সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে শাসক দলের হ’য়ে মামলা লড়বেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী
কপিল সিব্বল। এই নিয়ে রাজ্য কংগ্রেসে শুরু হয়েছে তুমুল বিক্ষোভ। চরম অস্বস্তিতে
রাজ্য কংগ্রেস। যেখানে প্রায় কবরে চলে যাওয়া রাজ্য কংগ্রেসকে অবিশ্বাস্য ভাবে
পুনরায় কবর থেকে তুলে এনে প্রায় অলৌকিক উপায়ে প্রাণ সঞ্চারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে
বর্ষীয়ান রাজ্য কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে রাজ্য কংগ্রেস ঠিক সেই সময়
কপিল সিব্বলের এই পদক্ষেপ বা সিদ্ধান্তকে কি বলা যাবে? পেশাদারী? দলবিরোধী?
জনস্বার্থবিরোধী? নেমকহারামী? বেইমানী? হঠকারী? আত্মঘাতী? অর্থপিশাচী? কোনটা? এই
মানুষটির নামের আগে তাঁর পরিচয় হিসাবে কি লিখব? আইনজীবী কপিল সিব্বল না-কি কংগ্রেস
নেতা কপিল সিব্বল? কোন বিশেষণটা সঠিক ও উপযুক্ত হবে? কোন বিশেষণটা আম জনতার কাছে
চিনতে সুবিধা হবে? না-কি দুটোই একসঙ্গে লিখব? আবার নামের আগে দুটোই একসঙ্গে লিখতে
গেলে কোনটা আগে আর কোনটা পড়ে লিখব? কপিল সিব্বলের নামের টিআরপি কিসের উপর দাঁড়িয়ে
আছে? আইনজীবী না-কি কংগ্রেস নেতা? আইনজীবী পরিচয়ের সঙ্গে সাপোর্টিং কোন পরিচয় নেই
যা আইনজীবী পরিচয়কে মণিমুক্ত সহযোগে ঝলমলে কোনো ভিন্ন এক মাত্রা এনে দেয় জনসমাজে
বা রাষ্ট্রে। কিন্তু কংগ্রেস নেতা পরিচয়ের পাশে আরও ঝলমলে অনেক হীরে মণিমুক্তো বসানো
অন্য একরকম মাত্রা এনে দেয় কপিল সিব্বলের। যদিও সেইসব হীরে মণিমুক্তোর কোনও জেল্লা
নেই তবুও হীরে হীরে, মণিমুক্তো মণিমুক্তো। কপিল সিব্বল শুধু সামান্য কোন রাজনৈতিক
নেতা নয় তিনি বর্ষীয়ান সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেতা, তিনি সাংসদ, তিনি প্রাক্তন
মন্ত্রী। কোন সত্তাকে তিনি আগে রাখতে চান? আইনজীবী কপিল সিব্বলের সত্তা না-কি জননেতা বা
জনপ্রতিনিধি কপিল সিব্বলের সত্তা? তাঁর আজকের ভূমিকা কি প্রমাণ করল? পেশা আগে
না-কি জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা? তিনি আইনজীবীর সত্তাকে প্রথম ও প্রধান মনে করে লক্ষ
লক্ষ জনগণের নেতা বা প্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও শোষিত, নিঃশেষিত, প্রতারিত জনগণের
বিপক্ষে নিজেকে দাঁড় করালেন? যখন জীবন মোহনায় দাঁড়িয়ে নিজেকে জনগণের জন্য নিবেদিত
প্রাণ প্রমাণের মোক্ষম সময়, যখন নিজেকে সৎ, মহান, চরিত্রবান, আদর্শবান, বৃত্তি
প্রবৃত্তির উর্ধ্বে অবস্থানকারী মান ও হুঁশ সম্পন্ন নিষ্কলঙ্ক ব্যক্তিত্ব প্রমানের
মাহেন্দ্রক্ষণ উপস্থিত ঠিক সেই সময়েই তিনি কি প্রমাণ করলেন? মুখ ও মুখোশের মাঝে
ব্যবধানের পর্দা নিজের হাতে সরিয়ে দিয়ে আমজনতার কাছে নিজের প্রকৃত রুপকে হাজির
করলেন অতি সযত্নে বৃত্তি-প্রবৃত্তির বিষাক্ত ছোবলে? এতে কি কোনো অস্বাভাবিকতা আছে?
না-কি এটাই স্বাভাবিক? কিন্তু আমাদের মত বোকা সরল বেকুব মুর্খ ভাঙাচোরা বিশ্বাসী
মানুষের কাছে তাঁর এই ‘ভূমিকা’ কি অস্বাভাবিক ও আশ্চর্য্যের নয়? কংগ্রেসি সদস্য,
সমর্থক ও সারদা কেলেঙ্কারিতে প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে আচমকা
পিছন থেকে ছুরি মারার মত ভূমিকা নয় কি? যে ভূমিকা বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য্যের প্রথম
আশ্চর্য্যকেই ম্লান করে দেয়! বস্তুতঃ লেখাপড়াজানাওয়ালা অভিজ্ঞ পোড় খাওয়া আইনজ্ঞ ও
ক্ষমতার অলিন্দে দীর্ঘ জীবন ঘুরে বেড়ানো রাজনীতিবিদ কপিল সিব্বলের সারদা
কেলেঙ্কারি নিয়ে শাসক দলের হ’য়ে মামলা লড়ার জন্য নেওয়া পদক্ষেপ কি কপট ও কৃতঘ্ন
হ’য়ে দেখা দিল শুরু হওয়া নতুন বছরে দেশের আম আদমীর কাছে!? প্রদেশ কংগ্রেস নেতা
আব্দুল মান্নানের লড়াই-এর ভূমিকা যদি জনগণের প্রতি নির্মল দায়বদ্ধতা ও দলের
অস্তিত্ব রক্ষা ও পুনুরুজ্জীবিত করার কারণে রাজনৈতিক লড়াই হয় তাহলে সর্বভারতীয়
কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলের সারদা কান্ডে আইনজীবীর ভূমিকা পালন কোন লড়াইয়ের সংকেত
বহন করে? পেশা? অর্থ রোজগার?
এতকিছুর পরেও আমরা আবার শুনতে পাবো ভবিষ্যতে নির্বাচনের ময়দানে সততা, ভদ্রতা, বিশ্বাস, নির্ভরতা, নীতি ও
নৈতিকতার প্রশ্নে কপিল সিব্বলের জোরালো সওয়াল! দেখতে পাবো দলের কাছে তাঁর
প্রশ্নাতীত গ্রহণযোগ্যতা। আর দেখতে পাবো
তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে দলের উর্দ্ধতম নেতৃত্ব আর বাধ্য হয়ে অভ্যন্তরীণ মতভেদ
ভুলে গোটা কংগ্রেস দল! দেখতে পাবো দলের চরম অস্তিত্বের সংকটের সময়ে নিবেদিত প্রাণ
প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের দলের কাছে চরম লাঞ্ছনা। আর সেই সঙ্গে দেখতে
পাবো রাজ্য কংগ্রেসকে চরম লজ্জা ও অস্বস্তিতে ফেলে দেওয়া কায়েমী স্বার্থরক্ষাকারী
অর্থগৃধ্নু এই আইনজীবী মানুষটিই নির্বাচনের ময়দানে প্রার্থী হয়ে এই আম জনতার দরবারে
কাঁচুমাচু হয়ে বোকা লাজুক হাসি হেসে বাংলা ব্যাঞ্জনবর্ণের ‘দ’ হয়ে এসে দাঁড়িয়েছে ভোট
ভিক্ষার ঝুলি হাতে ভিখারী বেশে। আর স্মৃতিবিস্মৃত বোকা সরল বেকুব মুর্খ ভাঙাচোরা
লাঞ্ছিত, অপমানিত, প্রত্যাখ্যাত চার অক্ষরের সাধারণ মানুষ গভীর বিশ্বাসে আবার তাঁকে
বুকে টেনে নিয়েছে!!!!!!
সত্য সেলুকাস! কি বিচিত্র মানুষ আর মানুষের শিক্ষা!!!!!!
সত্য সেলুকাস! কি বিচিত্র মানুষ আর মানুষের শিক্ষা!!!!!!
No comments:
Post a Comment