়েও থাকেন তাহলেও তাঁরা বই পড়ে বই হয়ে গেছেন, বই-এর মূল এসেন্সকে মজ্জাগত করেননি। যদি বই-এর মূল এসেন্সকে মজ্জাগত করতে পারতেন তাহলে ভারতের সমাজ ব্যবস্থা, ধর্ম্মীয় বাতাবরণ ও যুবসমাজের আজ এই হাল হতো না। ফলে বিবেকানন্দেরও এই ধরণের মন্তব্য করার কোনো প্রয়োজন হ না, যে মন্তব্য আজ সুযোগ সন্ধানী রাজনীতিকদের, আধাজ্ঞানী পোঙ্গা পন্ডিতদের অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর বই-এর মূল এসেন্সকে মজ্জাগত না করে শুধু বই পড়ে বই হওয়ার চেয়ে ফুটবল খেলে শরীর-মন তরতাজা রাখা, শক্তসমর্থ করা অনেক অনেক ভালো।
এছাড়া অনেকে যুক্তি দেখায় যে গীতা কঠিন এক বিষয় যা কিনা বোঝা খুব কঠিন। এক্ষেত্রে একে কুযুক্তি ছাড়া আর কিছু বলা যায় না। কারণ যখন প্রথম স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ শেখা শুরু করেছিলাম সেদিন কি স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ শেখা,বোঝা সহজ হয়েছিল এবং এর কার্যকারিতা বুঝতে পেরেছিলাম? শৈশবে যখন হাঁটা শেখা শুরু হয়েছিল তখন কেউ তার আঙ্গুল বা হাত বাড়িয়ে দিয়ে হাঁটা শিখিয়েছিল যা পরবর্তীতে দৌড়নোতে পরিণত হয়। তাই কোনও জিনিস কঠিন না, যদি শেখার, জানার ও বোঝার ইচ্ছে থাকে ও শেখাবার, জানাবার ও বোঝাবার প্রকৃত প্রাজ্ঞ মানুষ থাকেন। মানুষের জীবনের অভিধানে অসম্ভব বলে কোনও কথা নেই। তবে এই উদ্যোগ নিতে দেরি হলেও লক্ষ্য রাখতে হবে গীতা শিক্ষা যেন এক একজনকে মস্ত বড় একটি বই’-এ পরিণত না করে, পোঙ্গা পন্ডিত না বানায়।
হরিয়ানা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আন্তরিক স্যালুট জানাই।

No comments:

Post a Comment