Powered By Blogger

Sunday, March 13, 2022

এলিট সমাজের বৈশিষ্ট্য।

 ভাসা ভাসা ভাবে কোনোকিছু দেখা আমাদের তথাকথিত এলিট সমাজের বৈশিষ্ট্য। দিদি নং ওয়ানের সঞ্চালিকাও তাই করেছেন। এই ব্যাপারটাকে Superficial thoughts দিয়েই ব্যাখ্যা করেছেন। যা এলিট সমাজের কাছে স্বাভাবিক। চেতনার গভীরে যাবার সামাজিক প্রেক্ষাপট এতটাই ক্ষীণ হ'য়ে পড়েছে চতুর্দিকের চটজলদি পাওয়ার তাগিদে ভিড় করা তথাকথিত শিক্ষিত মানুষের ভিড়ে যে এই প্রেমের সম্পর্কের মধ্যে অসাম্য বা অস্বাভাবিক কিছু দেখতে পাননি সঞ্চালক, প্রেমিক-প্রেমিকা তথা উপস্থিত দর্শকবৃন্দ। সঞ্চালিকা এর মধ্যে খাঁটি প্রেম দেখতে পেয়েছেন। দেখতে পাননি পুরুষটির মধ্যে খাঁটি প্রেমের অজুহাতে কাজ বাগাবার জন্য নিজের ধর্ম বা নিজের পিতৃদত্ত নাম পরিবর্তন করার মত ঘৃণ্য মানসিকতা, দেখতে পাননি কাজ বাগাবার পরে নিজের ভালোবাসার মানুষের সামনে প্রতারণার মুখোশ খুলে ফেলে নিজের ধর্মে বা নিজের পিতৃদত্ত নামে পুনরায় ফিরে আসার মত ব্যাক্তিত্বহীন, না মরদের পাতলা চরিত্র। দেখতে পাননি ভালোবাসার মানুষটাকে নিজের ধর্মে, নিজের পিতৃদত্ত নামে থেকে যাবার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবার মত প্রেমিক পুরুষের মধ্যে উদারতার মানসিকতা। দেখতে পাননি বিয়ের পরেই বা বিয়ের আগেই বা প্রেম জমে যাবার পরেই বা সম্পর্ক স্থিত হবার পরেই নিজের ধর্মে বা নিজের সম্প্রদায়ে ভালোবাসার মানুষটিকে কনভার্ট করার মৌলবাদী মানসিকতা। দেখতে পাননি নাম পরিবর্তনের এফিডেবিটের পিছনে মূল কারণের ছবি।  

আর মেয়েটির মানসিকতার মধ্যে কি দেখলাম? পতিব্রতা হিন্দু নারীর মত স্বামীর সব চাহিদা মেনে নিয়ে, নিজেকে স্বামীর কাছে অর্পণ ক'রে প্রমাণ করলেন স্ত্রী হিসাবে তিনি তার পিতৃদত্ত 'অর্পিতা' নাম সার্থক করেছেন। প্রমাণ করলেন স্বামীর দোষত্রুটি, প্রতারণা, কপটতা দেখেও না দেখা আদর্শ স্ত্রীর পরিচয়। কিন্তু স্ত্রী হিসাবে প্রমাণ করতে পারেননি আদর্শ স্ত্রীর পরিচয় হ'ল স্বামীর মঙ্গলহেতু স্বামীর দোষ, ত্রুটি, ভুল, অন্যায় স্বামীর কাছে তুলে ধ'রে স্বামীকে মঙ্গলের পথে চালিত করা।  আর আদর্শ নারী হিসাবে সেই দৃঢ়তা দেখাতে পারেননি স্বামীর কাছে, সেই শিক্ষা তুলে ধরতে পারেননি সমাজের কাছে যে ভালোবেসে বিয়ে করতে গিয়ে বা কারও স্ত্রী হওয়ার জন্য নিজের ধর্ম, নিজের সম্প্রদায়, নিজের সংস্কৃতি, নিজের পিতৃ পরিচয় ত্যাগ করার প্রয়োজন পড়ে না। আদর্শ স্ত্রী হওয়ার জন্য অন্য ধর্মে কনভার্টেড হ'য়ে নিজের বিশ্বস্ততা প্রমাণ করতে হয় না। এই মেকী, মিথ্যে, কপট ভালোবাসা আর যাই হ'ক ভবিষ্যৎ সুস্থ মজবুত সম্পর্কের ভিত হ'তে পারে না। এতে মানুষ হিসাবে জীব জগতের মাঝে নিজের অস্তিত্বকেই টেনে নীচে নাবানো হয় যা কিনা নিজের কাছে নিজের অর্থাৎ মনুষত্বের চরম অপমান। দিদি নং ওয়ানের ঘটনাটির বিবরণ যদি সত্য হ'য়ে থাকে তাহ'লে উভয়ের প্রেম মানুষের কাছে, সমাজের কাছে দিশাহীন প্রেম হ'য়ে রইলো। উভয়ের প্রেম অমর হ'য়ে থাকতো যদি দুজনেই দুজনের ধর্ম, দুজনের সম্প্রদায়ের Identity বজায় রেখেই স্বামী-স্ত্রীর জীবনযাপন করার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতেন আর সেটাই হ'তো আদর্শ স্বামীস্ত্রীর, আদর্শ সম্প্রদায় নিরপেক্ষ সমাজ গঠনের জ্বলন্ত উদাহরণ। যাই হ'ক পরবর্তী সময়ে কেউ এই লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে আশা করি যদি কেউ ভিন্ন ধর্মে অর্থাৎ ভিন্ন সম্প্রদায়ে সংসার বাঁধে।

No comments:

Post a Comment