Powered By Blogger

Wednesday, December 29, 2021

কবিতাঃ ক্ষমা করো আমারে!!!

হে হিন্দু! হে মুসলিম! হে খৃষ্টান! বৌদ্ধ! শিখ, জৈন! পারসিক!
হে যত বিশ্বের যত ধর্মমত অনুসারী ধার্মিক!
তোমরা কি জানো না সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর স্বয়ং বারবার
তোমাদের মাঝে এসেছেন নেবে!?
এসেছেন রক্তমাংসের জীবন্ত ঈশ্বর হ'য়ে
মানুষের মাঝে মানুষ মায়ের কোলে কতবার!?
সত্যিই কি তুমি জানো না!?
নাকি জানতে, বুঝতে চাও না!?
না-জানার ভান ক'রে থাকো?
কিম্বা জেনে বুঝেও কুসংস্কারের হ'য়ে বশবর্তী
কিম্বা রিপুতাড়িত অস্থির বৃত্তি-প্রবৃত্তির শয়তানী টানে
হ'য়ে বেসামাল চোখ বন্ধ ক'রে কাটাও ইচ্ছের দিনরাত!?
কে শেখায় তোমাদের তিনি আসেন শুধু
তোমাদের বিশেষ সম্প্রদায়ের তরে!?
কে শেখায় তোমাদের বন্ধু,
তোমাদের ঈশ্বর তিনি শুধু হিন্দুদের জন্য আসেন!?
আসেন শুধু তিনি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য!?
কে শেখায় এই পাপ শিক্ষা আল্লা আসেন
শুধু মুসলমানের তরে শান্তি বিলাতে!?
হে আমার ধার্ম্মিক বন্ধু!
কে শিখিয়েছে এই কুশিক্ষা যে গড তিনি
হ'য়ে ঈশ্বর পুত্র এসেছিলেন হ'য়ে মিত্র
শুধু খৃষ্টানদের জন্যে!?
এমনিভাবেই যারা ঈশ্বর নন তারাও
হ'য়ে ঈশ্বর ব'সে আছেন ঈশ্বরের সিংহাসনে
আবেগে ভেসে যাওয়া শক্ত ভক্তদের দৌলতে!
কেন!? কেন বন্ধু, কেন!?
কেন তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে তাঁর ইচ্ছের ভিতরে
চালাও তোমার ইচ্ছের কোদাল!?
কেন তুমি দাও তাঁর বুকে ব্যথা!?
কেন শোনো না তাঁর বাঁচা বাড়ার কথা!?
কেন তাঁকে তাঁর জীবন্ত উপস্থিতিকে
করো বারবার অস্বীকার!?
কেন তাঁরে দাও কষ্ট, করো অপমান অশ্রদ্ধা
ভক্তির ছুটিয়ে ফোয়ারা যত অমূর্ত ভগবানে
ক'রে পুজা আর সাজা সাধু হ'য়ে ব'সে
কখনো বা সেজে ব'সে গুরু
বানাও বোকা সবারে তাঁর মূর্খ সন্তানেরে!?
তোমায় হে ধার্মিক!
তোমার এই পাগলাটে মনোভাবকে জানাই ধিক্কার।
কে দেবে ধর্মের ব্যাখ্যা?
কে দেবে গীতা, বাইবেল, কোরান, ত্রিপিটক
ইত্যাদি যত তাঁর ব'লে যাওয়া বাণীর ব্যাখ্যা?
কে ব'লে দেবে তাঁর বারবার পূর্ব পূর্বরূপের
ব'লে যাওয়া বাণীর অন্তর্নিহিত শব্দের অর্থ?
তাঁর সৃষ্ট সন্তান নাকি তিনি নিজে?
কে এতবড় পন্ডিত যে তাঁর বাণীর দেবে ব্যাখ্যা?
কে এতবড় জ্ঞানী যে ঈশ্বরের মুখনিঃসৃত
গীতা, বাইবেল, কোরান, ত্রিপিটক-এর
মূল ভাষ্যের তুলে ধরবে নিখুঁত নির্ভুল অন্তর্নিহিত অর্থ!?
তিনি ছাড়া আর কে আছেন
এমন শক্তিমান এই দিন দুনিয়ায়!?
তাই-ই তাঁকেই নেবে আসতে হয় বারবার
আর এসেওছিলেন আট আটবার!!!!!
কিন্তু তুমি ধার্মিক! তা মানোনি,
করোনি বিশ্বাস, শোনোনি তাঁর কথা!
কে নাস্তিক?
তুমি যে ঈশ্বর বিশ্বাস করো না সে
নাকি যে ঈশ্বরের নামে ভক্তির ফোয়ারা
ছুটিয়ে করে ন্যাকামি, সে ? কে?
কে নাস্তিক?
যে ঈশ্বরের উপস্থিতিকে দেয় না স্বীকৃতি, সে?
যে সরল মনে নেই গরল
করে তাঁর নাম গান মুর্তি পুজায় অবিরল, সে?
নাকি যে কুসংস্কারের হ'য়ে বশবর্তী কিম্বা
ঈশ্বরকে আয়ের আর ক্ষমতা লাভের
বানিয়ে উপকরণ করে মুর্তি পুজা
আর দেখিয়ে ভগবানের ভয় ক'রে ভক্তের শক্তি ক্ষয়
বানায় নিজ ঐশ্বর্যের প্রাসাদ, সে?
কে নাস্তিক!
এখনও সময় আছে, জীবন অস্তাচলে
যাবার আগে দাঁড়াও ঘুরে একবার
অহংকার লজ্জার জাল ছিন্ন ক'রে
রাধারাধা ব'লে হরি হরি ব'লে
দু'হাত উর্ধ্বে তুলে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে
কপটতা আর চতুরতার ভেঙ্গে বেড়াজাল
আঁখি ভেজা জলে গেয়ে ওঠো তুমি
শৃন্যন্তু বিশ্বে অমৃতস্য পুত্রা,
বলো অশ্রুসজল কন্ঠে,
ক্ষমা করো, ক্ষমা করো মোরে
তোমার অধম সন্তানেরে মহাকাল!
হে মহাকাল! ক্ষমা করো আমারে।

No comments:

Post a Comment