Powered By Blogger

Sunday, February 10, 2019

প্রবন্ধঃ নেতার প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন নীতির।

কথায় আছে, বোকার গু তিন জায়গায় লাগে, আমি বলি চার জায়গায় লাগে। ব্যাপারটা কেমন? ব্যাপারটা বুঝতে হ'লে একটু বিস্তারে যেতে হবে। আজকাল যেমন প্রবাদ বাস্তবে বাস্তবায়িত হ'য়ে ওঠে, সঠিক ব'লে প্রমাণিত হ'য়ে ওঠে ঠিক তেমনি প্রবাদ বিস্তার লাভও করে। যেমন, মশা মারতে কামান দাগা! সত্যি সত্যিই কলকাতা করপোরেশন মশার হাত থেকে শহরবাসীকে রক্ষা করার জন্য, বাঁচাবার জন্য, স্বস্তি দেওয়ার জন্যে কামান দেগেছিল, দেগেছিল মশা মারার জন্যে। আবার শহরতলীতে মশার অত্যাচার থেকে মানুষকে শান্তি-স্বস্তি দেওয়ার জন্যে পৌরসভা এলাকার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ধোঁয়ার কামান দাগে মাঝে মাঝে। এরকম আরও আছে। আর বোকার গু তিন জায়গায় লাগে মানে, পথ চলতে চলতে হঠাৎ পায়ে কিছু লেগে যাওয়ায় বোকা পা তুলে দেখলো পায়ে কি লেগেছে! দেখলো পায়ে গু লেগেছে তবুও বোকা বুঝতে পারলো না কি লেগেছে! তাই পায়ে লাগা গু হাত দিয়ে দেখলো! তবুও বুঝলো না পায়ে গু লেগেছে! তাই বোকা তখন হাতে লাগা গু গন্ধ শুঁকে দেখবার জন্য হাত নাকের কাছে নিয়ে গেল শুঁকে দেখবার জন্য। আর তার ফলে লেগে গেল গু নাকে। তাহ'লে বোকার গু ক'জায়গায় লাগল? প্রথমে লাগলো গু পায়ে, তারপর লাগলো হাতে আর শেষে লাগলো নাকে!!!! এই হ'লো বোকার গু তিন জায়গায় লাগা। আমি বলি, বোকার গু চার জায়গায় লাগে! সে কেমন? এ বক্তব্যের যে বা যারা উদাহরণ তাদের মধ্যে বিশ্বসেরা বোকা সে যে বা যারা তিন জায়গার বদলে গু চার জায়গায় লাগায়। সেটা কেমন? যেমন, গু লেগেছে পায়ে তাতেও বোঝেনি, গুয়ের গন্ধ লাগেনি নাকে; তারপর হাতে গু লাগিয়েও বোঝেনি ও গন্ধ পায়নি! আর তাই নাক দিয়ে শুঁকে দেখতে গেছে আসলে কি লেগেছে পায়ে! আর তারপরেই গুয়ের গন্ধে লাফ দিয়ে বলে উঠেছে, ওয়াক শালা! গুউউউউ!!!!!!!!! আর তারপরেই তাড়াতাড়ি হাত মাথায় মুছে নিল হাত পরিষ্কার করার জন্যে!!!! এই হ'লো বিশ্বসেরা বোকার গু চার জায়গায় লাগা!

এই রাজনৈতিক দলগুলোর চরিত্রও কি তাই!? আজ থেকে পাঁচ বছর আগে লোকসভা নির্বাচনের সময় এই বামপন্থীরা ব্রিগেডের জনসভায় বলেছিল যে কথা সেই একই কথার পুনরাবৃত্তি করলো তারা আবার সেই গত কয়েকদিন আগে হ'য়ে যাওয়া ব্রিগেডের জনসভায়। সেখানে সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি একই কথা উগড়ে দিলেন ময়দানের জমায়েতের উদ্দেশ্যে। তিমি কি বললেন? তিনি পরিষ্কার বললেন, কোনো নেতার প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন নীতির। নীতির উপর দাঁড়িয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তা এই নীতি তৈরি করে যারা তারাও তো মানুষ! তা এই নীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতেও তো লাগবে মানুষ! তা এই গৃহীত নীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, ইপ্লিমেন্ট করার জন্য তো একজন নেতা দরকার! তা সেই নেতার কোনও দরকার নেই আগে থেকে স্থির করার? শেষ মুহূর্তে 'চল উঠ ছুঁড়ি তোর বিয়া'-র মতো যেকোন একজনকে ধ'রে বেঁধে দেশের সর্বোচ্চ চেয়ারে বসিয়ে দেওয়া!!!! অবাক লাগে এরা দেশের নেতা!? এরা দেশ ও দশের অগ্রগতির কথা বলে!? দেশের উন্নয়নের এরা কান্ডারী ও কারিগর!? মনে পড়ে গেল, যখন গোটা ভারতবর্ষের বিরোধী জোটের নেতৃবৃন্দ সেই সময়ের বিরোধী জোটের মধ্যে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য নেতা জ্যোতি বসুকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন তখন এই সীতারাম ইয়েচুরিরাই দলের নীতির দোহাই দিয়ে সেদিন জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী হ'তে দেননি! হ'তে দেননি বাংলার নেতাদের সহযোগিতায়। সেদিন বাংলার সিপিএম নেতৃবৃন্দ যদি রুখে দাঁড়াতো তাহ'লে ভারতবর্ষ একজন বাঙালিকে নিশ্চিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে পেত আর পলিটব্যুরোও বুঝতে পারতো বাংলার শক্তি, বাংলার পরাক্রম, বাঙালির একতা, বোধ, বুদ্ধির ধার ও ভার কতটা! কারন সেদিন ভারতের মধ্যে একমাত্র বাংলার বুকে এই জ্যোতি বসুর টানা রাজত্বের ফলস্বরূপ মেওয়া তাঁরা খেয়েছিলেন। তা না হ'লে আরো অনেক আগেই ভারতবর্ষে তাদের আজকের হাল হ'তো। সেদিনও এঁরা নেতা থেকে নীতিকে প্রাধান্য দিয়ে, নীতিকে তুলে ধ'রে নেতার গুরুত্বকে গৌণ ক'রে দিয়েছিলেন! ক'রে দিয়েছিলেন নেতার নেতৃত্বের যোগ্যতা ও দক্ষতাকে খাটো ক'রে, পঙ্গু ক'রে! নীতির আড়ালে খেলেছিলেন জ্যোতিবাবুকে প্রধানমন্ত্রী হ'তে না দেওয়ার নোংরা খেলা। প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো ভারতের হিন্দি বলয় তথা দক্ষিণ বলয় (জ্যোতি বাবুর সময়ে তাও প্রমাণিত হ'লো) কোনোদিনও ভারতের সিংহাসনে কোনও বাঙালিকে প্রধানমন্ত্রী হ'তে দেননি! স্বাধীনোত্তর ভারতে নেতাজি থেকে শুরু ক'রে প্রণব মুখার্জি, জ্যোতি বসুরা তার প্রমাণ! তাই সেই দোষ বা পাপ যাই বলুন না কেন তা ঢাকতে প্রণব মুখার্জীকে রাষ্ট্রপতি বানিয়ে দইয়ের স্বাদ ঘোলে মেটাবার মত ঠুঁটো জগন্নাথ ক'রে বসিয়ে রেখেছিল কংগ্রেস!


আর এবারও যদি ফেডারেল ফ্রন্ট মমতা বন্দোপাদ্যায়ের নেতৃত্বে ক্ষমতায় আসে সেখানেও সেই একই ট্র্যাডিশন সমানে চলবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী হ'তে দেবে না; যদি না বিরোধী নেতৃবৃন্দ বোকার গু চার জায়গায় লাগার মত নির্লজ্জ্ব ভাবে সেই বাঙালীকে প্রধানমন্ত্রী হ'তে না দেবার যে অপরাধ, দোষ বা পাপের গু দেশ স্বাধীন হবার সময় থেকেই মেখে আসছে গায়ে মাথায়, যার লজ্জা ব'য়ে বেড়াচ্ছে উত্তর তথা দক্ষিণ ভারতের তামাম অবাঙালি মুষ্টিমেয় কয়েকজন অবাঙালি নেতার জন্যে যার ভাগীদার বাঙালিও আছে, তা আবার নিজেদের মাথায় না মাখে!!!!!!


যদিও গোটা বিশ্ব জানে অবিভক্ত ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বাঙালি সুভাষচন্দ্র বোস!!!!! গোটা বিশ্ব জানে কেন নিশ্চিত প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার থেকে কে বা কারা বাঙালি প্রণব মুখার্জি আর জ্যোতি বসুকে জোর ক'রে নির্লজ্জ ভাবে পিছন থেকে ল্যাং মেরে ফেলে দিয়েছিল। সব চাপা দেওয়া গেলেও ইতিহাসকে চাপা দেওয়া যায় না। দু'দিন আগে আর দু'দিন পরে সবই উঠে আসবে ইতিহাসের পাতায়। দেশ তিন তিনটে নিশ্চিত বাঙালি প্রধানমন্ত্রী পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে! আরও অপেক্ষা করছে ভবিষ্যতে। কারণ বাঙালি কাঁকড়ার জাত সেটা ভারতবর্ষের সব ভাষাভাষীরাই জানে, জানে গোটা বিশ্ব আর গোটা বিশ্ব তা জানে নেতাজীর সময় থেকেই।


মনে প্রশ্ন জাগে, নীতি ইমপ্লিমেন্ট করবে কে বা কার নেতৃত্বে নীতি ইমপ্লিমেন্ট হবে!? নেতা ছাড়া নীতি ইমপ্লিমেন্ট হবেই বা কি ক'রে!? নীতি তৈরিতেও তো মগজ চাই! আর সেই মগজের জন্যেও তো মানুষ চাই আর সেই মানুষই তো নেতা! তাহ'লে নেতা ছাড়া নীতি আসে কি ক'রে আর কি উপায়েই বা নীতি দেশ ও দশের দিক নির্ণয় করবে!? ছোটবেলা থেকে তো নীতিকথা কম পড়লাম না!? কত নীতিকথা, কত নীতিশাস্ত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে চারিপাশে! সেই নীতিকথার জনক তো কেউ না কেউ! তাই নয় কি? আকাশ থেকে তো আর নীতি টুপ ক'রে গাছের পাকা ফলের মতো ঝ'রে পড়েনি! গল্পে,উপন্যাসে, সিনেমা-সিরিয়ালে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত কত নীতিকথার বৃষ্টি হ'য়ে চলেছে! "সদা সত্য কথা বলিবে, কখনও মিথ্যা বলিও না, চুরি করা মহাপাপ, গুরুজনে শ্রদ্ধা করিও" ইত্যদি ইত্যদি নানা নীতিকথায় আজ এগিয়ে চলেছে দেশ স্বাধীনতার পরে ৭০বছর। স্বাধীনতার ৭০বছরে কি পেলাম আমরা, কি রকম দেশের ছবি আজ আমাদের সামনে!? তাহ'লে কি স্বাধীনোত্তর ভারতে এতদিন নীতির অভাব ছিল? নাকি নেতার অভাব ছিল? কোনটা! নাকি নীতি ও নেতা দুটোরই অভাব ছিল? নীতি আর নেতা তো পরস্পরের পরিপূরক! এখন যারা নীতি প্রণয়ন করেন হয়তো অনেক সময় তিনি বা তাঁরা সেই নীতি প্রণয়নের জন্য প্রত্যক্ষভাবে নেতৃত্ব দেন না কিন্তু পরোক্ষে তাঁরা নেতৃত্ব দেন এবং এটাও অতীব সত্য যে নেতা নীতির গুরুত্ব, মূল্য, অর্থ, ভুল-ঠিক যদি বুঝতে না পারেন তাহ'লে তিনি সেই নীতিকে ইমপ্লিমেন্ট বা ঘষে মেঝে সংশোধন ক'রে পরিচ্ছন্ন ক'রে তুলতে পারবেন না। তাই নীতি যেমন প্রয়োজন, প্রয়োজন আগে নেতার মত নেতার!!!!!!! কেন বোকা বানানো হয় আম জনতাকে? আর কতদিন এমন চলবে? আম জনতা কি চার অক্ষর!?


যাই হ'ক আজকের যুবসমাজ কি শিখছে? দেশে নেতার দরকার নেই, নেই দরকার মানুষের অর্থাৎ মানুষের মত মানুষের! কারা বলছে এই কথা!? দেশ ও দশের উন্নতির জন্যে, বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার জন্যে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্যে শুধু কিছু ভালো ভালো কথার কচকচানিই দরকার, দরকার শুধু ভালো ভালো মুখরোচক কথা দিয়ে তৈরি এক 'মুখে মারিতং জগৎ' তৈরি করা! যা দেখে বিশ্ববাসী বলবে, 'সত্য ভারতবাসী! এই না হ'লে ভারত! এই না হ'লে ভারত আবার জগৎ সভায় কেমনে শ্রেষ্ঠ আসন লভে!?


এই প্রসঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও দেশবন্ধুর মধ্যে কথোপকথন মনে পড়লো। মনে পড়লো তাঁর নীতি সম্পর্কিত বাণী।


দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন ছিলেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের মন্ত্রশিষ্য। তিনি তাঁর আইন-আদালত ও স্বাধীনতার আন্দোলনের কাজে এতই ব্যস্ত থাকতেন যে ঠাকুরের কাছে যাবার ও তাঁর সঙ্গে কথা বলার সময় পেতেন না। তাই দেশবন্ধু একদিন দুঃখ ক'রে বলেছিলেন তাঁর গুরুদেব শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে, ঠাকুর আমার খুব ইচ্ছে হয় সব কাজ ফেলে রেখে আপনার কাছে এসে দু'দন্ড বসি, গল্প করি কিন্তু আমার তা হ'য়ে ওঠে না। আমি এমন একজন কাউকে পাই না যার উপর সব কিছু ছেড়ে দিয়ে মাঝে মাঝে কিছুদিনের জন্য আপনার সান্নিধ্যে এসে কাটিয়ে যাবো। যদিও বা কাউকে পাই হয় সে আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে আর নাহয় সব ওলটপালট ক'রে নষ্ট ক'রে দেয়। তখন শ্রীশ্রীঠাকুর দেশবন্ধুকে বলেছিলেন, দাশদা, তাহ'লে দেখুন! এইযে আপনারা স্বরাজ স্বরাজ করছেন অথচ আপনি নিজেই বলছেন একজন যোগ্য বিশ্বস্ত মানুষ পাচ্ছেন না যার উপর সব ছেড়ে দিয়ে দু'দিনের জন্য আমার এখানে আসবেন, গল্প করবেন অথচ এইযে আপনারা স্বরাজ স্বরাজ করছেন স্বরাজ পেলে তখন কার উপর দেশটা ছেড়ে দেবেন, ভেবে দেখেছেন। ব্রিটিশরা তো চলে যাবে, দেশ চালাবে কারা? দাশদা, গাড়ি ঘোড়াকে টেনে নিয়ে যায় নাকি ঘোড়া গাড়িকে টেনে নিয়ে যায়? ঠিক তেমনি, দেশ মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায় নাকি মানুষ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়? দেশে মানুষ তৈরি না ক'রে এত চটজলদি আপনারা দেশকে ব্রিটিশদের হাত থেকে মুক্ত করতে চাইছেন এর থেকেই বোঝা যায় দেশ প্রকৃতই স্বাধীন হ'ক তা আপনারা চান না।


এর উত্তরে দেশবন্ধু তাঁর গুরুদেবের মুখের দিকে তাকিয়ে বিস্ময়ে অভিভূত হ'য়ে বলেছিলেন, এমনভাবে তো কখনও ভেবে দেখিনি! তা কি করতে হবে তা যদি দয়া ক'রে বলে দেন।

শ্রীশ্রীঠাকুর তখন বলেছিলেন, শর্টকাটে কিছু হবার নয়। যা করার জন্য যা যা দরকার তা করতেই হবে। যদি দেশ মুক্তির জন্য কর্মী পেতে চান তাহ'লে বিয়েটা ঠিক ক'রে দেন তাহা'লেই কয়েক বছরের মধ্যে এমন সব যুবক পাবেন দেধে তখন কর্মীর অভাব হবে না।


এই কথা শোনার পর বিস্মিত দেশবন্ধু ঠিক করলেন সব ছেড়ে দিয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে থেকে পল্লী সংগঠনের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়বেন আর সেই ভাবে তিনি সব গুছিয়ে নিচ্ছিলেন ঠাকুরের সঙ্গে ঠাকুরের কাজে নিজেকে যুক্ত করবার জন্যে কিন্তু কঠিন অসুস্থতার কারণে তা আর সম্ভব হ'য়ে ওঠেনি।


এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, দেশবন্ধু যখন অসুস্থ হ'যে পড়লেন তখন ঠাকুর সেই কথা শুনে দেশবন্ধুর জন্যে পদ্মা নদীর পাড়ে ঘর বেঁধে দিলেন তাঁর থাকার জন্যে। দেশবন্ধু সেখানে এসে থাকলেন। পদ্মার পাড়ে নদীর হাওয়ায় খোলা নির্মল আকাশের নিচে হৈ হট্টগোল, কোলাহল থেকে দূরে প্রাকৃতিক ও আশ্রমিক শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশে ঠাকুরের সঙ্গ লাভের মধ্যে দিয়ে একান্ত গভীর আলাপ-আলোচনায় ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হ'য়ে উঠতে লাগলেন কিন্তু কিছুদিন পরেই স্ত্রীর জোরাজুরিতে শরীর সুস্থ হওয়ার জন্য হাওয়া পরিবর্তনের তাগিদে দেশবন্ধুকে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে চলে যেতে হ'লো দার্জিলিংয়ে। দেশবন্ধুকে একপ্রকার তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর ক'রে ঠাকুরের অনুমতির তোয়াক্কা না করেই দেশবন্ধুর স্ত্রী দেশবন্ধুকে দার্জিলিংয়ের পাহাড়ি অঞ্চলে নিয়ে এলেন স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের আশায়। দেশবন্ধুর স্ত্রী একবারও ভেবে দেখলেন না, প্রয়োজন মনে করলেন না কোথায় থাকলে দেশবন্ধু ভালো থাকবেন, আনন্দে থাকবেন, নিশ্চিন্ত চাপমুক্ত জীবন কাটাবেন! এমনই ছিল দেশবন্ধুর স্ত্রীর স্বামীর প্রতি ভালোবাসা! এমনই ছিল স্বামীর প্রতি স্ত্রীর প্রেম যে কিসে দেশনন্ধুর ভালোলাগা, কিসে তিনি শান্তি ও স্বস্তি পান তার কোনও খোঁজই রাখতেন না তিনি! আর তাই দার্জিলিংয়ে যাবার কিছুদিন পরেই দেশবন্ধু মৃত্যুমুখে পতিত হলেন!

যেদিন দেশবন্ধু ঠাকুরকে ছেড়ে, আশ্রম ত্যাগ ক'রে চলে যাচ্ছিলেন সেদিন যতদূর দেখা যায় দেশবন্ধুর চলে যাওয়া ততদূর পর্যন্ত অশ্রুসজল চোখে ঠাকুর সেইদিকে তাকিয়ে ছিলেন একদৃষ্টিতে! সেদিন দু'চোখ দিয়ে ঝরে পড়েছিল ফোঁটা ফোঁটা জল শ্রীশ্রীঠাকুরের! তারপর তিনি অশ্রুসজল চোখে ভেজা গলায় শুধু বলেছিলেন, ধ'রে রাখতে পারলাম না।


যাই হ'ক সকলের জানার জন্যেই এতকথা লিখলাম। কিন্তু মূল কথা যা বলতে চেয়েছিলাম তাহ'লো সেই মানুষ প্রসঙ্গ! মানুষ ছাড়া যে কিছুই হয় না এই সহজ সত্য কথাটা ঠাকুর দেশবন্ধু, নেতাজি সুভাষচন্দ্র, শ্যামাপ্রসাদ ইত্যাদি সমস্ত দেশরত্নদের বারবার বোঝাতে চেয়েছিলেন! কিন্তু কেউই সেদিন বুঝতে চাননি ঠাকুরের কথা আর আগে পরে কেউ কেউ দেরিতে বুঝলেও ভাগ্য সেদিন বিরূপ ছিল! আজ ৭০ বছর পরেও দেশনেতারা কি বুঝতে পারেন না নাকি বুঝতে চান না!?


কথায় নীতি, কাজে নয়

ভণ্ডামিতেই তা'র ক্ষয়।


সব সময়েই ভাল কথায়

হয় না সবার আনতি,

যদি তা'দের নাই রে থাকে

মন অবস্থার সঙ্গতি।


তাই চাই আগে মানুষের মত মানুষ, যোগ্য মানুষ, দক্ষ মানুষ, সৎ ও শুভানুধ্যায়ী মানুষ, চাই এমন মানুষ নেতা! কথায় ও কাজে এক এমন মানুষ, এমন নেতা! চাই ইষ্টপ্রাণ মানুষ, নেতা! তারপর যত নীতি!!!!!!


আর নীতি তৈরি করে মানুষ আর তা বাস্তবায়িতও করে মানুষ। তাই আগে চাই মানুষ! চাই নেতা! চাই প্রকৃত ইষ্টপ্রাণ মানুষ, নেতা!!!!!! তবেই তৈরি হবে নিখুঁত নীতি আর হবে তা বাস্তবায়িত দেশ ও দশের কল্যাণে! নতুবা সে গুড়ে বালি! সবটাই তাসের ঘর! নদীতীরে বালুচরে বাঁধা খেলাঘর!!!

No comments:

Post a Comment